Author : Ajay Bisaria

Published on May 08, 2025 Updated 0 Hours ago

ভারতকে অবশ্যই প্রতিরোধ ব্যবস্থা পুনরায় আরোপ করতে হবে এবং নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে

পুলওয়ামা থেকে পহেলগাম: কাশ্মীরের শান্তির লভ্যাংশ কি শেষ?

সম্প্রতি পহেলগামের একটি সবুজ তৃণভূমি নিরীহ মানুষের রক্তে ভিজে গিয়েছিল, যা ছিল ২০০৮ সালের পর ভারতের উপর সবচেয়ে বেদনাদায়ক সন্ত্রাসবাদী আঘাত। তদন্তকারীরা গণহত্যায় পাকিস্তানের ভূমিকা নিশ্চিত করার পর ২২/৪ এই বিষয়ের আরেকটি ভয়াবহ স্মারক হয়ে উঠেছে,  যে তার পশ্চিমী প্রতিবেশী এখনও ভারতের প্রধান প্রতিপক্ষ। কৌশলগত অবহেলা কোনও বিকল্প নয়।

পহেলগাম (২০২৫) একবিংশ শতাব্দীর ট্র্যাজেডির একটি হতাশাজনক ক্যালেন্ডারে যুক্ত হয়েছে: চেট্টিসিংপুরা (২০০০), সংসদ আক্রমণ (২০০১), কালুচক (২০০২), মুম্বই (২০০৮), উরি (২০১৬), এবং পুলওয়ামা (২০১৯), প্রতিটিই হিংস্রতার এক ভয়াবহ ঘটনা, যা উস্কানি দেওয়া এবং অস্থিতিশীল করার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছিল। উরি ও বালাকোটে ভারতের শাস্তিমূলক হামলা একটি নতুন নিরাপত্তা দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। এই প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর প্রত্যাশা করা হয়েছিল যে ভারত সীমান্তবর্তী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এমন বিশ্বাসযোগ্য প্রতিরোধ ব্যবস্থা স্থাপন করেছে যা একটি শান্তির লভ্যাংশ তৈরি করেছে, এবং তা কাশ্মীরকে সুস্থ করার জন্য একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া সঞ্চালনের সুযোগ দেবে। সেই ভঙ্গুর শান্তি কিছু সময়ের জন্য টিকে ছিল। কিন্তু ২০২৫ সালের পহেলগাম এখন একটি গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করে: প্রতিরোধ ব্যবস্থা কি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে, নাকি আরও গভীর কাঠামোগত পরিবর্তন ঘটেছে?

একটি পরিবর্তিত অঞ্চল, একটি নতুন ঝুঁকি পরামিতি

তাহলে কী বদলেছে? বিশ্ব। এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, পাকিস্তান।

বেশ কয়েকটি কারণ এই অঞ্চলের কৌশলগত ভারসাম্যকে বদলে দিয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের সঙ্গে আরও সম্পূর্ণরূপে একীভূত হয়েছে, রাজনৈতিক প্রক্রিয়াগুলি এটিকে স্বাভাবিকতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। পর্যটনের বিকাশ ঘটেছে। তবুও, ভারতের চারপাশের ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশ আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।

উত্তরে, ২০২০ সালে লাদাখে চিনের অনুপ্রবেশ একটি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি চিহ্নিত করেছে, যদিও সাম্প্রতিক সময়ে মুখোমুখি অবস্থান থেকে পিছিয়ে যাওয়া স্বস্তির ঝলক দেয়। অন্যত্র, গাজা থেকে ইউক্রেন পর্যন্ত প্রতিবেশীদের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সংঘাত হুমকির ধারণার পরিবর্তন করেছে, এবং আন্তর্জাতিক মনোযোগ কেড়ে নিয়েছে। একটি বিঘ্নিত হোয়াইট হাউস ঐতিহ্যবাহী নিরাপত্তা অনুমানকে অচল করে দিয়েছে। এই সমস্ত কিছুই পাকিস্তানের হিসাবের মধ্যে ছিল।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, পাকিস্তানের অভ্যন্তরে পরিবর্তনগুলি ভারতের প্রতি তার শত্রুতা বাড়িয়েছে। জেনারেল আসিম মুনির, আইএসআই প্রধান হিসাবে যাঁর তত্ত্বাবধানে  পুলওয়ামা হামলা হয়েছিল, তিনি ২০২২ সালে একটি অকার্যকর জাতির নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সেনাপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মন্দার মুখে থাকা অর্থনীতি, একজন কারাবন্দী জনপ্রিয় নেতা, এবং সামরিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনসাধারণের ঘৃণা এক অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।

অনেক পাকিস্তান-পর্যবেক্ষকের কাছে, মুনির সম্প্রতি যে ‘কঠিন রাষ্ট্র’ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেখানেই কাশ্মীরে পদক্ষেপ করার পূর্বাভাস ছিল, এবং বালুচিস্তানে ভারতের ভূমিকা ও কাশ্মীরকে পাকিস্তানের ‘জুগুলার ভেন’ হিসাবে বর্ণনা করার মধ্যে দিয়েও তা বোঝা যাচ্ছিল। অতীতের মতো, ভারতের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াই একজন অপছন্দের জেনারেলের জন্য উপযুক্ত, যিনি দেশপ্রেমে নিজেকে জড়িয়ে এবং পাকিস্তানের আদর্শগত সীমান্তের রক্ষক হিসাবে অভ্যন্তরীণ সমস্যা থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিতে আগ্রহী।

পুলওয়ামা ছক, ফিরে দেখা

পহেলগাম হত্যাকাণ্ডটি উচ্চ পর্যায়ের মার্কিন সফরের সঙ্গে সমাপতিত হয়, যা কাশ্মীরকে ‘আন্তর্জাতিকীকরণ’ করার একটি পুরনো সন্ত্রাসবাদী চক্রান্ত। এছাড়াও, পহেলগাম হামলার সময় মোদী সৌদি আরবে ছিলেন, যখন ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলাও সৌদি যুবরাজের পাকিস্তান সফরের সময় হয়েছিল।

ভারতের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া পরিমাপিত কিন্তু দৃঢ়। নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে — যাদের মধ্যে চারজন সদস্য ২০১৯ সালের প্রতিক্রিয়া পরিচালনা করেছিলেন — ৬৪ বছরের পুরনো সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত রাখা, কূটনৈতিক মিশন কমানো, আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করা, এবং ভিসা বন্ধ করার মতো পদক্ষেপের একটি গুচ্ছ অনুমোদন করা হয়েছে। তবুও, নিয়ন্ত্রণ রেখায় যুদ্ধবিরতি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়নি, যদিও এটি লঙ্ঘনের সম্ভাবনা ছিলই। তীর্থযাত্রীদের জন্য কর্তারপুর করিডোরও বন্ধ করা হয়নি। এটি একটি সুনির্দিষ্ট কৌশলের ইঙ্গিত দেয় — দৃঢ় কিন্তু বেপরোয়া নয়।

ভারত এবং বিশ্বের কাছে পাকিস্তানের নির্দোষ বলে দাবি অবিশ্বাস্য ছিল, এবং তাদের তরফে আরেকটি 'ফলস ফ্ল্যাগ' অভিযানের অভিযোগ স্পষ্টতই অযৌক্তিক বলে মনে হয়েছিল। আনুষ্ঠানিকভাবে, পাকিস্তান অনুমেয় আগ্রাসনের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল: ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া, এবং দ্বিপাক্ষিকতার কথা বলা সিমলা চুক্তিসহ অতীতের চুক্তিগুলি বাতিল করার হুমকি দেওয়া।

কূটনৈতিক পদক্ষেপগুলি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অ-গতিশীল পদক্ষেপগুলি প্রতিরোধ ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করবে না।

গতিশীল হওয়ার সময় - অভ্রান্ততা ও উদ্দেশ্যসহ

ভারতকে এখন এমন একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিক্রিয়া বিবেচনা করতে হবে যা পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর জন্য আগ্রাসনের খরচ বাড়িয়ে দেবে। পহেলগামের পিছনের পরিকাঠামো ও হ্যান্ডলারদের লক্ষ্যবস্তু করার জন্য একটি গতিশীল অভিযান  প্রয়োজন হতে পারে — এমনকি বালাকোটের চেয়েও আরও সুনির্দিষ্ট, দ্রুত ও ইচ্ছাকৃত। উত্তেজনা বৃদ্ধির ঝুঁকি বেশি হবে, তবে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়ার মাত্রা বুঝে তা কমানো যেতে পারে।

কূটনৈতিকভাবে, নয়াদিল্লি পাকিস্তানের সামরিক প্রতিষ্ঠানের উপর চাপ সৃষ্টি করার  জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন সংগ্রহ করবে। সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে লক্ষ্যযুক্ত নিষেধাজ্ঞা, আইএসআই-সন্ত্রাসবাদী জোটের প্রকাশ্যে মুখোস খুলে দেওয়া, এবং বিশ্বব্যাপী অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয় কৌশলগত প্রভাব বাড়িয়ে তুলতে পারে। ভারতের অবস্থান ইংরাজিতে ঘোষণা করার মোদীর সিদ্ধান্ত আকস্মিক ছিল না; এটি বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে একটি সংকেত ছিল যে ভারত বৈধতার সীমার মধ্যে কাজ করবে কিন্তু দৃঢ়তার সঙ্গে।

একইসঙ্গে, উত্তেজনা বৃদ্ধির খরচ এবং সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামো ভেঙে ফেলার সুবিধা সম্পর্কে ভারতের বার্তা পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্বের কাছে স্পষ্টভাবে পৌঁছতে হবে। এই নীরব কূটনীতি, যাকে প্রায়শই অবমূল্যায়ন করা হয়, এখনও অপরিহার্য।

হোম ফ্রন্ট সুরক্ষিত করা

বাহ্যিক প্রতিক্রিয়ার বাইরে, ভারতকে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে, কাশ্মীরের সন্ত্রাসবাদ দমন এবং অনুপ্রবেশ-‌বিরোধী গ্রিডগুলিকে শক্তিশালী করতে হবে। এর লক্ষ্য শুধু প্রতিরোধ নয় — বরং আশ্বাস। পর্যটক ও বাসিন্দা উভয়কেই নিরাপদ বোধ করতে হবে। স্বল্পমেয়াদে একটি বর্ধিত নিরাপত্তা পদক্ষেপ অনিবার্য হতে পারে। জম্মু ও কাশ্মীরে সফল নির্বাচন গণতান্ত্রিক বৈধতা পুনরুদ্ধারে একটি মাইলফলক ছিল। সেই গতি অব্যাহত রাখতে হবে। শান্তি প্রক্রিয়া টিকিয়ে রাখতে এটি নিরাপত্তা এবং অন্তর্ভুক্তি উভয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরি করতে হবে।

পহেলগামের ভয়াবহতা একটি নৃশংস স্মারক যে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সংকট তার সীমান্ত পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে। প্রতিরোধ পুনরায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে — শুধু প্রতিশোধের মাধ্যমে নয়, বরং যারা বিশ্বাস করেন যে কাশ্মীরে সহিংসতা পুরস্কার দেয় তাদের হিসাব বদলে দেওয়ার মাধ্যমে।



এই মতামতটি প্রথম
টাইমস অফ ইন্ডিয়া য় প্রকাশিত হয়েছিল।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Author

Ajay Bisaria

Ajay Bisaria

Ajay Bisaria is a Distinguished Fellow at ORF. He is also a strategic consultant and commentator on international affairs. He has had a distinguished diplomatic ...

Read More +