Author : Abhishek Sharma

Published on Jun 20, 2025 Updated 1 Hours ago

বৈদেশিক নীতিগত সাফল্য সত্ত্বেও ইউন সুক ইওলকে কোরিয়ার গণতন্ত্রকে দুর্বল করা, সমাজের মেরুকরণ করা এবং নিজের দলকে দুর্বল করে দেওয়ার জন্যই মনে রাখা হবে।

ইউন সুক ইওলের উত্তরাধিকার: দুর্বল দল, দ্বিধাবিভক্ত সমাজ এবং ভঙ্গুর গণতন্ত্র

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল ২০২২ সালের ১০ মে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন এবং ‘এমন একটি দেশ যা আক্ষরিক অর্থেই শুধু মাত্র তার জনগণের’… সেই দেশের রূপান্তরের লক্ষ্য স্থির করেছিলেনতিনি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘আমি আজ দৃঢ় ভাবে অঙ্গীকার করছি যে, আমি কোরিয়াকে এমন একটি দেশে উন্নীত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব, যা আক্ষরিক অর্থে জনগণের। স্বাধীনতা, মানবাধিকার, ন্যায্যতা সংহতির স্তম্ভের উপর নির্ভর করে গড়ে উঠবে এই দেশ।’ তবে গণতন্ত্র স্বাধীনতা রক্ষার প্রতিশ্রুতি পালন করার পরিবর্তে, তিনি সক্রিয় ভাবে তার অবমূল্যায়ন করেন এবং যথাসাধ্য তা খর্ব করার চেষ্টা করেছিলেন। সংক্ষেপে বললে, তার উত্তরাধিকার আশা থেকে অনুশোচনায় পরিণত হয়েছে। এই সফরকে বলা যায় এক বিখ্যাত অভিশংসক বা প্রসিকিউটর থেকে এক কলঙ্কিত প্রেসিডেন্টের সফরতাঁর রাজনৈতিক সফর শেষ হওয়ার পাশাপাশি তাই ইউনের উত্তরাধিকার এবং তিনি কী রেখে গিয়েছেন, তা মূল্যায়ন করা জরুরি।

সাংবিধানিক আদালতের রায়ের পর ইউনের প্রসঙ্গে দুটি বিশেষ কথা বলা যায়। প্রথমত, তিনি আর ক রক্ষণশীল নেতা পার্ক গিউন-হাইয়ের পর সাংবিধানিক আদালত কর্তৃক অভিশংসিত দ্বিতীয় বর্তমান প্রেসিডেন্ট। দ্বিতীয়ত, তিনিই একমাত্র প্রেসিডেন্ট যিনি দক্ষিণ কোরিয়ার গণতন্ত্রীকরণের পর সামরিক আইন ঘোষণা করেছেন। দেশের ইতিহাসে আর কোনও রাষ্ট্রপতি ইউনের মতো তীব্র অভিযোগের সম্মুখীন হননি। ইউনের মেয়াদের দিকে তাকালে বলা যেতে পারে যে, তাঁর সফর শুধু মাত্র বিতর্কে পরিপূর্ণ থেকেছেবিশদে সারণি ১-আলোচনা করা হয়েছে।

সারণি ১: প্রেসিডেন্ট ইউনের আমলে বিতর্ক

তারিখ

প্রধান অনুষ্ঠান

৯ মার্চ ২০২২

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়ী হলেন ইউন সুক ইওল

১০ মার্চ ২০২২

প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন ইউন সুক ইওল

      সেপ্টেম্বর ২০২২

ফার্স্ট লেডি (অর্থাৎ প্রেসিডেন্টের স্ত্রী) কিম কেওন-হি ডিও-র ব্যাগ গ্রহণ করার দরুন শুরু হয় বিতর্ক। পরে দুর্নীতি বিরোধী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়।

ফার্স্ট লেডির বিরুদ্ধে পিএইচডি গবেষণাপত্র এবং অন্যান্য প্রকাশিত গবেষণাপত্র চুরি করার ফের অভিযোগ উঠেছে।

২৯ অক্টোবর ২০২২

সিওলে হ্যালোইনের অনুষ্ঠানে ভিড়ে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা

৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ইতাওয়নে সাধারণ মানুষের ভিড়ে হামলার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার ইন্টেরিয়র অ্যান্ড সেফটি মিনিস্টার লি সাং-মিনকে অভিশংসিত করা হয়েছে।

২৯ ডিসেম্বর ২০২৩

জাতীয় পরিষদ ফার্স্ট লেডির সঙ্গে সম্পৃক্ত স্টক কারসাজির অভিযোগের একটি বিশেষ তদন্তের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে (অভিযোগটি ২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে স্টক কারসাজির সময় থেকে শুরু হয়েছিল)

২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ডাক্তারদের বিক্ষোভ শুরু

১১ এপ্রিল ২০২৪ 

বিধানসভা নির্বাচনে ইউনের দলকে প্রায় নস্যাৎ করে দিয়ে বিরোধী দল বিপুল জয়লাভ করে

ইউনের দলের অন্তর্বর্তীকালীন নেতা হান ডং-হুন পদত্যাগ করেন

সেপ্টেম্বর ২০২৪

নির্বাচনে পিপিপি প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট দম্পতির হস্তক্ষেপের অভিযোগ করে বিরোধীরা

৭ নভেম্বর ২০২৪

ইউন দেশের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন এবং তাঁকে কেন্দ্র করে ওঠা বিতর্কের জন্য ক্ষমা চান (তাঁর অর্ধ-মেয়াদ পূরণ হওয়ার সময়)

৩ ডিসেম্বর ২০২৪

 
ইউন সুক ইওল সামরিক আইন ঘোষণা করেন

৪ ডিসেম্বর ২০২৪

জাতীয় পরিষদে সামরিক আইন তুলে নেওয়ার প্রস্তাব পাস

১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ইউনকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য জাতীয় পরিষদে অভিশংসন প্রস্তাব পাস

জানুয়ারি ২০২৫

ফার্স্ট লেডির চুরির অভিযোগ সঠিক বলে প্রমাণিত হয়েছে

২৬ জানুয়ারি ২০২৫

ইউনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে

৪ এপ্রিল ২০২৫

সাংবিধানিক আদালত ইউন অভিশংসন বহাল রেখেছে

উৎস: লেখক কর্তৃক সঙ্কলিত

অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি

ইউনের উত্তরাধিকার দেশের রাজনীতি, প্রতিষ্ঠান সমাজকে উল্লেখযোগ্য রকমের স্পর্শ করেছে। ক্রমবর্ধমান আদর্শগত প্রতিযোগিতা, সামাজিক বিভাজন, বেসামরিক-সামরিক মিথস্ক্রিয়ার রাজনীতিকরণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক আস্থা হ্রাস তাঁর উত্তরাধিকারের কিছু প্রধান লক্ষণ। ইউনের সামরিক আইন ঘোষণা পরবর্তী নীতিগুলি কোরিয়ার গণতন্ত্রকে প্রভাবিত করলেও তাঁর পূর্ববর্তী পদক্ষেপগুলিও ততটাই তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। তাঁর নেতৃত্বের সময় দেশের রাজনৈতিক, আদর্শগত এবং লিঙ্গ বিভাজন আরও গভীর হয়েছে। তিনি রক্ষণশীল অতি দক্ষিণপন্থীদের শক্তিশালী করেছেন; বেসামরিক-সামরিক সম্পর্কে টানাপড়েন বেড়েছে; মাজে লিঙ্গ, দল আদর্শগত ভিত্তি ক্রমশ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে; এবং একসময়ের নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলিকে এখন সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে

ক্রমবর্ধমান আদর্শগত প্রতিযোগিতা, সামাজিক বিভাজন, বেসামরিক-সামরিক মিথস্ক্রিয়ার রাজনীতিকরণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক আস্থা হ্রাস তাঁর উত্তরাধিকারের কিছু প্রধান লক্ষণ

ইউনের কর্মকাণ্ড অতি-দক্ষিণপন্থীদের উদ্দীপিত ও উৎসাহিত করেছে, যার ফলে সামাজিক বিভাজন লিঙ্গভিত্তিক গোষ্ঠীগত চিন্তাভাবনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি জেনেশুনে ষড়যন্ত্রমূলক রক্ষণশীল এবং নারীবিরোধীদের দৃষ্টিভঙ্গিকে রাজনৈতিক বৈধতা দিয়েছেন, মধ্যপন্থী তরুণ প্রজন্মকে তাঁর দল থেকে আরও বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন। তাঁর অধীনে, রক্ষণশীলতার সংজ্ঞা আন্দোলনের রূপরেখা পরিবর্তিত হয়েছে, মধ্য-দক্ষিণপন্থী থেকে চরম দক্ষিণপন্থী মনোভাব প্রকট হয়েছে। দায়বদ্ধতা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি শ্রদ্ধা এবং যথাযথ প্রক্রিয়ার মতো রক্ষণশীল বৈশিষ্ট্যগুলি পদ্ধতিগত ভাবে ক্ষয়িষ্ণু হয়েছে। এর পাশাপাশি, ‘মেন, মিডিয়া অ্যান্ড এমএজিএ’ নেতৃত্বে একটি নতুন আদর্শগত আন্দোলনের সূচনা দেখা যাচ্ছে। এই আন্দোলন নতুন রক্ষণশীলতার ছায়ায় প্রসারিত হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার নিজস্বমেক কোরিয়া গ্রেট এগে (এমকেজিএ) প্রচারণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি ট্রাম্পের মেক আমেরিকা গ্রেট এগে (এমএজিএ) আন্দোলন দ্বারা অনুপ্রাণিত, যা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব, নির্বাচনী প্রতিষ্ঠানের অবৈধকরণ বিকল্প সত্যের প্রতি অগ্রাধিকারের কথা প্রচার করে। নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা এখন একটি রক্ষণশীল আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। সর্বোপরি, তাঁর আমলে বপন করা এই বিভাজনের বীজ একদিন একটি মহীরুহে পরিণত হবে, যা আরও বিভাজনের দিকে চালিত করবে।

আদর্শগত সংঘাত ছাড়াও দেশের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের উপর আস্থা হ্রাস পেয়েছে। রাজনৈতিক সংঘর্ষের ফলে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, জাতীয় পরিষদ, বিচার বিভাগ, সাংবিধানিক আদালত এবং জাতীয় নির্বাচন কমিশন-সহ সকল প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এপ্রিল মাসের নির্বাচনের পর থেকে এই লড়াই তীব্রতর হয়েছেকারণ বিরোধী দল সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন অর্জন করেছে। ক্ষমতাসীন দল বিরোধী দল একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানকে অপব্যবহার করার অভিযোগ এনেছে। প্রেসিডেন্ট ইউন ফার্স্ট লেডিকে রক্ষা করার জন্য নিজের পদের অপব্যবহার করেছেন, যা জাতীয় পরিষদের ভূমিকাকে খাটো করেছে। একই ভাবে, বিরোধী দল ক্ষমতাসীন প্রশাসনের ক্ষমতা নষ্ট করার জন্য বিধানসভায় তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ব্যবহার করেছে। সাংবিধানিক আদালতের বিচারপতিদের নিয়োগ উভয় পক্ষের মধ্যে আর কটি মর্যাদার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা বিচারকদের উপর আস্থা খর্ব করেছে, যেমনটি ইউনের বিচারের সময় এবং সম্প্রতি লি ওয়ান-কিউ-র বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের মাধ্যমে দেখা গিয়েছে

প্রেসিডেন্ট ইউন ফার্স্ট লেডিকে রক্ষা করার জন্য নিজের পদের অপব্যবহার করেছেন, যা জাতীয় পরিষদের ভূমিকাকে খাটো করেছে।

ইউনের উত্তরাধিকার বেসামরিক-সামরিক সম্পর্ককে নষ্ট করেছে। সশস্ত্র বাহিনীর সাম্প্রতিক পদক্ষেপ জনসাধারণের অনেককে হতবাক করেছে, ১৯৭০ এবং ১৯৮০-এর দশকের গণতন্ত্রবিরোধী বিক্ষোভের সময় সেনাবাহিনীর ভূমিকার অন্ধকার স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে। গত বছরের সামরিক পদক্ষেপগুলি এমন অনেকের কাছেই কালো স্মৃতি উস্কে দিয়েছে, যাঁরা ইতিহাসের বইগুলিতে কেবল এই ধরনের জিনিস সম্পর্কে পড়েছিলেন। সুতরাং, সামরিক আইনের পর সেনাবাহিনীর রাজনীতিকরণ নিয়ে সন্দেহ আরও বেড়েছে। প্রাক্তন ডিফেন্স  মিনিস্টার কিম ইয়ং-হিউন ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর প্রভাব সেই সম্পর্কে উদ্বেগ তৈরি করেছে। এই পর্বের পরে বিরোধী দল পূর্ববর্তী আইনি ব্যবধান পূরণ করতে এবং সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা অক্ষুণ্ণ রাখতে সামরিক সংস্কার প্রণয়নের দিকে মনোনিবেশ করেছে। এ ছাড়াও, সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকাও রাজনৈতিক নজরে এসেছে।

প্রসঙ্গ বৈদেশিক নীতি: আবার কি শূন্যে ফিরে যাওয়া?

দেশীয় রাজনীতি ছাড়াও, বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে ইউনের উত্তরাধিকার দেশে এবং বিদেশে অনেকের কাছে অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছিল। তিনি জাপানের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপন এবং দক্ষিণ কোরিয়াকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছাকাছি আনার ব্যাপক প্রচেষ্টা করেছিলেন। মুন জে-ইন সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু তাঁর বিপরীতে ইউন খোলাখুলি ভাবে ইন্দো-প্যাসিফিক গঠনকে গ্রহণ করেছিলেন এবং আট মাসের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল প্রকাশ করেছিলেন। ইউনের অধীনে, দক্ষিণ কোরিয়া তার তাৎক্ষণিক ভৌগোলিক পরিসর উত্তর কোরিয়ার হুমকির ঊর্ধ্বে উঠে দক্ষিণ-পূর্ব দক্ষিণ এশীয় দেশগুলির সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তোলার উপর মনোনিবেশ করেছি। এই পদক্ষেপ স্থিতিশীলতা সুরক্ষায় অবদান রাখার জন্য সিওলের সদিচ্ছাকেই দর্শায়। কারণ এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক অংশীদার হয়ে ওঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কৌশলগত অস্পষ্টতা থেকে কৌশলগত স্পষ্টতার দিকে এই বৈদেশিক নীতি স্থানান্তর ছিল অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক পদক্ষেপ। যাই হোক, ইউন আবারও বৈদেশিক নীতিতে দ্বিদলীয়তার গুরুত্বকে উপেক্ষা করেছিলেন। বৈদেশিক নীতির সিদ্ধান্ত গ্রহণের এই ধরটি আবারও তাঁর রাজনৈতিক অপরিপক্বতাকেই দর্শায়। রাজনৈতিক ঐকমত্যের অভাবের কারণে গুরুত্বপূর্ণ বৈদেশিক নীতির বিষয়গুলিতে ইউন বিরোধী দলের মধ্যে পার্থক্য বজায় ছিল। উত্তর কোরিয়ার প্রতি তাঁর কঠোর মনোভাব, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ  মিত্রতা, জাপানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং ইউক্রেন সমস্যার কারণে ইউন বিরোধী দল কখনও মুখোমুখি হননি।

ইউনের অধীনে, দক্ষিণ কোরিয়া তার তাৎক্ষণিক ভৌগোলিক পরিসর উত্তর কোরিয়ার হুমকির ঊর্ধ্বে উঠে দক্ষিণ-পূর্ব দক্ষিণ এশীয় দেশগুলির সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তোলার উপর মনোনিবেশ করেছি

তাঁর খারাপ অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্তগুলি এখন তাঁর প্রশাসনের অর্জিত কূটনৈতিক অগ্রগতির অনেকটাই ধামাচাপা দিচ্ছে, বিশেষ করে ত্রিপাক্ষিক নিরাপত্তা সহযোগিতা কোরিয়া-জাপান সম্পর্কের ক্ষেত্রে। ইউনের মতে, অবজ্ঞা বিরোধীদের তাঁর নীতিগুলি খারিজ করার যথেষ্ট সুযোগ করে দিয়েছে। বিরোধী দলীয় নেতা এবং রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী লি জে-মিয়ং জাপান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্কের মতো কিছু সিদ্ধান্ত অব্যাহত রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও নীতিগুলি কতটা অব্যাহত থাকবে, তা সময়ই বলবে। তবে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অফ কোরিয়া (ডিপিকে) পটভূমি এবং লক্ষ্য বিবেচনা করলে তাদের কাছ থেকে স্থিতাবস্থার বৈদেশিক নীতি আশা করা একটি গুরুতর ভুল হবে।

ইউনের কি আর আদৌ কোনও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ আছে?

মনে করা হচ্ছে, ইউন তাঁর রাজনৈতিক পেশা ছাড়েননি। রাষ্ট্রপতির বাসভবন ত্যাগ করার আগে তাঁর শেষ বিবৃতিটি একটি নতুন রাজনৈতিক ইনিংস শুরুর ইঙ্গিত দেয়, তবে তার অবতার অবশ্য ভিন্ন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি আমাদের দেশ এবং দেশের জনগণের সেবায় একটি নতুন পথ খুঁজব।’ তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করলে এই কাজ নিতান্তই অসম্ভব না হলেও অত্যন্ত কঠিন অবশ্যই হবে। তবে গত সাড়ে চার মাসের রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও, যা বলা যেতে পারে তা হল, একজন প্রসিকিউটর জেনারেল হিসেবে তাঁসফর একজন রাজনীতিবিদ প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁভূমিকার চাইতে ঢের ভাল ছিল। প্রেসিডেন্টের মেয়াদে যদি তিনি প্রসিকিউটর থাকাকালীন তাঁর নিজস্ব মনোভাব অর্থাৎ ব্যক্তিদের নয়, আইনের রক্ষক’ থাকার পেশাদারি নীতিমালা অনুসরণ করে চলতেন, তা হলে তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিঃসন্দেহে আরও অনেক ভাল কাজ করতে পারতেন। দুর্ভাগ্যবশত, তিনি ভুল বিচার করেছিলেন এবং অনেক ভুল তথ্য দিয়ে নানাবিধ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এই সিদ্ধান্তগুলি দেশের উপর গভীর প্রভাব ফেলবে। অতএব এ কথা বলাই যায় যে, তাঁর বৈদেশিক নীতিগত সাফল্য সত্ত্বেও, ইউন কোরিয়ার গণতন্ত্রকে দুর্বল করা, সমাজের মেরুকরণ করা এবং তাঁদলের ক্ষমতা হ্রাস করার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

 


অভিষেক শর্মা অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Author

Abhishek Sharma

Abhishek Sharma

Abhishek Sharma is a Research Assistant with ORF’s Strategic Studies Programme. His research focuses on the Indo-Pacific regional security and geopolitical developments with a special ...

Read More +