-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
ট্রাম্প ইজরায়েলপন্থী নীতির উপর দ্বিগুণ জোর দিচ্ছেন। কিন্তু তার মূল্য কী? ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যের উচ্চাকাঙ্ক্ষা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার উপর নির্ভরশীল। সেই নীতি কি ইজরায়েলকে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রসঙ্গে বাধা দেবে না কি তা ত্বরান্বিত করবে?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে ইজরায়েলের প্রতি আরও বাস্তববাদী অবস্থান গ্রহণ করবেন বলে আশা করা হলেও, তিনি তাঁর ইজরায়েলপন্থী অবস্থান দ্বিগুণ জোরদার করেছেন। তবে এ বার এ হেন মনোভাবের জন্য আরও বেশি মূল্য চোকাতে হবে: তাঁর মূল অগ্রাধিকারগুলির মধ্যে একটি হবে অর্থনৈতিক উদ্যোগ এবং ‘মেগা চুক্তি’র মাধ্যমে যুদ্ধবিধ্বস্ত মধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করা। এই মেয়াদে ট্রাম্পের অন্যতম বড় লক্ষ্য হল সৌদি আরব, যেখানে উভয় দেশের মধ্যে সম্ভাব্য ৬০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি বাস্তবায়নের কাজ চলছে। উপরন্তু, বিদ্যমান মার্কিন-রাশিয়া আলোচনার জন্য সৌদি আরব একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। তবে ইজরায়েলের প্রতি সৌদি আরব ও অন্যান্য উপসাগরীয় রাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান বিরোধিতা এবং ট্রাম্পের প্রস্তাবিত গাজা পরিকল্পনার স্পষ্ট প্রত্যাখ্যান একটি বড় বাধা। তাই ট্রাম্প ২.০-এর মধ্যপ্রাচ্য সংক্রান্ত কর্মসূচির ক্ষেত্রে মূল যে প্রশ্নটি উঠছে, তা হল, তাঁর প্রথম মেয়াদের মতো ইজরায়েলের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করা কি আবারও ট্রাম্পের নীতির কেন্দ্রীয় লক্ষ্য হবে না কি ট্রাম্প নিজের বৃহত্তর আঞ্চলিক লক্ষ্য, যেমন আইটুইউটু (ভারত, ইজরায়েল, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) বা বৃহৎ আকারের সংযোগ প্রকল্পগুলি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ইজরায়েলকে নিছক ব্যবহার করবেন?
ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যের দৃষ্টিভঙ্গি
এ কথা যুক্তিসঙ্গত ভাবে অনুমেয় যে, যুদ্ধবিরতি মেনে চলার জন্য ইজরায়েলকে চাপ দেওয়াই একমাত্র বাস্তবসম্মত উপায়, যার মাধ্যমে ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা আনতে পারেন এবং এমনকি সৌদি আরব ও ইজরায়েলের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেন। তবে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির গোড়ার দিকে ওয়াশিংটন ডিসিতে হওয়া এই দেশগুলির বৈঠকের প্রেক্ষিতে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং ট্রাম্পের মধ্যে সমীকরণ আগের চেয়েও বেশি কল্পনাপ্রসূত প্রমাণিত হয়েছে এবং সৌদি আরবের মতো গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের দূরে ঠেলে দিয়েছে, যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও নিবিড় জোট গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছে।
ট্রাম্পের প্রস্তাব ইজরায়েলি অতি-দক্ষিণপন্থীদেরও অবাক করেছে। কারণ এর তীব্রতা তাঁদের নিজস্ব কঠোর অবস্থানের চেয়েও বেশি।
ট্রাম্পের চরম পদক্ষেপের প্রস্তাব - যেমন গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের ব্যাপক ভাবে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে স্থানান্তরিত করা, তার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে এই অঞ্চলটি দখল করে ‘রিভিয়েরা অফ দ্য মিডল ইস্ট’ গড়ে তোলা - নিতান্তই অবাস্তব। কারণ মিশর ও জর্ডন এই ধরনের স্থানান্তরের ক্ষেত্রে ফিলিস্তিনি মানুষজনকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃত হয়েছে এবং এই পরিকল্পনার ফলে অপ্রতিরোধ্য আর্থিক ও লজিস্টিক বোঝা তৈরি হয়েছে। সৌদি আরবও ফিলিস্তিনিদের অধিকার পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে ইজরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তিতে পৌঁছনোর সম্ভাবনা কম। ট্রাম্পের প্রস্তাব ইজরায়েলি অতি-দক্ষিণপন্থীদেরও অবাক করেছে। কারণ এর তীব্রতা তাঁদের নিজস্ব কঠোর অবস্থানের চেয়েও বেশি। ট্রাম্প হামাসকে উৎখাতের প্রচেষ্টার চেয়ে ইজরায়েলের আঞ্চলিক আধিপত্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের ইজরায়েলের সংযুক্তিকে সমর্থন করতে পারেন। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বোঝা যায় যে, তিনি নেতানিয়াহুর নেতৃত্ব বা ইজরায়েলি নীতি নয়, বরং গাজার অস্তিত্বকেই প্রধান বিষয় বলে মনে করেন। ট্রাম্প যদি মনে করেন যে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি ব্যর্থ হবে অথবা মোটেও তা স্থিতিশীল হবে না, তা হলেও ইজরায়েলকে চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্য চাপ দেওয়ার বদলে (বিশেষ করে যেহেতু হামাস ইজরায়েলি সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ রূপে প্রত্যাহার করলে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে) তিনি একটি অবাস্তব ও অস্থিতিশীল সমাধান প্রস্তাব করেছেন: চার সহস্রাব্দ ধরে ঐতিহাসিক একটি শহরকে মুছে ফেলা। আসলে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশও ট্রাম্পের এই মনোভাবের তীব্র বিরোধিতা করেছে এবং আরব লিগের রাষ্ট্রগুলি বিকল্প খুঁজতে তৎপর হয়ে উঠেছে।
উত্তরাধিকার গড়ে তোলার প্রয়াস
ট্রাম্প ২.০ থেকে নেতানিয়াহু ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইজরায়েলি রাষ্ট্রদূত ইয়েচিয়েল লেইটারের বর্ধিত প্রত্যাশার উৎস খুঁজতে গেলে ফিরে তাকাতে হয় ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে, যেখানে ট্রাম্প ইজরায়েলি উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে ব্যাপক সমর্থন করেছিলেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হল ২০১৭ সালে ট্রাম্পের তরফে জেরুজালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া এবং ট্রাম্পই প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যিনি তেল আভিভ থেকে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরিত করেছিলেন। সর্বোপরি, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে ট্রাম্প ‘শতাব্দীর সেরা চুক্তি’ (ডিল অফ দ্য সেঞ্চুরি) প্রস্তাব করেছিলেন, যেখানে ইজরায়েলি বসতি ও জর্ডন উপত্যকা-সহ ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের প্রায় ৩০ শতাংশ ইজরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত করার পরিকল্পনার রূপরেখা দেওয়া হয়েছিল। ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের বাকি ৭০ শতাংশ ভবিষ্যতের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের জন্য মনোনীত করা হয়েছিল, যা ফিলিস্তিনি নেতৃত্বের তরফে কিছু শর্ত পূরণের উপর নির্ভরশীল। পরিকল্পনায় ইজরায়েলের কিছু আরব-সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাকে ভবিষ্যতের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রে স্থানান্তরেরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তবে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের দরুন ট্রাম্পের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। কারণ তিনি উভয় পক্ষের মূল উদ্বেগগুলির সমাধান করতে এবং এই অঞ্চলে ইজরায়েলের অবস্থান উন্নত করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন।
ট্রাম্পের ‘শান্তি পরিকল্পনা’-তে ২০১৮ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থার তহবিল বন্ধ করে দেওয়াও অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা ফিলিস্তিনি শরণার্থী ও অধিকৃত অঞ্চলগুলিতে বসবাসকারীদের সহায়তা জোগাত এবং ফিলিস্তিনিদের ইজরায়েলের সঙ্গে শান্তি আলোচনা পুনর্নবীকরণের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছিল। এর আগে তিনি ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট বা মার্কিন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি) থেকেও সাময়িক ভাবে তহবিল বন্ধ করে দিয়েছিলেন, যার বেশিরভাগ কর্মসূচি তখন গাজাকেন্দ্রিক ছিল।
ইউএস সেক্রেটারিয়েট অফ স্টেটসের প্রাক্তন মধ্যপ্রাচ্য উপদেষ্টা অ্যারন ডেভিড মিলারের মতে, ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি মূলত ফিলিস্তিনিদের তাঁর শান্তি পরিকল্পনায় সম্মত হওয়ার জন্য চাপ দেওয়ার লক্ষ্যেই ছিল। তবে এটির আর একটি লক্ষ্য ছিল ওয়াশিংটনের অর্থ সাশ্রয় করা।
দুই দেশের মধ্যে ১০ বছরের সমঝোতাপত্র (মউ) - যেখানে ইজরায়েলকে প্রতি বছর ৩.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি সামরিক অর্থায়ন বরাদ্দ করা হয়েছে – একটি অনন্য চুক্তি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য কোনও রাষ্ট্রের মধ্যে এমন ধরনের কোনও চুক্তি নেই।
১৯৪৮ সালে প্রেসিডেন্ট হ্যারি এস. ট্রুম্যান কর্তৃক ইজরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে দেশটি মার্কিন বৈদেশিক সাহায্যের বৃহত্তম প্রাপক এবং এখনও পর্যন্ত ইজরায়েল প্রায় ৩১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পেয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইজরায়েলের জন্য প্রায় ১৭.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছে, যা দেশটিকে ২০২৩ সালের পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিদেশি সামরিক ব্যয়ের মধ্যে অন্যতম করে তুলেছে। দুই দেশের মধ্যে ১০ বছরের সমঝোতাপত্র (মউ) - যেখানে ইজরায়েলকে প্রতি বছর ৩.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি সামরিক অর্থায়ন বরাদ্দ করা হয়েছে – একটি অনন্য চুক্তি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য কোনও রাষ্ট্রের মধ্যে এমন ধরনের কোনও চুক্তি নেই। এই সমঝোতাপত্রটি ২০২৮ সালে শেষ হবে এবং আর্থিক ক্ষেত্রে মনোযোগী ট্রাম্প ২.০-এর এ বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করা উচিত। কারণ ইজরায়েলের জন্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তহবিল থেকে একটি ব্যাপক অঙ্ক বিদেশি খাতে ব্যয় হয়। ট্রাম্প ২.০ - যার প্রধান নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল দেশের মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলা করা - তার জন্য ইজরায়েলের প্রতি আমেরিকার আর্থিক প্রতিশ্রুতি পুনর্বিবেচনা করাও যৌক্তিক হবে, বিশেষ করে ইউক্রেনকে লক্ষ্য করে ইউএসএআইডি তহবিল এবং প্রধান আর্থিক ও লেনদেন সংক্রান্ত বিবেচনা বন্ধ করার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে।
ট্রাম্পের যুদ্ধ?
ট্রাম্পের এই যুদ্ধের অন্যতম কারণ হল অভ্যন্তরীণ মুদ্রাস্ফীতি, যা তাঁর ভোটার ভিত্তির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। উপরন্তু, চিনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধের ফলে মধ্যপ্রাচ্যের রফতানি আরও বেশি করে মধ্যপ্রাচ্যেই ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা বেড়েছে, যেখানে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এই অঞ্চলের বাণিজ্য ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্রমবর্ধমান রুশ-চিনা প্রতিরক্ষা অক্ষ চিনের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ট্রাম্পের তুলনামূলক ভাবে স্থিতিশীল মধ্যপ্রাচ্যের সমর্থন নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা জোরদার করেছে এবং ইজরায়েলের আঞ্চলিক অবস্থানকে শক্তিশালী করা এই অঞ্চলে মার্কিন প্রভাব সুনিশ্চিত করার জন্য একটি কার্যকর কৌশল না-ও হতে পারে।
ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডোর (আইএমইইসি) নিয়ে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা করার ট্রাম্পের পরিকল্পনা প্রকাশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্য দিকে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য কৌশল খানিকটা দ্বিমুখী তলোয়ার বলেই প্রমাণিত হচ্ছে: আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় তেমন অবদান না রাখলেও এটি সংযোগ, অবকাঠামো প্রকল্প এবং উপসাগরে বৃহৎ আকারের বিনিয়োগের জন্য মূলত তার নিজের ও মিত্রদের, বিশেষ করে ভারতের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে বাধাগ্রস্ত করে। আইএমইইসি এবং ভবিষ্যতের অন্যান্য সংযোগ প্রকল্প আরও দ্রুত এগিয়ে যেতে পারে যদি বাণিজ্যমনস্ক ট্রাম্প আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দেন। কারণ এই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি এবং ভারত, ইউরোপ ও অন্যান্য মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রের সঙ্গে গভীর অংশীদারিত্বের আকাঙ্ক্ষা বিদ্যমান।
ক্রমবর্ধমান রুশ-চিনা প্রতিরক্ষা অক্ষ চিনের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ট্রাম্পের তুলনামূলক ভাবে স্থিতিশীল মধ্যপ্রাচ্যের সমর্থন নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা জোরদার করেছে এবং ইজরায়েলের আঞ্চলিক অবস্থানকে শক্তিশালী করা এই অঞ্চলে মার্কিন প্রভাব সুনিশ্চিত করার জন্য একটি কার্যকর কৌশল না-ও হতে পারে।
ট্রাম্পের কাছ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের নিজস্ব ব্যবসায়িক কৌশল তৈরি করার আশা করা হলেও তিনি আইটুইউটু-র মতো জো বাইডেনের নেওয়া উদ্যোগের উপর ভিত্তি করেও কাজ করবেন। প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প সৌদি আরবের বাইরেও বেশ কয়েকটি আরব লিগের রাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেনে সম্পৃক্ত ছিলেন। এই আকাঙ্ক্ষাকে তিনি এ বার আরও প্রসারিত করতে পারেন। যদি তিনি ইজরায়েলকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুসরণের জন্য চাপ দিতে চান, তা হলে তিনি আরও সহযোগী মধ্যপ্রাচ্যের অংশীদারদের সঙ্গে নিজের বৃহত্তর আঞ্চলিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা এগিয়ে নিতে আরও ভাল অবস্থানে থাকবেন।
উপসংহার
ট্রাম্পের জন্য, ইজরায়েলকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলার জন্য চাপ দেওয়াই মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা আনা ও তাঁর বাণিজ্যিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি আঞ্চলিক শৃঙ্খলা গঠনের একমাত্র বাস্তবসম্মত পথ। তবে এমনটা করার জন্য তাঁকে নেতানিয়াহুর সম্মুখীন হয়ে এ কথা জোর দিয়ে বলতে হবে যে, হামাসের বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা নিতান্তই কম। একই সময়ে, সৌদি আরব, কাতার ও জর্ডনের মতো দেশগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা করার জন্য তখনই উন্মুক্ত হবে, যদি ইজরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুসরণ করে।
মধ্যপ্রাচ্যে ইজরায়েল আমেরিকার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ ভিত্তি হলেও আমেরিকার কাছে এখন আঞ্চলিক মিত্রদের জন্য আরও বিকল্প রয়েছে এবং ইজরায়েলের প্রতি ট্রাম্পের অটল সমর্থন সম্ভাব্য অংশীদারদের মধ্যে দ্বিধার জন্ম দিয়েছে। ট্রাম্পের ‘গাজা পরিকল্পনা’র কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ভিডিয়োটি সেই দ্বিধার আগুনেই ঘি ঢালতে পারে।
অতীতের দিকে ফিরে তাকালে, ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য একটি সুসংহত মধ্যপ্রাচ্য নীতি প্রণয়ন ক্রমশ প্রতিবন্ধকতাময় হয়ে উঠছে, বিশেষ করে ইজরায়েলের কাছে প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করার তাঁর সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের পর। যদি ট্রাম্প বৃহত্তর আঞ্চলিক সহযোগিতাকে অগ্রাধিকার দিতে চান, তা হলে মধ্যপ্রাচ্যে আরও গভীর কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির জন্য তাঁকে ইজরায়েল সংক্রান্ত নিজের দৃষ্টিভঙ্গিই পুনর্বিবেচনা করতে হতে পারে।
কাশভি চৌধুরী অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের রিসার্চ ইন্টার্ন।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Kashvi Chaudhary is a Research Intern at the Observer Research Foundation ...
Read More +