-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
ডেনমার্কের ইইউ সভাপতিত্বে ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে ব্লকের নিরাপত্তা সক্ষমতা জোরদার করা, কার্বনমুক্তকরণ ত্বরান্বিত করা এবং অভিবাসন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২০২৫ সালের ১ জুলাই ডেনমার্ক পোল্যান্ডের কাছ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাউন্সিল-এর (ইইউ) ছয় মাসের আবর্তনশীল সভাপতিত্ব গ্রহণ করে। এটি হবে অষ্টম বারের মতো ডেনমার্কের সভাপতিত্ব, যা শেষ বার ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
পোল্যান্ডের সভাপতিত্বে ‘নিরাপত্তা, ইউরোপ!’ ভাবনার পরে - যা নিরাপত্তাকে বহুমাত্রিক ধারণা হিসেবে মোকাবিলা করেছিল - ড্যানিশ সভাপতিত্বে ‘পরিবর্তনশীল বিশ্বে একটি শক্তিশালী ইউরোপ’ নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। কারণ এটি ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার পটভূমিতে পথ খুঁজে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ড্যানিশ সভাপতিত্ব পোল্যান্ড, ডেনমার্ক ও সাইপ্রাস নিয়ে গঠিত বর্তমান ত্রয়ীটির একটি অংশ, যারা ইইউর কৌশলগত দিকনির্দেশনা ও নীতিগত কর্মসূচি নির্ধারণের জন্য একসঙ্গে কাজ করছে।
একটি সবুজ, সুরক্ষিত এবং প্রতিযোগিতামূলক ইউরোপ
ড্যানিশ সভাপতিত্বের কর্মসূচিতে নিরাপত্তা, প্রতিযোগিতা ও কার্বন নির্গমনকে প্রধান অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
পোলিশ সভাপতিত্বের গতি অব্যাহত রেখে ড্যানিশ কর্মসূচিতে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা শীর্ষে রয়েছে, যা প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালীকরণ, যৌথ ক্রয়কে আরও এগিয়ে নেওয়া এবং রিআর্ম ইউরোপ পরিকল্পনা ও ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা - প্রস্তুতি ২০৩০-এর জন্য শ্বেতপত্রের অংশ হিসাবে গৃহীত উদ্যোগগুলি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সক্ষমতা বিকাশের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এই কর্মসূচিতে জোর দেওয়া হয়েছে, ‘২০৩০ সালের মধ্যে ইইউ-কে অবশ্যই নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম হতে হবে’ এবং ‘ন্যাটোর সঙ্গে পরিপূরক’ হয়ে উঠে এমনটা করতে হবে। নতুন প্রস্তাব পেশ করার পরিবর্তে সম্ভবত ডেনমার্ক ইউরোপীয় কমিশন কর্তৃক ইতিমধ্যে গৃহীত উদ্যোগগুলি বাস্তবায়নের উপর মনোনিবেশ করবে এবং ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা শিল্প কর্মসূচি (ইডিআইপি) নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সঙ্গে আলোচনা চালাবে। ডেনমার্ক নিজেই বর্তমানে তার মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ২.৪ শতাংশ প্রতিরক্ষায় ব্যয় করে।
ইইউ সম্প্রসারণ আর একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার এবং ডেনমার্ক ইউক্রেন, মলদোভা ও পশ্চিম বলকানের সঙ্গে যোগদানের জন্য আলোচনার আশা করছে।
আটলান্টিক মহাদেশের মধ্যকার অংশীদারিত্ব যখন মৌলিক পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন কোপেনহেগেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ডকে সংযুক্ত করার হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। ইইউ-তে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত কার্স্টেন গ্রোনবেচ-জেনসেন স্পষ্ট করে বলেছেন যে, এই বিষয়টি সভাপতিত্বের আওতার বাইরে থাকবে। তবে ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক ভঙ্গি এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে ড্যানিশ মনোভাব তাঁদের ঐতিহাসিক ইউরোস্কেপ্টিসিজম থেকে স্পষ্টতই ইইউ-পন্থী পরিবর্তনের দিকে চালিত করেছে। সম্প্রতি ইউরোপকে সশস্ত্র করার পক্ষে নতুন বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ডেনমার্ক সাধারণ ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ২০২০ সালে তৈরি তথাকথিত ‘ফ্রুগাল ফোর’ গ্রুপিং থেকে বেরিয়ে এসেছে।
ইইউ সম্প্রসারণ আর একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার এবং ডেনমার্ক ইউক্রেন, মলদোভা ও পশ্চিম বলকানের সঙ্গে যোগদানের জন্য আলোচনার আশা করছে। কোপেনহেগেনের লক্ষ্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বজায় রেখে ইউক্রেনকে সমর্থন অব্যাহত রাখা। বর্তমানে হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়া দ্বারা বিরোধিতা করা ১৮তম নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ পাস করা একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হবে।
ব্লকের সবুজ রূপান্তর এবং জলবায়ু কর্মকাণ্ড একটি মূল লক্ষ্য হিসেবে থাকবে, যা সবুজ প্রযুক্তি এবং পরিবেশগত উদ্ভাবনে ডেনমার্কের সক্ষমতা ও নেতৃত্বকে শক্তিশালী করবে। এই বছরের নভেম্বর মাসে নির্ধারিত কপ৩০ সম্মেলনের আগে ব্লকের ২০৪০ সালের জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রার উপর একমত হওয়া ২০৫০ সালের মধ্যে ইইউ-এর জলবায়ু নিরপেক্ষতার পথ সহজতর করার জন্য কেন্দ্রীয় ভূমিকা রাখবে।
এই বছরের নভেম্বর মাসে নির্ধারিত কপ৩০ সম্মেলনের আগে ব্লকের ২০৪০ সালের জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রার উপর একমত হওয়া ২০৫০ সালের মধ্যে ইইউ-এর জলবায়ু নিরপেক্ষতার পথ সহজতর করার জন্য কেন্দ্রীয় ভূমিকা রাখবে।
পূর্ববর্তী পোলিশ সভাপতিত্বের আমলে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অনেক সাফল্য অর্জন করা হলেও কার্বন নিষ্কাশনের লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কে অস্পষ্টতা ছিল। তবুও ডেনমার্কের জন্যও সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করা চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে তৃতীয় দেশগুলিতে নির্গমন হ্রাস প্রকল্পগুলিকে ইইউ লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে যুক্ত করার দাবির কারণে। কমিশনের রিপাওয়ার ইইউ পরিকল্পনার মাধ্যমে রুশ জ্বালানি আমদানি পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার উপর জোর দেওয়া হাঙ্গেরির মতো দেশগুলির কাছ থেকেও অব্যাহত চাপের সম্মুখীন হতে পারে, যারা এর উপর নির্ভরশীল। সর্বোপরি, ক্লিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিল বাস্তবায়ন ও কার্বন নিষ্কাশন এবং প্রতিযোগিতামূলক লক্ষ্য উভয়ের ভারসাম্য বজায় রাখার পাশাপাশি কোপেনহেগেনের সভাপতিত্বের লক্ষ্য হল ‘শিল্প কার্বন নিষ্কাশন ত্বরান্বিতকারী আইন’ নিয়ে আলোচনা শুরু করা।
ইইউর সভাপতিত্ব সদস্য দেশগুলির জন্য ইইউ পর্যায়ে জাতীয় কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়ার একটি সুযোগ। ড্যানিশ প্রাইম মিনিস্টার মেটে ফ্রেডেরিকসেন অভিবাসন এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত নিরাপত্তা ঝুঁকিগুলিকে একটি শীর্ষ চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখেন এবং দেশে এই সমস্যা মোকাবিলায় কঠোর পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন। কোপেনহেগেনের রাষ্ট্রপতিত্ব তৃতীয় দেশগুলির সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে অভিবাসন মোকাবিলা ও আশ্রয় প্রক্রিয়াগুলির বহির্মুখীকরণ, আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য কঠোর সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ও নিয়ম তৈরি, ইইউতে ‘অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের নতুন ও উদ্ভাবনী উপায়’ তৈরি করে এই পদ্ধতিকে ইইউ স্তরে প্রসারিত করার সম্ভাবনা রয়েছে। মে মাসে ডেনমার্ক সেই ন’টি দেশের মধ্যে ছিল, যারা অভিবাসী সুরক্ষা সম্পর্কিত ইউরোপীয় মানবাধিকার কনভেনশনের সংশোধিত ব্যাখ্যার আহ্বান জানিয়েছিল এবং অংশত এর কারণ ডেনমার্কে বিদেশি বংশোদ্ভূত বাসিন্দার সংখ্যা ১৯৮৫ সালের ৩.৩ শতাংশ থেকে ২০২৫ সালে ১৬.৩ শতাংশে নাটকীয় ভাবে বৃদ্ধি পাওয়া।
ড্যানিশ রাষ্ট্রপতিত্ব কমিশনের প্রতিযোগিতামূলকতা লক্ষ্য ও অন্যান্য সরঞ্জামের মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা ও প্রতিযোগিতামূলকতা জোরদার করার উপর ইইউ-এর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে। স্থিতিশীল প্রতিবেদনের মতো ক্ষেত্রগুলিতে সরলীকরণের লক্ষ্যে অমনিবাস প্যাকেজের মাধ্যমে আমলাতন্ত্র ও নিয়ন্ত্রণ হ্রাস করে এটি পরিপূরক হবে।
ইন্দো-প্যাসিফিকের ক্ষেত্রে এটি বিশেষ ভাবে ‘ইইউ-ভারত সম্পর্কের জন্য একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী কৌশলগত অ্যাজেন্ডা উল্লেখ করে, যার মধ্যে ২০২৫ সালে সম্ভাব্য ইইউ-ভারত শীর্ষ সম্মেলন একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে’।
ভূ-অর্থনৈতিক বিভাজনের প্রেক্ষাপটে ড্যানিশ প্রোগ্রামটি উপসাগরীয়, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান-সহ তৃতীয় দেশগুলির সঙ্গে অংশীদারিত্ব গভীর করার উপর জোর দেয়। ইন্দো-প্যাসিফিকের ক্ষেত্রে এটি বিশেষ ভাবে ‘ইইউ-ভারত সম্পর্কের জন্য একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী কৌশলগত অ্যাজেন্ডা উল্লেখ করে, যার মধ্যে ২০২৫ সালে সম্ভাব্য ইইউ-ভারত শীর্ষ সম্মেলন একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে’। এর পাশাপাশি প্রোগ্রামটি ইইউ-এর ‘অন্যান্য দেশের কাছ থেকে অন্যায্য বাণিজ্য অনুশীলন, ডাম্পিং এবং অর্থনৈতিক জবরদস্তির বিরুদ্ধে নিজেকে রক্ষা করা’র প্রয়োজনীয়তার কথাও পুনর্ব্যক্ত করে।
ইইউ যখন একটি জটিল বৈশ্বিক দৃশ্যপটে নিজের পথ করে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে, তখন তার ২৭টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে সংহতি বজায় রাখাই সভাপতিত্বের অগ্রাধিকার বাস্তবায়নের কেন্দ্রবিন্দু হবে।
শায়রী মলহোত্র অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ডেপুটি ডিরেক্টর।
নিবন্ধে প্রকাশিত মতামত লেখক(দের) ব্যক্তিগত।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Shairee Malhotra is Deputy Director - Strategic Studies Programme at the Observer Research Foundation. Her areas of work include Indian foreign policy with a focus on ...
Read More +