Expert Speak India Matters
Published on Dec 02, 2022 Updated 0 Hours ago

পরিবেশগত অর্থনৈতিক গণনার অন্তর্ভুক্তিকরণ শূন্য নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ফলপ্রসূ হতে পারে।

গ্রিন অ্যাকাউন্টিং: সবার ভবিষ্যৎকে মূল্য দেওয়া
গ্রিন অ্যাকাউন্টিং: সবার ভবিষ্যৎকে মূল্য দেওয়া

বাস্তুতন্ত্রবিদ এবং পরিবেশ অর্থনীতিবিদরা প্রায়শই তিরস্কার করেন যে, কী ভাবে দেশগুলি তাদের জাতীয় ও অর্থনৈতিক অ্যাকাউন্টগুলিকে কেবলমাত্র অগভীরভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করে। মানব দক্ষতা গড়ে তোলা, শিক্ষা প্রদান, পুষ্টি এবং স্বাস্থ্য, ভূমি, বায়ু এবং জলের গুণমান অথবা বনাঞ্চল রক্ষায় যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে, তা জাতীয় অ্যাকাউন্টের আওতায় ব্যবহার সংক্রান্ত ব্যয় হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট নির্মাণ এবং সরঞ্জাম কেনার খরচ অন্য খাতে ধরা হয়। এই ধরনের সামাজিক সহায়তার জন্য ভারতের বাজেট-বরাদ্দ অন্যান্য তুলনীয় অর্থনীতির থেকে পিছিয়ে রয়েছে। আমরা এই ধরনের ব্যয়কে ভৌত পরিকাঠামো বনাম অর্থনৈতিক বৃদ্ধির প্রান্তিক হিসেবে দেখি যা পরিবেশগত অর্থনৈতিক হিসাবরক্ষণের পদ্ধতিতে মানবসম্পদ ও অন্যান্য প্রাকৃতিক পুঁজির সুরক্ষার জন্য বিনিয়োগ হিসাবে গণ্য করা হয়।

অর্থনৈতিক বৃদ্ধি নেতিবাচক না কি ইতিবাচক… তা মূল্যায়ন করার জন্য পরিবেশ অর্থনীতিবিদরা বার্ষিক আউটপুট থেকে আয় তৈরির প্রক্রিয়ায় প্রাকৃতিক মূলধনের অবক্ষয়ের মূল্য বাদ দেন।

জাতীয় অ্যাকাউন্টগুলি আউটপুট নির্ধারণ করে কতটা আয় হল তার বিশ্লেষণ করে। পরিবেশগত অর্থনৈতিক অ্যাকাউন্ট আউটপুট নির্ধারণ করে প্রাকৃতিক পুঁজির পরিবর্তন হিসাব করে (যা ভৌত পুঁজি থেকে আলাদা– বাড়িঘর, রাস্তা, যন্ত্রপাতি– যার সবই প্রাকৃতিক পুঁজির ক্ষয় ঘটায়)। জাতীয় অ্যাকাউন্টগুলির নজর কেন্দ্রীভূত থাকে মূলধন থেকে উৎপাদিত ফলাফলের উপর। এই পদ্ধতির প্রধান ত্রুটি হল, সেটিতে স্থিতিশীলতার উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।

অর্থনৈতিক বৃদ্ধি নেতিবাচক না কি ইতিবাচক… তা মূল্যায়ন করার জন্য পরিবেশ অর্থনীতিবিদরা বার্ষিক আউটপুট থেকে আয় তৈরির প্রক্রিয়ায় প্রাকৃতিক মূলধনের ক্ষয়ের মূল্য বাদ দেন। নেতিবাচক বৃদ্ধি স্থিতিশীল নয়। কারণ এটিতে বর্তমান আয় উপভোগ করার জন্য ভবিষ্যৎ পুঁজি থেকে ধার নেওয়া হয়, এটি এমন এক ভুয়ো প্রকল্প যা অনন্ত কাল চালানো সম্ভব নয় এবং তা পরিশোধের ক্ষমতা নির্মাণ না করে ক্রমশ ঋণের বোঝা  বাড়িয়ে চলা একটি দেশের সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ।

প্রতিস্থাপনের ত্রুটিপূর্ণ যুক্তি এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সীমাহীন সরবরাহ

ইউনাইটেড নেশনস স্ট্যাটিস্টিক্যাল কমিশন (ইউ এন এস সি) অনুমোদিত জাতীয় হিসাব পদ্ধতিতে মজুত প্রাকৃতিক সম্পদের হিসাব অন্তর্ভুক্ত না-করার যুক্তিতে – যা বিশ্বব্যাপী অনুসরণ করা হয়েছে – প্রাকৃতিক সম্পদগুলিকে অতি সাম্প্রতিক কাল পর্যন্তও অফুরান বলে মনে করা হয়েছিল এবং কিছু নির্দিষ্ট  ক্ষেত্রে এগুলিকে প্রতিস্থাপনযোগ্য বলেও মনে করা হত। যেমন বাড়ি নির্মাণের জন্য কাঠকে চুনাপাথরভিত্তিক সিমেন্ট এবং লোহা দ্বারা প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে। কয়লা  পেট্রোলিয়াম তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, জৈব জ্বালানি বা আমাদের জ্বালানি পরিষেবাগুলির জন্য পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির নতুন রূপগুলির সঙ্গে প্রতিস্থাপনযোগ্য। এর ফলস্বরূপ, প্রাকৃতিক সম্পদ বা জীববৈচিত্র্যের ভাণ্ডারের কোনও মূল্য ধরা জরুরি বলে মনে করা হয়নি। প্রকৃতিকে এতটাই সমৃদ্ধ বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল যে, একটি সম্পদ বা প্রজাতির অভাব অপেক্ষারত অন্য একটি প্রজাতি দ্বারা পূরণ করা যেতে পারে এবং তা প্রযুক্তির সাহায্যে সহজেই করা সম্ভব বলে ভাবা হত।

প্যারিসে ২০১৫ সালের কনফারেন্স অফ পার্টিজ সমাবেশ দেশগুলিকে স্বেচ্ছায় ডিকার্বনাইজেশন পদ্ধতিগুলি গ্রহণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করে। জাতীয় ডিকার্বনাইজেশন প্রতিশ্রুতিগুলি সেই সময় থেকেই উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য একটি নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, প্যারিসে ২০১৫ সালের প্রতিশ্রুতিগুলির তুলনায় ভারত ২০২১ সালে গ্লাসগো কপ-এ স্বেচ্ছায় প্রতিশ্রুতি বাড়িয়েছে এবং চিন এবং ইন্দোনেশিয়ার ২০৬০ সালের মধ্যে শূন্য নিঃসরণের প্রতিশ্রুতির তুলনায় ভারত ২০৭০ সালের মধ্যে শূন্য নিঃসরণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।

বাস্তুতন্ত্রবিদ এবং পরিবেশ অর্থনীতিবিদরা প্রাকৃতিক সম্পদের অসীম প্রতিস্থাপনের ধারণাকে প্রকৃতির কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে অপ্রতুল জ্ঞান থাকার কারণ দর্শিয়ে খারিজ করেন। তাঁরা প্রাকৃতিক সম্পদের ভাণ্ডারকে নির্দিষ্ট সংস্থানগুলির মধ্যে অসংখ্য পরিপূরক প্রক্রিয়ার ফলাফল হিসাবে দেখেন যা তাদের জৈব ভাবে সংযুক্ত করে। সম্পূর্ণ বিষয়ের কোনও নির্দিষ্ট অংশকে নিষ্কাশন করতে গেলে ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে এবং তা একটি স্থিতিশীল বাস্তুতন্ত্রকে ‘টিপিং পয়েন্ট’ বা সংকটজনক পরিস্থিতিতে নিয়ে যেতে পারে — এটি এমন এক শব্দবন্ধ যার সঙ্গে আমরা এখন পরিচিত, যবে থেকে বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং জলবায়ুর উপর সম্মিলিত কার্বন নিঃসরণের প্রভাব পুঙ্খানুপুঙ্খ বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনার একটি জরুরি বিষয় হয়ে উঠেছে। দুঃখজনক ভাবে বাস্তুতন্ত্রের কার্যকারিতার সমাধান একটি ধীর প্রক্রিয়া হয়েই রয়ে গিয়েছে। যাই হোক, শুধুমাত্র দুঃসাহসীরাই প্রকৃতিকে যত্ন সহকারে পরিচালনা করার প্রস্তাবটিকে প্রত্যাখ্যান করবেন।

অর্থনৈতিক হিসাবরক্ষণকে পরিবেশ-সংবেদনশীল করার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে নিয়ে ইউ এন এস সি ২০১২ সালে সিস্টেম অফ এনভায়রনমেন্টাল ইকনমিক অ্যাকাউন্টস (এস ই ই এ) প্রণয়ন করে। “এস ই ই এ (কেন্দ্রীয় কাঠামো) এস এন এ-র হিসাব রক্ষণের ধারণা, কাঠামো, বিধি এবং নীতি পরিবেশগত তথ্যের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে। ফলত, এটি একটি একক কাঠামোয় অর্থনৈতিক তথ্যের সঙ্গে (প্রায়শই আর্থিক ভিত্তিতে পরিমাপ করা হয়) পরিবেশগত তথ্যকে (প্রায়শই ভৌত পরিপ্রেক্ষিতে পরিমাপ করা হয়) সংযুক্ত করার অনুমতি দেয়।’

১৯৯০-পরবর্তী সময়ে বহুপাক্ষিক জোয়ার

১৯৯০-এর দশকের প্রথম দিকটি ছিল প্রতিশ্রুতিপূর্ণ। ১৯৮৯ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের ফলে এই প্রত্যাশার উদ্ভব হয়েছিল যে, খণ্ডিত বিশ্বের বিভিন্ন অংশকে সকলের পক্ষেই লাভদায়ক একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ বাজারের অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।  ১৯৮০-র দশকে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে চিনকে অন্তর্ভুক্ত করার দৃষ্টান্তমূলক অর্থনৈতিক সাফল্য এ কথাই প্রমাণ করে যে, উত্সাহটি ভুল ছিল না। বিশ্ব বহুপাক্ষিক ঐকমত্যের মাধ্যমে পরিচালিত একটি ‘আন্তর্জাতিক নিয়মভিত্তিক ব্যবস্থা’-র দিকে এগোতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছিল। উদ্বেগজনক সমস্যার বহুপাক্ষিক সমাধানের জন্য এই তাড়ার বিষয়টি ১৯৯২ সালের রিও ডি জেনিরোর আর্থ সামিটে স্পষ্ট হয়ে ওঠে, যেখানে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের সূচনা করা হয় এবং যার ফলে বৈশ্বিক পরিবেশ ব্যবস্থাপনার উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক চুক্তিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া সম্ভব হয়।

ই ইউ ২০২৬ সাল থেকে কার্বননিবিড় আমদানিকৃত পণ্য যেমন ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামের উপর কার্বন কর আরোপ করার একটি সক্রিয় পরিবেশগত কৌশল অনুসরণ করছে।

প্যারিসে ২০১৫ সালের কনফারেন্স অফ পার্টিজ সমাবেশ দেশগুলিকে স্বেচ্ছায় ডিকার্বনাইজেশন পদ্ধতিগুলি গ্রহণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করে। জাতীয় ডিকার্বনাইজেশন প্রতিশ্রুতিগুলি সেই সময় থেকেই উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্যও একটি নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, প্যারিসে ২০১৫ সালের প্রতিশ্রুতিগুলির তুলনায় ভারত ২০২১ সালে গ্লাসগো কপ-এ স্বেচ্ছায় প্রতিশ্রুতি বাড়িয়েছে এবং চিন এবং ইন্দোনেশিয়ার ২০৬০ সালের মধ্যে শূন্য নিঃসরণের প্রতিশ্রুতির তুলনায় ভারত ২০৭০ সালের মধ্যে শূন্য নিঃসরণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। অন্য দিকে উন্নত অর্থনীতিগুলি ২০৫০ সালের আশপাশে তাদের সংশ্লিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা পূরণের চেষ্টা চালাবে। ৭০টি দেশের শূন্য নিঃসরণের লক্ষ্যমাত্রা বর্তমানে ৭৬ শতাংশ কার্বন নিঃসরণের মোকাবিলা করছে।

তবে অনেক কিছুই করা এখনও বাকি। ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্য নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে ২০৩০ সালের মধ্যে ২০১০ সালের বৈশ্বিক নিঃসরণের তুলনায় কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ ন্যূনতম ৪৫ শতাংশ হ্রাস করা প্রয়োজন। অথচ প্যারিস চুক্তিতে ১৯৩টি দেশের জাতীয় প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার নিরিখে ২০৩০ সালের মধ্যে মোট কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ আনুমানিক ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।

একটি সম্ভাব্য দূষণমুক্ত পদক্ষেপ

প্রেসিডেন্ট বাইডেন ফেডারেল সরকারকে বিশ্ব দিবসে (২২ এপ্রিল ২০২২) দেশে জীববৈচিত্র্য এবং পুরনো বন সংরক্ষণে নেতৃত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বাজেট  ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কার্যালয়ের পরিচালক ‘ফেডারেল নিয়ন্ত্রক সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাস্তুতন্ত্র এবং পরিবেশগত পরিষেবা ও প্রাকৃতিক সম্পদের মূল্যায়ন’ বিষয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করবেন। পরিকল্পনাটি হল, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রাকৃতিক মূলধন গণনাভিত্তিক মেট্রিক্স পরিমাপ পদ্ধতি এগোবে এবং ১৫ বছরের পর্যায়ব্যাপী ফেডারেল সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে এর বাস্তবায়ন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ই ইউ) ২০১৩ সালে বায়ু নিঃসরণের হিসাব, পরিবেশগত কর ও ভর্তুকি এবং উপাদান প্রবাহ সংক্রান্ত খাতগুলির তথ্য সঙ্কলন বাধ্যতামূলক করেছে। ২০১৭ সালে ইউরোস্ট্যাট পরিবেশগত পণ্য এবং ক্ষেত্র পরিষেবার খাতগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আদেশটিকে প্রবর্ধিত করা হয়। ই ইউ ২০২৬ সাল থেকে কার্বননিবিড় আমদানিকৃত পণ্য যেমন ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামের উপর কার্বন কর আরোপ করার একটি সক্রিয় পরিবেশগত কৌশল অনুসরণ করছে। ২০২৩-২৫ সালের  রূপান্তর পর্যায়ে আমদানিকারীদের অবশ্যই তাদের আমদানিকৃত পণ্যগুলিতে কার্বনের মাত্রা সম্পর্কে জানাতে হবে এবং ই ইউ কার্বন বাজার দ্বারা নির্ধারিত মূল্যে আমদানির স্বত্ব কিনতে হবে। এমনটা করার কারণ হল, এই ধরনের পণ্যের ই ইউ উৎপাদকদের জন্য ক্ষেত্রটিতে সমতা আনা। এই জাতীয় আমদানির উপর বিদেশে প্রদত্ত কার্বন করগুলিকে চিহ্নিত করা যেতে পারে, যার ফলে রফতানিকারক দেশগুলিতে দেশীয় কার্বন করগুলিতে প্রণোদনা জোগানো যেতে পারে।

উন্নত দেশগুলির ক্ষেত্রে এই সংখ্যা গড়ে পাঁচ, যা সবুজ অ্যাকাউন্টিংয়ের জন্য সামান্য হলেও ধারাবাহিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার চিত্রই তুলে ধরেছে।

ই ইউ-তে কার্বনের বাজার মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ২০২২ সালে প্রতি টন কার্বনের মূল্য ৯৭ ইউরোর সীমা ছুঁয়েছে। এই পরিস্থিতি ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ অচলাবস্থার সঙ্গে তুলনীয়, যখন টন প্রতি কার্বনের দাম ছিল ২০ ইউরোর কম এবং ২০১১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এর মূল্য প্রতি টন ছিল ১০ ইউরোর কম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন ই ইউ-কে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন যে, বিভিন্ন এক্তিয়ারভুক্ত অঞ্চল কার্বন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করতে কার্বন মূল্য ছাড়া অন্য পদ্ধতি ব্যবহার করে, এবং সেই নিয়মগুলির জন্যও ছাড় দেওয়া উচিত।

ভারত: গ্রিন অ্যাকাউন্টিংয়ের প্রতি পর্যায়ক্রমিক পদক্ষেপ

ভারতে সেন্ট্রাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল অর্গানাইজেশন (সি এস ও) প্রাকৃতিক মূলধন সঞ্চয় এবং পরিষেবাগুলিতে পরিবেশগত অর্থনৈতিক মূল্যায়নকে অন্তর্নিহিত করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৯২ সালের বিশ্ব সম্মেলনের পর সি এস ও পরিবেশগত পরিসংখ্যান উন্নয়নের জন্য একটি কাঠামো (এফ ডি ই এস) নির্মাণ করে। পরিবেশগত পরিসংখ্যানের একটি সঙ্কলন ১৯৯৭ সালে প্রকাশিত হয়েছিল এবং পর্যায়ক্রমে হালনাগাদও করা হয়েছিল। পরিসংখ্যান ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন মন্ত্রণালয় ২০০০ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে ভূমি, বনাঞ্চল, বায়ু, জল এবং মাটির নিচের সম্পদের মূল্যায়ন করার জন্য একগুচ্ছ সমীক্ষার ব্যবস্থা করেছে।

ড. পার্থ দাশগুপ্তের সভাপতিত্বে একটি বিশেষজ্ঞ দল ২০১৩ সালে ‘গ্রিন ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস ইন ইন্ডিয়া’ শীর্ষক একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে, যেখানে এস ই ই এ কাঠামোর সঙ্গে সাযুজ্য রেখে একটি কাঠামো গড়ে তোলার প্রস্তাব দেওয়া হয়। সি এস ও ২০১৮ সালে ভূমি, জল, গৌণ খনিজ এবং বনাঞ্চল… এই চারটি সম্পদের ভৌত হিসাব প্রকাশ করেছে। এনভিস্ট্যাটস ইন্ডিয়া ২০১৯ সালে মাটি ও জলের মতো দু’টি সম্পদের জন্য একটি গুণমান সূচক যোগ করেছে এবং কৃষিজমি বাস্তুতন্ত্র পরিষেবা এবং প্রাকৃতিক সম্পদভিত্তিক পর্যটন পরিষেবার মতো দু’টি পরিষেবার মূল্যায়ন করেছে।

প্রকৃতিকে এতটাই সমৃদ্ধ বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল যে, একটি সম্পদ বা প্রজাতির অভাব অপেক্ষারত অন্য একটি প্রজাতি দ্বারা পূরণ করা যেতে পারে এবং তা প্রযুক্তির সাহায্যে সহজেই করা সম্ভব বলে ভাবা হত।

সরকারি আর্থিক গণনা ব্যবস্থাগুলিকে পরিবেশগত অর্থনৈতিক অ্যাকাউন্টিংয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার কাজটি কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের অধীনে গভর্নমেন্ট অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ডস অ্যাডভাইজরি বোর্ড (জি এ এস এ বি) দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে, যা ২০২০ সালের জুন মাসে ‘ন্যাচারাল রিসোর্স অ্যাকাউন্টিং ইন ইন্ডিয়া’র উপর একটি ধারণাপত্র প্রকাশ করেছে। ১৯৯০-এর দশক থেকে প্রাকৃতিক সম্পদ গণনার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কার্যকলাপ হয়েছে। যদিও আমরা জাতীয় হিসাব খাতের মধ্যে পরিবেশগত হিসাবকে অন্তর্ভুক্তির ধারেকাছেও পৌঁছতে পারিনি।

পথ এখনও অনেক বাকি

পরিবেশগত অর্থনৈতিক অ্যাকাউন্টিং বাস্তবায়নের উপর ২০২০ সালের ইউ এন এস সি বৈশ্বিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, ৮৯টি দেশ গত পাঁচ বছরে অন্তত একটি করে অ্যাকাউন্ট সংকলন করেছে, ২০১৪ সালে যে সংখ্যাটি ছিল ৫৪। ৬২টি দেশ তা নিয়মিত করছে। একটি কর্মসূচির প্রতি সরকারের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা যাচাই করার অন্যতম উপায় হল, সংশ্লিষ্ট খাতে উপলব্ধ সংস্থানগুলির মূল্যায়ন। ২০২০ সালে সরকারগুলি পরিবেশগত-অর্থনৈতিক অ্যাকাউন্টিংয়ের জন্য গড়ে মাত্র ৩.৭ জন পূর্ণ সময়ের সদস্য বহাল করেছিল। উন্নত দেশগুলির ক্ষেত্রে এই সংখ্যা গড়ে পাঁচ, যা সবুজ অ্যাকাউন্টিংয়ের জন্য সামান্য হলেও ধারাবাহিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার চিত্রই তুলে ধরেছে।

তা সত্ত্বেও, বাস্তুতন্ত্রের স্তরে পরিবেশগত অর্থনৈতিক গণনা (এস ই ই এ ই এ) ইতিমধ্যেই ক্ষেত্রগুলির সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং তা কার্বন নিঃসরণের প্রেক্ষিতে আরও সুস্পষ্ট। ২০৩০ সালের মধ্যে ২০১০ সালের কার্বন নিঃসরণের তুলনায় ৪৫ শতাংশ কম নিঃসরণের বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সরকার, বেসরকারি ক্ষেত্র এবং জনসাধারণের মনে এই কাজে পরিবেশগত অর্থনৈতিক গণনার হাতিয়ার হিসেবে কার্যকারিতা সম্পর্কে বিশ্বাস জাগানোর উপায়। সর্বোপরি যার পরিমাপ সম্ভব, সেটিকেই সম্পন্ন করা যায়।

মতামত লেখকের নিজস্ব।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.