-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
গাজার পুনর্গঠন নির্ভর করছে এই অঞ্চলে হামাসের রাজনৈতিক আধিপত্য মোকাবিলার উপর — পরিবর্তনশীল ভূ-রাজনীতির মধ্যে আরব শক্তি এবং বিশ্ব নেতারা যে চ্যালেঞ্জটি সমাধান করতে হিমশিম খাচ্ছেন।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওয়াশিংটনে দায়িত্ব গ্রহণ, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক গাজা অঞ্চলটি দখলের হুমকি দিয়ে চাপ সৃষ্টি করার প্রেক্ষিতে মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় শক্তিগুলি গাজার পুনর্গঠন এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি কার্যকর পরিকল্পনা নিয়ে আসার জন্য তাড়াহুড়ো করছে। ট্রাম্পের পরিকল্পনায় রয়েছে ‘গাজার জনসংখ্যাকে মিশর ও জর্ডনের মতো নিরাপদ প্রতিবেশী দেশগুলিতে স্থানান্তর ও পুনর্বাসন’, এবং এর বিনিময়ে বিতর্কিত ভূমির অংশটিকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরায় রূপান্তরিত করা’।
ট্রাম্পের মূল ধারণা — গাজাকে গভীর ভূ-রাজনৈতিক সংকটের চেয়ে রিয়েল-এস্টেট সমস্যা হিসাবে বেশি করে দেখা, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক ফাটলের কেন্দ্রস্থলে — আরব শক্তিগুলিকে জরুরি ভিত্তিতে একত্রে জড়ো হতে বাধ্য করেছে। সৌদি আরব, জর্ডন, কাতার, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, বাহরাইন ও কুয়েতের নেতারা ফেব্রুয়ারি মাসে রিয়াদে মিলিত হয়ে প্যালেস্তাইন সংকটের জন্য একটি আরব-নেতৃত্বাধীন নীলনকশা পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছেন, কারণ গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইজরায়েলের যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। জনসংখ্যার স্থানচ্যুতি এবং পুনর্বাসনের বিষয়ে ট্রাম্প কতটা গুরুতর, তা বিতর্কের বিষয়। তবে হোয়াইট হাউস থেকে আসা তুলনামূলকভাবে নৈমিত্তিক বক্তব্য নিশ্চিতভাবেই গাজার পুনর্গঠন পরিকল্পনা নিয়ে আরও আলোচনার জন্য ৪ মার্চ ২০২৫ তারিখে মিশরের কায়রোতে জরুরি আরব শীর্ষ সম্মেলনের আগে আঞ্চলিক শক্তিগুলিকে একত্রিত করার জন্য যথেষ্ট উত্তেজনা তৈরি করেছিল।
সৌদি আরব, জর্ডন, কাতার, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, বাহরাইন ও কুয়েতের নেতারা ফেব্রুয়ারি মাসে রিয়াদে মিলিত হয়ে প্যালেস্তাইনি সংকটের জন্য একটি আরব-নেতৃত্বাধীন নীলনকশা পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছেন, কারণ গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইজরায়েলের যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে।
তবে, গাজার প্রেক্ষাপটে আজকের মূল সমস্যা শুধু পুনর্গঠন নয়, বরং এই উপত্যকার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং প্যালেস্তাইনি স্বার্থ নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। হামাসের বাইরে প্যালেস্তাইনিদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব সম্পর্কে প্রশ্নগুলি এখনও গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে, এই মূল ধাঁধার সমাধানের জন্য স্পষ্টতা, দিকনির্দেশনা বা কোনও আন্দোলন নেই। যদিও গত দেড় বছরে হামাসকে একাধিক আঘাতের মুখোমুখি হতে হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে তার শীর্ষ নেতৃত্বের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, ইজরায়েলের এই দলটিকে নির্মূল করার ঘোষিত লক্ষ্য সত্ত্বেও এটি তার প্রভাব ধরে রেখেছে বলে মনে হচ্ছে। এর সঙ্গেই যুক্ত এই বিষয়টি যে হামাসের সম্ভাব্য প্রতিস্থাপন একটিও পাবলিক ফোরামে, আঞ্চলিকভাবেও, গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করা হয়নি।
গাজায় রাজনৈতিক ও সামরিক উভয় প্রভাবের জন্য হামাসকে প্রতিস্থাপন করা সহজ হবে না, যদিও জঙ্গি গোষ্ঠীটি নিজেই গাজার বেশিরভাগ দুর্ভোগের জন্য দায়ী। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইজরায়েলের অসামঞ্জস্যপূর্ণ শক্তি প্রয়োগের তীব্রতা গাজাকে প্রায় অচেনা ভূগোলে পতিত করেছে, কিন্তু হামাস এখনও বেশ কার্যকর। যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসাবে বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে সম্প্রতি জনসংযোগ (পিআর) উন্নত করেছে, এবং জনসাধারণের আলোচনার অনেক অংশে 'প্রতিরোধ' ও 'সন্ত্রাস'-এর ধারণার মধ্যে একটি বৃহত্তর পার্থক্য তুলে ধরেছে। এর অন্য সহযোগী, প্যালেস্তাইনি ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) সাম্প্রতিক ইরান সফরের সময় জটিলতা আরও বাড়িয়েছে, কারণ পিআইজে-র প্রধান জিয়াদ আল-নাখালা ‘প্রতিরোধের পথ’-এর প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
আরব শক্তিগুলির জন্য, এগিয়ে যাওয়ার পথ নিঃসন্দেহে জটিল। গাজার পুনর্গঠনের পেছনে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উভয় পৃষ্ঠপোষকতা যোগানোর আর্থিক প্রয়োজন মেটানো এই নগদ সমৃদ্ধ রাষ্ট্রগুলির বেশ কয়েকটির জন্য ততটা কঠিন নয়। তবে, সামরিক-প্রধান ভঙ্গির বিরুদ্ধে ভবিষ্যতের প্রমাণ হিসেবে প্যালেস্তাইনি রাজনীতিকে পুনর্গঠন করা এবং একই সঙ্গে ইজরায়েলের নিরাপত্তা স্বার্থ সম্পর্কে সচেতন হওয়ার জন্য এর সঙ্গে একাধিক স্তর জড়িত। এগিয়ে যাওয়ার পথটি আদর্শভাবে জড়িত সকল পক্ষের কাছ থেকে আপস এবং স্পষ্টতা উভয়ই দাবি করবে, যা বলা সহজ কাজ।
গাজার পুনর্গঠনের পেছনে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উভয় পৃষ্ঠপোষকতা যোগানোর আর্থিক প্রয়োজন মেটানো এই নগদ সমৃদ্ধ রাষ্ট্রগুলির বেশ কয়েকটির জন্য ততটা কঠিন নয়।
প্রথমত, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি উভয়কেই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ইরানের সঙ্গে তাদের যোগাযোগের সুযোগ নিতে হতে পারে, যার অর্থ হামাস, পিআইজে ও হিজবুল্লার প্রতি তেহরানের সমর্থন সহজতর করা। এরপরে, ইজরায়েলকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং একেবারে মৌলিকভাবে এর সার্বভৌমত্ব-নেতৃত্বাধীন নিরাপত্তা চাহিদা বাস্তবসম্মতভাবে মোকাবিলা করতে হবে। এটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানে রূপান্তরিত হবে কি না, তা একটি মৌলিক প্রশ্ন। কাগজে কলমে, অন্য কোনও ফলাফল নেই, এবং স্থিতাবস্থায় অন্য কোনও ব্যাঘাত ঘটলে তার সমাধান হবে না, বরং সর্বোচ্চ পর্যায়ে তা একটি বাধা হবে। এখন মূল প্রশ্নটি হল, সমাধান খোঁজা উচিত, নাকি অল্প কয়েক জনের জন্য স্থিতাবস্থার সুবিধাগুলি জোরদার করাই পছন্দের বিকল্প হবে?
প্যালেস্তাইনে অস্থিরতার ফলে আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা উপকৃত হয়েছে স্বল্পমেয়াদি অনুকূল সক্ষমতার কারণে, যা প্রায়শই আরব রাষ্ট্রগুলিসহ আঞ্চলিক খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে কাজ করেছে; কিন্তু তাদের বৃহৎ শক্তির প্রতিযোগিতারও মোকাবিলা করতে হবে। এটি প্রবাদপ্রতিম শান্তি চক্রের একটি অতিরিক্ত অংশ। চিন ইতিমধ্যেই আরব-নেতৃত্বাধীন প্যালেস্তাইনপন্থী দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য তার সমর্থন ব্যক্ত করেছে। তবে রাশিয়া এখনও দ্বিধার মধ্যে রয়েছে। সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের শাসনের রাতারাতি পতন শুধু মস্কোর রাজনৈতিক প্রভাবকেই হ্রাস করেনি, বরং ভৌগোলিকভাবেও মস্কোকে এই অঞ্চলে প্রান্তিক করে দিয়েছে, যেখানে দামেস্কে আহমেদ আল-শারার নতুন সরকারের সঙ্গে মধ্যস্থতা করে দেশটি ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে তার হারানো সামরিক ঘাঁটিগুলির নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করছে। একইসঙ্গে, ডোনাল্ড ট্রাম্প-ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে উত্তেজনা শুধু ইউরোপকেই নয়, ইরানকেও ঝুঁকির মুখে ফেলছে। এই ধরনের জল্পনার চালিকাশক্তি হল ইরানের সুস্পষ্ট আশঙ্কা যে, তার দীর্ঘদিনের মিত্র মস্কো ইউরোপীয় মহাদেশে দীর্ঘমেয়া্দি কৌশলগত লাভের জন্য আমেরিকাকে নানা ছাড় দিতে পারে, যার লক্ষ্য হবে তেহরানের উপর, বিশেষ করে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে, মার্কিন চাপ বৃদ্ধি।
প্যালেস্তাইনে অস্থিরতার ফলে আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা উপকৃত হয়েছে স্বল্পমেয়াদি অনুকূল সক্ষমতার কারণে, যা প্রায়শই আরব রাষ্ট্রগুলিসহ আঞ্চলিক খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে কাজ করেছে; কিন্তু তাদের বৃহৎ শক্তির প্রতিযোগিতারও মোকাবিলা করতে হবে।
উপরে উল্লিখিত সমস্ত জটিলতার মধ্যে, প্যালেস্তাইনি রাজনীতির ভবিষ্যৎ একটি ধূসর অঞ্চলে আটকে আছে। গাজার উপর হামাসের নিয়ন্ত্রণ ভেঙে ফেলার যে কোনও প্রচেষ্টার একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া হবে। সামরিকভাবে, হামাসকে সরাসরি নির্মূল করা সম্ভব নাও হতে পারে। রাজনৈতিকভাবে, হামাসকে একটি বৃহত্তর প্যালেস্তাইনি প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভবত আরও গুরুতর চ্যালেঞ্জ, কারণ এই গোষ্ঠীর আধিপত্য নিশ্চিত করার জন্য প্যালেস্তাইনি ব্যবস্থার মধ্যেও লড়াই করার প্রবণতা রয়েছে।
অবশেষে, আরব বিশ্ব নিজেকে একটি সমস্যার জায়গায় দেখতে পায়। তারা আদর্শভাবে হামাসকে বিদায় জানাতে চায়, তবে একইসঙ্গে গাজায় প্যালেস্তাইনি জনগণের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থহানি বা স্থায়ীভাবে স্থানচ্যুতির জন্যও দায়ী না হওয়ার প্রত্যাশা করে। এটি শুধু আরব দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক পদক্ষেপের প্রয়োজনের কারণেই নয়, বরং এই কারণে যে এই ধরনের কাজের সঙ্গে তাদের যোগসাজশের ধারণা নেতার কর্তৃত্বের জন্য সরাসরি চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে, বিশেষ করে যদি বিষয়টি জনসাধারণের অনুভূতিকে একটি নির্দিষ্ট সীমার বাইরে উস্কে দেয়।
আগামী চার বছরের কথা মাথায় রেখে, ট্রাম্প এখন ইউরোপীয়দের বলছেন রাশিয়ার প্রেক্ষিতে তাদের নিজস্ব নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে, এবং আরবদের বলছেন আঞ্চলিক গতিশীলতা, যেমন ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইনের প্রেক্ষিতে আরও দায়িত্ব নেওয়ার জন্য গভীরভাবে চিন্তা করতে। এই ব্যাঘাতটি দীর্ঘমেয়াদে সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিকারক নাও হতে পারে।
কবির তানেজা অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ডেপুটি ডিরেক্টর ও ফেলো।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Kabir Taneja is a Deputy Director and Fellow, Middle East, with the Strategic Studies programme. His research focuses on India’s relations with the Middle East ...
Read More +