Published on Oct 15, 2024 Updated 0 Hours ago

ভারত-মলদ্বীপ সম্পর্কের টানাপড়েন সত্ত্বেও চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর ব্যবস্থা ফের শুরু করা এবং অর্থনৈতিক আলোচনার মতো সাম্প্রতিক সম্পৃক্ততা দুই দেশের সম্পর্কের উষ্ণতার ইঙ্গিত দেয়

ভারত-মলদ্বীপ সম্পর্ক: সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ এবং কূটনীতিতে পরিবর্তন

২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে দায়িত্ব নেওয়ার পর তাঁর প্রথম স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু সম্প্রতি তাঁর দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করার জন্য ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি ভারত এবং চিনকে একই বন্ধনীতে রেখেছিলেনতবে এটি তাঁর সরকারের সাম্প্রতিক অবস্থান, যেমন নয়াদিল্লি বেজিংয়ের সঙ্গে একযোগে অতিরিক্ত নৈকট্যের প্রেক্ষিতে, বিশেষ করে তাঁর শাসনের প্রথম মাসগুলিতে সংবেদনশীল নিরাপত্তার বিষয়ে অনেক কিছুই দর্শিয়েছে।

সম্প্রতি মুইজ্জু ভারতীয় হাইকমিশনার মুনু মাহাওয়ারকে অভ্যর্থনা জানান, যা আগামী দিনে সম্পর্কটি কী ভাবে গড়ে উঠবে, তারই ইঙ্গিত বহন করে। এই অভ্যর্থনারই রেশ ধরে মুইজ্জু তাঁর বর্তমানে সম্পর্ক-বিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনের নির্দিষ্ট অনুরোধে নয়াদিল্লির উপহার দেওয়া একটি ডর্নিয়ার বিমান ব্যবহার করে চিকিৎসার প্রয়োজনে স্থানান্তরের বিষয়টি পুনর্নিশ্চিত করে। তবে এমনটা ঘটেছে এর আগে মে মাসে ভারতীয় সামরিক পাইলটদের বেসামরিক কর্মী দ্বারা প্রতিস্থাপনের পর। মুইজ্জু পাইলট প্রতিস্থাপনকে গত বছর তাঁর ভোটের প্রতিশ্রুতির একটি অংশ করে তুলেছিলেন এবং তার পর বর্তমানে ব্যবস্থা পুনর্বহালের জন্য তিনি নয়াদিল্লিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এমনটা ঘটেছে সোশ্যাল মিডিয়া ভারত বিরোধী অংশের বেসামরিক পাইলটদের দিয়ে ডর্নিয়ার চালানোর বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে গেল এমন রব তোলার পর।

পালাক্রমে মলদ্বীপের পর্যটন মন্ত্রী ইব্রাহিম ফয়সাল নভেম্বর মাসে শুরু হওয়া নতুন মরসুমে পর্যটকদের আগমন বৃদ্ধির জন্য দিল্লি, মুম্বই এবং বেঙ্গালুরুতে পাঁচ দিনের রোডশোতে দেশটির ভ্রমণ বাণিজ্য দলের নেতৃত্ব দেন। পর্যটন হল দ্বীপদেশটির অর্থনৈতিক মূল ভিত্তি। মলদ্বীপ পর্যটনের নিরিখে ভারতীয় বাজারই ছিল প্রধান আয়ের উৎস। কিন্তু ভারতীয়দের আগমন ব্যাপক ভাবে হ্রাস পেতে শুরু করে যখন মলদ্বীপের তিন নবীন মন্ত্রী পর্যটন গন্তব্য হিসেবে লাক্ষাদ্বীপের ‘প্রচার’ করার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় অবমাননাকর মন্তব্য করেন।

অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন

বৃহত্তর উত্তর প্রতিবেশীর সঙ্গে মলদ্বীপের সম্পর্কের উত্তেজনা কমানোর বিষয়টি আপাতদৃষ্টিতে তখন শুরু হয়েছিল যখন মুইজ্জু একমাত্র প্রতিবেশী নেতা হিসেবে একদল বর্ষীয়ান আধিকারিকের সঙ্গে মোদী ৩.০ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণে অংশগ্রহণ করেন। এই পদক্ষেপ আমন্ত্রণকারী দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে দ্রুত সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে গুরুতর আলোচনায় সম্পৃক্ত হওয়ার নিরিখে মুইজ্জুর সদিচ্ছা এবং প্রস্তুতিকেই দর্শায়।

বৃহত্তর উত্তর প্রতিবেশীর সঙ্গে মলদ্বীপের সম্পর্কের উত্তেজনা কমানোর বিষয়টি আপাতদৃষ্টিতে তখন শুরু হয়েছিল যখন মুইজ্জু একমাত্র প্রতিবেশী নেতা হিসেবে একদল বর্ষীয়ান আধিকারিকের সঙ্গে মোদী ৩.০ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণে অংশগ্রহণ করেন।

নয়াদিল্লিতে মুইজ্জুর দল বিদেশমন্ত্রী (ইএএম) এস জয়শঙ্করের নেতৃত্বে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সারগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত ছিলেন। জয়শঙ্কর মোদী ২.০-এর অধীনে একই পদে বহাল ছিলেন। প্রচলিত ধারণা হল এই যে, সফর-পরবর্তী সময় সম্পর্কটিকে যতটা ভাল বলে মনে হচ্ছে, বাস্তবে তেমনটা হলে একজন বর্ষীয়ান ভারতীয় কূটনীতিক দিল্লিতে আলোচনার ফলাফলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ‘মলদ্বীপ সফরে’ যেতে পারেন। ইঙ্গিত মিলেছে যে, আলোচনাটি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মলদ্বীপের প্রস্তাবনা থেকে শুরু হয়েছিল।

তাঁর পূর্বসূরিদের চেয়ে অনেকটা এগিয়েই মুইজ্জু সরকার দেশের সম্মুখীন অর্থনৈতিক সঙ্কটকে সহজেই স্বীকার করে নেন। এর মধ্যে একটি ঋণ সঙ্কট রয়েছে, যে বিষয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্ব ব্যাঙ্ক উভয়ই ২০২২ সালের শেষের দিকে মলদ্বীপের পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম ইবুসোলিহ-কে সতর্ক করেছিল। এই ঘটনা ঘটে মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আসার এক বছর আগে। সরকারও তখন থেকে ঋণ সঙ্কটের কথা স্বীকার করেছে এবং বর্ষীয়ান মন্ত্রী ও কর্মকর্তারাও এই বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন।

মুইজ্জু তাঁর স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় এবং অন্যান্য ক্ষেত্রেও কথা স্বীকার করেছেন যে, মলদ্বীপ যখন ঋণ খেলাপি হওয়ার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে, তখন ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের মধ্যে ভারতই একমাত্র সময় পুনর্বিবেচনা করেছে। ভারত এ আগে এক বার এমনটা করেছিল, যখন একেবারে শেষ মুহূর্তে মলদ্বীপের তরফে একটি রোল-ওভারসুবিধা প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। আগামী মাসগুলিতে আর একটি রোলওভারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, চিন এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি (ইউএই) উভয়ই মলদ্বীপের ঋণ পরিশোধের জন্য পাঁচ বছরের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে।

বাজেট সহায়তা

বর্তমানে বহু মাস ব্যাপী মলদ্বীপের বিশেষজ্ঞরা নগদ অর্থের অন্তঃপ্রবাহের জন্য একটি জরুরি এবং ক্রমাগত প্রয়োজনীয়তার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এই নগদ অন্তঃপ্রবাহ হয় বাজেট সহায়তা’র আকারে প্রয়োজন, যেমনটা বিগত বছরগুলিতে ভারত থেকে আর্থিক সহায়তার ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে; অথবা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) তরফে ‘বেল-আউট’ প্যাকেজের ক্ষেত্রে লক্ষ করা গিয়েছে। এমনকি সোলিহ সরকারের চতুর্থ বছরে নয়াদিল্লি বাজেট সহায়তায় মলদ্বীপকে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা বৃদ্ধি করেছিল। ২০১৮ সালে সোলিহের পাঁচবছর ব্যাপী রাষ্ট্রপতিত্বের মেয়াদ শুরু হওয়ার সময়ে ভারতের তরফে যে অভূতপূর্ব ১.৪.4 বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের উন্নয়ন তহবিল প্রদান করা হয়েছিল, সেটির পাশাপাশিই এই সহায়তা প্রদান করা হয়। সোলিহ-কে প্রদত্ত এই উন্নয়ন তহবিলে পরবর্তী কালে অভূতপূর্ব কোভিড অতিমারির সময়ে আরও ত্রাণ পাঠানো হয়।

বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলি থেকে বাজেট সহায়তার বিকল্প হল আইএমএফ-এর কাছে আবেদন জানানো, অতীতে একবার দেশের প্রথম গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আন্নিনাশিদ (২০০৮-১২) যে পথে হেঁটেছিলেন।

বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলি থেকে বাজেট সহায়তার বিকল্প হল আইএমএফ-এর কাছে আবেদন জানানো, অতীতে একবার দেশের প্রথম গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আন্নিনাশিদ (২০০৮-১২) যে পথে হেঁটেছিলেন। পিছনে ফিরে তাকালে দেখা যাবে, মলদ্বীপবাসীরা স্বীকার করেছেন যে, আইএমএফ আরোপিত সংস্কার – যেটির অধীনে নতুন কর, বিদ্যুতের শুল্ক বৃদ্ধি, সরকারি খাতের চাকরি ও বেতন হ্রাসের মতো ঘটনাগুলি ঘটেছিল – প্রায় রাতারাতি মলদ্বীপের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা জনপ্রিয়তা হ্রাসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এটি তাঁপতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, যখন ধর্মীয় এনজিওর আড়ালে রাজনৈতিক বিরোধীরা ’২৩ ডিসেম্বর আন্দোলন শুরু করেছিল, যা মাসব্যাপী সরকারবিরোধী বিক্ষোভ এবং প্রেসিডেন্টের আকস্মিক পদত্যাগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পাওনা আদায়

ইঙ্গিত মিলেছে যে, বর্তমান সরকারের ভারতের মতো অন্তত পক্ষে অন্য দু’টি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের কাছ থেকে ‘বাজেট সহায়তা’ পাওয়ার প্রত্যাশা বাস্তবায়িত হয়নি। ভারত ও চিনের পর কুয়েত এখন মলদ্বীপের ক্ষুদ্র দ্বীপ হাসপাতাল প্রকল্পের জন্য সহায়তা স্বরূপ ১৫০ মিলিয়ন এমভিআর (১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) প্রদান করেছে।

ঘটনাক্রমে বিদেশমন্ত্রী মুসা জমিরের সাম্প্রতিক বেজিং সফরের পরে মুইজ্জু ঘোষণা করেছিলেন যে, দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) – যেটি সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন পার্লামেন্টে রব তুললেও পরবর্তীতে তা গতি হারায় - সেপ্টেম্বর মাস থেকে বাস্তবায়িত হবে। সরকার সেই সময় থেকে ইঙ্গিত দিয়েছে যে চিন-এফটিএ বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ উন্নত করতে সাহায্য করবে এবং এমনটাও দাবি করেছে যে, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ব্রিটেনের সঙ্গে অনুরূপ চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।

এর পাশাপাশি মলদ্বীপে একটি চিনা ব্যাঙ্ক উদ্বোধন করার চেষ্টা করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) মলদ্বীপের উন্নয়ন তহবিল, বিশেষ করে বেসরকারি ক্ষেত্রের একটি প্রধান শক্তিবৈদেশিক মুদ্রা ভাণ্ডারের ক্ষেত্রে নতুন সক্রিয় সরকারি উদ্যোগে কাঁচা মাছ রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এবং এমনটা করা হয়েছে চিনের সহায়তায় আরও বেশি সংখ্যক প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র গড়ে তোলার পর।

এরই মাঝে মুইজ্জুর অধীনে এক দেশের কাছাকাছি এক ব্যাপক পাওনা আদায়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যার কেন্দ্রে রয়েছেন প্রেসিডেন্টের খুড়তুতো ভাই এবং সাম্প্রতিক কালে দেশের অর্থনীতি সংক্রান্ত কঠোর মনোভাব পোষণকারী ডেপুটি স্পিকার আহমেদ নাজিমের নেতৃত্বাধীন পার্লামেন্টের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি)। এই উদ্যোগের দাবি এবং আশা হল, দেশের বাহ্যিক ঋণ দায়বদ্ধতার সবটা না হলেও বেশ খানিকটা অবশ্যই পূরণ করা। উল্লিখিত অর্থের পরিমাণ হল ১৫ বিলিয়ন এমভিআর অথবা ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (আনুমানিক)। কিন্তু বলপূর্বক অর্থ আদায়ের প্রচেষ্টা বিপজ্জনক বলে প্রমাণিত হতে পারে, যেহেতু প্রধান পর্যটন ক্ষেত্র-সহ দেশের বৃহত্তর ব্যবসাগুলি শুধু মাত্র দেশের অর্থনীতিই নয়, রাজনীতিকেও নিয়ন্ত্রণ করে এবং প্রায়শই নির্বাচনের সময়ে নিজেদের ‘কিং মেকার’ বা ‘নেতা নির্বাচনের প্রধান চালিকাশক্তি’ বলে তুলে ধরে।

যখন প্রায় পাঁচ দশক আগে দেশটি পর্যটন বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য এক প্রাচীন ফেসিলিটেশন আইন প্রবর্তন করেছিল, তখন পর্যটক-নিবাসের প্রচারকারী ও ইজারাদাররা নিয়মিত ব্যবহারের জন্য স্থানীয় মুদ্রায় রূপান্তর না করেই তাদের উপার্জিত ডলার এবং অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রা সঞ্চয় করতে পারতেন। এখন প্রশ্ন হল সরকার/দেশ আইনটি পুনর্বিবেচনা করবে কি না বা অন্যান্য শর্ত-সহ বেল-আউট প্যাকেজের জন্য আইএমএফের কাছে আবেদন করার সময়ে এমনটা করতে বাধ্য হবে কি না

নির্বাচন-পূর্ববর্তী সম্পর্কের পুনর্বহাল

সরকারি পরিসংখ্যানের উদ্ধৃতি প্রকাশ করে স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুন মাসের শেষে বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার ‘এক মাসের অতি প্রয়োজনীয় আমদানির খরচ মেটাতে অপ্রতুল’ ছিল। গ্রাসাচ্ছাদনের জন্য পরিস্থিতি আমদানির উপর ব্যাপক ভাবে নির্ভর করে। ঘটনাক্রমে এবং বৈদেশিক মুদ্রার পরিস্থিতির উল্লেখ ছাড়াই ডিম, আলু এবং পেঁয়াজ-সহ ৮০০ টন পচনশীল পণ্যের একটি জাহাজ - যা ১০ জুলাই পরিষেবা শুরু হওয়ার পর থেকে তৃতীয় চালানও বটে - ভারতের থুথুকুড়ি বন্দর থেকে দক্ষিণের আদ্দু শহরে পৌঁছেছিল। এ হেন সরাসরি জাহাজ পরিষেবা মালে-র মাধ্যমে ট্রান্সশিপমেন্ট, বিলম্ব ও অপচয় এড়াতে সাহায্য করবে

যাই হোক, যদি কোনও বৃহৎ সমস্যা থাকে, তা হলে সেটি জানুয়ারি মাসে মুইজ্জুর সক্রিয় গণ-আবেদন থেকে উদ্ভূত হয়েছে। এই সময়ে তিনি অপরিহার্য জিনিসগুলির জন্য একক-উৎস আমদানি-নির্ভরতা (ভারত থেকে) খারিজ করার কথা বলেন এবং একই সঙ্গে চাল, আটা এবং চিনির মতো দৈনন্দিন খাবারের বছরভিত্তিক সরবরাহের জন্য দূরবর্তী তুর্কিয়ের সঙ্গে একটি চুক্তির কথা বলেনতা সত্ত্বেও সে বছরের রমজান মরসুমে এই আমদানি বাস্তবায়িত না হওয়ার পর মলদ্বীপ নিয়মিত সরবরাহ চালিয়ে যাওয়ার জন্য নয়াদিল্লির কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগাযোগ করলে, নয়াদিল্লি তাতে সাড়া দেয়নি।

সামগ্রিক ভাবে, ভারতের সঙ্গে প্রাক-নির্বাচন সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার তাত্ক্ষণিক মলদ্বীপের প্রত্যাশার মধ্যে বিলম্বিত অর্থ প্রদানের সম্ভাব্য সুবিধা-সহ বাজেট সমর্থন এবং পণ্য রফতানি উভয়ই অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে

সামগ্রিক ভাবে, ভারতের সঙ্গে প্রাক-নির্বাচন সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার তাত্ক্ষণিক মলদ্বীপের প্রত্যাশার মধ্যে বিলম্বিত অর্থ প্রদানের সম্ভাব্য সুবিধা-সহ বাজেট সমর্থন এবং পণ্য রফতানি উভয়ই অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে দুবছর আগে একটি অভূতপূর্ব বৈদেশিক মুদ্রা সঙ্কটের সম্মুখীন হওয়ার সময় ভারত সাধারণ প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কাকে নানা উপায়ে সাহায্য করেছিল। কিন্তু এ ক্ষেত্রে চিনের প্রেক্ষিতে নয়াদিল্লির নিরাপত্তা উদ্বেগগুলির কথা বিবেচনা না করেই ভারত শ্রীলঙ্কাকে আপৎকালীন সহায়তা করেছিল। যাই হোক, শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে মলদ্বীপের মতো কোন আপাতদৃষ্টিতে সক্রিয় উস্কানিমূলক মন্তব্য করা হয়নি।

বার্ষিক বাজেটে মলদ্বীপের জন্য আগের বছরের ৭৭০ কোটি টাকা থেকে এ বছরে ভারতের সাহায্যের পরিমাণ ৪০০ কোটি টাকায় নেমে আসা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আসল বিষয়টি হল গত অর্থবর্ষে (এপ্রিল-মার্চ) যে প্রাথমিক অর্থ প্রদান করা হয়েছিল, তার পরিমাণ ৪০০ কোটি টাকা। কিন্তু বছর এগিয়ে চলার সঙ্গে সঙ্গে ভারত এই অনুদানের পরিমাণ দ্বিগুণ করলেও তা নিয়ে নয়াদিল্লি ঢাক পেটায়নি।

 


এন সত্য মূর্তি চেন্নাইভিত্তিক নীতি বিশ্লেষক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.