Author : Atul Kumar

Published on Jan 24, 2025 Updated 0 Hours ago

শি জিনপিংয়ের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের ফলস্বরূপ পিএলএ-তে সাম্প্রতিক ছাঁটাই সামরিক বাহিনী ভীরে প্রোথিত সমস্যাগুলিকেই তুলে ধরে।

পিএলএ-তে দুর্নীতি এবং ছাঁটাই: শঙ্কা ও অবিশ্বাস

২০২৪ সালের ২৮ নভেম্বর একটি প্রতিবেদনে উঠে আসে যে, চিনের সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশন-এর (সিএমসি) এক বর্ষীয়ান সামরিক আধিকারিক অ্যাডমিরাল মিয়াও হুয়া-কে দুর্নীতির অভিযোগে শৃঙ্খলা লঙ্ঘনের জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। অ্যাডমিরাল মিয়াও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে জড়িত চতুর্থ উচ্চপদস্থ জেনারেল। এই বছরের শুরুর দিকে প্রাক্তন ডিফেন্স মিনিস্টার লি শাংফু এবং ওয়েই ফেংহে বিচারের সম্মুখীন হয়েছেন, এমনকি বর্তমান ডিফেন্স মিনিস্টার অ্যাডমিরাল দং জুন দুর্নীতির কারণে তদন্তের অধীনে রয়েছেন বলে গুজব উঠেছে। বরখাস্ত হওয়ার আগে লি শাংফু মাত্র সাত মাস দায়িত্ব পালন করেছিলেন। অন্য দিকে দং জুন ক্ষমতায় ১১তম মাস পূর্ণ করতে পারবেন বলে মনে হয় না। দুর্নীতির জন্য গ্রেফতা বিচারের ঘটনা পিপলস লিবারেশন আর্মি-র (পিএলএ) অভ্যন্তরে গভীর অস্থিরতা অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার দ্বন্দ্বকেই দর্শায়। এই ঘটনাপ্রবাহ পিএলএ-র যুদ্ধ ক্ষমতা, সামরিক বাহিনীর প্রতি শি-র আস্থা এবং চিনের নিরাপত্তা ও বিদেশ নীতির বৃহত্তর প্রভাব সম্পর্কে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করে।

দুর্নীতির জন্য গ্রেফতা বিচারের ঘটনা পিপলস লিবারেশন আর্মি-র (পিএলএ) অভ্যন্তরে গভীর অস্থিরতা অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার দ্বন্দ্বকেই দর্শায়।

রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি

পিএলএ-তে দুর্নীতি গভীর ভাবে কাঠামোগত এবং বহু কাল ধরে থাকা এই চিনা দর্শনের মূলেই প্রোথিত যে, সামরিক বাহিনী আত্মনির্ভরশীল এবং অর্থনীতিতে সাহায্যকারী হয়ে ওঠা উচিত। পিএলএ তাই নিজের খাদ্য উৎপাদন করেছে, পশুপালন করেছে, নিজেপোশাক তৈরি করেছে এবং ১৯৮০ সালের মধ্যে ৬৫৬,০০০ একর কৃষিজমি নিয়ন্ত্রণ করেছে। এর ফলে সামরিক বাহিনী বার্ষিক পাঁচ লক্ষ টন শস্য, সাড়ে ছ’লক্ষ টন শাকসবজি এবং এক লক্ষ চার হাজার টন মাংস উৎপাদন করেছে।(১)

১৯৭৮-৮০ সালে তাঁর সংস্কারের সময় দেং জিয়াওপিং প্রতিরক্ষা বাজেটে উল্লেখযোগ্য রকমের কাটছাঁট করেছিলেন। তার পরে ১৯৮৫ সালে দেং-এর নির্দেশে জেনারেল লজিস্টিক ডিপার্টমেন্ট (জিএলডি) পিএলএ ইউনিটগুলিকে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অর্থ দিয়ে ছোট, মাঝারি এবং বড় মাপের ব্যবসায়িক উদ্যোগ চালু করার কর্তৃত্ব প্রদান করেছিল। এই নীতির ফলে পিএলএ-র চারটি সাধারণ বিভাগ এবং পরিষেবাগুলি পলি গ্রুপ, কাইলি কর্পোরেশন, জিনজিং কর্পোরেশন এবং চায়না ইউনাইটেড এয়ারলাইনস-এর মতো নানা উদ্যোগ প্রতিষ্ঠা করেছে। এই উদ্যোগগুলির মধ্যে অনেকের নেতৃত্বে ছিলেন প্রিন্সলিং (উর্ধ্বতন দলীয় কর্মকর্তাদের বংশধর) এবং দেং-এর মেয়ে পলি গ্রুপে যথেষ্ট আগ্রহের কথা জানা গিয়েছে। এই ব্যবসাগুলিকে নামমাত্র ১০ শতাংশ হারে ঋণ দেওয়া হয়েছিলকিন্তু ব্যবসাগুলি থেকে আসা বেশ বড় অঙ্কের লভ্যাংশই পাঠিয়ে দেওয়া হত অফশোর অ্যাকাউন্টে (অর্থাৎ দেশের বাইরের অ্যাকাউন্টে), যা পদ্ধতিগত দুর্নীতিকেই চালিত করে। চিনা রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং পিএলএ-র উচ্চ পদের নেতাদের মধ্যে এই সম্পর্ক পারস্পরিক নির্ভরতা ব্যাপক দুর্নীতির একটি চক্র স্থাপন করেছে।

বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন পিএলএ ইউনিট হোটেল, নির্মাণ হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের অর্থনৈতিক উদ্যোগ প্রসারিত করেছে। পিএলএ-র ইউনিটগুলি এমনকি বেশ্যাবৃত্তি, চোরাচালান চক্র ও অন্যান্য অপরাধমূলক উদ্যোগ চালাতেও সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল। সশস্ত্র শক্তির উপর সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ এই অবৈধ কার্যকলাপের জন্য যথেষ্ট সুরক্ষা প্রদান করে, যার ফলে ব্যাপক দুর্নীতি, মুনাফালোভী, চোরাচালান, জল্পনা, অবৈধ ক্রয়-বিক্রয়ের চক্র চলতেই থাকে। এই ধরনের অনুশীলন পিএলএ-র মূল কার্যকারিতার মধ্যে ঢুকে পড়ে, প্রচার সংক্রান্ত লেনদেন, মুনলাইটিং (অর্থাৎ আসল কাজের পাশাপাশি না জানিয়ে দ্বিতীয় বা উৎস থেকে অর্থ উপার্জন করা), বিকল্পের ব্যবহার, প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত ভুয়ো প্রতিবেদন এবং ট্যাঙ্ক আর্টিলারি তেলের মতো সামরিক সংস্থানকে অবৈধ ভাবে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে বিক্রয় করার চক্র অব্যাহত থাকে।(২)

১৯৮৫ সালে দেং-এর নির্দেশে জেনারেল লজিস্টিক ডিপার্টমেন্ট (জিএলডি) পিএলএ ইউনিটগুলিকে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অর্থ দিয়ে ছোট, মাঝারি এবং বড় মাপের ব্যবসায়িক উদ্যোগ চালু করার কর্তৃত্ব প্রদান করেছিল

প্রতিক্রিয়া হিসাবে চিনা নেতৃত্ব ১৯৯৩ ও ১৯৯৫ সালে পিএলএ-র বাণিজ্যিক  কার্যক্রমে বিধিনিষেধ প্রবর্তন করে এবং ১৯৯৮-৯৯ সালে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।(৩) যাই হোক, নিষেধাজ্ঞা আদৌ কতটা কার্যকর হয়েছে, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েই গিয়েছে। কারণ পিএলএ-র মধ্যে দুর্নীতি অব্যাহত রয়েছে। ২০১৫ সাল নাগাদ অবসরপ্রাপ্ত পিএলএ জেনারেলরা প্রকাশ করেছিলেন যে, পিএলএ-তে প্রায় প্রতিটি পদের জন্য একটি মূল্য নির্ধারণ করা ছিল এবং সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পদ বন্ধুদের জন্যই, বিশেষ করে উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের বংশধরদের জন্য সংরক্ষিত থাকত। প্রতি পদের জন্য ঘুষের পরিমাণ প্রায়লক্ষের ঘর ছাড়িয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, একজন জেনারেল নিজের পদোন্নতি নিশ্চিত করতে প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান জু কাইহোকে ২.৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান করেছেন বলে জানা গিয়েছে। এই ধরনের দুর্নীতি পিএলএ-র পেশাদারিত্বকে উল্লেখযোগ্য রকমের খর্ব করেছে।

মূল দুর্নীতিবাজদের সরাতে

চিনের প্রেসিডেন্ট হিসাবে শি জিনপিং তাঁর শাসনের রূপরেখার একটি ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান চালিয়েছেন এবং তাঁবাঘ মাছি মারার (অর্থাৎ দুর্নীতির মাথা যত বড়ই হোক বা যত ছোট স্তরেরই হোক না কেন) প্রচার সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পিএলএ-র মধ্যে যথেষ্ট গতি অর্জন করেছে। মাত্র গত এক বছরে সেন্ট্রাল কমিশন ফর ডিসিপ্লিন ইন্সপেকশন (সিসিডিআই) চার প্রধান বেশ কয়েকজন সিএমসি সদস্য-সহ নজন পিএলএ জেনারেলকে গ্রেফতার করেছে। এ ছাড়াও, প্রতিরক্ষা শিল্পের বর্ষীয়ান আধিকারিকদের বরখাস্ত করা হয়েছে ও বেশ কয়েকজন গ্রেফতারির সম্মুখীন হয়েছেন। উদাহরণ স্বরূপ, চিনের এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন-এর (এভিআইসি) প্রাক্তন চেয়ারম্যান ট্যান রুইসংকে সম্প্রতি দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহার করা এবং অস্থায়ী কর্মীদের আউটসোর্সিং উত্পাদনের মাধ্যমে গুণমানের সঙ্গে আপস করার অভিযোগ আনা হয়েছিল, যা ত্রুটিপূর্ণ সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ উপাদানগুলির দিকে চালিত করে।

এই অভিযানে বিচারের আওতাধীন ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের একটি ছোট তালিকা সারণি ১-তুলে ধরা হল।

সারণি ১: পিএলএ-র যে সমস্ত বর্ষীয়ান আধিকারিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে বিচার হয়েছে

বছর

নাম

পর্যায়

পদ

নভেম্বর ২০২৪

মিয়াও হুয়া

অ্যাডমিরাল

সিএমসি মেম্বার

নভেম্বর ২০২৪

দং জুন

অ্যাডমিরাল

ডিফেন্স মিনিস্টার

অগস্ট ২০২৩

লি শাংফু

জেনারেল

ডিফেন্স মিনিস্টার

অগস্ট ২০২৩

লি ইউকাও

জেনারেল

পিএলএ রকেট ফোর্স কম্যান্ডার (পিএলএআরএফ)

অগস্ট ২০২৩

লিউ গুয়াংবিন

জেনারেল

ডিওয়াই কম্যান্ডার, পিএলএআরএফ

অগস্ট ২০২৩

জু জংবো

জেনারেল

পলিটিক্যাল কমিসর, পিএলএআরএফ

অগস্ট ২০২৩

রাও ওয়েনমিন

জেনারেল

ইক্যুইপমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট

অগস্ট ২০২৩

শিয়া কিংইউয়ে

জেনারেল

ইক্যুইপমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট

অগস্ট ২০২৩

ওয়াং দাজং

অ্যাডমিরাল

ইক্যুইপমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট

অগস্ট ২০২৩

ঝাং জেনজং

জেনারেল

ডেপুটি চিফ, জয়েন্ট স্টাফ ডিপার্টমেন্ট অফ দ্য সিএমসি

অগস্ট ২০২৩

ঝাং ফুশেং

জেনারেল

পিএলএ রকেট ফোর্স

অগস্ট ২০২৩

উ গুয়োহুয়া

জেনারেল

ডিওয়াই কম্যান্ডার, পিএলএ আরএফ (আত্মহত্যা করেছেন)

অগস্ট ২০২৩

জু গানশেং

জেনারেল

পিএলএ রকেট ফোর্স

অগস্ট ২০২৩

শাং হং

জেনারেল

পিএলএ রকেট ফোর্স

মার্চ ২০২৩

উয়েই ফেংহে

জেনারেল

ডিফেন্স মিনিস্টার

জুন ২০১৪

শু কাইহোউ

জেনারেল

ভাইস চেয়ারম্যান, সিএমসি (মৃত)

জুলাই ২০১৫

গুয়ো বোঝিয়ং

জেনারেল

সিএমসি মেম্বার

এপ্রিল ২০১৪

গু জুনশান

জেনারেল

ডিওয়াই চিফ, জিএলডি

সূত্র: লেখকের নিজস্ব

পিএলএ-র প্রচারের তত্ত্বাবধানে থাকা পলিটিক্যাল ওয়ার্ক ডিপার্টমেন্টের প্রধান থাকাকালীন প্রচার সংক্রান্ত লেনদেনে জড়িত থাকার দরুন অ্যাডমিরাল মিয়াও হুয়ার নাম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে। একই ভাবে, অ্যাডমিরাল দং জুন পিএলএ-তে দুর্নীতির কেন্দ্রস্থল ইক্যুইপমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট বা সরঞ্জাম উন্নয়ন বিভাগে নিজের ভূমিকার জন্য বিচারের সম্মুখীন হতে পারে

যাই হোক, দুর্নীতি নির্মূল করার জন্য শি উল্লেখযোগ্য ভাবে সিএমসি-তে তাঁর সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড, ইক্যুইপমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট এবং জেনারেল আর্মামেন্টস বিভাগের দীর্ঘমেয়াদি প্রধান জেনারেল ঝাং ইউশিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা থেকে বিরত রয়েছেন। জেনারেল ঝাং ঝংজুনের ছেলে হিসেবে - একজন বিশিষ্ট কমিউনিস্ট জেনারেল, যিনি জাপান-বিরোধী যুদ্ধ এবং চিনা গৃহযুদ্ধ উভয় ক্ষেত্রেই লড়াই করেছিলেন – তাঁর শি-সঙ্গে গভীর পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। শি ও ঝাং… দু’জনেরই বাবা ফার্স্ট ফিল্ড আর্মিতে একসঙ্গে কাজ করেছিলেন এবং ঝাং শি একই প্রদেশের প্রিন্সলিং। যুদ্ধের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন পিএলএ কর্মকর্তাদের মধ্যে ঝাং অন্যতম। এই সমস্ত কারণেই এখনও পর্যন্ত ঝাং-এর উপর বিচারের কালো মেঘ ঘনিয়ে আসেনি। শি হয়তো এ ক্ষেত্রে ঠান্ডা মাথায় অপেক্ষা করবেন এবং ঝাংকে শান্তিপূর্ণ ভাবে তাঁর মেয়াদ শেষ  করার সুযোগ দেবেন।

প্রতিটি স্তরে আস্থার অভাব

পিএলএ-র প্রচলিত দুর্নীতি এবং সাংগঠনিক অস্থিরতা জুনিয়র কর্মকর্তা, সৈনিক এবং তাঁদের ঊর্ধ্বতনদের মধ্যে আস্থা নষ্ট করতে পারে। এই ঊর্ধ্বতনদের অনেকেই অর্থ, ব্যক্তিগত সম্পর্ক বা বংশগত সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের অবস্থানকে সুরক্ষিত করেছে। এই অবিশ্বাস মনোবলকে মারাত্মক ভাবে ভেঙে দিতে পারে এবং একে অপরের উপরে থাকা আস্থার ভিতে সন্দেহের বীজ বপন করতে পারে।

পিএলএ-র প্রচলিত দুর্নীতি এবং সাংগঠনিক অস্থিরতা জুনিয়র কর্মকর্তা, সৈনিক এবং তাঁদের ঊর্ধ্বতনদের মধ্যে আস্থা নষ্ট করতে পারে। এই ঊর্ধ্বতনদের অনেকেই অর্থ, ব্যক্তিগত সম্পর্ক বা বংশগত সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের অবস্থানকে সুরক্ষিত করেছে

কর্তৃপক্ষের কাছে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রায়ই নিরর্থক বলে প্রমাণিত হয়েছে কারণ ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা যে কোনও তদন্তকে দমন করতে সক্ষম। ই সমস্যার প্রতিকারের জন্য সিসিডিআই-কে সরাসরি সিএমসি-র অধীনে রাখা হয়েছিল। ফলস্বরূপ, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সব সময় তটস্থ হয়ে থাকেন, যেহেতু তাঁদের উত্থান ও পতন শি তাঁর আস্থাভাজনদের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতার উপর নির্ভর করে। দুর্নীতির তদন্তের বিষয়টি কাঠামোগত নয় এবং প্রায়শই কোনও অভিযুক্ত আধিকারিকের পারিবারিক সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং তাঁসহযোগী শৃঙ্খলকে ভেঙে দেওয়া হয়।

নিহিতার্থ

শি ২০১৫-১৬ সালে পিএলএ-তে উচ্চ পর্যায়ের সংস্কার শুরু করেছিলেন এবং এক দশকের মধ্যে কাঠামোগত স্থিতিশীলতা আনার লক্ষ্যে ব্রতী হয়েছিলেন। যাই হোক, তাঁর পরিকল্পনাগুলি কোভিড-১৯-এর দরুন লক্ষ্যচ্যুত হয়, যা পিএলএ-কে এক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে বাধ্য করেছিল। ২০২৩ সালে শি পিএলএ রকেট ফোর্সের পুরো নেতৃত্বের অপসারণ করেন এবং ২০২৪ সালে তিনি স্ট্র্যাটেজিক সাপোর্ট ফোর্স ভেঙে দিয়েছিলেন, যখন বিভাগটির পূর্ববর্তী কম্যান্ডার জু কিয়ানশেং-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। অ্যাডমিরাল মিয়াও এবং দং-এর বিরুদ্ধে চলা তদন্ত থেকে বোঝা যায় যে, ১২ বছরের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের পরেও শি পিএলএ-র কাঠামোগত সংস্কার বা শীর্ষ নেতৃত্বের বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি।

এক যুদ্ধ-প্রস্তুত সামরিক বাহিনীর মনোবলের ভিত্তিস্বরূপ আস্থা অবমূল্যায়িত হয়েছে এবং এই আস্থাই পিএলএ-তে প্রায় অনুপস্থিত বলে মনে হচ্ছে। স্থানীয় দুর্নীতি প্রচলিত অবিশ্বাস পিএলএ-র সংহতি নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এই গভীর ভাবে নড়বড়ে পিএলএ-কে নিয়ে শি কি আদৌ কোনও সক্রিয় সংঘাত শুরু করতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই যায়।

 


অতুল কুমার অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ফেলো।

 


১) ডেভিড শামবাগ (২০০২), মডার্নাইজিং চায়না’জ মিলিটারি – প্রগ্রেস, প্রবলেম অ্যান্ড প্রসপেক্টস, বার্কলে – ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস, পৃষ্ঠা ১৯৬

২) ১) ডেভিড শামবাগ (২০০২),মডার্নাইজিং চায়না’জ মিলিটারি – প্রগ্রেস, প্রবলেম অ্যান্ড প্রসপেক্টস, বার্কলে – ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস, পৃষ্ঠা ২০০-২০৪

৩) যেমন সি মালভেনন (২০০১), সোলজারস অফ ফরচুন, লন্ডন – রাটলেজ

 

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.