Published on Jun 29, 2023 Updated 0 Hours ago

ট্রিপল প্ল্যানেটরি ক্রাইসিস বা গ্রহের ত্রিগুণ সঙ্কটের মোকাবিলা এবং প্রশমনের প্রয়োজনীয়তা দানা বাঁধার সঙ্গে সঙ্গে এই বছরের বিশ্ব দিবসের ভাবনা ‘ইনভেস্ট ইন আওয়ার প্ল্যানেট’ বা ‘আমাদের গ্রহে বিনিয়োগ' এক ঐতিহাসিক বাঁকবদলকারী বিন্দু হয়ে উঠেছে

অভিযোজন থেকে উন্নতির পথ: শহুরে ভারতে গ্রীষ্মের দাবদাহের মোকাবিলায় প্রকৃতির ব্যবহার

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া আর কোনও বিকল্প নয়। বরং নিজেদের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক নিরাপদ ও স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। সমস্ত চরম জলবায়ুজনিত ঘটনার মধ্যে তীব্র গরমের ঘটনা যেমন এশিয়ায় তাপপ্রবাহ দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে লক্ষাধিক মানুষ ঝুঁকির মুখে পড়েছেন। গত বছরের মার্চ মাসে পাঁচ দশকে একবার ঘটা এ হেন তাপপ্রবাহের পর ২০২৩ সালে ভারতে গ্রীষ্মকালীন প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও ২০২৩ সালের মার্চ মাসের শুরুতে মুম্বইয়ের মতো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হওয়ার কারণে সৃষ্ট তাপপ্রবাহের সাক্ষী থাকলেও অপ্রত্যাশিত ঘূর্ণাবর্ত এবং পশ্চিমী ঝঞ্ঝার সঙ্গে অমরসুমি বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি ভারতব্যাপী সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হ্রাস করেছে। মার্চ মাসে মধ্য ভারতে বৃষ্টিপাত লং পিরিয়ড অ্যাভারেজ বা দীর্ঘ সময়ের গড়ের (এলপিএ) মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে, যেখানে দক্ষিণ ভারতে এটি ১০০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি নিজেদের মরসুমি উষ্ণ আবহাওয়ার বিজ্ঞপ্তি পরিমার্জিত করে ইন্ডিয়ান মেটিয়োরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট বা ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) ১ এপ্রিল একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায় যে, এই বছরের গ্রীষ্ম আরও খারাপ হতে চলেছে এবং মে মাসের শেষ নাগাদ সারা ভারত জুড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রির উপরে উঠতে পারে। একই সঙ্গে এ কথাও অনুমান করা হয়েছে যে, স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপপ্রবাহবিশিষ্ট দিনগুলির পরিমাণ ভারতের বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র ইত্যাদি রাজ্যে বৃদ্ধি পেতে পারে। এই তাপ বিপর্যয়ের কেন্দ্রে রয়েছে সেই শহরগুলি, যেখানে প্রতি বছর লক্ষাধিক মানুষ গ্রামাঞ্চল থেকে এসে বসবাস শুরু করেন। এই শহরগুলি জলবায়ু অরক্ষিত জনগোষ্ঠীর নতুন আবাসস্থল হয়ে উঠছে। ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি প্রশমিত করতে এবং ভবিষ্যতের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য তাই জলবায়ু-সহনশীল শহর এবং নগর তৈরি করা বর্তমানে অপরিহার্য।

মার্চ মাসে মধ্য ভারতে বৃষ্টিপাত লং পিরিয়ড অ্যাভারেজ বা দীর্ঘ সময়ের গড়ের (এলপিএ) মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে, যেখানে দক্ষিণ ভারতে এটি ১০০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে।

তাপপ্রবাহের জন্য সর্বজনীন ভাবে স্বীকৃত কোনও সংজ্ঞা না থাকলেও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা এটিকে সংজ্ঞায়িত করে যে, ‘একটানা পাঁচ বা তার বেশি দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গড় তাপমাত্রার চেয়ে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি অতিক্রম করলে তাকেই তাপপ্রবাহ বলে।’ যদিও ভারতের ক্ষেত্রে তাপপ্রবাহকে ‘একটি অঞ্চলের দু’টি স্টেশনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পরপর দু’দিনের নিরিখে সমতল এলাকায় কমপক্ষে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি এবং পার্বত্য অঞ্চলে কমপক্ষে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি’ বলে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে একটি গুরুতর তাপপ্রবাহ সতর্কতা জারি করা হয়। আইএমডি-র ক্লাইমেট ভালনারেবিলিটি অ্যান্ড হ্যাজার্ড অ্যাটলাস ২০২১ অনুসারে, ভারতে ১৯৬৯ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে গড়ে প্রতি বছর ১৩০ দিনের বেশি বিপর্যয়কর তাপপ্রবাহ দেখা গিয়েছে। এর পাশাপাশি, মধ্য ও উত্তর-পশ্চিম ভারতে তাপপ্রবাহের সময়কাল প্রায় পাঁচ দিন বেড়েছে। উপমহাদেশে দীর্ঘদিন ধরে তাপপ্রবাহের অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও বর্তমান জলবায়ু সঙ্কট নজিরবিহীন উচ্চতায় পৌঁছেছে। গবেষণা অনুসারে, খারাপতম পরিস্থিতিতে (আরসিপি ৮.৫) গ্রীষ্মকালীন তাপপ্রবাহের পুনরাবৃত্তির হার (এপ্রিল মাস থেকে জুন মাস) ২১০০ সাল নাগাদ তিন থেকে চার গুণ বৃদ্ধি পাবে। যদিও এটাও প্রত্যাশিত যে, উল্লিখিত সময়কালে গরমের গড় চরম তাপমাত্রা প্রায় দ্বিগুণ হবে।

শহরাঞ্চলে বর্ধিত তাপপ্রবাহজনিত ঝুঁকি

গ্রামীণ অঞ্চলের তুলনায় শহুরে অঞ্চলগুলি তাপপ্রবাহ দ্বারা বেশি প্রভাবিত হয়। এই তাপপ্রবাহের প্রভাব মানুষের স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক কার্যকলাপ, জল ও জ্বালানির মতো সম্পদের চাহিদা এবং জীববৈচিত্র্যের ক্ষতির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায়। একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে ভারতে চরম আবহাওয়ার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে, যার মধ্যে ২০১৫ সালে হায়দরাবাদ, দিল্লি, প্রয়াগরাজ এবং ভুবনেশ্বরের মতো শহরে রেকর্ড মাত্রার তাপপ্রবাহ পরিলক্ষিত হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজস্থানের ছোট শহর চুরুতে ২০১৬ সালে যখন ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, তখন ২০১৮ সালে চেন্নাই দীর্ঘ খরা এবং তীব্র গরমের কারণে জল সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে। ২০২২ সালে দিল্লি, রায়পুর, হায়দরাবাদ, মুম্বই এবং অন্যান্য শহুরে এলাকায় তাপপ্রবাহের মারাত্মক প্রভাব দেখা গেছে, যেখানে বস্তি এলাকার মতো সবচেয়ে অরক্ষিত জনগোষ্ঠীর মানুষ অসম ভাবে প্রভাবিত হয়েছেন। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, প্রতি বছর নতুন রেকর্ড গড়ার সময় আমরা কি গ্রীষ্মকালীন খারাপতম চরম পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুত? সমস্ত বাস্তুতন্ত্রের উপর নেতিবাচক প্রভাব কমাতে এবং ব্যবসায়িক মূল্য শৃঙ্খল রক্ষা করতে শহুরে ভারতকে কী সিদ্ধান্ত এবং পদক্ষেপ নিতে হবে?

এই তাপপ্রবাহের প্রভাব মানুষের স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক কার্যকলাপ, জল ও জ্বালানির মতো সম্পদের চাহিদা এবং জীববৈচিত্র্যের ক্ষতির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায়।

প্রকৃতি সর্বদা গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা মোকাবিলা করার জন্য উল্লেখযোগ্য প্রতিকার প্রদান করে এসেছে। শহরগুলিতে তাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য জল এবং গাছের যৌথ প্রয়োজনীতা অপরিহার্য। নেচার-বেসড সলিউশন বা প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান (এনবিএস) ব্যবহার করে চরম উত্তাপের সঙ্গে শহুরে জলবায়ু অভিযোজন প্রচেষ্টা জোরদার করা যেতে পারে, যা বাস্ততন্ত্র-ভিত্তিক পদ্ধতি হিসাবেও পরিচিত। এনবিএস শুধুমাত্র শহুরে স্থিতিস্থাপকতার উন্নতিতে অপরিহার্য দূষণহীন পরিকাঠামোকেই সমর্থন জোগায় না, বরং এটি অসংখ্য অতিরিক্ত সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত সুবিধাও প্রদান করে। এনবিএস-এর সঙ্গে অভিযোজনের জন্য শহরের পরিকল্পনা, নীতি নির্ণয় এবং শহুরে প্রশাসন দ্বারা পরিকাঠামো ও দূষণহীন পরিসরগুলি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে একটি পদ্ধতিগত পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে। দম বন্ধ করা গ্রীষ্ম এবং প্রাকৃতিক ভাবে আসন্ন দুর্যোগের মোকাবিলা করতে শহুরে ভারতকে তিনটি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

. শহরে সবুজ পরিসরের পরিমাণ বৃদ্ধি করা: সাম্প্রতিকতম এনআইইউএ ক্লাইমেট-স্মার্ট সিটিজ রেডিনেস রিপোর্ট অনুসারে, মোট ১২৬টি শহরের মধ্যে প্রায় ৬৫টি শহর পৌরসীমার মধ্যে ১২ শতাংশের বেশি সবুজ পরিসর রাখার প্রয়োজনীয় ইউআরডিপিএফআই শর্ত পূরণ করেছে৷ অন্য দিকে, ভারতের কোনও শহরই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাথাপিছু ৯ বর্গমিটার সবুজ আচ্ছাদনের প্রামাণিক মান পূরণ করে না। রিয়েল এস্টেটের ক্রমবর্ধমান চাহিদার ফলে আর্বান হিট আইল্যান্ড বা শহুরে তাপ দ্বীপগুলির অবস্থা খারাপতর হচ্ছে, যা সবুজ পরিসরের হ্রাস ঘটিয়েছে এবং থার্মাল কমফর্ট বা তাপ সংক্রান্ত স্বস্তির উপর প্রভাব ফেলেছে। তাই অলিগলির বাগান, গ্রিন রুফ বা সবুজ ছাদ, গ্রিন ওয়াল বা সবুজ দেয়াল, শহুরে বনাঞ্চল, সংযুক্ত সবুজ করিডোর, বৃক্ষাচ্ছাদনের সীমা সংক্রান্ত গ্রিন বেল্ট এবং অন্যান্য বিষয়-সহ বিদ্যমান উপায় বজায় রাখার পাশাপাশি সবুজের আচ্ছাদন উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এর পাশাপাশি, স্থানীয় জীববৈচিত্র্য কৌশল এবং কর্মসূচি (এলবিএসএপি) গড়ে তোলা এবং প্রতিটি শহরে একটি বৃক্ষসুমারির সূচনা স্থানীয় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং স্থানীয় গাছের প্রজাতির রোপণকে আরও উৎসাহিত করবে।

. নগর পরিকল্পনা প্রক্রিয়ার মধ্যে এনবিএসএর অন্তর্ভুক্তিকরণ: একটি শহরকে কীভাবে গড়ে তোলা উচিত, কোথায় পরিকাঠামোর প্রয়োজন, কীভাবে জমি ব্যবহার করতে হবে এবং কীভাবে প্রত্যাশিত চাহিদা মেটানো সম্ভব, সেই সংক্রান্ত সরকারি নথিগুলিকে মাস্টার প্ল্যান বা উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা বলা হয়। যদিও নগর পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক এলাকার মাস্টার প্ল্যানের বিভাগগুলি চিরাচরিত ভাবে অবহেলিত থেকেছে এবং সেই সম্পর্কে কোনও সুস্পষ্ট ধারণা গড়ে ওঠেনি। গ্রিনফিল্ড প্রতিবেশ এবং টাউনশিপগুলিতে সবুজের আচ্ছাদনের উচ্চতর অনুপাত স্থির করার জন্য মডেল নির্মাণকারী কোড এবং উপ-আইনগুলি সংশোধন করা প্রয়োজন, যেগুলি বিনোদনমূলক এলাকায় অনুমোদিত কার্যকলাপগুলিকে সীমিত করে। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার জন্য সবুজ আচ্ছাদনকে বাস্তবে নিরীক্ষণ করার উদ্দেশ্যে উচ্চ-রেজোলিউশন স্যাটেলাইট চিত্র এবং রিমোট সেন্সিং সরঞ্জাম-সহ সাম্প্রতিক প্রযুক্তিগত অগ্রগতিগুলিকে কাজে লাগানোর সময় বিনোদনমূলক থেকে অন্যান্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভূমি ব্যবহারের পরিবর্তনগুলির উপর কঠোর নজরদারি বজায় রাখা অপরিহার্য। বিকল্প হিসেবে প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানগুলির অপ্রতুলতার কথা মাথায় রেখে পরিকল্পনাবিদদের অবশ্যই যত্নশীল ভাবে এনবিএস ব্যবস্থাগুলির তালিকা নির্মাণ করতে হবে। এগুলি মাস্টার প্ল্যানে প্রসঙ্গ-নির্দিষ্ট এবং এ ক্ষেত্রে ত্রুটিপূর্ণ অভিযোজনের কোনও জায়গা নেই। সর্বোপরি, উচ্চতর ফ্লোর এরিয়া রেশিওস (এফএআর) প্রদান আরও বেশি পরিমাণে শহুরে সবুজ পরিসরের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে। এর পাশাপাশি, আধা-শহুরে সবুজ পরিসরের রূপান্তরকে (কৃষি জমি-সহ) অন্যান্য ভূমি ব্যবহারে সীমিত করা এবং ক্রমাগত শহরে সবুজ পরিসর দ্বারা আচ্ছাদিত এলাকার পরিমাণ বৃদ্ধি করা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের গুণমানকে উন্নত করবে এবং শহুরে তাপ দ্বীপের নেতিবাচক প্রভাবগুলিকেও প্রতিরোধ করবে।

. এনবিএস প্রচারের জন্য শহরে অর্থ  প্রশাসনের নতুন পরিকাঠামোর সুবিধা: ৭৪তম সংশোধনী আইন ভারতের শহুরে পরিবেশ পরিচালনায় শহুরে প্রশাসনিক সংস্থাগুলিকে (ইউএলবি) স্বায়ত্তশাসনের ক্ষমতা প্রদান করলেও পরিকাঠামোর চাহিদা মেটাতে তহবিল অপ্রতুল থেকেছে। সুতরাং সভরিন গ্রিন বন্ড বা সার্বভৌম সবুজ বন্ড, মিশ্রিত অর্থ, স্বেচ্ছামূলক কার্বন বাজার, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব এবং আরও অনেক পন্থার মতো উদ্ভাবনী তহবিলের বিকল্পগুলি অন্বেষণ করা যেতে পারে। এর পাশাপাশি, শহরগুলিতে এনবিএস-এর কার্যকর প্রশাসনের জন্য প্রতিটি পর্যায়ে সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণের সঙ্গেই সর্বোত্তম অনুশীলন এবং জ্ঞান ভাগ করে নেওয়ার জন্য আন্তঃবিভাগীয় এবং আন্তঃ-ওয়ার্ড সমন্বয় প্রয়োজন। প্রতিটি শহরে পরিবেশ কমিটি / জলবায়ু কেন্দ্র তৈরি আখেরে জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা পরিকল্পনাকে উন্নত করবে। এ ছাড়াও ভবিষ্যতের তাপপ্রবাহের খারাপতর প্রভাবগুলি মোকাবিলা করতে এবং শহুরে তাপ কর্মসূচি প্রস্তুত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামির মতো প্রতিটি লক্ষাধিক জনসংখ্যাবিশিষ্ট শহরের জন্য একজন করে চিফ হিট অফিসার নিয়োগ করা জরুরি। উপরন্তু, শহুরে পরিসরে জীবনযাত্রার পরিবর্তনগুলির ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ‘লাইফ’ উদ্যোগকে মূল স্রোতে নিয়ে আসা দীর্ঘমেয়াদে শহুরে পরিকাঠামোর চাহিদা কমাতে সহায়তা করবে। তাই জলবায়ু সহনশীল শহরগুলিকে দ্রুত গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন আর্থিক সহায়তা-সহ একটি সামগ্রিক প্রশাসনিক পরিকাঠামো প্রয়োজন।

ভারতীয় শহরগুলিতে নীরব বিপর্যয়ের (তাপপ্রবাহ) পুনরাবৃত্তির হার, তীব্রতা এবং সময়কাল দ্রুত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শহরগুলির ব্যবস্থাপনা, পরিকল্পনা এবং নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়গুলি পুনর্বিবেচনা করা অপরিহার্য। অতএব জলবায়ু সংক্রান্ত আশার আলো ফিকে হয়ে আসার আগেই শহুরে পরিবেশে প্রকৃতিকে পুনঃসংজ্ঞায়িত করা এবং আমাদের গ্রহে ব্যাপক বিনিয়োগ করা জলবায়ু অভিযোজন, প্রশমন এবং স্থিতিস্থাপকতার সম্ভাবনাকেই বাড়িয়ে তুলবে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.