Author : Manoj Joshi

Published on May 18, 2023 Updated 0 Hours ago

ইউক্রেন সঙ্কটের পর ক্রমবর্ধমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপ সম্পর্ক কি চিনে ইইউ-র স্বার্থকে প্রভাবিত করেছে?

ইউরোপ ও চিন: ইউক্রেন সঙ্কটের প্রভাব

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডের লেইন ৫-৭ এপ্রিলের মধ্যে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে একটি শীর্ষ বৈঠক করার উদ্দেশ্যে বেজিং সফরে গিয়েছিলেন। তাঁদের যৌথ সফরের লক্ষ্য ছিল চিনকে সম্পৃক্ত করা এবং এই সঙ্কেতই দেওয়া যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) একটি দল হিসেবেই কাজ করবে।

এই সফর ইউরোপের লক্ষণীয় উদ্যোগেরই এক অংশ, যার উদ্দেশ্য চিনের সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখা। এই সম্পর্ক ইউক্রেনের ঘটনা, জিনজিয়াং-এর মানবাধিকার সংক্রান্ত সমস্যা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-চিন উত্তেজনা দ্বারা সৃষ্ট টানাপড়েনের ফলে প্রভাবিত হয়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলিতে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ এবং স্পেনের প্রাইম মিনিস্টার পেদ্রো সানচেজও বেজিং সফরে গিয়েছেন।

এই সফর ইউরোপের লক্ষণীয় উদ্যোগেরই এক অংশ, যার উদ্দেশ্য চিনের সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখা। এই সম্পর্ক ইউক্রেনের ঘটনা, জিনজিয়াং-এর মানবাধিকার সংক্রান্ত সমস্যা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-চিন উত্তেজনা দ্বারা সৃষ্ট টানাপড়েনের ফলে প্রভাবিত হয়েছে।

উরসুলা ফন ডের লেইন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণে বেজিং সফরে যান এবং চিনারা উভয় নেতার সফরকে যেভাবে পরিচালনা করেছিল, তাতে এক তীব্র বৈপরীত্য লক্ষ করা গিয়েছে। এক দিকে যখন ফরাসি প্রেসিডেন্ট উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়েছিলেন, তখন অন্য দিকে ফন ডের লেইনের সফরকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ইউক্রেন সংঘাতের শুরু থেকে ফন ডের লেইনের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সুদৃঢ় সম্পর্ক যে এর নেপথ্যে প্রধান কারণ, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

চিন এমন এক সময়ে ইউরোপের সঙ্গে তার সম্পর্ক শক্তিশালী করতে আগ্রহী যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে এবং যেখানে ইউক্রেন সঙ্কটের ক্ষেত্রে চিনের কার্যকলাপে গভীর সন্দেহ প্রকাশ করা হচ্ছে। এ বছরের শুরুতে চিনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই ইউরোপ সফরে গিয়ে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে একটি বক্তৃতা দেন, যেখানে তিনি ইউক্রেনের জন্য চিনের ১২ দফা শান্তি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন এবং গুপ্তচর বেলুন বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একটি কড়া বার্তা পাঠাতে চান।

তাঁর বেজিং সফরের প্রাক্কালে ফন ডের লেইন পুতিনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য শি-র সমালোচনা করে একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্কে বক্তৃতা পেশ করেন। চিনের শান্তি প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে তিনি সেই বক্তৃতায় আরও বলেন যে, ইউক্রেনের ভূখণ্ড অধিগ্রহণের প্রশ্ন সমাধান করে না, এমন কোনও পরিকল্পনা কার্যকর নয়। যাই হোক, তিনি স্বীকার করেছিলেন যে, ‘কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ঝুঁকিমুক্ত’ করার প্রয়োজনীয়তা থাকলেও ইউরোপের জন্য বিযুক্তিকরণ কার্যকর কৌশল ছিল না। এই কৌশলের অংশ হিসাবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচিত চিনাদের সামনে অস্বস্তিকর বিষয়গুলি দ্বিধাহীনভাবে উত্থাপন করা এবং একই সময়ে এমন নীতি গ্রহণ করা, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনীতি এবং শিল্পকে আরও প্রতিযোগিতামূলক ও স্থিতিস্থাপক করে তুলবে।

৬ এপ্রিল একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের পাশাপাশিই দুই ইউরোপীয় নেতা দ্বিপাক্ষিকভাবে প্রেসিডেন্ট শি-র সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকের আগে শি-র পাশে দাঁড়িয়ে ম্যাক্রোঁ বলেছিলেন যে, তিনি ইউক্রেনের বিষয়ে ‘রাশিয়াকে যুক্তির পথে এবং সকলকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনতে’ চিনের উপর নির্ভর করছেন। ম্যাক্রোঁর সঙ্গে বৈঠকের পরে শি শান্তি আলোচনার সুবিধার্থে এবং ইউক্রেন সঙ্কটের রাজনৈতিক নিষ্পত্তির বিষয়ে চিনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন যে, চিন এই উদ্দেশ্যে ফ্রান্সের সঙ্গে একটি যৌথ পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। উল্লেখযোগ্যভাবে তাঁর বিবৃতি এ কথার উপরেই জোর দেয় যে, নাগরিকদের সুরক্ষার প্রয়োজনের পাশাপাশি ‘পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা উচিত নয় এবং পারমাণবিক যুদ্ধ চালানো অনুচিত।’ শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরু করার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তাঁদের উচিত ‘সকল পক্ষের বৈধ নিরাপত্তা স্বার্থকে মিটমাট করা, রাজনৈতিক মীমাংসা চাওয়া এবং একটি ভারসাম্যপূর্ণ, কার্যকর ও স্থিতিশীল ইউরোপীয় নিরাপত্তা অবকাঠামো গড়ে তোলা।’

শি-ফন ডের লেইন বৈঠকের পর একটি চিনা বিবৃতিতে শি আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে একটি কৌশলগত শক্তি হিসাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূমিকার উপর জোর দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, ‘চিন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচিত মতপার্থক্যগুলির মুখোমুখি হওয়া, তাদের মোকাবিলা করা এবং একে অপরকে সম্মান করা।’ তাঁর দিক থেকে ফন ডের লেইন উল্লেখ করেন যে, জলবায়ু পরিবর্তন এবং আঞ্চলিক বিরোধের রাজনৈতিক নিষ্পত্তির মতো বিষয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ঐকমত্য রয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ইউরোপীয়রা ‘বিযুক্তিকরণ’-এর ধারণাটি গ্রহণ করেনি এবং চিনের সঙ্গে থেমে থাকা আলাপ-আলোচনা পুনরায় শুরু করার ক্ষেত্রে তাঁরা আশাবাদী।

ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে মতভেদ

তবে পরে ইইউ অফিসে সন্ধ্যায় একটি সাংবাদিক সম্মেলনে ফন ডের লেইন রাশিয়ার যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে সহায়তা করার বিরুদ্ধে চিনকে সতর্ক করে বলেন, ‘এটি সত্যিই ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং চিনের সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য অবনতি ঘটাবে।’ যাইহোক, তিনি উল্লেখ করেন যে, এ ক্ষেত্রে চিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এবং ইইউ আশা করে যে, চিন ‘তার ভূমিকা পালন করবে এবং ন্যায্য শান্তির প্রচার করবে, যা ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান জানায়।’

কিন্তু ঘোষণার আড়ম্বর এবং ভাল ভাল কথার পাশাপাশি ইউক্রেন সমস্যার প্রেক্ষিতে অতি সামান্যই অর্জিত হয়েছে বলে মনে হয়। ইউক্রেন সংঘাতে চিনের অবস্থানের ক্ষেত্রে শি দ্বারা গৃহীত অবস্থানে তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেনি।

আশা করা হয়েছিল যে প্রেসিডেন্ট শি তাঁর সাম্প্রতিক রাশিয়া সফরের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলবেন। কিন্তু তা ঘটেনি। ফন ডের লেইন বলেছিলেন যে, তিনি শি-র সঙ্গে বিষয়টি উত্থাপন করেছেন এবং তাঁর প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘পরিস্থিতি এবং সময় উপযুক্ত’ হলে তবেই শি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হবেন।

ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের চিনা বিবৃতিতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, চিন চায় ইউরোপ কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখুক, সরবরাহ শৃঙ্খলের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করুক এবং বিযুক্তিকরণ এড়িয়ে চলুক। এটিতে শি-র এই বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে যে, ‘চিন-ইইউ সম্পর্কের লক্ষ্য কোনও তৃতীয় পক্ষ নয় এবং এটির কোনও তৃতীয় পক্ষের উপর নির্ভরশীল হওয়া বা তার দ্বারা নির্দেশিত হওয়া উচিত নয়।’ তিনি তাঁদেরও আক্রমণ করেন, যাঁরা ‘গণতন্ত্র বনাম কর্তৃত্ববাদ’ আখ্যানটিকে সামনে রেখে একটি নতুন ঠান্ডা লড়াইয়ের জন্ম দিতে চাইছে।

সম্প্রতি একটি সাক্ষাত্কারে ইউরোপীয় ইউনিয়নে চিনের রাষ্ট্রদূত ফু কং বলেন যে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেন সংঘাতের প্রাক্কালে রুশ-চিনা যৌথ বিবৃতিতে ঘোষণা করা হয়েছিল তাদের সম্পর্কে ‘কোনও সীমাবদ্ধতা’ নেই… এ কথার ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে এবং ‘নো লিমিট’ কথাটি নিতান্তই আলঙ্কারিক।’ ফু-র বক্তব্যের লক্ষ্য ছিল ফন ডের লেইনের মন্তব্যের প্রত্যুত্তর দেওয়া।

ইইউ এবং চিনের মধ্যে অন্যান্য উল্লেখযোগ্য পার্থক্য

ইউক্রেন প্রশ্নে চিনের অবস্থান ছাড়াও আরও কিছু প্রসঙ্গ রয়েছে, যা উভয় পক্ষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে। তার অন্যতম হল জিনজিয়াংয়ে উইঘুরদের প্রতি চিনের আচরণ, যা ২০২১ সালে কিছু চিনা কর্মকর্তা এবং সংস্থার উপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার কারণ হয়েছিল এবং বেজিং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে এর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। একটি বৃহৎ ইইউ-চিন বিনিয়োগ চুক্তি সেই সময় থেকে স্থগিত রয়েছে। তাইওয়ানকে একটি  প্রতিনিধিত্বমূলক অফিস খোলার অনুমতি দেওয়ার জন্য লিথুয়ানিয়ার উপর বেজিংয়ের নিষেধাজ্ঞার বিষয়েও ইউরোপীয়রা খুশি হয়নি।

চিন এবং ইইউ-এর মধ্যে অবশ্য উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য সম্পর্ক বিদ্যমান; ২০২২ সালে চিন ছিল ইইউ-এর রফতানির তৃতীয় বৃহত্তম গন্তব্য এবং ইইউ-তে বৃহত্তম রফতানিকারক। বেজিং-এর সাম্প্রতিক বিবৃতিগুলি থেকে বোঝা যায়, উভয়পক্ষ একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রাখার মধ্যেই নিজেদের স্বার্থ দেখতে পাচ্ছে। এই সম্পর্কটি কতটা উপযোগী হতে পারে, তা স্পষ্ট হয়েছিল সফরের সময় ফ্রান্স এবং চিনের মধ্যে  বেশ কয়েক বিলিয়ন ইউরো মূল্যের কয়েকটি চুক্তির আলোচনা ও স্বাক্ষর করার মাধ্যমে, যার মধ্যে ১৬০টি এয়ারবাস যাত্রীবাহী বিমানের বিক্রয় অন্তর্ভুক্ত এবং যার অধিকাংশই তিয়ানজিনে এয়ারবাসের কারখানায় একটি নতুন অ্যাসেম্বলি লাইনে তৈরি করা হবে।

তবে পার্থক্যের বৃহত্তর বিষয়টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে চিন সম্পর্কে পরিবর্তিত উপলব্ধি থেকেই উদ্ভূত হয়েছে। ২০১৭ সালে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল চিনকে ‘কৌশলগত প্রতিযোগী’ হিসাবে ঘোষণা করে। দু’বছর পরে ২০১৯ সালে ইউরোপীয় কমিশনাররা একটি যৌথ বিবৃতি অনুমোদন করেন, যা চিনকে ‘প্রযুক্তিগত নেতৃত্বের অন্বেষণে একটি অর্থনৈতিক প্রতিযোগী এবং বিকল্প প্রশাসনিক মডেলের প্রচারে একটি পদ্ধতিগত প্রতিদ্বন্দ্বী’ বলে অভিহিত করেছিল। বর্তমানে ইইউ শুধুমাত্র ‘পদ্ধতিগত শত্রু’র অর্থ অনুসন্ধানেই ব্যস্ত।

রাশিয়াকে সমর্থন করার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আজকের চিন ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ উপস্থাপন করেছে। মস্কো সফরের পর পুতিনের প্রতি শি-র বিদায়ী মন্তব্যে ‘নো লিমিট’ বা ‘সীমাহীন’ অংশীদারিত্বের প্রকৃত অর্থ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে: ‘বর্তমানে এমন সব পরিবর্তন ঘটছে, যেমনটা আমরা গত ১০০ বছরে দেখিনি। এবং এই পরিবর্তনগুলিকে আমরাই একত্রে চালিত করি।’

এই সফরে চিন-ইউরোপ এবং চিন-ইইউ-এর সম্পর্কের গতিশীলতা স্পষ্টতই দৃশ্যমান ছিল। যেখানে ইইউ একটি ঐক্যবদ্ধ পরিসর উপস্থাপন করতে চেয়েছিল, সেখানে ফন ডের লেইনকে গুরুত্ব না দিয়ে চিনারা ম্যাক্রোঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জুগিয়ে পছন্দের তালিকায় জায়গা করে দিয়েছে। ইউরোপে চিনা কৌশল হল ২৭টি সদস্য দেশের মধ্যে পার্থক্য গড়ে তোলা। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ওয়াং ই ফেব্রুয়ারি মাসের সফরে ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি এবং হাঙ্গেরির মতো দেশগুলিতে গিয়েছেন, যে দেশগুলির সঙ্গে বেজিংয়ের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করা হয়।

বেশ কিছু ইউরোপীয় পরিসরে এই উদ্বেগও দেখা গিয়েছে যে, গোষ্ঠীটি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে এবং এর ফলে চিনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বার্থ প্রভাবিত হতে পারে। কিন্তু অন্য দিকে ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের মতপার্থক্য সরিয়ে রেখে ইউক্রেনকে সহায়তা করার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধভাবে কঠোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

চিন সাম্প্রতিক অতীতে চিন এবং মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলির (সিইইসি) গোষ্ঠীকে (যা বিভিন্ন সময়ে ১৬+১ এবং ১৭+১ গোষ্ঠী নামেও পরিচিত ছিল) তুলে ধরার চেষ্টা করছে। কিন্তু বর্তমানে লিথুয়ানিয়ার ঘটনা এবং ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে চিনা নীতি বিশেষ করে পূর্ব ইউরোপীয় পরিসরে যথেষ্ট অস্বস্তি তৈরি করায় চিনের এই উদ্যোগ ভেস্তে গেছে।

এই সব মিলিয়ে ইউরোপের জন্য প্রধান সমস্যা হল ইউক্রেন সংঘাতের পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নৈকট্য বৃদ্ধির দরুন তারা তাদের কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন কিছুটা হারিয়েছে কি না। বেশ কিছু ইউরোপীয় পরিসরে এই উদ্বেগও দেখা গিয়েছে যে, গোষ্ঠীটি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে এবং এর ফলে চিনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বার্থ প্রভাবিত হতে পারে। কিন্তু অন্য দিকে ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের মতপার্থক্য সরিয়ে রেখে ইউক্রেনকে সহায়তা করার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধভাবে কঠোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। যখন একটি পুনরুজ্জীবিত ন্যাটো নিরাপত্তা পরিসরে কাজ করছে, তখন নতুন ইউএস-ইইউ ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজি কাউন্সিল ডিজিটাল পরিকাঠামো এবং সংযোগ, উদীয়মান প্রযুক্তিতে সহযোগিতা, স্থিতিস্থাপক সেমিকন্ডাক্টর সরবরাহ শৃঙ্খল উন্নত করার জন্য নতুন কাঠামো গড়তে চাইছে এবং রফতানি নিয়ন্ত্রণ এবং বিনিয়োগ বাছাইয়ের মাধ্যমে তাদের নিরাপত্তা বাড়াতে চাইছে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.