Published on Jan 17, 2022 Updated 0 Hours ago

তৃতীয় তরঙ্গের সম্ভাব্য বিপদের সময়ে ভারত সরকারকে একই সঙ্গে উপভোগের চাহিদা পুনরুজ্জীবিত করতে হবে এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

ভারতের ২০২২: ক্ষমতার সদ্ব্যবহার ও অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন

ভারতীয় অর্থনীতির পরিবর্তনশীল গতিশীলতা

ভারতীয় অর্থনীতিকে ঐতিহ্যগত ভাবে সরবরাহ-সীমাবদ্ধতার পরিচায়ক হিসেবে বিবেচনা করা হত। কিন্তু, বিভিন্ন রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৯১ সালের সংস্কারের পর থেকে ভারতীয় অর্থনীতি সরবরাহ-সীমাবদ্ধ অর্থনীতি থেকে চাহিদা-সীমাবদ্ধ অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে, যার মূল অর্থ প্রতিকারমূলক ব্যবস্থার দৃষ্টি শুধু সরবরাহ বাড়ানোর পরিবর্তে বরং নিবদ্ধ করা উচিত চাহিদা কম হওয়ার কারণগুলির উপর। এখনকার অর্থনৈতিক সঙ্কোচনকে কোভিড–১৯ সঙ্কটের এককালীন প্রভাব হিসেবে বাতিল করা উচিত নয়, বরং একে দেখা উচিত সামগ্রিক চাহিদা হ্রাসের বিদ্যমান প্রবণতার ধারাবাহিকতা হিসেবে, যা অতিমারির কারণে বেড়ে গেছে।

চিরাচরিত ভাবে, সমস্ত পুঁজিবাদী অর্থনীতিই ছিল চাহিদা-সীমাবদ্ধ অর্থনীতি। তার কারণ স্বাভাবিক বেকারত্বের হার বা ‘‌শ্রমের সংরক্ষিত বাহিনী’‌র প্রাপ্যতা। এর বিপরীতে, ধ্রুপদী সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিগুলির একটি কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে যে উৎপাদন ব্যবস্থায় কোনও ক্ষমতা যেন অব্যবহৃত পড়ে না–থাকে, আর তার ফলে তৈরি হয় একটি সরবরাহ-সীমাবদ্ধ অর্থনীতি। স্বাধীনতার পরে মিশ্র অর্থনীতি অনুসরণ করে প্রাথমিক বছরগুলিতে ভারত একটি অদ্ভুত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল। শিল্প ক্ষেত্রে যথেষ্ট ক্ষমতা অব্যবহৃত পড়েছিল;‌ কিন্তু কৃষি ক্ষেত্রে, বিশেষ করে খাদ্যশস্য উৎপাদনে, সরবরাহ–সীমাবদ্ধতা ছিল।

স্বাধীনতার পরে মিশ্র অর্থনীতি অনুসরণ করে প্রাথমিক বছরগুলিতে ভারত একটি অদ্ভুত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল।

ভারতীয় অর্থনীতির চাহিদা-সম্পর্কিত বিষয়গুলি বাস্তব ক্ষেত্রে যাচাই করা যেতে পারে বেকারত্বের হার, মজুত ভান্ডারের‌ অনুপাত (‌ইনভেন্টরি রেশিও), ক্ষমতা ব্যবহারের মাত্রা ও মুদ্রাস্ফীতির হারের মতো মাপকাঠিগুলির পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৭-২০১৯ সালে বেকারত্বের হার দ্বিগুণ হয়েছে। একই ভাবে, সম্পদের সীমাবদ্ধতায় ভোগা অর্থনীতিতে চাহিদা বৃদ্ধির ফলে দাম বাড়বে, কারণ অর্থনীতিটি দক্ষ (পুঁজি ও শ্রমের পূর্ণ ব্যবহার)। কৃষিক্ষেত্রে অন্তত ভারতে ঠিক তাই হয়েছে। যাই হোক, ২০১৬-২০১৯ সময়কালে পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় পরের বছরের হিসেবে ভোক্তা খাদ্য মূল্যস্ফীতির বাৎসরিক গড় ছিল ১.৩ শতাংশ;‌ আর নব্বই দশকে এবং ২০০৮ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে তা ছিল প্রায় ৯.৮ শতাংশ। এ থেকে বোঝা যায় অতিমারি আঘাত হানার আগেই সামগ্রিক চাহিদা পরিস্থিতি শিথিল হয়ে পড়ছিল।

ক্ষমতার ব্যবহারউপভোগের চাহিদা বিনিয়োগকারীদের আস্থা

পূর্ণ ক্ষমতার কতটা সদ্ব্যবহার করা গেল, অর্থনীতিতে তা পরিমাপ করা হয় অর্থনীতির সংস্থানগুলি দিয়ে কতটা উৎপাদন হতে পারত আর প্রকৃত পক্ষে কতটা হয়েছে তার অনুপাত হিসেবে। এটি অর্থনীতিতে কতটা অতিরিক্ত ক্ষমতা আছে তার একটি ভাল পরিমাপক। ভারতের জন্য আরবিআই ক্ষমতা সদ্ব্যবহারের মাত্রা পরিমাপ করার জন্য ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্প জুড়ে পর্যায়ক্রমিক সমীক্ষা চালায়, যা একটি নির্দিষ্ট সময়কালে ভারতে ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পে তৈরি পণ্যের চাহিদার স্তরের সূচক হিসেবে কাজ করে। ২০১৬-১৭ থেকে ২০২১-২২ (প্রথম ত্রৈমাসিক) সময়কালে ভারতীয় ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পে ক্ষমতা সদ্ব্যবহারের মাত্রা ৭৫ শতাংশের নিচে থেকেছে, এবং তা বছরের পর বছর ধরে হ্রাস পাচ্ছে। ২০২০-২১-এর প্রথম ত্রৈমাসিকে এই অনুপাতের ব্যাপক পতন হয়েছিল; তবে তার কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে সরকার কর্তৃক ঘোষিত লকডাউন সংক্রান্ত ব্যবস্থাসমূহ। তবে, বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার পরেও ম্যানুফ্যাকচারিং–এ ক্ষমতার সদ্ব্যবহার পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

চিত্র 1: ভারতে সক্ষমতা ব্যবহারের ত্রৈমাসিক হিসাব (২০১৬-১৭ থেকে ২০২১-২২, শতাংশে)

সূত্র: লেখকের নিজস্ব, ওবিকাস সার্ভে অন দ্য ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টর, আরবিআই–র তথ্য

তার উপর ওই সময়ে ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পে মোট মজুত ভান্ডারের সঙ্গে বিক্রির অনুপাতেও একটি ক্রমবর্ধমান প্রবণতা দেখা গেছে। এর দুটো ব্যাখ্যা থাকতে পারে। একটা হল যদি বিক্রি যতটা বাড়ছে তার তুলনায় চূড়ান্ত পণ্য/কাঁচামালের উৎপাদন বৃদ্ধির হার বেশি হয়, অথবা পর্যাপ্ত উৎপাদন সত্ত্বেও যদি বিক্রি হ্রাস পায়। বিক্রির তুলনায় উৎপাদনে উচ্চতর বৃদ্ধি হয়ে থাকলে তা সেই সময়ের মধ্যে উৎপাদনের ক্ষমতার উচ্চতর সদ্ব্যবহারেও প্রতিফলিত হওয়ার কথা। এক্ষেত্রে কিন্তু তা হয়নি। এর থেকে এই ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে ম্যানুফ্যাকচারিং ক্ষেত্রে ভোগের চাহিদার প্রকৃত পতন ঘটেছে, এবং তার ফলে বিক্রি কমে গেছে। এই প্রেক্ষাপটে, দুর্ভাগ্যবশত, উৎপাদন প্রক্রিয়ায় এখন যে অতিরিক্ত ক্ষমতা অব্যবহৃত পড়ে থাকছে, তার সদ্ব্যবহারের স্তরে না–পৌঁছনো পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের পক্ষে ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ স্থগিত রাখা যুক্তিযুক্ত।

চিত্র ২: ভারতে বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে মোট ইনভেন্টরির অনুপাত (২০১৬-১৭ থেকে ২০২১-২২, শতাংশে)

সূত্র: লেখকের নিজস্ব, ওবিকাস সার্ভে অন দ্য ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টর, আরবিআই–র তথ্য

ব্যবসায়িক মানসিকতা সম্পর্কে আমাদের ধারণাটি মজুত ভান্ডারের গঠন ভাল করে লক্ষ করলে আরও জোর হবে। মোট মজুতের সঙ্গে বিক্রির অনুপাতকে ভাগ করা যায় দুটি ভাগে:‌ চূড়ান্ত পণ্যের মজুতের সঙ্গে বিক্রির অনুপাত, এবং কাঁচামালের মজুতের সঙ্গে বিক্রির অনুপাত। যদিও দুটো অনুপাতই গত কয়েক বছরে ক্রমবর্ধমান প্রবণতা দেখিয়েছে, চূড়ান্ত পণ্যের তালিকার তুলনায় কাঁচামালের মজুত বৃদ্ধির হার বেশি ছিল। বিক্রি কমে যাওয়ার ফলে পুরো শিল্প জুড়ে বেশ কিছু সংস্থাকে বড় ধরনের কার্যকালীন ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে, এবং ‌অনেকেই শেষ পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম ও প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৬-১৭ থেকে ২০২১-২২ পর্যন্ত (প্রথম ত্রৈমাসিক) কাঁচামালের মজুতের সঙ্গে বিক্রির অনুপাত তুলনায় চড়া হারে বেড়েছে। অনুপাতের এই বৃদ্ধি শুধু চাহিদার শিথিলতাই নয়, ওই সময়কালে সম্পদের পর্যাপ্ত সরবরাহেরও ইঙ্গিতবাহী। আরও আকর্ষণীয় তথ্য প্রতিফলিত হয় একই সময়কালে চূড়ান্ত পণ্যের মজুতের সঙ্গে বিক্রির অনুপাত তুলনামূলক ভাবে নিম্নতর হওয়া ও কম বৃদ্ধি পাওয়ার ঘটনায়। কাঁচামালের পর্যাপ্ত সরবরাহ, ক্রমবর্ধমান মজুত ভান্ডার ও অতিরিক্ত ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও চূড়ান্ত পণ্যের উৎপাদন থমকে যাচ্ছে। কাজেই বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসাগুলি শুধু ভবিষ্যৎ বিনিয়োগের বিষয়টি নিয়েই উদ্বিগ্ন নয়, সেই সঙ্গেই অত্যধিক মজুত ভান্ডারের চাপেও জর্জরিত। মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের হার কমে যাওয়া অবশ্যই উদ্বেগের কারণ, কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে চূড়ান্ত–পণ্য উৎপাদনের এই আপাত–শ্লথতার বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে ভারতীয় শ্রমবাজারের উপর, এবং তা প্রত্যক্ষ ভাবে ছাপিয়ে গিয়ে পড়ছে অর্থনীতিতে সামগ্রিক ভোগের চাহিদার উপর।

ইনভেন্টরির ত্রৈমাসিক গঠন (২০১৬-১৭ থেকে ২০২১-২২, শতাংশে)

সূত্র: লেখকের নিজস্ব, ওবিকাস সার্ভে অন দ্য ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টর, আরবিআই–র তথ্য

যদিও কিছু উচ্চ–কম্পাঙ্ক সূচক লকডাউন বিধিনিষেধ শিথিল হওয়া ও টিকাকরণের গতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চাহিদার পুনরুজ্জীবনের ইঙ্গিত দিয়েছে, আরবিআই কিন্তু অবশিষ্ট ত্রৈমাসিকগুলির জন্য বৃদ্ধির অনুমানে সতর্কতা অবলম্বন করেছে। উপভোগের চাহিদার প্রাথমিক বৃদ্ধি কিন্তু অতিমারি হ্রাসের সঙ্গে সঙ্গে জমে–থাকা চাহিদা বাজারে পৌঁছে যাওয়ার কারণে ঘটে থাকতে পারে, কাজেই এই উপভোগের চাহিদাকে টিকিয়ে রাখা এবং আরও উদ্দীপিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু স্বল্প ও মাঝারি মেয়াদে সরাসরি অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতেই পরিণত হবে না, সেই সঙ্গেই উৎপাদন ক্ষমতার উচ্চ সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থনীতিকে উচ্চ বৃদ্ধির গতিপথে চালিত করায় ব্যক্তিগত বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কও একথাই নির্দেশ করেছে যে এখনও অবধি শুধু ক্ষমতার সদ্ব্যবহার সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যা নতুন বিনিয়োগের সম্ভাবনার প্রশ্নে খুব বেশি কাজে আসবে না। তাই, স্থায়ী অর্থনৈতিক বৃদ্ধির জন্য উপভোগ চাহিদার পর্যাপ্ত পুনরুজ্জীবন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আরও আকর্ষণীয় তথ্য প্রতিফলিত হয় একই সময়কালে চূড়ান্ত পণ্যের মজুতের সঙ্গে বিক্রির অনুপাত তুলনামূলক ভাবে নিম্নতর হওয়া ও কম বৃদ্ধি পাওয়ার ঘটনায়।

২০২২ সালে কোথায় পৌঁছবে?

ভারতীয় অর্থনীতি এখন ম্যানুফ্যাকচারিং, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে পণ্যের লাগাতার চড়া দামের কারণে উদ্বেগজনক মুদ্রাস্ফীতির চাপের প্রবণতার সম্মুখীন হয়েছে। এখন যখন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলি অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, সেই সময় দুর্বল আর্থিক পরিস্থিতিকে খানিকটা সামাল দিচ্ছে চড়া হারের জ্বালানি কর থেকে সংগৃহীত বাড়তি রাজস্ব। কিন্তু আর এই পথে চলা তুলনামূলক ভাবে কঠিন হয়ে পড়েছে বলে মনে হচ্ছে। তা ছাড়া, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের কম সুদে ঋণ দিয়ে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টাকেও ঊর্ধ্বমুখী মুদ্রাস্ফীতির চাপ বিরূপ ভাবে প্রভাবিত করতে পারে, আর তা বেসরকারি বিনিয়োগের বাধা হয়ে দাঁড়াবে। অতএব, উপভোগের চাহিদা পুনরুজ্জীবিত করা এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে সূক্ষ্ম ভারসাম্য বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। যে ভাবে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কথা ভাবা হচ্ছে তার জন্য উৎপাদনশীল ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি একযোগে উপভোগ-চালিত বৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ।

২০২১–এর কেন্দ্রীয় বাজেটের পরে ২০২২ সালের বাজেট থেকে এই প্রত্যাশা খুব বেশি থাকবে যে উৎপাদনশীল সক্ষমতা বৃদ্ধি ও ক্ষমতার আরও বেশি সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে অতিমারি–উত্তর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াগুলির পথ প্রশস্ত করা হবে। পরিশেষে, যে হেতু ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের নতুন আশঙ্কার মধ্যে ২০২১ সাল শেষ হল, তাই ২০২২ সালটি ভারতীয় অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বছরগুলোর মধ্যে একটি হবে। এই বছরেই বোঝা যাবে বিধিনিষেধ, লকডাউন ও বাজারের অনিশ্চয়তার প্রশ্নে অতিমারি থেকে (গত দুই বছরে) কিছু শিক্ষা নেওয়া গেছে, না আসন্ন তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলা করতে গিয়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Debosmita Sarkar

Debosmita Sarkar

Debosmita Sarkar is a Junior Fellow with the SDGs and Inclusive Growth programme at the Centre for New Economic Diplomacy at Observer Research Foundation, India. ...

Read More +
Soumya Bhowmick

Soumya Bhowmick

Soumya Bhowmick is an Associate Fellow at the Centre for New Economic Diplomacy at the Observer Research Foundation. His research focuses on sustainable development and ...

Read More +