ভূমিকা
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পাকিস্তানের ভঙ্গুর গণতন্ত্র একটি অদম্য সামরিক উত্তেজনাপূর্ণ আঞ্চলিক সম্পর্ক এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রভাবে জর্জরিত।(১) অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ক্ষয়িষ্ণু অর্থনীতির মধ্যে বেসামরিক সরকার স্থিতিশীলতা এবং সমর্থনের জন্য ক্ষমতালোভী সামরিক বাহিনীর উপর ক্রমশ আরও বেশি করে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে।(২) প্রকৃতপক্ষে, ২০২২ সাল থেকে বিদ্যমান অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দোদুল্যমান অবস্থা দেশের রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর সম্পৃক্ততার প্রভাবকেই দর্শিয়েছে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটলে শেষ পর্যন্ত তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত ও কারাবাসের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়।(৩) শীর্ষস্থানীয় সামরিক নিয়োগ ও নীতিগত সিদ্ধান্ত এবং তার দুর্বল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সামরিক প্রধানের সঙ্গে ইমরান খানের প্রকাশ্য সংঘর্ষের কারণেই তিনি সেনাবাহিনীর সমর্থন হারান, যে সমর্থন বিরোধীদের ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে ইমরানকে ক্ষমতায় আনতে সাহায্য করেছিল।(৪)
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের নির্বাচন দেশীয় রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর সম্পৃক্ততাকে দর্শিয়েছে। যে বিভ্রান্তি এবং অব্যবস্থাপনার মাঝে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছিল, তা ভোট কারচুপির ব্যাপক দাবিকে উস্কে দিয়েছে।(৫) নির্বাচনের ফলাফল একটি পরিশীলিত নির্বাচনী প্রচারেরও ইঙ্গিত দেয় এবং সামরিক বাহিনী সম্ভবত নির্বাচনকে আকার দিয়েছিল।(৬) ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ-এর (পিটিআই) স্পষ্ট আধিপত্য থাকা সত্ত্বেও, সেনাবাহিনীর কৌশলগত পদক্ষেপ তাঁকে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে বাধা দেয়। উল্লেখযোগ্য ভাবে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ তাঁর ভাই শাহবাজ শরিফের পক্ষ নিয়েছেন, যিনি একজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ-এর (পিএমএল-এন) নেতা এবং এই পদক্ষেপ কৌশলগত ভাবে সেনাবাহিনীর স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে পিএমএল-এন এর সামরিক কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করার ইতিহাস ইমরান খানের তুলনায় ঢের বেশি। নওয়াজের প্রধান মিত্রদের কৌশলগত ভাবে দুর্বল করে দিয়ে এবং আপাতদৃষ্টিতে সমর্থনকারী দলগুলির মধ্যে প্রাদেশিক সরকার বণ্টন করে সামরিক বাহিনী গণতান্ত্রিক প্রতিনিধিত্বের সম্মুখভাগ রক্ষা করার উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক আখ্যানে কার্যকর ভাবে নিজের দখল বজায় রাখবে। এই সূক্ষ্ম কারসাজি পাকিস্তানি রাজনীতির জটিলতাগুলির মাঝে পথ খুঁজে নেওয়ার ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনীর দক্ষতাকেই দর্শায় এবং দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোয় সেনাবাহিনীর অবিরাম প্রভাবকে সুনিশ্চিত করে।
শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর ব্যাপক প্রভাব এবং হস্তক্ষেপের কারণে পাকিস্তানকে ‘স্বৈরাচারী’ দেশ বলে গণ্য করা হয় এবং সেনাবাহিনী দেশের রাজনৈতিক গতিশীলতাকে আকার দেয় এবং প্রায়শই নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।(৭) আধুনিকীকরণ(ক)(৮) এবং নির্ভরতাশীলতার(খ)(৯) মতো কিছু তত্ত্ব বিশ্বব্যাপী দেশগুলিতে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অভাব এবং কর্তৃত্ববাদের উত্থানের কারণ ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করে। আধুনিকীকরণের তত্ত্ব দর্শায় যে, উন্নয়নের নিরিখে পাকিস্তানের সংগ্রামের সঙ্গে জড়িত ঐতিহ্যগত মূল্যবোধ, পরিবর্তনের প্রতিরোধ এবং অপ্রতুল শিক্ষাগত অগ্রগতি। সমাজের আধুনিকীকরণের সঙ্গে সঙ্গে এই তত্ত্বটি গণতন্ত্রের দিকে উত্তরণের প্রত্যাশা রাখলেও পাকিস্তান সামরিক প্রশাসনের সাক্ষী থেকেছে, যা প্রত্যাশিত গণতান্ত্রিক গতিপথ থেকে বিচ্যুতিকেই দর্শায়। অন্য দিকে, নির্ভরশীলতার তত্ত্ব দর্শায় যে, অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী দেশগুলির উপর নির্ভর করার জন্য পাকিস্তানের অনুন্নয়ন ঘটেছে। দেশটি প্রায়শই বিদেশি সাহায্যের প্রত্যাশায় থেকেছে, বিশেষ করে অর্থনৈতিক দুরবস্থার সময়, যার ফলে বৈদেশিক শক্তির উপর দেশটির নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বাহ্যিক নির্ভরশীলতা ক্ষমতার সম্পর্কে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করেছে, যা স্বাধীন অর্থনৈতিক নীতি গঠনে পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনকে সীমিত করেছে। বাহ্যিক চাপের প্রতিক্রিয়ায় -বিশেষ করে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কারণে নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পাওয়া দরুন - পাকিস্তান সামরিক হস্তক্ষেপের সাক্ষী থেকেছে এবং সেনাবাহিনীর তরফে এই পদক্ষেপকে নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ব্যবস্থা হিসাবে দর্শানো হয়েছে। বাহ্যিক নির্ভরতা এবং কর্তৃত্ববাদী প্রশাসনের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক এমন এক বিন্যাসকেই দর্শায়, যেখানে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে স্থিতিশীলতার প্রয়োজনীয়তা মাঝে মাঝে পাকিস্তানে কর্তৃত্ববাদী নিয়ন্ত্রণের দাবির দিকে চালিত করে। এ ভাবে, পাঠ্যপুস্তক, জনপ্রিয় উর্দু গণমাধ্যম এবং সংবাদ মাধ্যমে সামরিক জেনারেলদের প্রায়শই সাহসিকতার প্রতীক এবং ইসলামের প্রকৃত প্রতিনিধি হিসাবে তুলে ধরা হয়।(১০)
সামরিক আখ্যান (বা ইরানের নীতি পুলিশের মতো নিরাপত্তা বাহিনী) এবং ইসলামিক মূল্যবোধের আন্তঃসংযোগ রাজনৈতিক ও সামাজিক আলোচনার একটি স্বতন্ত্র দিক, যা ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবকে প্রতিফলিত করে এবং যা ইসলামি কাঠামোর মধ্যে সামরিক নেতৃত্বের ধারণাকে আকার দেয়।(গ) ইসলামি দেশগুলিতে জনগণের সীমিত প্রতিরোধ হওয়ার দরুন এই ধরনের আখ্যান ও চিত্রায়ণ সামরিক অভ্যুত্থানকে সক্ষম করেছে এবং সশস্ত্র বাহিনীকে তাদের ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক স্বার্থ পূরণের প্রয়োজনে বেসামরিক সরকারকে অপসারণ করার আত্মবিশ্বাস প্রদান করেছে।(১১) পাকিস্তানে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতামূলক প্রচারের ব্যবহার সামরিক অভ্যুত্থানকে বৈধতা দেয় এবং সশস্ত্র বাহিনীকে দেশ, তার আদর্শ এবং জনগণের একমাত্র রক্ষক হিসেবে উপস্থাপন করে।(১২) অন্যান্য উত্তর-ঔপনিবেশিক দেশের মতো পাকিস্তান সমাজ হিসেবে অনুন্নত সমাজ এবং রাষ্ট্র হিসেবে তার জটিলতা অনেক বেশি।(ঘ)(১৩) অব্যবহিত ভাবে রাজনৈতিক দল, নির্বাচন এবং সংবিধান নির্মাণ-সহ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার কার্যকারিতায় বিঘ্ন ঘটায়। যাই হোক, শুধু মাত্র কাঠামোগত অবস্থা, যেমন আমলাতান্ত্রিক শক্তি ও কেন্দ্রীভূত ক্ষমতাই স্থিতিশীল সামরিক সম্পৃক্ততার একমাত্র চালিকাশক্তি নয়। সশস্ত্র বাহিনীর জনপ্রিয় বৈধতা উল্লেখযোগ্য ভাবে তাদেরকে ইসলামের ত্রাণকর্তা ও অভিভাবক হিসাবে চিত্রিত করার মাধ্যমে এমন এক আখ্যান তুলে ধরতে সক্ষম করে তোলে, যা তাদেরকে রাজনৈতিক আধিপত্য জাহির করার জন্য জনসমর্থন ও আত্মবিশ্বাস জোগায়।
এই নিবন্ধে পাকিস্তানে সামরিক বাহিনীর স্থায়ী ও উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক প্রভাবের বিশ্লেষণ করে ঐতিহাসিক, সামাজিক ও ভূ-রাজনৈতিক কারণগুলির মূল্যায়ন করা হয়েছে, যা দেশের শাসন কাঠামোয় সশস্ত্র বাহিনীর বড় ভূমিকায় অবদান রেখেছে।
পাকিস্তানের কৌশলগত সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ
কৌশলগত সংস্কৃতি হল একটি রাজনৈতিক সত্তার মধ্যে প্রশাসক অভিজাতদের বিশ্বাস, নিয়ম, মূল্যবোধ ও ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতার সমষ্টিগত সংমেল; নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যাগুলি এই ব্যাখ্যাকে আকার দেয় এবং একটি ধারণামূলক কাঠামো প্রদান করে নীতির প্রতিক্রিয়া নির্দেশ করে, যার মাধ্যমে নীতিনির্ধারকরা বাহ্যিক নিরাপত্তা গতিশীলতা পর্যবেক্ষণ করেন এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেন।(১৪) কৌশলগত সংস্কৃতি আন্তঃরাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহে সামরিক শক্তির ভূমিকা ও কার্যকারিতার ধারণা নির্ণয়ের মাধ্যমে এবং এই ধারণাগুলিকে যাতে অনন্য রকমের বাস্তব ও কার্যকরী বলে মনে হয়, তার জন্য বাস্তবতার এক মোড়কে ঢেকে ‘রাষ্ট্রগুলির জন্য বিস্তৃত এবং দীর্ঘস্থায়ী কৌশলগত পছন্দ’ স্থাপন করে।’(১৫) উত্তর-ঔপনিবেশিক যুগে সামরিক প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক শাসনের মধ্যে জটিল সম্পর্ক সদ্য স্বাধীন দেশগুলির গতিপথ গঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।(১৬) পাকিস্তান তেমনই একটি দেশ। রাজনৈতিক পরিসরের মধ্যে সামরিক বাহিনীর উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তারের এই স্থায়ী সমস্যাটি শুধু মাত্র ঔপনিবেশিক যুগ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারকেই দর্শায় না, বরং একটি স্বাধীন জাতির ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ ও আকাঙ্ক্ষাকেও তার পরিচয় ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য সচেষ্ট করে তোলে।(১৭)
এই ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকার পাকিস্তানের ‘কৌশলগত সংস্কৃতি’র একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য এবং এর নিরাপত্তা নীতিনির্ধারকদের ভাবমূর্তি এবং আচরণে তা স্পষ্ট। পাকিস্তানের নিরাপত্তা প্রদানকারী নেতৃবৃন্দের স্বভাব স্বাধীনতার প্রথম দিকের ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা, আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিবেশ সম্পর্কে তাঁদের মূল্যায়ন এবং হুমকি সম্পর্কে তাঁদের ধারণার মতো বিষয়গুলির দ্বারা আকার পায়। এটি তাঁদের বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গি, রাজনৈতিক ও সামরিক উন্নয়নে তাঁদের ব্যাখ্যা, প্রতিপক্ষ সম্পর্কে তাঁদের উপলব্ধি এবং তাঁদের নীতির বিকল্পগুলিকে আকার দেয়।(১৮) এই হিসাব অনুযায়ী পাকিস্তানের কৌশলগত সংস্কৃতির সংক্ষিপ্তসার করা যেতে পারে এই ভাবে: ‘(ক) ভারতের সঙ্গে অস্থির সম্পর্ক এবং আফগানিস্তানের সঙ্গে সমস্যার কারণে স্বাধীনতা-পরবর্তী বছরগুলিতে পাকিস্তানে একটি তীব্র নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছিল। (খ) ভারতের প্রতি একটি দৃঢ় অবিশ্বাস এবং প্রাক-স্বাধীনতা সময়কালের ঐতিহাসিক আখ্যান ও স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে সমস্যাজনক দ্বিপাক্ষিক মিথস্ক্রিয়া দ্বারা শক্তিশালী হয়েছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ইতিহাস। (গ) দক্ষিণ এশিয়ার জন্য ভারত-প্রধান আঞ্চলিক শক্তি ব্যবস্থার বিরোধিতা করে এসেছে পাকিস্তান। (ঘ) বিদেশি নীতির বিকল্প এবং দেশীয় নীতি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নিজের স্বাধীনতা বজায় রাখার জন্য নিরাপত্তার বিষয়ে সক্রিয় অনুসন্ধান চালিয়েছে দেশটি।(১৯) (ঙ) ইসলাম এবং কৌশলগত চিন্তার মধ্যে একটি নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান, যা ইসলামি জঙ্গিবাদ ও বিদেশ নীতির মধ্যে সংযোগের দিকে চালিত করে।’(২০)
পাকিস্তান সামরিক বাহিনী তার সাংগঠনিক কাঠামোর মৌলিক নীতি হিসেবে পেশাদারিত্ব, শ্রেণিবিন্যাস, শৃঙ্খলা এবং পরিষেবা প্রদানের গর্বের সঙ্গে ইসলামি নীতিগুলিকে সমন্বিত করার উপর জোর দেয়। সামরিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে ইসলামি শিক্ষা, ইতিহাস (বিশেষ করে উল্লেখযোগ্য ইসলামিক যুদ্ধ), এবং উল্লেখযোগ্য মুসলিম সেনাপতিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। শহিদ (যুদ্ধে মৃত্যুবরণ), গাজি (বিজয়ী) এবং জিহাদ-ই-ফি-সিবিলাল্লাহ-র (আল্লাহ-র নামে পবিত্র যুদ্ধ) এর মতো মূল ইসলামি ধারণাগুলিকে শান্তিকালীন ও যুদ্ধকালীন উভয় ক্ষেত্রেও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জন্য অনুপ্রেরণার প্রধান উত্স হিসাবে দর্শানো হয়েছে।(২১) পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার সঙ্গে ইসলামের ঘনিষ্ঠ সংযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির প্রতিরক্ষাকে - বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে লড়াইকে - বেসামরিক এবং সামরিক নেতারা ইসলামকে সুরক্ষিত রাখার লড়াই হিসাবে চিত্রিত করেছেন। ১৯৬৫ এবং ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় সামরিক কর্মীদের সমাবেশ ও যুদ্ধ প্রচেষ্টার জন্য জনসমর্থন অর্জনের উদ্দেশ্যে এই ধারণাগুলির জন্ম হয় এবং ইসলামি প্রতীকগুলির প্রচলন চালু হয়েছিল।(২২)
১৯৭০-এর দশক থেকে সামরিক বাহিনীতে ইসলামি রক্ষণশীলতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, মধ্য ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পটভূমি থেকে আগত আধিকারিকদের প্রতিনিধিত্বও বৃদ্ধি পায়, যাঁদের অনেকেরই রক্ষণশীল ধর্মীয় অনুষঙ্গ রয়েছে। ইসলামিক রক্ষণশীলতা ১৯৮০-এর দশকে বিভিন্ন কারণের দরুন আরও গতি লাভ করে। প্রেসিডেন্ট হিসাবে জেনারেল জিয়া-উল-হকের শাসনামলে (১৯৭৭-১৯৮৮) সামরিক বাহিনীর মধ্যে ইসলামের উপর জোর দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পায়। বৈধতার সঙ্কটের সম্মুখীন হয়ে জিয়ার সামরিক শাসন তাঁর শাসনের জন্য সমর্থন গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে গোঁড়া ইসলামিক আদেশ এবং গোঁড়া ইসলামি দলগুলিকে একত্রিত করতে সমর্থ হয়েছিল। এটি ১৯৭০ এবং ১৯৮০-র দশকে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অভিযোজন সংক্রান্ত পরিবর্তনের সঙ্গে আরও সাযুজ্যপূর্ণ। জিয়া প্রশাসন সেনাবাহিনীর মধ্যে ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রকাশ্য অভিব্যক্তিকে সমর্থন করেছিল, উৎসাহ জুগিয়েছিল এবং বিশেষ কিছু গোঁড়া ধর্মীয় গোষ্ঠীকে সামরিক বাহিনীর মধ্যে উপস্থিতি প্রতিষ্ঠার সুযোগ করে দিয়েছিল।(২৩)
সর্বোপরি, আফগান সংঘাত (১৯৭৯-১৯৮৯) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কর্মীদের মধ্যে ইসলামিক রক্ষণশীলতাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।(২৪) তাঁদের মধ্যে অনেকেই সক্রিয় ভাবে আফগানিস্তানে সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে নিয়োজিত ইসলামি দল এবং আফগান প্রতিরোধ দলগুলির সঙ্গে সহযোগিতা করেছিল। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য, বিশেষ করে যাঁরা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স-এর (আইএসআই) সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাঁরা মনে করতেন যে, আফগান অভিজ্ঞতা থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা যেতে পারে এবং এটিকে মুসলিম জনসংখ্যার উপর অমুসলিম আধিপত্য মোকাবিলার একটি সম্ভাব্য উপায় হিসাবে দেখা হয়েছিল।(২৫)
পাকিস্তানের কৌশলগত সংস্কৃতি তার নিরাপত্তা ও বিদেশনীতি পছন্দকে উল্লেখযোগ্য ভাবে প্রভাবিত করেছে।(২৬) এই কৌশলগত সংস্কৃতির মূল দিকগুলির মধ্যে অন্যতম হল দক্ষিণ এশিয়ায় একটি বহুত্ববাদী শক্তি কাঠামোর পক্ষে সওয়াল করা, বাহ্যিক নিরাপত্তা উদ্বেগের উপর জোর দেওয়া, সম্ভাব্য প্রতিপক্ষকে প্রতিহত করার জন্য সামরিক সক্ষমতার বিকাশ, প্রতিরক্ষার জন্য সম্পদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বরাদ্দ করা, বিদেশি উত্স থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করা, নিজের আঞ্চলিক অবস্থানকে সশক্ত করার জন্য বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনীতি ও জোট নির্মাণের উপর জোর দেওয়া। এর পাশাপাশি পাকিস্তান ভারতের পারমাণবিক পরীক্ষার প্রতিক্রিয়া হিসেবে তার পারমাণবিক অবস্থা প্রকাশ্যে ঘোষণা করা এবং তার বৈদেশিক নীতির উদ্দেশ্যগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে ব্যবহার করার মতো কৌশলগুলি মেনে চলেছে। যাই হোক, পাকিস্তানের কৌশলগত সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র তার কৌশলগত সংস্কৃতি দ্বারাই চালিত হয় না, বরং বাস্তববাদ, পেশাদারিত্ব এবং সাংগঠনিক বাধ্যবাধকতার মতো কারণগুলিও এ ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে। প্রকৃতপক্ষে, বাস্তববাদ এবং সাংগঠনিক বাধ্যবাধকতা অনেক ক্ষেত্রে পাকিস্তানি সামরিক দৃষ্টিভঙ্গি ও সিদ্ধান্তগুলিকে প্রভাবিত করেছে।(ঙ) কখনও কখনও একটি কারণ অপরটির সঙ্গে দ্বন্দ্বমূলক অবস্থানে থাকে, যা নীতিনির্মাতাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমস্যা সৃষ্টি করে। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসবাদী হামলার পরে পাকিস্তান যে ভাবে ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠীগুলিকে মোকাবিলার চেষ্টা করেছে, তাতে তা স্পষ্ট। পাকিস্তান ঐতিহাসিক ভাবে তার কৌশলগত লক্ষ্যগুলির জন্য এই ধরনের গোষ্ঠীগুলিকে ব্যবহার করেছিল এবং আন্তর্জাতিক চাপ, বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদ দমন প্রচেষ্টার বিষয়ে এমনটা করতে বাধ্য করেছিল। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সন্ত্রাসবাদী হামলার পরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুনরায় সম্পৃক্ত হওয়ার ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে দেশটির বিবর্তিত কৌশলগত সম্পর্ক এবং মুসলিম বিশ্বে গণতন্ত্রের সমস্যাটির সঙ্গে সমাপতিত হয়। যদিও এটি সেনাবাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে চলা কতগুলি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীকে সমর্থন করার ব্যাপারে পাকিস্তানি স্বার্থের প্রতিকূল হয়ে দাঁড়ায়।(২৭) এটি নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলি পরিচালনার নিজস্ব প্রতিষ্ঠিত উপায় এবং ২০০১-পরবর্তী পরিসরের পরিবর্তনে আন্তর্জাতিক প্রত্যাশার সঙ্গে সমাপতিত হওয়ার প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরে।(২৮)
জিয়া-পরবর্তী সময়ে ১৯৮০-র দশকের শেষের দিক থেকে পাকিস্তানে সামরিক শাসনের চরিত্র একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এগিয়েছে এবং সামরিক বাহিনী সরাসরি সম্পৃক্ততার পরিবর্তে রাজনৈতিক প্রভাবের আরও পরোক্ষ অনুশীলনে রূপান্তরিত হয়েছে।(২৯) প্রকৃতপক্ষে, পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিসর দীর্ঘকাল ধরে সামরিক বাহিনীর বিশিষ্ট ভূমিকা দ্বারা চিহ্নিত হয়েছে, যেখানে বেসামরিক রাজনীতিবিদরা একই সঙ্গে সমালোচনা বা বিচক্ষণতার সঙ্গে প্রভাবশালী নিরাপত্তা সংস্থার কাছ থেকে সহায়তা চাওয়ার উদ্দেশ্যে সমর্থন কুড়োনোর জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কিছু রাজনীতিবিদ নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষার জন্য সেনাবাহিনীর সঙ্গে চুক্তি করলেও পাকিস্তানের সাধারণ জনগণ তাঁদের ক্ষমা করেননি। রাজনৈতিক বিষয়ে সামরিক বাহিনীর সম্পৃক্ততা নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ অব্যাহত রয়েছে, যা পাকিস্তানের রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।(৩০)
পাকিস্তানের একটি মিশ্র রাজনৈতিক সংস্কৃতি রয়েছে। সামরিক বাহিনী রাজনৈতিক উন্নয়ন গঠনে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করেছে, কখনও কখনও সরাসরি সরকারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং বাকি সময়ে পর্দার আড়ালে থেকে প্রভাব বিস্তার করেছে।(৩১) জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে সামরিক প্রভাবের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে এই সঙ্কর বৈশিষ্ট্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে, যেখানে বেসামরিক এবং সামরিক নেতা উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নিরাপত্তা নীতির সিদ্ধান্ত গ্রহণে অবদান রাখেন। উপরন্তু, গোয়েন্দা সংস্থা, বিশেষ করে আইএসআই, বেসামরিক এবং সামরিক পরিসরের মধ্যকার রেখাকে অস্পষ্ট করে দিয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, সামরিক শাসকরা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দুর্নীতি ও বেসামরিক সরকারগুলির অব্যবস্থাপনার মতো বিষয়গুলির কারণে নিজেদের হস্তক্ষেপকে ন্যায্যতা প্রদান করে ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে কারচুপি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছিল।(৩২)
সামরিক বাহিনীর প্রভাব রাষ্ট্রীয় ও আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি খাত, শিল্প, কৃষি, শিক্ষা, পরিবহণ এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রেও বিস্তৃত। প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিবর্তে সামরিক বাহিনীর প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল ডিফেন্স হাউজিং সোসাইটির সংখ্যা বৃদ্ধি করে পাকিস্তানের শহর জুড়ে নিজেদের উপস্থিতি বিস্তৃত করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য তার কর্পোরেট স্বার্থকে রক্ষা করা।(চ)(৩৩) উল্লেখযোগ্যভাবে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী দেশের ১২ শতাংশ জমির মালিক, যার দুই-তৃতীয়াংশ ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের মালিকানাধীন।(৩৪)
দু’বার (১৯৪৭ এবং ১৯৬৫ সালে) কাশ্মীরকে সংযুক্ত করতে ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও এবং ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানকে হারানো সত্ত্বেও পাকিস্তান সামরিক বাহিনী নিজেকে দেশের একমাত্র রক্ষক ও প্রকৃত দেশপ্রেমিক হিসাবে উপস্থাপন করে সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে চলেছে। যাই হোক, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পাকিস্তানি নাগরিকরা সশস্ত্র বাহিনী দ্বারা ভোগ করা সংবিধান বহির্ভূত ক্ষমতা, সুযোগ এবং সুবিধা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং এমনকি অসন্তোষও প্রকাশ করেছে।(৩৫)
রাজনীতিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততার বিনির্মাণ
ব্রিটিশ ভারত বিভাজন ও পাকিস্তান সৃষ্টির সময় সেনাবাহিনীকে নবজাত দেশটি রক্ষা করা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ফলস্বরূপ, পাকিস্তান একটি ‘উন্নয়নমূলক রাষ্ট্র’ না হয়ে একটি ‘নিরাপত্তামূলক রাষ্ট্র’-এর চরিত্র ধারণ করে, যার অর্থ হল দেশের প্রাথমিক মনোযোগ এবং সম্পদের বরাদ্দ জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা ও নিরাপত্তা-সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য অসামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে পরিচালিত হয়েছিল এবং প্রায়শই অন্যান্য খাতে ব্যয় হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে, পাকিস্তান ধারাবাহিকভাবে তার সম্পদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সেনাবাহিনীর জন্য বরাদ্দ করেছে, যে অর্থের পরিমাণ অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং কল্যাণের মতো ক্ষেত্রে বরাদ্দকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে।(৩৭)
স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে, পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ আলি জিন্না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সামরিক ও আর্থিক সহায়তা চেয়েছিলেন, যার মধ্যে সেনাবাহিনীর জন্য ১৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, বিমানবাহিনীর জন্য ৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, নৌবাহিনীর জন্য ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং শিল্প ও কৃষি উন্নয়নের জন্য ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার করে বরাদ্দ ছিল। ১৯৫০ সালে পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খান ওয়াশিংটনের কাছে ইসলামাবাদের ‘ভূ-রাজনৈতিক তাত্পর্য’কে জোর দেওয়ার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যানের সঙ্গে দেখা করেন। আরব সাগর অঞ্চলে অনুভূত সোভিয়েত উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিষয়ে উদ্বেগ দ্বারা চালিত মার্কিন সহায়তার জন্য পাকিস্তানের সাধনা নিঃসন্দেহে একটি কৌশলগত পদক্ষেপ ছিল।(৩৮)
পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিসরে সামরিক বাহিনীর সম্পৃক্ততা বিভিন্ন রূপে প্রকাশ পেয়েছে, যার মধ্যে পর্যায়ভিত্তিক অভ্যুত্থান, বেসামরিক সরকার পতন এবং দুর্বল প্রশাসনের উপর পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণ অনুশীলন করাও অন্তর্ভুক্ত।(৩৯) এই হস্তক্ষেপগুলি প্রায়শই বিচার বিভাগ, বেসামরিক আমলাতন্ত্র, মিত্র রাজনীতিবিদ, ধর্মীয় নেতা ও কর্পোরেট ক্ষেত্রের অন্তর্গত উপাদানগুলি-সহ অন্যান্য প্রভাবশালী শক্তির সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে সংঘটিত হয়, যা সম্মিলিত ভাবে পাকিস্তানে ‘দি এস্টাবলিশমেন্ট’(৪০) নামে পরিচিত। অব্যবহিত ভাবে রাজনীতিবিদরা নিজেদের সীমাবদ্ধতার ফলে সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে শুরু করেন, যার ফলে প্রাতিষ্ঠানিক সীমানা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি), পিএমএল-এন এবং পিটিআই-এর মতো কয়েকটি রাজনৈতিক দল অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিসরে আধিপত্য বিস্তার করে, যা রাজনৈতিক ব্যবস্থার উপর প্রভাব বিস্তারের জন্য সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে বৃহত্তর কারসাজির সুযোগ করে দেয়। সেনাবাহিনী ঐতিহাসিক ভাবে কিছু রাজনৈতিক নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে শুধু মাত্র নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে। এই কারসাজি শুধু নির্বাচনী পরিসরকেই প্রভাবিত করেনি, বরং একই সঙ্গে পাকিস্তানে সামরিক বাহিনীর রাজনৈতিক শক্তির বিস্তৃত আখ্যানেও অবদান রেখেছে। অতএব, সামরিক ও রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বোঝা - বিশেষ করে পৃষ্ঠপোষকতা এবং নির্বাচনী গতিশীলতার পরিপ্রেক্ষিতে - দেশের অনন্য রাজনৈতিক ব্যবস্থা বোঝার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সশস্ত্র বাহিনীর বিশ্বাসযোগ্যতা ও দক্ষ পেশাদারিত্ব সফল সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের মাধ্যমে প্রদর্শিত হয়েছে, যেমন অপারেশন জারব-ই-আজব জনগণের আস্থা বৃদ্ধি করে এবং এর ফলে সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধি পায়।(ছ) সেনাবাহিনীর অর্থনৈতিক স্বার্থ তার ব্যবসার মালিকানা ডিফেন্স হাউজিং অথরিটি এবং ফ্রন্টিয়ার ওয়ার্কস অর্গানাইজেশন-এর মতো অবকাঠামো প্রকল্পে অংশগ্রহণেও প্রতিফলিত হয়।(৪১) অন্য দিকে, বিচার বিভাগের সাথে সন্দেহজনক মিথস্ক্রিয়া বিচার বিভাগের কথিত স্বাধীনতাকে খর্ব করেছে। ‘পাকিস্তানের আট দশক দীর্ঘ ইতিহাসের বেশির ভাগ সময় দেশের আদালতগুলি মূলত দেশের শক্তিশালী সেনাবাহিনীর পক্ষে থেকেছে। আদালতগুলি তিনটি অভ্যুত্থানকে আইনি অনুমোদন দিয়েছিল, কয়েক ডজন সেই রাজনীতিবিদকে অযোগ্য ঘোষণা করেছিল যাঁরা জেনারেলদের বিপক্ষে কথা বলেছিলেন এবং রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের অন্তর্ধান থেকে নজর সরিয়ে নিয়েছিল।(৪২) সর্বোপরি, বিদেশি শক্তিগুলির জন্য পছন্দের অংশীদার হিসাবে সেনাবাহিনীর কৌশলগত অবস্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের জোটগুলিতে স্পষ্ট, যা পাকিস্তানের রাজনৈতিক অবদানে আন্তর্জাতিক সমর্থনের গুরুত্বকে দর্শায়।
ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনা পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিসরে সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার উপর জোর দেয়। স্থায়ী প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ক্রমাগত নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ দ্বারা জর্জরিত একটি অঞ্চলে পাকিস্তান জটিল হুমকি এবং কৌশলগত বাধ্যবাধকতার সঙ্গে যুঝছে। জাতীয় নিরাপত্তার অভিভাবক হিসেবে সেনাবাহিনীর ভূমিকা এই ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতাগুলি দ্বারা ধারাবাহিক ভাবে সশক্ত হয়েছে, যা বিদেশি নীতির সিদ্ধান্তগুলি গঠনে এবং নিরাপত্তা কৌশল প্রণয়নে সেনাবাহিনীর গভীর সম্পৃক্ততার পক্ষে যুক্তি প্রদান করে। বেসামরিক কর্তৃপক্ষ ও সামরিক কর্মকর্তারা উভয়ই দাবি করেন যে, পাকিস্তান তার শুরুর দিন থেকে ক্রমাগত জরুরি অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে। তাঁরা বিতর্কিত কাশ্মীর(৪৩) অঞ্চলের ব্যাপারে ভারতীয় শত্রুতা এবং আফগান অপ্রতিরোধ্যতাকে পাকিস্তানের আঞ্চলিক অখণ্ডতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হুমকি বলে উল্লেখ করেছেন।
রাজনৈতিক ব্যবস্থার উপর পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ ছ’টি বিস্তৃত কারণের মাধ্যমে সুস্পষ্ট:
- বেসামরিক প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা
পাকিস্তান তার রাজনৈতিক পরিসরে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের পুনরাবৃত্তি প্রত্যক্ষ করেছে, যেটিকে প্রায়শই বেসামরিক প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা বলে মনে করা হয়।(৪৪) এই ঘটনাটিকে(৪৫) 'পরিকল্পিত সামরিকবাদ' (অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করা এবং সম্প্রসারণবাদী বিদেশনীতি অনুসরণ করার ইতিবাচক ও পূর্বপরিকল্পিত অভিপ্রায়) বা ‘প্রতিক্রিয়াশীল সামরিকবাদ’-এর (সামরিক শক্তির সম্প্রসারণ যা বেসামরিক প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা এবং সেনাবাহিনীর ভূমিকা প্রসারিত করার জন্য বেসামরিক নাগরিকদের চাপের দরুন ঘটে) আলোকে বোঝা যায়। জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ুব খানের হস্তক্ষেপ ছিল সামরিকবাদের পরিকল্পিত রূপ, জিয়ার ভূমিকা ছিল প্রতিক্রিয়াশীল(৪৬) এবং মোশাররফ শাসনকে পূর্ববিবেচিত বলে ভাবা যেতে পারে।(জ)
সেনাবাহিনীর শক্তিশালী ভূমিকা প্রাথমিক পর্যায় থেকেই দু’টি উত্তরাধিকারের মধ্যে নিহিত। প্রথমত, এই প্রচলিত সামরিক ধারণা রয়েছে যে, বেসামরিক নাগরিকদের একটি স্থিতিশীল, কার্যকরী সরকার প্রতিষ্ঠা বা কার্যকর ভাবে রাষ্ট্রীয় বিষয়গুলি পরিচালনা করার কোনও ক্ষমতা নেই। এ হেন উপলব্ধিটি সেনাবাহিনীর মধ্যে দেশের একমাত্র ত্রাণকর্তা হিসাবে একটি আত্ম-পরিচয় প্রদানের দিকে পরিচালিত করে, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের জন্য একটি ‘প্রয়োজনীয় মতবাদ’-এর ন্যায্যতা প্রদান করে, বিশেষ করে নেতৃত্ব নির্বাচন এবং অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে। এর পাশাপাশি সেনাবাহিনী একটি ‘স্বতঃপ্রণোদিত’ মনোভাব গ্রহণ করে জনসাধারণের নীতির সংরক্ষিত পরিসরগুলি তৈরি করেছে, যেমন তার নিজস্ব ব্যবসায়িক কার্যক্রমে জড়িত হওয়া (যাকে একজন বিশ্লেষক ‘মিলবাস’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন, মূলত ‘সেনার মূলধন সামরিক কর্তাব্যক্তিদের ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য ব্যবহৃত হয়’(৪৭)) অন্য দিকে সেনাবাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের প্রতি গৃহীত নীতির তুলনায় স্বাধীন একটি বিদেশনীতি অনুসরণ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী হয়েছে। এটি অসাবধানতাবশত দেশটির সাংগঠনিক বিষয়ে সেনাবাহিনীকে স্বায়ত্তশাসন প্রদান করে। দ্বিতীয়ত, অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশ শাসনের অব্যবহারিকতাকে স্বীকার করে সেনাবাহিনী সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় প্রভাব বজায় রাখার লক্ষ্য রেখে চলেছে। আমলাতন্ত্র ও কেন্দ্রীয় স্তম্ভ হিসাবে সামরিক বাহিনীকে নিয়ে গঠিত ঔপনিবেশিক দ্বিমুখী সরকার ব্যবস্থা চালিয়ে যাওয়ার জন্য অ-নির্বাচিত বেসামরিক নেতৃত্বের পছন্দ শুধুমাত্র সেনাবাহিনীকে রাজনীতিতে টেনে আনেনি, বরং ‘ত্রয়ী ব্যবস্থা’র ভিত্তিও স্থাপন করেছে।(ঝ)(৪৮) সেনাবাহিনী এবং নাগরিক সমাজের মধ্যে এই ক্ষমতা ভাগাভাগির ব্যবস্থা ১৯৭২ সালের পর পাকিস্তানের রাজনীতিতে প্রবেশ করে। এই উত্তরাধিকারের ক্রমবর্ধমান প্রভাব রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর ক্রমাগত জড়িয়ে পড়ার বিষয়টিকে তুলে ধরে, যা বেসামরিক প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার ধারণা দ্বারা আকার পেয়েছে।(৪৯)
পাকিস্তানের নির্বাচনী শাসন বেসামরিক নিয়ন্ত্রণের অভাব দ্বারা উল্লেখযোগ্য ভাবে প্রভাবিত হয়েছে, বিশেষ করে ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে সে কথা স্পষ্ট। সুনিশ্চিত ফলাফলের জন্য গোয়েন্দা পরিষেবার সহায়তায় নির্বাচনগুলিতে ব্যাপক ভাবে কারচুপি করা হয়েছিল, যাতে সশস্ত্র বাহিনীর অব্যাহত রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা সুনিশ্চিত করা যায়। নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলি অভ্যন্তরীণ বিভাজনের কারসাজি, নতুন দল গঠন, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রত্যাহারের জন্য চাপ, নির্বাচনী প্রচারের উপর বিধিনিষেধ আরোপ এবং নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রতি পক্ষপাত-সহ যথেষ্ট বাধার সম্মুখীন হয়েছিল।(৫০) নির্বাচিত সরকারগুলিও বিভিন্ন উপায়ে অবমূল্যায়ন করেছে, যেমন ভোট কেনার (আমলা কেনাবেচা) মাধ্যমে আস্থার ভোট সহজতর করা, যার ফলে তাঁরা ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হন। ফলস্বরূপ, একটি কার্যকরী দলীয় ব্যবস্থার বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও তাদের দলগুলির মধ্যে ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ বা ‘বিভাজন সৃষ্টি করে শাসন’-এর মাধ্যমে উত্তেজনা সৃষ্টির কৌশল শুধু সংসদীয় প্রক্রিয়াকেই পঙ্গু করে দেয়নি, বিরোধী দল ও সরকারের মধ্যে গঠনমূলক সম্পর্কের বিকাশকেও বাধা দিয়েছে। যাই হোক, ২০০৮ সালের নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনী একটি (স্ব-আরোপিত) নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। এটি শুধুমাত্র নেতৃত্ব নির্বাচনের উপর বেসামরিক নিয়ন্ত্রণের ধারণাকে উৎসাহ জোগায়নি, বরং অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে সহজতর করে তুলেছে, যা দুই প্রধান বেসামরিক প্রতিদ্বন্দ্বী পিপিপি এবং পিএমএল-এন-সহ পাকিস্তানের প্রথম মহাজোটে পরিণত হয়েছে। এই পরিবর্তনটি আইনসভার শাখায় প্রাতিষ্ঠানিক কার্যকারিতায় অবদান রেখেছিল, যা সংবিধানের অষ্টাদশ সংশোধনীর মতো প্রধান রাজনৈতিক ফলাফল দ্বারা স্পষ্ট।(ঞ) বেসামরিক তদারকির ক্ষেত্রে আর একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ ছিল প্রতিরক্ষা বাজেট সংক্রান্ত প্রথম বিতর্কের আয়োজন।(৫১)
- ভঙ্গুর নাগরিক-সেনাবাহিনী সম্পর্ক
দেশের গণতন্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ার অ-রৈখিক প্রকৃতির কারণে নাগরিক-সামরিক সম্পর্কের ভঙ্গুরতা অব্যাহত রয়েছে।(৫২) স্বৈরাচারী যুগের সুনির্দিষ্ট সমাপ্তি থেকে গণতন্ত্রের নিরবচ্ছিন্ন স্থিতিশীলকরণ ও সুসংহতকরণের সূচনায় উত্তরণের কোনও স্পষ্ট সীমারেখা নেই। বরং এর পরিবর্তে রাজনৈতিক উন্নয়ন গণতান্ত্রিক ও সামরিক বা আধা-সামরিক শাসনের মধ্যে পরিবর্তনের ক্রম দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। আমলাতন্ত্র-সামরিক আধিপত্যের একটি প্রাথমিক পর্যায়ের (১৯৪৭-১৯৭২) পরে দেশটি গণতন্ত্রীকরণের তিনটি প্রচেষ্টার সম্মুখীন হয়েছিল। যাই হোক, এই গণতন্ত্রীকরণের পর্যায়গুলির প্রতিটিকে সামরিক শাসনের প্রতিক্রিয়া হিসাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে, যা শুধু মাত্র জাতীয় ভাবে নির্বাচিত নেতাদেরই (যেমন জেড এ ভুট্টো) নয়, রাজনৈতিক দলগুলিরও (যেমন পিপিপি বা ধর্মীয় রাজনৈতিক দল) জন্ম দেয়।(৫৩) উল্লেখযোগ্যভাবে যখন গণতান্ত্রিক পরিবর্তনগুলি সামরিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল এবং সহজতর হয়েছিল, এই পর্যায়গুলিও একই সঙ্গে সামরিক প্রভাব দ্বারা আকার পায় এবং সীমাবদ্ধই থেকেছে। এই আপাত বৈপরীত্যে অবদান রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল সশস্ত্র বাহিনীর উপর বেসামরিক নিয়ন্ত্রণকে প্রাতিষ্ঠানিক করে তুলতে বেসামরিক নাগরিকদের (প্রাথমিক বছরগুলিতে অনির্বাচিত ব্যক্তি এবং পরে নির্বাচিত কর্মকর্তাদের) অক্ষমতা। এই বাস্তবতা বিভিন্ন পর্যায়ে গণতন্ত্রের গুণমানকে খর্ব করে, গণতান্ত্রিক শাসনের একাধিক মাত্রাকে প্রভাবিত করে। বহুলাংশে সেনাবাহিনী ‘দেশকে একটি সমন্বিত এবং স্থিতিশীল সত্তা হিসাবে গড়ে তোলার জন্য দীর্ঘমেয়াদি দেশ গঠনের কৌশল প্রদান করেনি।’(৫৪)
- সশস্ত্র বাহিনীর বিশ্বাসযোগ্যতা এবং দক্ষ পেশাদারিত্ব
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী দেশটির জন্মলগ্ন থেকেই ধারাবাহিকভাবে একটি পেশাদার এবং সুশৃঙ্খল ভাবমূর্তি বজায় রেখেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলেও সেনাবাহিনী সরকারের দৈনন্দিন বিষয় ও প্রশাসনে বেসামরিক শাসকদের মাধ্যমে হস্তক্ষেপের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছে।(৫৫) উল্লেখযোগ্য ভাবে, আইয়ুব এবং জিয়া-সহ অনেক সেনাপ্রধান বর্ধিত মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন এবং সামরিক আইন চাপিয়ে দেওয়ার বিষয়ে তাঁদের অভিপ্রায় বেসামরিক শাসকদের সীমিত বিরোধিতার সম্মুখীন থেকেছে। একই সময়ে, বেসামরিক নেতারাও কোনও শক্তিশালী গণতান্ত্রিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি, যার ফলে সেনাবাহিনীর প্রভাব বজায় থেকেছে।
বিশেষ করে, আইয়ুব ও জিয়া রাজনৈতিক শাসনের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সম্পর্ককে আকার দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাঁদের দীর্ঘ মেয়াদ ও সামরিক আইন বলবৎ করার সিদ্ধান্ত বেসামরিক কর্তৃপক্ষ দ্বারা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়নি, যা রাজনৈতিক বিষয়ে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের বিন্যাসের সূচনা করেছে। সেনাবাহিনী ক্ষমতাকে কেন্দ্রীভূত করতে চাওয়ায় কার্যনির্বাহী আদেশ এবং আইনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে এবং সেই বেসামরিক নেতাদের পক্ষ নিয়েছে, যাঁরা সেনাবাহিনীর স্বার্থের পক্ষে অনুকূল ছিলেন। এই সম্পর্ক উভয় পক্ষকে উপকৃত করলেও রাজনৈতিক ক্ষমতার উপর সেনাবাহিনীর দখল কর্তৃত্বের যথাযথ বিকেন্দ্রীকরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।(৫৬)
জিয়া-পরবর্তী যুগে ১৯৮০-এর দশকের শেষভাগ থেকে শুরু করে দেশে সামরিক শাসনের প্রকৃতির পরিবর্তন ঘটে। সেনাবাহিনী আইএসআই-এর সদস্যদের পাশাপাশি ‘কূটনৈতিক হস্তক্ষেপের’ কৌশল গ্রহণ করে আরও পরোক্ষ ভাবে রাজনৈতিক প্রভাব প্রয়োগ করতে শুরু করে। এই দৃষ্টিভঙ্গি মিশ্র শাসনের একটি স্বতন্ত্র রূপকে চিহ্নিত করেছে, যেখানে সামরিক জেনারেলরা সরাসরি হস্তক্ষেপ শুরু করার পরিবর্তে নীতিগত বিষয়ে বেসামরিক নেতাদের সঙ্গে দর কষাকষিতে জড়িয়ে পড়েন।(৫৭) যাই হোক, এই মিথস্ক্রিয়া ও এর দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার প্রকৃতি প্রশ্নের মুখে পড়েছে এবং সেনা ও বেসামরিক নেতাদের মধ্যে বিকশিত গতিশীলতাকে ‘মিশ্র সরকার’-এর একটি রূপ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
- সেনাবাহিনীর অর্থনৈতিক স্বার্থ
পাকিস্তানের প্রথম দিকের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য এই যুক্তি দর্শানো যেতে পারে যে, ‘পাকিস্তানের সামরিক সরকার অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় অনেক উদ্যোগ দেখিয়েছে এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রকগুলি সেই বেসামরিক বিশেষজ্ঞ ও পেশাদারদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছে যাঁদের যথেষ্ট স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হয়েছে।’(৫৮) প্রকৃতপক্ষে, জেনারেলরা সরাসরি ক্ষমতার প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ না করলেও সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর ‘সর্বব্যাপী উপস্থিতি’ ‘রাষ্ট্র ও সমাজে সেনাবাহিনীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিশ্চিত করে।’(৫৯)
• একটি দুর্বল অর্থনীতি ও একটি অভ্যুত্থানের বর্ধিত সম্ভাবনার মধ্যে আঁতাতের নেপথ্যে যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে, সামরিক আধিকারিকরা শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং নতুন ধারণার প্রতি উন্মুক্তমনস্ক হওয়ার মাধ্যমে অন্য সামাজিক অংশগুলির তুলনায় বেশি প্রগতিশীল হতে থাকেন।(৬০) এই প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি প্রায়শই সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোকে আধুনিকীকরণ করার জন্য প্ররোচিত করে, যখন তারা একটি অদক্ষ বা দুর্নীতিগ্রস্ত শাসকগোষ্ঠীর সম্মুখীন হয়।(৬১)
• পাকিস্তানে সেনাবাহিনী কার্যকর ভাবে তার অর্থনৈতিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য রাষ্ট্রের উপর নিজের প্রভাবকে ব্যবহার করেছে।(৬২) ‘শিল্প, বাণিজ্য এবং ব্যবসা’য় তাদের সম্পৃক্ততা সেনাবাহিনীকে ‘সরকারি নীতি এবং শিল্প ও বাণিজ্যিক কৌশলগুলিতে অংশীদারিত্ব’ গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে।(৬৩) সেনাবাহিনীর কল্যাণ এবং দাতব্য ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সঙ্গে এই সম্পৃক্ততা(৬৪) শুধুমাত্র অর্থনীতিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উল্লেখযোগ্য অংশীদারিত্বকেই সুনিশ্চিত করে না, বরং একই সঙ্গে সরকারের উপর আর্থিক নির্ভরতা হ্রাস করে, বিশেষ করে জনকল্যাণ, পেনশন এবং আস্থার প্রেক্ষিতে। এই বাহ্যিক আয়ের উৎসগুলিই সম্মিলিত ভাবে ‘মিলবাস’ তৈরি করে।(৬৫) এই যথেষ্ট অর্থনৈতিক শক্তি সেনাবাহিনীকে বেসরকারি এবং সরকারি উভয় ক্ষেত্রেই প্রভাবশালী শক্তি হিসেবে তুলে ধরে।(৬৬)
• অর্থনৈতিক স্বায়ত্তশাসনের অন্বেষণ বেসামরিক-সামরিক ভারসাম্যহীনতাকে আরও বৃদ্ধি করেছে। সেনাবাহিনী ১৯৫০ এবং ১৯৬০-এর দশকে ব্যক্তিগত লাভ ও মুনাফা অর্জনের জন্য শিল্প ও আবাসন প্রকল্প শুরু করেছিল (যা তার রাজনৈতিক প্রভাবকে শক্তিশালী করে এবং ‘মিলবাস’-এর উত্থানের দিকে চালিত করে)।(৬৭) কর্পোরেট প্রকল্পে সামরিক বাহিনীর সম্পৃক্ততাকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং সেটির কথা উল্লেখ করা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হ্রাস করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।(৬৮)
- বিচার বিভাগের সন্দেহজনক ভূমিকা
সঙ্কটের সময়ে বৃহত্তর ‘প্রাতিষ্ঠানিকতা’র মধ্যে ঐক্যকে কাজে লাগিয়ে সেনাবাহিনী প্রায়শই তার কার্যকলাপকে বৈধতা দেওয়ার জন্য বিচার বিভাগের অনুমোদন চেয়েছে। যাই হোক, বর্তমান পরিস্থিতি এই প্রতিষ্ঠিত বিন্যাস থেকে সরে আসাকেই দর্শিয়েছে। কারণ উচ্চ আদালত ক্রমবর্ধমান ভাবে একটি স্বাধীন অবস্থান গ্রহণ করে চলেছে। বিচার বিভাগের কাছ থেকে একসময়ের নির্ভরযোগ্য সমর্থন সেনাবাহিনী আর আশা করতে পারে না। একই সঙ্গে, সেনাবাহিনী আদালত এবং তার রায়কে দুর্বল করার প্রচেষ্টা শুরু করেছে এবং বর্ষীয়ান বিচারকদের মধ্যে অকার্যকর সম্পর্কের উপর আলোকপাত করেছে।(৬৯)
• পিটিআই এবং ইমরান খানের সঙ্গে জড়িত রাজনৈতিক দৃশ্যকল্প প্রাতিষ্ঠানিকতার মধ্যকার দ্বন্দ্বকেই প্রতিফলিত করে। এই গতিশীলতা বিচার বিভাগের একটি পুনঃসংজ্ঞায়িত ভূমিকাকে দর্শিয়েছে। এটি পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনবাহিনীর সম্পৃক্ততা ও সামরিক স্বার্থের অনুকূল বিচার বিভাগের রায়ের পূর্ববর্তী ধারণাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। মূল প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে জোটের পরিবর্তনশীল প্রকৃতি দর্শায় যে, দেশের রাজনৈতিক পরিসরে সামরিক সম্পৃক্ততার সঞ্চারপথ নির্মাণ একটি জটিল আন্তঃকার্যকারিতা দ্বারা আকার পায়।(৭০)
• প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সালের একটি ধারাবাহিক ঘটনা - যা সামরিক আদালতকে দেওয়ানি বিচারের ক্ষমতা প্রদান করে - পাকিস্তানের বিচার ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে দিয়েছে। ইমরান খান দুর্নীতির দায়ে কারাগারে সাজা ভোগ করছেন এবং কর্তৃপক্ষ পিটিআই ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে, বহু সমর্থককে বিচারের জন্য সামরিক আদালতে পাঠিয়েছে।(৭১) পাকিস্তান মিলিটারি (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৩ সেনাবাহিনীর সুবিশাল ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যকে সম্পূর্ণ আইনি মর্যাদা প্রদান করে, সশস্ত্র বাহিনীর সমালোচনা করাকে অপরাধমূলক কাজ বলে গণ্য করে এবং সেনাবাহিনীকে ‘জাতীয় উন্নয়ন এবং জাতীয় বা কৌশলগত স্বার্থের অগ্রগতির সঙ্গে সম্পর্কিত কার্যক্রম পরিচালনা করা’র অনুমোদন দিয়েছে। অফিসিয়াল সিক্রেটস (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৩ নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে সন্দেহভাজন যে কোনও ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার অসীম ক্ষমতা প্রদান করেছে। অনুপ্রবেশ ও আক্রমণ-সহ সামরিক প্রতিষ্ঠান ও কার্যালয়ে ‘আঘাত হানার চেষ্টা’ নিষিদ্ধ এবং সন্দেহভাজনরা সামরিক আদালতে বিচারের সম্মুখীন হতে পারেন।(৭২)
- বিদেশি শক্তির জন্য সেনাবাহিনী একটি পছন্দের অংশীদার
পাকিস্তানের সমস্ত সামরিক প্রশাসনের মধ্যে একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং তা হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অত্যন্ত ভাল সম্পর্ক বজায় রাখা। এর সম্ভাব্য কারণ হল এই যে, পাকিস্তানে সামরিক দখলের ফলে বিশ্ব রাজনীতিতে দেশটির ভূ-রাজনৈতিক তাত্পর্যের পুনরুত্থান ঘটেছে, যা পাকিস্তানকে একটি ‘ফ্রন্টলাইন বা প্রথম সারি’র রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।(ট) এই সব কিছুই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির স্বার্থ ও নিরাপত্তা নীতির সংমেলকেই দর্শায়।(৭৩) পাকিস্তানের নির্বাচিত নেতারা আঞ্চলিক দেশ ও প্রধান আন্তর্জাতিক শক্তিগুলির সঙ্গে, বিশেষ করে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার মাধ্যমে ইতিবাচক, বহুমুখী সম্পৃক্ততাকে উৎসাহিত করতে চান। যাই হোক, সামরিক বাহিনীর শক্তিশালী প্রকৃতির কারণে বৈদেশিক নীতি গঠনে তাদের প্রভাব কম।(৭৪) এর ফলস্বরূপ, যখনই একটি কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ দেখা দেয়, বেসামরিক সাধনী সাধারণত হাত গুটিয়ে নেওয়ার পদ্ধতি গ্রহণ করে। একই সময়ে, সামরিক বাহিনী তার কঠোর বাহ্যিক নিরাপত্তা পদ্ধতি থেকে সরে আসতে অস্বীকার করেছে এবং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিষয়গুলিকে উপেক্ষা করে শুধু মাত্র নিরাপত্তা উদ্বেগের ভিত্তিতে সম্পর্ক গড়ে তুলতে চেয়েছে। এর ফলস্বরূপ, বিদেশি শক্তি - যাদের এই অঞ্চলে নিরাপত্তার স্বার্থ রয়েছে - বেসামরিক সরকারের পরিবর্তে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলেছে।
উপসংহার
পাকিস্তানে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও নেতৃত্বের দুর্বলতা রাজনৈতিক বিরোধের জন্য সামরিক সমাধানের উপর নির্ভরশীলতাকে উৎসাহ জুগিয়েছে। বেসামরিক শাসনে সেনাবাহিনীর ক্রমাগত হস্তক্ষেপ স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক অনুশীলন প্রতিষ্ঠার জন্য দেশের ক্ষমতাকে খর্ব করেছে। দেশটির সূচনালগ্ন থেকেই সেনাবাহিনী ধারাবাহিকভাবে নমনীয় বেসামরিক নেতাদের সন্ধানে থেকেছে, যাঁরা নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারেন এবং তাদের প্রভাবের অধীন থাকাকালীন প্রশ্নাতীত ভাবে সেনাবাহিনীর পছন্দের দেশীয় ও বিদেশনীতিগুলিকে কার্যকর করতে পারেন।
সেনাবাহিনী ঐতিহাসিক ভাবে সংহতি বজায় রেখেছে এবং পূর্ববর্তী সঙ্কটের সময় রাষ্ট্রের সম্পূর্ণ পতন রোধ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, সেনার বিভিন্ন পদের মধ্যে উদীয়মান পার্থক্য এখন সঙ্কট পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার ক্ষমতাকে দুর্বল করতে পারে। সেনাবাহিনীর উপর জনসাধারণের আস্থার ক্ষয় অস্থিতিশীলতা ও সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধির হুমকি দেয়, যার ফলে বহিরাগত অংশীদাররা কে কর্তৃত্ব পালন করবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভোগে।(৭৫) জনসমর্থন কমে যাওয়া শুধু মাত্র সামরিক বাহিনীর মর্যাদাকেই ক্ষুণ্ণ করে না, বরং তার কার্যকরী উদ্দেশ্য অর্জন এবং প্রাতিষ্ঠানিক স্বার্থ রক্ষার ক্ষমতাকেও বাধা দেয়, বিশেষ করে এমন একটি অঞ্চলে যেখানে সেনাবাহিনী চলমান সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে নিযুক্ত থাকে।
নিবিড় অবিশ্বাস এবং সব ক্ষেত্রে অপরিবর্তনীয় পরিস্থিতির কারণে বর্তমান অচলাবস্থার সমাধান একটি জটিল প্রয়াস হবে। দেশের অভ্যন্তরে একটি বিশ্বাসযোগ্য বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ার অনুপস্থিতি বিষয়গুলিকে আরও জটিল করে তোলে। সামরিক এবং সুপ্রিম কোর্ট উভয়ই ঐতিহ্যগত ভাবে সঙ্কটের সময়ে সালিশি ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়, বিতর্ক ও অভ্যন্তরীণ বিভাজনে জড়িয়ে পড়ে এবং ফলে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা হ্রাস পেয়েছে। উপরন্তু, সংসদ আদর্শগত ভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির এমন একটি মঞ্চ, যা জাতীয় পরিষদে একটি বিশ্বাসযোগ্য বিরোধী দলের অনুপস্থিতির কারণে আরও দুর্বল হয়ে পড়ছে। একটি স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পথ প্রশস্ত করার জন্য এটি অপরিহার্য যে, সেনাবাহিনী যেন রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে এবং দেশকে রক্ষা করার জন্য তার সাংবিধানিক ভূমিকাই কঠোর ভাবে পালন করবে। এ ধরনের পদক্ষেপ শুধু রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাই ফিরিয়ে আনবে না, জনসাধারণের চোখে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তিরও উত্তরণ ঘটাবে। বিশ্বাসের পুনর্গঠন, গণতান্ত্রিক নীতি গ্রহণ এবং অন্তর্নিহিত সমস্যাগুলির সমাধানের জন্য একটি সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই পাকিস্তান সঙ্কটের চক্র থেকে মুক্তি পেতে পারে এবং আরও স্থিতিশীল ও প্রতিশ্রুতিময় ভবিষ্যতের পথ প্রশস্ত করতে পারে। এ কথা প্রশংসনীয় যে, একটি প্রতিষ্ঠান হিসাবে সেনাবাহিনীর আধিপত্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে পারে। তবে চূড়ান্ত সমাধান হবে এই যে, দেশের প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে ভারসাম্য বা সাযুজ্য পুনরুদ্ধার করা, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে শক্তিশালী করা এবং কার্যকর নেতৃত্বের প্রচারের উপর জোর দেওয়া।
পারমাণবিক অবস্থা এবং আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার কারণে পাকিস্তান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিসরেও উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতার সম্ভাবনা জরুরি অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দ্বারা আকার পেয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঋণের বাধ্যবাধকতাগুলি পরিচালনা করার জন্য আইএমএফ-এর সঙ্গে আলোচনা চলছে। আর্থিক শৃঙ্খলা ও সক্ষম অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকারের সময়োপযোগী গঠন সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা ও প্রয়োজনীয় আন্তর্জাতিক সমর্থন অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
পাদটীকা
[ক] আধুনিকীকরণের তত্ত্ব বলতে বোঝায় কাজের এমন একটি অংশ যা ১৯৫০ এবং ১৯৬০-এর দশকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সমস্যাগুলি বোঝার জন্য এবং দরিদ্র দেশগুলিকে তাদের পরিবর্তনে সাহায্য করার জন্য নীতিগুলি উন্নয়নের একটি উপায় হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল।
[খ] নির্ভরশীলতা তত্ত্ব হল সমসাময়িক সামাজিক বিজ্ঞানের এমন একটি চিন্তাধারা, যা অনুন্নয়ন সম্পর্কে আরও ভাল বোঝার, সেই কারণগুলির বিশ্লেষণ এবং কিছুটা পরিমাণে হলেও সেই সমস্যা সমাধানে অবদান রাখে।
[গ] ডোনাল্ড ইউজিন স্মিথ শরিয়া এবং কর্তৃত্ববাদের মধ্যে সংযোগ পরীক্ষা করে যুক্তি দর্শিয়েছেন যে, শরিয়া মানুষকে তাদের সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা ও বিদ্রোহ করার অধিকার ত্যাগ করতে অনুপ্রাণিত করে এবং শাসকদের অনুগত হতে এবং কর্তৃত্ববাদ গ্রহণ করতে শেখায়। দ্রষ্টব্য: ডোনাল্ড ইউজিন স্মিথ, রিলিজিয়ন অ্যান্ড পলিটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট – অ্যান অ্যানালিটিক্যাল স্টাডি (নিউ ইয়র্ক: লিটল ব্রাউন, ১৯৭০)।
[ঘ] একটি অসামঞ্জস্যপূর্ণ শক্তিশালী এবং কেন্দ্রীভূত সরকার প্রায়শই সামরিক হস্তক্ষেপ দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং দারিদ্র্য বা মৌলিক পরিষেবাগুলিতে অপ্রতুল সম্পদ ও সীমিত অর্থনৈতিক সুযোগগুলির মতো চ্যালেঞ্জগুলির সম্মুখীন সমাজের সঙ্গে সহাবস্থান করে।
[ঙ] ‘বাস্তববাদ’-এর উল্লেখ থেকে বোঝা যায় যে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী একটি পেশাদার এবং সুশৃঙ্খল প্রতিষ্ঠান হওয়ার দরুন নিজের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় আক্ষরিক বাস্তবতা ও চ্যালেঞ্জগুলি বিবেচনা করে। এতে বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সামরিক বাহিনীর প্রকৃত সক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতা, দেশের সম্মুখে উপস্থিত তাৎক্ষণিক নিরাপত্তা উদ্বেগের মতো বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত। ১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি এবং ১৯৮০-এর দশকের গোড়ার দিকে মার্কিন সামরিক সহায়তা চাওয়ার পাকিস্তানের সিদ্ধান্তকে দেশটির কৌশলগত সংস্কৃতির পাশাপাশি বাস্তবতার উল্লেখ করে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।
[চ] গুণমানসম্পন্ন উন্নয়ন, নিরাপত্তা এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধার জন্য নিজেদের সুনামের কারণে সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা এই ধরনের অঞ্চলগুলির খোঁজ করেন। যদিও প্রাথমিক উদ্দেশ্য অনুযায়ী সামরিক কর্মীদের আবাসন চাহিদা মেটানো, বেসামরিক ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি এই হাউজিং সোসাইটি দ্বারা পরিবেশিত জনসংখ্যার পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে।
[ছ] ‘রাওয়ালপিন্ডিতে কোর কমান্ডারদের বৈঠকে ইন্টার-সার্ভিস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) প্রেস বিজ্ঞপ্তি।’ প্রেস রিলিজের কয়েক দিন পর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হায়দরাবাদে এক বক্তৃতায় সরকারকে ‘অপশাসন’-এর জন্য তিরস্কার করেন। ডন, নভেম্বর ১৪, ২০১৫। এ ছাড়াও দ্রষ্টব্য আহমেদ প্রমুখ।
[জ] বেসামরিক এবং সামরিক আমলাদের সঙ্গে লেখকের ব্যক্তিগত যোগাযোগের ফলে বোঝা যায় যে, এটি পরিকল্পিত সামরিকবাদের উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।
[ঝ] বেসামরিক এবং সামরিক বাহিনীর মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগি ব্যবস্থাকে চিত্রিত করে পাকিস্তানের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় তিনটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান মূর্ত হয়েছে - সেনাপ্রধান, রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী।
[ঞ] ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে প্রণীত অষ্টাদশ সংশোধনী সংবিধানের সংসদীয় প্রকৃতিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে উচ্চ বিচারবিভাগীয় নিয়োগে সংসদীয় ব্যবস্থাকে জড়িত রাখার পরামর্শ দিয়ে সংসদ ও বিচার বিভাগের মধ্যে সম্পর্ককে পুনঃসংজ্ঞায়িত করে এবং প্রাদেশিক সরকারগুলিতে উল্লেখযোগ্য কার্যাবলী বিকেন্দ্রীকরণ করে। দায়িত্ব ও কর্তৃত্বের এই পরিবর্তন পরবর্তী বছরগুলিতে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ জায়গায় প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতাশালীদের মধ্যে ভূমিকা পুনর্মূল্যায়ন করার মঞ্চ তৈরি করে। এ ছাড়াও দ্রষ্টব্য মহম্মদ আহসান রানা, ‘ডিসেন্ট্রালাইজেশন এক্সপেরিয়েন্স ইন পাকিস্তান – দ্য এইটিন্থ কনস্টিটিউশনাল অ্যামেন্ডমেন্ট’, এশিয়ান জার্নাল অব ম্যানেজমেন্ট কেস, ১৭(১) ৬১–৮৪, ২০২০, https://journals.sagepub.com/doi/pdf/10.1177/09720928; ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি অব পাকিস্তান, https://na.gov.pk/uploads/documents/1302138356_934.pdf
[ট] কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান এবং গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে সম্পৃক্ত থাকার কারণে পাকিস্তানকে প্রায়ই ‘ফ্রন্টলাইন স্টেট’ বা ‘প্রথম সারির দেশ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। দক্ষিণ এশিয়া, মধ্য এশিয়া ও পশ্চিম এশিয়ার সংযোগস্থলে অবস্থিত এবং বিরোধপূর্ণ অঞ্চলের সঙ্গে পাকিস্তানের নৈকট্য দেশটিকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি করে তুলেছে। ঠান্ডা লড়াইয়ের সময় মার্কিন-সোভিয়েত প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রেক্ষাপটে, বিশেষ করে সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে আফগান প্রতিরোধকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকার জন্য পাকিস্তান একটি প্রথম সারির রাষ্ট্র হিসাবে উপাধি অর্জন করেছিল। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর-পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধে তার প্রথম সারির অবস্থান বজায় রেখেছে, সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধের প্রচেষ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে সহযোগিতা করেছে। উপরন্তু, পারমাণবিক বিস্তার সম্পর্কে উদ্বেগ, ভারত-পাকিস্তান শত্রুতা এবং আফগানিস্তানের পরিস্থিতির মতো বিদ্যমান আঞ্চলিক দ্বন্দ্বের পাশাপাশি দেশটির অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য তাত্পর্য, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে পাকিস্তানের বহুমুখী কৌশলগত গুরুত্বে অবদান রাখে।
১) ভিক্টোরিয়া স্কোফিল্ড, ‘পাকিস্তান – ২০১১’, দ্য রাউন্ড টেবিল ৬২৩-৬২৮, (২০১১)। ডিওআই- ১০.১০৮০/০০৩৫৮৫৩৩.২০১১.৬৩৩৩৭৬; কুনাল মুখার্জি, ‘মিলিটারি গভর্নমেন্টস, দি আইএসআই অ্যান্ড পলিটিক্যাল হাইব্রিডিটি ইন কনটেম্পোরা্রি পাকিস্তান – ফ্রম ইন্ডিপেন্ডেন্স টু মুশারফ’, জার্নাল অফ ইন্টেলিজেন্স হিস্টরি, ১৬ নম্বর ২ (২০১৭) – পৃষ্ঠা ১৭২-১৯৩
২) আয়েশা সিদ্দিকা, ‘পাকিস্তান’স হাইব্রিড ‘সিভিলিয়ান-মিলিটারি’ গভর্নমেন্ট উইকেনস ডেমোক্র্যাসি’, ইস্ট এশিয়া ফোরাম, জানুয়ারি ২১, ২০২০, https://www.eastasiaforum.org/2020/01/21/pakistans-hybrid-civilian-military-government-weakens-democracy/.
৩) হামিদ মীর, ‘ডার্টি গেম – আনটোল্ড স্টোরি অফ ইমরান খান অ্যান্ড জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়া’স লাভ-হেট রিলেশনশিপ – ওপিনিয়ন’, ইন্ডিয়া টুডে, অগস্ট ১, ২০২৩, www.indiatoday.in/opinion-columns/story/dirty-game-untold-story-of-imran-khan-gen-qamar-javed-bajwa-love-hate-relationship-2319003-2023-01-09.
৪) সিরিল আলমিদা, ‘হোয়াট লেড টু লিডার ইমরান খান’স ডাউনফল ইন পাকিস্তান?’ আজ জাজিরা, ১০ এপ্রিল, ২০২২, www.aljazeera.com/news/2022/4/9/analysis-end-of-imran-khans-term.
৫) ‘পাকিস্তান অফিশিয়াল অ্যাডমিটস ইনভলভমেন্ট ইন রিগিং ইলেকশন রেজাল্টস’, আল জাজিরা, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, www.aljazeera.com/news/2024/2/17/pakistan-official-admits-involvement-in-rigging-election-results.
৬) ‘ইমরান খান ক্লেমস ভিক্টরি ইন পাকিস্তান পোল বাট মিলিটারি মাইট হ্যাভ ফাইনাল সে’, গার্ডিয়ান, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, www.theguardian.com/world/2024/feb/10/imran-khan-claims-victory-in-pakistan-poll-but-military-might-have-final-say.
৭) সুমিত গাঙ্গুলি এবং ক্রিস্টিন ফেয়ার, ‘দ্য স্ট্রাকচারাল অরিজিনস অফ অথরিটারিয়ানিজম ইন পাকিস্তান’, কমনওয়েলথ অ্যান্ড কম্প্যারাটিভ পলিটিক্স, ৫১ (১) (২০১৩) – ১২২-৪২
৮) অ্যাডাম জরোস্কি, ‘মডার্নাইজেশন – থিওরিজ অ্যান্ড ফ্যাক্টস’ ইন পলিটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল চেঞ্জ, সম্পাদনা জেনিফার স্মিথ (শিকাগো – ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস, ১৯৯৭), ১১২-১৩৫
৯)ইয়ং নামকুং, ‘ডিপেন্ডেন্সি থিওরি – কনসেপ্টস, ক্লাসিফিকেশনস অ্যান্ড ক্রিটিসিজমস’, ইন্টারন্যাশনাল এরিয়া স্টাডিজ রিভিউ ২ (১) (১৯৯৯) – ৪৫-৬৭, https://doi.org/10.1177/223386599900200106
১০) ‘ইসলাম অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’, ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট অব পিস, সেপ্টেম্বর ২০২২, https://www.usip.org/sites/default/files/sr93.pdf
১১) জিয়াউল হক শেখ এবং জাহিদ শাহাব আহমেদ, ‘মিলিটারি, অথরিটারিয়ানিজম অ্যান্ড ইসলাম – আ কম্প্যারাটিভ অ্যানালিসিস অব বাংলাদেশ অ্যান্ড পাকিস্তান’, পলিটিক্স অ্যান্ড রিলিজিয়ন, ১৩ (২) (২০২০) – ৩৩৩-৩৬০, ডিওআই - 10.1017/S1755048319000440
১২) আয়েশা জালাল, ডেমোক্রেসি অ্যান্ড অথরিটারিয়ানিজম ইন সাউথ এশিয়া – আ কম্প্যারাটিভ অ্যান্ড হিস্টরিক্যাল পার্সপেক্টিভ (কেমব্রিজ – কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৯৫)
১৩) হামজা আলাভি, ‘দ্য স্টেট ইন পোস্ট-কলোনিয়াল সোসাইটিজ – পাকিস্তান অ্যান্ড বাংলাদেশ’, নিউ লেফট রিভিউ, ৭৪ (১) (১৯৭২) - ৪
১৪) হাসান আকসরি রিজভি, ‘পাকিস্তান’স স্ট্র্যাটেজিক কালচার’, ইন সাউথ এশিয়া ইন ২০২০ – ফিউচার স্ট্র্যাটেজিক ব্যালান্সেস অ্যান্ড অ্যালায়েন্সেস, সম্পাদনা মাইকেল আর চেম্বারস, (স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ ইনস্টিটিউট, ইউএস আর্মি ওয়ার কলেজ, ২০০২), পৃষ্ঠা ৩০৫-২৮
১৫) অ্যালাস্টেয়ার লেইন জনস্টন, ‘থিঙ্কিং অ্যাবাউট স্ট্র্যাটেজিক কালচার’, ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি ১৯ (৪) (১৯৯৫) – ৪৬
১৬) হামজা আলাভি, ‘দ্য স্টেট ইন পোস্ট-কলোনিয়ান সোসাইটিজ – পাকিস্তান অ্যান্ড বাংলাদেশ’ ইন সাউথ এশিয়ান পলিটিক্স অ্যান্ড সোসাইটি, সম্পাদনা সারা জনসন (নিউ ইয়র্ক – এবিসি পাবলিশার্স, ১৯৮৫), ৪৫-৬৭
১৭) আয়েশা জালাল, দ্য স্টেট অব মার্শাল রুল – দি অরিজিনস অব পাকিস্তান’স পলিটিক্যাল ইকোনমি অব ডিফেন্স (কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৯০), পৃষ্ঠা ৩৮; মহম্মদ আয়ুব খান, ফ্রেন্ডস নট মাস্টার্স – আ পলিটিক্যাল অটোবায়োগ্রাফি (করাচি – অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৬৭) পৃষ্ঠা ১৯
১৮) জেফ্রি এস লান্টিস, ‘স্ট্র্যাটেজিক কালচার অ্যান্ড ন্যাশনাল সিকিউরিটি পলিসি’, ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ রিভিউ ৪ (৩) (২০০২) – ৬৭-১১৩
১৯) স্যামুয়েল মার্টিন বার্ক, পাকিস্তান’স ফরেন পলিসি – অ্যান হিস্টরিক্যাল অ্যানালিসিস ( করাচি – অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৭৩), পৃষ্ঠা ৫৫
২০) রিজভি, পাকিস্তান’স স্ট্র্যাটেজিক কালচার; হাসান আকসারি রিজভি, পাকিস্তান অ্যান্ড দ্য জিওস্ট্র্যাটেজিক এনভায়রনমেন্ট – আ স্টাডি অব ফরেন পলিসি (নিউ ইয়র্ক – সেন্ট মার্টিনস, ১৯৯৩), পৃষ্ঠা ২১; হাসান আকসারি রিজভি, ‘পাকিস্তানি থ্রেট পারসেপশন অ্যান্ড উইমেন প্রোকিওরমেন্ট’ ইন দ্য ডিফিউশন অফ অ্যাডভান্সড উইপনরি – টেকনোলজিস, রিজিওনাল ইমপ্লিকেশনস, অ্যান্ড রেসপন্সেস, সম্পাদনা টমাস ওয়ান্ডার, এরিক এইচ আর্নেট এবং পল জে ব্র্যাকেন (ওয়াশিংটন ডিসি – আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সডমেন্ট অব সায়েন্স, ১৯৯৪) পৃষ্ঠা ১৯৭
২১) রিজভি, পাকিস্তান’স স্ট্র্যাটেজিক কালচার
২২) স্টিফেন পি রোজেন, ‘মিলিটারি এফেক্টিভনেস’, ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি ১৯, নম্বর ৪ (১৯৯৫) – ৫-৩১
২৩) রিজভি, পাকিস্তান’স স্ট্র্যাটেজিক কালচার
২৪) মেরি অ্যান উইভার, পাকিস্তান – ইন দ্য শ্যাডো অব জিহাদ অ্যান্ড আফগানিস্তান (নিউ ইয়র্ক – ফারার, স্ত্রস অ্যান্ড জিরো, ২০০২)
২৫) ফিরোজ হাসান খান, ‘রাফ নেবারস – আফগানিস্তান অ্যান্ড পাকিস্তান’, স্ট্র্যাটেজিক ইনসাইটস ২, নম্বর ১ (২০০৩),
http://www.ccc.nps.navy.mil/si/jan03/southAsia.asp.
২৬) মহম্মদ ফাহিম খান প্রমুখ, ‘শিফটিং স্যান্ডস – পাকিস্তান’স স্ট্র্যাটেজিক কালচার অ্যামিডসড রিজিওনাল অ্যান্ড ফ্লাক্স’, রাশিয়ান ল জার্নাল, ১১ নম্বর ১২ (২০২৩)
২৭) তৌকির হুসেন, ‘ইউএস-পাকিস্তান এনগেজমেন্ট ইন দি ওয়ার অন টেররিজম অ্যান্ড বিয়ন্ড’, ইউনাইটেড স্টেটস অব পিস, স্পেশ্যাল ইস্যু, অগস্ট ২০০৫, www.usip.org/sites/default/files/sr145.pdf.
২৮) লিয়ন টি হাদার, ‘পাকিস্তান ইন আমেরিকা’স ওয়ার এগেনস্ট টেররিজম – স্ট্র্যাটেজিক অ্যালি অর আনরিলায়েবল ক্লায়েন্ট?’ পলিসি অ্যানালিসিস (ক্যাটো ইনস্টিটিউট), নম্বর ৪৩৬, মে ৮, ২০২২, http://www.cato.org/pubs/pas/pa436.pdf; দ্রষ্টব্য আলফ্রেড স্তেপান এবং আজিল শাহ, ‘পাকিস্তান’স রিয়েল বুলওয়ার্ক’, ওয়াশিংটন পোস্ট, মে ৫, ২০০৪
২৯) হাসান আকসারি রিজভি, মিলিটারি, স্টেট অ্যান্ড সোসাইটি ইন পাকিস্তান (নিয় ইয়র্ক – পলগ্রেভ, ২০০০)
৩০) নাজির জাভেরিয়া অ্যান্ড অনিলা নাকভি, ‘ইমেজ অব পাকিস্তান আর্মড ফোর্সেস পোর্ট্রেড বাই দ্য নিউজ টিভি চ্যানেলস – আ কম্প্যারাটিভ স্টাডি অব দ্য পাবলিক পারসেপশন অব টু মেট্রোপলিটান সিটিজ’, গ্লোবাল মাল্টিমিডিয়া রিভিউ, ৩ নম্বর ১, (২০২০) - ১-১০, https://doi.org/10.31703/gmr.
৩১) হ্যারল্ড ট্রাইনিউকুনাস, ‘ক্রাফটিং সিভিলিয়ান কন্ট্রোল ইন ইমার্জিং ডেমোক্রেসিস – আর্জেন্টিনা অ্যান্ড ভেনেজুয়েলা’, জার্নাল অফ ইন্টার-আমেরিকান স্টাডিজ অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স, ৪২, নম্বর ৩, (২০১০)
৩২) ঈশান থারুর, ‘পাকিস্তান’স মিলিটারি হ্যাজ ইটস ফিঙ্গারপ্রিন্টস অল ওভার দি ইলেকশনস’, দি ওয়াশিংটন পোস্ট, ২৫ জুলাই ২০১৮, www.washingtonpost.com/news/worldviews/wp/2018/07/25/pakistans-military-has-its-fingerprints-all-over-the-elections/.
৩৩) ইরফান হুসেন, ‘লাস্ট ফর ল্যান্ড’, ডন, অগস্ট ২৭, ২০১৬, https://www.dawn.com/news/1280186
৩৪) আয়েশা সিদ্দিকা, মিলিটারি ইঙ্ক – ইনসাইড পাকিস্তান’স মিলিটারি ইকোনমি (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০৭)
৩৫) নীলেশ কুনওয়ার, ‘পাকিস্তান’স ‘বিগেস্ট ল্যান্ড গ্র্যাবার’,’ ইউরেশিয়া রিভিউ, মে ৩, ২০২১, https://www.eurasiareview.com/03052021-pakistans-biggest-land-grabber-oped/
৩৬) স্টিফেন পি কোহেন, দি আইডিয়া অব পাকিস্তান (ওয়াশিংটন ডিসি – ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশন প্রেস, ২০০৪), পৃষ্ঠা ৩-৭
৩৭) ‘সোশ্যাল স্পেন্ডিং ইন সাউথ এশিয়া – অ্যান ওভারভিউ অব গভর্নমেন্ট এক্সপেন্ডিচার অন হেলথ, এডুকেশন অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স’, ইউনিসেফ, ২০২০,
https://www.unicef.org/rosa/media/10016/file/Social%20spending%20in%20South%20Asia.pdf
৩৮) ‘হোয়েট হ্যাজ আমেরিকা ডান ফর পাকিস্তান?’ ডন, জুলাই ১৩, ২০১১, https://www.dawn.com/news/643731/what-has-america-done-for-pakistan.
৩৯) বীণা কুকরেজা, সিভিল-মিলিটারি রিলেশনস ইন সাউথ এশিয়া – পাকিস্তান, বাংলাদেশ, অ্যান্ড ইন্ডিয়া (নিউ দিল্লি – সেজ পাবলিকেশনস, ১৯৯১), পৃষ্ঠা ২৫৭
৪০) কোহেন, দি আইডিয়া অব পাকিস্তান
৪১) সিদ্দিকা, মিলিটারি ইঙ্ক – ইনসাইড পাকিস্তান’স মিলিটারি ইকোনমি
৪২) ‘পাকিস্তান’স কোর্টস ফেস আ চ্যালেঞ্জ – ডিফায়িং দ্য মিলিটারি’, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস, মে ৩১, ২০২৩, https://www.nytimes.com/2023/05/31/world/asia/pakistan-courts-challenge-military.html
৪৩) ভিক্টোরিয়া স্কোফিল্ড, কাশ্মীর ইন কনফ্লিক্ট – ইন্ডিয়া, পাকিস্তান অ্যান্ড দি আনএন্ডিং ওয়ার (লন্ডন – আই বি টরিস, ২০০৩)
৪৪) লুইস ডি হায়াস, পলিটিক্স ইন পাকিস্তান – দ্য স্ট্রাগল ফর লেজিটিমেসি (বোল্ডার – ওয়েস্টভিউ প্রেস, ১৯৮৪), পৃষ্ঠা ১-১৮
৪৫) মরিস জ্যানোউইৎজ, মিলিটারি ইনস্টিটিউশনস অ্যান্ড কোয়েরশন ইন দ্য ডেভেলপিং নেশনস (শিকাগো – দি ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস, ১৯৭৭); জন জে মারেস্কা, ভাইস প্রেসিডেন্ট অফ ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস, ইউনোক্যাল কর্পোরেশন, ইন ইউ এস হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস, ইউ এস ইন্টারেস্টস ইন দ্য সেন্ট্রাল এশিয়ান রিপাবলিকস – হিয়ারিং বিফোর দ্য সাবকমিটি অন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক অব দ্য কমিটি অন ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস, ১০৫তম কংগ্রেস, দ্বিতীয় অধিবেশন, ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৮, http://www.chss.montclair.edu/english/furr/pol/wtc/maresca98.html ; শামিম আখতার, ‘হোয়াট নেক্সট ইন আফগানিস্তান?’ ডন, অগস্ট ১৩, ২০২১, https://www.dawn.com/news/1640427.
৪৬) সিগফ্রায়েড ও উলফ, ‘সিভিলিয়ান কন্ট্রোল অ্যান্ড ডেমোক্র্যাটিক ট্রানজিশন – পাকিস্তান’স আনইক্যুয়াল ইকুয়েশন’, পাকিস্তান সিকিউরিটি রিসার্চ ইউনিট (পিএসআরইউ), এপ্রিল ২০১৩, https://www.dur.ac.uk/resources/psru/PSRUreport2withPGNnos.pdf.
৪৭) সিদ্দিকা, মিলিটারি ইঙ্ক – ইনসাইড পাকিস্তান’স মিলিটারি ইকোনমি
৪৮) হাসান আকসারি রিজভি, দ্য মিলিটারি অ্যান্ড পলিটিক্স ইন পাকিস্তান (লাহোর – সং-ই-মিল পাবলিকেশনস, ২০০৯); বীণা কুকরেজা, কনটেম্পোরারি পাকিস্তান – পলিটিক্যাল প্রসেসে, কনফ্লিক্ট অ্যান্ড ক্রাইসিস (নিউ দিল্লি, সেজ পাবলিকেশন, ২০০৯)
৪৯) উলফ, ‘সিভিলিয়ান কন্ট্রোল অ্যান্ড ডেমোক্র্যাটিক ট্রানজিশন – পাকিস্তান’স আনইক্যুয়াল ইকুয়েশন’
৫০) উলফ, ‘সিভিলিয়ান কন্ট্রোল অ্যান্ড ডেমোক্র্যাটিক ট্রানজিশন – পাকিস্তান’স আনইক্যুয়াল ইকুয়েশন’
৫১) উলফ, ‘সিভিলিয়ান কন্ট্রোল অ্যান্ড ডেমোক্র্যাটিক ট্রানজিশন – পাকিস্তান’স আনইক্যুয়াল ইকুয়েশন’
৫২) আব্দুল শাকুর খাকওয়ানি, ‘সিভিল-মিলিটারি রিলেশনস ইন পাকিস্তান – দ্য কেস অব দ্য রিসেন্ট মিলিটারি ইনভেনশন (অক্টোবর ১২, ১৯৯৯) অ্যান্ড ইটস ইমপ্লিকেশনস ফর পাকিস্তান’স সিকিউরিটি মিলিউ, এসিডিআইএস – অকেশনাল পেপার, ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয়, মে ২০০৩ – পৃষ্ঠা ২৩
৫৩) শাফকাত সইদ, সিভিল-মিলিটারি রিলেশনস ইন পাকিস্তান – ফ্রম জুলফিকার আলি ভুট্টো টু বেনজির ভুট্টো (বোল্ডার ওয়েস্টভিয় প্রেস, ১৯৯৭), পৃষ্ঠা ২৫৬
৫৪) শন গ্রেগরি এবং যেমন রেভিল, ‘দ্য রোল অব দ্য মিলিটারি ইন দ্য কোহেশন অ্যান্ড স্টেবিলিটি অব পাকিস্তান’, কনটেম্পারি সাউথ এশিয়া ১৬ নম্বর ১ (২০০৮) – ৩৯-৬১
৫৫) কুনাল মুখার্জি, ‘দ্য মিলিটারি, আইএসআই অ্যান্ড ‘হাইব্রিড’ গভর্নমেন্টস ইন পাকিস্তান – ফ্রম ইন্ডিপেন্ডেন্স টু মুশাররফ’, ল্যাঙ্কেস্টার ইপ্রিন্টস, https://eprints.lancs.ac.uk/id/eprint/85636/2/ISI.pdf.
৫৬) খুরশিদ আহমেদ, ‘পাকিস্তান – ভিশন অ্যান্ড রিয়্যালিটি, পাস্ট অ্যান্ড ফিউচার’, দ্য মুসলিম ওয়ার্ল্ড, ৯৬ নম্বর ২ (২০০৬) ৩৬৩-৭৯
৫৭) রিজভি, মিলিটারি, স্টেট অ্যান্ড সোসাইটি ইন পাকিস্তান, পৃষ্ঠা ২
৫৮) মরিস জ্যানোউইৎজ, মিলিটারি ইনস্টিটিউশনস অ্যান্ড কোয়েরশন ইন দ্য ডেভেলপিং নেশনস (শিকাগো – দি ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস, ১৯৭৭), ১৫৫-৫৬
৫৯) রিজভি, মিলিটারি, স্টেট অ্যান্ড সোসাইটি ইন পাকিস্তান, পৃষ্ঠা ২১৩
৬০) স্যামুয়েল পি হান্টিংটন, পলিটিক্যাল অর্ডার ইন চেঞ্জিং সোসাইটিস (নিউ হাভেন – ইয়েল ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০৬), পৃষ্ঠা ২০১
৬১)
৬১) হান্টিংটন, পলিটিক্যাল অর্ডার ইন চেঞ্জিং সোসাইটিস
৬২) আমিনা ইব্রাহিম, ‘দি ইকোনমিক ফ্যাক্টরস অব পাকিস্তান’স মিলিটারি কু’স’, এলএসই ওয়ার্কিং পেপার সিরিজ, ২০০৯,
https://www.lse.ac.uk/international-development/Assets/Documents/PDFs/Dissertation/Prizewinning-Dissertations/PWD-2007/WP92.pdf
৬৩) কুকরেজা, কনটেম্পোরারি পাকিস্তান
৬৪) রিজভি, মিলিটারি, স্টেট অ্যান্ড সোসাইটি ইন পাকিস্তান, পৃষ্ঠা ২৩৬-২৩৭
৬৫) সিদ্দিকা, মিলিটারি ইঙ্ক – ইনসাইড পাকিস্তান’স মিলিটারি ইকোনমি
৬৬) সিদ্দিকা, মিলিটারি ইঙ্ক – ইনসাইড পাকিস্তান’স মিলিটারি ইকোনমি
৬৭) সিদ্দিকা, মিলিটারি ইঙ্ক – ইনসাইড পাকিস্তান’স মিলিটারি ইকোনমি
৬৮) মাজহার আজিজ, মিলিটারি কন্ট্রোল ইন পাকিস্তান – দ্য প্যারালাল স্টেট (লন্ডন – রাটলেজ, ২০০৮), পৃষ্ঠা ৪৫
৬৯) বাকির সাজ্জাদ, ‘পাকিস্তান অ্যাট আ ডেঞ্জারাস ক্রসরোডস’, উইলসন সেন্টার, মে ১৬, ২০২৩, https://www.wilsoncenter.org/blog-post/pakistan-dangerous-crossroads.
৭০) হান্টিংটন, পলিটিক্যাল অর্ডার ইন চেঞ্জিং সোসাইটিস
৭১) হানা এলিস-পিটারসন অ্যান্ড মীর বালোচ শাহ, ‘ইমরান খান – ফর্মার পাকিস্তান প্রাইম মিনিস্টার সেনটেন্সড টু থ্রি ইয়ার্স ইন জেল’, দ্য গার্ডিয়ান, অগস্ট ৫, ২০২৩, www.theguardian.com/world/2023/aug/05/former-pakistan-prime-minister-imran-khan-jailed-for-three-years.
৭২) সলমন রফি শেখ, ‘পাকিস্তান;স মিলিটারি ক্যান নাও লিগ্যালি ডু হোয়াটেভার ইট ওয়ান্টস’, নিক্কেই এশিয়া, অগস্ট ২৩, ২০২৩, asia.nikkei.com/Opinion/Pakistan-s-military-can-now-legally-do-whatever-it-wants.
৭৩) খাকওয়ানি, ‘সিভিল-মিলিটারি রিলেশনস ইন পাকিস্তান’
৭৪) দীদার হুসেন সামেজো, ‘হোয়াই পাকিস্তান’স ফরেন পলিসি ইজ সো কনফিউসড’, দ্য ডিপ্লোম্যাট, অগস্ট ১৩, ২০২১৬, thediplomat.com/2016/08/why-pakistans-foreign-policy-is-so-confused/.
৭৫) সাজ্জাদ, ‘পাকিস্তান অ্যাট আ ডেঞ্জারাস ক্রসরোডস’
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.