-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা হোক বা ইরানের উপর ইজরায়েলের আক্রমণকে সমর্থন করা, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মতো বিশ্বব্যাপী বহুপাক্ষিক শাসন প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা হোক অথবা গভীর সমুদ্রে খননের জন্য আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘন… ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে পুনঃনির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিশ্বব্যাপী অনেক কিছু বদলে গিয়েছে। এই সমস্ত পরিবর্তন বিশ্বব্যাপী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে ধারণার উপর সরাসরি প্রভাব ফেললেও মূলত দ্বন্দ্বের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক মিত্র ও অংশীদারদের মধ্যে এর প্রভাব লক্ষ্যণীয়। সর্বোপরি, ট্রাম্প মার্কিন জোট ও অংশীদারিত্বকে পুনর্নির্ধারণ এবং তাঁর বাণিজ্য ও নিরাপত্তা স্বার্থকে বিশেষাধিকার দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্য দেশের জন্য আগেকার মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। এই পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে, পরিবর্তনশীল ধারণার প্রভাব এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এর অর্থ কী… তা খতিয়ে দেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ট্রাম্পের ঘটনার প্রতি মিত্রদের প্রতিক্রিয়া
জনগণের মেজাজের আরও ভাল মূল্যায়ন করেছে এমন সমীক্ষা বা মতামত সংক্রান্ত সমীক্ষার দিকে আলোকপাত করা জরুরি, যার মধ্যে বৈদেশিক নীতির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা সমীক্ষাগুলিও অন্তর্ভুক্ত। এই ধারণাগুলি সঠিক না হলেও এগুলি বাস্তবতার একটি চিত্রকেই তুলে ধরে। উদাহরণস্বরূপ, বিশ্বের অন্যান্য অংশে একজনের জনসাধারণের কূটনীতি বা পদক্ষেপ কতটা সফল, তা অনুধাবন করা যায়। এটি কূটনীতিক ও বৈদেশিক নীতি প্রতিষ্ঠানগুলিকে মনোনিবেশ করার এবং এমনকি সঠিক পথ বেছে নেওয়ার সুযোগ করে দেয়। একই সঙ্গে এই পরিবর্তনশীল ধারণাটি তার মিত্র ও অংশীদারদের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতির প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির একটি অনুসন্ধানমূলক সাধনী হিসাবে কাজ করে, এর নির্ভরযোগ্যতা এবং আকর্ষণীয়তা প্রদর্শন করে।
হোয়াইট হাউসে প্রবেশের পর থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে মিত্র, অংশীদার ও প্রতিপক্ষ উভয়ের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন।
এই বছরের ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে প্রবেশের পর থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে মিত্র, অংশীদার ও প্রতিপক্ষ উভয়ের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন। তাঁর প্রশাসন ২ এপ্রিল সকল দেশের বিরুদ্ধে শুল্ক হার প্রকাশ করে, তার পরে চিনের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত শুল্ক হার বৃদ্ধি করে। ট্রাম্প ২.০-এর সময় অনেক মিত্র ও বন্ধুবান্ধব মসৃণ যাত্রা আশা করলেও তাদের অভিজ্ঞতা প্রত্যাশার চাইতে অনেক বেশি অস্থিতিশীল থেকেছে।
দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও ভারত-সহ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান মিত্র ও অংশীদারদের মধ্যে সাম্প্রতিক শুল্ক পদক্ষেপ সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব যথেষ্ট। চিত্র ১-এ দেখানো হয়েছে যে, জাপান, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ায় ট্রাম্পের প্রতি অনুকূল মনোভাব যথাক্রমে ৩৮, ৫২ এবং ৩৩ শতাংশ। বৈশ্বিক বিষয়ে সঠিক কাজ করার জন্য মার্কিন ও চিনা নেতাদের প্রতি আস্থার কথা বলতে গেলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও প্রেসিডেন্ট শি-র মধ্যে মাত্র এক শতাংশের পার্থক্য ছিল।
চিত্র ১: মার্কিন মিত্র, অংশীদার ও বন্ধুদের মধ্যে ট্রাম্প বনাম শি-র প্রতি অনুকূল মনোভাব

সূত্র: পিউ সমীক্ষা
শি-র চেয়ে ট্রাম্পের প্রতি বেশি আস্থাশীল দেশগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পছন্দের অর্থনৈতিক অংশীদার হিসেবে মনে করে। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারত (৭৮, ৮১ এবং ৬০ শতাংশ) অর্থনৈতিক অংশীদার হিসেবে চিনের চেয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বেশি পছন্দ করে। এর বিপরীতে অস্ট্রেলিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার সত্যিটা অন্য রকম, যেখানে ৬৯ এবং ৫৩ শতাংশ মানুষ চিনকে পছন্দের অর্থনৈতিক অংশীদার হিসেবে দেখে।
ওশিয়ানিয়া অঞ্চলে (অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড) ট্রাম্পের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের কারণে আমরা ধারণার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখতে পেয়েছি। অস্ট্রেলিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আস্থা মারাত্মক ভাবে ২০ পয়েন্ট কমেছে এবং নিউজিল্যান্ডে এটি ৩৮ থেকে ৩৩ শতাংশে ৫ পয়েন্ট কমেছে (চিত্র ২)। একই ভাবে, আসিয়ানের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের মধ্যে একটি স্পষ্ট পার্থক্য দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। আসিয়ানের কিছু সদস্য চিনকেই (৫৬.৪ শতাংশ) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে পছন্দের অর্থনৈতিক অংশীদার হিসেবে মনে করে (১৫.৪ শতাংশ)। তবে চিনের ক্রমবর্ধমান সামরিক প্রভাবের সঙ্গে সঙ্গে বেশিরভাগ দেশ এই অঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত ও রাজনৈতিক দেশ হিসেবে মার্কিন ভূমিকাকে স্বাগত জানায়।
চিত্র ২: বিশ্বব্যাপী দায়িত্বশীল ভাবে কাজ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কতটা বিশ্বাসযোগ্য (নেতিবাচক ধারণা%)?

সূত্র: লোই ইনস্টিটিউট পোল অ্যান্ড পারসেপশনস অফ এশিয়া সার্ভে
ইন্দো-প্যাসিফিক সমীক্ষা ছাড়াও অন্যান্য অঞ্চলকে অন্তর্ভুক্ত করে পিউ রিসার্চ সমীক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছে যে, এই অনুভূতিগুলি ব্যাপক ভাবে ভিন্ন। উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনুকূল মতামত ৩৫ শতাংশে নেমে এসেছে, যেখানে চিনের ক্ষেত্রে এটি ৩২ শতাংশে নেমে এসেছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, অনুকূলতার ব্যবধান হ্রাস পাচ্ছে, যার ফলে সঠিক কাজ করার জন্য জনগণের পক্ষে বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
বিভিন্ন ধারণা ক্রমবর্ধমান জটিলতাকেই দর্শায়
মার্কিন-চিন প্রতিযোগিতার প্রতি তাদের প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষিতে দেশের নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গির প্রেক্ষাপট নির্ধারণ করলে মিত্র ও অংশীদারদের দৃষ্টিভঙ্গি বুঝতে সাহায্য করে যে, তারা এই অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক ও ভূ-অর্থনৈতিক বাস্তবতাকে কোন আলোকে দেখে। সর্বোপরি, চিনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান নির্ভরতার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পার্থক্য হুমকির ধারণাকেই স্পষ্ট করে। এই হুমকির ধারণার উপর ভিত্তি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ও অংশীদারদের শ্রেণিবিভাগকে বিস্তৃত ভাবে দু’টি ক্ষেত্রে ভাগ করা যেতে পারে:
ইন্দো-প্যাসিফিক সমীক্ষা ছাড়াও অন্যান্য অঞ্চলকে অন্তর্ভুক্ত করে পিউ রিসার্চ সমীক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছে যে, এই অনুভূতিগুলি ব্যাপক ভাবে ভিন্ন। উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনুকূল মতামত ৩৫ শতাংশে নেমে এসেছে, যেখানে চিনের ক্ষেত্রে এটি ৩২ শতাংশে নেমে এসেছে।
• বিভাগ ১: যে সব দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে কৌশলগত মিত্র (অর্থনীতি ও নিরাপত্তার জন্য) বলে মনে করে এবং চিনকে কৌশলগত হুমকি হিসেবে দেখে।
• বিভাগ ২: যে সব দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের নিরাপত্তার জন্য এবং চিনকে বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত মিত্র হিসেবে মনে করে।
সারণি ১: মার্কিন-চিন প্রতিযোগিতার প্রতি মার্কিন মিত্র এবং অংশীদারদের ধারণা
|
দেশ |
বিভাগ |
চিন |
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
|
ভারত |
বিভাগ ২ |
দ্বিতীয় সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হুমকি (৩৩ শতাংশ): এটিকে একটি কৌশলগত হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে, কিন্তু সহযোগিতা করতে চায়। |
গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার (৩৫ শতাংশ): কৌশলগত অংশীদারিত্ব। |
|
দক্ষিণ কোরিয়া |
বিভাগ ১ |
দ্বিতীয় সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হুমকি (৩৩ শতাংশ): এটিকে কৌশলগত হুমকি হিসেবে দেখে না, কিন্তু চিনের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে চায়। |
সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ মিত্র (৮৯ শতাংশ): কৌশলগত স্থিতিশীলতার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে চায়। |
|
জাপান |
বিভাগ ২ |
শীর্ষ হুমকি (৫৩ শতাংশ): চিনকে সবচেয়ে বড় কৌশলগত হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে, কিন্তু এর সঙ্গে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা চালিয়ে যেতে চায়। |
সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ মিত্র (৭৮ শতাংশ): ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত মিত্র হিসেবে বিবেচনা করে। |
|
অস্ট্রেলিয়া |
বিভাগ ২ |
শীর্ষ হুমকি (৫২ শতাংশ): চিনকে অর্থনৈতিক অংশীদার হিসেবেও দেখে, তবে একে একটি উদীয়মান হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য কাজ করতে চায়। |
গুরুত্বপূর্ণ মিত্র (৩৫ শতাংশ): ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা অংশীদার হিসেবে দেখে। |
|
ফিলিপিন্স (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া) |
বিভাগ ২ |
শীর্ষ হুমকি (৩০ শতাংশ চিনের প্রতি অনুকূল মনোভাব): চিনকে দেশের জন্য সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। |
গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অংশীদার (৮৮ শতাংশ অনুকূল): মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি অপরিহার্য অংশীদার হিসেবে দেখা হয়। |
সূত্র: পিউ রিসার্চ সেন্টার এবং ন্যাশনাল সার্ভে অফ দ্য রিপাবলিক অফ ফিলিপিন্স, এপ্রিল-মে ২০২৫
জোটের প্রকৃতি নির্বিশেষে বিভাগ ১-এর দেশগুলি নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত জোটকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কিছুটা কৌশলগত নমনীয়তাও প্রদর্শন করছে। উদাহরণস্বরূপ, ৫৩.২ শতাংশ দক্ষিণ কোরিয়ান এখনও মনে করেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চিনের চেয়ে শক্তিশালী থাকবে এবং ৮৫.৮ শতাংশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-চিন প্রতিযোগিতায় (নিরাপত্তা এবং অর্থনীতির জন্য) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সমর্থন করে। একই ভাবে, জাপানে ৪৭ শতাংশ মানুষ চিনের চাইতেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বেশি সমর্থন করে, যেখানে ৪২ শতাংশ ভারসাম্য বজায় রাখার পক্ষে সওয়াল করেছেন। ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মতো বিভাগ ২-এর অধীনে থাকা দেশগুলির জন্য পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। কারণ তাদের অর্থনৈতিক নির্ভরতা, বৈদেশিক নীতির অবস্থান, হুমকির ধারণা ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত সমস্যাগুলির মতো বেশ কয়েকটি কারণ মার্কিন-চিন প্রতিযোগিতা সম্পর্কে তাদের ধারণার উপর প্রভাব ফেলেছে। ফিলিপিন্সের মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় মিত্রের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আস্থা সবচেয়ে বেশি (৬৬.৫ শতাংশ), যেখানে ৫২ শতাংশ পশ্চিমপন্থী বিদেশনীতিকেই সমর্থন করে। চিনের প্রতি অবিশ্বাস (৬৯.৪ শতাংশ) এখনও সর্বোচ্চ। এই সমস্ত পরিসংখ্যান দু’টি প্রবণতাকেই তুলে ধরে: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ নির্বিশেষে কিছু মিত্র তাদের উপর আস্থা রেখে চলেছে এবং অন্য দেশগুলি অর্থনৈতিক নির্ভরতার কারণে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে।
মিত্র ও অংশীদারদের অবস্থান পরিবর্তন
বিদেশি সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের সময় কারও বহিরাগত নীতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা এবং সমালোচনা আশা করা কূটনৈতিক মহৎ আচরণের অংশ হিসাবে বিবেচিত হয় না, বিশেষ করে যখন আলোচনা তীব্রতর হয়েছে। অতএব, এই প্রেক্ষাপটে বৈদেশিক নীতি সমীক্ষাগুলি এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যবধান পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ম্যান্ডারিনদের কাছে প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া প্রদান করে। বহুমেরুত্বের যুগে যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলের সমমনস্ক দেশগুলির সঙ্গে তার শক্তিশালী জোট ও অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখতে চায়, তবে তার মিত্র ও অংশীদারদের মধ্যে পরিবর্তিত ধারণার দিকে মনোযোগ দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
ট্রাম্পের অনিয়মিত আচরণ মার্কিন বন্ধুদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ও পুনর্বিবেচনার পরিসর তৈরি করেছে, যা সরাসরি মার্কিন আকর্ষণ (নরম শক্তি) এবং নির্ভরযোগ্যতার উপর প্রভাব ফেলেছে।
এ কথা স্পষ্ট যে, অর্থনৈতিক অসুবিধা সত্ত্বেও একটি চুক্তিতে পৌঁছনোর জন্য আলোচনায় অংশ নেওয়ার মাধ্যমে মার্কিন মিত্র ও অংশীদাররা ট্রাম্পের স্বেচ্ছাচারী নীতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে, যা বিশেষ করে মার্কিন নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিরোধ তৈরি করেছে। একই ভাবে চিনের হুমকিমূলক আচরণও শি-র প্রতি ক্রমবর্ধমান প্রতিকূলতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা সত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত জোট বা অংশীদারিত্বের প্রতি সমর্থন এখনও বেশি রয়েছে বা তা বাড়ছে। এর নেপথ্যে দু’টি কারণ রয়েছে: চিনের কর্মকাণ্ডের কারণে তার প্রতি হুমকির ধারণা বৃদ্ধি এবং অব্যাহত শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা, যা ট্রাম্প প্রসঙ্গ থেকে সম্পর্ককে কিছুটা রক্ষা করেছে। যাই হোক, পরিবর্তিত ধারণাগুলি একটি উদীয়মান বাস্তবতা প্রকাশ করে: ট্রাম্পের অনিয়মিত আচরণ মার্কিন বন্ধুদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ও পুনর্বিবেচনার পরিসর তৈরি করেছে, যা সরাসরি মার্কিন আকর্ষণ (নরম শক্তি) এবং নির্ভরযোগ্যতার উপর প্রভাব ফেলেছে। এটি চিনের জন্য ব্যবধান পূরণের জন্য জায়গা উন্মুক্ত করছে, বিশেষ করে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে, যা সংঘাতের ক্ষেত্রে মার্কিন জোটকে আরও দুর্বল করে তোলে। অতএব, পরিবর্তিত ধারণা জোটের শক্তিকে প্রভাবিত না-ও করতে পারে। তবে এটি তার বন্ধু দেশগুলির অর্থনৈতিক বিষয়গুলিতে চিনের সঙ্গে সহযোগিতা করতে বাধ্য করে এবং তাদের নির্ভরতা আরও গভীর করে তোলে। এটিই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠবে।
অভিষেক শর্মা অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের জুনিয়র ফেলো।
নিবন্ধে প্রকাশিত মতামত লেখক(দের) ব্যক্তিগত।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Abhishek Sharma is a Junior Fellow with the ORF’s Strategic Studies Programme. His research focuses on the Indo-Pacific regional security and geopolitical developments with a ...
Read More +