কয়লার চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সরকারের সামনে একমাত্র বিকল্প পথটি ছিল তার আত্মনির্ভরতার পন্থার বিরুদ্ধে হাঁটা এবং কয়লার বেনেফেসিয়েশন বা পরিশোধন এ ক্ষেত্রে একটি সম্ভাব্য পদক্ষেপ হতে পারে।
কোল বেনেফেসিয়েশন নীতি: কড়াকড়ি আছে কিন্তু প্রণোদনা নেই
২০২১-২২ সালে ভারতে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধির ফলেকয়লার চাহিদা এতটাই বেড়ে যায় যে,সরকার তার আত্মনির্ভরতার পন্থার বিরুদ্ধে হাঁটতে বাধ্য হয় এবং কয়লা আমদানির জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের প্রতি নির্দেশিকা জারি করা হয়। সরকার সেই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলিকেআর্থিক সহায়তাকরার জন্য ব্যাঙ্কগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে, যেগুলি আর্থিক ভাবে দুর্দশাগ্রস্ত অথবা পরিচালনার নিরিখে অত্যন্ত পুরনো। এই ঘটনাপ্রবাহ বিশ্ব জুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গ্রীষ্ম এবং শীতকালে চরম আবহাওয়ার বিড়ম্বনার উপরেই আলোকপাত করে, যা বিশ্বকে কয়লা দহনে পুনরায় বাধ্য করেছে যা জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান কারণ। এই ঘটনাপ্রবাহ অভ্যন্তরীণ ভাবে পরিশোধিত কয়লার উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ভারতের নীতিগুলির পর্যালোচনাকেই সমর্থন জোগায়৷পরিশোধিত কয়লার দহনস্থানীয় দূষণ এবং কার্বন নিঃসরণ, উভয়কেই কার্যকর ভাবে হ্রাস করতে পারে। এই লক্ষ্য অর্জনের প্রথম ধাপ হল কয়লার পরিশোধন বা কোল বেনেফেসিয়েশন।
কোল বেনেফেসিয়েশন
কোল বেনেফেসিয়েশনহল এমন একটি প্রক্রিয়া, যা অ-দাহ্য বাইরের পদার্থ এবং সংশ্লিষ্ট ছাইয়ের পরিমাণ হ্রাস করে কয়লার আকার এবং গুণমানের উন্নতি ঘটায়। কোল বেনেফেসিয়েশনের প্রক্রিয়াটিড্রাই ডিশেলিংবা শুষ্ক বিমোচন পদ্ধতির মাধ্যমে করা সম্ভব, যেখানে কোনও তরল মাধ্যম ব্যবহার না করে অ-কয়লাজাত পদার্থগুলিকে অপসারণ করা হয়। এটি একটিওয়েট প্রসেসবা সিক্ত প্রক্রিয়ার মাধ্যমেও করা যেতে পারে, যেখানে ভারী কয়লা (উচ্চ ছাইসম্পন্ন সামগ্রী, ‘রিজেক্ট বা অপসারিত’, যা ফেলে দেওয়া হয়) থেকে হালকা কয়লাকে (কম ছাইসম্পন্ন) আলাদা করার জন্য কয়লাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করা হয় এবংনিয়ন্ত্রণযোগ্য আপেক্ষিক গুরুত্বঅনুসারে কয়লাকে একটি তরল মাধ্যমে (সাধারণত জল) রাখা হয়। এই অপসারিত পদার্থগুলির মধ্যে কার্বন থাকে এবং সেগুলিকে লাভজনক ভাবে ব্যবহার করা প্রয়োজন।
ভারতীয় কয়লাকে ‘ড্রিফট অরিজিন’ বা ‘পরিবর্তনশীল উৎসজাত’ বলা হয় এবং কয়লা পদার্থের সঙ্গে খনিজ পদার্থ সূক্ষ্ম ভাবে মিলেমিশে থাকে যা গঠনের পর্যায়েই গুণমানের উল্লেখযোগ্য অবনতি ঘটায়।
৭৫ শতাংশেরও বেশি ভারতীয় কয়লায় ছাইয়ের পরিমাণ৩০ শতাংশ বা তার বেশিএবং কোনও কোনও ক্ষেত্রে ছাইয়ের পরিমাণ প্রায় ৫০ শতাংশও হয়। ভারতীয় কয়লাকে ‘ড্রিফট অরিজিন’ বা ‘পরিবর্তনশীল উৎসজাত’ বলা হয় এবং কয়লার সঙ্গে খনিজ পদার্থ সূক্ষ্ম ভাবে মিলেমিশে থাকে যা গঠনের পর্যায়েই গুণমানের উল্লেখযোগ্য অবনতি ঘটায়। ছাইয়ের নেপথ্যে থাকা খনিজ পদার্থটি কয়লারদাহ্য অংশে নিহিত উৎপত্তিগত ছাইয়েরএকটি অংশ এবং এর ফলে এটিকে সহজে অপসারণ করা যায় না। এটি ভারতের কোল বেনেফেসিয়েশনের পথে একটি প্রধান অন্তরায়।
সুবিধা
যে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলি উচ্চ মানের কয়লা ব্যবহার করে, তারানিম্ন মানের কয়লা ব্যবহারের তুলনায় কার্যক্ষমতার দিক থেকে সুবিধাপায়। সাধারণত কয়লার ছাইয়ের পরিমাণ যত বেশি, প্রতি একক ওজনের কয়লা থেকে তাপ উৎপাদনের পরিমাণ তত কম। যখন ছাই উপাদানের শতাংশ হ্রাস পায়, তখন কয়লা থেকে উৎপন্ন তাপের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়এবং নির্দিষ্ট গুণমানসম্পন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন করার জন্য জন্য কম কাঁচা কয়লা পোড়াতে হয়। যখন কম ছাইসম্পন্ন কয়লা ব্যবহার করা হয়, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের কর্মীরা সেই ছাই সংগ্রহ প্রক্রিয়া অপসারণের জন্য প্রয়োজনীয় নির্ধারিত এবং অনির্ধারিত রক্ষণাবেক্ষণের পরিমাণ কমাতে পারেন। যে মরচে পড়ার দরুন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের সরঞ্জামের ডাক্টওয়ার্ক বা নালিগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, নিম্ন ছাইসম্পন্ন কয়লা সেই মরচে পড়া এবং নালির ক্ষয় কমাতে সাহায্য করে।
কম ছাইসম্পন্ন কয়লা সমস্ত কয়লা ব্যবস্থাপনা সরঞ্জাম যেমন কনভেয়র, পালভারাইজার, ক্রাশার এবং স্টোরেজের ক্ষতি কমাতে পারে।উচ্চ ছাইসম্পন্ন কয়লার ব্যবহারকেন্দ্রের সরঞ্জামের উপর চাপ বাড়ায় যা কেন্দ্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় উৎপাদন কেন্দ্রস্থল সংক্রান্ত জ্বালানির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য উপলব্ধ শক্তি হ্রাস করে। এটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলির পরিচালনা ব্যয় বৃদ্ধি করে এবং লাভের সম্ভাবনার হ্রাস ঘটায়।
বেনেফেসিয়েশন সামগ্রিক ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রের কার্যক্ষমতারউন্নতি ঘটায় যা দীর্ঘমেয়াদি ক্ষেত্রে একটি কয়লা ব্যবহারকারী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের লাভের সম্ভাবনাকে প্রত্যক্ষ ভাবে সরাসরি প্রভাবিত করে। এবং একই সঙ্গে পরিবেশগত ক্ষতি ও বিতর্কের সম্ভাবনা এড়িয়ে যাওয়ার ক্ষমতাকেও বৃদ্ধি করে। এটি নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণকারী যন্ত্রগুলির কার্যকালকে বাড়িয়ে তোলে। কয়লায় উপস্থিত বেশির ভাগ ছাই দহন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায় এবং ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক প্রিসিপিটেটরের মতো নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণকারী যন্ত্রের মাধ্যমেসঞ্চিত হয়। ধৌত কয়লা ব্যবহার এই যন্ত্রগুলি দ্বারা উত্পাদিত এবং সঞ্চিত ছাইয়ের পরিমাণ হ্রাস করে ও তাদের কার্যকাল দীর্ঘায়িত করে।
উচ্চ ছাইসম্পন্ন কয়লার ব্যবহার কেন্দ্রের সরঞ্জামের উপর চাপ বাড়ায় যা কেন্দ্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় উৎপাদন কেন্দ্রস্থল সংক্রান্ত জ্বালানির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য উপলব্ধ শক্তি হ্রাস করে।
যে দেশগুলি বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা ব্যবহার করে, তাদের মধ্যে ভারত অনন্য। কারণ খনি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পর্যন্তঅনেক বেশি দূরত্বে কয়লাকে বহন করতে হয়।পরিবেশের উপর এর ক্ষতিকর প্রভাবের পাশাপাশি রেলওয়ে ব্যবস্থাকে অতিরিক্ত খরচ করতে হয় যা অর্থনীতির উপর চাপ বাড়ায় এবং পরিবহণ ব্যবস্থার মাধ্যমে বায়ু দূষণও বাড়ে। দীর্ঘ পরিবহণগত দূরত্বের পরিপ্রেক্ষিতে নিম্ন ছাইসম্পন্ন কয়লা একই শক্তি সামগ্রী পরিবহণের জন্য খরচ হ্রাস করে। ভারতমালবাহী এবং যাত্রী পরিবহণের জন্য একই রেলপথ ব্যবহার করে চলেছে, যেমনটা উন্নত দেশগুলির ক্ষেত্রে দেখা যায় না। সেখানে এই ধরনের কাজের জন্য সুনির্দিষ্ট রেলপথ রয়েছে। যাত্রীবাহী এবং মালবাহী ট্রেনের মধ্যে গতির পার্থক্য ভারতীয় রেল সংযোগব্যবস্থার ক্ষমতাকে হ্রাস করে। কয়লাবাহী রেল প্রায় এক ডজনেরও বেশি সংযোগপথে যুক্ত হওয়ায়রেল সংযোগের যানজটআরও বেড়েছে।
নিয়ন্ত্রক কাঠামো
১৯৭৩ সালের কয়লা খনি (জাতীয়করণ) আইন ১৯৯৩ সালে সংশোধিত হয়েছিল,যাতে লোহা ও ইস্পাত উৎপাদন, বিদ্যুৎ উৎপাদন, খনি থেকে প্রাপ্ত কয়লা ধৌতকরণ এবং অন্যান্য অন্তিম ব্যবহারের জন্য (নির্দিষ্ট সময় অন্তর সরকারের তরফে যা সম্পর্কে সূচিত করা হয়) ব্যক্তিগত এবং সরকারি উভয় ক্ষেত্রেই কয়লাখনির অনুমতি দেওয়া হয়। নীতি নির্ধারকরা গত তিন দশকে ভারতের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় কোল বেনেফেসিয়েশনকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন এবং তাঁরা উৎপাদনক্ষমতাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে না-পারার কিছু কারণও শনাক্ত করেছেন। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়,দশম পরিকল্পনা (১৯৯৭- ২০০২)দর্শায় যে, কোকিং কয়লার ধৌতকরণের ক্ষমতা কম ব্যবহৃত। কারণ ভারতে কয়লার গুণমান কয়লার ধৌতকরণের নিরিখে আর্থিক ভাবে লাভজনক নয়। এই পরিকল্পনায় আরও বলা হয়েছে যে, বিদ্যমান কোকিং কয়লা ধৌতাগারগুলি এমন ভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছিল যাতে ধৌতকরণের বৈশিষ্ট্যগুলিকে সহজ থেকে কঠিনে বিন্যাস করা সম্ভব হয় এবং কোকিং কয়লার বেনেফেসিয়েশনও করা যায়। কিন্তু এখন যে কয়লা উৎপাদিত হয় তার ধৌতকরণ আরও কঠিন। দশম পরিকল্পনা নথিতে দেখা গিয়েছে যে, ধৌতাগার গড়ে তোলার কাজটি বেসরকারি ক্ষেত্রের জন্য উন্মুক্ত থাকলেও ‘সে কাজে কেউ রাজি হয়নি’।একাদশতম পরিকল্পনায় (২০০৭-২০১২)দেখা গিয়েছে যে, কয়লা ধৌতকরণ প্রচলিত পালভারাইজড কোল কম্বাশন (পি সি সি) বয়লারের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ সুনিশ্চিত করবে এবং কার্যকারিতার১ শতাংশবৃদ্ধি ঘটাবে। এর পাশাপাশি, এ সতর্কতাও জারি করা হয়েছিল যে, ধৌত ক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে কাঁচা কয়লার চাহিদা বৃদ্ধি পাবে যদি না জরিমানার দিকটি কার্যকার ভাবে লাগু করা হয়।
নীতি নির্ধারকরা গত তিন দশকে ভারতের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় কোল বেনেফেসিয়েশনকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন এবং তাঁরা উৎপাদনক্ষমতাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে না-পারার কিছু কারণও শনাক্ত করেছেন।
২০১৪ সালে এম ও ই এফ অ্যান্ড সি সিবিজ্ঞপ্তি জারি করে যে, খনি থেকে ৫০০-৭৪৯ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত ১০০ মেগাওয়াটের বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলিকে ২০১৬ সালের জুন মাস থেকে ত্রৈমাসিক গড় ভিত্তিতে ৩৪ শতাংশের কম ছাইসম্পন্ন কাঁচা বা মিশ্রিত অথবা বেনেফেসিয়েটেড কয়লার জোগান দিতে হবে। এ ছাড়াও সমস্ত নতুন কয়লা ব্যবহারকারী কেন্দ্রগুলির জন্যসুপারক্রিটিকাল প্রযুক্তি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং ১৪৪টি বিদ্যমান উৎপাদন কেন্দ্রেরজন্য বাধ্যতামূলক দক্ষতা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে যার জন্য উচ্চ মানের কয়লা ব্যবহার প্রয়োজন হবে।
কয়লাবেনেফেসিয়েশন পদ্ধতির প্রণোদনা জোগানো
দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রযুক্তিগত সুবিধা এবং নীতিগত হস্তক্ষেপ থাকা সত্ত্বেও, কয়লা উত্পাদক এবং ব্যবহারকারীদের (বিশেষ করে বিদ্যুৎ উৎপাদক) দ্বারা কয়লা ধৌতকরণের পদ্ধতি বৃহৎ পরিসরে গ্রহণ করা হয়নি। ২০২০-২১ সালে ধৌত কয়লার (কোকিং এবং নন-কোকিং) উৎপাদনের পরিমাণ ছিল২২.৯৫১ মেট্রিক টনযা ২০২০-২১ সালের মোট কাঁচা কয়লা উৎপাদন অর্থাৎ ৭১৬.০৮৩ মেট্রিক টনের মাত্র ৩ শতাংশ। এর মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ কোকিং কয়লা এবং বাকি ছিল নন-কোকিং কয়লা। মোট ধৌতকরণ ক্ষমতা ছিল২৯.৯৮ মেট্রিক টন,যার অর্থ হল ক্ষমতা ব্যবহার ৭৫ শতাংশের বেশি হয়েছে। সরকারি ক্ষেত্রের ধৌতাগারগুলিতে ধৌত কয়লা উৎপাদনের৮৩ শতাংশেরবেশি কাজ হয়। এটা সম্ভাব্য যে, কয়লা বেনেফেসিয়েশন প্রসারের নীতিগুলি আদেশ (‘জরিমানা কিংবা কড়াকড়ি’) করার পরিবর্তে প্রণোদনার (‘লাভের সুযোগ কিংবা ভর্তুকি’) উপর নজর দিলে, ধৌত কয়লার চাহিদা উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পাবে।
নীতি নির্দেশিকা যা ধৌতাগার নির্মাণকে প্রভাবিত করেছিল, তা আখেরে অর্থনৈতিক কার্যকারিতার চেয়ে পরিবেশগত পছন্দকেই অগ্রাধিকার দেয় এবং সে ক্ষেত্রে খরচের বিবেচনা করে না।
সামগ্রিক ভাবে বৃহত্তর শক্তি সুরক্ষা এবং পরিবেশ সুরক্ষার জন্য ভারতে কয়লা বেনেফেসিয়েশনের ক্ষমতার সম্প্রসারণ এবং পরিচ্ছন্ন কয়লার ব্যবহারযতটা না প্রযুক্তিগত বা নিয়ন্ত্রক সম্মতি সমস্যা, তার চেয়ে ঢের বেশি গুণে অর্থনৈতিক সমস্যা বটে। নীতি নির্দেশিকা যা ধৌতাগার নির্মাণকে প্রভাবিত করেছিল, তা আখেরে অর্থনৈতিক কার্যকারিতার চেয়ে পরিবেশগত পছন্দকেই অগ্রাধিকার দেয় এবং সে ক্ষেত্রে খরচের বিবেচনা করে না। কয়লা খনন এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন ভ্যালু চেনের সমস্ত অংশেবাণিজ্যিক ও বাজার শক্তিরক্রমবর্ধমান প্রভাবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে না।বিদ্যুৎ সরবরাহের মূল্যস্তর স্থিতিশীল রাখা নিশ্চিত করতেউৎপাদন খরচকে নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং একই সঙ্গে দূষণ হ্রাসকারী প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করার জোড়া প্রত্যাশা বিদ্যুৎ উৎপাদকদের চাপে ফেলেছে। সহজ কথায় বলতে গেলে, আশা করা হচ্ছে যে, তারা তাদের ব্যক্তিগত বিনিয়োগেদূষণমুক্ত বায়ু জনস্বার্থেউৎপাদন করবে, যে অর্থ পুনরুদ্ধারে তারা সক্ষম নয়। যত ক্ষণ না তাকে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির জন্য লভ্য জনগণের অর্থের মতো ভর্তুকি দেওয়া হয়, তত ক্ষণ ধৌতকরণের কাজটি কেউই স্বেচ্ছায় করবে না।
যেহেতু জাতীয় স্তরে কোল বেনেফেসিয়েশনের অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত সুবিধাগুলি প্রায়শই উৎপাদন কেন্দ্রের নিরিখে আর্থিক সঞ্চয়ে রূপান্তরিত হয় না, তাই জনসমর্থনের ন্যায্যতার বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া যেতে পারে। বিশেষত কয়লার গুণমান বৃদ্ধি এবং কয়লার ধৌতকরণের নিরিখে বিনিয়োগের জন্যন্যাশনাল ক্লিন এনভায়রনমেন্ট ফান্ডের (এন সি ই এফ)ব্যবহার করা যেতে পারে। এমনটা হলে তা কয়লানীতিকে পরিমাণ থেকে গুণমানের দিকে স্থানান্তর করার জন্য দ্ব্যর্থহীন সমর্থন প্রদান করবে। কয়লা ধৌতকরণ সংক্রান্ত ২০২০ সালের নীতি আয়োগের রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে যে, ছাইয়ের পরিমাণ ৩০-৩৪ শতাংশে নামিয়ে আনার জন্য কয়লার ধৌতকরণ ২.৫ মার্কিন ডলার/টনের মতো কার্বনের দামে (রক্ষণশীল হিসেব অনুযায়ী) ০.০১-০.০২ ভারতীয় টাকার/কিলোওয়াট-ঘণ্টা পরিবেশগত সুবিধে প্রদান করতে সক্ষম।ই ইউ ই টি এসে (ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এমিশন ট্রেডিং সিস্টেম)কার্বনের বর্তমান মূল্য টন প্রতি ৮০ মার্কিন ডলারেরও বেশি, যার অর্থ হল কয়লা ধৌতকরণের পরিবেশগত সুবিধাগুলি আরও বেশি হতে পারে। এই সুবিধাগুলি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের কাছে পৌঁছে দিলে তা তাদের ধৌত কয়লা ব্যবহারে আরও বেশি উৎসাহিত করবে। সামগ্রিক ভাবে নীতিগুলিকে প্রযুক্তি ও জ্বালানি নিরপেক্ষ হয়ে উঠতে হবে এবং কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের সকল উদ্যোগকেই পুরস্কৃত করা উচিত।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Akhilesh Sati is a Programme Manager working under ORFs Energy Initiative for more than fifteen years. With Statistics as academic background his core area of ...
Vinod Kumar, Assistant Manager, Energy and Climate Change Content Development of the Energy News Monitor Energy and Climate Change.
Member of the Energy News Monitor production ...