Author : Vivek Mishra

Published on Dec 02, 2024 Updated 0 Hours ago

ট্রাম্পের বিজয় অভ্যন্তরীণ আন্তর্জাতিক মার্কিন নীতিকে সংশোধন করবে এবং ভারতের জন্য, বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে কৌশলগত সুবিধা আনতে পারে

ট্রাম্প ২.০: দ্বিতীয় মেয়াদ

এই প্রতিবেদনটি ‘রিইগনাইটেড অ্যাজেন্ডাস: ট্রাম্প’স রিটার্ন অ্যান্ড ইটস গ্লোবাল রিপারকেশন’ সিরিজের অংশ।


২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভের পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে ফিরে আসা খানিক যেন রূপকার্থে ইয়েটস-এর লেখা দ্য সেকেন্ড কামিং-এরই কথা মনে করিয়ে দেয়। যুদ্ধোত্তর ইউরোপীয় সভ্যতার সর্বনেশে রূপ বিষণ্ণতার ভবিষ্যদ্বাণীর ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল কবিতাটিতে, যা রিপাবলিকান আখ্যানগুলির সঙ্গে অনুরণিত হয়েছিল। এবং শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী ভোট ও পপুলার ভোটের ঐতিহাসিক মতাদেশ অনুযায়ী ট্রাম্প ফের ক্ষমতায় ফিরে এসেছেন। ‘ওক’ বা ‘জাগ্রতমতাদর্শ এবং প্রকৃত মুদ্রাস্ফীতি সঙ্কট থেকে দেশ ও তার সামরিক বাহিনীকে বাঁচানোর জন্য টিই ছিল মার্কিনদের কাছে শেষ সুযোগ… এই আখ্যান মার্কিন ভোটার ভিত্তির কাছে অধিক গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়েছে। তাঁরা ট্রাম্পকে মার্কিন গণতন্ত্রের জন্য এক হুমকি হিসেবে দেখার জন্য ডেমোক্র্যাটিক পার্টির আবেদনে সাড়া দেননি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক কর্মসূচি মার্কিন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দেশীয়, রাজনৈতিক, আমলাতান্ত্রিক আর্থিক পুনর্বিন্যাস দ্বারা চালিত হবে।

ট্রাম্পের বিজয় সম্ভাব্য একাধিক ক্ষেত্রের বদলকেই দর্শায়। প্রথমত, অভ্যন্তরীণ অগ্রাধিকারের উপর সরকারের মনোযোগ ফিরিয়ে আনার উপর জোর দেওয়া আসলে মার্কিন রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গিকে উল্লেখযোগ্য ভাবে বদলে দিতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক কর্মসূচি মার্কিন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দেশীয়, রাজনৈতিক, আমলাতান্ত্রিক আর্থিক পুনর্বিন্যাস দ্বারা চালিত হবে। ট্রাম্প ২.০ প্রশাসন অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক ভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগ বদলানোর প্রচেষ্টা চালাবে।

দেশের অভ্যন্তরে

ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর প্রথম বারের চ্যালেঞ্জ থেকে শিক্ষা নিয়ে তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য দ্রুত একটি নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন। এই সময় তাঁর পছন্দগুলি একটি সতর্ক অথচ দৃঢ় দৃষ্টিভঙ্গিকেই দর্শায় এবং অনুভূত প্রাতিষ্ঠানিক চাপ থেকে প্রস্থানের ইঙ্গিত দেয় যা তাঁর আগের প্রশাসনকে আকার দিয়েছিলসেনেটের নিশ্চিতকরণ মুলতুবি থাকা, নিয়োগগুলি উত্তেজক বিতর্কিত হওয়ার দরুন সমালোচকরা তাঁদের অদম্য নীতি কর্মসূচিকে তুলে ধরার জন্য আসলে শক্তি প্রদর্শন বলে অভিহিত করেছেন। প্রধান মনোনয়নের মধ্যে স্টেট সেক্রেটারি পদে সেনেটর মার্কো রুবিও, ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার পদে মাইকেল ওয়াল্টজ, সেক্রেটারি অফ ডিফেন্স পদে পিট হেগসেথ, অ্যাটর্নি জেনারেল পদে ম্যাট গেটজ, ডিরেক্টর অফ ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স পদে তুলসি গ্যাবার্ড এবং সেক্রেটারি অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি পদে ক্রিস্টি নয়েম রয়েছেন। এই নির্বাচনগুলি নীতির উপর কঠোর অবস্থানকেই দর্শায় এবং ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে যে সমঝোতা করতে বাধ্য হয়েছিলেন, তার ঠিক বিপরীত অবস্থানের ইঙ্গিত দেয়। এই পরিবর্তন রাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের মধ্যে একটি ব্যাপক পরিবর্তনকেই দর্শায়। ইলন মাস্ক এবং বিবেক রামস্বামীর নেতৃত্বে ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি-র (ডিওজিই) বিষয়টিকে খানিক ওয়াইল্ড কার্ড বা শেষ মুহূর্তের তুরুপের তাস মনে হলেও বিভাগটির কার্যকারিতা সম্পর্কে তেমন স্পষ্টতা মেলেনি।

জ্বালানির স্বাধীনতার ক্ষেত্রে ট্রাম্প জোর দিয়েছেন তেল উত্তোলন শেল গ্যাস ফ্র্যাকিং (যে পদ্ধতির মাধ্যমে ভূ-ত্বকের নীচে থাকা শেল রকের ভেতর থেকে শেল গ্যাস নিষ্কাশন করা হয়) সম্প্রসারণ সংক্রান্ত পরিকল্পনার উপর এবং ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একটি নেতৃস্থানীয় জ্বালানি ফতানিকারক দেশ হিসেবে তুলে ধরতে চান।

প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ মনোযোগ দেশীয় অর্থনীতিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সময় এবং কাজের বৃদ্ধিকে উত্সাহিত করার ক্ষেত্রে বাহ্যিক সম্পৃক্ততাকে হ্রাস করবে, যা আখেরে মার্কিন সংস্থানেরও হ্রাস ঘটাতে পারে। জ্বালানির স্বাধীনতার ক্ষেত্রে ট্রাম্প জোর দিয়েছেন তেল উত্তোলন শেল গ্যাস ফ্র্যাকিং (যে পদ্ধতির মাধ্যমে ভূ-ত্বকের নীচে থাকা শেল রকের ভেতর থেকে শেল গ্যাস নিষ্কাশন করা হয়) সম্প্রসারণ সংক্রান্ত পরিকল্পনার উপর এবং ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একটি নেতৃস্থানীয় জ্বালানি ফতানিকারক দেশ হিসেবে তুলে ধরতে চান। এই কৌশলটি বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলকে ব্যাহত করতে পারে, বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক ইউরোপে, যেখানে দেশগুলিকে মার্কিন শক্তি আমদানির দিকে চালিত হতে বাধ্য হবে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারে মার্কিন আধিপত্য বজায় রাখতে ইরান এবং (সম্ভাব্য ভাবে) রাশিয়ার মতো দেশগুলিউপরেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। ট্রাম্পের অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে আন্তর্জাতিক আমদানির উপর শুল্ক পুনঃপ্রবর্তন সম্ভবত সরবরাহ শৃঙ্খলকে প্রভাবিত করবে এবং চিইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মতো মূল অংশীদারদের সঙ্গে বাণিজ্য সংক্রান্ত চাপানউতোর বৃদ্ধি করতে পারে। এই নীতিমূলক ব্যবস্থাগুলি তার ভিত্তির সঙ্গে অনুরণিত হতে পারে, তাদের বিস্তৃত অর্থনৈতিক প্রতিক্রিয়াগুলি তার নিবিড় পর্যালোচনার দাবি রাখে।

ট্রাম্পের অভ্যন্তরীণ কর্মসূচিতে অবৈধ অভিবাসন একটি কেন্দ্রীয় বিষয়। বিবেচনাধীন ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে কিছু মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা পুনঃস্থাপন, ব্যাপক নির্বাসন, সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য তহবিল বৃদ্ধি এবং আশ্রয় ব্যবস্থার পুনর্বিবেচনার জন্য একটি আইন প্রণয়ন। ট্রাম্প জন্মগত নাগরিকত্বের নীতিকে চ্যালেঞ্জ করার অভিপ্রায়ের ইঙ্গিত দিয়েছেন। এটি এমন একটি পদক্ষেপ যা অভিবাসী সম্প্রদায়ের উপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে, যার মধ্যে ভারতীয় বংশোদ্ভূত অভিবাসীরা অবশ্য এই নীতি থেকে উপকৃত হবেন

দেশের বাইরে

অন্তহীন যুদ্ধ শেষ করার প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ট্রাম্পের বৈদেশিক নীতি ইউক্রেন মধ্যপ্রাচ্যে বিদ্যমান সংঘাতের সমাধানের দিকে মনোনিবেশ করবে। ইউরোপে তাঁর প্রশাসন ভ্লাদিমির পুতিন এবং ন্যাটো (নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন) মিত্রদের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানের জন্য আলোচনায় বসতে চাপ দিতে পারে। এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা রাশিয়ার সরবরাহের উপর নির্ভরতা হ্রাস করে ইউরোপে মার্কিন জ্বালানি ফতানির পথ প্রসারিত করতে পারে।

মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্প সম্ভবত ইরায়েল-আরব সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ করতে আরও জোর দেবেন এবং আব্রাহাম অ্যাকর্ডস, ইন্ডিয়া-মিডল ইস্ট ইউরোপ ইকোনমিক করিডোর (আইএমইসি) সম্ভাব্য আইটুইউটু-র মতো উদ্যোগগুলিকে কাজে লাগাবেন। আইটুইউটু হল ভারত, রায়েল, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি জোট। যাইহোক, ইরানের প্রতি তাঁর প্রশাসনের কঠোর অবস্থান এই অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলতে পারে, বিশেষ করে যদি ট্রাম্প উচ্চতর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন বা সামরিক অবস্থান নেন।

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ট্রাম্পের কৌশল সম্ভবত কোয়াড (কোয়াড্রিল্যাটেরাল সিকিউরিটি ডায়লগ; অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যার অংশ) এবং জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক অংশীদারিত্বের মতো শক্তিশালী জোটের মাধ্যমে চিনের প্রভাব মোকাবিলা করা।

ট্রাম্পের বিদেশনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে চিন। রুবিও এবং ওয়াল্টজের মতো বিচক্ষণ উপদেষ্টাদের সঙ্গে মিলে প্রশাসন উচ্চ শুল্ক গুরুত্বপূর্ণ এবং উদীয়মান প্রযুক্তিতে তীব্র প্রতিযোগিতা-সহ আরও কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবে বলে মনে করা হচ্ছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ট্রাম্পের কৌশল সম্ভবত কোয়াড (কোয়াড্রিল্যাটেরাল সিকিউরিটি ডায়লগ; অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যার অংশ) এবং জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক অংশীদারিত্বের মতো শক্তিশালী জোটের মাধ্যমে চিনের প্রভাব মোকাবিলা করা। এই পদ্ধতির প্রবল প্রভাব অনুরণিত হতে পারে, যা সরবরাহ শৃঙ্খলের আকার বদলে দেবে এবং মার্কিন অংশীদারদের তাদের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত নীতিগুলি পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করতে পারে।

প্রসঙ্গ ভারত

ট্রাম্পের দ্বিতীয় প্রশাসনের অধীনে ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে ওঠার জন্য প্রস্তুত। তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কাঠামোগত গভীরতা অর্থাৎ প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, বাণিজ্য এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। যাই হোক, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাফিক ইন আর্মস রেগুলেশনস-এর (আইটিএআর) অধীনে প্রযুক্তি হস্তান্তর বিধিনিষেধের মতো দীর্ঘস্থায়ী সমস্যাগুলি পুনরায় উঠে আসতে পারে, যার জন্য দক্ষ আলোচনার প্রয়োজন। ট্রাম্প প্রশাসন আঞ্চলিক নিরাপত্তা, বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে ভারতকে চাপ দিতে পারে। বিনিময়ে, ভারত তাদের দ্বিপাক্ষিক সমন্বয় বৃদ্ধি করে মার্কিন প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি গোয়েন্দা-তথ্য ভাগ করে নেওয়ার মঞ্চগুলিতে আরও বেশি প্রবেশাধিকার পেতে পারে। ভারত দীর্ঘদিন ধরে অত্যাধুনিক মার্কিন প্রযুক্তি, বিশেষ করে অর্ধপরিবাহী, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এবং উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ উদীয়মান ক্ষেত্রগুলিতে আরও বেশি করে প্রবেশাধিকার পেতে চেয়েছে। যাই হোক, ট্রাম্প প্রশাসনের আমেরিকা ফার্স্ট নীতি এবং মেক আমেরিকা গ্রেট এগেন নীতি নয়াদিল্লির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া উদ্যোগের সঙ্গে পরস্প্রবিরোধী হয়ে উঠতে পারে।

এই উত্তেজনা নিরসনের জন্য উদ্ভাবনী সমাধানের প্রয়োজন হবে, যা প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে স্বনির্ভরতার জন্য ভারতের উচ্চাকাঙ্ক্ষার পাশাপাশি মেধা সম্পত্তি প্রযুক্তি সুরক্ষা সম্পর্কে মার্কিন উদ্বেগের ভারসাম্য বজায় রাখবেমনোযোগের মূল ক্ষেত্রগুলির মধ্যে থাকতে পারে সহ-উন্নয়ন এবং সহ-উৎপাদন চুক্তি, আইটিএআর (ইন্টারন্যাশনাল ট্রাফিক ইন আর্মস রেগুলেশনস) ছাড়ের অধীনে প্রযুক্তি ভাগ করে নেওয়ার ব্যবস্থা এবং ইনিশিয়েটিভ অন ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড এমার্জিং টেকনোলজি-কে (আইসিইটি) সম্পূর্ণ কার্যকর করে তোলা।

ট্রাম্প একটি সুরক্ষাবাদী অবস্থান গ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে, যা নির্দিষ্ট ভারতীয় রফতানি, বিশেষ করে ফার্মাসিউটিক্যাল বা ওষুধ, টেক্সটাইল বা বস্ত্র এবং তথ্য প্রযুক্তি খাতে শুল্ক বৃদ্ধি করোতে পারে।

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন করে নিরীক্ষণের সম্মুখীন হতে পারে। ট্রাম্প একটি সুরক্ষাবাদী অবস্থান গ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে, যা নির্দিষ্ট ভারতীয় রফতানি, বিশেষ করে ফার্মাসিউটিক্যাল বা ওষুধ, টেক্সটাইল বা বস্ত্র এবং তথ্য প্রযুক্তি খাতে শুল্ক বৃদ্ধি করতে পারে। সর্বোপরি, ট্রাম্প প্রশাসন কৃষি ভর্তুকি বাদ দেওয়া, মার্কিন পণ্যের জন্য তার বাজার আরও উন্মুক্ত করা এবং দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ভারতকে চাপ দিতে পারে। ভারত তার দিক থেকে অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক অগ্রাধিকার এবং কৃষির মতো দুর্বল ক্ষেত্রগুলিকে রক্ষা করার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করে এই জাতীয় দাবিগুলি প্রতিহত করতে পারে।

বিইসিএ (বেসিক এক্সচেঞ্জ অ্যান্ড কো-অপারেশন এগ্রিমেন্ট), এলিইএমওএ (লজিস্টিক এক্সচেঞ্জ মেমোরেন্ডাম অফ এগ্রিমেন্ট), সিওএমসিএএসএ (কমিউনিকেশন্স, কম্প্যাটিবিলিটি অ্যান্ড সিকিউরিটি এগ্রিমেন্ট) এবং জিএসওএমআইএ-র (জেনারেল সিকিউরিটি অফ মিলিটারি ইনফর্মেশন এগ্রিমেন্ট) মতো ভিত্তিগত চুক্তি দ্বারা পরিচালিত কৌশলগত অংশীদারিত্ব আশা করা হচ্ছে। প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় স্থিতিশীলতা ও ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। একটি প্রধান প্রতিরক্ষা অংশীদার হিসাবে ভারতের মর্যাদা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শক্তিশালী ২+২ সংলাপের বিন্যাস দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা নিরাপত্তা সম্পর্ককে কেন্দ্র করে আবর্তিত হবে। এমকিউ০৯বি ড্রোনের সময় মতো অধিগ্রহণ এবং সোনোবুয়ের মতো উন্নত অ্যান্টি-সাবমেরিন ওয়ারফেয়ার প্রযুক্তির মতো মূল সরবরাহযোগ্য পণ্যগুলি ভারতের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই ব্যবস্থাগুলি শুধুমাত্র ভারতের সামুদ্রিক পরিসর সংক্রান্ত সচেতনতাকে শক্তিশালী করবে না, বরং ইন্দো-প্যাসিফিকের একটি প্রধান নিরাপত্তা প্রদানকারী হিসাবে তার ভূমিকাকে শক্ত করবে।

ইন্দো-প্যাসিফিকের অংশীদার হিসাবে ভারতের অপরিহার্যতাকে আরও জোরদার করে ট্রাম্প প্রশাসন তাচিন কৌশলকে আরও তীব্র করবে বলে আশা করা হচ্ছে। জাপান অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক অংশীদারিত্বের মতো কোয়াড বৃহত্তর আঞ্চলিক প্রক্রিয়াগুলির মতো উদ্যোগগুলি তীব্র হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পালাক্রমে ভারত তার নিজস্ব আঞ্চলিক কৌশল উন্নত করতে মার্কিন সমর্থন লাভ করতে পারে, বিশেষত, তার সীমান্তে এবং ভারত মহাসাগর অঞ্চলে (আইওআর) চিনা আগ্রাসনের মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে। স্থিতিস্থাপক অবকাঠামো গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে দুই দেশ আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খলকে পুনরায় আকার দিতে এবং চিনের উপর নির্ভরতা কমাতে সহযোগিতা চালাতে পারে।

ইন্দো-প্যাসিফিকের অংশীদার হিসাবে ভারতের অপরিহার্যতাকে আরও জোরদার করে ট্রাম্প প্রশাসন তাচিন কৌশলকে আরও তীব্র করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের প্রাথমিক লক্ষ্য হবে ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে প্রথম দুই বছরের মধ্যে বাস্তব ফলাফল প্রদান করা। এই তৎপরতা সাহসী সিদ্ধান্তগুলিকে চালিত করলেও নীতি চালু করার অত্যধিক তীব্রতা ঝুঁকিও বয়ে আনতে পারে। সাফল্যের মূল সমীকরণের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে প্রশাসনের মূল্যস্ফীতি স্থিতিশীল করার ক্ষমতা, কার্যকর ভাবে অভিবাসন পরিচালনা জটিল বৈদেশিক নীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রেই মার্কিন নীতিগুলি পুনঃনির্মাণ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। তাঁর প্রশাসনের দৃঢ় দৃষ্টিভঙ্গি স্বল্পমেয়াদি রাজনৈতিক লাভ অর্জন করলেও মার্কিন জোট এবং আন্তর্জাতিক অবস্থানে সেগুলির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কী হবে, তা সময়ই বলবে।

 


বিবেক মিশ্র অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ডেপুটি ডিরেক্টর।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.