-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
অপারেশন সিঁদুর ভারতের সামরিক দৃঢ়তা প্রদর্শন করলেও দীর্ঘমেয়াদে পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদকে দমন করার জন্য গোপন ক্ষমতার উপর কেন্দ্রীভূত একটি অবিচল আক্রমণাত্মক কৌশল প্রয়োজন।
২০২৫ সালের ২২ এপ্রিল পহেলগামে ২৬ জন বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানির ঘটনাটি ছিল বর্বরতা। একটি অনুপ্রাণিত ও সুশৃঙ্খল প্রতিপক্ষ হিসেবে রাষ্ট্রীয় মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদ পাকিস্তানের জন্য একটি কম খরচের ও কম ঝুঁকিপূর্ণ কৌশল। ৬-৭ মে পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে), খাইবার পাখতুনখোয়া এবং পাকিস্তানি পাঞ্জাবের ন’টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালিয়ে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করে। ১০ মে ভারতীয় বিমান বাহিনীর (আইএএফ) সারগোধা, রহিমিয়ার খান এবং নূর খান-সহ গুরুত্বপূর্ণ পাকিস্তানি বিমান ঘাঁটিতে রাতভর নির্ভুল হামলার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া শেষ হয়, যার ফলে পাকিস্তানি সামরিক অভিযানের মহাপরিচালক (ডিজিএমও) সশস্ত্র অভিযান বন্ধের বিষয়ে আলোচনা করার জন্য তাঁর প্রতিপক্ষকে ফোন করতে বাধ্য হন।
পাকিস্তান খানিক হতবাকই বটে। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর প্রথম বারের মতো ভারতীয় বিমান বাহিনী (আইএএফ) আক্রমণাত্মক বিমান হামলা শুরু করে, মুরিদকে ও বাহাওয়ালপুরে সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলিতে আঘাত হানে, যেখানে যথাক্রমে পাকিস্তানের পাঞ্জাবে লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি) এবং জইশ-ই-মোহাম্মদের (জেইএম) আবাসস্থল। এই পদক্ষেপটি পহেলগামে জঘন্য সন্ত্রাসবাদী হামলার মাধ্যমে শুরু হওয়া উত্তেজনার সিঁড়িতে তীব্র পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।
পাকিস্তানকে শাস্তি দেওয়ার জন্য সামরিক শক্তির ব্যবহার ভারতের কৌশলের একটি মাত্র উপাদান। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বল প্রয়োগকে বিবেচনা করা হলেও, এর পরিধি আরও বিস্তৃত করা প্রয়োজন, যাতে পাকিস্তানের জিহাদি প্রাচীর – যা বিশেষ করে পাকিস্তানের পাঞ্জাব থেকে উদ্ভূত - ভেঙে ফেলা যায়।
মোদী সরকারের অধীনে নয়াদিল্লি ভারতের শত্রুদের, বিশেষ করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে, নরসিংহ রাও, অটল বিহারী বাজপেয়ী এবং মনমোহন সিংয়ের পূর্ববর্তী শাসনব্যবস্থার তুলনায় আরও সাহসী হয়ে উঠেছে। পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদী হামলার পর সামরিক শক্তির প্রকাশ্য ব্যবহার জড়িত বলপ্রয়োগমূলক কৌশল প্রয়োগে ভারত আগে আরও দ্বিধাগ্রস্ত ছিল।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর ফলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের সামরিক সাফল্য সর্বোপরি অস্থায়ী বা অস্থিতিশীল। পাকিস্তানের ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা ও কিছু ভারতীয় কৌশলগত বিশেষজ্ঞ উভয়ই একমত যে, পরবর্তী দফার উত্তেজনা আরও বৃহত্তর বা ‘তীক্ষ্ণতর’ হতে পারে। নিঃসন্দেহে মোদী সরকার ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীকে ভবিষ্যতের সঙ্কটে আরও তীব্র উত্তেজনার স্পষ্ট সম্ভাবনার জন্য প্রস্তুত রাখতে নিরলস চেষ্টা করছেন। এই পরিণতি মোকাবিলা করার অর্থ হল ভারতীয় সামরিক বাহিনীর তিনটি শাখার কাছে ২০২৫ সালের মে মাসে চার দিনের যুদ্ধের সময় তারা কী ঠিক ও কী ভুল করেছে তা মূল্যায়ন করা। ভবিষ্যতের সঙ্কটে তাদের কী পরিকল্পনা করতে হবে তা এভাবে মূল্যায়ন করা ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই।
পাকিস্তানকে শাস্তি দেওয়ার জন্য সামরিক শক্তির ব্যবহার ভারতের কৌশলের একটি মাত্র উপাদান। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বল প্রয়োগকে বিবেচনা করা হলেও, এর পরিধি আরও বিস্তৃত করা প্রয়োজন, যাতে পাকিস্তানের জিহাদি প্রাচীর – যা বিশেষ করে পাকিস্তানের পাঞ্জাব থেকে উদ্ভূত - ভেঙে ফেলা যায়।
পাঞ্জাব পাকিস্তানের কেন্দ্রে অবস্থিত। এই অঞ্চলটি দীর্ঘদিন ধরে জিহাদিদের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করে আসছে। কারণ পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তাদের বেশিরভাগ নিয়োগ পাঞ্জাব থেকে সংগ্রহ করে এবং পাকিস্তানের অনেক বড় সামরিক স্থাপনা সেখানেই অবস্থিত। জনসংখ্যার দিক থেকে দেখলে, পাঞ্জাবিরা পাকিস্তানের সবচেয়ে প্রভাবশালী গোষ্ঠী এবং লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি) ও জইশ-ই-মোহাম্মদের (জেইএম) মতো সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীতে জিহাদিরা প্রায়শই পাঞ্জাব প্রদেশের সেই জেলাগুলি থেকেই উঠে আসে, যেগুলি ভারতের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করে নেয়।
এই শক্তির একটি প্রধান প্রকাশ হল পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা ব্যবস্থার স্পষ্ট সাফল্য, যা ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে দেশের পাঞ্জাবি জিহাদি দুর্গে প্রবেশ করতে তুলনামূলক ভাবে অকার্যকর করে তুলেছে।
পাকিস্তানের এক জ্ঞানী ও সাধারণ ভাবে সহানুভূতিশীল পর্যবেক্ষক বহু বছর আগে উল্লেখ করেছিলেন যে, রাওয়ালপিন্ডির পাল্টা গোয়েন্দা ব্যবস্থা অত্যন্ত শক্তিশালী। এই শক্তির একটি প্রধান প্রকাশ হল পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা ব্যবস্থার স্পষ্ট সাফল্য, যা ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে দেশের পাঞ্জাবি জিহাদি দুর্গে প্রবেশ করতে তুলনামূলক ভাবে অকার্যকর করে তুলেছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী (পিএ) দ্বারা লালিত সমস্ত ভারত-কেন্দ্রিক প্রক্সি - যেমন এলইটি এবং জেইএম - এবং তাদের তানজিমগুলিকে শক্তিহীন করার জন্য বিমান হামলার চেয়েও বেশি কিছু প্রয়োজন হবে, যা নিঃসন্দেহে মারাত্মক, উত্তেজনাপূর্ণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ। ইজরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে যেমনটা করেছে, ভারতেরও ঠিক সে ভাবেই পাকিস্তানের পাঞ্জাবে সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামো লক্ষ্য করে প্রকাশ্য সামরিক ব্যবস্থার পাশাপাশি গোপন পদক্ষেপের সঙ্গে জড়িত আরও সুশৃঙ্খল, ধৈর্যশীল, উদ্দেশ্যমূলক এবং সম্পদ-নিবিড় কৌশলের প্রয়োজন হবে। জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) সম্প্রতি জানিয়েছে, পহেলগাম হামলার অন্তত দু’জন অপরাধীকে - যার মধ্যে মূল পরিকল্পনাকারীও রয়েছে এবং যারা সবাই পাকিস্তানি - নিষ্ক্রিয় করার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনী যে সাফল্য পেয়েছে সে কথা মাথায় রাখলেও এ কথা বলা জরুরি, ২০০০ সালে চিত্তিসিংপুরায় ৩৫ জন বেসামরিক নাগরিককে নির্মম ভাবে হত্যাকারী লস্কর-ই-তৈয়বা সন্ত্রাসবাদীদের গ্রেফতার বা নির্মূল করতে ভারতীয় নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতা তাদের সক্ষমতারই একটি ভয়াবহ প্রমাণ।
বিমান শক্তি, পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সীমিত স্থল আক্রমণ এবং নৌ অভিযানের মাধ্যমে প্রকাশ্য সামরিক পদক্ষেপের সমর্থকরা এই বিষয়ে বিতর্ক করতে পারেন যে, গোপন পদক্ষেপের তুলনামূলক অকার্যকরতা ও ব্যর্থতা নয়াদিল্লিকে পাকিস্তানকে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালানো থেকে বিরত রাখতে আরও উচ্চাকাঙ্ক্ষী সামরিক পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করে। তবে কোনও সন্ত্রাসবাদী ঘটনার পরে যা সঙ্কট তৈরি হয়, তার পরে শক্তিশালী সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার দু’টি পরিণতি রয়েছে। প্রথমত, প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভারতকে পাকিস্তানের উপর যথেষ্ট পরিমাণে মূল্য চাপিয়ে ‘বিজয়ী’ হয়ে উঠতে হবে, যার ফলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ করতে বাধ্য হবে। পাকিস্তানের জন্য বিজয়ের আভাস পাওয়া গেলেও আরও সন্ত্রাসী হামলা রোধ করার জন্য যথেষ্ট হবে না। কারণ ইসলামাবাদ একটি অন্তর্নিহিত প্রতিপক্ষ। যদি কিছু হয়, তা হলে প্রকাশ্য পদক্ষেপ আরও আক্রমণের জন্য আমন্ত্রণসম হবে। দ্বিতীয়ত, পাকিস্তানের মাটিতে আক্রমণের সন্ধান পেলেই উত্তেজনার বোঝা ভারতের উপর পড়বে।
ইজরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে যেমনটা করেছে, ভারতেরও ঠিক সে ভাবেই পাকিস্তানের পাঞ্জাবে সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামো লক্ষ্য করে প্রকাশ্য সামরিক ব্যবস্থার পাশাপাশি গোপন পদক্ষেপের সঙ্গে জড়িত আরও সুশৃঙ্খল, ধৈর্যশীল, উদ্দেশ্যমূলক এবং সম্পদ-নিবিড় কৌশলের প্রয়োজন হবে।
অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যের আসল পরীক্ষা কেবল পরিমাপ করা যেতে পারে অথবা বিশ্বাসযোগ্যভাবে নিশ্চিত করা যেতে পারে। অর্থাৎ আগামী মাস এবং বছরগুলিতে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট গণহত্যা সন্ত্রাসবাদকে ভারত দমন করতে পারে কি না, তা দেখার হবে। তবে যদি ২০০০ সালে চিত্তিসিংপুরা, ১৯৯৩ ও ২০০৮ সালে মুম্বই, ২০১৯ সালে পুলওয়ামা এবং ২০২৫ সালে পহেলগামের মতো সন্ত্রাসবাদী হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি হয়, তা হলে ভারতীয় প্রতিক্রিয়াগুলি প্রকাশ্য সামরিক পদক্ষেপ ও কিছুই না করার মধ্যে দোদুল্যমানতার শিকার হবে। দ্বিতীয়টিও অসম্ভব নয়। কারণ ভবিষ্যতের ভারতীয় সরকারগুলি মোদী সরকারের মতো প্রত্যুত্তর বা প্রতিক্রিয়া না-ও দিতে পারে। এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা হল, যদি ভবিষ্যতের সরকারগুলি দলীয় সীমানা অতিক্রম করে এবং ২০১৯ ও ২০২৫ সালে মোদী সরকারের গৃহীত পদ্ধতি ধারাবাহিক ভাবে অনুসরণ করে, তা হলে ভারত সম্ভাব্য ভাবে গণহত্যা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অর্জন করতে পারে।
১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধের পর থেকে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনও প্রচলিত যুদ্ধে লিপ্ত হয়নি, যদিও পাকিস্তানিরা কৌশলগত দক্ষতার উদাহরণ হিসেবে এটিকে মোড়ক দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। প্রচলিত ক্ষেত্রে ভারতের প্রতিরোধমূলক সাফল্যের কারণ হল ভারতের হাতে পাকিস্তানের প্রচুর সংখ্যক প্রচলিত সামরিক ক্ষতি। ইসরায়েলি সামরিক কৌশলবিদ ও অবসরপ্রাপ্ত ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) কর্মকর্তা জোনাথন শিমশোনি তাঁর বিশ্লেষণে দৃঢ় ভাবে দেখিয়েছেন যে, পুনরাবৃত্তিমূলক প্রচলিত সামরিক পরাজয় প্রচলিত প্রতিরোধকে খুব স্থিতিশীল করে তুলতে পারে। ইজরায়েল ও ভারত উভয়ই সফল প্রচলিত প্রতিরোধের উজ্জ্বল উদাহরণ। তবুও পাকিস্তানের তুলনায় ভারত যে প্রচলিত প্রতিরোধমূলক মানদণ্ড অর্জন করেছে তা পূরণ করা পাকিস্তানের উপ-প্রচলিত সহিংসতা এবং এর রূপ অর্থাৎ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয়তা ও কঠিন পদক্ষেপ। দ্বিতীয়টি পাকিস্তানের জন্য আরও ব্যয়বহুল। কারণ এটি ভারতের উল্লেখযোগ্য প্রতিশোধ রোধ করার জন্য ভারতের দিকে পরিচালিত সন্ত্রাসবাদী সহিংসতার তীব্রতা সাবধানতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, এমনকি নয়াদিল্লি যদি অপারেশন সিঁদুর-জাতীয় প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে। অতএব সংক্ষেপে বলতে গেলে, প্রকাশ্য সামরিক পদক্ষেপ প্রায়শই প্রয়োজনীয় হলেও এটি অপ্রতুল প্রমাণিত হতে পারে।
জার্মান সামরিক ইতিহাসবিদ হ্যান্স ডেলব্রুকের পর্যবেক্ষণের এই অবস্থানটিকেই নয়াদিল্লির স্বীকৃতি দেওয়া উচিত, যা তিনি দুই ধরনের সামরিক কৌশল সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ করেছেন - নিডারওয়ারফুংস্ট্র্যাটেজি এবং এরমাটুংস্ট্র্যাটেজি। প্রথমটি হল ধ্বংসের কৌশল, যা প্রতিপক্ষের সামরিক বাহিনী বা তার প্রতিনিধিদের নির্মূল করার জন্য সিদ্ধান্তমূলক সামরিক পদক্ষেপের নির্দেশ দেয়। তবে ভারতের কাছে প্রচলিত সামরিক উপায়গুলি আওতাধীন নয় এবং ভারত যদি উপায়গুলি অর্জনও করে, তা হলে সেগুলি ব্যবহার করা ব্যয়বহুল হবে। ভারতীয় প্রচলিত বাহিনীকে বর্তমানের তুলনায় উল্লেখযোগ্য ভাবে শক্তিশালী হতে হবে। তিনটি বাহিনীর জন্যই আরও শক্তিশালী মূলধন বরাদ্দের প্রয়োজন হবে এবং অধিগ্রহণের গতি উল্লেখযোগ্য ভাবে ত্বরান্বিত করতে হবে। চিন ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রচলিত সামরিক সক্ষমতার বিভাজনও একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে - বিশেষ করে যদি বেজিং দ্বিতীয় ফ্রন্ট খোলার হুমকি দেয় বা পাকিস্তানের সঙ্গে সংহতি প্রদর্শনের জন্য বাস্তবে তা করে।
পাকিস্তানের তুলনায় ভারত যে প্রচলিত প্রতিরোধমূলক মানদণ্ড অর্জন করেছে তা পূরণ করা পাকিস্তানের উপ-প্রচলিত সহিংসতা এবং এর রূপ অর্থাৎ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয়তা ও কঠিন পদক্ষেপ।
তা ছাড়া ভারতকে অবশ্যই তার সুবিধা অর্জনের জন্য প্রস্তুতি প্রদর্শন করতে হবে, যেমনটি ভারতীয় কৌশলগত প্রতিষ্ঠানের কিছু সমালোচক যুক্তি দিয়েছিলেন যে, ২০২৫ সালের ৯-১০ মে রাতে পাকিস্তানি বিমান ঘাঁটিতে ভারতীয় বিমান বাহিনী (আইএএফ) কর্তৃক ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর। তবে এর জন্য নয়াদিল্লিকে আরও তীব্র প্রচলিত উত্তেজনার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে এবং যার জন্য আরও বেশি মূল্য দিতে হবে। ঠিক যেমনটা শত্রুতা দীর্ঘায়িত করে ভারত পাকিস্তানের উপর আরও মূল্য চাপিয়ে দেবে।
প্রকৃতপক্ষে, মোদী সরকারের ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালু করার যুক্তিটি ‘অনুত্তেজক’ পদক্ষেপ হিসাবে প্রচলিত উত্তেজনার স্থিতিশীল প্রতিজ্ঞার প্রতি যে কোনও প্রতিশ্রুতিরই প্রতারণা করে। পাকিস্তানের সামরিক অভিযানের মহাপরিচালক (ডিজিএমও) তাঁর ভারতীয় প্রতিপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে শত্রুতা বন্ধের অনুরোধ করার পর ভারতের তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধবিরতি মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এটি আরও জোরদার হয়েছিল।
হাস্যকর ভাবে পাকিস্তানিরা - প্রতিশোধ নেওয়ার পর তিন দিনের মধ্যে দ্রুত স্বীকার করে - ভারতকে কৌশলগত বিজয় এনে দিলেও তা অস্থায়ী ছিল। এই ফলাফলটি ভারত-বিরোধী জিহাদের প্রতি পাকিস্তানের অবিচল প্রতিশ্রুতি দ্বারা গঠিত, যা সম্ভবত পরবর্তী সঙ্কটের জন্য ভারতকে সামরিক ভাবে আরও ভাল ভাবে প্রস্তুত হতে বাধ্য করবে।
বিকল্প ভাবে এরমাটুংস্ট্র্যাটেজি – অর্থাৎ ক্লান্তির কৌশল সম্ভবত ভারতের কাছে উপলব্ধ একমাত্র বিশ্বাসযোগ্য কৌশল। যদিও ডেলব্রুকের এরমাটুংস্ট্র্যাটেজির ধারণা ও সংজ্ঞা যুদ্ধের কর্মক্ষম স্তরের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল এবং সমসাময়িক আকারে এটিকে ‘অ্যাট্রিশন’ বলা হয় - যা যুদ্ধের অর্থনৈতিক, জনসংখ্যাতাত্ত্বিক এবং শিল্প সাধনীগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে।
সিন্ধু জল চুক্তি (আইডব্লিউটি) স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পাকিস্তানকে আর্থিক কর্মকাণ্ডের টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) ধূসর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চাপ দেওয়ার মাধ্যমে মোদী সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক যুদ্ধের গুরুত্ব উপলব্ধি করেছে। ভারতের তূণীরে আরও একটি তীর যুক্ত করতে হবে: গোপন কর্মকাণ্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে জোরদার বিনিয়োগ। এটি অবশ্যই গোয়েন্দা-নিবিড়, সময়সাপেক্ষ, দুর্দান্ত শৃঙ্খলা, ভাষাগত দক্ষতা, অধ্যবসায় এবং সম্পদ দাবি করবে এবং আর্থিক, মানবিক এবং প্রযুক্তিগত উপাদানগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এটি নয়াদিল্লিকে আরও দক্ষ ভাবে ঝুঁকি ও ব্যয়ের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করবে। তাই একটি শক্তিশালী গোপন কর্মকাণ্ডের উপাদান-সহ একটি আক্রমণাত্মক কৌশলই নয়াদিল্লির জন্য একমাত্র বিশ্বাসযোগ্য পদ্ধতি, যা দীর্ঘমেয়াদে উচ্চ লাভ সুনিশ্চিত করে।
কার্তিক বোম্মাকান্তি অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের সিনিয়র ফেলো।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Kartik is a Senior Fellow with the Strategic Studies Programme. He is currently working on issues related to land warfare and armies, especially the India ...
Read More +