Published on Sep 11, 2025 Updated 0 Hours ago

নতুন চুক্তিগুলি চিনের অর্থনৈতিক গতিপথ পুনর্গঠন করাসঙ্গে সঙ্গে চিনের নীতিনির্ধারকরা বাণিজ্য পথ পরিবর্তন এবং অভ্যন্তরীণ সংস্কার সংক্রান্ত সমস্যার সঙ্গে যুঝছে।

বেজিংয়ের অর্থনৈতিক বিতর্কের গভীরে: বাণিজ্য যুদ্ধ এবং সুযোগ

২০২৫ সালের ১২ গস্ট মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় বারের মতো চিনের শুল্কের সময়সীমা বৃদ্ধি করার পর থেকে সম্ভাব্য ‘চিন-মার্কিন শুল্ক যুদ্ধবিরতি এবং এর প্রভাবের বিষয়টি বিশ্বব্যাপী উল্লেখযোগ্য মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। দেশের মধ্যে চিনা অভ্যন্তরীণ বলয়ে, এই বিষয়টি তীব্র বিতর্ক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। চিনা ভাষা সাহিত্যের অধ্যয়নের উপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদনটিতে বিদ্যমান চিন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধ, ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বেজিংয়ের অর্থনীতির ভবিষ্য নিয়ে চিনের অভ্যন্তরে চলতে থাকা জনসাধারণের আলোচনার সারমর্মের মূল্যায়ন করার চেষ্টা করেছে।

মার্কিন-চিন বাণিজ্য যুদ্ধ নিয়ে চিনা আখ্যান

চিনা গণমাধ্যম এবং চৈনিক বুদ্ধিজীবীদের একাংশের যুক্তি হল, শুল্ক যুদ্ধের ক্ষেত্রে ট্রাম্প ২.০-এর ছন্দপতন ঘটেছে। মনে হচ্ছে যে, ট্রাম্প এ বার ‘হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে এবং চিন ধীরে ধীরে মার্কিন-চিন বাণিজ্য সংঘাতের এই পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করছে।

ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতে অনেকেই আশা করেছিলেন যে, চিনের রফতানি বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক পতন অথবা বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে সামাজিক অস্থিরতা দেখা যাবে। তবে বাস্তবে চিনের জন্য ইতিবাচক পরিস্থিতি অব্যাহতই থেকেছে: বছরের প্রথমার্ধে চিনের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৫.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, প্রথম সাত মাসে রফতানি ৭.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ৬৮৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা ৩১.৯ শতাংশ বৃদ্ধি দর্শায়।

এটিকে মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিরোধে প্রথম বারের মতো চিনের দুর্দান্ত বিজয় হিসেবে দেখানো হয়েছে। এই ঘটনাপ্রবাহ দীর্ঘমেয়াদি মার্কিন-চিন প্রতিযোগিতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং এর ফলে দুটি বৃহৎ শক্তির মধ্যে স্থায়ী ভাবে পরিবর্তিত সমীকরণ তৈরি হবে।

মনে হচ্ছে যে, ট্রাম্প এ বার ‘হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন’ এবং চিন ধীরে ধীরে মার্কিন-চিন বাণিজ্য সংঘাতের এই পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করছে।

অন্য দিকে, ট্রাম্প প্রশাসন এখন পর্যন্ত যে সব বাণিজ্য চুক্তি করেছে, চিন সেগুলির উপর নজর রাখছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৫ সালের ২ জুলাই যখন যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনাম একটি চুক্তিতে পৌঁছয়, তখন চিন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। চুক্তিতে ভিয়েতনামের পণ্যের উপর ভিত্তি শুল্ক ৪৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছিল। তবে ভিয়েতনামের মধ্য দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিবহণ করা তৃতীয় পক্ষের পণ্যের উপর ৪০ শতাংশ শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ করা হবে। সর্বোপরি, ভিয়েতনাম মার্কিন পণ্যের জন্য শূন্য শুল্ক-সহ তার বাজার উন্মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ভিয়েতনাম চুক্তির পর চিনা কৌশলগত সম্প্রদায় জোর দিয়ে বলেছে যে, ভিয়েতনামের নজির স্থাপন করা উচিত নয় এবং ‘চিনের নিজের নাগাল থেকে আরও সুযোগ হাতছাড়া করা উচিত নয়

চিনের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও একের পর এক অন্যান্য চুক্তি হয়েছে। জুলাইয়ের শেষ নাগাদ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাজ্য, ভিয়েতনাম, জাপান, ফিলিপিন্স  এবং ইন্দোনেশিয়া-সহ পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তির সমাপ্তি ঘোষণা করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-জাপান চুক্তির আওতায় জাপান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য তার বাজার উল্লেখযোগ্য ভাবে উন্মুক্ত করতে সম্মত হয়েছে - বিশেষ করে মোটরগাড়ি কৃষি খাতে – এবং এর পাশাপাশি জাপানের সরবরাহ শৃঙ্খলের জন্য চিনের উপর  নির্ভরতা হ্রাস পেয়েছে

ফিলিপিন্স মার্কিন পণ্যের উপর থেকে প্রায় সম্পূর্ণ শুল্ক মকুব করেছে, এমনকি সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে এবং তার পরেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ফিলিপিন্সের আমদানির উপর ১৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে (পূর্বে হুমকি দেওয়া ২০%-এর চেয়ে সামান্য কম, তবে এখনও তার পরিমাণ যথেষ্ট বেশি)।

উল্লেখযোগ্য ভাবে, ইন্দোনেশিয়া মার্কিন সংস্থাগুলির জন্য অসংখ্য বাণিজ্য বাধা  অপসারণ করতে বাধ্য হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে কৃষি পণ্য পরিদর্শন অপসারণ, মার্কিন শংসাপত্র গ্রহণ, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের উপর রফতানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং মার্কিন তেল, গ্যাস কৃষি পণ্য ক্রয়। তা ছাড়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাজারে নেই এমন অর্থনীতি’ (নন-মার্কেট ইকোনমি অর্থাৎ চি ভিয়েতনাম) থেকে উপাদান ধারণকারী ইন্দোনেশিয়ান পণ্যের উপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে।

চিনের সামগ্রিক ধারণা হল এই যে, তার উদ্যোগ/পুনঃরফতানি বাণিজ্যিক পরিসর একেবারে মৃতপ্রায়

২৫তম চিন-ইইউ নেতাদের বৈঠকের জন্য চিন সফর শেষ করার পরপরই ইইউ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করায় চিন অসন্তোষ প্রকাশ করেছে, যার মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা পণ্যের উপর ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ ছাড়াও চুক্তিতে ইইউ-এর তরফে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং মোট ৭৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম জ্বালানি পণ্য ক্রয়ের পরিকল্পনার রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে। চিনা কৌশলগত সম্প্রদায়ের যুক্তি অনুযায়ী, ই পরিস্থিতি আসলে মনে করিয়ে যে, ট্রাম্প ২.০-কে মোকাবিলা করার জন্য ইউরোপের উপর নির্ভর করার বিষয়ে চিনের খুব বেশি বিভ্রান্তি থাকা উচিত নয়।

চিনের সামগ্রিক ধারণা হল এই যে, তার উদ্যোগ/পুনঃরফতানি বাণিজ্যিক পরিসর একেবারে মৃতপ্রায়। ২০২৪ সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চিনের ১৫ শতাংশ রফতানি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মাধ্যমে পুনঃরফতানি করা হচ্ছিলকিন্তু নতুন বাণিজ্য চুক্তিগুলির দরুন এই পথটি সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ দিকে, চিন-মার্কিন সরাসরি বাণিজ্য আলোচনার ক্ষেত্রে এই চুক্তিগুলি চিনের প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আস্থাকে আরও জোরদার করছে এবং আরও দৃঢ় অবস্থানের দিকে পরিচালিত করছে বলে মনে হচ্ছে, যার ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ভবিষ্য কাঠামো পরিবর্তন হচ্ছে এবং চিনের জন্য প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।

দেশীয় অর্থনীতি নিয়ে বিতর্ক

দেশীয় ভাবে চিনে তীব্র ‘বিনিয়োগ বনাম ভোগ বিতর্ক’ দেখা যাচ্ছে, যেখানে মানুষ প্রশ্ন তুলছে যে, চিআর কত দিন ‘অতিরিক্ত বিনিয়োগ এবং অত্যন্ত কম পরিমাণে ভোগ করা নীতি নিয়ে চলতে পারবে। এই প্রেক্ষাপটে, গত কয়েক দশক ধরে চিনের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী স্থানীয় সরকারগুলির ভূমিকা ক্রমশ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

যুক্তি দেওয়া হচ্ছে যে, চিন ঘাটতি অর্থনীতি থেকে উদ্বৃত্ত অর্থনীতিতে স্থানান্তরিত হলেও, স্থানীয় সরকারগুলি তাদের মূল প্রতিযোগিতামূলক হিসাবে সক্ষমতা সম্প্রসারণকে অগ্রাধিকার দিয়ে চলেছে, যার ফলে বিভিন্ন শিল্পে অতিরিক্ত সক্ষমতা তৈরি হয়েছে। এর আগে ইউরোপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তারা চিনা পণ্যের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ব্যবহার করতেন। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে আরোপিত আগ্রাসী শুল্ক এবং চিনা পণ্যের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী চাপের ফলে চিনা অর্থনীতিতে তীব্র অভ্যন্তরীণ বিপর্যয়ের প্রবণতা দেখা দিয়েছে।

এই অভ্যন্তরীণ বিপর্যয়ের ফলে পণ্যের দাম কমেছে এবং শিল্প জুড়ে চিনা ব্যবসার মুনাফার পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্তরে উৎপাদক মূল্য সূচকের (পিপিআই) ক্রমাগত পতনের মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করেছে, যা সংস্থাগুলিকে অলাভজনক বা এমনকি অর্থ হারানো সত্ত্বেও উৎপাদন সম্প্রসারণ বা বজায় রাখতে বাধ্য করেছে, যা একটি সাধারণ অভ্যন্তরীণ বিপ্লবী চক্রের সূচনা ঘটিয়েছে।

চিন তার পুরনো উন্নয়ন মডেল থেকে নতুন মডেলে রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করছে, যার মূল চালিকাশক্তি হল অভ্যন্তরীণ সঞ্চালন। এর অর্থ হল চিনের বাজার চিনের প্রবৃদ্ধি বিশ্ব অর্থনীতিতে এর ভূমিকার নেতৃত্ব দেবে।

চিন সরকার একটি জাতীয় ঐক্যবদ্ধ বাজার নির্মাণের প্রচারও করছে এবং চিনা অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার জন্য একটি বড় সংস্কার হিসেবে বিপ্লবীপ্রতিযোগিতা ব্যাপক সংশোধন করছে। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য বছরের শুরু থেকে বিভিন্ন নির্দেশিকা অর্থনৈতিক কাজের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

চিনের উন্নয়ন ১.৪ বিলিয়ন জনসংখ্যার ভারতীয় বাজারের বিশাল সম্ভাবনাকে উপেক্ষা করতে পারে না... চিনা ব্যবসাগুলির মুনাফা একটি বৃহত্তর বাজার প্রয়োজন

কেন্দ্রীয় সরকার থেকে স্থানীয় সরকারগুলিকে আগে অর্পিত কিছু অর্থনৈতিক ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকার বা বাজার শক্তির (প্রধানত উদীয়মান শিল্পগুলিতে) কাছে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত কি না, তা নিয়ে উল্লেখযোগ্য আলোচনা চলছে, যাতে চিনে ভোগ বৃদ্ধি, দাম স্থিতিশীল করা এবং আরও স্থিতিশীল অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রচারে সরাসরি প্রভাব ফেলা যায়। কিন্তু উচ্চাভিলাষী সংস্কারমূলক ধারণাগুলিও কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। কারণ সর্বশক্তিমান স্থানীয় সরকার দ্বারা প্রভাবিত চিনের বিদ্যমান আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ভূ-পরিসর এই ধরনের পরিবর্তনের বিপরীতে দাঁড়িয়ে আছে।

ভারত-মার্কিন বাণিজ্য উত্তেজনা নিয়ে আলোচনায় চিন দীর্ঘদিন ধরে ভারতের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য আলোচনার উপর কড়া নজর রেখেছে, যা চিনের বিশ্বাস, বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল ভূ-অর্থনৈতিক দৃশ্যপটের উপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে, যার ফলে মূলত চিনেরই ক্ষতি হবে। ২০২৫ সালের মে মাসের গোড়ার দিকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনার প্রথম পর্যায়ের জন্য রেফারেন্স কাঠামোর উপর ভারতের একটি চুক্তি ঘোষণার পর চিন ভারতের জন্য কঠোর সতর্কবার্তা জারি করে। ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করা এবং চিনা স্বার্থকে কার্যত পাত্তা না দেওয়া’র বিষয়ে ভারতকে সতর্ক করে। পরবর্তী মাসগুলিতে চিন সরাসরি বিরল খনিজ পদার্থের উপর নিষেধাজ্ঞা এবং বিনিয়োগ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ভারতকে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এখন মার্কিন-ভারত সম্পর্ক স্থগিত হয়ে যাওয়ায় কিছু চিনা কৌশলবিদ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, চিন-ভারত অর্থনৈতিক সহযোগিতা আগ্রাসী ভাবে এগিয়ে নেওয়ার জন্য অবশেষে একটি সুযোগএসেছে। এমন এক সময়ে যখন রফতানি বাজার দ্রুত সঙ্কুচিত হচ্ছে এবং অভ্যন্তরীণ ভোগ এখনও দিশা পাচ্ছে না, তখন ‘চিনের উন্নয়ন ১.৪ বিলিয়ন জনসংখ্যার ভারতীয় বাজারের বিশাল সম্ভাবনাকে উপেক্ষা করতে পারে না... চিনা ব্যবসাগুলির মুনাফা একটি বৃহত্তর বাজার প্রয়োজন’। শিল্প-পন্থী রব তুলতে পারদর্শী এবং ভারত-চিন সম্পর্কের নিয়মিত ভাষ্যকার চেন জিং পর্যবেক্ষণ করে এমনটাই বলেছেন। তিনি আরও বলেন যে, চিনকে ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী অবস্থান থেকে দর কষাকষি করতে হবে এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর ন্যূনতম পর্যায়ে থাকা অবস্থায় ভারতে চিনা পুঁজির লাভ নিশ্চিত করতে হবে। তবে অন্যরা ক্রমবর্ধমান মার্কিন অর্থনৈতিক আধিপত্য মোকাবিলায় চিন ও ভারতের হাত মেলানোর সম্ভাবনা নিয়ে কিছুটা সন্দিহান। বর্তমান বাণিজ্য ও শুল্কের পার্থক্য সত্ত্বেও চিনকে মোকাবিলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের স্বার্থের একটি শক্তিশালী সমন্বয় রয়েছে। তাদের যুক্তি হল এই যে, চিন-ভারত পুনঃসম্পর্ক কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় ভারতের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন আকর্ষণীয় প্রস্তাব দেবে, তখন ভারত অবশ্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তি সম্পন্ন করার জন্য চিনের স্বার্থের অনুকূলে বাণিজ্য করবে।

ভারত যখন চিনের সঙ্গে তার অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা পুনর্নির্মাণের লক্ষ্যে রয়েছে, তখন চিনে বেজিংয়ের পদক্ষেপের অন্তর্নিহিত অর্থনৈতিক আলোচনা আরও বিশদ ভাবে অধ্যয়ন করতে হবে।

 


অন্তরা ঘোষাল সিং অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ফেলো।


নিবন্ধে প্রকাশিত মতামত লেখক(দের) ব্যক্তিগত।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.