এই নিবন্ধটি ইন্টারন্যাশনাল উইমেন’স ডে সিরিজের অংশ।
এসডিজি-র অর্থায়নে ২.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের নাটকীয় বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে কার্যকর জলবায়ু অর্থায়নে লিঙ্গকে মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করা এই সময়ের নিরিখে অত্যন্ত প্রয়োজন। জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে আলোচনা গত কয়েক দশকে ব্যাপক আকার ধারণ করলেও জলবায়ু আলোচনায় লিঙ্গ সংক্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গির অন্তর্ভুক্তি অপেক্ষাকৃত সাম্প্রতিক। একটি সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞার অভাব থাকলেও এ কথা বলা যায় যে, জেন্ডার-স্মার্ট ক্লাইমেট ফিন্যান্স বা লিঙ্গ সুনির্দিষ্ট জলবায়ু অর্থায়ন আসলে জলবায়ু সম্পর্কিত আর্থিক বিনিয়োগ, নীতি এবং কর্মসূচিতে লিঙ্গ সংক্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গিকে সংহত করতে চায়। এ ক্ষেত্রে জলবায়ু সংক্রান্ত উদ্যোগগুলি নারী এবং পুরুষের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের পার্থক্যগত প্রভাবগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি নারীদের অনন্য দক্ষতা/অভিজ্ঞতাগুলিকে কাজে লাগাতে, লিঙ্গ সমতাকে উন্নীত করতে এবং দীর্ঘমেয়াদে তাঁদের ক্ষমতায়নের জন্য একটি রূপান্তরমূলক পরিবর্তন আনতে সাহায্য করে। লিঙ্গ-নির্দিষ্ট দুর্বলতা বিবেচনা করে এবং নারীদের স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই পদ্ধতিটি জলবায়ু কর্মসূচির কার্যকারিতা এবং স্থিতিশীলতাকে সর্বাধিক করে তোলে।
একটি সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞার অভাব থাকলেও এ কথা বলা যায় যে, জেন্ডার-স্মার্ট ক্লাইমেট ফিন্যান্স বা লিঙ্গ সুনির্দিষ্ট জলবায়ু অর্থায়ন আসলে জলবায়ু সম্পর্কিত আর্থিক বিনিয়োগ, নীতি এবং কর্মসূচিতে লিঙ্গ সংক্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গিকে সংহত করতে চায়।
জলবায়ু-প্ররোচিত বিপর্যয় এবং ক্রমবর্ধমান লিঙ্গ বৈষম্যের একটি উল্লেখযোগ্য কেন্দ্র ইন্দো-প্যাসিফিক একাধিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও) অনুসারে, নারীরা পুরুষদের তুলনায় অবৈতনিক পরিচর্যার কাজে চার গুণ বেশি সময় ব্যয় করেন, যা বিশ্বব্যাপী সর্বোচ্চ এবং এই অঞ্চলের ৭৩.৪ শতাংশ পুরুষের তুলনায় নারীদের মাত্র ৪৩.৬ শতাংশ কর্মরত। এই লিঙ্গ বৈষম্য জলবায়ু অর্থায়নে নারীদের সম্পৃক্ততা হ্রাস করে এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নারীদের প্রচেষ্টাকে বাধা দেয়। পরিবেশ মন্ত্রকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীদের সীমিত প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য, যেখানে বিশ্বব্যাপী গড় ১২ শতাংশের তুলনায় মন্ত্রকে নারী মন্ত্রীদের নেতৃত্বের হার মাত্র ৭ শতাংশ।
জলবায়ু পরিবর্তন একটি ‘ঝুঁকিমূলক গুণক’ হিসেবে নারী এবং দেশজ সম্প্রদায়ের জন্য বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক বৈষম্যকে তীব্রতর করে তোলে। এটি তাঁদের জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রাকৃতিক সম্পদের উপর ব্যাপক নির্ভরতার কারণে অর্থের বিনিময়ে ও অবৈতনিক উভয় ক্ষেত্রেই কৃষি এবং মাছ ধরার মতো কার্যকলাপে জড়িত থাকার পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তাকে সুনিশ্চিত করার প্রাথমিক কাজটিকে আরও দুর্বহ করে তোলে। খরা ও অপ্রত্যাশিত বৃষ্টিপাতের সময় পরিস্থিতি আরও প্রতিবন্ধকতাময় হয়ে ওঠে, যা এই ক্ষেত্রগুলিতে ইতিমধ্যেই অব্যাহত অবদান বজায় রাখার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। ২০১০ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ২২৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং এই পরিসংখ্যান দর্শায় যে, এই ধরনের বিপর্যয়গুলি অসামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে নারীদের প্রভাবিত করেছে, যার ফলে পুরুষদের তুলনায় নারীদের ক্ষেত্রেই উচ্চ মৃত্যুর হার দেখা যায়। সর্বোপরি, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাস্তুচ্যুতি লিঙ্গভিত্তিক ব্যাপক হিংসার দিকে চালিত করে এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নারীরা বিশ্বব্যাপী গড়ের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে এই হিংসার শিকার হন।
২০১০ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ২২৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং এই পরিসংখ্যান দর্শায় যে, এই ধরনের বিপর্যয়গুলি অসামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে নারীদের প্রভাবিত করেছে, যার ফলে পুরুষদের তুলনায় নারীদের ক্ষেত্রেই উচ্চ মৃত্যুর হার দেখা যায়।
জলবায়ু কর্মসূচিতে লিঙ্গ অর্থায়নের বর্তমান পরিসর
এই ভয়ঙ্কর বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী তহবিলের একটি নগণ্য ০.০১ শতাংশ এমন প্রকল্পগুলিকে সমর্থন জোগায়, যা আসলে জলবায়ু পরিবর্তন ও নারীর অধিকার সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করে। ২০২১-২০২২ সালে জলবায়ু অর্থায়নের গড় বার্ষিক প্রবাহ প্রায় ১.৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পেলেও তা চিরাচরিত ভাবে পুরুষ-প্রধান ক্ষেত্রগুলিতে পরিচালিত হয় অথবা লিঙ্গ বৈষম্যকে সক্রিয় ভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়।
যাই হোক, গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের (জিসিএফ) মতো জলবায়ু অর্থায়নের অগ্রভাগে থাকা জলবায়ু উদ্যোগগুলি তার সম্পদ বরাদ্দের সিদ্ধান্তে একটি লিঙ্গ-সংবেদনশীল পদ্ধতি ব্যবহার করে। এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপুঞ্জ সেন্ডাই ফ্রেমওয়ার্ক গ্রহণ করেছে, যা দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস বা ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন-এ (ডিআরআর) লিঙ্গ-মূলধারার অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানায়। এগুলি এমন একটি কাঠামো প্রদান করে, যার ভিত্তিতে লিঙ্গ বিবেচনাগুলি জলবায়ু অর্থায়নে মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের (জিসিএফ) মতো জলবায়ু অর্থায়নের অগ্রভাগে থাকা জলবায়ু উদ্যোগগুলি তার সম্পদ বরাদ্দের সিদ্ধান্তে একটি লিঙ্গ-সংবেদনশীল পদ্ধতি ব্যবহার করে।
২০২১-২০২২ সালে দ্বিপাক্ষিক বরাদ্দযোগ্য ওডিএ-র ৪৩ শতাংশ নীতিই উদ্দেশ্য হিসাবে লিঙ্গ সমতাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, যার পরিমাণ আগের বছরের ৪৫ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ৬৪.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে (চিত্র ১)। এর মধ্যে এই তহবিলের মাত্র ৪ শতাংশ প্রধান উদ্দেশ্য হিসাবে লিঙ্গ সমতা-সহ কর্মসূচিগুলিতে বরাদ্দ করা হয়েছে, যেখানে লিঙ্গ-ভিত্তিক হিংসা মোকাবিলায় মোট দ্বিপাক্ষিক ওডিএ-র ১ শতাংশেরও কম (৫৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) বরাদ্দ করা হয়েছিল। এই বরাদ্দের পরিমাণ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করার সময় লিঙ্গ বৈষম্যের উপর সীমিত মনোযোগ সংক্রান্ত উদ্বেগগুলিকে উত্থাপন করে। চিত্র ২-এ লিঙ্গ উদ্দেশ্য সমন্বিত জলবায়ু-সম্পর্কিত ওডিএ-র দেশভিত্তিক বরাদ্দের পরিমাণ দর্শানো হয়েছে।
চিত্র ১: নীতির উদ্দেশ্য হিসাবে লিঙ্গ সমতার সঙ্গে বরাদ্দযোগ্য ওডিএ (২০১১-২০২০)
সূত্র: ওইসিডি, ২০২২
চিত্র ২: জলবায়ু-সম্পর্কিত ওডিএ-তে লিঙ্গ সমতাকে সমন্বিত করে ওইসিডি দাতাদের পরিমাণ
সূত্র: ওইসিডি, ২০২২
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এডিবি) লিঙ্গ সমতা ও ইন্দো-প্যাসিফিক জুড়ে জলবায়ু প্রকল্পগুলিতে নারীদের অংশগ্রহণকে অগ্রাধিকার দিয়ে ৬৮ শতাংশ জলবায়ু বিনিয়োগ তহবিল বা ক্লাইমেট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডস-এর (সিআইএফ) প্রকল্পগুলি লিঙ্গ বিবেচনাকে সমন্বিত করে। এই অঞ্চলে ছ’টি প্রধান লিঙ্গ-মূলধারার সিআইএফ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলেও এই প্রকল্পগুলির কার্যকারিতা তাদের প্রারম্ভিক সূচনার দরুন মূল্যায়ন করা কঠিন।
প্রশমন সংক্রান্ত অভিযোজনের ক্ষেত্রে জলবায়ু অর্থায়নে একটি অন্তর্নিহিত পক্ষপাতও রয়েছে। অ্যাডাপ্টেশন গ্যাপ রিপোর্ট ২০২৩ অনুসারে, উন্নয়নশীল দেশগুলির অভিযোজন অর্থের চাহিদা উন্নত দেশগুলির পাবলিক ফিন্যান্স বা সরকারি তহবিলের বর্তমান প্রবাহের চেয়ে ১৮ গুণ বেশি। লিঙ্গ সমতার জন্য অভিযোজন অর্থের ৩৮ শতাংশ বরাদ্দ করা সত্ত্বেও একটি ‘প্রধান উদ্দেশ্য’ হিসাবে অগ্রাধিকারের স্পষ্ট অভাব রয়েছে।
এ ছাড়াও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন এবং ভারতের মতো এই অঞ্চলের বেশ কিছু দেশ নারীদের কণ্ঠস্বরকে মূলধারায় আনা এবং জলবায়ুতে লিঙ্গ হস্তক্ষেপকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিজেদের প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্যাসিফিক এনার্জি অ্যান্ড জেন্ডার স্ট্র্যাটেজিক অ্যাকশন প্ল্যান-এর (পিইজিএসএপি) অধীনে প্যাসিফিক দ্বীপপুঞ্জের সঙ্গে সহযোগিতা করেছে। এটি ক্লিন এনার্জি বা দূষণহীন জ্বালানিতে নারীদের নেতৃত্বের প্রচারের জন্য ১.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানে আগ্রহী। এর মধ্যে রয়েছে নারীদের মালিকানাধীন পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি ব্যবসার জন্য পাইলট প্রকল্প এবং ২২টি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপের দেশ ও অঞ্চল জুড়ে নারী ও মেয়েদের জন্য এসটিইএম বৃত্তি। এর পাশাপাশি ভারত ও ফ্রান্সের নেতৃত্বে ইন্দো-প্যাসিফিক ট্রায়াঙ্গুলার কোঅপারেশন ফান্ড (আইপিটিডিসি) হরাইজন ২০৪৭ পথনির্দেশিকার অধীনে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। এই তহবিলটি জলবায়ুর কথা মাথায় রেখে এবং এসডিজি-র উপর মনোযোগ দিয়ে এসডিজি ৫-কে প্রাধান্য দেয়। উন্নয়ন সহযোগিতার ত্রিভুজাকার পদ্ধতির অধীনে জার্মানির সঙ্গে ভারতের সম্পৃক্ততাও গুরুত্বপূর্ণ। মালাউই নারীদের মধ্যে কৃষি-ব্যবসার প্রচার এই উদ্যোগের অধীনে একটি প্রাসঙ্গিক প্রকল্প।
উন্নয়ন সহযোগিতার ত্রিভুজাকার পদ্ধতির অধীনে জার্মানির সঙ্গে ভারতের সম্পৃক্ততাও গুরুত্বপূর্ণ।
একই ভাবে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে লিঙ্গ সমতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য অস্ট্রেলিয়া সরকার অনুদান প্রদান করেছে, যার মূল লক্ষ্য হল জলবায়ু অর্থায়নের মাধ্যমে একটি লিঙ্গযুক্ত দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমনকে ত্বরান্বিত করা। ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের অংশ হিসাবে ব্রিটেন অভিবাসী নারী কর্মীদের মানব পাচার থেকে রক্ষা করার জন্য ওয়ার্ক ইন ফ্রিডম (ডব্লিউআইএফ) কর্মসূচি শুরু করেছে এবং নারীদের স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করতে ও নারীদের তৃণমূল সংগঠনের মাধ্যমে তাঁদের নেতৃত্বের প্রচারের জন্য ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স পার্টনারশিপ প্রোগ্রাম-এর (সিআরপিপি) সূচনা করেছে। জাপানের ওডিএ-র সংশোধিত সনদ জলবায়ু, খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষা ইত্যাদি বিশেষ ক্ষেত্রগুলি-সহ উন্নয়ন সহযোগিতার প্রতিটি পর্যায়ে লিঙ্গ মূলধারার উপর মনোযোগ দিয়েছে।
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তি এবং গুণমানসম্পন্ন অর্থায়ন
ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গি থাকা অপরিহার্য, যেটি লিঙ্গ ও জলবায়ু সংক্রান্ত বিরোধিতাকে মোকাবিলার জন্য উল্লেখযোগ্যও বটে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ইউএন কনভেনশনের কিয়োটো প্রোটোকলের অধীনে সমস্ত নিবন্ধিত ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজম (সিডিএম) প্রকল্পগুলির ৮৪ শতাংশের উপস্থাপন করলেও শুধুমাত্র গুটিকয়েক দেশই কার্যকর ভাবে সেগুলির ব্যবহার করে। চিন এবং ভারত বিশ্বব্যাপী জলবায়ু অর্থায়নের বৃহত্তম প্রাপক হলেও প্যাসিফিক আইল্যান্ড কান্ট্রিজ-এর (পিআইসি) মতো এই অঞ্চলের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলি ন্যূনতম অর্থায়ন পেয়ে থাকে। সর্বোপরি, এমন অনেক ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজম প্রকল্প রয়েছে, যা নারীদের জন্য উপকারী ক্ষুদ্র মাত্রার উদ্যোগগুলিকে উপেক্ষা করে।
চিন এবং ভারত বিশ্বব্যাপী জলবায়ু অর্থায়নের বৃহত্তম প্রাপক হলেও প্যাসিফিক আইল্যান্ড কান্ট্রিজ-এর (পিআইসি) মতো এই অঞ্চলের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলি ন্যূনতম অর্থায়ন পেয়ে থাকে।
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে বার্ষিক ১.১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন, যেখানে লিঙ্গ ব্যবধান ঘোচালে আঞ্চলিক অর্থনীতিতে ৩.২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রবাহ আসতে পারে। অতএব, জলবায়ু অর্থায়নের সঙ্গে লিঙ্গভিত্তিক পদ্ধতিকে সমন্বিত করা জলবায়ু সমস্যা মোকাবিলা এবং আর্থ-সামাজিক বৃদ্ধিকে উন্নীত করার জন্য একটি কৌশলগত উপায় সরবরাহ করে, যা স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং কার্যকর জলবায়ু অর্থায়নের একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।
প্রকৃতপক্ষে, জেন্ডার-স্মার্ট ক্লাইমেট ফিন্যান্সে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করার জন্য একটি ‘সর্বাত্মক প্রয়োজন এবং সুবিশাল সুযোগ’… উভয়ই বিদ্যমান। জলবায়ু অর্থায়নকে আক্ষরিক অর্থে ‘স্মার্ট’ হয়ে ওঠার জন্য একটি লিঙ্গভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গির অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজন। কারণ জলবায়ু কর্মসূচি থেকে লিঙ্গ বিবেচনাকে বাদ দিলে বিস্তৃত স্থিতিশীল চ্যালেঞ্জগুলি কার্যকর ভাবে মোকাবিলায় ব্যর্থতার ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে।
একটি জনকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি, যাতে স্থানীয় সমপ্রদায় এবং নারীদের তৃণমূল স্তরের প্রকৃত চাহিদাগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যাই হোক, লিঙ্গ-বিচ্ছিন্ন তথ্যের অভাব এবং ব্যক্তিগত ক্ষেত্রের সম্পৃক্ততার অনুপস্থিতির কারণে চ্যালেঞ্জগুলি অব্যাহত রয়েছে, যেখানে বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ব্যক্তিগত সম্পদের মাত্র ৪ শতাংশ উন্নয়নশীল অর্থনীতির দিকে পরিচালিত হয়। তাই লিঙ্গ-রূপান্তরমূলক পদ্ধতি অবলম্বন করা এবং রাষ্ট্রীয় ও অ-রাষ্ট্রীয় সংস্থার মধ্যে কার্যকর সহযোগিতার প্রচার অপরিহার্য। ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য নানাবিধ সুযোগ বিদ্যমান, যা সম্ভবত সকলের জন্য আরও ন্যায়সঙ্গত এবং স্থিতিস্থাপক ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্যে জলবায়ু অর্থায়নের প্রকৃত সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে সাহায্য করতে পারে।
স্বাতী প্রভু অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সেন্টার ফর নিউ ইকোনমিক ডিপ্লোমেসির (সিএনইডি) অ্যাসোসিয়েট ফেলো।
শ্যারন সারা থাওয়ানে অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টরের এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.