Author : Roshani Jain

Published on Aug 14, 2024 Updated 0 Hours ago

সুন্দরবন সংরক্ষণের জন্য নয়াদিল্লি ও ঢাকার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও প্রাতিষ্ঠানিক সুরক্ষা কার্যকরভাবে তৃণমূলে সুরক্ষায় পরিণত হচ্ছে না।

সুন্দরবনের পরিবেশগত অবনতির তদন্ত

সুন্দরবন, বিশ্বের বৃহত্তম একক ম্যানগ্রোভ বন, এখন মারাত্মক পরিবেশগত চাপের মধ্যে রয়েছে। প্রায়শই 'এশিয়ার ফুসফুস' হিসাবে অভিহিত এই অতি-‌গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুতন্ত্র এখন বিপন্নতার সম্মুখীন, যদিও তা ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ের দ্বারা সুরক্ষিত ভূখণ্ড' হিসাবে স্বীকৃত। নয়াদিল্লি ও ঢাকা উভয়ই এর সংরক্ষণের প্রতি রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রদর্শন করলেও কেন প্রাতিষ্ঠানিক সুরক্ষা তৃণমূল স্তরের সুরক্ষায় রূপান্তরিত হয়নি, তা চিহ্নিত করা প্রয়োজন। এই ধরনের তদন্ত প্রকাশ করে যে উপরের স্তরে প্রাতিষ্ঠানিক ঘাটতি এবং দুই প্রতিবেশীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রবণতা থেকে শুরু করে তৃণমূল স্তরে ক্ষমতা ও বাস্তবায়নের সমস্যাগুলির মতো অনেকগুলি কারণ রয়েছে যা ন্যায়সম্মত শাসনকে বাধা দেয়।

প্রতিরক্ষামূলক প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা 

সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য, বাস্তুতন্ত্রের উৎপাদনশীলতা, ঘূর্ণিঝড় ও অন্যান্য দুর্যোগের বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক সুরক্ষার নিরিখে, এবং রয়েল বেঙ্গল টাইগারের একমাত্র আবাসস্থল হিসাবে, সুন্দরবন জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে এবং বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। ভারতের জন্য এই বায়োস্ফিয়ারটি ৪.৫ মিলিয়নেরও বেশি জীবন ধারণ করে, এবং এই অঞ্চলে স্থানীয় শিল্প ও অর্থনৈতিক উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যায়। একইভাবে বাংলাদেশের জন্য, যেহেতু দেশটি ২০২৬ সালের মধ্যে তার 'স্বল্পোন্নত অবস্থা' থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, সুন্দরবন তার অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি দেশের জন্য বনজ উৎপাদনের একক-বৃহৎ উৎস, এবং হিসাব করা হয়েছে যে ২০২৩ অর্থবর্ষে সুন্দরবনের পরিবেশগত পরিষেবাগুলি বার্ষিক ২৭.৭১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আয় করেছে। তাছাড়া, এই ভূখণ্ড ১,০০০ বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণীর আবাসস্থল।

এর তাৎপর্যের পরিপ্রেক্ষিতে, ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ই এই অঞ্চলের জন্য  জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা রক্ষা ও নির্মাণের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ করেছে। উভয় দেশই রামসার কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী এবং তারা এই ভূখণ্ডের অংশগুলিকে একটি সুরক্ষিত পরিসর ও ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান (
১৯৮৭ সালে ভারত এবং ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ) হিসাবে চিহ্নিত করেছে। ভারত ও বাংলাদেশ ২০১১ সালে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে, যা যৌথভাবে সুন্দরবন সংরক্ষণের জন্য সময়ের চাপের প্রয়োজনকে প্রতিফলিত করে। এই সমঝোতা স্মারকটি স্বীকার করছে যে, সুন্দরবন একটি একক বাস্তুতন্ত্র এবং তার সম্পদের পর্যবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার প্রয়োজন। এই চুক্তির অধীনে তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পগুলি পরিচালনা করার জন্য একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ (জেডব্লিউজি) গঠন করা হবে বলে ঠিক করা হয়েছিল। এই ধরনের একটি যৌথ কর্মসূচির বাস্তবায়ন ২০১৫ সালে কনফারেন্স অফ পার্টিজ (কপ) ২১-এ গতি লাভ করে, যেখানে দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধিদল এই অঞ্চলে অভিন্ন সম্পদ রক্ষা এবং জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা তৈরির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করতে মিলিত হয়েছিল।


এই সমঝোতা স্মারকটি স্বীকার করছে যে, সুন্দরবন একটি একক বাস্তুতন্ত্র এবং তার সম্পদ পর্যবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার প্রয়োজন।


এবং এখনও, ফলাফল নেই

ঘটনার এই টাইমলাইন লক্ষ্য করলে এটা স্পষ্ট যে, সুন্দরবনের ক্ষেত্রে উভয় পক্ষই এই ভাগ করা বায়োস্ফিয়ার সংরক্ষণের যৌথ দায়িত্বকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য যথেষ্ট রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রদর্শন করেছে। যাই হোক, এই জাতীয় সদিচ্ছার বাস্তবায়ন কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ের থেকে অনেক কম। সক্রিয়তার এই অভাব আইইউসিএন মান অনুসারে বায়োস্ফিয়ারকে "
বিপন্ন " করে তুলেছে।

পরিবেশগত সমস্যাগুলি মানুষের কাজের ফলে সৃষ্ট বিপদ এবং জলবায়ুগত কারণগুলিকে তুলে ধরে৷ এর মধ্যে আছে
অনিয়ন্ত্রিত শিল্প কার্যক্রম থেকে উদ্ভূত বায়ু দূষণ, দায়িত্বজ্ঞানহীন বনায়ন ও অনৈতিক মুনাফাবৃত্তির কারণে দাবানল। উভয় দেশেই ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বনজ সম্পদের উপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করে। এটি সুপেয় জলের প্রাপ্যতার ঘাটতি এবং কৃষি উৎপাদন হ্রাসের দিকে চালিত করেছে। সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলেছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাবনা। এই নিচু উপকূলীয় অঞ্চল হাইড্রোলজিক্যাল চক্রের চরম পরিবর্তনশীলতার জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, যা ধ্বংসাত্মক ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যার দিকে চালিত করে। অবিরাম সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাবৃদ্ধি  অবদান রেখেছে লবণাক্ততার মাত্রা বৃদ্ধি এবং ভূমি নিমজ্জিত করার ক্ষেত্রেও , যা মানুষের জীবিকা এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীর বাসস্থানের ক্ষতির দিকে চালিত করেছে। ইন্ডিয়ান বেঙ্গল ডেল্টা (আইবিডি) ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভূখণ্ডগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত। অব্যাহত পরিবেশগত অবক্ষয় জলবায়ু অভিবাসনের আকারে মানব নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার উপর বিধ্বংসী প্রভাব ফেলতে বাধ্য। এই ধরনের বিধ্বংসী প্রবণতার মুখে এই অবনতির কারণগুলি খতিয়ে দেখার যোগ্য।



সূত্র:
সুন্দরবনের মানচিত্র  

প্রাতিষ্ঠানিকতা ও অগ্রাধিকার অসন্তোষ

২০১১ সালের সমঝোতা স্মারক থেকে সুন্দরবনে শাসন ব্যবস্থা খণ্ডিত করার প্রাথমিক কারণটি উদ্ভূত হয়েছিল। ভৌগোলিকভাবে সুন্দরবন কী নিয়ে গঠিত সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণার সাধারণ অভাব রয়েছে। বাংলাদেশে শব্দটি শুধুমাত্র বনাঞ্চলের সীমার জন্য প্রযোজ্য, যেখানে ভারতের জন্য শব্দটি
সমগ্র সংরক্ষিত সুন্দরবন জীবজগৎ বোঝায়। এটি দুটি দ্বৈত সমস্যার জন্ম দিয়েছে। ভারতের মধ্যে সুন্দরবন জীবমণ্ডল কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষাধিকারের অধীনে মনোনীত হলেও জনবসতি এলাকাগুলি — যা জীবজগতের মধ্যেই পড়ে — পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত। সুন্দরবন সম্পর্কিত বাধ্যবাধকতা এবং দায়িত্বের মধ্যে কেন্দ্র-রাজ্যের বিভাগের কারণে খণ্ডিত ব্যবস্থাপনা, যোগাযোগে বিলম্ব, কাজের দ্বৈততা এবং কর্তৃত্বের ফাঁকফোকর দিয়ে মুনাফাখোরদের জমি দখলের মতো ঘটনাও ঘটেছে। দ্বিতীয়ত, চুক্তির সুযোগকে বন সংরক্ষণের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে দেওয়ায় চুক্তিটি এই অঞ্চলে মানব নিরাপত্তা ও উন্নয়নের সম্পর্ক থেকে উদ্ভূত বৃহত্তর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়। উদাহরণস্বরূপ, যখন এমওইউ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করা এবং এই অঞ্চলে স্থিতিস্থাপকতা তৈরির একটি সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি বিকাশের কথা বলে, তখন অনেক অতি-‌জরুরি পরিবেশগত সমস্যা, যেমন সমুদ্রস্তর বৃদ্ধি, পলি প্রবাহ হ্রাস, ভূমি প্লাবন ও স্রোতপ্রবাহ হ্রাসের বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গিটিতে কোনও উল্লেখ নেই। এই চ্যালেঞ্জগুলি যেমন নিঃসন্দেহে এই অঞ্চলের উদ্ভিদ ও প্রাণীজগৎকে প্রভাবিত করে, তেমনই মানুষের জীবনের সুরক্ষার জন্য এর ব্যাপক বিস্তৃত পরিণতিও রয়েছে, যা এই চুক্তির আওতায় 'সুরক্ষিত ভূদৃশ্য'–এর বাইরে রয়েছে। ঝড়ের দাপটবৃদ্ধি, স্বাদু জলের হ্রাস, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং আইবিডি-‌তে ভূমি নিমজ্জিত হওয়ার কারণে হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছেন, অভিবাসন শুরু করেছে্ন, তাঁদের কৃষি জমি ধ্বংস হয়েছে এবং তাঁরা  একক ফসলের সংস্কৃতি গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছেন। এইভাবে, সমস্ত প্রাসঙ্গিক অংশীদারদের স্বীকৃতি না দেওয়ায় এবং এই বাস্তুতন্ত্রের উপর নির্ভরশীল বহু মানুষের জীবিকা নির্বাহের সমস্যাগুলির সমাধান না করায় এমওইউ-এর কার্যকরী প্রয়োগ সীমাবদ্ধ হয়ে গিয়েছে।

সুন্দরবনের শাসনব্যবস্থাকে প্রভাবিত করার গৌণ উপাদানটি যার সঙ্গে সম্পর্কিত তা হল ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক অ্যাজেন্ডায় আন্তঃসীমান্ত সম্পদ সুরক্ষার গুরুত্বের স্থান, আর তার সঙ্গে  প্রতিরক্ষা, অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং জাতীয় ও আঞ্চলিক উন্নয়নের মতো অন্য পরিসরগুলির গুরুত্বের তুলনা।


সুন্দরবনের শাসনব্যবস্থাকে প্রভাবিত করার গৌণ উপাদানটি যার সঙ্গে সম্পর্কিত তা হল ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক অ্যাজেন্ডায় আন্তঃসীমান্ত সম্পদ সুরক্ষার গুরুত্বের স্থান।



আন্তঃসীমান্ত সংরক্ষণ প্রচেষ্টার চেয়ে উন্নয়নমূলক উদ্দেশ্য ও প্রকল্পগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার একটি স্পষ্ট প্রবণতা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ,
২০২২ যৌথ বিবৃতিতে যেমন সুন্দরবনের জন্য জেডব্লিউজি-‌র কথা বলা হয়েছিল যাতে এই "বাস্তুতন্ত্র... স্থিতিশীলভাবে বাঁচতে পারে", তেমনই মৈত্রী (রামপাল) তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধনের কথাও ঘোষণা করা হয়েছিল। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে এই যৌথ উদ্যোগটি বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সবচেয়ে বড় কয়লা-‌চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির মধ্যে একটি হবে, এবং এটি দেশটির শক্তি নিরাপত্তা ১৩২০ মেগাওয়াট বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সীমান্তের উভয় পাশ জুড়ে এই প্রকল্পটি দুই প্রতিবেশীর মধ্যে শক্তি সহযোগিতার উদাহরণ হিসাবে প্রশংসিত হয়েছে।

যাই হোক, একটি সমন্বিত দল এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। সুন্দরবন সংরক্ষিত বনের সীমানা থেকে
মাত্র ১৪ কিমি দূরে অবস্থিত এই প্রকল্প থেকে শিল্পের প্রবাহ সুন্দরবনের উপর যে অস্থিতিশীল প্রভাব ফেলবে তার বিরুদ্ধে পরিবেশকর্মীরা সতর্ক করেছেন। গবেষকেরা দাবি করেছেন যে, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যকে অপরিবর্তনীয়ভাবে হুমকির মুখে ফেলবে। তবুও, নয়াদিল্লি ও ঢাকার শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা এই উন্নয়নমূলক উদ্যোগের সব পক্ষের লাভের প্রকৃতির উপর জোর দিয়ে ভূ-অর্থনৈতিক সুবিধার প্রকল্পটি তুলে ধরেন।

পরিশেষে, আন্তঃসীমান্ত ভূচিত্র নিয়ে কোন আলোচনাই এই ধরনের ভাগ করা আঞ্চলিক ভূখণ্ডকে শাসনের ছেদ-বিভাগীয় এবং অন্যান্য জটিল প্রকৃতির বিষয়ে আলোচনা ছাড়া সম্পূর্ণ হয় না। এই ধরনের ক্ষেত্রগুলির জন্য বিভিন্ন শক্তির সহযোগিতা এবং অনুকূল অবস্থার প্রয়োজন। এই নিবন্ধে যেমন বলা হয়েছে, সুন্দরবনকে প্রভাবিত করে এমন দুটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হল
মিষ্টি জলের স্তর হ্রাস এবং ভূমি নিমজ্জন । এই বিষয়গুলি বিতর্কিত ফরাক্কা ব্যারেজে দিয়ে সনাক্ত করা যেতে পারে। ১৯৭৫ সালে এর সূচনা হওয়ার পর থেকে, এই বিতর্কিত বাঁধটি এই অঞ্চলের পরিবেশগত ভূচিত্রকে আমূল বদলে দিয়েছে, গঙ্গা নদীর পলি জমার কার্যকলাপকে বাধাগ্রস্ত করেছে, এবং সুন্দরবন অঞ্চলের পাশাপাশি বাংলাদেশের জন্য মিষ্টি জলের নিঃসরণ নাটকীয়ভাবে হ্রাসে অবদান রেখেছে। দুটি চুক্তি ও বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা, এবং রাষ্ট্রপুঞ্জে উল্লেখ সত্ত্বেও কোনো দেশই জল বণ্টন অনুপাতের বিষয়ে এমন ঐকমত্যে পৌঁছতে সক্ষম হয়নি যা উভয় পক্ষের জন্যই সম্ভাব্য। এইভাবে, এই ইস্যুটি রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে থেকে যাওয়ায় সুন্দরবন জামানত-‌ক্ষতি হিসাবে ভুগছে।


এমনকি সুন্দরবনের মতো ক্ষেত্রেও, যেখানে সংশ্লিষ্ট দেশগুলি এই বাস্তুতন্ত্রের যৌথ প্রকৃতিকে স্বীকৃতি দিয়েছে, এর সংরক্ষণ প্রচেষ্টা নীতিগত বাধা ও বাস্তবায়ন বাধার সম্মুখীন হয়।



আন্তঃসীমান্ত বাস্তুতন্ত্র, ভূচিত্র ও সম্পদ একটি করুণ পরিণতি ভোগ করে। এটি
একটি সুপরিচিত সত্য যে এই জাতীয় প্রাকৃতিক সম্পদের অর্থপূর্ণ সংরক্ষণ ও বিকাশের জন্য এর পুরো ব্যয় পরিসরজুড়ে হওয়া উচিত। তবুও, এইসব ভূচিত্র যা আন্তর্জাতিক সীমানা পেরিয়ে ব্যাপ্ত, তা প্রায়ই প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় নীতি ও উদ্দেশ্যগুলির একটি ক্ষেত্র হয়ে ওঠে। এমনকি সুন্দরবনের মতো ক্ষেত্রেও, যেখানে সংশ্লিষ্ট দেশগুলি এই বাস্তুতন্ত্রের যৌথ প্রকৃতিকে স্বীকৃতি দিয়েছে, এর সংরক্ষণ প্রচেষ্টা নীতিগত বাধা ও বাস্তবায়ন বাধার সম্মুখীন হয়। অধিকন্তু, এই ধরনের চুক্তি তৃণমূলের বাস্তবতাকে অস্পষ্ট করে, এবং সংরক্ষণের বিষয়টিকে ভারতে ও বাংলাদেশে একটি সমজাতীয় ইস্যু হিসাবে উপস্থাপন করে, যা এই অঞ্চলে মানব নিরাপত্তার বিপজ্জনক অবস্থার প্রতিনিধিত্বকে হ্রাস করে। কোনও অংশীদারই দ্বিমত হবেন না যে 'এশিয়ার ফুসফুস' সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। গবেষণা আছে। প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো আছে। যার অভাব রয়েছে তা হল এই ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবন্ধকতা সরানোর জন্য এখানকার মানবিক ক্ষমতা ও সংস্থানগুলিকে কাজে লাগানোর দিকে একটি ধাক্কা।



রোশানি জৈন অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.