দক্ষিণপন্থী দলগুলোর প্রান্তিক অবস্থান থেকে মূলস্রোতে উত্তরণ গত দুই দশকে ইউরোপের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ঘটনাবলির একটি। অবশ্যই নির্বাচনগুলিতে তাদের ভাগ্য বছরের পর বছর ধরে কখনও উচ্চগামী কখনও নিম্নগামী হয়েছে। কিন্তু ইতালি [ফ্রেতেলি ডি’ইতালিয়া এফডিআই (ব্রাদার্স অফ ইতালি)], সুইডেন (সুইডিশ ডেমোক্র্যাটস), হাঙ্গেরি (ফিডেজ), ও ফ্রান্সে (ন্যাশনাল র্যালি) তাদের সাফল্যের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ এই পরিবর্তনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর হয়ে উঠেছে। মূলধারার দলগুলির প্রতি আস্থার সংকটের কারণেই এই দলগুলি নির্বাচনে সাফল্য উপভোগ করেছে। সেই কারণে এই বিষয়টি অনুভূত হয় যে বর্তমান সরকারগুলি নাগরিকদের নিরাপত্তাহীনতা—যেমন জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়, শক্তির চড়া দাম, আইন ও অপরাধ, অভিবাসন ইত্যাদি—মোকাবিলায় যথেষ্ট কাজ করছে না। দক্ষিণপন্থী দলগুলি শুধু যে জনমত সমীক্ষায় ভাল ফল করেছে তাই নয়, জাতীয় এবং আঞ্চলিক নির্বাচনে আসনও পেয়েছে, আর তার ফলে সরকারের অংশীদার হোক বা না-হোক সরকারি সিদ্ধান্তগ্রহণকে প্রভাবিত করতে পেরেছে। এই দলগুলির উত্থানের প্রবণতা বিশ্লেষণ করতে এই নিবন্ধে চারটি দেশের সাম্প্রতিক নির্বাচন এবং তার ফলাফলের মূল কারণগুলি বিশ্লেষণ করা হয়েছে: হাঙ্গেরি (এপ্রিল ২০২২), ফ্রান্স (জুন ২০২২), সুইডেন (সেপ্টেম্বর ২০২২), এবং ইতালি (সেপ্টেম্বর ২০২২)।
জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের বিরুদ্ধে ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি ইত্যাদি দেশে যে বিক্ষোভ হয়েছিল তা রাজনৈতিক শ্রেণির উপর তাদের নাগরিকদের সমস্যাগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং তার সমাধানের জন্য চাপ বাড়িয়েছিল।
নির্বাচনের দিকে এক নজর
জ্বালানি সংকট, ইউক্রেনের সংঘাত, অভিবাসন ও আইনশৃঙ্খলা ইস্যু সম্পর্কিত উদ্বেগের পটভূমিতে এই দেশগুলির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের বিরুদ্ধে ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি ইত্যাদি দেশে যে বিক্ষোভ হয়েছিল তা রাজনৈতিক শ্রেণির উপর তাদের নাগরিকদের সমস্যাগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং তার সমাধানের জন্য চাপ বাড়িয়েছিল। দক্ষিণপন্থী দলগুলির নির্বাচনী অগ্রগতি মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি সাধারণ জনগণের অসন্তুষ্টির পরিচায়ক।
ভোটারদের কী আকর্ষণ করেছে?
দক্ষিণপন্থী দলগুলি জাতীয়তাবাদ এবং সাধারণত দেশনির্দিষ্ট সমস্যা ও অভিযোগ নিয়ে ব্যস্ত থাকা সত্ত্বেও দেশ–নির্বিশেষে এই দলগুলির অভিবাসী–বিরোধী মনোভাব, বেকারত্ব ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির মতো বেশ কিছু বিষয় নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। সুইডিশ ডেমোক্র্যাটস, একটি দল যেটিকে তার নব্যনাৎসি শিকড়ের জন্য চিহ্নিত করা হয়, তারা প্রচার চালিয়েছিল অভিবাসন ইস্যুতে এবং দেশে ক্রমবর্ধমান দলগত হিংসা নিয়ে, যার কারণ হিসাবে তারা তুলে ধরে উচ্চ হারে অভিবাসনের ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিকে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, আসন্ন জ্বালানি সংকট ও ইউক্রেনের সংঘাতও নির্বাচনী প্রচারের সময় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল। ইতালির নির্বাচনেও একই ধরনের ইস্যুগুলির ব্যবহার দেখা গিয়েছিল।
জর্জিয়া মেলোনির এফডিআই–এর শিকড় ইতালিয়ান সোশ্যালিস্ট মুভমেন্ট–এর সঙ্গে যুক্ত, যা ছিল ১৯৪৬ সালে বেনিতো মুসোলিনির সমর্থকদের গড়া একটি নব্য ফ্যাসিবাদী দল। তাঁর জোটের অংশীদারদের মধ্যে রয়েছেন দুই প্রবীণ দক্ষিণপন্থী নেতা, দ্য লিগ–এর মাতেও সালভিনি ও ফোরজা ইতালিয়া-র সিলভিও বারলুসকোনি। মেলোনির পক্ষে যা কাজ করেছিল তা হল শুধু তাঁর দলই মারিও দ্রাঘির নেতৃত্বাধীন ইউনিটি গভর্নমেন্ট থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যা এই দলটিকে একমাত্র বিরোধী দল করে তোলে। এর ফলে দলটি প্রতিবাদী ভোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আকর্ষণ করতে পেরেছে। তা ছাড়া মেলোনি তাঁর প্রচার চলাকালীন ইইউ, ইউক্রেন ও নর্থ অ্যাটলান্টিক ট্রিটি অরগানাইজেশন (ন্যাটো)–এর সমর্থক হিসাবে তাঁর দলের ভাবমূর্তিকে বদলে নিয়েছেন। অন্য জটিল সমস্যাগুলির মধ্যে ছিল উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয়, শক্তি, অভিবাসন এবং তরুণ ইতালীয়দের জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ।
সুইডিশ ডেমোক্র্যাটস, একটি দল যেটিকে তার নব্যনাৎসি শিকড়ের জন্য চিহ্নিত করা হয়, তারা প্রচার চালায় অভিবাসন ইস্যুতে এবং দেশে ক্রমবর্ধমান দলগত হিংসা নিয়ে, যার কারণ হিসাবে তারা তুলে ধরে উচ্চ হারে অভিবাসনের ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিকে।
ফ্রান্সে মেরিন ল প্যাঁ-র ন্যাশনাল র্যালি–র ধারাবাহিক ফলাফলের মধ্যেও এই উপাদানগুলির কিছু কিছু খুঁজে পাওয়া যায়। তাঁর দলের ভাবমূর্তি বদলে নেওয়ার পাশাপাশি ল প্যাঁ বেকারত্ব, কল্যাণকামী রাষ্ট্রের সুরক্ষা এবং ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর মতো বিষয়গুলি তুলে ধরেছিলেন। অভিবাসন ও আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর কঠোর অবস্থান উভয় বিষয়ে ন্যাশনাল র্যালি–র অবস্থানকে বৈধতা দিয়েছে। হাঙ্গেরিতে প্রেসিডেন্ট অরবানের প্রচারাভিযানের মূল বৈশিষ্ট্য ছিল ইইউ ও অভিবাসন সমস্যাগুলির প্রতি কঠোর দৃষ্টিভঙ্গি, ‘মুসলিম অভিবাসী, প্রগতিবাদ ও এলজিবিটিকিউ লবির বিরুদ্ধে ইউরোপীয় খ্রিস্টধর্মের একজন রক্ষক’ হিসাবে নিজেকে চিত্রিত করা, এবং ইউক্রেনীয় সংঘাতে হাঙ্গেরিয়ান নিরপেক্ষতার ধারণা (তিনি বলেছিলেন, এই যুদ্ধ আমাদের যুদ্ধ নয়’)।
ভোট শতাংশ
হাঙ্গেরি একটি সফল উদাহরণ তৈরি করেছে যেখানে একটি দক্ষিণপন্থী দল ফিডেজ ২০১০ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছে। ফিডেজ ২০১৮ সালের ৪৯.২ শতাংশ ভোটের তুলনায় ২০২২ সালের এপ্রিল মাসের আইনসভা নির্বাচনে ৫৩.৭ শতাংশ ভোট পেয়ে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল। এটি ছিল ১৯৮৯ সাল থেকে হাঙ্গেরির যে কোনও দলের প্রাপ্ত সর্বোচ্চ ভোট শতাংশ। ফ্রান্স আরেকটি উদাহরণ যেখানে দক্ষিণপন্থীদের ভোট শতাংশের ক্রমাগত বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গিয়েছে। মেরিন ল প্যাঁ-র অধীনে ন্যাশনাল র্যালি ২০০৭ সালের ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০২২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার ভোট ৪০ শতাংশে উন্নীত করেছে। ল প্যাঁ-র নেতৃত্বে দলটি গত দুটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় রাউন্ডের দুটি দলের মধ্যে একটি হওয়ার জন্য ক্রমাগত অগ্রগতি করেছে। দলটি দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে জাতীয়তাবাদী, প্রতিষ্ঠানবিরোধী এবং অভিবাসীবিরোধী থেকে গেলেও বর্তমান নেতৃত্বের অধীনে নতুন করে ব্র্যান্ডিং–এর ফলে এটি জেনোফোবিক বাগাড়ম্বর থেকে দূরে সরে এসেছে।
সুইডেনের সুইডিশ ডেমোক্র্যাটরা ২০১৮ সালের নির্বাচনে তাদের ১৭.৫ থেকে ভোটের শতাংশ বাড়িয়ে ২০২২–এ ২০.৬ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসাবে উঠে এসেছে। এযাবৎ কালের মধ্যে তাদের সবচেয়ে ভাল ফলাফল করে এবার দলটি জোট–সরকার গঠনে কিংমেকার হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল। ইতালিতে এফডিআই হল প্রথম অতি–দক্ষিণপন্থী দল যারা সাম্প্রতিক নির্বাচনে যে কোনও দলের প্রাপ্ত সর্বোচ্চ ভোটের শতাংশ অর্জন করেছে। ২০১৮ সালের ৪ শতাংশের তুলনায় এবার তার ভোটের ভাগ বেড়ে হয়েছে ২৬ শতাংশ।
উৎস: ভোট শেয়ারের তথ্য একাধিক উৎস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে
ভোটার উপস্থিতি
দক্ষিণপন্থী দলগুলোর সাফল্য প্রথাগত দলগুলোর প্রতি ভোটারদের অসন্তোষ, রাজনৈতিক দৃশ্যপটের অস্থিরতা, এবং সাধারণভাবে ভোটদানে বিরত থাকার ঘটনার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। চারটি দেশের নির্বাচনেই ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে হ্রাস পেয়েছে। হাঙ্গেরিতে ২০১৮ সালের ৬৩.২১ শতাংশের তুলনায় ২০২২ সালের নির্বাচনে ভোটদানের হার ছিল ৬২.৯২ শতাংশ৷ ফ্রান্সে দ্বিতীয় রাউন্ডে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল ৩৮.১১ শতাংশ, যা ৫৪ শতাংশ অনুপস্থিতির হার চিহ্নিত করে৷ এই নির্বাচনের প্রথম রাউন্ডে ৪৭.৫ শতাংশ ভোটার ভোট দেন এবং ৫২.৪৯ শতাংশ ভোটার অনুপস্থিত ছিলেন। সুইডেনে ভোটারদের উপস্থিতি সাধারণত বেশি থাকে। কিন্তু এই নির্বাচনে ২০১৮ সালের ৮৭.২ শতাংশ থেকে কমে উপস্থিতি ৮৪.২ শতাংশ হয়েছে। একইভাবে ইতালিতে গত কয়েক দশকে ভোটার উপস্থিতি কমেছে; ২০১৮ সালের ৭৩ শতাংশের তুলনায় ২০২২ সালের নির্বাচনে সেখানে ৬৪ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন।
ইউরোপের জন্য এর অর্থ কী?
একথা অস্বীকার করা যায় না যে দক্ষিণপন্থী দলগুলি ইউরোপীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থায় যথেষ্ট ছাপ ফেলেছে—কিছু দল সরকারের অংশ হয়ে উঠেছে, অন্যরা বিরোধী কণ্ঠের নেতৃত্ব দিচ্ছে। মূলধারার দলগুলিকে তাদের অ্যাজেন্ডা ও ইস্যুগুলি তুলে ধরতে বাধ্য করে এই দলগুলি নিজেদের উপস্থিতি জাহির করেছে। দক্ষিণপন্থী রাজনীতির উত্থানের কারণ হল প্রতিনিধিত্বের সংকট, রাজনীতির ক্রমবর্ধমান ব্যক্তিকরণ, রাজনৈতিক ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতা বৃদ্ধি, এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি অসন্তোষ থেকে শুরু করে বহুবিধ। এই দলগুলোর সাম্প্রতিক সাফল্য এই ঘটনাগুলির প্রতিফলন।
একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই নির্বাচনগুলি কিছু প্রতিষ্ঠিত সীমা ভেঙে দিয়েছে। ইতালিতে জর্জিয়া মেলোনি প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী, এবং তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে দক্ষিণপন্থী সরকারের নেত্রী। ইতালির সরকারি জোটে মেলোনির নেতৃত্বাধীন এফডিআই, মাতেও সালভিনির দ্য লিগ এবং সিলভিও বারলুসকোনির ফোরজা ইতালিয়া রয়েছে। যদিও এই প্রথম যে একটি দক্ষিণপন্থী জোট সরকার হয়েছে এমন নয়, তবে এ বারই প্রথম একটি অতি–দক্ষিণপন্থী দল সরকারের নেতৃত্বে রয়েছে। একইভাবে, সুইডিশ ডেমোক্র্যাটরা, যাদের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান সমাজচ্যুত বলে বিবেচনা করত, এবার ভোটের শতাংশের দিক থেকে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। এই দলটি জোট সরকারের অংশ না–হলেও ‘সরবরাহ ও আস্থা চুক্তি’ করে সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করতে সম্মত হয়েছে, এবং এরা মূল নীতিনির্ধারণের উপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। কর্ডন স্যানিটাইয়ার—যা অতি–দক্ষিণদের সরকারে যোগ দেওয়ার পথে বাধা ছিল—এই নির্বাচনে তাতে ভাঙন ধরেছে বলে মনে হচ্ছে। জোট সরকারগুলি সফল হয় কিনা তা দেখার বিষয়, তবে যা নিশ্চিত তা হল এই যে এই জোটগুলি এমন নেতা এবং দলগুলিকে একত্র করছে যারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মৌলিকভাবে একে অপরের বিরোধী।
প্রেসিডেন্ট অরবান রাশিয়ার উপর বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা, বিশেষ করে তেল সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা, শিথিল করানোর জন্য ভিটো ব্যবহার করে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, এবং বলেছেন যে ‘নিষেধাজ্ঞাগুলির ইউরোপীয় অর্থনীতির উপর তাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বড় প্রভাব রয়েছে’।
আর একটি দিক হল ইইউ–র সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে তাদের মনোভাব। প্রেসিডেন্ট অরবানের নেতৃত্বে হাঙ্গেরির অভিবাসন, বিচারবিভাগীয় সংস্কার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মতো বিষয় নিয়ে ইইউ–র সঙ্গে মতবিরোধ রয়েছে। কমিশন দেশটির বিরুদ্ধে ধারা ৭ লঙ্ঘনের কার্যক্রমও শুরু করেছে। যদিও এফডিআই, সুইডিশ ডেমোক্র্যাটস, বা ন্যাশনাল র্যালি–র নেতারা আর ইউনিয়ন থেকে প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছেন না, তাঁরা সকলেই ব্রাসেলস থেকে জাতীয় রাজধানীগুলিতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পক্ষে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে রাশিয়ার প্রতি এদের দৃষ্টিভঙ্গিও ঘনিষ্ঠভাবে লক্ষ্য করা হবে, কারণ কিছু নেতা মস্কোর উপর নিষেধাজ্ঞার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। প্রেসিডেন্ট অরবান রাশিয়ার উপর বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা, বিশেষ করে তেল সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা, শিথিল করানোর জন্য ভিটো ব্যবহার করে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, এবং বলেছেন যে ‘নিষেধাজ্ঞাগুলির ইউরোপীয় অর্থনীতির উপর তাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বড় প্রভাব রয়েছে’। ইতালিতে এফডিআই ইউক্রেনে ইউরোপীয় প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন ঘোষণা করলেও সালভিনি ও বারলুসকোনি উভয়েই তাঁদের মতামতের ক্ষেত্রে অস্পষ্ট। এই ইস্যুতে ইতালীয় সরকারের সামগ্রিক ঐক্য তার অভ্যন্তরীণ গতিশীলতার উপর নির্ভর করবে।
যদিও এই দলগুলি কিছু সাধারণ ধারণার অংশীদার, তারা ক্ষমতায় আসার পরে তাদের আচরণ কিন্তু নির্ধারিত হয় তারা যে অফিসটি দখল করতে পারল তার এবং তাদের জোট অংশীদারদের টান ও চাপের মাধ্যমে সরকারের সামগ্রিক গতিশীলতায় দ্বারা। দলগুলি আদর্শগতভাবে একই গোত্রের হতে পারে, কিন্তু সেগুলির মধ্যে আছেন এমন নেতারা যাঁদের ইইউ, ইউক্রেন–রাশিয়া, নিষেধাজ্ঞা, অর্থনৈতিক নীতি ও অভিবাসন সহ বিভিন্ন বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি ও অগ্রাধিকার পৃথক। যদিও দলীয় নেতারা প্রচারাভিযানের সময় মতপার্থক্য দূরে সরিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছেন, সরকারের অংশ হিসাবে একসঙ্গে কাজ করার সময় তা আবার আবির্ভূত হতে পারে।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.