-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও পুনরুদ্ধার ভারতের জি২০ অ্যাজেন্ডার মূল বিষয় হবে
এই নিবন্ধটি ‘রাইসিনা এডিট ২০২৩’ সিরিজের অংশ।
অতি সম্প্রতি বিশ্ব অর্থনীতির প্রতি মনোভাব এই দাঁড়িয়েছে যে পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের জানুয়ারির গ্লোবাল ইকনমিক প্রসপেক্টস বিশ্ব এবং প্রায় সমস্ত জি২০ দেশের জন্য বৃদ্ধির হার কমিয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্যও উল্লেখযোগ্যভাবে মন্থর হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে, যা বিশ্বকে বৃদ্ধির অন্যতম অপরিহার্য উৎস থেকে বঞ্চিত করবে। এই দুর্বলতার অনুমান–চিত্র সেই সমস্যাটির জটিলতা বাড়ায় যা জি২০ ইন্ডিয়া এবং থিঙ্ক২০ সহ সংশ্লিষ্ট এনগেজমেন্ট গ্রুপগুলিকে মোকাবিলা করতে হবে।
অত্যন্ত ঋণগ্রস্ত উন্নয়নশীল দেশগুলিতে ঋণ সঙ্কট আরও খারাপ হতে পারে, যদি না ঋণদাতাদের মধ্যে ভার লাঘব করা নিয়ে কার্যকরভাবে ঐকমত্য গড়ে ওঠে। তবে তার জন্য জি২০–র সাধারণ কাঠামোতে সুনির্দিষ্ট অগ্রগতি প্রয়োজন।
১৫ বছর আগে যা জি২০–র জন্ম দিয়েছিল সেই আর্থিক সঙ্কট এই বছর ভয়ঙ্করভাবে তীব্র নাও হতে পারে। যাই হোক, কিছু দেশে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির লক্ষণ রয়েছে। তবে মুদ্রানীতির প্রোফাইল সামনের মাসগুলিতে আরও কঠোর হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, অত্যন্ত ঋণগ্রস্ত উন্নয়নশীল দেশগুলিতে ঋণ সঙ্কট আরও খারাপ হতে পারে, যদি না ঋণদাতাদের মধ্যে ভার লাঘব করা নিয়ে কার্যকরভাবে ঐকমত্য গড়ে ওঠে। তবে তার জন্য জি২০–র সাধারণ কাঠামোতে সুনির্দিষ্ট অগ্রগতি প্রয়োজন।
দ্বিতীয়ত, ব্রেটন উডস সিস্টেমের প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠাতাদের আপেক্ষিক ওজন, এবং সাধারণভাবে বাকি বিশ্বের, বিশেষ করে উদীয়মান অর্থনীতির, পরিবর্তনের মাত্রা ও গভীরতার তুলনায়, আন্তর্জাতিক আর্থিক স্থাপত্যে খুব সামান্যই পরিবর্তন হয়েছে। কিছু মানুষ যাকে ‘ব্রেটন উডস ২.০’ বলেন, তা একটি দূরের স্বপ্ন হয়েই থেকে গিয়েছে।
তৃতীয়ত, নীতি সংকেতগুলির সামান্যতম পিছু হঠার ফলে পুঁজির প্রবাহ পরিবর্তনের সম্ভাবনা, যা প্রচলিত কথায় ‘নিরাপত্তার দিকে পলায়ন’ হিসাবে পরিচিত, তা একটি সমন্বিত বিধানের অপরিহার্যতার গুরুত্বই তুলে ধরে। কিন্তু আর্থিক কেন্দ্রগুলি আবার তা অপছন্দ করে। সঙ্কট ব্যবস্থাপনার কেন্দ্রীয়তা, এবং বিশেষ করে জি২০ প্রক্রিয়ার আর্থিক সংকট ব্যবস্থাপনার বিষয়টি বিবেচনা করে ভারতের প্রেসিডেন্সির সময় এবং তারপরেও জি২০ অ্যাজেন্ডায় আর্থিক সংস্কার অত্যন্ত বিশিষ্টভাবে স্থান পাবে।
জি২০–র ভারতীয় প্রেসিডেন্সির সময় একটি সমন্বিত পুনরুদ্ধার কর্মসূচির আয়োজন করার বিষয়টি জি২০ অ্যাজেন্ডায় উন্নীত হওয়ার যোগ্য। এই ধরনের একটি পুনরুদ্ধার কর্মসূচি প্রণয়ন এবং এর জন্য বিশ্বাসযোগ্য সমর্থন জোগাড় করা বর্তমান বৈশ্বিক সহযোগিতার ভূদৃশ্যে একটি শ্রমসাধ্য কাজ, কারণ প্রধান দেশগুলি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিরোধপূর্ণ সম্পর্কে জড়িত। আমরা প্রত্যক্ষ করেছি কীভাবে সারা বিশ্বে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা বিন্দুমাত্র বিবেচনায় না–রেখে নীতির দিশা পরিবর্তন করে। কোভিড–১৯ অতিমারি চলাকালীন বিশাল আর্থিক উদ্দীপনার ব্যবস্থা করার পরে সমস্ত সরকারের সীমিত আর্থিক পরিসর সম্পর্কেও আমরা সচেতন। নীতিগত প্যাকেজ প্রণয়নের ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মন্ত্রীদের নতুন চিন্তাভাবনার সঙ্গে দৃঢ় সহযোগিতামূলক মনোভাব প্রয়োজন।
‘সিন্যাপটিক’–এ, ক্রিপ্টো প্রযুক্তির সঙ্গে মিলন তার মধ্যে অন্তর্নিহিত সংযোগের বিশাল শক্তিকে নির্দেশ করেছে।
যদি কেউ জি২০ সঙ্কট ব্যবস্থাপনাকে, বিশেষ করে আর্থিক ক্ষেত্রে, একটি মূল নির্দেশিকা হিসাবে গ্রহণ করতে সম্মত হন, তা হলেও এই ধরনের ব্যবস্থাপনার কার্যকারিতার জন্য অন্য অনেক ক্ষেত্রে সহযোগিতার অগ্রগতি প্রয়োজন। জি২০ প্রেসিডেন্সিতে ধারাবাহিকভাবে শেরপা সমস্যাগুলি যেভাবে বেড়ে চলেছে তা একটি বোঝা হয়ে উঠেছে বলে মনে হচ্ছে। যাই হোক, জি২০–র আর্থিক উদ্যোগগুলির লক্ষ্য বিশ্বব্যাপী স্থিতিশীলতা এবং পুনরুদ্ধার। আন্তঃসীমান্ত ডেটা ট্রান্সমিশন সমস্যার সমাধান করাও অপরিহার্য। এটি আমাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের উন্মুক্ততার বিষয়গুলিতে পৌঁছে দেয়, সেগুলির সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যাগুলি–সহ।
উরুগুয়ে রাউন্ডের সমাপ্তি এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ৩০ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে বিশ্বের মুখোমুখি সমস্যাগুলির মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হল প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং সীমান্ত নীতিতে পরিবর্তনের বিপরীতমুখী দিকনির্দেশ। প্রযুক্তির অগ্রগতি মানুষের জীবনকে ক্রমশ ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত করে তুলছে। এই সংযোগ শক্তিগুলি অনেক বেশি করে এখন উদ্ভাবন দিগন্তে অবস্থান করছে, যা দ্রুত ও ত্বরান্বিত গতিতে গ্রহণ ও প্রসারের অপেক্ষায় রয়েছে।
‘কসমিক’ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে উল্লেখ্য কয়েকটি হল ৭ এমএম বা তার কম গতিতে বড় ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, ইন্টারনেট অফ থিংস, অ্যাডেটিভ ম্যানুফ্যাকচারিং, বৈদ্যুতিক ও স্বচালিত যান। ‘জেনেটিক’ ফ্রন্টে জিনোম এডিটিং বিশাল সুযোগ এনে দিচ্ছে খাদ্য–কৃষি, প্রাণী ও মানব স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে, এবং ক্রিসপআর/ক্যাস৯–এর মতো এডিটিং মেশিন তাতে সাহায্য করছে। ‘সিন্যাপটিক’–এ, ক্রিপ্টো প্রযুক্তির সঙ্গে মিলন তার মধ্যে অন্তর্নিহিত সংযোগের বিশাল শক্তিকে নির্দেশ করেছে। অবশেষে, ‘মেমেটিক’ ফ্রন্টে অকল্পনীয় বৈচিত্র্যময় মানব সংস্কৃতি সহ পৃথিবীতে যা কিছু আছে তার ডিজিটালাইজেশন একটি বিশাল মেমেটিক শিল্পের বীজ বপন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে শারীরিক নড়াচড়া ছাড়াই ‘ভ্রমণ’।
আমরা যেন ভুলে না–যাই যে প্রযুক্তি সর্বদা মানব সংস্কৃতিতে পরিবর্তনের প্রধান চালিকাশক্তি হিসাবে কাজ করেছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মতো যুদ্ধ ও বিষাক্ত পদচিহ্নের ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে এর জঘন্য ব্যবহার সত্ত্বেও প্রযুক্তির অগ্রগতিই হোমো সেপিয়েন্সকে অস্তিত্বের বর্তমান পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। সমাজ ও নাগরিকদের মধ্যে যে গতিতে অগ্রগতি ঘটে, তা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। কিছু নাগরিক উদ্ভাবক; কেউ কেউ অগ্রগামী হওয়ার পরিবর্তে অনুসরণ করতে পছন্দ করেন; এবং কেউ কেউ পিছিয়ে থাকাও বেছে নিতে পারেন। তবুও, সামগ্রিকভাবে, প্রযুক্তির অগ্রগতি মানব সংস্কৃতিকে ইতিবাচক উপায়ে উন্নীত করেছে।
পুনরুদ্ধার, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংস্কার, বাণিজ্য সংঘাত হ্রাস, এবং সীমান্ত প্রযুক্তিতে কার্যকর সহযোগিতা বোধগম্যভাবে জি২০ ইন্ডিয়া এবং সংশ্লিষ্ট এনগেজমেন্ট গ্রুপগুলির অ্যাজেন্ডার শুধু একটি অংশ হবে।
সীমান্ত উন্মুক্ত করার গল্পটা এত সোজা নয়। গত ৩০ বছরে বাণিজ্য বিনিয়োগের বৈশ্বিক উন্মুক্তকরণের কোনও বড় প্যাকেজ নিয়ে সম্মতি হয়নি। নেতারা মনে হচ্ছে আঞ্চলিক পদ্ধতিতেই সন্তুষ্ট, যা প্রতিফলিত হয়েছে অনেক আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তিতে বা সাম্প্রতিক সময়ে স্বাক্ষরিত ব্যাপক অংশীদারি চুক্তিতে, যা ভূখণ্ডগতভাবে একটি অঞ্চলের বাইরে চলে যায়। আঞ্চলিক উদ্যোগের সমান্তরালে বাণিজ্য দ্বন্দ্ব, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা ও অর্থনৈতিক যুদ্ধ বেড়েছে। বিশেষভাবে উদ্বেগজনক হল প্রযুক্তি সুরক্ষাবাদ বা প্রযুক্তি বাণিজ্যবাদ, যার লক্ষ্য অস্বীকৃতি এবং অন্যান্য ধরনের নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে মূল প্রযুক্তির অগ্রগতি স্তব্ধ করা, এবং তা শুধু দ্বৈত–ব্যবহারের প্রযুক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে দ্বন্দ্বের বৃদ্ধি এর একটি উদাহরণ। যদি নেতারা উন্মুক্ততার বিরুদ্ধে তাঁদের বক্তব্যকে আরও ক্ষুরধার করে তোলেন, তা হলে এই ঘটনা সহজেই কোয়ান্টাম কম্পিউটিং–এর মতো অন্যান্য ফ্রন্টিয়ার প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে।
এমন একটি বিশ্বে, যেখানে প্রধান কুশীলবেরা জাতীয়তাবাদী সুরকে কঠোর করেছে, সেখানে জি২০ নেতাদের সামনে উপ–বৈশ্বিক প্রকৃতির ‘দ্বিতীয় সেরা’ চুক্তিগুলি অনুসরণ করার বাধ্যবাধকতা এসে পড়ে, তা সেগুলি স্থানিক বা শিল্পভিত্তিক যাই হোক। সেইসঙ্গেই দায় এসে পড়ে এই ধরনের চুক্তিগুলির বৈশ্বিকতাকে সর্বাধিক করার, যেমনটা ডব্লিউটিও চুক্তির ২৪ ধারায় নির্ধারিত এবং চতুর্থ পর্বে যথাযথভাবে বিবেচিত হয়েছে। শুধু একটি উন্মুক্ত বিশ্ব অর্থনীতিই, তা তার যতই ত্রুটি থাক, জি২০–চালিত পুনরুদ্ধারকে বিশ্বের বাকি অংশে ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ করে দেবে।
পুনরুদ্ধার, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংস্কার, বাণিজ্য সংঘাত হ্রাস, এবং সীমান্ত প্রযুক্তিতে কার্যকর সহযোগিতা বোধগম্যভাবে জি২০ ইন্ডিয়া এবং সংশ্লিষ্ট এনগেজমেন্ট গ্রুপগুলির অ্যাজেন্ডার শুধু একটি অংশ হবে। জলবায়ু পরিবর্তন ও জীববৈচিত্র্যের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অগ্রগতিও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। যাই হোক, কিছুটা নিরুৎসাহিত অর্থনৈতিক মনোভাব এবং বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তির দ্বন্দ্বের উদ্বেগজনক বৃদ্ধি কিন্তু পুনরুদ্ধার এবং জি২০ দেশগুলিতে ও তার বাইরেও তার প্রসারের উপর বেশি জোর দেওয়াকেই ন্যায্যতা দেয়।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Djisman Simandjuntak is a senior economist and Chair of the Board of Directors of CSIS Foundation Indonesia. He has worked on a wide array of ...
Read More +