Published on Jun 03, 2025 Updated 1 Days ago

ভারতের এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায়ের দীর্ঘস্থায়ী আর্থ-সামাজিক প্রান্তিকীকরণ একটি নৈতিক সমস্যার অতিরিক্ত কিছু — এটি একটি অর্থনৈতিক বাধ্যবাধকতাও বটে।

উয়োকিজম পেরিয়ে: ভারতের গোলাপি অর্থনীতিকে ঔপনিবেশিকতা-মুক্ত করা

ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ইউএসএড-‌এর সাম্প্রতিক প্রত্যাহার বিশ্বব্যাপী সহায়তা সম্প্রদায়ের মধ্যে এক ধাক্কার ঢেউ তুলেছে, যার তীব্র প্রভাব বিশ্বব্যাপী সমকামী বা এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায়ের উপর পড়েছে। ভারতও এর ব্যতিক্রম ছিল না। এর একটি তাৎক্ষণিক পরিণতি ছিল দেশের প্রথম তিনটি ট্রান্সজেন্ডার ক্লিনিক  হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া। এর ফলে প্রায় ৫,০০০ ব্যক্তির কাউন্সেলিং, হরমোন থেরাপি এবং এইচআইভি চিকিৎসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হয়ে পড়ে।

যদিও এটি একটি ধাক্কা - এটি ভারতের জন্য এলজিবিটিকিউ+ অন্তর্ভুক্তির পদ্ধতিকে ঔপনিবেশিকতা মুক্ত করা এবং তার বৃদ্ধির গল্পে 'গোলাপী অর্থনীতি' বুননের একটি উল্লেখযোগ্য সুযোগ তৈরি করে। এই
গোলাপী অর্থনীতি বলতে সমকামী সম্প্রদায়ের ক্রয়ক্ষমতাকে বোঝায়, যার বিশ্বব্যাপী মূল্য প্রায় ৩.৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারতে গোলাপী অর্থনীতির ক্রয়ক্ষমতা ১৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বলে অনুমান করা হয়, যা মূলত অব্যবহৃত, কারণ সামাজিক কলঙ্ক তাদের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিতে বাধা সৃষ্টি করে। ফলস্বরূপ, এই সম্প্রদায় আন্তর্জাতিক তহবিলের উপর নির্ভরশীল থেকে গিয়েছে, এবং প্রায়শই ধারণা করা হয় যে পশ্চিমী আখ্যানগুলি এই সমকামী পরিচয় গঠনে ভূমিকা পালন করে।

ভারতে গোলাপী অর্থনীতির ক্রয় ক্ষমতা ১৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বলে অনুমান করা হয়, যা মূলত অব্যবহৃত, কারণ সামাজিক কলঙ্ক তাদের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিতে বাধা সৃষ্টি করে।



ভারতে সমকামিতাকে ঔপনিবেশিকতা-‌মুক্ত করা

‘উয়োকিজম’-এর কারণে একটি সাধারণ ভুল ধারণা হল যে সমকামী আখ্যানগুলি পশ্চিমীদের থেকে আমদানি করা হয়। তবে, দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে ভারতের বিশ্বের সমকামী সম্প্রদায়ের সবচেয়ে সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে , যেখানে বিভিন্ন যৌন ও লিঙ্গ পরিচয় কেবল স্বীকৃতই নয়, বরং তা উদযাপন করা হয়।
কামসূত্র এবং রামায়ণ ও মহাভারতের মতো হিন্দু মহাকাব্যগুলিতে স্পষ্টভাবে সমকামী সম্পর্ক এবং লিঙ্গগত তারল্যের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। মুঘল যুগে হিজড়া সম্প্রদায় রাজদরবারে ক্ষমতার পদে অধিষ্ঠিত ছিল। শুধুমাত্র ঔপনিবেশিক যুগেই সমকামিতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে ১৮৭১ সালে ৩৭৭ ধারা যুক্ত করা হয়, যার ফলে সমকামীদের অবস্থার অবনতি হয় এবং ভারতীয় সমাজে হোমোফোবিয়ার বীজ বপন করা হয়। দুর্ভাগ্যবশত, ভিক্টোরিয়ান নৈতিকতার এই উত্তরাধিকার ঔপনিবেশিক শাসনের বাইরেও টিকে ছিল, এবং জনসাধারণের ধারণাকে রূপ দিচ্ছিল। তবে, গত দশকে, ভারত ২০১১ সালের আদমশুমারিতে 'তৃতীয় লিঙ্গ' প্রবর্তন করে, ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট ৩৭৭ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে, এবং ২০১৯ সালে ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি (অধিকার সুরক্ষা) আইন পাসের মাধ্যমে অগ্রগতি অর্জনের চেষ্টা করেছে। যদিও এই অগ্রগতিগুলি সমকামী সম্প্রদায়কে স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা অগ্রগতি এনেছে, তবে এটি এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায়ের মর্যাদা বৃদ্ধিতে খুব বেশি সাহায্য করেনি।


এটা বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে আইনি স্বীকৃতি এই ধাঁধার একটি অংশমাত্র। কারণ, কাঠামোগত ব্যবস্থা না থাকলে, সমকামী সম্প্রদায় সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকে। ভারতে আনুমানিক সমকামী জনসংখ্যা বিশ্বব্যাপী সমকামী জনসংখ্যার প্রায় ১৮ শতাংশ। ভারতে সমকামী সম্প্রদায় আন্তর্জাতিক দাতাদের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল, এবং তবুও ২০২৫ সালের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে তারা এখনও বিশ্বব্যাপী এলজিবিটিকিউ+ তহবিলের
মাত্র ১ শতাংশ পায়।


আন্তর্জাতিক তহবিলের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা সমকামী সম্প্রদায় নিয়ে দেশের সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে উদ্ভূত। সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রক ২০২২ সালে প্রান্তিক ব্যক্তিদের জন্য জীবিকা ও উদ্যোগের সহায়তা (
স্মাইল) প্রকল্প চালু করে, যার মধ্যে দুটি উপ-পরিকল্পনা রয়েছে: ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিদের কল্যাণের জন্য ব্যাপক পুনর্বাসনের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্প এবং ভিক্ষাবৃত্তিতে নিযুক্ত ব্যক্তিদের ব্যাপক পুনর্বাসনের জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্প। ২০২৫-২৬ সালে মন্ত্রক শিক্ষা, দক্ষতা বৃদ্ধি, চিকিৎসা সুবিধা, পুনর্বাসন ইত্যাদির জন্য বাজেটে ১০৬৮.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছে। ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে যে, এর মধ্যে আনুমানিক ১৪০ মিলিয়ন রয়েছে সমকামী সম্প্রদায়ের জন্য। এটি অত্যন্ত অ্প্রতুল। তাছাড়া, এটি শুধু ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের মাধ্যমে সমকামী সম্প্রদায়কে দেখে তাদের সংখ্যা হ্রাস করে, এবং এর অর্থপূর্ণ প্রভাবের অভাব রয়েছে। অন্যদিকে, গোদরেজ ও ডেলয়েটের মতো ভারতীয় কর্পোরেটগুলি সমকামী সম্প্রদায়ের কর্মক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্তির জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। সম্প্রতি ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রাইড ফান্ড চালু করা হয়েছে। এই প্রচেষ্টাগুলি সৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হলেও এখনও খণ্ডিত এবং একটি সামগ্রিক পদ্ধতির অভাব রয়েছে।



২০২৪ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ৬ শতাংশেরও কম ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি আনুষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রে আছেন এবং কমপক্ষে ৫৬ শতাংশ এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায় ভাল চাকরিতে বৈষম্যের অভিযোগ করেছেন।



দীর্ঘমেয়াদি টেকসই পরিস্থিতির জন্য সরকারি হস্তক্ষেপ এবং কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন, যাতে জাতীয় পর্যায়ে সকলের জন্য একটি সত্যিকারের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি নিশ্চিত করা যায়। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ
গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে সামাজিক মনোভাব অর্থনৈতিক ফলাফলকে রূপ দেয় এবং কলঙ্ক ও বৈষম্য অর্থনীতির জন্য ব্যয়বহুল, এবং তা সরাসরি একটি দেশের জিডিপি-কে প্রভাবিত করে। ভারতের ক্ষেত্রে, বিশ্ব ব্যাঙ্কের একটি গবেষণায় অনুমান করা হয়েছে যে এলজিবিটিকিউ+ ব্যক্তিদের বাদ দেওয়ার কারণে ভারত তার জিডিপি থেকে ০.১ শতাংশ থেকে ১.৭ শতাংশ হারায়, যার ফলে বার্ষিক ১.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৩০.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। ভারতে সমকামী সম্প্রদায়ের অবস্থা একটি উদ্বেগজনক ধরন প্রকাশ করে, যেখানে সামাজিক কলঙ্ক শিক্ষার সুযোগকে সীমিত করে এবং উপযুক্ত কাজ নিশ্চিত করার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। ২০২৪ সালের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে ৬ শতাংশেরও কম ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি আনুষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রে আছেন এবং কমপক্ষে ৫৬ শতাংশ এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায় ভাল চাকরিতে বৈষম্যের অভিযোগ করেছেন। বিপরীতে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং এলজিবিটিকিউ+ অন্তর্ভুক্তি পারস্পরিকভাবে শক্তিশালী হচ্ছে।


একটি পি-অন্তর্ভুক্ত ভবিষ্যতের দিকে

অতএব, ভারতের এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায়ের দীর্ঘস্থায়ী আর্থ-সামাজিক প্রান্তিকীকরণ একটি নৈতিক সমস্যার চেয়ে বেশি কিছু, এটি পরিবর্তন করা একটি অর্থনৈতিক অপরিহার্যতাও। দেশের বৃদ্ধির গতিপথে গোলাপী অর্থনীতিকে  সম্পূর্ণরূপে একীভূত করার জন্য, ভারতকে দাতা-চালিত মডেল থেকে বিনিয়োগ-চালিত মডেলে স্থানান্তরিত হতে হবে।

ভারত সরকারকে শুধুমাত্র 'তৃতীয় লিঙ্গ' বা ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিদের দৃষ্টিকোণ থেকে এলজিবিটিকিউ+ ব্যক্তিদের দেখার বাইরে বেরোতে হবে, এবং অন্যান্য সমকামী পরিচয়ের জন্য এই স্থানটি প্রসারিত করতে হবে। এই সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি কীভাবে উচ্চতর অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে তা বোঝার জন্য তথ্য ও উন্নয়ন সংক্রান্ত আরও গবেষণা প্রয়োজন। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, আবাসন ও সামাজিক সুরক্ষা জালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে এই সম্প্রদায়ের জীবনের অভিজ্ঞতাগুলি বোঝার জন্য ডেটা বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক হবে। এর ভিত্তিতে ভারতের উন্নয়নের গল্পে তাদের পূর্ণ সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য একটি সামগ্রিক ও ক্রসকাটিং কাঠামো তৈরি করা যেতে পারে।

একটি বাস্তবায়নযোগ্য রোডম্যাপে অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি কল্পনা করা উচিত, যার মধ্যে বৃত্তি, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং চাকরি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উপর জোর দেওয়া হবে। ব্যবসায়িক ইনকিউবেটর এবং কম সুদের ঋণ এলজিবিটিকিউ+ উদ্যোক্তাদের আর্থিকভাবে শক্তিশালী করতে পারে। একইসঙ্গে, সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন ও স্বাস্থ্যসেবার সুযোগকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, যাতে অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ সামাজিক বর্জনের কারণে সীমাবদ্ধ না থাকে।

একটি বাস্তবায়নযোগ্য রোডম্যাপে অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি কল্পনা করা উচিত, যার মধ্যে বৃত্তি, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং চাকরি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উপর জোর দেওয়া হবে।


এই পদ্ধতির অর্থায়নের জন্য, একটি পিপিপি (সরকারি, বেসরকারি এবং জনহিতকর সংস্থা) মডেল প্রয়োজন। সরকার একটি নিবেদিত তহবিল গঠন করতে পারে, যার মধ্যে সরকারি, প্রভাব-‌বিনিয়োগকারী, সিএসআর তহবিল এবং বেসরকারি খেলোয়াড়দের অবদান থাকবে। একটি এলজিবিটিকিউ+ অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের উচিত এই প্রচেষ্টাগুলি তদারকি করা, এবং এই বিষয়টি নিশ্চিত করা যে তহবিল সঠিক স্থানে পৌঁছয় এবং পরিমাপযোগ্য অগ্রগতির দিকে চালিত করে।

ইউএসএআইডি তহবিল প্রত্যাহারের ফলে এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে আন্তর্জাতিক তহবিলের উপর নির্ভর না করে ভারতের একটি স্বনির্ভর কাঠামো থাকা উচিত। ভারতের ঐতিহ্যের উপর ভিত্তি করে সমকামী সম্প্রদায়ের আখ্যানটির পুনর্বিন্যাস করা উচিত, 'উয়োক প্যাকেজ' থেকে এক ধাপ পিছিয়ে। এই বিশেষ সম্প্রদায়টির অন্তর্ভুক্তির জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ এবং বাস্তবসম্মত পদ্ধতি অপরিহার্য, যা রাজনৈতিক দ্বিধা অতিক্রম করে সামাজিক ও অর্থনৈতিক একীকরণের বিষয় হিসাবে এটিকে তৈরি করে। একইসঙ্গে, পরিচয়ের অপব্যবহার এবং ক্রীড়া নীতির মতো বৈধ ধূসর ক্ষেত্রগুলি নিয়ে ন্যায্য বিতর্কের সমাধান করা উচিত। এলজিবিটিকিউ+ অধিকারকে নারীর অধিকারের বিরুদ্ধে দাঁড় করানো উচিত নয়, বরং লিঙ্গ সমতার জন্য একটি বৃহত্তর কাঠামোর অংশ হিসেবে দেখা উচিত। এটি হবে দড়ির উপর হাঁটা — অর্থনৈতিক যুক্তি ও ঐতিহাসিক বৈধতা, এই উভয় ক্ষেত্রেই সমকামী অন্তর্ভুক্তিকে নোঙর করা। তবে, ভারতের একটি বিশ্বব্যাপী নজির স্থাপনের জন্য এই সময়টি উপযুক্ত মুহূর্ত।



শ্যারন সারা থাওয়ানি ওআরএফ কলকাতা এবং সিএনইডি-র ডিরেক্টর নীলাঞ্জন ঘোষের একজিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Author

Sharon Sarah Thawaney

Sharon Sarah Thawaney

Sharon Sarah Thawaney is the Executive Assistant to the Director - ORF Kolkata and CNED, Dr. Nilanjan Ghosh. She holds a Master of Social Work ...

Read More +