Published on Apr 04, 2025 Updated 0 Hours ago

ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকির বিরুদ্ধে চিনের প্রতিক্রিয়া তীব্রতর হচ্ছে, কারণ বেজিং কৌশলগত পদক্ষেপের মাধ্যমে প্রতিশোধ নিচ্ছে, যা ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক উত্তেজনা এবং বিশ্বব্যাপী ক্ষমতা স্থানান্তরের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের বিষয়ে চিনা কথন

১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডা, মেক্সিকো ও চিন থেকে আসা পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের জন্য একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। তবে, ৩ ফেব্রুয়ারি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেনবম পারদোর সঙ্গে আলোচনার পর ট্রাম্প শুল্ক বাস্তবায়ন এক মাস স্থগিত রাখতে সম্মত হন। একই দিনে চিনা ও মার্কিন নেতাদের মধ্যে একটি সম্ভাব্য ফোনালাপের বিষয়েও আলোচনা হয়েছিল, যা আপাতভাবে সম্ভব হয়নি। ৪ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা করেন যে তিনি ‘‌তাড়াহুড়ো করছেন না’‌ এবং ‘‌উপযুক্ত সময়ে’‌ চিনা নেতার সঙ্গে কথা  বলবেন। একই দিনে বেশ কিছু প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ ঘোষণা করে চিন প্রতিক্রিয়া জানায়। প্রথমত, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা ৮০টি আমদানিকৃত পণ্যের উপর ১০-১৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে। উপরন্তু, দেশটি পিভিএইচ কর্প ও ইলুমিনা ইঙ্ক-এর মতো মার্কিন কোম্পানিগুলিকে 'অনির্ভরযোগ্য সত্তা' তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে, টাংস্টেন, টেলিউরিয়াম, বিসমাথ, মলিবডেনাম ও ইন্ডিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের উপর কঠোর রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে, চিনের একচেটিয়া-বিরোধী আইনের সন্দেহজনক লঙ্ঘনের জন্য গুগল ইনকর্পোরেটেডের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে, এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলা করেছে।

চিনের উত্থান মেনে নিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাধ্য করা

গত কয়েক মাস ধরে চিনের নীতি-‌পরিসীমায় ‘প্রতি-নিষেধাজ্ঞা’ (
反制裁) একটি গুঞ্জনপূর্ণ শব্দে পরিণত হয়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে, যখন বাইডেন প্রশাসন চিনের উপর বৃহৎ পরিসরে চিপ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তখন চিন তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গ্যালিয়াম,  জার্মেনিয়াম, অ্যান্টিমনি ও গ্রাফাইটের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল রপ্তানির উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। এটি বিভিন্ন কারণে এনভিডিয়া, লকহিড মার্টিন মিসাইল ও ফায়ার কন্ট্রোলের মতো বেশ কয়েকটি মার্কিন কোম্পানির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়। চিনা বিশেষজ্ঞদের অভিমত যে, এই শক্তিশালী পদক্ষেপের মাধ্যমে চিনা সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্প ২.০ এর সঙ্গে তার সম্ভাব্য সম্পর্কের সুর নির্ধারণ করেছে।


চিনা বিশেষজ্ঞদের অভিমত যে, এই শক্তিশালী পদক্ষেপের মাধ্যমে চিনা সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্প ২.০ এর সঙ্গে তার সম্ভাব্য সম্পর্কের সুর নির্ধারণ করেছে।



অন্যদিকে, চিনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম প্রচারণা চালিয়ে বিভিন্ন বিঘ্নকারী প্রযুক্তিতে বড় ধরনের সাফল্য দাবি করছে, যার মধ্যে রয়েছে ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান, টাইপ ০৭৬ উভচর আক্রমণকারী জাহাজ, কেজে-৩০০০ প্রাথমিক সতর্কীকরণ বিমান, হংকি-১৯ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, এবং ১,০০০ মিটার গভীরতায় সাবমেরিন সনাক্ত করতে সক্ষম একটি নতুন লেজার-ভিত্তিক রাডার প্রযুক্তি, যা চিনের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা প্রদর্শন করে। বেজিং থেকে আসা বার্তাটি স্পষ্ট। ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক ঝাং ওয়েইওয়েই
জোর দিয়ে বলেছেন, ‘‌‘‌চিন অনেক অগ্রগতি করেছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। এখন তার যথেষ্ট শক্তি রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে সরঞ্জাম উৎপাদন এবং শিল্প শৃঙ্খল... যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে চিনের উত্থান মেনে নিতে বাধ্য করবে। সর্বোপরি, চিনই একমাত্র দেশ যেখানে সমস্ত শিল্প ক্ষেত্র এবং বিশ্বের সবচেয়ে সম্পূর্ণ শিল্প ব্যবস্থা রয়েছে, যা বিশ্বকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রায় সমস্ত পণ্য সরবরাহ করতে পারে... কোনও একটি বা অনেকগুলি দেশ চিন থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারে না এবং এটিই চিনা আস্থার উৎস।"

ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের খরচ কে বহন করবে: মার্কিন ভোক্তারা না চিনা উদ্যোগ?

বড় বড় দাবি সত্ত্বেও, উদ্বেগ রয়ে গিয়েছে। মূল বিষয় হল ট্রাম্পের বর্তমান শুল্কের খরচ কারা বহন করবে: মার্কিন ভোক্তা ও অন্তিম ব্যবহারকারী অথবা চিনা উদ্যোগ?‌ চিনা পক্ষ আশা করে যে তাদের ব্যবসায়ীরা মার্কিন ভোক্তাদের উপর বোঝা চাপিয়ে দেবে, যার ফলে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে এবং জনসাধারণের অভিযোগ তীব্র হবে, এবং তা ট্রাম্পকে শুল্ক ইস্যুতে পিছু হটতে বাধ্য করবে।

অন্যদিকে, চিনা উৎপাদন শিল্পের মধ্যে ‘‌বিপ্লবী’‌ (
内卷) প্রতিযোগিতার ক্রমবর্ধমান প্রবণতা সম্পর্কে চিন সচেতন এবং ক্রমবর্ধমানভাবে উদ্বিগ্ন। প্রতিযোগিতাকে প্রায়শই ইতিবাচক হিসাবে বিবেচনা করা হয়, কারণ তা উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতার দিকে চালিত করতে পারে। চিনা উৎপাদন উদ্যোগগুলির মধ্যে এই বিপ্লবী প্রতিযোগিতার ফলে সৃষ্ট কম দাম তার রপ্তানি সংস্থাগুলির জন্য প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা তৈরি করেছে, এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় নিজেকে একটি প্রভাবশালী অবস্থানে সুরক্ষিত করেছে। তবুও, উন্নয়নের নতুন ক্ষেত্রগুলিতে চিন-মার্কিন বাণিজ্য সংঘাত তীব্রতর হওয়া এবং চিনা অর্থনীতির উপর ক্রমাগত নিম্নমুখী চাপের কারণে চিনা কোম্পানিগুলির মধ্যে বিপ্লবী প্রতিযোগিতা বিপরীতমুখী প্রমাণিত হচ্ছে।


চিনা উৎপাদন উদ্যোগগুলির মধ্যে এই বিপ্লবী প্রতিযোগিতার ফলে সৃষ্ট কম দাম তার রপ্তানি সংস্থাগুলির জন্য প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা তৈরি করেছে, এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় নিজেকে একটি প্রভাবশালী অবস্থানে সুরক্ষিত করেছে।



চিনা কোম্পানিগুলির মধ্যে এই আগ্রাসী প্রতিযোগিতার প্রাথমিক প্রকাশ হল বেতন হ্রাস, কর্মী ছাঁটাই এবং গবেষণা ও উন্নয়ন কাটছাঁটের মাধ্যমে খরচ কমানোর উপর ভিত্তি করে অবিরাম মূল্য যুদ্ধ।
অভ্যন্তরীণভাবে, এটি পণ্যের দামের তীব্র পতনের দিকে চালিত করছে, কর্পোরেট মুনাফা হ্রাস করছে, এবং ফলস্বরূপ চিনা জনগণের মজুরি, কর্মসংস্থান ও উপভোগ ক্ষমতা হ্রাস করছে। অনেক চিনা ফাটকাবাজের অভিমত যে, বিভিন্ন শিল্পে চলতি অনিয়ন্ত্রিত মূল্য প্রতিযোগিতা যদি প্রতিরোধ না করা হয়, তবে তা চিনকে বিঘ্নকারী প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন থেকে ‘‌শস্তা, জাল ও নিম্নমানের পণ্য’‌ যুগে নিয়ে যেতে পারে।

এর উপর,
বিদেশি বাজারে অতিরিক্ত মূল্য প্রতিযোগিতা চিনা কোম্পানিগুলির জন্য ক্রমশ অস্থিতিশীল হয়ে দাঁড়াচ্ছে, এবং সরবরাহ ও রাজস্ব বৃদ্ধি সত্ত্বেও চিনা কোম্পানিগুলি (বিশেষ করে অটোমোবাইল, সৌর প্যানেলের ক্ষেত্রে) দাম তলানিতে নেমে যাওয়ার ফলে ক্রমবর্ধমান ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এর পরিপূরক হিসাবে, মূল্য-সুবিধার উপর ভিত্তি করে চিনের রপ্তানি বৃদ্ধি বিভিন্ন দেশে বাণিজ্য বিরোধ ও অ্যান্টি-ডাম্পিং তদন্তের সূত্রপাত করছে, যার মধ্যে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো চিনের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত দেশগুলি।

উদাহরণস্বরূপ, চিনের অটোমোবাইল উৎপাদন শিল্পে আগ্রাসন সবচেয়ে ভয়াবহ, যেখানে গাড়ি নির্মাতাদের একটি সাধারণ কৌশল হল ‘‌পরিমাণের বিনিময়ে মূল্য নির্ধারণ’‌ করে বিক্রয় বৃদ্ধি করা।
চিনা অনুমান অনুসারে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চিনা অটো বাজারে দাম কমানোর পরিসর ২২৭টি মডেলে পৌঁছেছে, যা ২০২২ (৯৫) এবং ২০২৩ (১৪৮)-‌এর পরিসংখ্যানকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। যদিও নতুন শক্তিভিত্তিক যানবাহন ক্ষেত্রটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, নতুন গাড়ির দাম গড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮,০০০ ইউয়ান (প্রায় ৯.২ শতাংশ হ্রাস)। অতিরিক্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য হল ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বরের মধ্যে চিনা অটোমোবাইল শিল্পের মুনাফা বছরে ৭.৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। একই ডেটাসেটে বর্ণিত হয়েছে যে লাভের অংশ নিম্নধারার শিল্প উদ্যোগের গড় ৬.১ শতাংশের চেয়ে ৪.৪ শতাংশ কম ছিল। ২০২৪ সালের নভেম্বরে অটোমোবাইল শিল্পের মুনাফা বার্ষিক ভিত্তিতে ৩৫ শতাংশ কমেছে, এবং লাভের পরিমাণ ছিল মাত্র ৩.৩ শতাংশ।


শিল্প বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে, মূল্য যুদ্ধের তীব্র চাপের মধ্যে চিনা নতুন শক্তিভিত্তিক যানবাহনের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ক্ষমতা প্রভাবিত হতে বাধ্য, এবং পণ্যগুলির সমজাতীয়তা একটি অবাঞ্ছিত প্রবণতায় রূপান্তরিত হচ্ছে।



চিনা গণমাধ্যমের
প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে যে, দেশের ৭১টি যাত্রিবাহী গাড়ি কোম্পানির মধ্যে মাত্র তিনটি টানা তিন বছর লাভজনক অবস্থান ধরে রাখতে পেরেছে। এমনকি নতুন শক্তিভিত্তিক যানবাহনের বিক্রিতে বিশ্বব্যাপী বৃদ্ধি সত্ত্বেও শীর্ষস্থানীয় চিনা গাড়ি নির্মাতা বিওয়াইডি অটোরও মোট মুনাফার অংশ তীব্রভাবে হ্রাস পেয়েছে। শিল্প বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে, মূল্য যুদ্ধের তীব্র চাপের মধ্যে চিনা নতুন শক্তিভিত্তিক যানবাহনের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ক্ষমতা প্রভাবিত হতে বাধ্য, এবং পণ্যগুলির সমজাতীয়তা একটি অবাঞ্ছিত প্রবণতায় রূপান্তরিত হচ্ছে।

বিভিন্ন শিল্পে আগ্রাসী প্রতিযোগিতার নেতিবাচক প্রভাবের প্রতিক্রিয়া এবং চিনা অর্থনীতিকে মূল্যস্ফীতি থেকে বার করে আনা এখন চিনা
কৌশলগত সম্প্রদায়ের সামনে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করে চলেছে। এই কৌশলগত সম্প্রদায় চিনা উদ্যোগগুলিকে ‘‌নতুন মার্কিন শুল্ক বহনের জন্য দাম আর না-‌কমাতে’‌ মরিয়া অনুরোধ করে বলছে, ‘‌‘‌বৈদেশিক বাণিজ্যে চিনা নির্মাতাদের লাভের মূল সীমা বজায় রাখতে হবে এবং তারা আরও খারাপ মূল্য প্রতিযোগিতায় জড়িত হতে পারবে না... পরিবর্তে, তাদের মূল দক্ষতার জন্য প্রতিযোগিতা করা উচিত।’‌’‌

তিয়ানফেং সিকিউরিটিজের প্রধান ম্যাক্রো অ্যানালিস্ট জুয়েতাও সং সংক্ষেপে বলেছেন, চিন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্ক যুদ্ধের
সীমা আসলে একদিকে মার্কিন ভোক্তাদের মূল্যস্ফীতি সহনশীলতার সীমা এবং অন্যদিকে চিনের রপ্তানি উৎপাদন শিল্পের লাভের অংশের প্রশ্ন। ভারত যদি পরিস্থিতিকে তার সুবিধার জন্য কাজে লাগাতে চায় তবে তাকে অবশ্যই মার্কিন-চিন শুল্ক যুদ্ধের দিকটি নিবিড়ভাবে অনুসরণ করতে হবে এবং সঠিকভাবে পরিমাপ করতে হবে।



অন্তরা ঘোষাল সিং অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Author

Antara Ghosal Singh

Antara Ghosal Singh

Antara Ghosal Singh is a Fellow at the Strategic Studies Programme at Observer Research Foundation, New Delhi. Her area of research includes China-India relations, China-India-US ...

Read More +