Published on Jul 31, 2023 Updated 0 Hours ago

জলবায়ু অর্থায়নের জন্য উন্নত দেশগুলো এখন যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা অপ্রতুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। সবুজ অর্থায়নের এই সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য জি২০–কে বাস্তবসম্মত সমাধান খুঁজে বের করতে হবে

জি২০: গ্লোবাল সাউথের জলবায়ু অর্থায়ন চাহিদা মেটানোর সুযোগ

বিশ্ব এখন ইতিহাসের একটি জটিল সন্ধিক্ষণে দঁড়িয়ে আছে। এই সময় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার অপরিহার্যতাকে আর বিলম্বিত করা বা উচ্চাকাঙ্খী হিসাবে বিবেচনা করা যাবে না। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ এবং সেগুলির ক্রমবর্ধমান তীব্রতা একটি বাস্তবতা। এই ধরনের বিপর্যয়গুলি শ্রীলঙ্কা, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, মালদ্বীপ, ইন্দোনেশিয়া, ভারত ইত্যাদির মতো নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলিকে অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রভাবিত করেছে৷ একটি সাম্প্রতিক ইউএনডিআরআর রিপোর্টে দেখা গেছে যে জলবায়ু–সম্পর্কিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ ২০০০ থেকে ২০১৯–এর মধ্যে দ্বিগুণ হয়েছে৷ বিশ্বব্যাপী এই ধরনের দুর্যোগের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২.৯৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার.  । দুর্যোগের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে আটটিই    হল এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশ। সুতরাং, শুধু একটি রৈখিক প্রশমনের উপর মনোযোগ দিয়ে এই সমস্যাটির মোকাবিলা করা যাবে না; অভিযোজন ও স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

জি২০ গোষ্ঠীটি সীমিত সবুজ অর্থের সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য বাস্তবসম্মত বৈশ্বিক সমাধান খুঁজে পেতে সাহায্য করতে পারে, বিশেষ করে ভারতের প্রেসিডেন্সির সময়, যখন ভারত জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতার বৈষম্য মোকাবিলায় মনোনিবেশ করেছে।

ইউএনইপি–র অ্যাডাপটেশন গ্যাপ রিপোর্টের ফলাফল অনুসারে ইউএন ফ্রেমওয়র্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (ইউএনএফসিসিসি)–এর সদস্যদের ৮৪ শতাংশ কপ২৬–এর আগে অভিযোজন পরিকল্পনা ও নীতি কাঠামো তৈরি করেছিল। কিন্তু এই পরিকল্পনাগুলি পর্যাপ্ত বিনিয়োগ ছাড়া কার্যকর নাও হতে পারে। প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলি ২১০৫ সালের মধ্যে ব্যবহারযোগ্য সম্পদের বৈশ্বিক পরিমাণের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বাড়িয়ে পৌঁছে দিতে পারে প্রায় ৪৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে। জি২০ গোষ্ঠীটি সীমিত সবুজ অর্থের সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য বাস্তবসম্মত বৈশ্বিক সমাধান খুঁজে পেতে সাহায্য করতে পারে, বিশেষ করে ভারতের প্রেসিডেন্সির সময়। কারণ ভারত জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতার বৈষম্য মোকাবিলায় মনোনিবেশ করেছে।

অভিযোজন তহবিল ব্যবস্থা চালু করার জরুরি প্রয়োজন
কপ২৭ বিতর্কে আলোচনার মূল বিষয় হিসেবে আবির্ভূত হয় ‘‌প্রতিরোধ, ন্যূনতমকরণ ও মোকাবিলা’‌। অভিযোজনের জন্য একটি সংজ্ঞায়িত সবুজ শ্রেণিবিন্যাস ছাড়া এই তিন–সূত্রীয় অ্যাজেন্ডা কীভাবে বাস্তবায়িত হতে পারে? একটি শক্তিশালী তহবিল কৌশল হল উপযুক্ত সমাধান। তহবিল সংগ্রহ, বিমা প্রকল্প, ও মানবিক সহায়তা, সবই ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কৌশলগুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। বালি অ্যাকশন প্ল্যান ২০০৭ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সরঞ্জামগুলির মাধ্যমে বিমা এবং লোকসান ও ক্ষয়ক্ষতির (এলঅ্যান্ডডি) ক্ষেত্রে অভিযোজনের তাৎপর্য তুলে ধরেছিল। তবে এটি দায়িত্ব বা লক্ষ্যের কোনও সুস্পষ্ট সমন্বয় ছাড়াই অভিযোজন নীতির পরিসরে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। যারা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলি অসমভাবে বহন করছে ভারত সহ সেই জি২০ ও ভি২০ দেশগুলিতে সামাজিক সুরক্ষা, পুনরুদ্ধার ও পুনর্বাসনের জন্য এর অর্থ কী?

জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার বিশাল খরচ মেটানো
একটি প্রচলিত অর্থনীতি থেকে একটি সবুজ অর্থনীতিতে উত্তরণের জন্য সুবিশাল অর্থায়নের প্রয়োজন, বিশেষ করে নিম্ন–মধ্য আয়ের দেশগুলির (এলএমআইসি) ক্ষেত্রে। এই অর্থায়ন বর্তমানে অনুমোদিত পরিমাণের মাধ্যমে পূরণ করা যাবে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রয়োজন ‘‌বহুপাক্ষিকতা ২.০’‌, যার পথ নির্দিষ্ট করার জন্য প্রয়োজন একটি বাস্তবায়ন–কেন্দ্রিক জলবায়ু অর্থের ব্যবস্থা করা। ভাগ করে নেওয়া বৈশ্বিক সমৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে ভারত ক্রমাগত ‘‌উন্নয়ন অংশীদার’‌ খুঁজেছে, এবং নিজের জি২০ সভাপতিত্ব সেই দিকে ভারতের যাত্রাকে ত্বরান্বিত করার পথ প্রশস্ত করছে। এক বিস্তৃত এলঅ্যান্ডডি অর্থায়ন কৌশলকে ঘিরে একটি সমাধানভিত্তিক পথের তিনটি দৃষ্টান্ত রয়েছে, যেগুলিকে অবশ্যই তাদের ক্ষমতার সর্বোত্তম পর্যায়ে কার্যকর করতে হবে।

ইনসুরেজিলিয়েন্স হল জলবায়ু ও দুর্যোগ ঝুঁকির অর্থায়ন ও বিমা সম্পর্কিত সমাধানগুলির সমন্বিত সহযোগিতা ও বাস্তবায়নের অগ্রণী মঞ্চ।

প্রথমত, এলঅ্যান্ডডি–র জলবায়ু অর্থায়ন কার্যকর করার জন্য একটি সম্পূর্ণ নতুন  ব্যবস্থা স্থাপন করা প্রয়োজন। এর অর্থ হ‌ল শক্তপোক্ত আর্থিক বাজারের জন্য পদ্ধতিগত কঠোরতা ও প্রযুক্তিগত কার্যকারিতা নিয়ে আসার প্রয়াসকে ত্বরান্বিত করতে হবে। গবেষণাগুলি দেখায় যে মাথাপিছু কম জিডিপির দেশগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে স্থায়ী লোকসান ও ক্ষতির উচ্চ ঝুঁকির সম্মুখীন হয়। জরুরি রূপান্তরমূলক পরিবর্তনের কেন্দ্রে থাকা প্রয়োজন ঝুঁকি মূল্যায়ন, হ্রাস, হস্তান্তর ও ধারণের জন্য প্রসঙ্গনির্দিষ্ট কাঠামো। বিশ্বকে এলঅ্যান্ডডি–র জন্য একটি ব্যাপক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার দৃষ্টিভঙ্গির উপর মনোনিবেশ করতে হবে। এগুলিকে অবশ্যই ইতিমধ্যেই বাস্তবায়িত হচ্ছে এমন এলঅ্যান্ডডি অর্থায়নের কাঠামোগুলি থেকে অবিলম্বে কার্যকর করার সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি ধার করতে হবে। এই জায়গাটিতে ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশ এবং ছোট দ্বীপরাষ্ট্রগুলি তাদের দক্ষতা সঙ্গে নিয়ে আসে। বাস্তবায়ন, ক্ষতিপূরণ ও বিমা প্রস্তাবগুলির একটি পাইপলাইন তৈরিতে জি২০ ও ভি২০ সহযোগিতা ফলপ্রসূ হয়েছে। ইনসুরেজিলিয়েন্স হল জলবায়ু ও দুর্যোগ ঝুঁকির অর্থায়ন ও বিমা সম্পর্কিত সমাধানগুলির সমন্বিত সহযোগিতা ও  বাস্তবায়নের অগ্রণী মঞ্চ।

ঝুঁকি শনাক্তকরণ, মূল্যায়ন, এবং জলবায়ু বৈশিষ্ট্য ও ন্যায়বিচারের ধারণাগুলি ইতিমধ্যেই নির্দিষ্ট রূপ পেয়েছে। দেশগুলিকে এখন ইন্টিগ্রেটেড অ্যাসেসমেন্ট মডেলের (আইএএম) বিদ্যমান জ্ঞানের ভিত্তিগুলির দিকে নজর দেওয়া উচিত। সেইসঙ্গে সান্তিয়াগো নেটওয়ার্ক অন লস অ্যান্ড ড্যামেজ (এসএনএলডি)–এর কার্যকারিতা ও উপযোগী তহবিল নিশ্চিত করার জন্য কীভাবে সেগুলিকে তৈরি করা যেতে পারে সেদিকেও মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। অভিযোজন প্রয়োজনীয়তাগুলির জন্য, অভিযোজন অগ্রাধিকারকে বিনিয়োগযোগ্য উদ্যোগে রূপান্তরিত করার একটি নতুন ব্যবসায়িক মডেলের বিকাশের জন্য, এবং জলবায়ু ঝুঁকির তথ্য ও ডেটা উন্নত করার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস অর্থায়নের পরিমাণ ও গুণমানের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন। অনেক সময় অর্থনৈতিক আইএএম–গুলি  ‘‌ঝুঁকি স্তরীকরণ’‌ (‌রিস্ক লেয়ারিং)‌–এর ঘটনাটির অ–অর্থনৈতিক খরচ আর্থিক পরিভাষায় হিসাব করার উপকরণ হিসাবে ব্যয়–সুবিধা বিশ্লেষণ (সিবিএ) ও শক্তিশালী সিদ্ধান্তগ্রহণ পদ্ধতির (আরডিএমএ) ব্যবহার করে থাকে। তা ছাড়া প্রাক–বিদ্যমান ডেটার একটি ভান্ডার রয়েছে, যা খরচ–কার্যকারিতা ও বিমাব্যবস্থা প্রসারের জন্য ঝুঁকি অর্থায়ন বাস্তবায়নের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। ভারত তার ক্রমবর্ধমান জলবায়ু অর্থায়নের চাহিদা মেটানোর জন্য সঠিক কাঠামো তৈরি করার চেষ্টা করেছে। এর উপকরণ হিসাবে সার্বভৌম বন্ড আর্থিক জগতে অপেক্ষাকৃত আগে, ২০১৫ সালে, ইয়েস ব্যাঙ্ক–এর মাধ্যমে প্রবেশ করেছিল। যাই হোক, ২০৫০ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন থেকে অর্থনৈতিক এলঅ্যান্ডডি বার্ষিক ভারতের জিডিপির প্রায় ১.৮ শতাংশ হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই পরিমাণটি এত বৃহৎ যে বহুপাক্ষিক সমর্থন ছাড়া তা জোগাড় করা সম্ভব নয়।

অনেক সময় অর্থনৈতিক আইএএম–গুলি  ‘‌ঝুঁকি স্তরীকরণ’‌ (‌রিস্ক লেয়ারিং)‌–এর ঘটনাটির অ–অর্থনৈতিক খরচ আর্থিক পরিভাষায় হিসাব করার উপকরণ হিসাবে ব্যয়–সুবিধা বিশ্লেষণ (সিবিএ) ও শক্তিশালী সিদ্ধান্তগ্রহণ পদ্ধতির (আরডিএমএ) ব্যবহার করে থাকে।

দ্বিতীয়ত, ওয়ারশ ইন্টারন্যাশনাল মেকানিজম ফর লস অ্যান্ড ড্যামেজ (ডব্লিউআইএম)–এর মতো উদ্ভাবনী অর্থায়নের কৌশলগুলিতে উৎপাদনশীলভাবে অবদান রাখা এখন বিশ্বব্যাপী কথোপকথন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রাসঙ্গিক। ইনসুরেজিলিয়েন্স গ্লোবাল পার্টনারশিপ তার বিমা ব্যবস্থার আওতায় ৫০০ মিলিয়ন মানুষকে নিয়ে আসতে চায়। এগুলি হল জোটের নির্ধারিত বিশাল লক্ষ্য, যা অভিযোজন অর্থ ও জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতার বর্ণনে বিশাল ও ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এ দিকে তহবিলের ধরন ও সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলি থেকে দেখা যায় যে বহিরাগত ঋণের পরিমাণের ক্ষেত্রে বেসরকারি ঋণদাতাদের ভি২০ দেশগুলিতে ৩৬ শতাংশের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে;‌ তারপরে বিশ্ব ব্যাঙ্ক আছে ২০ শতাংশে, এবং বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাঙ্কগুলির (বিশ্ব ব্যাঙ্ক ব্যতীত) অবদানও ২০ শতাংশ। ভি২০ গোষ্ঠী এবং জার্মানির প্রেসিডেন্সির নেতৃত্বে জি৭ এই দুর্বল অর্থনীতিগুলির অবিলম্বে প্রয়োজনীয় চাহিদার মোকাবিলা এবং জলবায়ু ঝুঁকির বিরুদ্ধে একটি গ্লোবাল শিল্ডে (জিএসসিআর) বিনিয়োগ করার সাধারণ লক্ষ্য ভাগ করে নেয়। এতে ঝুঁকিমুক্ত করার জন্য ঋণ ও বিমা সমাধানগুলির আয়তন বৃদ্ধির বিষয়টি জড়িত, যা বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন। ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে, ভি২০ দেশগুলিকে ২০২২ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে বিভিন্ন বহির্দেশীয় ঋণ পরিষেবার জন্য বিস্ময়কর রকমের বেশি অর্থ, ৪৩৫.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, দিতে হবে। তহবিল ও সেগুলি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যে কিন্তু এলঅ্যান্ডডি–র জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অর্থায়নের ক্ষেত্রে জলবায়ু তহবিলের ন্যায়সঙ্গত বণ্টনের বিষয়টির প্রতি দায়বদ্ধতাও প্রতিফলিত হওয়া উচিত।

তৃতীয়ত, ভবিষ্যৎ জলবায়ুর পরিণতি এবং সেগুলির অনিবার্যভাবে বিকৃত ফলাফলের মোকাবিলা করার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলিকে অবশ্যই জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচিতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার উপর জোর দিতে হবে। যদিও কপ২৭–এ অ্যাজেন্ডা–সেটিং অনুশীলন সফল হয়েছে, এখনও পর্যন্ত কথোপকথনগুলি কিন্তু তা অনুসরণ করেনি এবং সম্ভাব্যভাবে তা আবারও শূন্যগর্ভ প্রতিশ্রুতিতে পরিণত হতে চলেছে।  শার্ম এল–শেখের প্রতিনিধিরা প্রকৃতপক্ষে একটি চূড়ান্ত চুক্তিতে না–পৌঁছেই শুধু লোকসান ও ক্ষতির অর্থের খুঁটিনাটির বিষয়ে বিতর্ক করেছেন। ২০১৯ সালের বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রতিবেদনে অনুমান করা হয়েছিল যে, পরিকাঠামো ও সামাজিক সুরক্ষার জলবায়ু স্থিতিস্থাপক ব্যবস্থায় বিনিয়োগের ফলে নিম্ন আয়ের দেশগুলিতে ৪.২ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের সুবিধা পাওয়া সম্ভব। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জের জলবায়ু এজেন্সির সম্প্রতি প্রকাশিত খসড়া বয়ানে স্পষ্টতই অংশীদারদের প্রতি, বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলির প্রতি, দায়িত্ব পালন করতে অস্বীকার করা হয়েছে৷ আমরা অস্পষ্ট রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির দিন পেরিয়ে এসেছি। জলবায়ু প্রলয় রুখতে বিশ্বব্যাপী প্রয়াস কতটা জরুরি তা আর বোধগম্যতার বাইরে নয়। মানুষ এখন যে রূপান্তরমূলক জরুরি সক্রিয়তা প্রত্যাশা করে তাতে কার্যকরভাবে সাড়া দেওয়া প্রাসঙ্গিক।

অভ্যন্তরীণ ফ্রন্টে জলবায়ু অর্থায়নের আন্তর্জাতিক কাঠামো গ্রহণ ও অভিযোজিত করার জন্য অন্য অনেক এলএমআইসি–র মতোই ভারতেরও প্রয়োজন বেসরকারি ক্ষেত্র, নাগরিক সমাজ ও অংশীদার দেশগুলির সহায়তায় স্থিতিস্থাপকতা, বিমা ও ঝুঁকির সংযোগ স্থাপনের বিশাল কাজটি হাতে নেওয়া।

সর্বশেষ জলবায়ু স্বচ্ছতা প্রতিবেদন অনুসারে, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারণে জি২০ দেশগুলির মধ্যে ভারতের অর্থনীতি সবচেয়ে বেশি বিরূপভাবে প্রভাবিত হয়েছে, এবং আর কোনও বিলম্ব না করেই জরুরি পদক্ষেপ করা প্রয়োজন। এলএমআইসি–গুলিকে অবশ্যই সেগুলিই চাইতে হবে যা অন্যান্য বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠান ও অংশীদারি তাদের দিতে চায়। অভ্যন্তরীণ ফ্রন্টে জলবায়ু অর্থায়নের আন্তর্জাতিক কাঠামো গ্রহণ ও  অভিযোজিত করার জন্য অন্য অনেক এলএমআইসি–র মতোই ভারতেরও প্রয়োজন বেসরকারি ক্ষেত্র, নাগরিক সমাজ ও অংশীদার দেশগুলির সহায়তায় স্থিতিস্থাপকতা, বিমা ও ঝুঁকির সংযোগ স্থাপনের বিশাল কাজটি হাতে নেওয়া।
একটি অনন্য ও প্রতিশ্রুতিশীল দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করে ভারত সেই কয়েকটি দেশের মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে যারা কপ২৬–এর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি হিসাবে বিকাশের পথ খোলা রেখেছে। তাই, জি২০ ও আন্তর্জাতিক সৌর জোট, এবং সেই সঙ্গে কোয়ালিশন ফর ডিজাস্টার রেসিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার–এর মতো প্রাসঙ্গিক সংস্থা ও বিশেষজ্ঞ নেটওয়ার্কগুলির সদস্যতা ভারতকে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনুঘটক হিসাবে কাজ করতে পারে। এই হস্তক্ষেপের প্রয়োজন এলঅ্যান্ডডি–র জন্য ঝুঁকিপ্রশমন অর্থায়নকে বাস্তবায়িত করার অনুমিত ও ক্রিয়াক্ষম প্রতিশ্রুতি এবং ঋণ অর্থায়ন ও ভারসাম্যহীনতার মধ্যে ব্যবধান দূর করার জন্য। যেখানে কপ২৭ ব্যর্থ হয়েছে, সেখানে জি২০ নতুন প্রতিশ্রুতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের নেতৃত্বে এসেছে। জলবায়ু অর্থায়নের জন্য উন্নত দেশগুলো যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা অপ্রতুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। এগিয়ে চলার জন্য জি২০ দেশগুলিকে ২০২৫–এর পরেও অর্থায়ন সংক্রান্ত একটি নতুন যৌথ লক্ষ্যের উপর তাদের আলোচনাকে কেন্দ্রীভূত করতে হবে।


বাণী শর্মা সেন্টার ফর নিউ ইকনমিক ডিপ্লোম্যাসি, অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ)–এর একজন রিসার্চ ইন্টার্ন ছিলেন

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.