Published on Apr 04, 2023 Updated 0 Hours ago

বৃদ্ধির হিন্দু হার, সনাতন ধর্মের মতোই, বিকশিত হয়েছে—রঘুরাম রাজন এবং অন্যান্য বর্ণনামূলক অর্থনীতিবিদ অতীতেই আটকে আছেন

হিন্দুফোবিয়া আবার অর্থনীতিকে সংক্রমিত করছে

একজন অর্থনীতিবিদ যদি রাজনৈতিক নম্বর পাওয়ার জন্য ধর্মীয় অবমাননা অবলম্বন করেন, বোঝা যায় যে তিনি অর্থনীতি থেকে হারিয়ে গিয়েছেন, রাজনীতিতে প্রবেশ করতে পারেন, এবং ধর্মকে ঘৃণা করতে থাকবেন। যখন সেই ধর্ম হিন্দুধর্ম হয় — যাকে উপহাস করার মধ্যে কোনও ঝুঁকি নেই, বরং ভাল রকম লাভের সম্ভাবনা আছে, কারণ এর অনুসারীরা সব কিছু গ্রহণ করেন ও সহনশীল — তখন হিন্দুদের দেওয়া নিরাপদ পরিসর থেকে তিনি এর উপর থুথু ফেলতেই পারেন।

নীতির ক্ষেত্রে নাম ব্যবহার করে আক্রমণে শান দেওয়ার রাস্তায় ফিরে গিয়ে, এবং ধীরগতির বৃদ্ধির হারকে হিন্দুধর্মের সঙ্গে যুক্ত করার মাধ্যমে, রঘুরাম রাজন একটি চমকপ্রদ কর্মজীবন ও গুরুত্বপূর্ণ পরিচিতির নিচে পচনশীল অভ্যন্তরকে উন্মোচিত করছেন। তিনি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন গভর্নর, প্রাক্তন প্রধান অর্থনৈতিক  উপদেষ্টা, আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডারের প্রাক্তন অর্থনৈতিক পরামর্শদাতা ও গবেষণা পরিচালক, ব্যাঙ্ক ফর ইন্টারন্যাশনাল সেটেলমেন্ট–এর বোর্ডের প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান এবং এখন শিকাগো বুথ–এ ক্যাথরিন ডুসাক মিলার ডিস্টিংগুইশড সার্ভিস প্রফেসর অফ ফাইন্যান্স। এর উপর তাঁর শিক্ষাগত কৃতিত্বও ঝলমলে:‌ আইআইটি দিল্লি থেকে বি টেক, আইআইএম আমেদাবাদ থেকে এমবিএ, এবং এমআইটি থেকে পিএইচডি। হিন্দুধর্মের বিরুদ্ধে তাঁর আক্রমণাত্মক কথাবার্তার মধ্যে রাজন এমন প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন যার মধ্যে অর্থনীতি, রাজনীতি ও ধর্মের সম্মিলন ঘটেছে। ধর্মীয় আক্রমণের ক্ষেত্রে তাঁর অশোভন বক্তব্য ছাড়াও তিনি পরিবর্তিত অর্থনীতির প্রেক্ষিতেও অসঙ্গতিপূর্ণ।

১৯৭৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘নাজিন ইয়ানুপি’ ছদ্মনামে বিপিআর ভিঠল এই শব্দবন্ধটি প্রথম তৈরি করেছিলেন, যখন ভারতের মাথাপিছু বৃদ্ধির হার সম্পর্কে তিনি লেখেন: “৫ প্লাস শতাংশ বৃদ্ধির হার মাথাপিছু পরিভাষায় ৩ প্লাস শতাংশ বৃদ্ধির হারে দাঁড়াবে।“

এই নিবন্ধে আমরা সেই মৃত প্রসঙ্গটির বিশ্লেষণ করব, যা রাজন সবেমাত্র পুনরুজ্জীবিত করেছেন: “এটি বিপজ্জনকভাবে আমাদের পুরনো বৃদ্ধির হিন্দু হারের কাছাকাছি! আমাদের আরও ভাল করতে হবে।” তিনি হিন্দুদের জনসংখ্যাগত বৃদ্ধির কথা বলছেন না; তিনি ভারতের ডিসেম্বর ২০২২ ত্রৈমাসিকের জিডিপি অঙ্ক অনুযায়ী বৃদ্ধির কথা বলছেন। এই ধারণার মধ্যে বেশ কয়েকটি সমস্যা রয়েছে, যেগুলি খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদের কাছ থেকে আসায় আরও জটিল হয়েছে।

হিন্দু ধর্ম খারাপ, আমাদের অন্য ধর্মের বৃদ্ধির হার দরকার

প্রথম আপত্তির কারণ যেভাবে নিম্ন বৃদ্ধির হারকে হিন্দু ধর্মের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। ১৯৭৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘নাজিন ইয়ানুপি’ ছদ্মনামে বিপিআর ভিঠল এই শব্দবন্ধটি প্রথম তৈরি করেছিলেন, যখন ভারতের মাথাপিছু বৃদ্ধির হার সম্পর্কে তিনি লেখেন: “৫ প্লাস শতাংশ বৃদ্ধির হার মাথাপিছু পরিভাষায় ৩ প্লাস শতাংশ বৃদ্ধির হারে দাঁড়াবে। এই লক্ষ্যমাত্রা থাকা সত্ত্বেও প্রকৃত অর্জন গত দুই দশকে ৩.৭ থেকে ৩.৮ শতাংশ হয়েছে, যা এই সময়কালে প্রায় ১ প্লাস শতাংশের মাথাপিছু আয়ের বৃদ্ধি দেখাবে। এইভাবে, আমাদের এমন একটি পরিস্থিতি রয়েছে যেখানে মাথাপিছু আয়বৃদ্ধির হার প্রকৃত অর্থে ১ শতাংশ থেকে প্রায় ৩ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে পরিবর্তিত হয়। এই পরিসীমা আকস্মিক নয়। এটি এমন একটি পরিসর যা জীবন সম্পর্কে হিন্দু দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করবে।’‌’‌ অঙ্কগুলো সঠিক, ধর্মীয় উপমা খুবই আপত্তিকর।

পাঁচ বছর পরে ১৯৭৮ সালে একে অর্থনৈতিক বৈধতা দিয়েছিলেন রাজ কৃষ্ণ, যিনি বৃদ্ধির মঞ্চটিকে মাথাপিছু থেকে প্রকৃত হারে পরিবর্তিত করেছিলেন। ভারতে অর্থনীতির শীর্ষ স্কুল দিল্লি স্কুল অফ ইকনমিক্স–এর একজন শিক্ষক হিসাবে কৃষ্ণের প্রদত্ত বৈধতাই তাঁর এবং ভারতীয় অর্থনীতির জন্য দুঃখজনকভাবে তাঁর একমাত্র স্থায়ী উত্তরাধিকার হিসাবে থেকে গেছে, যদিও তিনি সমাজতান্ত্রিক নীতিগুলিকেও একই রকমভাবে দোষারোপ করেছিলেন। একজন অর্থনীতিবিদ হিসাবে তিনি বহুবার ভুল প্রমাণিত হয়েছেন, কিন্তু তাঁর হিন্দুফোবিক উত্তরাধিকার আজও হিন্দুবিরোধী আখ্যানগুলিকে শক্তিশালী করে চলেছে। প্রয়াসটি হল পছন্দমতো একটি পরিসংখ্যান বা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বেছে নিয়ে সেটিকে একটি হিন্দু–ব্যাশিং ক্লাবে পরিণত করা, যদিও অন্যত্র তার থেকেও খারাপ অবস্থা আছে (ইইউতে মূল্যস্ফীতি এবং জিডিপি হার দেখুন), এবং হিন্দুবিরোধী ঘটনা (পাকিস্তানে এবং বাংলাদেশ, কানাডা ও ব্রিটেনের মতো দেশে হিন্দুদের দুর্দশা দেখুন) সর্বত্রই ঘটছে।

একটি অতি স্বল্পমেয়াদি পরিসংখ্যানকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়ে উপসংহার টানা

দ্বিতীয়ত, রাজনের কটূক্তি শুধু হিন্দুদের প্রতি ধর্মীয় অবজ্ঞা প্রদর্শন করে না; তিনি একইভাবে এক অচিন্তক বুদ্ধিজীবী ধারণার শিকার বা সেই বর্ণনের অনুপ্রাণিত সহযোগী। বৃদ্ধির হিন্দু হার সম্পর্কে তাঁর বক্তব্যটি শুধু বছরের এক–চতুর্থাংশের ৪.৪ শতাংশ জিডিপি বৃদ্ধির হারের ভিত্তিতে করা। সারণি ১ অন্য দেশগুলির বৃদ্ধির হার দেখায় যেখানে ধর্মীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ আছে। এই শ্রেণিবিভাগটির ভিত্তি দেশের প্রভাবশালী ধর্ম, অর্থাৎ যেখানে একটি উল্লেখযোগ্য আকারের ধর্মীয় জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তাঁর জন্য, তাঁর আখ্যানের ও রাজনীতির জন্য, দুঃখজনকভাবে, বৃদ্ধির হিন্দু হার এর শীর্ষে রয়েছে। বৃদ্ধির হিন্দু হার নিয়ে শোকপ্রকাশ না করে তাঁর উচিত অন্য ধর্মকে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার পরামর্শ দেওয়া।

সারণি ১: প্রধান ধর্ম ও জিডিপি বৃদ্ধি
ধর্ম দেশ বৃদ্ধির হার (%) *
বৃদ্ধির হিন্দু হার ভারত ৪.৪
বৃদ্ধির ইসলামিক হার তুরস্ক ৩.৫
বৃদ্ধির চিনা লোকধর্ম হার চিন ২.৯
বৃদ্ধির খ্রিস্টান হার ইউএস ২.৭
বৃদ্ধির ইহুদি হার ইজরায়েল ২.৭
বৃদ্ধির বৌদ্ধ হার তাইল্যান্ড ১.৪
বৃদ্ধির শিন্টো হার জাপান ০.২
* অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর ২০২২

অবশ্যই আমরা সবাই জানি যে বছরের এক–চতুর্থাংশের উপর ভিত্তি করে একটি দেশের জিডিপি বৃদ্ধির বিষয়ে কেউ মতামত দেন না। এবং যদি কাউকে বাধ্য করা হয়, মেড ইন চায়না কোভিড–১৯ এর মতো ব্যতিক্রমী ঘটনার ক্ষেত্রে, তখন তিনি তা করেন আপেক্ষিক পদ্ধতিতে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে। এ কথা বলার উদ্দেশ্য রাজনকে অর্থনীতির পাঠ দেওয়া নয়, কারণ তিনি তাঁর অর্থনীতি জানেন, উদ্দেশ্য তাঁর বর্ণনের ফাঁকগুলি দেখিয়ে দেওয়া।

ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে বৃদ্ধির হার

তৃতীয়ত, বৃদ্ধির হিন্দু হার অর্ধশতাব্দী ধরে ‘‌হিন্দুদের অবমাননা করে ভারতের অবমাননা’‌ করার বর্ণনে প্রাধান্য পেয়েছে। এই ক্ষতিকর এবং অবমাননাকর শব্দবন্ধটি ১৯৭৩ সালে জন্ম নিয়েছিল;‌ এবং শুধু রাজনই নয়, অন্য অনেক অর্থনীতিবিদের দ্বারা লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে, এবং তাঁরা বেশিরভাগই ভারতীয় বংশোদ্ভূত। প্রকৃতপক্ষে, ১৯৭০ ও ১৯৮০–র দশকে বৃদ্ধির ধীর হার ছিল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও তাঁর কন্যা ইন্দিরা গান্ধীর নীতির কারণে, যাঁরা উভয়েই উদ্যোগপতিদের উপর নীতিগত আক্রমণ শুরু করেছিলেন, এবং নিশ্চিত করেছিলেন যে ভারত যেন বাকি বিশ্বের থেকে পিছিয়ে থাকে। (রিফর্ম নেশন দেখুন)। তাঁদের অর্থনৈতিক বাড়াবাড়ির অবশিষ্টাংশ আজ দেখা যাচ্ছে অনুবর্তিতার মাধ্যমে ভারতের ইন্সপেক্টর রাজের ক্ষমতার মধ্যে

১৯৬১ থেকে ১৯৯১ সালের মধ্যে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির গড় প্রকৃত বার্ষিক হার ছিল ৪.১ শতাংশ (বিশ্বব্যাঙ্কের ডেটা ১৯৬১ থেকে শুরু হয়, ১৯৪৭ নয়)। এ ছিল তিন প্রধানমন্ত্রীর অধীনে অর্থনৈতিক দমন–পীড়নের সময়কাল, যাঁরা পরিকল্পিতভাবে সম্পদ সৃষ্টিকারীদের শৃঙ্খলে বেঁধে রেখেছিলেন, আর বর্ণনাকারী লেখকেরা এটিকে বৃদ্ধির হিন্দু হার বলে আখ্যায়িত করছেন। এটাকে নেহরু–গান্ধীর বৃদ্ধির হার বলা উচিত। অথবা, যদি পারিবারিক আনুগত্য বেশি হয়, তাহলে একে সমাজতান্ত্রিক বৃদ্ধির হার, বা মার্কসবাদী বৃদ্ধির হার, বা কমান্ডিং হাইটস বৃদ্ধির হার বললে ভুল হবে না। যিনি ৫.২ শতাংশের উচ্চতর বৃদ্ধির হার নিয়ে এসেছিলেন সেই প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর শাসনকাল ছাড়াও ১৯৮৪ থেকে ১৯৯১ সালের মধ্যে সমাজতান্ত্রিক নীতিগুলি ভেঙে পড়েছিল, আর প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং ও চন্দ্রশেখর তো অর্থনীতিকে অর্থনৈতিক অতল গহ্বরের কিনারায় নিয়ে এসেছিলেন।

১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিংহ রাওয়ের সূচনা করা ৩০ বছরের অর্থনৈতিক সংস্কার, যা পরপর পাঁচজন প্রধানমন্ত্রীর (অটলবিহারী বাজপেয়ী, এইচডি দেবগৌড়া, ইন্দ্রকুমার গুজরাল, মনমোহন সিং ও নরেন্দ্র মোদী) আটটি সরকার এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন, তা ভারতের গড় বার্ষিক অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার ৬.১ শতাংশে পৌঁছে দিয়েছে। তাহলে, ৩.৮ শতাংশ, ৫.২ শতাংশ এবং ৬.১ শতাংশের মধ্যে প্রকৃত হিন্দু বৃদ্ধির হার কোনটি?

যিনি ৫.২ শতাংশের উচ্চতর বৃদ্ধির হার নিয়ে এসেছিলেন সেই প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর শাসনকাল ছাড়াও ১৯৮৪ থেকে ১৯৯১ সালের মধ্যে সমাজতান্ত্রিক নীতিগুলি ভেঙে পড়েছিল, আর প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং ও চন্দ্রশেখর তো অর্থনীতিকে অর্থনৈতিক অতল গহ্বরের কিনারায় নিয়ে এসেছিলেন।

হিন্দুফোবিক অর্থনীতিবিদরা উত্তর খুঁজুন, এখানে কিছু সম্পর্কিত পরিসংখ্যান দেওয়া হল। যখন ভারতকে নেহরু–গান্ধীর অধীনে দমন করা হচ্ছিল (১৯৬১ থেকে ১৯৯১–এর মধ্যে যার জন্য বিশ্বব্যাঙ্কের তথ্য পাওয়া যায়), এবং গড় বার্ষিক বৃদ্ধির হার ছিল ৪.২ শতাংশ, সেই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গড় বার্ষিক বৃদ্ধির হার ছিল ৩.৬ শতাংশ (খ্রিস্টান বৃদ্ধি হার); তুরস্কে ৪.৮ শতাংশ (মুসলিম বৃদ্ধি হার); তাইল্যান্ডে ৭.৭ শতাংশ (বৌদ্ধ বৃদ্ধি হার); চিনে ৬.৯ শতাংশ (চিনা লোক ধর্মে বৃদ্ধি হার); জাপানে ৬.১ শতাংশ (শিনটো বৃদ্ধি হার); ইজরায়েলের জন্য তথ্য নেই।

এবার ১৯৯১ থেকে ২০২১ সালের মধ্যেকার, অর্থাৎ পরবর্তী ৩০ বছরের, তথ্য দেখুন। গড় বার্ষিক জিডিপি বৃদ্ধির হিন্দু হার হঠাৎ করে ৬.১ শতাংশে উন্নীত হল। বৃদ্ধির হিন্দু হার হিসাবে যা দেখা যাচ্ছিল, এবং যা রাজন ও তাঁর সঙ্গীরা বাজিয়ে চলেছেন, তা স্থানান্তরিত হয়েছে যে দেশে তিনি অর্থনীতি পড়ান সেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে (এই সময়ের মধ্যে দেশটির অর্থনীতি বার্ষিক ২.৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে)। একই সময়ে, তাইল্যান্ড বার্ষিক ৩.৬ শতাংশ, তুরস্ক ৪.৮ শতাংশ এবং জাপান ০.৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা যদি রাজনের বিদ্রুপকে এগিয়ে নিয়ে যাই, তাহলে মনে হবে খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, মুসলমান এবং শিন্টোরা হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে;‌ আমরা এই বিষয়ে একটি নতুন পেপারের জন্য অপেক্ষা করছি। এই সমস্ত বছরে, চিনের অর্থনৈতিক মির‌্যাকল স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান: ১৯৬১ থেকে ১৯৯১ সালের মধ্যেকার ৬.৯ শতাংশ থেকে চিনা লোকধর্ম অনুসরণকারীদের গড় বার্ষিক বৃদ্ধির হার পরবর্তী ৩০ বছরে ৯.২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা অর্থনীতি ঘিরে একটি নাস্তিক–অজ্ঞেয়বাদী প্রস্তাব প্রদর্শন করে। সারণি ২ এই পরিবর্তনগুলি দেখায়।

সারণি ২: ৩০ বছরের জিডিপি বৃদ্ধি
ধর্ম দেশ বৃদ্ধির হার (১৯৬১–১৯৯১) বৃদ্ধির হার (১৯৯১–২০২১) পরিবর্তন
বৃদ্ধির হিন্দু হার ভারত ৪.১ ৬.১  ২.০
বৃদ্ধির ইসলামি হার    তুরস্ক   ৪.৮   ৪.৭ -০.১
বৃদ্ধির চিনা লোকধর্ম হার চিন    ৬.৯  ৯.২ ২.৩
বৃদ্ধির খ্রিস্টান হার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৩.৬ ২ .৩ -১.৩
বৃদ্ধির ইহুদি হার ইজরায়েল তথ্য নেই  তথ্য নেই তথ্য নেই
বৃদ্ধির বৌদ্ধ হার  তাইল্যান্ড    ৭.৭ ৩.৬ -৪.১
বৃদ্ধির শিন্টো হার জাপান ৬.১   ০.৭  -৫.৪
শতাংশে গড় জিডিপি বৃদ্ধি, শতাংশে পরিবর্তন

ভবিষ্যৎ হিন্দুফোবিক থেকে যাবে

চতুর্থত, এটা স্পষ্ট যে রাজন এবং তাঁর ভারত–বিরোধী, হিন্দু–বিরোধী সহযোগীরা প্রসারিত স্বল্পদৃষ্টিতে ভুগছেন — তথ্যগুলি তাঁদের রাজনৈতিক (বর্তমান নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে), মতাদর্শগত (বাইরে সমৃদ্ধির ফল ভোগ করা এবং দেশে দারিদ্রের কর্মসূচি এগিয়ে দেওয়া) শারীরিক সুরক্ষা দৃষ্টিভঙ্গির (তাঁরা জানেন হিন্দুরা তাঁদের শিরশ্ছেদ করবে না) উপযোগী করে প্রচার করা হয়েছে। অতীতে বসবাস করার জন্য তাঁদের অভিযুক্ত করা হলে তা বৌদ্ধিক সততার কিছু প্রতীকের বড় বেশি উদার প্রয়োগ হয়ে যাবে। উপরে আলোচনা করা তথ্য এবং নিচের পূর্বাভাস অন্যথা প্রমাণ করে।

সামনের দিকে তাকালে, ২০৬০ সালের মধ্যে, ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ওইসিডি–র পূর্বাভাস অনুসারে, ভারতের জিডিপি ২০৬০ সালে ৪২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করতে পারে, যা হবে চিনের ৬২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের পরে দ্বিতীয়;‌ আর এই সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থাকবে ৩৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে এবং ইইউ ২৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে। প্রেক্ষাপটে বলতে গেলে, ভারতের জিডিপি জি২০’‌র প্রায় এক–পঞ্চমাংশ এবং বৈশ্বিক জিডিপি–র ১৭.৬ শতাংশ হবে। এই ধরনের সংখ্যা উচ্চ বৃদ্ধির হার ছাড়া আসতে পারে না। সেই বৃদ্ধির হারের ধর্ম হিন্দু হবে নাকি অন্য কিছু, তা একমাত্র রাজনই বলতে পারবেন।

রঘুরাম রাজন তিনটি ক্ষেত্রে সঠিক এবং একটিতে ভুল। তিনি সঠিক প্রথমে এই কারণে যে তাঁকে সুদর্শন এবং স্পষ্টভাষী হিসাবে দেখা যায়; দ্বিতীয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি শীর্ষ অর্থনীতির বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান; এবং তৃতীয়ত, তিনি এক অসাধারণ মহৎ অতীতে বসবাস করছেন, যা তাঁর মতাবলম্বী ও প্রতিধ্বনিকারীরা উদযাপন করে। কিন্তু তিনি একটি বিষয়ে ভুল করছেন:‌ ভারতে নতুন রাজনৈতিক স্লোগান হতে পারে ‘‌গর্ব সে কহো হামারি হিন্দু রেট অফ গ্রোথ হ্যায়’‌ (গর্ব করে বলো আমাদের হিন্দু বৃদ্ধির হার আছে)।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.