Author : Nivedhitha. K

Published on Aug 28, 2025 Updated 0 Hours ago

অসম ও জম্মু ও কাশ্মীরে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ অনুশীলনগুলি প্রমাণ করে যে রাজনৈতিক সমতা অর্জনের জন্য সমান জনসংখ্যার চেয়েও বেশি কিছু প্রয়োজন: কার্যকর প্রতিনিধিত্বের সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য আমাদের ভূগোল, জনসংখ্যা, প্রাপ্তিযোগ্যতা এবং জনসংখ্যার ঘনত্বকেও বিবেচনা করতে হবে।

অসম ও জম্মু ও কাশ্মীরে ডিলিমিটেশন অনুশীলন: রাজনৈতিক সমতা পুনর্বিবেচনা

যুক্তরাষ্ট্রীয়তার জন্য সংসদীয় কাঠামোতে সকল রাজ্যের স্বার্থ সমানভাবে রক্ষা করা প্রয়োজন। অন্যদিকে, রাজনৈতিক সমতা প্রতিটি নাগরিককে সমানভাবে প্রতিনিধিত্ব করার নির্দেশ দেয়, যাতে প্রতিটি ভোটের মূল্য একই হয়। এটি পরিমাপ করার একটি উপায় হল নির্বাচনী ফলাফলকে প্রভাবিত করার জন্য প্রতিটি ভোটের একই ক্ষমতা আছে কিনা তা নির্ধারণ করা। উদাহরণস্বরূপ, ধরুন তামিলনাড়ুর একটি নির্বাচনী এলাকার জনসংখ্যা ১০০ জন, আর উত্তরপ্রদেশের আরেকটি নির্বাচনী এলাকার জনসংখ্যা ১০০০ জন। সেক্ষেত্রে, উত্তরপ্রদেশের ভোটারদের তুলনায় তামিলনাড়ুর ভোটারদের নির্বাচনী ফলাফল নির্ধারণের ক্ষমতা বেশি। ভোটের মূল্য যাতে সমান হয় তা নিশ্চিত করার জন্য, সংবিধানের ৮১ অনুচ্ছেদে নির্বাচনী এলাকার জনসংখ্যা সমান হওয়ার বাধ্যবাধকতা দিয়ে রাজনৈতিক সমতার নীতিকে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। ৮১ অনুচ্ছেদে পুনর্বিবেচনায় রাজনৈতিক সমতার নীতিকেও প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে একটি রাজ্যের জনসংখ্যা এবং সংসদে সেই রাজ্যের জন্য বরাদ্দকৃত আসনের মধ্যে অনুপাত সমান হওয়া বাধ্যতামূলক। উদাহরণস্বরূপ, যদি উত্তরপ্রদেশ তামিলনাড়ুর দ্বিগুণ জনসংখ্যার হয়, তাহলে সকল নাগরিকের জন্য রাজনৈতিক সমতা বজায় রাখার জন্য উত্তরপ্রদেশের সংসদে তামিলনাড়ুর দ্বিগুণ আসন থাকা আবশ্যক।


অসম এবং জম্মু ও কাশ্মীরের নির্বাচনী এলাকার সাম্প্রতিক সীমানা নির্ধারণ দেখায় যে জনসংখ্যা প্রাসঙ্গিক হলেও, রাজনৈতিক সমতা অর্জনের ক্ষেত্রে এটি একমাত্র বিষয় নয়।



প্রশ্ন হল, জনসংখ্যার সমতা কি রাজনৈতিক সমতা অর্জনের একমাত্র উপায়?
অসম এবং জম্মু ও কাশ্মীরের নির্বাচনী এলাকার সাম্প্রতিক সীমানা নির্ধারণ দেখায় যে জনসংখ্যা প্রাসঙ্গিক হলেও, এটি রাজনৈতিক সমতা অর্জনের একমাত্র বিষয় নয়। এই অনুশীলনের তথ্য থেকে বোঝা যায় যে রাজনৈতিক সমতা একটি বহুমাত্রিক নীতি, যেখানে প্রতিটি নাগরিকের কার্যকর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য বেশ কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করা হয়।

অসম এবং জম্মু ও কাশ্মীর উভয় ক্ষেত্রেই, সীমানা নির্ধারণকারী কর্তৃপক্ষ সীমানা নির্ধারণের জন্য একটি দুই-পদক্ষেপ প্রক্রিয়া গ্রহণ করে। প্রথম পর্যায়ে, প্রতিটি জেলায় নির্দিষ্ট সংখ্যক বিধানসভা আসন বরাদ্দ করা হয়েছিল। এই পর্যায়ে, সীমানা নির্ধারণকারী কর্তৃপক্ষ রাজ্যের প্রশাসনিক জেলাগুলিতে বিধানসভার মোট আসন সংখ্যা ভাগ করে দেয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে, প্রতিটি জেলাকে তার জন্য বরাদ্দকৃত আসন সংখ্যার সঙ্গে সমান সংখ্যক নির্বাচনী এলাকায় বিভক্ত করা হয়েছিল। যদি রাজনৈতিক সমতাকে শুধু জনসংখ্যার সমতার ভিত্তিতে সংজ্ঞায়িত করা হত, তাহলে রাজ্যের প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার জনসংখ্যা অভিন্ন হত। তবে, এটি এমন ছিল না, যা ইঙ্গিত দেয় যে রাজনৈতিক সমতা শুধু জনসংখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে সংজ্ঞায়িত করা হয় না।

জম্মু ও কাশ্মীরের সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে, জেলাগুলিতে আসন বরাদ্দের সময় সীমানা নির্ধারণকারী কর্তৃপক্ষ জনসংখ্যার সমতা থেকে +/-১০ শতাংশ বিচ্যুতি অনুমোদন করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, যদি কঠোর জনসংখ্যার সমতার নীতি প্রয়োগ করা হত, তাহলে শ্রীনগরকে বিধানসভায় নয়টি আসন বরাদ্দ করা হত। তবে, সীমানা নির্ধারণকারী কর্তৃপক্ষ জেলাটিকে 'প্রধানত সমতল এলাকা' হিসাবে উল্লেখ করে  আটটি আসন বরাদ্দ করেছিল। একইভাবে, কাঠুয়ায় কঠোর জনসংখ্যার সমতা অনুসরণ করা হলে পাঁচটি আসন বরাদ্দ করা হত। তবে, এটি একটি 'প্রধানত পাহাড়ি এলাকা' হওয়ায় এটিকে ছয়টি আসন বরাদ্দ করা হয়েছিল। নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণের দ্বিতীয় পর্যায়ে সীমানা নির্ধারণকারী কর্তৃপক্ষ +/-২০ শতাংশ জনসংখ্যার বিচ্যুতিও অনুমোদন করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, যদি প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার জন্য আদর্শ জনসংখ্যা ১০০০ জন হয়, তাহলে সীমানা নির্ধারণকারী কর্তৃপক্ষ ৮০০ থেকে ১,২০০ জন লোক থাকা গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেছিল। জেলাগুলিতে আসন বরাদ্দ এবং নির্বাচনী সীমানা নির্ধারণ উভয় ক্ষেত্রেই এই বিচ্যুতির ক্রমবর্ধমান প্রভাব জনসংখ্যা বণ্টনে উল্লেখযোগ্য বৈষম্যের সৃষ্টি করেছিল। জম্মু ও কাশ্মীরের প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার জনসংখ্যা ১,৩৬,২০৪ জন হত যদি কেবল জনসংখ্যার ভিত্তিতে বণ্টন এবং সীমানা নির্ধারণ করা হত। তবে, ৯০টি আসনের মধ্যে ৩৪টিতে জনসংখ্যা আদর্শের চেয়ে ১০ শতাংশ বা তার বেশি, এবং আরও ২১টি আসনে জনসংখ্যা আদর্শের চেয়ে ১০ শতাংশ বা তার চেয়েও কম। উদাহরণস্বরূপ, তফসিলি জাতিদের জন্য বরাদ্দকৃত নির্বাচনী এলাকা গুরেজের জনসংখ্যা ৩৭,৯৯২ জন, যা আদর্শ জনসংখ্যার থেকে ৭২ শতাংশ বিচ্যুতি। চিত্র ১ জম্মু ও কাশ্মীরের সেই নির্বাচনী এলাকাগুলিকে তুলে ধরেছে যেখানে জনসংখ্যা আদর্শের চেয়ে ১০ শতাংশ বা তার বেশি। চিত্র ২ এমন নির্বাচনী এলাকাগুলিকে তুলে ধরেছে যেখানে জনসংখ্যা আদর্শের চেয়ে ১০ শতাংশ বা তার চেয়েও কম।


জম্মু ও কাশ্মীরের প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার জনসংখ্যা ১,৩৬,২০৪ জন হত যদি কেবল জনসংখ্যার ভিত্তিতে বণ্টন এবং সীমানা নির্ধারণ করা হত। তবে, ৯০টি আসনের মধ্যে ৩৪টিতে জনসংখ্যা আদর্শের চেয়ে ১০ শতাংশ বা তার বেশি, এবং আরও ২১টি আসনে জনসংখ্যা আদর্শের চেয়ে ১০ শতাংশ বা তার চেয়েও কম।



চিত্র ১: জম্মু ও কাশ্মীরের যেসব নির্বাচনী এলাকায় জনসংখ্যা আদর্শের চেয়ে ১০ শতাংশ বা তার বেশি
Delimitation Exercises In Assam And Jammu Kashmir Rethinking Political Equality
‌সূত্র:‌
ডিলিমিটেশন কমিশন

চিত্র ২: জম্মু ও কাশ্মীরের এমন নির্বাচনী এলাকা যেখানে জনসংখ্যা আদর্শের চেয়ে ১০ শতাংশ বা তার বেশি পিছিয়ে।
Delimitation Exercises In Assam And Jammu Kashmir Rethinking Political Equality
সূত্র:‌ 
ডিলিমিটেশন কমিশন

একইভাবে, অসমেও জনসংখ্যার সমতা নীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়নি। প্রথম পর্যায়ে, প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৩০৪ জনের কম জনসংখ্যার ঘনত্বের জেলাগুলিকে জনসংখ্যার সমতা নীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করে তাদের আসনের চেয়ে বেশি আসন বরাদ্দ করা হয়েছিল। বিপরীতে, প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৩৭২ জনের বেশি জনসংখ্যার ঘনত্বের জেলাগুলিকে অন্যথায় প্রাপ্ত আসনের চেয়ে কম আসন বরাদ্দ করা হয়েছিল। জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রেণিবদ্ধকরণের অনুরূপভাবে যুক্তি ছিল যে কম জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং কঠিন ভৌগোলিক প্রবেশাধিকারের ভূখণ্ডে আরও প্রতিনিধি প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, জনসংখ্যার সমতা নীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করা হলে নগাঁওকে আদর্শভাবে ১১টি আসন বরাদ্দ করা উচিত ছিল। তবে, জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি হওয়ায় এটিকে ১০টি আসন বরাদ্দ করা হয়েছিল। অন্যদিকে, লখিমপুরকে জনসংখ্যার ঘনত্ব কম থাকার কারণে আদর্শ ৪টির বিপরীতে ৫টি আসন বরাদ্দ করা হয়েছিল। জম্মু ও কাশ্মীরের সীমানা নির্ধারণ অনুশীলনের মতোই অসমের অনুশীলনেও নির্বাচনী এলাকায় অভিন্ন জনসংখ্যা ছিল না। যদি কঠোরভাবে জনসংখ্যার সমতা অনুসরণ করা হত, তাহলে অসমের প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার জনসংখ্যা ২,১১,৫৫২ জন হত। তবে, ১২৬টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ২৭টির জনসংখ্যা আদর্শের চেয়ে ১০ শতাংশ বা তার বেশি ছিল এবং ৩২টি নির্বাচনী এলাকার জনসংখ্যা আদর্শের চেয়ে ১০ শতাংশ বা তার কম ছিল। উদাহরণস্বরূপ, গৌরীপুর নির্বাচনী এলাকার জনসংখ্যা ৩০৬,৩১৫ জন, যা আদর্শের চেয়ে ৪৫ শতাংশ বেশি, যেখানে আমরি নির্বাচনী এলাকার জনসংখ্যা ১,০৪,৭২৭ জন, যা আদর্শের চেয়ে ৫০ শতাংশ কম।



যদি কঠোরভাবে জনসংখ্যার সমতা অনুসরণ করা হত, তাহলে অসমের প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার জনসংখ্যা ২,১১,৫৫২ জন হত। তবে, ১২৬টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ২৭টির জনসংখ্যা আদর্শের চেয়ে ১০ শতাংশ বা তার বেশি ছিল এবং ৩২টি নির্বাচনী এলাকার জনসংখ্যা আদর্শের চেয়ে ১০ শতাংশ বা তার কম ছিল।



চিত্র ৩: অসমের যেসব নির্বাচনী এলাকায় জনসংখ্যা আদর্শের থেকে ১০ শতাংশ বা তার চেয়ে কম।
Delimitation Exercises In Assam And Jammu Kashmir Rethinking Political Equality
সূত্র:
ভারতের নির্বাচন কমিশন

চিত্র ৪: ‌অসমের যেসব নির্বাচনী এলাকায় জনসংখ্যা আদর্শের চেয়ে ১০ শতাংশ বা তার বেশি
Delimitation Exercises In Assam And Jammu Kashmir Rethinking Political Equality
সূত্র: 
ভারতের নির্বাচন কমিশন


রাজনৈতিক সমতার বোধগম্যতা‌য় 'এক ব্যক্তি, এক ভোট' ধারণার বাইরে গিয়ে 'এক ব্যক্তি, এক ভোট, এক মূল্য' প্রতিফলিত করতে হবে। 'সমান মূল্য' অর্জনের জন্য, অন্য বিবেচনাগুলি — যেমন জনসংখ্যার ঘনত্ব (কেবল জনসংখ্যার আকারের পরিবর্তে), ভূখণ্ডের প্রকৃতি এবং প্রান্তিক সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা — বিবেচনা করা উচিত। সংসদে রাজ্যগুলির মধ্যে আসন বণ্টনের ক্ষেত্রেও একই নীতি প্রয়োগ করা উচিত। যদি আমরা অসমের গোসাইগাঁও ও গৌরীপুরের মতো নির্বাচনী এলাকার মধ্যে জনসংখ্যার বৈষম্যের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি, তাহলে রাজ্যগুলিতে সংসদীয় আসন বণ্টন কঠোরভাবে জনসংখ্যার সমতা মেনে চলা নিশ্চিত করার তাগিদ কেন? যদি সংসদীয় আসনগুলি শুধু জনসংখ্যার ভিত্তিতে বরাদ্দ করা হয়, তাহলে কম জনবহুল রাজ্যগুলির ভোটারদের জাতীয় নীতি নির্ধারণকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা হ্রাস পাবে, যার ফলে তাদের ভোটের 'মূল্য' হ্রাস পাবে। সুতরাং, বণ্টন বিতর্ককে ভুলভাবে রাজনৈতিক সমতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের আদর্শের মধ্যে দ্বন্দ্ব হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। বাস্তবে, রাজনৈতিক সমতা সম্পর্কে আমাদের সাংবিধানিক দৃষ্টিভঙ্গি রাজ্যগুলিকে রাজনৈতিক ইউনিট হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রীয় উদ্বেগগুলির নিরসন করেছে। এই দৃষ্টিভঙ্গিকে সম্মান জানাতে, আমাদের রাজনৈতিক সমতার নেহাত সংখ্যাসূচক ব্যাখ্যার বাইরে বেরোতে হবে, এবং এমন একটি সামগ্রিক কাঠামো গ্রহণ করতে হবে যা আমাদের সংবিধানের বহুত্ববাদী ও যুক্তরাষ্ট্রীয় চেতনাকে প্রতিফলিত করে।



নিবেদিতা কে ‌হলেন বিধি সেন্টার ফর লিগ্যাল পলিসির প্রজেক্ট ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.