Published on Mar 14, 2025 Updated 0 Hours ago

বেতন ও পেনশনের প্রাথমিক কাঠামোগত সমস্যা মূলধন অধিগ্রহণের জন্য আর্থিক স্থান সঙ্কুচিত করে। যাই হোক, অস্ত্রশস্ত্রে বরাদ্দের ধরনটি একটি স্পষ্ট সংকেত পাঠায় যে দেশীয় শিল্প কমপ্লেক্সকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে এবং উৎসাহিত করা হবে।

প্রতিরক্ষা বাজেট ধীরে ধীরে সংস্কারের পথ অনুসরণের ইঙ্গিত দেয়

তাঁর টানা অষ্টম বাজেটে, এবং মোদী সরকারের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম পূর্ণ বাজেটে, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন প্রতিরক্ষা বরাদ্দ বৃদ্ধির ঘোষণা করেছিলেন, যা গত বছরের জুলাই মাসে উপস্থাপিত আগের বাজেটের ৬.২১ লাখ কোটি থেকে বাড়িয়ে ৬.৮ লাখ কোটি ভারতীয় রুপি হয়েছে, অর্থাৎ ৯.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

তবে, সংশোধিত প্রাককলন অনুযায়ী মূল্যায়ন করলে সামগ্রিক বাজেট বৃদ্ধি প্রায় ৬.৩ শতাংশে নেমে আসে। সাম্প্রতিক প্রতিরক্ষা বাজেটগুলির ক্ষেত্রে যেমন  হয়েছে, বর্তমান বাজেটটিতেও আগের বাজেটের ১.৭ লক্ষ কোটি থেকে মূলধনী ব্যয় ৪.৬ শতাংশ বাড়িয়ে ১.৮ লক্ষ কোটি রুপি করা করেছে, যা মোট প্রতিরক্ষা বাজেটের ২৬.৪২ শতাংশ।

অস্ত্র অর্জন প্রক্রিয়ার সমস্যা

প্রতিরক্ষা বাজেটের মূলধনী ব্যয় নিয়ে একটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে মনে হচ্ছে, কারণ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক অর্থ মন্ত্রকের কাছে জুলাই ২০২৪-‌এর অন্তর্বর্তী বাজেটের অধীনে মূলধনী ব্যয়ের অংশ হিসাবে বরাদ্দ করা ১২,৫০০ কোটি টাকা ফেরত দিয়েছে। এই অর্থের অ-ব্যয় বিভ্রান্তিকর হতে পারে, যা ক্রয় ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে সরকারকে সমাধান করতে হবে, কারণ এই অস্ত্রশস্ত্র সশস্ত্র বাহিনীগুলির প্রয়োজন। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ক্রয় বিলম্বের কারণে নির্ধারিত অর্থবছরের মধ্যে মূলধনের অধীন সমস্ত অর্থ ব্যয়িত হচ্ছে না।

এই কারণে অস্ত্র ব্যবস্থা ও প্ল্যাটফর্মগুলি ক্রয়ে গতি আনতে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের তরফে আরও শক্তিশালী প্রয়াসের প্রয়োজন রয়েছে। অন্যথায়, সরকার ধ্রুপদী মুরগি-ডিম সমস্যার সম্মুখীন হবে, কারণ মূলধন সংগ্রহের জন্য বরাদ্দকৃত তহবিল এবং বাহিনীগুলির প্রতিরক্ষা প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য সময়মতো চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ক্ষমতার মধ্যে একটি অমিল তৈরি হবে৷ এটি আন্তঃমন্ত্রক বাদানুবাদের দিকে নিয়ে যায় এবং ভবিষ্যতেও নিয়ে যাবে।


মূলধন সংগ্রহের জন্য বরাদ্দকৃত তহবিল এবং বাহিনীগুলির প্রতিরক্ষা প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য সময়মতো চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ক্ষমতার মধ্যে একটি অমিল তৈরি হবে ৷



অবশ্যই পাইপলাইনে থাকা কিছু ক্রয় বিলম্ব একচেটিয়াভাবে আমলাতান্ত্রিক বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে পদ্ধতিগত বিলম্বের ফলাফল নয়, বরং সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা মূল সরঞ্জাম প্রস্তুতকারকদের (ওইএম) থেকে সরবরাহ-সম্পর্কিত প্রতিবন্ধকতার ফল। তা সত্ত্বেও, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বরাদ্দকৃত তহবিল এবং তিনটি বাহিনীর প্রত্যেকটির সময়মতো ব্যয় নিশ্চিত করতে সরকারকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।

পেনশন ব্যয় মূলধনী ক্রয়ের পরিসর সঙ্কুচিত করছে

২০২৫-২৬ প্রতিরক্ষা বাজেটে রাজস্ব ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি এবং মোটের ৭১.৭৫ শতাংশ। ১.৬০ লক্ষ কোটি রুপির রাজস্ব শিরোনামের অধীনে পেনশন বিল ২০২৫-২৬ প্রতিরক্ষা বাজেটের প্রায় ২৩.৪৯ শতাংশ। এখন পেনশন বিল উদ্বেগ ও মনোযোগের কারণ হওয়া উচিত, কারণ এখন যা বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে তা হল সরকারকে মূলধনী ক্রয়ের জন্য আংশিকভাবে সম্পদ উন্মুক্ত করতে হবে এবং সেই লক্ষ্যে মানবসম্পদ সংস্কার বাস্তবায়নের মাধ্যমে পেনশন বরাদ্দ হ্রাস করতে হবে। এর জন্য সরকারের আরও বেশি তৎপর হওয়া প্রয়োজন। অন্যথায়, জনবল ব্যয় রোধ করতে না পারলেও সরকার আগামী বছরগুলিতে মূলধন সংগ্রহের জন্য বাজেট উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে বাধ্য হবে।


১.৬০ লক্ষ কোটি রুপির রাজস্ব শিরোনামের অধীনে পেনশন বিল ২০২৫-২৬ প্রতিরক্ষা বাজেটের প্রায় ২৩.৪৯ শতাংশ



যাই হোক না কেন, অগ্নিপথ প্রকল্পের কার্যকরী বাস্তবায়ন থেকে খরচ-সঞ্চয় ও ফলাফলের লক্ষ্য অন্তত ২০৩০-এর দশকের গোড়ার দিকের আগে পর্যন্ত পূরণ হবে না, তবে প্রক্রিয়াটিকে এখনই আন্তরিকভাবে শুরু করতে হবে।

সরবরাহে দেশীয় শিল্প কমপ্লেক্সের প্রাধান্য

রাজস্ব ব্যয় একটি উল্লেখযোগ্য ব্যবধানে মূলধনী ব্যয়কে ছাড়িয়ে গেলেও ১.১ লাখ কোটি রুপি, বা মূলধনী ব্যয়ের জন্য বরাদ্দকৃত সম্পদের ৭৫ শতাংশ, দেশীয় শিল্প থেকে প্রাপ্ত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ও হার্ডওয়্যারগুলিতে ব্যয় করা হবে, যা সরকারের আত্মনির্ভর ভারত উদ্যোগের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ (সামগ্রিক প্রতিরক্ষা বরাদ্দের ২৫ শতাংশ আরঅ্যান্ডডি ও প্রতিরক্ষা পরিকাঠামোর জন্য চিহ্নিত)। এটি জুলাই, ২০২৪-‌এর অন্তর্বর্তী বাজেটের ধারাবাহিকতাও উপস্থাপন করে, যেখানে মূলধনী ব্যয়ের ৭৫ শতাংশ দেশীয় শিল্প থেকে সংগ্রহের জন্য উৎসর্গ করা হয়েছিল।

দেশীয় প্রতিরক্ষা শিল্প থেকে সংগ্রহের জন্য মূলধনী বাজেটের তিন-‌চতুর্থাংশ ব্যয় করা হলে তা অভ্যন্তরীণ কর্মসংস্থানে আরও বেশি উৎসাহ দেবে এবং দেশীয় প্রতিরক্ষা শিল্প সক্ষমতাকে শক্তিশালী করবে। এর পাশাপাশি প্রতিরক্ষা পণ্যগুলি শুধু দেশের সশস্ত্র বাহিনীর চাহিদা মেটাবে না, সমানভাবে রপ্তানি সক্ষমতাও নিয়ে আসবে।

এ ছাড়াও বিমান ও অ্যারো-ইঞ্জিনের জন্য ৪৮,৬১৪ কোটি রুপি বরাদ্দ করা হয়েছে। এটি তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এটি মূলধনী বাজেটের একটি উল্লেখযোগ্য ২৭ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে। সেইসঙ্গেই এটি ভারতীয় বিমান বাহিনী, এবং আরও সীমিত পরিমাণে ভারতীয় নৌবাহিনী, তাদের যুদ্ধের শক্তিহ্রাসের যে সমস্যার মোকাবিলা করছে তার গুরুত্ব প্রদর্শন করে।

উপসংহার

সংক্ষেপে, ২০২৫-২৬-এর প্রতিরক্ষা বাজেট সাম্প্রতিক অতীতে মোদী সরকারের দ্বারা উপস্থাপিত প্রতিরক্ষা বাজেটগুলির পথ থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে সরে যায়নি। কারণ, বাজেট বিভিন্ন অংশীদারদের কাছে এই বার্তা প্রেরণের লক্ষ্য রাখে যে সরকার ক্রমাগত সংস্কারের মাধ্যমে দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা তৈরি করতে চাইছে।



এই ভাষ্যটি ‌প্রথমে ‘মানি কন্ট্রোল’-‌এ প্রকাশিত হয়েছিল

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.