-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
পাকিস্তান ও চিনের সামরিক বাহিনী অত্যন্ত সমন্বিত এবং একাধিক ক্ষেত্রে নয়াদিল্লির অবস্থানের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে প্রস্তুত।
চিন-পাকিস্তান সামরিক অংশীদারিত্ব - যা মূলত ভারতের সঙ্গে দুই দেশের অভিন্ন সাধারণ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পরিচালিত হয় - ২০১৯ সালের অগস্ট থেকে নতুন করে ভূ-কৌশলগত যুক্তি খুঁজে পেয়েছে। ভারতের সাম্প্রতিক অপারেশন সিঁদুর এবং পাকিস্তানের সামরিক প্রতিক্রিয়া আসলে চিনের সঙ্গে দেশটির দ্বিপাক্ষিক আদান-প্রদানের গভীরতা ও গুণমানকেই দর্শায়। দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক পরিপক্ব হচ্ছে এবং দ্রুতই তা নির্ণায়ক প্রমাণিত হতে পারে। এই ফাঁদ থেকে মুক্তির জন্য নয়াদিল্লির পালাবার পথ ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে।
কিংবদন্তি ভারতীয় কৌশলবিদ কৌটিল্য ও তাঁর মণ্ডলা তত্ত্বের যুক্তি অনুসরণ করলে দেখা যাবে, চিন ও পাকিস্তান স্বাভাবিক কৌশলগত অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং ভারতের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে। অপারেশন সিঁদুরের সময় এই সাযুজতা দৃশ্যতই আরও শক্তিশালী হয়েছিল। ২০২৫ সালের ৬-৭ মে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাম অঞ্চলে পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামো লক্ষ্য করে আক্রমণ করে।
এই ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ভারতকে লক্ষ্য করে অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস শুরু করে। সঙ্কট পর্বের সময় চিন উত্পাদিত যুদ্ধবিমান, চিনা পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ব্যবহারের ফলে পাকিস্তানের কার্যকরী ক্ষমতার মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্তরের সমন্বয় দেখা গিয়েছে।
একই সঙ্গে ভারত মহাসাগরে উন্নত সেন্সর দিয়ে সজ্জিত চিনা সমীক্ষা-জাহাজ দা ইয়াং ই হাও-এর উপস্থিতি একটি বৃহত্তর কৌশলগত সমন্বয়ের ইঙ্গিত দেয়। অপারেশন সিঁদুরের প্রতিক্রিয়ায় চিনা সামরিক প্রযুক্তি, চিনা বিমান প্রতিরক্ষা এবং উপগ্রহ-ভিত্তিক আইএসআর সহায়তার ব্যবহার ছাড়াও ডিজি আইএসপিআর বিবৃতিতে চিনা সামরিক বাহিনীর বহু-ক্ষেত্রীয় যুদ্ধের অনুকরণে পাকিস্তানের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরা হয়েছে। এই পর্বটি চিন-পাকিস্তান দুই ফ্রন্টের তরফে উদীয়মান সামরিক হুমকির সরেজমিনে বাস্তবায়িত হওয়ার বিষয়টিকেই দর্শায়। ভূ-কৌশলগত সমন্বয় দ্রুত একটি কার্যকরী সামরিক সমন্বয়ে রূপান্তরিত হচ্ছে, যা ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার উপর গুরুতর প্রভাব ফেলবে।
নতুন মোড়কে পুরনো ভাবনা
চিন-পাকিস্তান ভূ-রাজনৈতিক মিলন ও সামরিক সহযোগিতা ১৯৬০-এর দশক থেকে শুরু হয়েছে এবং ১৯৬২ সালের চিন-ভারত সংঘাত চিন-পাকিস্তান অংশীদারিত্বের জন্য একটি বাঁকবদলকারী বিন্দু ছিল। ১৯৬৩ সালে পাকিস্তান চিনের সঙ্গে একটি সীমান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করে, যার মাধ্যমে পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের (পিওকে) ৫,১৮০ বর্গকিলোমিটার ভারতীয় ভূখণ্ড চিনকে হস্তান্তর করা হয়, যা ভবিষ্যতের সহযোগিতার জন্য পারস্পরিক সাযুজ্যতার প্রতীক। বর্তমানে চিন ও পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের কয়েক দশক ধরে বিদ্যমান আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব – যা দীর্ঘস্থায়ী বিরোধ দ্বারা চিহ্নিত এবং পরে পারমাণবিক আবহে আরও তীব্রতর হয়েছে - দুই-ফ্রন্ট চ্যালেঞ্জের কাঠামোগত অবস্থাকেই তুলে ধরে।
কিংবদন্তি ভারতীয় কৌশলবিদ কৌটিল্য ও তাঁর মণ্ডলা তত্ত্বের যুক্তি অনুসরণ করলে দেখা যাবে, চিন ও পাকিস্তান স্বাভাবিক কৌশলগত অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং ভারতের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে। অপারেশন সিঁদুরের সময় এই সাযুজতা দৃশ্যতই আরও শক্তিশালী হয়েছিল। ২০২৫ সালের ৬-৭ মে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাম অঞ্চলে পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামো লক্ষ্য করে আক্রমণ করে।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বিভিন্ন ভূ-রাজনৈতিক ঘটনাবলির মাধ্যমে চিন-পাকিস্তান সামরিক সম্পর্কের কৌশলগত যুক্তি দৃঢ় হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০১৯ সালের অগস্ট মাসে জম্মু ও কাশ্মীরে অভ্যন্তরীণ আইনের মাধ্যমে ভূখণ্ড পুনর্গঠন; ২০২০ সালের মে মাসে লাদাখে গালওয়ান সঙ্কটের কারণে ভারত-চিন সম্পর্কের খারাপ অবস্থা; ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনার প্রত্যাহার; এবং অবশেষে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন-চিন বৃহৎ শক্তি প্রতিযোগিতা। এই ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে চিন এবং কিছুটা হলেও পাকিস্তান এই অঞ্চলে তাদের ভূমিকা ও উপস্থিতি পুনর্নির্ধারণ করতে চায়।
জম্মু ও কাশ্মীরের ভূখণ্ডে নয়াদিল্লির ন্যায্য প্রবেশাধিকার অস্বীকারের চিরাচরিত পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চিন ও পাকিস্তান উভয়ই ভারতের পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করেছে। ভারত তার সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য ২০১৯ সালের অগস্ট মাসে ধারা ৩৭০ বাতিল করেছিল, যার দরুন জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। নয়াদিল্লির এই পদক্ষেপের ফলে দেশীয় আইন সংস্কারের মাধ্যমে পূর্ববর্তী রাজ্যটির পুনর্গঠন এবং পুনঃএকত্রীকরণ ঘটে, যার ফলে দু’টি নতুন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল (ইউটি) অর্থাৎ জম্মু ও কাশ্মীর (জেঅ্যান্ডকে) এবং লাদাখ তৈরি হয়।
ভূ-রাজনৈতিক ভাবে নতুন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি পাকিস্তান-অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীর (পিওজেকে), পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে), আকসাই চিন এবং শাক্সগাম উপত্যকা-সহ পাকিস্তান ও চিন কর্তৃক অবৈধ ভাবে দাবি করা বা দখল করা অঞ্চলগুলির উপর ভারতের ন্যায্য আঞ্চলিক দাবি পুনর্ব্যক্ত করে। অন্য দিকে, চিন পাকিস্তানের মূল কৌশলগত অংশীদার হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থান দখল করেছে। মার্কিন সামরিক ব্যবস্থার উপর নির্ভরতা হ্রাসের পাশাপাশি চিন ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার মান এবং পরিমাণ উভয় ক্ষেত্রেই একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন স্পষ্ট।
বিদ্যমান কাঠামোগত সমন্বয়ের কারণে চিন-পাকিস্তান সামরিক সম্পর্ককে একটি ‘থ্রেশহোল্ড অ্যালায়েন্স’ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে - এমন একটি সম্পর্ক, যা আনুষ্ঠানিক চুক্তির পর্যায়ে পৌঁছয়নি, তবে সহযোগিতায় কোনও সীমাবদ্ধতা নেই। এই ব্যবস্থার লক্ষ্য হল বোঝা ভাগ করে নেওয়া এবং ভারতের বিরুদ্ধে সক্ষমতা সমন্বিতকরণ ও একত্রিতকরণকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। সামরিক সহযোগিতার তিনটি মূল বিষয় ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চিন-পাকিস্তান সামরিক সহযোগিতার তিনটি স্তম্ভ
পাকিস্তানের প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল কামার বাজওয়া চিন ও পাকিস্তানকে ‘ব্রাদার্স ইন আর্মস’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এই সম্পর্ক পিএলএ-র ২০৪৯ সালের মধ্যে ‘বিশ্বমানের সামরিক’ বাহিনীতে রূপান্তরিত হওয়ার লক্ষ্যের সঙ্গে নিবিড় ভাবে জড়িত। এই লক্ষ্যে পিএলএ যে কোনও উপায়ে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর সাংগঠনিক ও সক্ষমতা ভিত্তিকে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করছে, যার ফলে ভারতের বিরুদ্ধে কার্যকর ভারসাম্যকারী হিসেবে তার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
ক্রয় থেকে সহ-উৎপাদন এবং গবেষণা ও উন্নয়ন
২০১৯ সালের অগস্ট-পরবর্তী ভূ-কৌশলগত সমন্বয় ও অন্যান্য ভূ-রাজনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে চিন ও পাকিস্তানের জন্য সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও নির্মাণ এবং তাদের পরিকল্পনার সমন্বয় সাধনের জন্য একটি নতুন পরিবেশ তৈরি করেছে। ‘ক্রয় থেকে সহ-উৎপাদন থেকে যৌথ গবেষণা ও উন্নয়ন’-এর বিবর্তনে এর ফলাফল স্পষ্ট। ক্রয় ও সামরিক আধুনিকীকরণের জন্য পাকিস্তান চিন থেকে প্রতিরক্ষা ক্রয়-সম্পর্কিত বিলের উপর আর্থিক ছাড়-সহ তুলনামূলক ভাবে সস্তা ব্যবস্থা অর্জন করেছে।
এসআইপিআরআই ট্রেন্ড অনুসারে, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে চিন তার রফতানিকৃত অস্ত্রের প্রায় ৬৩ শতাংশ পাকিস্তানে স্থানান্তর করেছে। চিন থেকে পাকিস্তান অস্ত্র আমদানি করেছে প্রায় ৮১ শতাংশ। নেদারল্যান্ডস ও তুরস্ক পাকিস্তানে পরবর্তী বৃহত্তম অস্ত্র সরবরাহকারী হিসাবে চিনকে অনুসরণ করে। অস্ত্র সরবরাহের মধ্যে রয়েছে চিনা জেএফ-১৭ এবং জেএফ-১০ বহু-ভূমিকা যুদ্ধ বিমানের বিভিন্ন রূপ, কামানের জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রতিরক্ষা সরবরাহ শৃঙ্খল এবং শৃঙ্খলকেন্দ্রিক যোগাযোগ ও তথ্য ব্যবস্থা।
পাকিস্তানের প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল কামার বাজওয়া চিন ও পাকিস্তানকে ‘ব্রাদার্স ইন আর্মস’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এই সম্পর্ক পিএলএ-র ২০৪৯ সালের মধ্যে ‘বিশ্বমানের সামরিক’ বাহিনীতে রূপান্তরিত হওয়ার লক্ষ্যের সঙ্গে নিবিড় ভাবে জড়িত। এই লক্ষ্যে পিএলএ যে কোনও উপায়ে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর সাংগঠনিক ও সক্ষমতা ভিত্তিকে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করছে, যার ফলে ভারতের বিরুদ্ধে কার্যকর ভারসাম্যকারী হিসেবে তার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
পাকিস্তানের স্তরযুক্ত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় রয়েছে চিনা এইচকিউ-৯/পি (দীর্ঘ-পাল্লা), এলওয়াই-৮০ (মাঝারি-পাল্লা) এবং এফএম-৯০-এর (স্বল্প-পাল্লা) মতো ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র (এসএএম)। নৌ-আধুনিকীকরণের জন্য সি-৮০২ অ্যান্টি-শিপ ক্রুজ মিসাইল এবং অ্যান্টি-অ্যাক্সেস অ্যান্ড এরিয়া ডিনায়েল (এ২এডি)-সমর্থিত টাইপ ০৩৯এ আক্রমণাত্মক ডুবোজাহাজগুলিকে আরব সাগরে ভারতের নৌ-আধিপত্য মোকাবিলা করার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে।
প্রযুক্তি স্থানান্তরের ক্ষেত্রে পাকিস্তান কেডি-২০ এবং ডিএইচ-১০ ক্রুজ মিসাইল তৈরির উদ্দেশ্যে বিপরীত প্রকৌশল সম্পাদনের জন্য আফগানিস্তানে একটি মার্কিন ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার এবং সম্ভবত অবিস্ফোরিত টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রে চিনের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করেছে। এই প্রযুক্তিগত উন্নয়ন বাবর ক্ষেপণাস্ত্রের পরিপক্বতা ঘটিয়েছে, যা নিরাপদে দ্বিতীয় বার আঘাত হানার ক্ষমতা প্রদান করে। পাকিস্তানের সীমিত ভূমিকা সত্ত্বেও চতুর্থ প্রজন্মের বহুমুখী যুদ্ধবিমান জে-এফ-১৭ আসলে চিনের অংশীদারদের সঙ্গে যৌথ গবেষণা ও উন্নয়নের একটি প্রধান উদাহরণ। এটি ভবিষ্যতের গবেষণা ও উন্নয়ন এবং প্রধান প্রতিরক্ষা মঞ্চগুলির সহ-উত্পাদনের জন্য একটি বাস্তুতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে।
বহু-ক্ষেত্রীয় যুদ্ধাস্ত্রের ধারণা গ্রহণ
চিন যুদ্ধক্ষেত্রের জন্য তথ্য, সাইবার এবং মহাকাশ ক্ষেত্রগুলিকে সমন্বিত করে প্রচলিত ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য মাল্টি-ডোমেন ওয়ারফেয়ারের (এমডিডব্লিউ) ধারণা গ্রহণ করেছে। এতে সকল ধরনের সামরিক বাহিনী এবং উপাদানগুলি একে অপরের সঙ্গে সমন্বয় করে সমন্বিত অভিযান পরিচালনার সঙ্গে জড়িত। যুদ্ধক্ষেত্রে আরও কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য পাকিস্তান এমডিডব্লিউ গ্রহণের প্রচেষ্টা চালিয়েছে। চিন ২০১৩ সাল থেকে পাকিস্তানকে বেইদউ স্যাটেলাইট নেভিগেশন প্রবেশাধিকার প্রদান করেছে, যা যোগাযোগবিহীন যুদ্ধক্ষেত্রের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ৫জি যোগাযোগ শৃঙ্খলের সঙ্গে আরও ভাল আইএসআর ক্ষমতাকে সক্ষম করে।
পিএলএএএসএফ - যা এখন পিএলএ ইনফরমেশন সাপোর্ট ফোর্স (আইএলএআইএসএফ) নামে পরিচিত – বহু-ক্ষেত্রীয় যুদ্ধক্ষেত্র অভিযানের প্রযুক্তিগত জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে। এই সহযোগিতা ভারতের সামরিক ও বেসামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে দ্রুত, উচ্চ-তীব্রতার গতিশীল ও অ-গতিশীল আক্রমণাত্মক অভিযান পরিচালনা করার জন্য পাকিস্তানের ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
দুই ফ্রন্টে আন্তঃকার্যক্ষমতা
আন্তঃকার্যক্ষমতার ধারণা দু’টি মূল উপাদানের বাস্তবায়নের উপর নির্ভর করে: সরবরাহ, প্রশিক্ষণ ও শৃঙ্খল-কেন্দ্রিক যুদ্ধের দিকগুলির মতো প্রক্রিয়াগুলির মানসম্মতকরণ এবং একটি যৌথ অভিযানমূলক পরিকল্পনার অংশ হিসাবে সামরিক আকস্মিকতার ক্ষেত্রে যৌথ কার্যক্রম অর্জনের জন্য কর্মী ও পরিবেশের মধ্যে সামঞ্জস্য। এই লক্ষ্যে চিন ও পাকিস্তান ইতিমধ্যেই যৌথ সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনীর মহড়া পরিচালনা করছে - যথাক্রমে ‘ওয়ারিয়র’, ‘শাহিন’ এবং ‘সি গার্ডিয়ানস’ মহড়ার একটি সিরিজ।
এই যৌথ সামরিক মহড়াগুলি আন্তঃকার্যক্ষমতা বাস্তবায়নের পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ অভিযানমূলক পরিবেশ সম্পর্কে পারস্পরিক বোঝাপড়া গড়ে তুলতে সাহায্য করে, যা স্থল, মহাকাশ বা সামুদ্রিক ক্ষেত্রগুলিতে বা সংক্ষেপে, একটি বহু-ক্ষেত্রভিত্তিক যুদ্ধক্ষেত্রে ঘটতে পারে। সুতরাং, সামরিক ক্ষেত্রে আন্তঃকার্যক্ষমতা উপাদান দীর্ঘমেয়াদে বিনিময়যোগ্যতার পরিমাণে সারিবদ্ধ পদ্ধতি এবং আন্তঃনির্ভরতাকে সশক্ত করতে সহায়ক। সর্বোপরি, গোয়াদর বন্দরে পরিকল্পনার সাধারণ প্রবেশাধিকার পাওয়ার সম্ভাবনা পশ্চিম ভারত মহাসাগর অঞ্চলে ভারত ও তার ইন্দো-প্যাসিফিক অংশীদারদের - যার মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সও অন্তর্ভুক্ত - বিদ্যুৎ প্রক্ষেপণ এবং লব্ধতার উপরেও প্রভাব ফেলবে।
ভারতের উপর প্রভাব
ঠান্ডা লড়াই-পরবর্তী যুগে চিন-পাকিস্তান সামরিক সহযোগিতা ভূ-রাজনৈতিক সঙ্কেতের যুক্তির বাইরেও বাস্তবায়িত হয়েছে। ভারতের জন্য হুমকি আসন্ন, গুরুতর এবং বাস্তবিক। চিনের সমর্থন থেকে পাকিস্তান কেবল সক্ষমতাই নয়, ভারতের সামরিক শক্তিকে চ্যালেঞ্জ করার ইচ্ছাও অর্জন করে। চিনা সামরিক প্রযুক্তি ও ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে বিতর্ক সত্ত্বেও, পহেলগাম-অপারেশন সিঁদুর পর্বটি একটি গুরুতর সতর্কতা হিসাবে কাজ করে। যুদ্ধক্ষেত্রে সক্ষমতা ও যৌথ অভিযানমূলক পরিকল্পনার আন্তঃকার্যক্ষমতা এটিকে আরও তীব্র করে তোলে। ভারতকে চিন-পাকিস্তান সামরিক অংশীদারিত্বকে নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
দুই দেশের মধ্যে সামরিক এবং দ্বৈত-ব্যবহারের ক্ষেত্রগুলির প্রকৃতি যৌথ উৎপাদন এবং গবেষণা ও উন্নয়নের ধরন তৈরি করতে পারে। প্রশিক্ষণ ও মতবাদের ক্ষেত্রে ফলাফল এই প্রস্তাবকেই বৈধতা দিতে পারে যে, ‘সাধারণ সামরিক ব্যবস্থা, আইএসআর ক্ষমতা সমর্থনকারী ও উৎপাদন ভারতের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ অভিযানমূলক পরিকল্পনা তৈরি করে।’
ঠান্ডা লড়াই-পরবর্তী যুগে চিন-পাকিস্তান সামরিক সহযোগিতা ভূ-রাজনৈতিক সঙ্কেতের যুক্তির বাইরেও বাস্তবায়িত হয়েছে। ভারতের জন্য হুমকি আসন্ন, গুরুতর এবং বাস্তবিক। চিনের সমর্থন থেকে পাকিস্তান কেবল সক্ষমতাই নয়, ভারতের সামরিক শক্তিকে চ্যালেঞ্জ করার ইচ্ছাও অর্জন করে।
চিন-সমর্থিত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মিরর ইমেজিং সম্পর্কে নয়াদিল্লির সচেতন থাকা উচিত এবং পিএলএ-র সঙ্গে সমন্বয় করে তার সামগ্রিক ক্ষমতার ভারসাম্যপূর্ণ মূল্যায়ন করা উচিত। একই সঙ্গে পিএলএ-র সঙ্গে সমন্বয় করে এমন সমর্থনের মাত্রা ও পরিমাণ সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি। ড্রোন ও যোগাযোগবিহীন যুদ্ধক্ষেত্রের ক্ষমতা অগ্রাধিকারে পরিণত হওয়া উচিত। কারণ এগুলি স্বাধীন ভাবে এবং একই সঙ্গে বহু-ক্ষেত্রীয় অভিযানগুলিকে সমর্থন জোগাতে পারে। প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের উদ্দেশ্যে ভারতীয় সামরিক বাহিনীকে আরও বাস্তবসম্মত ভাবে প্রতিপক্ষদের পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য এবং বাস্তব-সময়ের অজানা পরিবর্তনশীলতাকে বিবেচনা করার জন্য আরও শক্তিশালী ‘রেড টিমিং’ প্রক্রিয়ার প্রয়োজন।
ভারতীয় সামরিক বাহিনীকে তার পরিকল্পনা ও সামগ্রিক প্রস্তুতি বাড়ানোর উদ্দেশ্যে পিএলএ-র মতবাদ ও ক্ষমতা সম্পর্কে গভীর অভিযানমূলক স্তরের অন্তর্দৃষ্টি অর্জনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো অংশীদারদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে। এই সহযোগিতা আরও সুসংগঠিত প্রশিক্ষণ ও যৌথ পরিকল্পনার আকারে বাস্তবায়িত হতে পারে, যাতে আরও মনোযোগী এবং বর্ধিত সহযোগিতার জন্য অন্তর্দৃষ্টি তৈরি করা যায়। চূড়ান্ত লক্ষ্য হওয়া উচিত কার্যকর প্রতিকারের জন্য ক্ষমতা ও আকস্মিক পরিকল্পনার একটি আরও ব্যাপক সাধনীর ভাণ্ডার তৈরি করা, যার ফলে নয়াদিল্লির কৌশলগত অবস্থান সশক্ত হয়।
এই প্রতিবেদনটি সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয় ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট-এ।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Professor Harsh V. Pant is Vice President – Studies and Foreign Policy at Observer Research Foundation, New Delhi. He is a Professor of International Relations ...
Read More +
Rahul Rawat is a Research Assistant with ORF’s Strategic Studies Programme (SSP). He also coordinates the SSP activities. His work focuses on strategic issues in the ...
Read More +