Author : Emil Avdaliani

Published on Jun 19, 2025 Updated 0 Hours ago

সাম্প্রতিক কিরগিজ-তাজিক-উজবেক শীর্ষ সম্মেলন মধ্য এশিয়ার দীর্ঘতম বিদ্যমান দ্বন্দ্বগুলির মধ্যে একটির অবসান ঘটিয়েছে, যা মূলত উদীয়মান ইউরেশিয়ান সংযোগের ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বের স্বার্থ দ্বারা চালিত হয়েছিল

কিরগিজ-তাজিক-উজবেক শীর্ষ সম্মেলন: মধ্য এশিয়ার সোভিয়েত উত্তরাধিকারের সমাপ্তি

২০২৫ সালের ৩১ মার্চ কিরগিজ, তাজিক এবং উজবেক প্রেসিডেন্টত্রয় একটি যুগান্তকারী ত্রিপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করেন এবং তাঁদের সীমান্তগত পার্থক্য দূর করার পাশাপাশি আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধির চেষ্টা করেন। এই প্রথম বারের মতো এই তিন দেশ আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একত্রিত হয়েছিল। ২১ ফেব্রুয়ারি বিশকেকে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর এই সম্মেলনটি হয়, যেখানে কিরগিজ তাজিক কর্মকর্তারা একটি যৌথ সীমান্ত চুক্তি চূড়ান্ত করেন। ১৩ মার্চ বিশকেকে এই চুক্তির আনুষ্ঠানিক স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়, যেখানে তিন দেশের প্রেসিডেন্টই উপস্থিত ছিলেন।

৩১ মার্চের বৈঠকে একটি চুক্তি হয়, যা উজবেকিস্তানের ফারগানা অঞ্চল, কিরগিজস্তানের বাটকেন অঞ্চল এবং তাজিকিস্তানের সুগদ অঞ্চলের সংযোগস্থলে একটি ত্রি-সীমান্ত বিন্দু স্থাপন করে। তিনটি দেশ সীমান্ত অঞ্চলের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে আগ্রহী, যার মধ্যে শুল্ক চেকপয়েন্টের মসৃণ পরিচালনা এবং নতুন পর্যাপ্ত অবকাঠামো নির্মাণ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলি তিনটি দেশের মধ্যে ভ্রমণ সহজতর করার জন্য একটি সমন্বিত ভিসা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার বিষয়েও আলোচনা করেছে।

তিনটি দেশ সীমান্ত অঞ্চলের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে আগ্রহী, যার মধ্যে শুল্ক চেকপয়েন্টের মসৃণ পরিচালনা এবং নতুন পর্যাপ্ত অবকাঠামো নির্মাণ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

এর পাশাপাশি, তাজিক ও কিরগিজ নেতারা মধ্য এশিয়া-দক্ষিণ এশিয়া (সিএএসএ) বরাবর ১০০০ আঞ্চলিক প্রকল্পের অংশ হিসেবে দাতকা-সোগদ আন্তঃরাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন শৃঙ্খল চালু করেছেন। এই প্রকল্পটি আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য দুই দেশের জ্বালানি ব্যবস্থাকে সমন্বিত করে। প্রসঙ্গত, উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তানের নেতারা এমন একটি প্রোটোকলে স্বাক্ষর করেছেন, যা মিত্র দেশগুলির মধ্যকার সম্পর্কের নথি বাস্তবায়নকে সহজতর করে। সীমান্ত চুক্তিকে সহজতর করার জন্য কিরগিজ ও তাজিক নেতাদের মধ্যে একটি পৃথক নথি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

কিরগিজ-তাজিক চুক্তিটির নির্মাণ দীর্ঘদিন ধরে হচ্ছিল। ২০২৩ সাল থেকে কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তান উভয় পক্ষ সীমান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করায় সম্পর্ক সংস্কারের কাজ শুরু করে। ২০২৪ সালে কিরগিজ প্রেসিডেন্ট সাদির জাপারভ তাজিক প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাখমন রাষ্ট্রপুঞ্জের (ইউএন) শীর্ষ সম্মেলনের সময় ভবিষ্যতের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা করেন। পরে সেই বছরের ডিসেম্বর মাসে উভয় পক্ষের মধ্যে একটি প্রাথমিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। স্বাক্ষরকারীরা ঘোষণা করে যে, তাঁরা একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে এবং কিরগিজ-তাজিক রাষ্ট্র সীমান্তের অবশিষ্ট অংশগুলির সীমান্ত নির্মাণ সম্পূর্ণ রূপে সম্পন্ন হয়েছে।’

মার্চের শীর্ষ সম্মেলনে তাজিকিস্তান কিরগিজস্তানের মধ্যে চুক্তি কার্যকর ভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছে, যা প্রায় ১,০০০ কিলোমিটার সীমান্ত ভাগ করে নেয় এবং বর্তমানে সীমানা নির্ধারণে নিযুক্ত রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কিরগিজ তাজিক পক্ষ ইতিমধ্যেই অঞ্চল বিনিময় শুরু করেছে: কিরগিজস্তানের বাটকেন অঞ্চলে অবস্থিত কিরগিজ গ্রাম দোস্তুক তাজিকিস্তানে স্থানান্তরিত হয়েছে। উক্ত গ্রামে বসবাসকারী কিরগিজদের পুনর্বাসিত করা হচ্ছে এবং তাঁদের অন্য একটি কিরগিজ গ্রামে নতুন আবাসন এবং জমি অথবা আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। উভয় পক্ষ ভবিষ্যতে প্রধান মহাসড়কের উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা করছে, যা দুই দেশকে সংযুক্ত করবে। এর পাশাপাশি পারস্পরিক ভাবে উপকারী জল ব্যবস্থাপনার কথা নিয়েও আলোচনা চলছে। এটি এমন একটি বিষয়, যা দীর্ঘদিন ধরে তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে সমস্যায় ফেলেছে। আরও স্পষ্ট কথায় বলতে গেলে, কিরগিজস্তান তাজিকিস্তান কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ গোলভনয় জল ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে ক্ষমতা একসঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে, যা জলের অধিকার নিয়ে চলতে থাকা দ্বন্দ্বেরও অবসান ঘটাবে।

উভয় পক্ষ ভবিষ্যতে প্রধান মহাসড়কের উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা করছে, যা দুই দেশকে সংযুক্ত করবে। এর পাশাপাশি পারস্পরিক ভাবে উপকারী জল ব্যবস্থাপনার কথা নিয়েও আলোচনা চলছে

সোভিয়েত উত্তরাধিকার

সোভিয়েত যুগের শেষের পর থেকে কিরগিজস্তান তাজিকিস্তান দীর্ঘকাল ধরে একটি অভিন্ন সাধারণ সীমান্ত নিয়ে বিরোধে লিপ্তসোভিয়েত কর্মকর্তাদের দ্বারা তৈরি করা অযৌক্তিক সীমান্তরেখা জাতিগত সামাজিক বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল না। মস্কো বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে প্রচলিত পশুপালনের দিকটিকেও বিবেচনা করেনি। এর ফলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, যেখানে সীমান্তের উভয় পাশে একাধিক ছিটমহল তৈরি হয়েছিল, যা সীমান্ত পারাপারের বিষয়টিকে জটিল করে তুলেছিল এবং প্রায়শই মারাত্মক সংঘর্ষের দিকে চালিত করেছিল। সোভিয়েত-পরবর্তী সময়ে জল সম্পদের অসম লব্ধতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছিল। পূর্ববর্তী সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর থেকে সীমান্ত সংক্রান্ত আলোচনা মাঝেমধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে ২০১১ সালে এটি স্থবির হয়ে পড়েএই সময়ে সীমান্তের মাত্র অর্ধেক বিষয়ে দুই পক্ষ একমত হতে পেরেছিল। পরে চাপানউতোর ঘন ঘন সংঘর্ষের দিকে গড়ায়। উদাহরণস্বরূপ, ২০২১ ২০২২ সালে বড় ধরনের সশস্ত্র সংঘর্ষের ফলে উভয় পক্ষেই একাধিক মৃত্যু হয়

কিরগিজ-তাজিক দ্বন্দ্ব তীব্রতর হয়েছিল কারণ দুই দেশের প্রায় ১,০০০ কিলোমিটার (৬২১ মাইল) সীমান্তের বেশির ভাগ অংশই মধ্য এশিয়ার সবচেয়ে উৎপাদনশীল ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল ফারগানা উপত্যকা জুড়ে বিস্তৃত, যা এটিকে একটি অত্যন্ত আকাঙ্ক্ষিত অঞ্চলে পরিণত করে। প্রকৃতপক্ষে, মধ্য এশিয়ার জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ এই উপত্যকায় বাস করেন। সোভিয়েতরা স্বেচ্ছাচারী ভাবে যেমন সীমান্ত রেখা নির্ধারণ করে গিয়েছিল, তার কারণে এই অঞ্চলটি ক্রমাগত অস্থিতিশীলতার উৎসস্থলে পরিণত হয়েছিল।

সর্বোপরি তাজিকরাও ক্ষুব্ধকারণ তাঁরা প্রায়শই কাজ, বাণিজ্য এবং এমনকি চোরাচালানের জন্য কিরগিজস্তানে অস্তিত্বহীন সীমান্ত রেখা অতিক্রম করতেন

এখন পর্যন্ত যে অগ্রগতি হয়েছে তা সত্যিই অর্থবহ। তবে কিছু অমীমাংসিত সমস্যা - যেমন দুই দেশের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ - এখনও রয়ে গিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, তাজিকিস্তানে অবস্থিত ভোরুখ ছিটমহল দুশানবের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তবুও এই ভূখণ্ডের মধ্য দিয়ে যাওয়া রাস্তা (যার নিয়ন্ত্রণ প্রায়শই জাতিগত সংঘর্ষের দিকে চালিত ত) সাধারণ মানুষজনের ব্যবহারের জন্য থাকবে। এটি কিরগিজ জনগণকে ক্ষুব্ধ করেছিল। কিরগিজ জনগণ ভুলে যায়নি যে, বরাক ছিটমহল উজবেকিস্তানের কাছে হস্তান্তর করার বিষয়টি আসলে কতটা ক্ষতিকর ছিল। প্রকৃত চুক্তিতে শর্তাবলি সম্পর্কে তথ্যের অভাব নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। সর্বোপরি তাজিকরাও ক্ষুব্ধকারণ তাঁরা প্রায়শই কাজ, বাণিজ্য এবং এমনকি চোরাচালানের জন্য কিরগিজস্তানে অস্তিত্বহীন সীমান্ত রেখা অতিক্রম করতেন। উপরন্তু, প্রকৃত অর্থনৈতিক প্রণোদনা না থাকলে, সীমান্তবর্তী জনগোষ্ঠী নিজেদের জন্মভূমি ত্যাগ করে রাশিয়া অন্যান্য স্থানে অভিবাসন করতে থাকবে। এর অর্থ হল, সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলির নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতিযোগিতা ফের দানা বাঁধতে পারে।

ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক চিত্র উজবেক-তাজিক-কিরগিজ সম্পর্কের এই পরিবর্তনের পক্ষে। সুতরাং, ইউক্রেন যুদ্ধ সীমান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য দেশগুলির জন্য একটি শক্তিশালী প্রণোদনা হিসেবে কাজ করতে পারে। রাশিয়া সংঘাত নিয়ে ব্যস্ত থাকায়, মধ্য এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে আলোচনা সহজতর করার ক্ষেত্রে খুব কম আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং সম্ভবত এ নিয়ে মাথা ঘামানোর ক্ষমতাও রাশিয়ার ছিল না।

এর পরেই আসে তাজিকিস্তান প্রসঙ্গ, যে দেশটি গত বছর ধরে কেবল কিরগিজস্তানের সঙ্গেই নয়, বরং ইরান ও আফগানিস্তানের সঙ্গেও ভাল সম্পর্কের উপর জোর দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, জানুয়ারি মাসে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান তাজিকিস্তান সফর করেন এবং ১৯৯০ সাল থেকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রচলিত নেতিবাচক প্রবণতার পাশা একেবারে উল্টে দেন। এর আগে তাজিকিস্তানের গৃহযুদ্ধের সময় ইরানের পক্ষের বিরুদ্ধে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাহমনের বিরোধী দলকে সমর্থন করার অভিযোগ আনা হয়েছিল। জানুয়ারি মাসের সফরের মূল আকর্ষণ ছিল অবকাঠামো, বাণিজ্য, দুর্নীতিবিরোধী প্রচেষ্টা, জ্বালানি এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত ২২টি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর

নিরাপত্তার কারণে দুশানবে তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার  করলেও এমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে যে, আফগানিস্তান তাজিকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার দিকে নজর দিতে পারে। ২০২৩ সালে উভয় দেশের মধ্যে সীমান্ত খোলা হয়েছিল এবং তাজিকিস্তান তার প্রতিবেশী দেশে বিদ্যুৎ রফতানির বিষয়টি অব্যাহত রেখেছে। উগ্রবাদ মোকাবিলায় দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে বৈঠকও হয়েছে এবং তাজিকিস্তান থেকে আফগানিস্তান হয়ে তুর্কমেনিস্তান (টিএটি) পর্যন্ত প্রস্তাবিত ২৫০ মাইল (৪০৩ কিলোমিটার) রেল প্রকল্পে উভয় দেশ সহযোগিতা করছে বলে মনে হচ্ছে।

নিরাপত্তার কারণে দুশানবে তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করলেও এমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে যে, আফগানিস্তান তাজিকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার দিকে নজর দিতে পারে।

মধ্য এশিয়ার দেশগুলিও ইউরেশিয়ায় যোগাযোগ স্থানান্তরে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য উন্মুখ। চিন মধ্য এশিয়া জুড়ে নতুন সড়ক রেলপথ নির্মাণ করছে এবং কৃষ্ণসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত মধ্য করিডোর উন্নয়নে নিযুক্ত রয়েছে। একই সঙ্গে রাশিয়া তার আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ পরিবহ করিডোরের কাজ নিয়ে এগিয়ে চলেছে, যার একটি শাখা মধ্য এশিয়ার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এই অঞ্চলের দেশগুলি এই অনুকূল আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি থেকে উপকৃত হতে চায় এবং এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, কিরগিজ-উজবেক-তাজিক সম্পর্কের পুনর্মিলন মধ্য এশিয়ার জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ সময়েই সংঘটিত হচ্ছে।

মধ্য এশিয়ার বহির্বিশ্বের জন্য উন্মুক্তকরণ তাই একটি বড় উন্নয়ন হলেও কখনওই নতুন ঐতিহাসিক প্রক্রিয়া নয়। এই অঞ্চলটি সর্বদা ইউরেশিয়া-ব্যাপী বাণিজ্যিক পথের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল, যা সিল্ক রোড নামে পরিচিত। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল দক্ষিণে আফগানিস্তান ভারত পর্যন্ত প্রসারিত একটি মহাসড়ক, যেটিকে ইতিহাসবিদরা প্রায়শই ‘ইন্ডিয়ান রোড’ বা ‘ভারতীয় সড়কবলে অভিহিত করে থাকেন

আগামিদিনের পথ

মধ্য এশিয়ার দুর্বলতার প্রধান উৎস হল আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংঘাতের উচ্চ সম্ভাবনা। প্রাথমিক কেন্দ্র ছিল কিরগিজ-তাজিক সীমান্ত হলেও এখন দুশানবে বিশকেকের মধ্যে সীমানা নির্ধারণ প্রক্রিয়া সফল ভাবে সম্পন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউরেশিয়ার অনুকূল ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে সমাপতিত হয়েছে। মধ্য এশিয়ার অঞ্চলটি এখন তাই একটি শক্তিশালী বাণিজ্য কেন্দ্রে পরিণত হতে প্রস্তুত এবং একই সঙ্গে চিন, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত হতে আগ্রহী। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন-চিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং বেজিংয়ের সামুদ্রিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে সীমাবদ্ধ করার জন্য ওয়াশিংটনের দৃঢ় সংকল্পের পরিপ্রেক্ষিতে, ইউরেশিয়ার স্থলপথগুলি একটি বৃহত্তর ভূমিকা পালন করতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, বেজিং, মস্কো এবং অন্যান্য দেশ মধ্য এশিয়ার সাহায্যে সংযোগব্যবস্থা স্থাপন করার কাজ এগিয়ে যেতে পারে। তবে এই সম্ভাবনার পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারে দীর্ঘ-দূরত্বের বাণিজ্যে সমস্যা (যা হয়তো একটি অসম্ভাব্য পরিস্থিতি) এবং আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংঘাতের আশঙ্কা। ইউরেশিয়া জুড়ে উত্তেজনার পারদ বাড়লেও সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ দর্শায় যে, মধ্য এশিয়ায় সম্পর্ক মসৃণ পথেই হাঁটতে শুরু করেছে।

 


এমিল আভিদালিয়ানি জর্জিয়ার তিবিলিসির ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.