Published on Jan 06, 2023 Updated 1 Hours ago

ধর্ষিতাদের যথাযথ চিকিৎসা পরিষেবা নিশ্চিত করার জন্য ধর্ষণের এখনকার বিচার ও আইনি ব্যবস্থার সংস্কার করা প্রয়োজন

কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে: আদিম পদ্ধতিতে ধর্ষিতাদের ডাক্তারি পরীক্ষা

ধর্ষিতাদের মেডিক্যাল পরীক্ষা ভারতে ধর্ষণের মামলার বিচারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক। কিন্তু যে ধরনের পরীক্ষা করা হয় তা শুধু অমানবিক অবৈজ্ঞানিক বলেই প্রমাণিত হয়নি, বরং ধর্ষণের শিকারদের প্রতি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়াও তুলে ধরেছে। এই প্রবন্ধে টু ফিঙ্গার টেস্টের মতো অবমাননাকর ব্যবস্থা কেন এখনও প্রচলিত রয়েছে, এবং কেন ধর্ষণের শিকারদের জন্য এই ধরনের মেডিক্যাল পরীক্ষা সমস্যাযুক্ত তা বর্ণনা করার চেষ্টা করা হয়েছে

ধর্ষণের মামলায় ডাক্তারি সাক্ষ্য অপরাধ সংঘটনের সুস্পষ্ট প্রমাণ হিসেবে কাজ করে, এবং তা অভিযুক্তের অপরাধ নির্ণয় করতে সাহায্য করে। এই কারণে স্বাস্থ্য পেশাদারদের প্রতিক্রিয়া ও চিকিসা এই ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ২০১৭–র একটি রিপোর্ট—‘‌সবাই আমাকে দোষারোপ করে: ভারতে যৌন নিপীড়নের  শিকারদের জন্য ন্যায়বিচার ও সহায়তা পরিষেবার প্রতিবন্ধকতা ’‌—এমন বিভিন্ন দৃষ্টান্ত তুলে ধরে যেখানে মেয়েদের বা মহিলাদের ডাক্তারি পরীক্ষার সময় তাঁদের  যৌন ইতিহাসের ভিত্তিতে প্রশ্ন করা হয়েছিল। এতে এমন বিভিন্ন কাহিনিও রয়েছে যা ভুক্তভোগীরা কী ধরনের ভয়ঙ্কর মানসিক যন্ত্রণার (‌ট্রমা)‌ মধ্যে দিয়ে যান এবং স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারেরা কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানান তা প্রতিফলিত করে। এ থেকে দেখা যায় যে সম্মতির ধারণাটি অস্পষ্ট, এবং সদ্য–ভুক্তভোগীদের কোনও  মনস্তাত্ত্বিক পরামর্শ প্রদান করা হয় না।

রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি আন্তঃসংস্থা বিবৃতি শুধু কুমারীত্ব পরীক্ষার দীর্ঘস্থায়ী অনুশীলন এখনও চলার ঘটনাটিকেই নিশ্চিত করে না, সেই সঙ্গেই ক্ষতিগ্রস্তদের উপর এর বিভিন্ন শারীরিক মানসিক পরিণতিও প্রতিফলিত করে।

সমস্যাযুক্ত ডাক্তারি পদ্ধতি

যদিও ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট ‘‌টু ফিঙ্গার’‌ পরীক্ষা নিষিদ্ধ করেছিল, এটি এখনও প্রচলিত রয়েছে। রাজস্থানে ১১৪টিরও বেশি ধর্ষণের ক্ষেত্রে টু ফিঙ্গার পরীক্ষা করা  হয়েছিল, এবং উত্তরপ্রদেশের লখনউতে ধর্ষণের বিচারের সাক্ষ্যগুলিও নিশ্চিত করে যে পরীক্ষাটি এখনও চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি মাদ্রাজ হাইকোর্ট রাজীব গান্ধী বনাম সরকার  মামলায় ২১ এপ্রিল, ২০২২–এ কেন পরীক্ষাটি এখনও ব্যবহার করা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, এবং তামিলনাড়ু সরকারকে টু ফিঙ্গার পরীক্ষা বাতিল করার নির্দেশ দিয়ে জানায়, কেন এই যন্ত্রণা নিগ্রহের শিকারদের জন্য অপমানজনক ও আক্রমণাত্মক। আশ্চর্যজনকভাবে, একজন আইএএফ অফিসার যিনি তাঁর প্রশিক্ষণের সময় ধর্ষিত হয়েছিলেন, তিনিও অভিযোগ করেছেন যে তাঁকে টু ফিঙ্গার টেস্ট করাতে বাধ্য করা হয়েছিল। যেটা আরও সমস্যাজনক তা হল পরীক্ষাটি অভিযুক্তের অপরাধ নির্ণয় করার জন্য একটি পথনির্দেশক বিষয় হয়ে ওঠে। জন সাহস–এর ২০০টি ধর্ষণের বিচারের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে কুমারীত্ব পরীক্ষাই নির্ণায়ক হয়ে দাঁড়ায়। রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি আন্তঃসংস্থা বিবৃতি শুধু কুমারীত্ব পরীক্ষার দীর্ঘস্থায়ী অনুশীলন এখনও চলার ঘটনাটিকেই নিশ্চিত করে না, সেই সঙ্গেই ক্ষতিগ্রস্তদের উপর এর বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক পরিণতিও প্রতিফলিত করে।

‘‌দক্ষিণ এশিয়ায় যৌন হিংসা’‌ নামক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও নেপালের মতো দেশে এখনও কুমারীত্ব পরীক্ষা চলছে। ‘‌সম্মান ও অপবিত্র চরিত্র’‌ বিষয়ক ধারণাটি মহিলাদের অতীত যৌন ইতিহাসের সঙ্গে সংযুক্ত। প্রায় এই সবকটি দেশেই ধর্ষণের শিকারের যৌন ইতিহাস বৈচারিক যুক্তিতে নিগৃহীতদের চরিত্র ‘‌অনৈতিক’ কি না তা নির্ধারণের জন্য ব্যবহার করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ধর্ষণের অভিযোগে অত্যন্ত কম দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হারের বড় কারণ হল কুমারীত্ব পরীক্ষা। বাংলাদেশে এই হার মাত্র ৩ শতাংশ 

বিদ্যমান নির্দেশিকাগুলির অনুপযুক্ত বাস্তবায়ন

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক ২০১৪ সালে যৌন হিংসার পর বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের জন্য মেডিকো–আইনি যত্নের নির্দিষ্ট নির্দেশিকা জারি করে। তার অব্যবহিত আগে ইউএন উইমেন অ্যান্ড ইউএন পপুলেশন ফান্ড ‘‌ঘনিষ্ঠ সঙ্গী হিংসা বা যৌন হিংসার শিকার মহিলাদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা’‌ শিরোনামের একটি নিয়মপুস্তক জারি করেছিল। সেখানেও অবৈজ্ঞানিক ও বর্বর বলে উল্লেখ করে টু ফিঙ্গার টেস্ট বাতিল করার কথা বলা হয়েছিল। এই নির্দেশিকাগুলি পরীক্ষামূলক মেডিক্যাল ডেটা ও পদ্ধতিগুলি সামনে এনেছে, যা ধর্ষণ সংক্রান্ত ব্যাপক বিশ্বাস এবং প্রচলিত মেডিকো–আইনি পদ্ধতি দ্বারা সমর্থিত অপমানজনক অনুশীলনগুলি দূর করতে সাহায্য করে।

রাষ্ট্রপুঞ্জহু ইন্টারএজেন্সি বিবৃতিতে মেডিক্যাল পরীক্ষার সময় কীভাবে নিগৃহীতদের পুনরায় নিগ্রহ করা হয় এবং পরীক্ষা কীভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের গোপনীয়তা শারীরিক বিশুদ্ধতায় হস্তক্ষেপ করে তা তুলে ধরেছে।

এতে চিকিসা পেশাজীবীদের নিগৃহীতের দেওয়া সাক্ষ্য অনুযায়ী তাদের পরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশিকাগুলি ডাক্তারদের ধর্ষণ ঘটেছে কিনা তা নির্ধারণের পরিবর্তে ধর্ষণের পরেকার পরিবর্তনগুলি পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করে, এবং প্রমাণাভাবের কারণে তৈরি হওয়া শূন্যতা হ্রাস করে।

যাই হোক, বেশিরভাগ রাজ্য এই নির্দেশিকাগুলি অনুসরণ করে না এবং চিকিসা পরীক্ষা পরিচালনার জন্য কথ্য পদ্ধতি ব্যবহার করে। যেমন, রাজস্থান এখনও কুমারীত্ব পরীক্ষা করে। শুধু নয়টি রাজ্য এই নির্দেশিকাগুলি অনুসরণ করে। এমনকি মুম্বইয়ের মতো শহরেও বেশিরভাগ ডাক্তার এই নির্দেশিকাগুলি সম্পর্কে অবহিত নন৷

ধর্ষণের মিথ স্টেরিওটাইপ: একটি সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ

কুমারীত্ব পরীক্ষার অবৈজ্ঞানিক প্রকৃতির বিষয়ে যেহেতু কোনও সন্দেহ নেই, তাই টু ফিঙ্গার পরীক্ষার পরিণতি এবং তার ফলে কীভাবে সমাজতাত্ত্বিক অবিশ্বাসের স্থায়ীকরণ ঘটে থাকে তার উপর আলোকপাত করা উচিত কাজ হবে। এটি যৌন–সক্রিয় মেয়ে বা মহিলাদের স্টিরিওটাইপটির সাধারণীকরণ করে, এবং কীভাবে একজন নিগৃহীতের আচরণ করা উচিত, অথবা কেন যৌনতায় অভ্যস্ত মেয়েরা ‘খারাপ’‌ এবং ‘‌দুশ্চরিত্র’,‌ সে সম্পর্কে অবাস্তব ধারণা তৈরি করে। একটি বিশেষ  ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট নিগৃহীতকে দোষারোপ করেছিল এই বলে যে তিনি যৌন সংসর্গে ‘‌অভ্যস্ত’‌ এবং ‘‌অনৈতিক’‌ মহিলা ছিলেন। রাষ্ট্রপুঞ্জ–হু ইন্টারএজেন্সি বিবৃতিতে মেডিক্যাল পরীক্ষার সময় কীভাবে নিগৃহীতদের পুনরায় নিগ্রহ করা হয় এবং পরীক্ষা কীভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের গোপনীয়তা ও শারীরিক বিশুদ্ধতায় হস্তক্ষেপ করে তা তুলে ধরেছে। পরীক্ষাটি নিগৃহীতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকার সেকেলে ধারণারও স্থায়ীকরণ করে, এবং নিগৃহীতের সম্মতির বিষয়টিকে অস্পষ্ট করে।

দেখা গেছে, যে মহিলারা এই পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যান তাঁদের এর ফলস্বরূপ বিভিন্ন ধরনের মানসিক অবস্থা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এই পরীক্ষার পরিচিত নেতিবাচক প্রভাবগুলির মধ্যে রয়েছে আত্মসম্মান হারানো, হতাশা, অপরাধবোধ, আতঙ্ক, উদ্বেগ, তীব্র উদ্বেগ, ঘৃণার অনুভূতি এবং অসফল যৌন জীবন। এই ধরনের মানসিক ক্ষতির কথা বিভিন্ন গবেষণায় সমর্থিত হয়েছে। ১৯৯৮ সালে তুরস্কে  সম্পাদিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, ৯৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী সহমত যে টু ফিঙ্গার টেস্ট মনস্তাত্ত্বিক গভীর আঘাত বা ট্রমা তৈরি করে, এবং ৬০ শতাংশ বলেছেন যে এটি আত্মসম্মান নষ্ট করে।

সেকেলে চিকিসা পাঠ্যপুস্তক

যেভাবে চিকিসার বইতে নারীবিরোধী বক্তব্য দেওয়া হয়, এবং যেভাবে এই পাঠ্যপুস্তকগুলি ‘‌ধর্ষণের মেডিকো–আইনগত দিকগুলির সাম্প্রতিক প্রবণতাগুলিকে বিবেচনায় নিতে’‌ বিশ্রীভাবে ব্যর্থ হয়েছে, তার কড়া সমালোচনা করেছেন সমাজকর্মী ও আইনজীবী ফ্ল্যাভিয়া অ্যাগনেস ৷ তিনি ‘‌টু ফিঙ্গার’‌ টেস্ট শব্দবন্ধ বাদ দিয়ে আরও বৈজ্ঞানিক শব্দ ব্যবহার করা এবং পরীক্ষার সঙ্গে সংযুক্ত নৈতিক অনুমানগুলিকে বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। ডাক্তারদের যে সেকেলে হয়ে–যাওয়া এবং অসামাজিক চিকিসা শিক্ষা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, তার উপর কিছু আলোকপাত করাও গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, চিকিসা আইনশাস্ত্রের উপর পারিখের পাঠ্যপুস্তক প্রভুদাস মোদীর বইয়ে জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে মহিলারা প্রায়শই ধর্ষণের মিথ্যা দাবি করেন, এবং এইভাবে নিগৃহীতদের প্রতি একটি নেতিবাচক ধারণাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

সর্বোচ্চ আদালত এই বিষয়টি তুলে ধরেছে যে বৈবাহিক ধর্ষণের অভিজ্ঞতাগুলি প্রায়ই নিগৃহীতের অতীত যৌন ইতিহাসের কারণে চাপা দেওয়া হয়, এবং বিয়ের প্রেক্ষাপটে সম্মতির ধারণাটি অস্পষ্ট হয়ে যাওয়ায় তা ধারাবাহিক যৌন হিংসার দিকে চালিত করে।

এরকম আরেকটি উদাহরণ ‘‌আ টেক্সটবুক অফ মেডিক্যাল জুরিসপ্রুডেন্স অ্যান্ড টক্সিকোলজি’‌ নামে একটি বই, যার ২০১১ সংস্করণে পর্যন্ত টু ফিঙ্গার টেস্ট ও তার  বৈজ্ঞানিক প্রমাণকে ন্যায়সঙ্গত বলে তুলে ধরে দাবি করা হয়েছে যে একটি অক্ষত সতীচ্ছদ (হাইমেন) নিগৃহীতের চরিত্রকে প্রতিফলিত করে। এই পাঠ্যপুস্তকগুলি শুধু যৌন সম্মতির বিষয়টিকে অস্পষ্ট করারই চেষ্টা করে না, সেই সঙ্গে এই ধারণাগুলিকে স্থায়ী করার চেষ্টা করে যে কিছু মহিলা সম্মতিক্রমে যৌন সম্পর্ক করে তারপরে ধর্ষণের মিথ্যা দাবি করেন, এবং নিগৃহীতের শরীরে কোনও আঘাতের অনুপস্থিতি সম্মতির পরিচায়ক।

সুপারিশ

আদালতের রায়ের মাধ্যমে এই ধরনের মেডিক্যাল স্টেরিওটাইপ ও মিথগুলিকে উচ্ছেদ করা আইনি ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২–এ, সুপ্রিম কোর্ট একটি ঐতিহাসিক রায়ে বৈবাহিক ধর্ষণের ধারণাটিকে স্বীকৃতি দিয়েছে, এবং ‘‌ধর্ষণ’‌–এর মধ্যে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে অসম্মতিমূলক যৌন মিলনকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সর্বোচ্চ আদালত এই বিষয়টি তুলে ধরেছে যে বৈবাহিক ধর্ষণের অভিজ্ঞতাগুলি প্রায়ই নিগৃহীতের অতীত যৌন ইতিহাসের কারণে চাপা দেওয়া হয়, এবং বিয়ের প্রেক্ষাপটে সম্মতির ধারণাটি অস্পষ্ট হয়ে যাওয়ায় তা ধারাবাহিক যৌন হিংসার দিকে চালিত করে। রায়ে এ কথাও প্রতিফলিত হয়েছে যে কীভাবে দীর্ঘকাল ধরে পারিবারিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যৌন লিঙ্গভিত্তিক হিংসার দিকটি এবং ‘‌নারীদের জীবনযাপনের অভিজ্ঞতা’‌ উপেক্ষা করা হয়েছে।

ডাক্তারি প্রমাণ সংগ্রহের ক্ষেত্রে ২০১৪–র নির্দেশিকা অনুসারে ধর্ষণের শিকারদের কাউন্সেলিংকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। এটাও গুরুত্বপূর্ণ যে ধর্ষণের শিকারকে পরীক্ষার সময় বা পরে গর্ভধারণ, যৌন সংক্রামিত রোগ, গর্ভনিরোধক, ও এইচআইভি–র ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করা উচিত। স্থানীয় জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় চিকিসা প্রশাসনের দিকেও মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। সরকারের নিশ্চিত করা উচিত যে হাসপাতালে পর্যাপ্ত সংখ্যক যৌন নিপীড়ন ফরেনসিক প্রমাণ (এসএএফই) কিট থাকবে, যার অভাবে  প্রমাণ সংগ্রহের প্রচলিত পদ্ধতির ব্যবহার বেড়ে যায়।

কাজ করার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হল ধর্ষণের শিকারদের নিরাপদ গর্ভপাতের ব্যবস্থা করা। মেডিক্যাল টার্মিনেশন প্রেগন্যান্সি (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট ২০২১এর মাধ্যমে ঊর্ধ্বসীমা সংশোধন করে ইতিমধ্যেই বাড়ানো হলেও ধর্ষণের শিকারদের জন্য নিরাপদ গর্ভপাত এখনও একটি দূরের স্বপ্ন। সুতরাং, একটি আর্তকেন্দ্রিক বাস্তুতন্ত্র তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ, যা ধর্ষণের শিকারদের প্রয়োজন ও দুর্দশার প্রতি সংবেদনশীল। এফআইআর রেজিস্ট্রেশন ও মেডিক্যাল পরীক্ষা থেকে শুরু করে আদালত কক্ষে বিচারের জন্য আরও দায়বদ্ধ ব্যবস্থা তৈরি করাও জরুরি। ধর্ষণের বিচার ও ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার উন্নতি প্রয়োজন, কারণ এটি ধর্ষণের শিকারদের পর্যাপ্ত সেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.