Published on Jan 30, 2025 Updated 0 Hours ago

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে তাঁর অষ্টম বাজেটে কৌশলগত প্রয়োজনীয়তা যোগ করতে হবে। পাঁচটি উপায়ে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জে ট্রাম্পের দক্ষতা উদ্যোগ সংক্রান্ত ঝুঁকি মোকাবিলা করতে পারেন

বাজেট ২০২৫-এর জন্য অর্থনৈতিক বিবেচনাবুদ্ধি প্রয়োজন

সুযোগের সময় শেষবর্তমানে ভারতীয় অর্থনীতি সকল আন্তর্জাতিক প্রতিপক্ষের পাশাপাশি একটি নতুন হুমকির সম্মুখীন। আসন্ন অনিশ্চয়তার সময়ে এই হুমকি অর্থনৈতিক জটিলতাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। এই হুমকি ভৌত নয়, সম্পদজনিত নয়, এমনকি প্রযুক্তিগতও নয়। এটি সুদের হার পরিচালনার চেয়ে দীর্ঘমেয়াদি, তেলের দামের ওঠানামার চেয়ে স্বল্পমেয়াদি এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের চেয়ে বেশি ধ্বংসাত্মক। এবং সর্বোপরি, সরকারগুলির অনুমানের তুলনায় এই হুমকি অনেক বেশি বাস্তব।

সেই প্রেক্ষাপটে, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের ১২ মাসের মধ্যে তৃতীয় (একটি  অন্তর্বর্তীকালীন-সহ) এবং ছবছরে অষ্টম বাজেটের জন্য একটি নতুন দিশা দরকার। এ কথা অনস্বীকার্য যে, অবশ্যই আর্থিক প্রবাহ বজায় রাখতে হবে। এর পাশাপাশি মধ্যবিত্ত প্রত্যক্ষ কর-প্রদানকারী নাগরিকদের হতাশার সমাধান করতে হবে। রাষ্ট্রকে অবশ্যই অতিরিক্ত-ভাতার উপর নতুন ভাতা দেওয়ার বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে। কিন্তু এই সবের ঊর্ধ্বে উঠে নয়াদিল্লিকে অবশ্যই ১২০০০ কিমি দূরে ওয়াশিংটন ডিসি-র ঘটনাবলির উপর নিবিড় নজর রাখতে হবে এবং ২০২৫ সালের বাজেটকে একটি অর্থনৈতিক কৌশলী নথিতে পরিণত করতে হবে।

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের ১২ মাসের মধ্যে তৃতীয় (একটি অন্তর্বর্তীকালীন-সহ) এবং ছবছরে অষ্টম বাজেটের জন্য একটি নতুন দিশা দরকার।

সময় নষ্ট না করে ট্রাম্প ইতিমধ্যেই তাঁর বেশ কয়েকটি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে শুরু করেছেন, তা সে শুধু মাত্র দুই লিঙ্গ থেকে শুরু করে কার্টেলকে সন্ত্রাসবাদী হিসাবে মনোনীত করা… সব ক্ষেত্রেই। কিন্তু আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে এমন দুটি প্রেক্ষিত রয়েছে, যা অন্যান্য অর্থমন্ত্রী, এমনকি প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিদের জন্যও লক্ষ্যণীয় হওয়া  উচিত। প্রথমত, একটি আমেরিকা-ফার্স্ট বাণিজ্য নীতি অর্থাৎ শুল্কের প্রসঙ্গ। এবং দ্বিতীয়টি হল, ট্রাম্পের কথা মতো নিয়ন্ত্রণমূলক নিষেধাজ্ঞা, যা আমেরিকায় ব্যবসা করার বিষয়টিকে সহজ করে তোলে।

শুল্ক

শুল্কের বিষয়ে ভারতের বিবৃত অবস্থান হল এই যে, ভারত আলোচনার জন্য প্রস্তুত, যদি এটি দেশীয় উত্পাদনের জন্য কোনও উদ্দেশ্যমূলক বা অনিচ্ছাকৃত প্রতিকূল পরিণতি না ডেকে আনে। এটি ট্রাম্পের জন্য যথেষ্ট না-ও হতে পারেতাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বর্তমান ১১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য পরিচালনা করার জন্য ভারতের আরও সৃজনশীল শৃঙ্খলের প্রয়োজন, যাতে ২০৩৫ সালের মধ্যে এই পরিমাণকে ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করা যায়, যে সময়ের মধ্যে ভারত নিজে ১০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠবে (সহজাত ভাবে এটি ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে, কিন্তু এই বৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট উদ্যোগের প্রয়োজন)।

দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় শুল্ক ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু আলোচনা শুধু অর্থনীতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। নিরাপত্তা, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা ও জ্বালানির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক গভীরতর ও সমন্বিত হচ্ছে। তবে এই পদ্ধতি সম্পূর্ণ পৃথক বা স্বতন্ত্র ভাবে করা সম্ভব নয়, এটিকে অবিচ্ছেদ্য হতে হবে

জলদস্যুতা মোকাবিলার জন্য ভারত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইতিমধ্যেই লোহিত সাগরে বৃহত্তম নৌ উপস্থিতি বজায় রেখেছে এবং তার ঠিক পরেই রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং চিন।

অন্য কথায় বলতে গেলে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীকে বৃহৎ কৌশলী কাঠামোর মধ্যে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলটি যদি ভৌগোলিক পরিসর হয় - যেখানে আগামী দশকে বাণিজ্য এবং অশান্তি দুই-ই বৃদ্ধি পাবে - তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি স্থিতিশীল, নির্ভরযোগ্য শক্তিশালী অংশীদার আঞ্চলিক শক্তি হিসাবে ভারতকে প্রয়োজন হবে। জলদস্যুতা মোকাবিলার জন্য ভারত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইতিমধ্যেই লোহিত সাগরে বৃহত্তম নৌ উপস্থিতি বজায় রেখেছে এবং তার ঠিক পরেই রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং চিন।

সামগ্রিক ভাবে বললে, শুল্কের হুমকির ব্যবস্থাপনা করা সহজ কাজ হবে

নিয়ন্ত্রক কাঠামো

তিন বছর আগে সম্মতি সংস্কার শুরু করা সত্ত্বেও ভারতের প্রচেষ্টা স্থবিরই থেকেছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন প্রকাশিত ‘জেলড ফর ডুয়িং বিজনেস’ শীর্ষক একটি মনোগ্রাফে উল্লেখিত তথ্যের উপর ভিত্তি করে সরকার নীতি আয়োগের প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তার অধীনে একটি কমিটি গঠন করেছে এবং সংসদ কর্তৃক জন বিশ্বাস (বিধানের সংশোধন) আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। যাই হোক, আইনটি কেবল মাত্র ১১৩টি বিধানকে অপরাধমুক্ত করেছে, যেগুলি ব্যবসা উদ্যোক্তাদের প্রভাবিত করে। ৬৯,২৩৩ (কেন্দ্রীয় সরকারি স্তরে ২৫,৫৩৭) এমন একটি সামগ্রিক সম্মতির বোঝা, যার সঙ্গে ২৬,১৩৪টি কারাদণ্ডের ধারা (কেন্দ্রীয় সরকারি স্তরে ৫২৩৯) অন্তর্ভুক্ত এবং এটি পরিসংখ্যানগত ভাবে নিতান্তই নগণ্য।

সর্বোপরি, রাজ্য স্তরে ২০,৮৯৫টিরও বেশি কারাদণ্ডের ধারা মোকাবিলা করার জন্য তেমন কোনও অগ্রগতি হয়নি, এমনকি ১৬টি বিজেপি বা এনডিএ-শাসিত রাজ্যগুলিতেও এমনটা দেখা গিয়েছে২০২৪ সালের ২৩ জুলাই সীতারামনের সপ্তম বাজেট ২০২৪-জন বিশ্বাস ২.০ নামে আর একটি আইনের কথা বলা হয়েছে, যার লক্ষ্য হল ব্যবসার কাজ আরও সহজ করে তোলা। তবে এই আইনের বিশদ জানা এখনও বাকি।

অর্ধেক বিশ্ব জুড়ে, যদি মার্কিন পরিকল্পনা অনুযায়ী পরবর্তী ১৮ মাসে ডিওজিই (সরকারি দক্ষতা বিভাগ) অগ্রগতি সাধনও করে, তা হলে সহজ যুক্তি অনুযায়ী, তা আগামিদিনের পথকে সংজ্ঞায়িত করবে। যদি বিশ্বের বৃহত্তম বাজারে (জিডিপি: ২৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার) ধনী দেশগুলির মধ্যে কোনও একটি দেশের ব্যবসা করা (মাথাপিছু আয়: ৮২০০০ মার্কিন ডলার) কাজটি অন্যান্য বিচারব্যবস্থার তুলনায় সহজ হয়, তা হলে কেন তারা ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের দেশে বিনিয়োগ করবে, বিশেষ করে যে দেশে মাথাপিছু আয় ৩০০০ মার্কিন ডলার এবং যেখানে ব্যবসাগুলি বিপদসীমার সঙ্গে যুঝছে এবং কর্মকর্তাদের দুর্নীতি অব্যাহত রয়েছে। সঙ্গত কারণেই মনে হচ্ছে যে, নতুন বৈশ্বিক পুঁজি-সহ প্রজ্ঞা অর্থনীতির এক প্রধান অংশ উদ্যোক্তামূলক প্রতিভা ভারতের বদলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিমুখী হতে চলেছে। এই প্রেক্ষিতে আমেরিকান দক্ষতা মার্কিন ব্যবসার জন্য অনুঘটক হওয়া সত্ত্বেও ভারতের জন্য একটি ভূ-অর্থনৈতিক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে

২০২৫ সালের বাজেট কী করতে পারে?

সীতারামনের বাজেটের পদক্ষেপ আর্থিক ব্যবস্থাপনার মধ্যে সীমাবদ্ধ এবং সেগুলি হল কর এবং ব্যয়, ঋণ, রাজস্ব বরাদ্দ। কিন্তু যেহেতু তাঁর কল বাজেটও অর্থনৈতিক ঘোষণার তালিকার মাধ্যমে নথিভুক্ত করা হয়েছে, তাই এখানে এমন পাঁচটির উল্লেখ করা হল, যেগুলির উপর ২০২৫ সালে তাঁকে জোর দিতে হবে।

১. প্রবিধান প্রয়োগের ভাবনা

শুধু ভারতীয় উদ্যোক্তারা চাপে জর্জরিতই নন, একই সঙ্গে আগ্রাসী পরিবর্তনের ক্রমপ্রবাহের সঙ্গে তাঁদের যুঝতে হয়। গত ১২ মাসে ৯৪২০টি নীতি ও আইন পরিবর্তন হয়েছে। গত ত্রৈমাসিকে সংখ্যাটি ছিল ২৩১৭; গত মাসে ছিল ৮৩৯; এবং গত সপ্তাহে ছিল ২১৪। এ হেন পরিবর্তনের হার – যা কিনা প্রতিদিন প্রায় ৩৬ – দর্শায় যে, ভারতের অর্থনৈতিক আমলাতন্ত্র প্রতিটি পরিবর্তনের খসড়ার প্রভাব মূল্যায়ন করতে বা তা নিয়ে চিন্তা করতে অক্ষম এবং তাই নীতিগুলিকে বারবার পরিবর্তন করতে হ। অথবা এগুলি দুর্নীতির জন্য পদ্ধতিগত ভাবে নির্মিত শৃঙ্খল।

উভয়ের মধ্যেই হয়তো আসল সত্য নিহিত। এই দুঃসাহসিকতার অবসান ঘটানোর জন্য সীতারামনকে নিয়ন্ত্রক ও মন্ত্রকের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। ২০২৫ সালের ৩ জানুয়ারি ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া লেবেল সংক্রান্ত একটি আদেশনামা প্রকাশ করেছে যে, এ বার থেকে লেবেল প্রবিধানে পরিবর্তনগুলির ঘোষণা বছরে শুধু মাত্র একবারই করা হবে। সীতারামনের উচিত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকগুলি দ্বারা দ্রুত গতিতে কার্যক্ষম এক নিয়ন্ত্রক পুনর্বিন্যাসের জন্য চাপ সৃষ্টি করা।

২. শ্রম আইনের উপর মনোযোগ দেওয়া

ভারতের নিয়োগকর্তাদের আইনি পরিবর্তনের ১০টির মধ্যে প্রায় সাতটি কারাদণ্ডের ধারা (৬৮ শতাংশ) শ্রম আইনে নিহিত। এগুলি সংবিধানের যৌথ তালিকারও অন্তর্ভুক্ত। ২৯টি ঔপনিবেশিক শ্রম আইনকে প্রতিস্থাপন করার জন্য চারটি শ্রম কোড-সহ সর্বাত্মক আইনি তথা কার্যনির্বাহী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এগুলি যতক্ষণ না সূচিত হচ্ছে, ততক্ষণ এগুলিকে স্বাধীন ভারতে সবচেয়ে বড় শ্রম সংস্কার’ বলে গণ্য করা হবে না। সংবিধানের যৌথ তালিকার আর একটি বিষয় হল, তাদের বিজ্ঞপ্তির জন্য রাজ্য সরকারের সমর্থন প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত সীতারামনের বাজেটকে এমন ভাবে ব্যবহার করা, যাতে বক্তব্যে উল্লেখিত সুপারিশগুলিকে বিজেপি/এনডিএ-শাসিত রাজ্যগুলিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজে লাগানো যায়।

৩. দুর্নীতির প্রতি অসহনশীল মনোভাব

বারংবার নীতি পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া মোটেই সুবিধের ব্যাপার নয় এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফে করা পরিবর্তনের চেয়ে বিশেষ আলাদা নয়। কিন্তু ভারতে দুর্নীতির ফলে এগুলির জটিলতা বহু গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। একাধিক আইনি পরিবর্তনের ঘটনা সংশ্লিষ্ট পরিদর্শক ও আধিকারিকদের কোনও দায়বদ্ধতা ছাড়াই কারখানা বন্ধ করে দেওয়া অথবা কারাগারে নিক্ষেপ করার মতো হুমকিকে প্রাসঙ্গিকতা দেয়। নানাবিধ আখ্যান দর্শিয়েছে যে, সমস্ত নিয়ম মেনে চলা সত্ত্বেও নিয়ন্ত্রক শিলমোহর পাওয়ার জন্য নগদ অর্থের প্রয়োজন হয় ইন্ডিয়া বিজনেস করাপশন সার্ভে ২০২৪ অনুযায়ী, সমীক্ষার আওতাধীন দুই-তৃতীয়াংশ ব্যবসাকেই ঘুষ দিতে হয়েছিল শ্রম, ভবিষ্য তহবিল, সম্পত্তি নিবন্ধন, ওষুধ স্বাস্থ্যসেবা তত্ত্বাবধানকারী অতিরিক্ত বেতনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের এই ঘুষ দিতে হয়েছে। এর এক সুস্পষ্ট প্রভাব রয়েছে: একটি ইওয়াই-এফআইসিসিআই সমীক্ষা দর্শিয়েছে যে, পাঁচজনের মধ্যে চারজন উত্তরদাতা মনে করেন যে, দুর্নীতি এফডিআই প্রবাহকে নেতিবাচক ভাবে প্রভাবিত করবে। ২০২৫ সালের বাজেটে অবশ্যই ব্যবসা এবং নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে একটি নতুন চুক্তির কথা ঘোষণা করতে হবে

৪. এক জাতি, এক ব্যবসায়িক পরিচয়

ভারতের ডিজিটাল জন অবকাঠামো দেশটিকে একটি রূপান্তরমূলক পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে এবং ডিজিটাল বাস্তুতন্ত্রের জন্য ভিত্তিমূলক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করেছে। একেন্দ্রে রয়েছে আধার, যা একটি ১২ অঙ্কের অনন্য শনাক্তকরণ নম্বর। ২০২৫ সালের বাজেটে ব্যবসার জন্য একই ধরনের অবকাঠামো তৈরি করা উচিত। স্বাধীনতার পর থেকে ভারতের উদ্যোক্তারা বিভিন্ন কেন্দ্র রাজ্য সরকার দ্বারা জারি করা অন্তত ২৩টি স্বতন্ত্র পরিচয়ের সঙ্গে লড়াই করেছে। এর মধ্যে রয়েছে, এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন, এমপ্লয়িজ স্টেট ইনশিওরেন্স কর্পোরেশন, পার্মানেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বর, গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স নম্বর, কর্পোরেট আইডেন্টিফিকেশন নম্বর, ট্যাক্স ডিডাকশন অ্যাকাউন্ট নম্বর, লেয়াব্র আইডেন্টিফিকেশন নম্বর, প্রফেশনাল ট্যাক্স নম্বর, ফ্যাক্টরি লাইসেন্স নম্বর, এবং শপস অ্যান্ড এস্টাবিশমেন্ট রেজিস্ট্রেশন। প্রতিটি শনাক্তকারীর নিজস্ব জীবনচক্র থাকে এবং প্রায়শই অর্থপ্রদান পুনর্নবীকরণের মতো পর্যায়ক্রমিক কাজের প্রয়োজন হয়। এই জটিল খণ্ডিত ব্যবস্থা ভারতে ব্যবসা করার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এই ধরনের পরিচয়ের জন্য একটি ছোট বাজেটের বরাদ্দ বিভিন্ন সরকারি সংস্থাগুলিকে একটি একক সংখ্যার মাধ্যমে চালিত করতে সাহায্য করতে পারে।

৫. সহজে অনুমতি পাওয়ার প্রসঙ্গ

সর্বোপরি, কারখানার অনুমতি পেতে গেলে আবেদনপত্রকে বর্তমানে ৪০টিরও বেশি বিভিন্ন সরকারি বিভাগ জুড়ে অসংখ্য বার স্ব-প্রত্যয়িত হতে হয় এবং নোটারি বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হয়। এমন একটি পরিস্থিতির কথা বলা হচ্ছে, যেখানে উদ্যোক্তারা একটি নতুন কারখানা স্থাপনের জন্য ডিজিটাল ভাবে আবেদন জানাতে পারবেন এবং এমনটা করার জন্য তাঁরা তাঁদের ব্যবসা শনাক্তকারীদের উল্লেখ করে নথি যাচাইয়ের জন্য তাঁদের নিজস্ব এনটিটি ডিজিলকার ব্যবহারের অনুমতি দেবেন। একটি অবিকৃত, প্রমাণীকৃত এবং বিশ্বাসযোগ্য তথ্য ভাণ্ডার যে কোনও অনুমোদনের সময়কে কয়েক মাস থেকে মাত্র কয়েক দিনে কমিয়ে দিতে পারে। নাগরিকরা ইতিমধ্যেই ডিজিযাত্রা-র মতো সহজ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ডিজিলকার-এর সুবিধাগুলি উপভোগ করেছেন, যা সরকার-প্রদত্ত ডিজিটাল পরিচয় ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে নিরাপত্তা ছাড়পত্রের সুবিধা প্রদান করে। ২০২৫ সালের বাজেট এমন একটি উল্লেখযোগ্য নিদর্শন হতে পারে, যা এক দিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির আধিক্য অন্যদিকে লক্ষ লক্ষ ব্যবসার সঙ্গে সংযুক্ত অবকাঠামোর মধ্যে সেতুবন্ধন রবে

হুমকির আশঙ্কা

সময় আর আলস্যের বিলাসিতা আর সম্ভব নয়। গতকালের সুযোগ আজকের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে এবং আগামিকালের জন্য তা ক্ষতিকারক হতে পারে। ভারতের একটি নতুন গতিশীলতা দরকার যা বিশ্বব্যাপী ব্যবসাগুলিকে ভারতে আমন্ত্রণ জানাবে এবং একই সঙ্গে ভারতীয় ব্যবসাগুলি ভয় বা পক্ষপাত ছাড়াই স্বাধীন ভাবে নিজেদের প্রকাশ করতে, নিজেদেরকে মেলে ধরতে এবং চাকরি ও সম্পদ সৃষ্টি করতে সাহায্য করতে পারে। যদি ভারত এ সুযোগকে কাজে না লাগাতে পারে, তা হলে দেশটিকে অবশ্যই আসন্ন হুমকিকে অস্বীকার করা বন্ধ করতে হবে, তা নির্মূল করতে হবে এবং ভারতকে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে হবে। সীতারামনকে তাঁর অষ্টম বাজেটে কৌশলগত বিবেচনাকে ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করতে হবে এবং অন্যান্য মন্ত্রককে অবশ্যই এই উদ্যোগ এগিয়ে নিতে যেতে হবে।

 


এই প্রতিবেদনটি সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয় ফার্স্টপোস্ট-এ।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.