এই প্রতিবেদনটি ‘রিইগনাইটেড অ্যাজেন্ডাজ: ট্রাম্প’স রিটার্ন অ্যান্ড ইটস গ্লোবাল রেপারকাশন’ সিরিজের অংশ।
চিরাচরিত ভাবে একটি কৌশলগত অপরিহার্য অংশীদারিত্ব হিসেবে উল্লেখ করা হলেও টোকিয়ো এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্ক বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তনের সম্মুখীন হয়েছে। উল্লেখযোগ্য মতাদেশ অনুযায়ী রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের (ইন্দো-প্যাসিফিকের একটি প্রধান মিত্র) মধ্যে সম্পর্ক কেমন হতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন ও জল্পনা উত্থাপন করে।
ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ পদ্ধতি তাঁর প্রথম মেয়াদের বাণিজ্যের ভারসাম্যহীনতা, বিনিময়মূলক কূটনীতি ও প্রতিরক্ষার বোঝা টেনে নিয়ে এসেছে, যা জাপানের জন্য চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ দুইয়েরই অবকাশ রাখে। ২৭ অক্টোবর জাপানের স্ন্যাপ নির্বাচন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে (এলডিপি) এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথম বারের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, যা দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে পরিবর্তনকেই দর্শায়। চিনের সামরিক আগ্রাসন ও উত্তর কোরিয়ার অনির্দেশ্যতার দরুন আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। তাই মার্কিন-জাপান জোট বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রের পাশাপাশি অভিন্ন সাধারণ কৌশলগত স্বার্থ সংক্রান্ত অংশীদারিত্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।
২৭ অক্টোবর জাপানের স্ন্যাপ নির্বাচন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে (এলডিপি) এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথম বারের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, যা দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে পরিবর্তনকেই দর্শায়।
ইশিবা ট্রাম্পকে তাঁর নির্বাচনী বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং জাপান-মার্কিন জোটকে শক্তিশালী করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, এটিই ছিল ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর প্রথম যোগাযোগ এবং তাঁদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতির বিষয়ে জরুরি আলোচনা করার অভিপ্রায়ও তিনি ব্যক্ত করেন।
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, চিন সংক্রান্ত নীতি ও ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল
মুক্ত ও অবাধ ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল দুই দেশেরই ভিত্তিপ্রস্তর, বিশেষ করে পূর্ব ও দক্ষিণ চিন সাগরে ক্রমবর্ধমান কৌশলগত হুমকির আলোকে এই কৌশল আরও বেশি করে মনোযোগের কেন্দ্রে উঠে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। ট্রাম্প জাপানকে প্রতিরক্ষা ব্যয় আরও বৃদ্ধি করতে এবং মার্কিন-জাপান নিরাপত্তা জোটে আরও দায়িত্ব নিতে চাপ দিতে পারেন। তিনি জাপানে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি জোরদার করার চেষ্টা করতে পারেন এবং সম্ভাব্য ভাবে সেখানে অবস্থানরত মার্কিন সৈন্যদের জন্য উচ্চতর আর্থিক অবদানের দাবি জানাতে পারেন। ট্রাম্প প্রশাসন আরও ঘন ঘন সামরিক মহড়া ও জাপানের সঙ্গে উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সহযোগিতা-সহ চিনের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিরোধ কৌশল গড়ে তোলার উপর জোর দিতে পারে।
এটি অবশ্যই উল্লেখ করা উচিত যে, জাপানে বর্তমানে প্রায় ৫৪০০০ সক্রিয় ও কর্মরত মার্কিন সৈন্য রয়েছে এবং চিন ও উত্তর কোরিয়ার নৈকট্যের কারণে প্রশান্ত মহাসাগরের অন্যতম কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ দ্বীপরাষ্ট্র হিসাবে জাপানের ভূমিকা অন্তহীন। পূর্ববর্তী ট্রাম্প প্রশাসন অভ্যন্তরীণ ভাবে সাধারণ প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়ানোর জন্য মিত্রদের সঙ্গে পরামর্শের পাশাপাশি ২০১৯ সালে মার্কিন সৈন্যদের জন্য জাপানের অর্থপ্রদানকে ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার উদ্দেশ্যে দ্বীপদেশটির কাছে আর্জি করেছিল। গত পাঁচ বছরে জাপান ক্রমশ তার প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়িয়েছে, যার ফলে ২০২৪ সালে ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সামরিক বিনিয়োগের পরিকল্পনা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন যদি গুরুত্বপূর্ণ মিত্রদের সঙ্গে সামরিক সম্পৃক্ততা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়, তা হলে জাপানের কৌশলগত ক্ষেত্রটি প্রতিরক্ষার অভিমুখে বৃদ্ধি পেতে পারে এবং আত্মনির্ভরশীলতা ও আঞ্চলিক দায়িত্ব বৃদ্ধির মার্কিন উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
ট্রাম্পের প্রশাসন আরও ঘন ঘন সামরিক মহড়া ও জাপানের সঙ্গে উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সহযোগিতা-সহ চিনের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিরোধ কৌশল গড়ে তোলার উপর জোর দিতে পারে।
চিনের প্রতি ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি চিরাচরিত ভাবে দ্বন্দ্বমূলক থেকেছে, যার মধ্যে রয়েছে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা, শুল্ক এবং কূটনৈতিক চাপ। দক্ষিণ ও পূর্ব চিন সাগরে চিনের সামরিক তৎপরতা, চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) ও এর অর্থনৈতিক অনুশীলনের বিষয়ে মার্কিন উদ্বেগের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে জাপান এই দৃষ্টিভঙ্গির একটি কেন্দ্রীয় অংশীদার হয়ে উঠেছিল। চিন আন্তর্জাতিক নিয়মের অবমূল্যায়ন করে এসেছে। তাই ট্রাম্প ২.০ জাপানকে চিনের সঙ্গে তার অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা সীমিত করার আহ্বান জানিয়ে চিনকে অর্থনৈতিক ও সামরিক ভাবে বিচ্ছিন্ন করার তীব্র প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে পারে। জাপান একটি চ্যালেঞ্জিং অবস্থানে থাকবে। কারণ জাপান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার নিরাপত্তা সম্পর্ক বজায় রাখার পাশাপাশি একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার চিনের সঙ্গে নিজস্ব বাণিজ্যিক সম্পর্ক চালিয়ে যেতে চায়। ট্রাম্প কোয়াডের (কোয়াড্রিল্যাটেরাল সিকিউরিটি ডায়লগ বা চতুর্পাক্ষিক নিরাপত্তা আলোচনা, যা কিনা অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি জোট) সমর্থক হলেও তিনি যৌথ সামরিক বাহিনী ও অর্থনৈতিক উদ্যোগের উপর বৃহত্তর প্রভাব বজায় রাখার লক্ষ্যে জাপানের মতো স্বতন্ত্র রাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি ও উচ্চ প্রতিশ্রুতিসম্পন্ন জোটকে অগ্রাধিকার দিতে পারেন। তবুও কোয়াড এবং অউকাস (অস্ট্রেলিয়া, সংযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র (ইউকে) এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি ত্রিপাক্ষিক অংশীদারিত্ব) উদ্যোগগুলি মার্কিন ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। ট্রাম্প ২.০-র অধীনে এই জোটগুলির কৌশলগত অভিযোজন ও কর্মসূচি সম্ভবত গভীর সামরিক সহযোগিতার দিকে চালিত হবে। এই জোটগুলিতে, বিশেষ করে কোয়াডে জাপানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ থাকবে।
উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও ক্ষমতা জাপানের জন্য একটি প্রধান নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ উপস্থাপন করে এবং তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাপান তার প্রত্যাশিত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে আরও নিবিড় করতে চায়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে তাঁর অভূতপূর্ব সরাসরি সম্পৃক্ততা দেখা গিয়েছে। যদিও জাপান এই ধরনের সম্পৃক্ততার সীমিত নিরাপত্তা লাভের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। ট্রাম্প ২.০-র অধীনে জাপান একটি সতর্ক ও ফলাফলভিত্তিক পদ্ধতির জন্য চাপ দিতে পারে। তার পাশাপাশি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে মার্কিন কূটনীতির সম্ভাব্য নিরাপত্তা জটিলতা এড়াতে নিরস্ত্রীকরণ পদক্ষেপকে অগ্রাধিকার দেয়। জাপান ক্রমশ তার নিজস্ব প্রতিরক্ষামূলক ক্ষমতা জোরদার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার সুরক্ষা কৌশলকে সাযুজ্যপূর্ণ করে তোলার উদ্দেশ্যে আরও কাজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং এ ক্ষেত্রেও জাপান নিজের স্বার্থকে সুরক্ষিত করতে চায়। ট্রাম্প ২.০-এ উত্তর কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের সমীকরণ কী হয়, তার উপর টোকিয়ো ও সিওল উভয়ই নিবিড় ভাবে নজর রাখবে। কারণ সিওল উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও ক্ষমতা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন।
আর্থিক ও বাণিজ্য নীতি
ট্রাম্প ২.০-এ ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ বাণিজ্য কর্মসূচির উপর পুনরায় জোর দেওয়া হবে, সম্ভাব্য ভাবে মার্কিন-জাপান বাণিজ্য চুক্তির কিছু ক্ষেত্র পুনর্বিবেচনা করা হবে এবং যে কোনও নতুন বাণিজ্য চুক্তিতে আরও অনুকূল শর্তের বিষয়ে চাপ দেওয়া হবে। ট্রাম্প জাপানকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার বাণিজ্য উদ্বৃত্ত কমাতে উত্সাহিত করলেও ট্রাম্পের প্রধান অর্থনৈতিক মনোযোগ হবে চিন থেকে জাপানকে বিচ্ছিন্ন করা এবং বিশেষত প্রযুক্তি ও উত্পাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ শৃঙ্খলে জাপানের ঘনিষ্ঠ অংশীদার হওয়া।
২০১৯ সালের জাপান-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি জাপানি শিল্প পণ্য এবং আমেরিকান কৃষি রফতানির উপর মনোনিবেশ করে বাণিজ্য ভারসাম্য কমাতে ট্রাম্পের প্রাথমিক পরিকল্পনাকে দর্শায়।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ট্রান্স-প্যাসিফিক অংশীদারিত্ব থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার আসলে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য উত্থান ঘটিয়েছিল এবং এই অঞ্চলে চিনের অর্থনৈতিক প্রভাবকে ভারসাম্যহীন করার উপায় হিসাবে ট্রান্স-প্যাসিফিক অংশীদারিত্বের জন্য ব্যাপক ও প্রগতিশীল চুক্তি গঠনের জন্য জাপানকে প্রথম সারিতে তুলে এনেছিল। সর্বোপরি, ২০১৯ সালের জাপান-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি জাপানি শিল্প পণ্য এবং মার্কিন কৃষি রফতানির উপর মনোনিবেশ করে বাণিজ্য ভারসাম্য কমাতে ট্রাম্পের প্রাথমিক পরিকল্পনাকেই দর্শায়। উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন করে আগ্রহের ক্ষেত্রে এবং জাপান সম্ভবত মার্কিন কৃষি ও উত্পাদন পণ্য আমদানির জন্য বর্ধিত চাহিদার সম্মুখীন হবে। জাপান একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে সহযোগিতা করতে পারলেও তার নিজস্ব অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ভারসাম্য রক্ষার উপায় হিসাবে আঞ্চলিক বাণিজ্য অংশীদারিত্বের প্রতি তার প্রতিশ্রুতিকে শক্তিশালী করতে পারে। এই ধরনের অবস্থান জাপানকে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তার স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখার অনুমতি দেবে এবং একই সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে লাভজনক শর্তে কাজ করতে সাহায্য করবে।
প্রযুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তা সহযোগিতা
প্রযুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তায় মার্কিন-জাপান সম্পর্ক উন্নতি অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিগত বাজারের প্রতিযোগিতা তীব্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ট্রাম্পের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন উত্তর আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত অবকাঠামোয় চিনা সংস্থাগুলির প্রবেশাধিকার সীমাবদ্ধ করার জন্য, বিশেষ করে ৫জি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষেত্রে নতুন প্রচেষ্টার সুযোগ দিতে পারে। জাপান ইতিমধ্যেই তার ৫জি নেটওয়ার্ক থেকে হুওয়াইকে বাদ দিয়ে এবং সরকারি সংগ্রহে জেডটিই সরঞ্জামগুলিকে বাদ দেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তির উপর কঠোর রফতানি নিয়ন্ত্রণ-সহ বৃহত্তর প্রযুক্তিগত পাল্টা ব্যবস্থায় যোগদানের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে তীব্র চাপের সম্মুখীন হতে পারে।
আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিগত বাজারের প্রতিযোগিতা তীব্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ট্রাম্পের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন উত্তর আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত অবকাঠামোয় চিনা সংস্থাগুলির প্রবেশাধিকার সীমাবদ্ধ করার জন্য, বিশেষ করে ৫জি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষেত্রে নতুন প্রচেষ্টার সুযোগ দিতে পারে।
একটি নির্ভরযোগ্য প্রযুক্তি অংশীদার হিসেবে জাপানের গুরুত্ব এই সাইবার নিরাপত্তা সহযোগিতার উচ্চ অংশীদারিত্বকেই দর্শায়। যেহেতু উভয় দেশই নিরাপদ অবকাঠামোতে বিনিয়োগ চালিয়ে যাচ্ছে, প্রযুক্তি সম্ভবত তাদের সম্পর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে। উভয় দেশই প্রযুক্তি সরবরাহ শৃঙ্খলে, বিশেষ করে অর্ধপরিবাহী ক্ষেত্রে জাপানের গুরুত্ব স্বীকার করে এবং প্রশাসনের পরিবর্তন প্রযুক্তিগত সহযোগিতার জন্য নতুন কাঠামোর দিকে চালিত হতে পারে।
সামনের পথ
পূর্ববর্তী ট্রাম্প প্রশাসনের সময় মার্কিন-জাপান সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত কূটনীতি একটি বড় ভূমিকা পালন করেছিল, মূলত ট্রাম্প এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের মধ্যে সম্পর্কের কারণে এমনটা বলাই যায়। আবে ছিলেন প্রথম বিদেশি নেতাদের অন্যতম যিনি তাঁর নির্বাচনের পর ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেছিলেন এবং দৃঢ় ব্যক্তিগত সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা করেছিলেন। এই সম্পর্ক কিছু সম্ভাব্য নীতিগত দ্বন্দ্বকে মসৃণ করতে সাহায্য করেছিল এবং জাপানকে ট্রাম্পের বৈদেশিক নীতিতে কিছুটা পরিমাণে হলেও বাধা দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল। অতিমারি অনেক আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে চাপের মুখে ফেলেছিল। মার্কিন-জাপান সম্পর্ক অবশ্য শক্তিশালী থেকেছে এবং উভয় দেশই এই সঙ্কটকে আসলে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তিতে তাদের সহযোগিতা জোরদার করার সুযোগ বলে মনে করেছিল। ১১ নভেম্বর বিশেষ ডায়েট সেশনের ভোটে ইশিবা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে তিনি পূর্ববর্তী ট্রাম্প প্রশাসনের সময় দুই দেশের মধ্যে থাকা অভিন্ন সাধারণ ইতিবাচক সম্পর্কের অনুরণনের প্রত্যাশা এই মেয়াদেও রাখেন।
একটি স্থিতিশীল আঞ্চলিক শৃঙ্খলার প্রতি জাপানের প্রতিশ্রুতি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বস্ত মিত্র হিসেবে এর মর্যাদা জোটের শক্তির জন্য ভিত্তি হয়ে থাকবে এবং এ কথা সুনিশ্চিত করবে যে, অভিন্ন সাধারণ উদ্দেশ্যগুলি যে কোনও সঙ্কটের সময়েই যেন ভারসাম্য বজায় রেখে চলে। যেহেতু জাপান একই সঙ্গে তার প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি তার প্রযুক্তিগত অবকাঠামোকে সশক্ত করছে এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সম্পর্ককে ত্বরান্বিত করতে ইচ্ছুক, তাই মার্কিন-জাপান জোট ক্রমবর্ধমান জটিল ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্বারা উত্থাপিত পারস্পরিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্যও প্রস্তুত থাকবে।
প্রত্নশ্রী বসু অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সেন্টার ফর নিউ ইকোনমিক ডিপ্লোমেসি এবং স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ইন্দো-প্যাসিফিক বিভাগের অ্যাসোসিয়েট ফেলো।
তৃপ্তি নেব অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের রিসার্চ ইন্টার্ন।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.