Published on Jan 27, 2022 Updated 0 Hours ago

ভারত সরকারের উচিত পুরসভাগুলির মধ্যে অসাম্যের সমস্যার মোকাবিলা করা, এবং নগর প্রশাসনকে উন্নত করার জন্য আরও ভাল সুযোগের ব্যবস্থা করা।

ভারতীয় শহরগুলি — আংশিক গণতন্ত্রীকরণের ফলে রুদ্ধগতি

যার পরিমাপ করা হয়, তা আরও ভাল কাজ করে। এটি একটি কারণ হতে পারে যার জন্য ভারতে পুরসভাগুলির মোট প্রাপ্ত অর্থের মধ্যে নিজস্ব রাজস্বের অংশ দীর্ঘ সময় ধরে ক্রমাগত কমছে। ২০০২-০৩ সালে যা ছিল ৬৩ শতাংশ, তা ২০০৭-০৮ সালে কমে গিয়ে হয় ৫৩ শতাংশ, এবং ২০১৭-১৮ সালে গিয়ে দাঁড়ায় ৪৩ শতাংশে। এর ফলে প্রয়োজন ও সম্পদের মধ্যেকার ব্যবধান পূরণ করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা (১২ শতাংশ, যার মধ্যে কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের অনুদান ছিল ৭ শতাংশ ও অন্যান্য অনুদান ৫ শতাংশ), রাজ্য সরকারের টাকা (৩৩ শতাংশ) ও ঋণের (২ শতাংশ) মাধ্যমে৷ জাতীয় পর্যায়ে পৌর শাসনের দিকে নজর রাখা হয় না। বেশিরভাগ রাজ্য পুরসভাকে তাদের বিকেন্দ্রীভূত স্থানীয় কার্যালয় হিসেবে দেখে, সরকারের তৃতীয় স্তর হিসেবে নয়। এমনকি ১৯৯২ সালের সংবিধানের ৭৪তম সংশোধনীও রাজ্য সরকারগুলির পরিপ্রেক্ষিতে পৌর স্বায়ত্তশাসনকে গণ্ডিবদ্ধ করে রেখেছে।

কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির ক্ষেত্রে সংসদীয় গণতন্ত্রের যে বলিষ্ঠ রূপটি দেখা যায়, পুরসভাগুলিতে তা অনুপস্থিত। অধিকাংশ পুরসভায় মেয়র নির্বাচিত হন না। রাজ্য সরকারগুলি মেয়র নিয়োগের শর্তাবলি নির্ধারণ করে, এবং মেয়াদ হয় সাধারণত বার্ষিক বা দুই বছরের, যেখানে নির্বাচিত পুরসভার পূর্ণ মেয়াদ পাঁচ বছরের। এর ফলে পৌর রাজনৈতিক নেতৃত্ব দুর্বল হয়।

বেশিরভাগ রাজ্য পুরসভাকে তাদের বিকেন্দ্রীভূত স্থানীয় কার্যালয় হিসেবে দেখে, সরকারের তৃতীয় স্তর হিসেবে নয়।

এ কথা অনস্বীকার্য যে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির কাজের চার দশকের মাথায় পুরসভাগুলি কাজ শুরু করেছে। স্থানীয় বনাম প্রাদেশিক বা জাতীয় গণতান্ত্রিক স্থাপত্যের মধ্যে কিছু অসামঞ্জস্যের কারণ হল এই গণতান্ত্রিক পরীক্ষার নতুনত্ব। কিন্তু আইনের দ্বারা সৃষ্ট পৌর ঐতিহ্য পূর্বতন মাদ্রাজে ১৬৮৮ সালের। উনিশ শতকের শেষের দিকে সীমিত গণতন্ত্রকে ‘সেফটি ভাল্‌ভ’‌ হিসেবে ব্যবহার করার ঔপনিবেশিক নীতির কারণে পুরসভাগুলি নির্বাচিত সভাপতি পেয়েছিল। তাই নতুনত্বের বিষয়টির চেয়েও বড় কথা হল স্থানীয় শাসনকে ইচ্ছাকৃত ভাবেই দুর্বল করে রাখা হয়েছে।

রাজ্য সরকারগুলি সম্পত্তি কর ও বিভিন্ন সুবিধা ব্যবহারের ফি ধার্য করার ক্ষমতা ছাড়া আর কোনও কর বসানোর ক্ষমতা পুরসভাকে ছাড়তে নারাজ। দ্বিতীয়ত, রাজ্য সরকারের প্যারাস্টেটালগুলি, যার জন্য রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকার সরাসরি টাকা দেয় (স্মার্ট সিটি মিশন), বিভিন্ন জনসেবা পরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করে। এর মধ্যে আছে জল সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা, বড় সড়ক ও সেতু নির্মাণ, পরিবহণ পরিষেবা, অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ সরবরাহ, এবং এখন ই-মোবিলিটি।

এই ভাবে প্রশাসনিক ক্ষেত্রে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার ঘটনা কার্যক্ষেত্রে পৌরশাসনকে বাদ দিয়ে দেয়, এবং এর কার্যকরী পরিসরকে সংবিধানের দ্বাদশ তফসিলে উল্লেখিত ১৮টি কাজেরও নিচে নামিয়ে দেয়। উপরন্তু, চতুর ভাবে পরিকল্পিত প্রশাসনিক বাধাগুলি নির্বাচিত পৌর প্রতিষ্ঠানগুলির স্বায়ত্তশাসনের ক্ষমতা সীমায়িত করে।

রাজ্য সরকার পুরসভায় প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা বা সিইও নিয়োগ করে, যদিও কখনও কখনও তা করা হয় মেয়রের সঙ্গে পরামর্শ করার পর। এই সিইও সর্বদাই হন উচ্চপদস্থ কেন্দ্রীয়/রাজ্য স্তরের প্রশাসনিক কর্মীদের একজন যাঁকে পুরসভায় পাঠানো হয়। দ্বিতীয়ত, এমনকি সিনিয়র টেকনিক্যাল পৌর কর্মীদের জন্যও কাডার–নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ হল রাজ্য সরকার। তৃতীয়ত, নির্বাচিত কাউন্সিল বা মেয়রের সম্মতি ব্যতিরেকেই রাজ্য সরকার সরাসরি সিইও–কে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে কাজ করার নির্দেশ দিতে পারে। সংস্কার কিন্তু রাজ্য সরকারগুলির রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করা পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি। ২০২০–র বৃহৎ বেঙ্গালুরু মহানগর পালিকে আইন অনুযায়ী মুখ্য কমিশনার (সিইও)–কে রাজ্য সরকার ও মেয়র উভয়ের কাছে রিপোর্ট করতে হবে, এবং জোনাল অফিসারদের মেয়র ও মুখ্য কমিশনার উভয়ের কাছে রিপোর্ট করতে হবে। একজন বিশেষজ্ঞ মন্তব্য করেছেন, ‘‌‘‌এ এক অদ্ভুত ব্যবস্থা যা চেন অফ কমান্ডকে ধ্বংস করবে এবং ঘন ঘন অচলাবস্থা ডেকে আনবে।’‌’‌ এখনকার রাজনৈতিক স্থাপত্য পুরসভাগুলির জন্য আদর্শ স্তরে পৌঁছয়নি। এটি নাগরিক শাসনকে উন্নত করার জন্য স্থানীয় উদ্ভাবন বা দক্ষতার ব্যবহারের তেমন সুযোগ দেয় না, এবং পুরসভাগুলির অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ও কর আদায়ের সম্ভাবনার পূর্ণ সদ্ব্যবহারকেও নিরুৎসাহিত করে। রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারগুলিকে পরিকল্পনা ও অর্থায়নের পরিকাঠামো তৈরি করা বা গণ–পরিষেবা প্রদানে নেতৃত্ব দিতে দেওয়া অপ্রয়োজনীয় ও বর্জনীয়, কারণ শহরগুলির অভ্যন্তরীণ দক্ষতা ও সম্পদ সরাসরি ব্যবহার করা যেতে পারে।

রাজ্য সরকার পুরসভায় প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা বা সিইও নিয়োগ করে, যদিও কখনও কখনও তা করা হয় মেয়রের সঙ্গে পরামর্শ করার পর। এই সিইও সর্বদাই হন উচ্চপদস্থ কেন্দ্রীয়/রাজ্য স্তরের প্রশাসনিক কর্মীদের একজন যাঁকে পুরসভায় পাঠানো হয়।

২০১০ সালে জিডিপি’‌র প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এসেছিল শহরগুলি থেকে, এবং ২০১১ সালে জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ছিলেন শহরবাসী। তাই, শহরগুলোকে উপেক্ষার অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক পরিণতি তুচ্ছ করার মতো নয়। কিন্তু সব দলই পূর্ণ পৌর স্বায়ত্তশাসনে বাধা দিয়ে চলেছে। এটাও কোনও আশ্চর্যের কথা নয় যে উচ্চাকাঙ্ক্ষী রাজনীতিবিদদের একেবারে শেষ পছন্দ হল পৌর রাজনৈতিক অফিস, কারণ তাঁরা শহরগুলির নিম্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক অর্থনীতির ভারসাম্যের ফাঁদে আটকা পড়ার ভয় পান।

পৌর–পর্যায়ে দূরদর্শী, রাজনৈতিক নেতৃত্বের অভাবের পরিণতি হল শহরগুলির জন্য ভাঙাভাঙা, নকলনবিশ ও আমলাতান্ত্রিক ২০ বছরের পরিকল্পনা, যা পরিকল্পনার পশ্চাদমুখী মডেল ও ন্যূনতম আকাঙ্ক্ষা দ্বারা সীমাবদ্ধ। ভূমি ও নগর পরিকল্পনা আইনগুলির অনমনীয়তার কারণে ব্যবহারের প্রকৃতি অনুসারে জমিকে বিভক্ত করার একটি নিশ্চল মডেল তৈরি হয়, এবং তারপরে তা জমি–উন্নয়নকে আলগা ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে। এই ঘটনা প্রায়শই বাজারের অনুপ্রেরণার ভিত্তিতে একটি শহরের উন্নয়নের গতিশীলতাকে খর্ব করে।

মাটির বাস্তবতার সঙ্গে সমন্বয়হীন পরিকল্পনার সব থেকে ভাল উদাহরণ হল অনুভূমিক নগর বিস্তৃতি। দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক সীমাবদ্ধতাগুলি তৈরি করে ‘‌পরিকল্পনা নৈরাশ্যবাদ’‌, আর তা প্রতিফলিত হয় ক্রমাগত উল্লম্ব উন্নয়নকে নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মবিধির মধ্যে। এই ভাবে পরিষেবার ঐতিহাসিক ক্ষমতা অনুযায়ী জনসংখ্যার পরিমাণ বেঁধে রাখার চেষ্টা করা হয়। ফলে প্রক্রিয়াটি শেষ অবধি নিম্নমানের আবাসনের অনুভূমিক বিস্তৃতিকে উৎসাহিত করে, যা উচ্চতর দক্ষতার মাধ্যমে নির্দিষ্ট স্থানটিতে মৌলিক পরিষেবা সরবরাহ বাড়ানোর সম্ভাবনাকে কাজে তো লাগায়ই না, পরিবর্তে পরিষেবার সুষম বণ্টনের প্রশ্নে আরও ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় পরিবহণের ধরন ব্যক্তিগত থেকে গণ–পরিবহণে পরিবর্তন করে (লন্ডন এবং সিঙ্গাপুর) যানজট কমানো, ছিদ্র কমিয়ে পানীয় জলের সরবরাহ বাড়ানো, পরিশেষ-ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশি দক্ষ যন্ত্রপাতি ব্যবহার, শোধিত জলের পুনঃসঞ্চালনের জন্য স্যানিটেশন ও পয়ঃনিষ্কাশনের অতিরিক্ত বিকেন্দ্রীকৃত সম্প্রদায়-ভিত্তিক ব্যবস্থাপনা, এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বর্জ্য বা সৌর শক্তির ব্যবহার (সান ফ্রান্সিসকো)।

ভূমি ও নগর পরিকল্পনা আইনগুলির অনমনীয়তার কারণে ব্যবহারের প্রকৃতি অনুসারে জমিকে বিভক্ত করার একটি নিশ্চল মডেল তৈরি হয়, এবং তারপরে তা জমি–উন্নয়নকে আলগা ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে।

পুরসভাগুলির আর্থিক দুর্বলতার কারণ হিসেবে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রয়োজনের চেয়ে কম টাকা বরাদ্দ করা, এবং এমনকি বড় পুরসভাগুলিরও কম কর–রাজস্ব আদায়ের ঘটনার উল্লেখ করা যেতে পারে। এই দুটি ঘটনা ‘‌ব্রোকেন উইন্ডো এফেক্ট’‌ দিয়ে সংযুক্ত:‌ স্থায়ী আর্থিক ভারসাম্যহীনতার ফলে জনসাধারণের পরিষেবার মানের অবনতি হয়, এবং নাগরিকদের প্রত্যাশা ও কর–রাজস্ব কমে যেতে থাকে। বাড়তি কেন্দ্রীয়/রাজ্য অনুদান পাওয়ার সঙ্গে স্থানীয় কর–রাজস্ব সংগ্রহের কাজের উন্নতি ঘটার বিষয়টির প্রমাণ আছে।

২০১৭-১৮ সালে পুরসভাগুলির নিজস্ব রাজস্বের প্রায় ৫৯ শতাংশ ছিল কর। কর–রাজস্বে সম্পত্তি করের অংশ ছিল ৫৯ শতাংশ। সম্পত্তি কর সংগ্রহ জিডিপি–র ০.১৫ শতাংশ ছিল, যা যথেষ্ট কম;‌‌ কারণ এ ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলির গড় হল জিডিপি–র ০.৬ থেকে ০.৭ শতাংশ, এবং ওইসিডি দেশগুলিতে জিডিপি–র ২ শতাংশের বেশি। জমির দাম হুহু করে বেড়ে চললেও সম্পত্তি করের হার কম থাকে এবং তা প্রায়শই ব্যবহারের প্রকৃতির সঙ্গে সংযুক্ত হয়; যেমন, বাড়ি স্ব-মালিকানাধীন, কম তলবিশিষ্ট এবং অস্থায়ী হলে করের হার থাকে সর্বনিম্ন। এর ফলে বাজারের সঙ্কেতকে ভোঁতা করে দেওয়া হয়, যা কিনা অন্যথায় সমষ্টিগত উল্লম্ব বৃদ্ধি‌কে উৎসাহিত করতে পারে বা উচ্চ মূল্যের জমিতে ‘‌‌ঘনত্ব’‌ বাড়াতে পারে।

এমন নয় যে শহরের ব্যবস্থাপকেরা শহুরে জমির দামের ঊর্ধ্বগতি ও সম্পত্তি করের নিশ্চল হারের মধ্যে অসামঞ্জস্য সম্পর্কে সচেতন নন। কিন্তু দূরদর্শী স্থানীয় নেতৃত্ব না–থাকায় চলতি নিম্ন-স্তরের ভারসাম্যকে বদলানোর প্রশ্নে অক্ষমতা তৈরি হয়, কারণ ভয় থাকে জনগণ ক্ষুব্ধ হলে রাজনৈতিক সমর্থন থাকবে না। এখন বাতিল হয়ে–যাওয়া সংস্কারবাদী ‘‌কৃষি আইন’‌–এর বিরুদ্ধে ‘‌সফল’‌ আন্দোলন আমলাতন্ত্রকে আরও ভুল শিক্ষা দেয়।

সম্পত্তি কর দুটি কারণে বাধার মুখে পড়ে। প্রথমত, করদাতারা আগেই কেন্দ্রীয় সরকারকে সম্পত্তিতে মূলধনী লাভের উপর (বিক্রয়ের সময়) কর দেয়। সুতরাং, মূল্যবৃদ্ধিজনিত সুবিধার সঙ্গে সংযোগহীন সম্পত্তি–মূল্যের উপর কোনও বার্ষিক কর জনপ্রিয় হয় না, যদি না তা কম হারে আরোপ করা হয়। শহরে পানীয় জল সরবরাহ ও নর্দমা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আলাদা ভাবে টাকা নেওয়া হয়। যাঁদের পোষা প্রাণী থাকে তাঁদের একটি পৃথক বার্ষিক ফি দিতে হয়। পৌর কর্তৃপক্ষ রাস্তার পাশের বিক্রেতা ও রাস্তার বাজার থেকেও ফি আদায় করে। কিন্তু বেশি টাকা তুলে নিয়ে যায় রাজ্য সরকার যা পুলিশি ব্যবস্থা, রাস্তা ও সেতু নির্মাণ, অগ্নিনির্বাপক পরিষেবা, বর্জ্য শোধন এবং পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা বজায় রাখার মতো কাজ করে, এবং সেই বাবদ মোটরচালিত যানবাহনের মালিকদের কাছ থেকে সড়ক কর আদায় করে, সম্পত্তি হস্তান্তরের সময় স্ট্যাম্প শুল্ক নেয়, এবং বিনোদন কর তোলে। এখন অবশ্য এগুলো সবই হয়ে গেছে পণ্য ও পরিষেবা কর (‌জিএসটি)‌।

জমির দাম হুহু করে বেড়ে চললেও সম্পত্তি করের হার কম থাকে এবং তা প্রায়শই ব্যবহারের প্রকৃতির সঙ্গে সংযুক্ত হয়; যেমন, বাড়ি স্ব-মালিকানাধীন, কম তলবিশিষ্ট এবং অস্থায়ী হলে করের হার থাকে সর্বনিম্ন।

সম্পত্তি করের হার দ্বিগুণ করা যেতে পারে, যদি প্রতিটি ওয়ার্ডে সংগ্রহের অন্তত অর্ধেক টাকা এমন নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয় যা সরাসরি করদাতার সম্পত্তির মূল্য বাড়ায়:‌ রাস্তার আলো, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিষেবা, পাবলিক পার্কের রক্ষণাবেক্ষণ, খেলার মাঠ, নীল-সবুজ এলাকা, ই-নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক, সেতুর উপর ও নিচে পথচারীদের জন্য রাস্তা এবং যানজট কমাতে ইনটেলিজেন্ট ট্রাফিক সিগন্যাল।

এ ছাড়া যদি ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হয় এবং তাদের বার্ষিক ভিত্তিতে প্রস্তাবিত বরাদ্দে সম্মতি দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়, তবে তা সহায়ক হবে। পরামর্শমূলক ব্যয় ব্যবস্থাপনার জন্য একটি চিহ্নিত কাঠামোর দ্বারা অংশগ্রহণমূলক বাজেটিং অবশ্যই উৎসাহিত করা উচিত। বেঙ্গালুরু শহর সুদূরপ্রসারী সংস্কার করেছে সম্পত্তি করের হার নির্ধারণের এবং জিআইএস ব্যবহার করে মূল্যায়ন ও কর সংগ্রহের ক্ষেত্রে, এবং তার ফলে ২০০৭–০৮ থেকে ২০১০–১১ সালের মধ্যে মূল্যায়ন করা সম্পত্তির সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ১২ লক্ষে, ও সম্পত্তি কর বাবদ রাজস্ব ২.৬ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ভারতীয় শহরগুলির মধ্যে আকার, আর্থিক ক্ষমতা ও আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটের ব্যাপক পার্থক্য আছে। কাজেই একটি একক আদর্শ সমাধান খুঁজে বের করা কঠিন:‌ শুধু একটা সাধারণ খামতির কথাই বলা যায়, এবং তা হল এই যে অসম্পূর্ণ গণতন্ত্রীকরণ শহরগুলির নিজস্ব জীবনীশক্তি শুষে নিচ্ছে। শহরের এলিটরাও এক্ষেত্রে দায়ী, কারণ তাঁরা এই বৈষম্য ও নিম্নমানের গণ–পরিষেবার চক্রকে উপেক্ষা করছেন শুধু এই কারণে যে তাঁরা ‘‌ব্যক্তিগত পরিষেবার বুদ্বুদ’‌–এ নিজেদেরকে বন্দি করে ফেলতে পারেন৷ এই ‘‌ব্যক্তিগত বুদবুদ’‌গুলি কোভিড-১৯ অতিমারি চলাকালীন ফেটে যায়, যা সমস্ত আয়–শ্রেণিকে আঘাত করে। এরপর আমরা যেন পুরসভাগুলির বৈষম্যের মূল কারণগুলির (‌কাঠামোগত ও আর্থিক)‌ বিরুদ্ধে পরবর্তী নাগরিক বিপর্যয়ের জন্য অপেক্ষা না–করি। ক্ষমতাসম্পন্ন স্থানীয় নেতৃত্ব ছাড়া পুরসভাগুলি থেকে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি, চাকরি ও উদ্ভাবন উৎসারিত হতে পারে না।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.