মাঙ্কিপক্স অতিমারি: আফ্রিকাকে উপেক্ষা করার মূল্য দিতে হচ্ছে
মাঙ্কিপক্স (এম পি এক্স) একটি বিরল, ভাইরাসঘটিত জুনটিক রোগ। অতীতে গুটিবসন্ত রোগীদের মধ্যে যে লক্ষণ দেখা যেত, এ ক্ষেত্রেও লক্ষণ একই রকম। তবে গুটিবসন্তের তুলনায় চিকিৎসাগত দিক থেকে এটি কম ক্ষতিকর এবং এতে মৃত্যুহারের পরিমাণও অনেক কম। ১৯৫৮ সালে এই রোগটি প্রথম দেখা যায় যখন গবেষণার কাজে ব্যবহৃত বাঁদরের মধ্যে দু’টি বসন্ত-সদৃশ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। রোগটিকে মাঙ্কিপক্স বলা হয়, এর সৃষ্টিকারী প্যাথোজেনের উত্স এখনও অজানা। এটা মনে করা হয় যে, অনেক প্রজাতির ইঁদুর এই ভাইরাসের আঁতুড়ঘর এবং তা মানুষকেও সংক্রমিত করতে পারে। মাঙ্কিপক্স আবার বিশ্বের নজর আকর্ষণ করে, যখন সেই সব দেশ থেকে সংক্রমণের ঘটনা উঠে আসতে থাকে যেগুলি ভাইরাসের উৎসের সঙ্গে অঞ্চলগত দিক থেকে কোনও ভাবেই সম্পর্কিত নয়। ২০২২ সালের ১৫ জুলাই পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৬২টি দেশে ১২,৬৬৯টি মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ঘটনা নথিবদ্ধ হয়েছে। ১৪ জুলাই ভারতের কেরলেও প্রথমে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ঘটনা নথিবদ্ধ করা হয়।
চিত্র ১ : ২০২২ সালের ১৫ জুলাই পর্যন্ত নিশ্চিত ক্রমবর্ধমান মাঙ্কিপক্সের ঘটনা
কোথা থেকে এসেছে এই রোগ?
জিনগত বিশ্লেষণের মতো প্রযুক্তির অগ্রগতির সুবাদে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবের উত্স এখন স্পষ্ট হয়ে উঠছে। গবেষকরা বিশ্বাস করেন যে, ২০১৮ সাল থেকে ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হচ্ছে৷ ২০১৭ সালে নাইজেরিয়ায় এম পি এক্স-এর প্রাদুর্ভাব লক্ষ করা যায় এবং গবেষকরা মনে করেন যে, বর্তমান ভাইরাসটি ২০১৭-২০১৮ সালের নাইজেরিয়া প্রাদুর্ভাবের জন্য দায়ী ভাইরাসটিরই বংশধর৷ তাঁরা লক্ষ করেন যে, ভাইরাসটি প্রত্যাশার তুলনায় অনেক দ্রুত হারে পরিবর্তিত হয়েছে। এর ফলে ভাইরাসটি মানব শরীরে আরও ভাল ভাবে অভিযোজিত হতে পারছে। যদিও সংক্রমণযোগ্যতা এবং তীব্রতার নিরিখে এর প্রভাব বোঝার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।
উদীয়মান সংক্রামক রোগ এবং ‘ওয়ান হেলথ’
নাইজেরিয়ায় ২০১৭-২০১৮ সালে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব ব্যাপক হারে ভৌগোলিক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও মাঙ্কিপক্স মধ্য এবং পশ্চিম আফ্রিকা সংশ্লিষ্ট হলেও নাইজেরিয়ায় ২০১৭-২০১৮ সালের প্রাদুর্ভাবের সময়ে প্রতিবেদিত বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে প্রাসঙ্গিক। এমনটা বলা হয়েছিল যে, বিভিন্ন অঞ্চল জুড়ে যে ঘটনাগুলি ঘটছিল, তা অতিমারিবিদ্যাগত ভাবে যুক্ত না থাকলেও ১৯৭০ সালের ভাইরাসের সঙ্গে জিনগত ভাবে সমশ্রেণিভুক্ত ছিল। এর অর্থ হল, ভাইরাসটি দেশে বহু দশক ধরে কোনও অচিহ্নিত প্রাণীর মধ্যে সুপ্ত অবস্থায় ছিল। অর্থাৎ মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ প্রাণীর শরীর থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। জুনটিক সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে, প্রাদুর্ভাবের সময়ে প্রাণীর শরীর থেকে রোগজীবাণু মানুষের মধ্যে প্রবেশ করা গুরুত্বপূর্ণ, যা বিভিন্ন কারণ দ্বারা প্রভাবিত হয়। ভাইরাসের প্রকৃতি (যেহেতু আর এন এ ভাইরাস প্রাণী অথবা মানব শরীরে প্রবেশের ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা বেশি) এবং মানুষ থেকে মানুষের মধ্যে জীবাণুর প্যাথোজেনের গতিশীলতা মানবস্বাস্থ্যকে সামগ্রিক ভাবে ঝুঁকির মুখে ফেলে। পাশাপাশি, এই জীবাণু বাহকসংখ্যার একাধিক বিষয়ে যেমন ঘনত্ব, আচরণ, যোগাযোগের ধরন, অনাক্রম্যতার মাত্রা ইত্যাদি সংক্রমণের হারের তীব্রতাকে প্রভাবিত করে। এই একই কারণে প্রাদুর্ভাবের ঘটনাগুলি ঋতু, অবস্থান এবং জলবায়ু অনুসারে পরিবর্তিত হয়। প্যাথোজেনের সংক্রমণযোগ্যতা এবং তীব্রতা প্রাদুর্ভাবকে অতিমারিতে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করে।
যদিও মাঙ্কিপক্স মধ্য এবং পশ্চিম আফ্রিকা সংশ্লিষ্ট হলেও নাইজেরিয়ায় ২০১৭-২০১৮ সালের প্রাদুর্ভাবের সময়ে প্রতিবেদিত বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে প্রাসঙ্গিক।
সমস্ত জুনটিক সংক্রামক রোগ প্রাণীর শরীর থেকে উদ্ভূত হয়, যা ‘ওয়ান হেলথ’ দৃষ্টিকোণকে আলোচনার কেন্দ্রে তুলে ধরে। ‘ওয়ান হেলথ’ হল স্থানীয়, আঞ্চলিক, জাতীয় এবং বৈশ্বিক স্তরে কাজ করা একটি সহযোগিতামূলক, বহুক্ষেত্রীয় এবং ট্রান্সডিসিপ্লিনারি (আন্তঃবিভাগীয়) পদ্ধতি যা মানুষ, প্রাণী, গাছপালা এবং তাদের ভাগ করে নেওয়া পরিবেশের মধ্যে আন্তঃসংযোগকে স্বীকৃতি দিয়ে সর্বোত্তম স্বাস্থ্যের ফলাফল অর্জন করে। এটি স্বীকার করে যে, মানুষ, প্রাণী এবং পরিবেশের স্বাস্থ্য একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত এবং একে অপরকে প্রভাবিত করে। মানব স্বাস্থ্যের সর্বোচ্চ মাত্রা সুনিশ্চিত করতে গাছপালা এবং প্রাণীদের সুস্বাস্থ্যের গুরুত্ব গগনচুম্বী।
আফ্রিকার বেশ কয়েকটি উদীয়মান এবং পুনরুত্থিত সংক্রামক রোগ মহাদেশটিকে জর্জরিত করে তুলেছে, দুর্বল স্বাস্থ্য পরিকাঠামো থাকার দরুন যেগুলির সঙ্গে লড়াই করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। সশস্ত্র সংঘর্ষ, নগরায়ণ, বনাঞ্চল-ধ্বংস জুনটিক রোগ সংক্রমণ ও প্রসারের জন্য আদর্শ পরিবেশ প্রদান করে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধির অবনতি, ক্রমবর্ধমান ক্ষুধার মাত্রা, উচ্চ জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং উপ-অনুকূল জলের স্তর মানুষের মধ্যে প্যাথোজেনের প্রসারের আদর্শ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। আফ্রিকায় ওয়ান হেলথ শৃঙ্খলটির মধ্যে বিশেষ আন্তঃসহযোগিতা লক্ষ করা যায় না। পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়ন কর্মসূচির জন্য কাঠামো প্রয়োজন। পাশাপাশি রোগ নজরদারি, পর্যবেক্ষণ এবং নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। আফ্রিকা তার ওয়ান হেলথ উদ্যোগের জন্য যে তহবিল পায়, তার বেশির ভাগই মহাদেশের বাইরে থেকে আসে এবং আফ্রিকায় ওয়ান হেলথকে স্থিতিশীল করার জন্য এই অবস্থান পরিবর্তন হওয়া দরকার। ওয়ান হেলথ সম্পর্কে প্রচার, যোগাযোগ এবং সচেতনতার প্রসার ঘটাতে হবে, যা সম্প্রদায়ের মধ্যে ধারণাটিকে প্রতিষ্ঠা করতে এবং প্ররোচিত করতে সাহায্য করবে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বকেও উৎসাহ জোগাতে হবে। ভাল প্রশাসন, সহযোগিতা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের মধ্যে সমন্বয় আফ্রিকার ওয়ান হেলথ উদ্যোগের সাফল্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আফ্রিকা কি আগেও অবহেলিত হয়েছে?
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্বারা আফ্রিকা যে অবহেলা এবং অন্যায্য আচরণের সম্মুখীন হচ্ছে, সাম্প্রতিক কালের বহুদেশীয় মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব আমাদের সে দিকে নজর দিতে বাধ্য করে। মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব এমন আর একটি উদাহরণ যেটি আফ্রিকায় বিদ্যমান ভয়াবহ সঙ্কটের প্রতি সমগ্র বিশ্বের উদাসীনতাকেই তুলে ধরে। পশ্চিমে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পরে উচ্চ-আয়ের দেশগুলি ব্যাভারিয়ান নর্ডিক দ্বারা নির্মিত গুটিবসন্ত টিকার ডোজগুলি সঞ্চয় করতে শুরু করে। কিন্তু এই টিকা এখনও পর্যন্ত আফ্রিকার কোথাও পাওয়া যায় না। অথচ আফ্রিকার একাধিক দেশে মাঙ্কিপক্স দীর্ঘ দিন ধরে উপস্থিত। গবেষকরা তাঁদের গবেষণালব্ধ ফলাফল থেকে দেখিয়েছেন যে, বর্তমান সংক্রমণের লক্ষণগুলির সঙ্গে সাব-সাহারান আফ্রিকায় ঘটা সংক্রমণের লক্ষণ একই রকম। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বরের মধ্যে ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো ৯১৭৫টি এম পি এক্স-এর ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। দুর্ভাগ্যবশত, জিনোমিক নজরদারি সরঞ্জাম এবং অর্থায়নের জন্য পর্যাপ্ত পুঁজি গবেষকদের জোগান দেওয়া হয়নি। তবে অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়ার পরে কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে মনোযোগ দিতে শুরু করে।
আফ্রিকা তার ওয়ান হেলথ উদ্যোগের জন্য যে তহবিল পায়, তার বেশির ভাগই মহাদেশের বাইরে থেকে আসে এবং আফ্রিকায় ওয়ান হেলথকে স্থিতিশীল করার জন্য এই অবস্থান পরিবর্তন হওয়া দরকার।
কোভিড-১৯-এর ক্ষেত্রে যেমনটা দেখা গিয়েছে, আফ্রিকা এ ক্ষেত্রেও টিকা, রোগের শনাক্তকরণ, নজরদারি এবং অর্থায়নের নিরিখে বৈষম্যের সম্মুখীন হয়েছে। কোভিড-১৯ অতিমারির সময়ও আফ্রিকা টিকা বৈষম্যের শিকার হয়েছিল। আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডেটা অনুযায়ী, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত যখন বিশ্ব ওমিক্রনের সঙ্গে লড়ছিল, ইউ কে ইতিমধ্যে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৫০ জনকে বুস্টার ডোজ (তৃতীয় ডোজ) দিতে সমর্থ হয়েছিল এবং ইউরোপ ও অন্যান্য উচ্চ-আয়ের দেশগুলি প্রতি ১০০ জনের মধ্যে যথাক্রমে ২৪ এবং ২৫ জনকে বুস্টার ডোজ প্রদান করেছিল। সেই সময়ে আফ্রিকার জনসংখ্যার মাত্র ৮.৯৯ শতাংশ মানুষকে সম্পূর্ণ টিকা দেওয়া হয়েছিল (দুই ডোজ)। আফ্রিকা তার জনসাধারণকে প্রয়োজনীয় দু’দফার টিকা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, যখন অন্য দিকে উচ্চ-আয়ের দেশগুলি ইতিমধ্যে তাদের জনসাধারণকে তৃতীয় ডোজ দিতে সমর্থ হয়েছে। ওমিক্রন আবিষ্কারের পরে আফ্রিকাকে নজরদারির জন্য প্রশংসা করার পরিবর্তে ভ্রমণের উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল, যখন অন্য দিকে উচ্চ-আয়ের দেশগুলি তাদের টিকাকরণকে দ্বিগুণ শক্তিশালী করে তোলে।
আফ্রিকায় ইবোলা প্রাদুর্ভাবের সময় উচ্চ-আয়ের দেশগুলি রোগে আক্রান্ত দেশগুলিকে তাদের প্রয়োজনীয় সাহায্য জোগাতে ব্যর্থ হয়েছিল। আফ্রিকায় এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করা একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা মেদেসিঁস সাঁস ফ্রন্তিয়েরে (ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস) প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে যুঝে উঠতে পারেনি। তারা আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন জানায়। সংস্থাটি জানিয়েছে, সাহায্য চাওয়ার প্রত্যুত্তরে প্রতিক্রিয়া ‘খুব কম, অতি বিলম্বে’ এসে পৌঁছেছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্যের নিরিখে নিজেদের কাজের জন্য পরিচিত এবং অলাভজনক পার্টনারস ইন হেলথের সহ-প্রতিষ্ঠাতা পল ফার্মার এবং জিম ইয়ং কিম বলেছেন যে, যদি রোগটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শহরগুলিতে আঘাত হানত, তবে তাদের কার্যকর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাগুলি রোগটিকে নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল করতে পারত। তাঁরা বিশ্বাস করেন যে, ধনী দেশগুলি যদি আফ্রিকায় জনস্বাস্থ্যের প্রতিক্রিয়ার নেতৃত্ব দেয়, তবে রোগটিকে সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে এবং মৃত্যুর হার কমানো যাবে।
পশ্চিমে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পরে উচ্চ-আয়ের দেশগুলি ব্যাভারিয়ান নর্ডিক দ্বারা নির্মিত গুটিবসন্ত টিকার ডোজগুলি সঞ্চয় করতে শুরু করে। কিন্তু এই টিকা এখনও পর্যন্ত আফ্রিকার কোথাও পাওয়া যায় না। অথচ আফ্রিকার একাধিক দেশে মাঙ্কিপক্স দীর্ঘ দিন ধরে উপস্থিত।
আফ্রিকায় এমন অন্যান্য সঙ্কটও রয়েছে, যার বেশির ভাগই বিশ্বের অন্যান্য দেশে প্রত্যক্ষ করা যায় না। হিংসা, ক্রমবর্ধমান ক্ষুধার মাত্রা এবং ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি এর কয়েকটি উদাহরণ। গণমাধ্যমের মনোযোগের অভাব সঙ্কটের নিরিখে সচেতনতা এবং অর্থায়নের হ্রাস ঘটায়, যা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তোলে। ইউক্রেনের মর্মান্তিক যুদ্ধের প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ছিল দ্রুত। রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা জানাতে দেশগুলি একত্র হয়েছিল। সর্বক্ষণ পরিস্থিতির কথা গণমাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে, বেসরকারি সংস্থা এবং সরকারগুলি উদারভাবে অনুদান দিয়েছে। ইউক্রেনের যুদ্ধ আফ্রিকার সঙ্কটকে আরও অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ইউক্রেনের প্রতি আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া সঙ্কটের মুখে পড়া একটি দেশের জন্য সহযোগিতা এবং বৈশ্বিক সংহতির এক আদর্শ উদাহরণ। এমনটা আফ্রিকার ক্ষেত্রেও অবশ্য কর্তব্য এবং এটিকে আর অবহেলা করা যাবে না। মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব হল আফ্রিকাকে অবহেলা করার এক ছোট উদাহরণ, যা বিশ্বকে চোকাতে হচ্ছে।
গবেষণার জন্য অর্থায়নের উন্নতি, নির্দিষ্ট প্রকল্পে বিনিয়োগ, স্বাস্থ্যসেবা পরিকাঠামোর উন্নতি, সচেতনতা গড়ে তোলা এবং মহাদেশের প্রতি মনোযোগ দেওয়া আরেকটি অতিমারি এড়াতে এবং বিদ্যমান অতিমারি মোকাবিলায় সাহায্য করতে পারে। আমরা মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবের সময়ে দেখতে পেয়েছি যে, ভাইরাসটি সারা পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম। কোভিড-১৯ অতিমারি এবং মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিশ্বব্যাপী সংহতির গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত করেছে। যদি এই সঙ্কটগুলি তেমনটা না করতে পারে, তা হলে আর অন্য কোনও ভাবেই তা সম্ভব নয়।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.