Author : Gurjit Singh

Published on May 29, 2023 Updated 0 Hours ago

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দক্ষিণ–পূর্ব এশীয় অঞ্চলে আসিয়ানের কেন্দ্রীয়তা কি হ্রাস পেয়েছে?

আসিয়ানের কেন্দ্রীয়তা কোথায়?

আসিয়ান তার ৫৬তম বছরে পড়েছে। আসিয়ানের কাছে এখন চ্যালেঞ্জ হল কীভাবে এর কেন্দ্রীয়তা বজায় রাখা এবং প্রমাণ করা সম্ভব। ১৯৭৬ সালে প্রথম আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে অ্যামিটি অ্যান্ড কো–অপারেশন ইন সাউথইস্ট এশিয়া (টিএসি) চুক্তিটি নিয়ে মতৈক্য হয়েছিল। সনদটি ২০০৮ সালে অনুমোদিত হয়েছিল। ১.১৫ অনুচ্ছেদে আসিয়ান একটি কার্যকর অ্যাজেন্ডা অনুসরণ করার কারণে তার কেন্দ্রীয়তা ঘোষণা করেছিল। এটি ছিল দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া চুক্তি সংস্থা (সিয়াটো)–র মাধ্যমে কিছু আসিয়ান সদস্যের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিজেদের জোটবদ্ধ করার অভিজ্ঞতা এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধের ফলাফলের একটি বিকল্প।

আসিয়ানের কেন্দ্রীয়তা হল এমন একটি ধারণা যার মাধ্যমে আসিয়ান বিভিন্ন সম্পর্ক পরিচালনা করে, এবং সিএলএমভি (কম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমার ও ভিয়েতনাম) দেশগুলি ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৯–এর মধ্যে যোগদানের পরে তা আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এই আসিয়ানের কেন্দ্রীয়তাটি কী?‌ প্রথমত, আসিয়ানের সদস্য দেশগুলির মধ্যে, এবং তার পরে বিভিন্ন অঞ্চল জুড়ে তাদের অংশীদারদের সঙ্গে, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি বজায় রাখা। ২০০৩ সাল থেকে অংশীদারদের জন্য টিএসি উন্মুক্ত করার মাধ্যমে আসিয়ান সনদটি জোরদার হয়েছিল। ভারত ও চিন টিএসি–তে প্রথম নন–আসিয়ান অনুসারী হয়ে ওঠে।

এই লক্ষ্যে আসিয়ান এমন একটি আঞ্চলিক স্থাপত্যের সূচনা করে যার লক্ষ্য ছিল দৃষ্টিভঙ্গির অভিন্নতার ভিত্তিতে এমন একটি উদার ব্যবস্থা তৈরি করা যার মূলে থাকবে আসিয়ান। আসিয়ান প্লাস থ্রি (এপিটি) ১৯৯৭ সালে এর প্রধান অর্থনৈতিক অংশীদারদের — জাপান, কোরিয়া ও চিন — নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে। তাদের সঙ্গে একযোগে আলাদা করে শীর্ষ বৈঠকের প্রচলন হয়। এছাড়াও অন্যান্য সংলাপ অংশীদারেরা (ডিপি’‌স) আসিয়ান+১ শীর্ষ সম্মেলন শুরু করে। ১০টি ডিপি ইতিমধ্যে টিএসি–কে মেনে নিয়ে আসিয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে, এবং বন্ধুত্বের মন্ত্র হিসাবে সব সময় আসিয়ানের কেন্দ্রীয়তাকে গুরুত্ব দেওয়ার সৌজন্য বজায় রেখেছে।

আসিয়ানই এশিয়ায় প্রথম নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনার জন্য একটি আঞ্চলিক ফোরাম তৈরি করে। আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরাম (এআরএফ) ১৯৯৪ সাল থেকে চালু রয়েছে। এটি ২৭ সদস্যবিশিষ্ট আসিয়ান–কেন্দ্রিক সংস্থাগুলির মধ্যে বৃহত্তম। পরবর্তী আসিয়ান–কেন্দ্রিক সংস্থাটি ছিল ২০০৫ সালে পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলন (ইএএস)

১০টি ডিপি টিএসি–কে মেনে নিয়ে আসিয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে এবং বন্ধুত্বের মন্ত্র হিসাবে সব সময় আসিয়ানের কেন্দ্রীয়তাকে গুরুত্ব দেওয়ার সৌজন্য বজায় রেখেছে।

২০১০ সালে, আরও দুটি আসিয়ান–কেন্দ্রিক সংস্থা আবির্ভূত হয়। আসিয়ান ডিফেন্স মিনিস্টারস মিটিং প্লাস (এডিএমএম+) আসিয়ান পক্ষের সঙ্গে একটি বৈঠকে এমন ডিপি–গুলিকে নিয়ে আসে যারা ইএএস–এর সদস্য ছিল। একই বছরে সামুদ্রিক সমস্যাগুলি মোকাবিলা করার জন্য আসিয়ান মেরিটাইম ফোরাম চালু করা হয়েছিল। ২০১২ সালে এটি সর্বকনিষ্ঠ আসিয়ান–কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠে, যখন এক্সটেন্ডেড আসিয়ান মেরিটাইম ফোরাম (ইএএমএফ) তৈরি করা হয়। এটি আসিয়ান–কেন্দ্রিক সংস্থাগুলির মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল

এগুলি সম্মিলিতভাবে এমন আঞ্চলিক স্থাপত্য তৈরি করেছিল যেখানে এই অঞ্চল ও এর পরিধির দেশগুলি, এবং সেইসঙ্গে বড় শক্তিগুলি, সকলেই মিলিত হতে পারে এবং আলোচনা করতে পারে। প্রত্যেকেই আসিয়ানকে এই কার্যকলাপের কেন্দ্রে পরিণত হওয়ার সুযোগ দিয়েছে, কারণ এটি তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে মুক্তি দিয়েছিল। সম্ভবত আসিয়ান ধরে নিয়েছিল যে সে এই অঞ্চলের নেতা হয়ে উঠেছে, যখন এটি এমন একটি কেন্দ্র ছিল যার বাহুগুলি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছিল।

যতদিন শান্তি বিরাজ করছিল, ততদিন এই আঞ্চলিক স্থাপত্যটি ভাল কার্যক্ষমতা প্রদর্শন করেছিল । ক্ষমতার প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ার সময় থেকে আসিয়ান নিরাপত্তার বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আরও বেশি করে মেনে চলতে থাকে, কিন্তু অর্থনৈতিক বিষয়ে চিনের সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত থাকে। এর জন্য আঞ্চলিক স্থাপত্যের ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন ছিল, যা শেষ পর্যন্ত আসিয়ানের কেন্দ্রিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

এমন ধারণা সঠিক নয় যে আসিয়ান–কেন্দ্রিক আঞ্চলিক স্থাপত্য এই অঞ্চলে একমাত্র ছিল। ১৯৮৯ সালে এশিয়া–প্যাসিফিক ইকনমিক কোঅপারেশন (অ্যাপেক) গড়া হয়েছিল সিঙ্গাপুরে সচিবালয় তৈরি করে, যা জাকার্তায় আসিয়ান সচিবালয়ের সঙ্গে সহ–অবস্থিত নয়। পরবর্তী সময়ে চিন ১৯৯৯ সালে এশিয়ায় ইন্টারঅ্যাকশন অ্যান্ড কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজারস (সিআইসিএ) সম্মেলন এবং ২০০১ সালে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও)–কে সমর্থন করেছিল। এগুলি আসিয়ানের কেন্দ্রীয়তা ছাড়াই এশিয়ায় সহযোগিতার প্রচেষ্টা ছিল।

চিন যখন তার বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) ঘোষণা করেছিল, তখন ২০১৩ সালে জাকার্তায় তা করা হয়েছিল। একইভাবে, চিনের নেতৃত্বাধীন এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক (এআইআইবি) আসিয়ান দেশগুলি ও অন্যদের কেন্দ্রীয়তা বিসর্জন না–দিয়েও এই অঞ্চলে একটি প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি হওয়ার জন্য তাদের সঙ্গে যোগদানের আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

২০১২ সালে যখন আঞ্চলিক ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারি (আরসিইপি) আলোচনা শুরু হয়, তখন এটির মূল অংশে ছিল আসিয়ান, যেহেতু ১০টি আসিয়ান দেশ এতে যোগ দেয়। কিন্তু এটি আসিয়ান–কেন্দ্রিক সংস্থা ছিল না, কারণ ওজনের মূল অংশটি প্রায়শই অ–আসিয়ান দেশগুলির দিকে থাকে, যারা হয় এটির ভারসাম্য বজায় রাখে বা কোনও এক দিকে টলিয়ে দেয়। আসিয়ানের কেন্দ্রীয়তা বজায় থাকলে তা হয়তো ভারতকে আরসিইপি–তে থাকতে রাজি করাতে পারত। ধারণাটি ছিল যে আরসিইপি আসিয়ানের কেন্দ্র-নির্ভর অবস্থানের পরিবর্তে চিনের দিকে ঝুঁকছে।

চিনের নেতৃত্বাধীন এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক (এআইআইবি) আসিয়ান দেশগুলি ও অন্যদের কেন্দ্রিয়তা বিসর্জন না–দিয়েও এই অঞ্চলে একটি প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি হওয়ার জন্য তাদের সঙ্গে যোগদানের আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

আসিয়ান বিশ্বাস করে যে এটি এমন আঞ্চলিক স্থাপত্যের সূচনা করেছে যা এর কেন্দ্রীয়তাকে শক্তিশালী করেছে। তা ব্যতীত এটি ছিল অন্য আঞ্চলিক অংশীদারদের সমিতি, যা আসিয়ান কেন্দ্রীয়তার উপলব্ধিকে স্পষ্ট করে তুলে ধরেছিল। অন্যান্য দেশ যদি টিএসি না–মেনেও আসিয়ান ডিপি হয়ে উঠত এবং আসিয়ান–কেন্দ্রিক সংস্থাগুলিতে যোগদান করত, তাহলে আসিয়ান কেন্দ্রীয়তা কোথায় থাকত?

আসিয়ান–কেন্দ্রিক সংস্থাগুলি আলোচনার ফোরাম, কোনও বাস্তবায়নকারী সংস্থা নয়। যদি একটি অংশীদার দেশ ফোরামের সহ–সভাপতি হয়, তাহলে সে বিভিন্ন কর্মসূচির জন্য সচিবালয়ের ব্যবস্থা করে দিতে পারে। আসিয়ানের এ বিষয়ে অ্যালার্জি ছিল, কারণ সংস্থাটি তার কেন্দ্রীয়তার উপর জোর দিতে চায় এবং তা ভাগ করে নিতে চায় না। আসিয়ান–কেন্দ্রিক ফোরামে আলোচনার বিষয়েও খুব কম অনুসারী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

দক্ষিণ চিন সাগরে প্রথমে অর্থনৈতিকভাবে এবং তারপর কৌশলগতভাবে চিন আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠায় আসিয়ান–এর মধ্যে বিভাজন তাদের ঐক্যকে ধ্বংস করে দেয়, যা তাদের কেন্দ্রীয়তার একটি মূল স্তম্ভ ছিল। ২০১২ সাল থেকে দক্ষিণ চিন সাগরে চিনা কর্মকাণ্ড ঐক্যবদ্ধ আসিয়ান প্রতিক্রিয়ার পথ রুদ্ধ করেছে। চিন ২০০২ সাল থেকে নিছক ঘোষণার অতিরিক্ত আচরণবিধির কোনও বিবর্তন এড়িয়ে গেছে। চিনের কাছে যেখানে তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সেখানে আসিয়ান কেন্দ্রীয়তার অ–গ্রহণযোগ্যতা অন্যান্য শক্তিকেও একই পথে নিয়ে গিয়েছে। এই ঘটনা একটি সমস্যার উপর আলোকপাত করে, আর তা হল আসিয়ানের কেন্দ্রীয়তা তার অংশীদারদের কাছে শুধু সেই পরিমাণে গ্রহণযোগ্য যা তাদের জন্য উপযুক্ত। যতক্ষণ না আসিয়ান এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে তার কেন্দ্রিয়তাকে যথেষ্টভাবে জোরদার করার জন্য এগিয়ে আসে, ততক্ষণ তার অগ্রগতি হবে না

বর্তমানে, চিন ও মার্কিন–চিন বৈরিতা ছাড়া আসিয়ানের সামনে চারটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। মায়ানমার আসিয়ানের একটি অস্থিতিশীল অংশ। মায়ানমার আসিয়ানের অনুরোধ উপেক্ষা করার মধ্যে কোনও অন্যায় দেখে না, বিশেষ করে যেহেতু ২০২১ সালে ৫–দফা ঐকমত্যে সম্মত হওয়া সত্ত্বেও আসিয়ান সদস্য দেশগুলি অভিন্ন পথ অনুসরণ করে না। মায়ানমার সংকট সম্পর্কে ডিপি–দের ভিন্ন ভিন্ন ধারণা রয়েছে। চিন ও ভারত উভয়েই মায়ানমারকে আসিয়ানের পরিবর্তে প্রতিবেশী হিসাবে দেখে। আবার পশ্চিমী অংশীদাররা আশা করে আসিয়ান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জোরালো ভূমিকা পালন করবে।

মায়ানমার আসিয়ানের অনুরোধ উপেক্ষা করার মধ্যে কোনও অন্যায় দেখে না, বিশেষ করে যেহেতু ২০২১ সালে ৫–দফা ঐকমত্যে সম্মত হওয়া সত্ত্বেও আসিয়ান সদস্য দেশগুলি অভিন্ন পথ অনুসরণ করে না।

দ্বিতীয়ত, আসিয়ানের ঐক্য এবং কেন্দ্রীয়তা ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে, যদিও সমস্ত ডিপি আসিয়ান কেন্দ্রীয়তাকে পুনঃনিশ্চিত করেছে। চিন এসসিও নিয়ে যা করেছিল তা হল আসিয়ান থেকে দূরত্ব তৈরি করা।‌ কিন্তু  কোয়াড ও অওকাস হল আসিয়ানের ডিপি–দের উদ্যোগ। কৌশলগতভাবে এগুলিও কিন্তু আসিয়ানকে চ্যালেঞ্জ করে, কারণ আসিয়ানের চিনকে দমিয়ে রাখার ক্ষমতা সামান্য। এটি আসিয়ানকে এক নেতা হিসাবে নয়, বরং এমন এক সমন্বয়কারী হিসাবে দেখায় যার কৌশলগত তাৎপর্য হ্রাস পাচ্ছে। চিন নিবারণমূলক ব্যবস্থার কারণে নিরুৎসাহিত হোক বা না হোক, আসিয়ানের কেন্দ্রীয়তা ক্ষুণ্ণ হয়েছে। কোয়াড সামিট আসিয়ানের কেন্দ্রীয়তা মেনে চলে; অওকাস আঞ্চলিক স্থাপত্য থেকে নিজের স্বাধীনতা বজায় রেখে চলে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সমস্ত বর্তমান প্রকাশিত নথিতে অবশ্য আসিয়ান কেন্দ্রীয়তার প্রতি অঙ্গীকার রয়েছে।

ইএএস অংশীদারদের আসিয়ানের কেন্দ্রীয়তা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। তারা আসিয়ান নিজের কেন্দ্রীয়তার প্রতি দায়বদ্ধতা এবং ঐক্য বজায় রাখতে পারে কি না তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। কোয়াড ও অওকাস চিন সম্পর্কে সোচ্চার, এবং এ নিয়ে চিনের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আসিয়ান উদ্বিগ্ন। আসিয়ান কখনই এই বিষয়টি দেখতে পায়নি যে কোয়াড সদস্যরা সকলেই ইএএস–এর অংশ, এবং কোয়াডের উত্থান ইএএস–এর কার্যকারিতার অভাবেরই প্রতিফলন।

তৃতীয়ত, আসিয়ান কি নিরপেক্ষ নাকি কৌশলগতভাবে স্বায়ত্তশাসিত? বড় শক্তিগুলির প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হওয়ার ফলে আসিয়ানের ঐক্য ভেঙে পড়েছে। ইউক্রেনের বিষয়ে তাদের কোনও অভিন্ন অবস্থান নেই, যার ফলে আসিয়ান দেশগুলি রাশিয়ার বিষয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদে বিভিন্নভাবে ভোট দিয়েছে। নিরপেক্ষতা বা স্বায়ত্তশাসন হিসাবে আসিয়ানের কেন্দ্রিকতার প্রক্ষেপণ বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে, কারণ এ সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসিয়ানের পরিবর্তে পৃথক সদস্যদের দ্বারা গৃহীত হয়;‌ এবং তাই এখন মায়ানমার, চিন বা ইউক্রেন নিয়ে এর কোনও ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেই।

ইতিমধ্যে আসিয়ান সম্পর্কে মতামতের ক্ষেত্রে তার ধীর ও অকার্যকর পদ্ধতি নিয়ে উদ্বেগ দেখা গিয়েছে। একটি সমীক্ষায় ৮২.৬ শতাংশ এই নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। ৭৩ শতাংশ মনে করেন যে আসিয়ানই এখন এমন বিবাদের ক্ষেত্র যা আসিয়ানকেই বিপন্ন করছে; ৬০.৭ শতাংশ আসিয়ানের অনৈক্য নিয়ে উদ্বিগ্ন। অতিমারি থেকে আসিয়ানের পুনরুদ্ধারের বিষয়ে শঙ্কা অবশ্য কমে এখন ৩৭.২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আসিয়ানের কেন্দ্রীয়তার প্রতি চ্যালেঞ্জগুলি স্পষ্টতই তার নিজস্ব জনগণের মনেও রয়েছে।

নিরপেক্ষতা বা স্বায়ত্তশাসন হিসাবে আসিয়ানের কেন্দ্রিকতার প্রক্ষেপণ বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে, কারণ এ সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসিয়ানের পরিবর্তে পৃথক সদস্যদের দ্বারা গৃহীত হয়;‌ এবং তাই এখন মায়ানমার, চিন বা ইউক্রেন নিয়ে এর কোনও ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেই।

আসিয়ানের কী করা উচিত?

প্রথমত, প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী মার্টি নাতালেগাওয়া যা বলেছেন, আসিয়ানের উচিত তা বাস্তবায়িত করা। যদি তারা কোনও কিছুতে একমত হয়, তবে তাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে তা অর্জন করা হবে। এর জন্য প্রয়োজন সচিবালয়ের সহায়তা বাড়ানো, এবং বাস্তবায়নের জন্য চেয়ারম্যানের আরও সংস্থান ব্যবহার করা। দ্বিতীয়ত, আসিয়ানের অনৈক্য তাদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধা দেয়। তাই যা গুরুত্বপূর্ণ তা হল সিদ্ধান্ত গ্রহণের নতুন নিয়ম গড়ে উঠুক যেখানে সম্পূর্ণ ঐকমত্যের পরিবর্তে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতকেই ভিত্তি করা হবে।

আসিয়ানের কেন্দ্রীয়তা ক্ষতিগ্রস্ত হয় কারণ বার্ষিক ভিত্তিতে একটি দেশ চেয়ার হিসাবে এর নেতৃত্ব দেয়, সচিবালয় দেয় না। আসিয়ান মহাসচিবের তেমন কিছু করার নেই। আসিয়ানকে তার মহাসচিবকে আরও বেশি সুযোগ এবং কর্তৃত্ব দিতে হবে, যাতে সনদকে সমুন্নত রাখার জন্য একটি ধারাবাহিক ধারণা নিয়ে কাজ করা সম্ভব হয়। মহাসচিবের উচিত আসিয়ান চেয়ারম্যানের সঙ্গে একযোগে কাজ করা, এবং সেই ধারাবাহিকতা নিয়ে আসা যা এক ঐক্যবিহীন আসিয়ান দিতে অক্ষম।

অবশেষে, শুধু আসিয়ানের কেন্দ্রীয়তার প্রতি তাদের অকৃত্রিম সমর্থনের প্রতিশ্রুতিই নয়, প্রকৃতপক্ষে এর আদর্শগুলি মেনে চলা এবং আসিয়ানকে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য আসিয়ানের সমস্ত অংশীদারের সমর্থন প্রয়োজন। এর জন্য আসিয়ানকে অবশ্যই দেখাতে হবে যে এটি কার্যকর। তবেই তার অংশীদারদের সমর্থন স্পষ্ট হবে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Author

Gurjit Singh

Gurjit Singh

Gurjit Singh has served as Indias ambassador to Germany Indonesia Ethiopia ASEAN and the African Union. He is the Chair of CII Task Force on ...

Read More +