Author : Ramanath Jha

Published on Jul 06, 2022 Updated 0 Hours ago

আরবান লোকাল বডিজ বা শহরের স্থানীয় প্রশাসনের (ইউ এল বি) ভৌত সীমানার মধ্যে স্পেশ্যাল প্ল্যানিং অথরিটি (এস পি এ) নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে জটিলতা দেখা দিচ্ছে।

প্ল্যানিং অথরিটির পরিসরের মধ্যে এক বিশেষ প্ল্যানিং অথরিটি নির্মাণ

শহরের স্থানীয় প্রশাসনের (ইউ এল বি) ভৌত এক্তিয়ারের অন্তর্ভুক্ত হলেও রাজ্য সরকারগুলি বড় শহরগুলিতে প্যারাস্ট্যাটাল বা রাজনৈতিক ক্ষমতাসম্পন্ন সরকারি আওতাভুক্ত সংস্থা তৈরি করার এবং তাদের স্পেশ্যাল প্ল্যানিং অথরিটির (এস পি এ) তকমা দেওয়ার পক্ষপাতী। এই নিবন্ধের আলোচ্য বিষয় হল এই ধরনের স্পেশ্যাল প্ল্যানিং অথরিটি গঠনের কার্যকারিতা।

রাজ্যগুলির নগর পরিকল্পনা আইনের অধীনে রাজ্য সরকারগুলির একটি ইউ এল বি-এর এক্তিয়ারের বাইরে বা ভৌত সীমানার মধ্যে একটি চিহ্নিত এলাকার মধ্যে সংস্থাগুলিকে স্পেশ্যাল প্ল্যানিং অথরিটির তকমা দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে৷ এ হেন ঘোষণার পরে স্পেশ্যাল প্ল্যানিং অথরিটির তকমাপ্রাপ্ত সংস্থাগুলি প্ল্যানিং অথরিটির ক্ষমতা ভোগ করার সুবিধে পায়। এটি চিহ্নিত এলাকার জন্য উন্নয়ন পরিকল্পনা (ডি পি) / মাস্টার প্ল্যান প্রস্তুত ও বাস্তবায়ন, জমি ব্যবহার পরিকল্পনার পরিচালনা করতে সক্ষম। তবে ডি পি-টি রাজ্যের নগর উন্নয়ন বিভাগের সার্বিক অনুমোদন সাপেক্ষ।

রাজ্যগুলির নগর পরিকল্পনা আইনের অধীনে রাজ্য সরকারগুলির একটি ইউ এল বি-এর এক্তিয়ারের বাইরে বা ভৌত সীমানার মধ্যে একটি চিহ্নিত এলাকার মধ্যে সংস্থাগুলিকে স্পেশ্যাল প্ল্যানিং অথরিটি তকমা দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে৷

শহুরে জনবসতি হিসেবে গড়ে ওঠা এবং শহরের স্থানীয় প্রশাসনের ভৌত এক্তিয়ারের মধ্যে না পড়া গ্রিনফিল্ড অঞ্চলগুলির জন্য এস পি এ-র গঠন পরিকল্পনা ক্ষেত্রে একটি প্রয়োজনীয়তা। কিন্তু শহরের স্থানীয় প্রশাসনের ভৌত সীমানার মধ্যে এস পি এ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে মত পার্থক্য রয়েছে। এ বিষয়ে যে কোনও আলোচনা সাংবিধানিক প্রবিধানের পথ ধরেই শুরু হওয়া উচিত। সংবিধানের ৭৪ তম সংশোধনী আইনটি ভারতীয় সংবিধানে শিডিউল ১২-এর সন্নিবেশের মাধ্যমে ইউ এল বি-এর কার্যকরী ক্ষেত্রকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছে, যা ১৮টি কার্যাবলিকে তালিকাভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে:

• ছোট নগরের পরিকল্পনা-সহ আরবান প্ল্যানিং

• জমির ব্যবহার এবং ভবন নির্মাণ নিয়ন্ত্রণবিধি

• অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা

স্পষ্টতই সংবিধানের উদ্দেশ্য হল আরবান প্ল্যানিংকে এক ইউ এল বি কার্যকারিতায় পরিণত করা এবং সেই ইউ এল বি-ই হবে ‘প্ল্যানিং অথরিটি’। এটি ৭৪ তম সংশোধনী ধারার সামগ্রিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্মাণ করা যার লক্ষ্য ছিল ইউ এল বি-গুলির ক্ষমতায়ন। ‘স্বপ্রশাসনে প্রাণবন্ত গণতান্ত্রিক একক’ তৈরি করার উদ্দেশ্যে ৭৪ তম সংশোধনী ধারার উদ্দেশ্য এবং কারণের বয়ান বিবৃতিতে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছিল।

এটিতে সংবিধানে দর্শানো প্রবিধানকে অনুসরণ করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে, এস পি এ নির্মাণ সাধারণত এমন অঞ্চলে করতে হবে, যাদের কোনও বিদ্যমান প্ল্যানিং অথরিটি নেই, কিন্তু একটি ডি পি-র প্রয়োজন প্রভূত। যেমনটি আগে বলা হয়েছে, এই ধরনের ঘটনায় একটি স্পেশ্যাল প্ল্যানিং অথরিটি নির্মাণ কোনও বিকল্প নয়, বরং একটি প্রয়োজনীয়তা হয়ে ওঠে। গ্রিনফিল্ড এলাকার জন্য তৃণমূল স্তর থেকে পরিকল্পনা করতে হবে, নতুন উন্নয়নের জন্য লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে হবে এবং এলাকার জন্য পরিকল্পনাটি স্পষ্ট ধারণার মধ্যে আনতে হবে। এই কাজটি বাস্তবায়নের জন্য একটি বিশদ পরিকল্পনা এবং একটি পরিকাঠামোগত পরিকল্পনার প্রয়োজন। একবার এই জাতীয় পরিকল্পনা প্রস্তুত এবং অনুমোদিত হলে, তা দৈনন্দিন ভিত্তিতে কাজে লাগানো প্রয়োজন। কিন্তু যেখানে একটি ইউ এল বি রয়েছে, সেখানে এটিকে একটি প্ল্যানিং অথরিটির উপর অর্পিত সমস্ত দায়িত্ব পর্যবেক্ষণ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ইউ এল বি-র মধ্যে থেকে জায়গা করে নিয়ে একটি এস পি এ নির্মাণের অর্থ হল চিহ্নিত এলাকার প্ল্যানিং অথরিটি হিসেবে ইউ এল বি-র সকল অধিকারকে খর্ব করা এবং সেটি এস পি এ দ্বারা অধিগৃহীত হওয়া।

আরও একটি সম্ভাব্য সমস্যা হল এস পি এ ভিন্ন প্রকারের মানদণ্ড ব্যবহার  করতে পারে অথবা সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে তার নিজস্ব প্রয়োজনীয়তা অনুসারে সেগুলির পরিবর্তন করতে পারে।

একটি শহরের স্থানীয় প্রশাসনের সীমানার মধ্যে এস পি এ নির্মাণ নিয়ে অনিবার্য মত পার্থক্য রয়েছে। প্রথম সম্ভাব্য সমস্যাটি হল, এস পি এ দ্বারা প্রস্তুত পরিকল্পনাটি ইউ এল বি দ্বারা প্রস্তুত বাকি অঞ্চলের পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না-ও হতে পারে৷ এমনটাই হওয়ার সম্ভাবনা যে এস পি এ-র পরিকল্পনা সেই সংস্থার চাহিদা দ্বারা চালিত হবে— ভিন্ন অগ্রাধিকারের তালিকা-সহ যা একটি ভিন্ন সংস্থা। আরও একটি সম্ভাব্য সমস্যা হল এস পি এ ভিন্ন প্রকারের মানদণ্ড ব্যবহার  করতে পারে অথবা সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে তার নিজস্ব প্রয়োজনীয়তা অনুসারে সেগুলির পরিবর্তন করতে পারে। যেমনটা মুম্বইয়ের ক্ষেত্রে ঘটতে দেখা গিয়েছে— যেখানে মুম্বই পোর্ট ট্রাস্ট (এম বি পি টি) তার নিজস্ব খসড়া ডি পি তৈরি করেছে যেখানে মানদণ্ড নির্ণয়ের জন্য ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড, মুম্বই ডি পি ২০৩৪, সিডকো এবং অন্যান্য উত্স থেকে ধারণা গৃহীত হয়েছে। এই ধরনের একটি বাছাই প্রক্রিয়া নিজস্ব উদ্দেশ্যগুলির সঙ্গে মানানসই মানদণ্ড খুঁজে নেওয়ার ইচ্ছাকেই তুলে ধরে।

এ ছাড়াও, এস পি এ উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ ও প্রচার প্রবিধানের (ডি সি পি আর) একটি সেট তৈরি করতে পারে, যা এস পি এ-র এলাকায় একগুচ্ছ ডি সি পি আর জারি করতে পারে যা সেই এলাকার জন্য অনন্য এবং ইউ এল বি-র ডি সি পি আর অনুসরণ না-ও করতে পারে। ডি পি-তে উল্লিখিত কারণগুলির জন্য এম সি জি এম ডি পি ট্রানজিট-ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট (টি ও ডি) অঞ্চলগুলিকে খারিজ করেছে এবং ফর্মভিত্তিক কোড চালু করেনি। যদিও ডি সি পি আর-এর ক্ষেত্রে এম সি জি এম ডি সি পি আর ২০৩৪-কে এম বি পি টি খসড়া ডি পি দ্বারা ভিত্তি নথি হিসেবে বিবেচনা করার পাশাপাশি এটি টি ও ডি অঞ্চলের সূচনা করেছে। এ ছাড়াও ফর্মভিত্তিক কোড চালু করা হয়েছে যাতে আলাদা আলাদা শহুরে নকশা নির্দেশিকা থাকবে। একই শহরের মধ্যে নানা ধরনের পরিকল্পনাগত ধারণার প্রভাবের মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

এ ছাড়াও ইউ এল বি-র এলাকার মধ্যে এস পি এ-গুলি সর্বদা একে অন্যের দায়িত্বসীমার মধ্যে ঢুকে পড়ে প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি করে। এস পি এ-টি যদি একটি ছোট এলাকার জন্য হয়, তবে সম্ভবত সেটি তার এলাকার মধ্যে পৌরসভার সমস্ত কার্যভার গ্রহণ করার অবস্থানে থাকবে না। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, এটি একটি স্বাধীন জল সরবরাহ এবং পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থা নির্মাণ এবং পরিচালনা করার অবস্থানে থাকবে না; এটিকে ইউ এল বি-র সরবরাহের উপর নির্ভরশীল থাকতে হতে পারে এবং শুধু মাত্র অভ্যন্তরীণ বিতরণ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে হতে পারে। এটি একটি স্বাধীন কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ কেন্দ্রকে চিহ্নিত করতে সক্ষম না-ও হতে পারে এবং আবর্জনা পৌরসভার নির্ধারিত স্থানগুলিতে নিয়ে যেতে হতে পারে। অনেক  ক্ষেত্রেই মাত্রাগত বিবেচনা একটি ছোট এস পি এ এলাকার মধ্যে নিছক পৌরসভার কার্যকলাপ পরিচালনার জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা তৈরির পরামর্শ দেয় না। এই বিষয়গুলি ইউ এল বি এবং এস পি এ-র মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করতে পারে, যা উভয় পক্ষের অবস্থানকে অনড় করে তোলে এবং তার সমাধানের জন্য সরকারি হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হতে পারে।

প্রথম সম্ভাব্য সমস্যাটি হল, এস পি এ দ্বারা প্রস্তুত পরিকল্পনাটি ইউ এল বি দ্বারা প্রস্তুত করা বাকি অঞ্চলের পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না-ও হতে পারে৷

আরও একটি লক্ষ্যণীয় বিষয় হল যে, রাষ্ট্রীয় প্যারাস্ট্যাটালের ক্ষেত্রে ইউ এল বি সীমানার মধ্যে সৃষ্ট এস পি এ পরিচালনা করা কিছুটা হলেও সহজ। ইউ এল বি এবং এস পি এ-র মধ্যকার যে পার্থক্য সামনে উঠে আসছে, সেখানে রাজ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে এবং এই ধরনের বিরক্তিকর বিষয়গুলি সমাধান করতে পারে। চরম মতবিরোধের ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের শুনানির পর আদেশ জারি করতে পারে সরকার। সে ক্ষেত্রে উভয় পক্ষই সরকারপ্রদত্ত নির্দেশাবলি অনুসরণ করতে বাধ্য হবে। তবে উভয় পক্ষের সংস্থাগুলি কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সংস্থার অধীনে হলে পরিস্থিতি সম্ভবত জটিলতর হয়ে উঠবে।

সুতরাং যেখানে কোনও প্ল্যানিং অথরিটি নেই, শুধু সেই সব অঞ্চলে উন্নয়নের জন্য এস পি এ গঠন করাই শ্রেয়। ২০১৭ সালে মহারাষ্ট্র সরকার কর্তৃক গঠিত ‘শহুরে স্থানীয় সংস্থায় স্বচ্ছতা, দক্ষতা এবং দায়বদ্ধতা বিষয়ক কমিটি’ দ্বারা অনুরূপ সুপারিশ করা হয়েছিল। ‘দ্য নন-ডিজায়ারেবিলিটি অফ এস পি এ-জ’ শীর্ষক অনুচ্ছেদ ৬.৮.১৫-তে বলা হয়েছিল, সেই কমিটি বিশেষ ভাবে এম আর টি পি আইনের বিধান তুলে ধরতে চায় যা এস পি এ গঠনের অনুমতি দেয়। এটি একটি পৌরসভাকেন্দ্রিক ক্ষমতা এক্তিয়ারের মধ্যে এস পি এ-র গঠন অন্তর্ভুক্ত করে। ইউ এল বি-র এলাকায় এই ধরনের এস পি এ নির্মাণ একে অন্যের দায়িত্বসীমার মধ্যে ঢুকে পড়ার  মাধ্যমে প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি করে। সেই কমিটি সুপারিশ করে যে, যেখানে কোনও প্ল্যানিং অথরিটি নেই, শুধু সেই সব অঞ্চলে উন্নয়নের জন্য এস পি এ গঠন করাই শ্রেয়।  ইউ এল বি সীমানার মধ্যে এস পি এ গঠন একটি বিরলতম ব্যতিক্রম হওয়া উচিত। এই পদক্ষেপ তখনই এক বিকল্প রূপে ব্যবহার করা যেতে পারে, যখন তেমনটা করার বাধ্যতামূলক কারণ রয়েছে। একবার যে উদ্দেশ্যে এস পি এ তৈরি করা হয়েছিল তা অর্জিত হলে এস পি এ প্রত্যাহার / বিলুপ্ত করা উচিত এবং পরিকল্পনার ক্ষেত্র ও কার্যকারিতা সংশ্লিষ্ট ইউ এল বি-কে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.