-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
জি৭-এর ভবিষ্যৎ প্রাসঙ্গিকতা নির্ভর করবে ভারতের মতো উদীয়মান শক্তির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থাকা, পরিসর ভাগাভাগি করা, এবং অ্যাজেন্ডা গঠনের ক্ষমতার উপর।
সদ্যসমাপ্ত জি৭ আলোচনাটি এই গোষ্ঠী এবং ভারত উভয়ের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। জি৭-এর মূল অ্যাজেন্ডা — উন্নয়নশীল বিশ্বে অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে সমর্থন করা -— পশ্চিম এশিয়ায় ক্রমবর্ধমান ইরান-ইজরায়েল সংঘাত মোকাবিলার কৌশলগত বাধ্যবাধকতার সম্পূর্ণ বিপরীত ছিল। বিস্ময়কর নয় যে, শীর্ষ সম্মেলনের একমাত্র শক্তিশালী ফলাফল ছিল ইরান-ইজরায়েল পরিস্থিতি সম্পর্কে জি৭ নেতাদের বিবৃতি, যা এ কথাই তুলে ধরে যে ঐকমত্য অর্জন করার সম্ভবনা অর্থনৈতিক সহযোগিতার চেয়ে ভূ-রাজনৈতিক সংকটের উপরই বেশি থাকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আকস্মিকভাবে শীর্ষ সম্মেলন থেকে সরে যাওয়ার ফলে এই বিচ্যুতির অনুভূতি আরও তীব্র হয়ে ওঠে।
এই বছরের জি৭ আলোচনাটি সম্ভবত একটি পূর্বাভাস ছিল যে কীভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত পুনর্নির্মাণ পশ্চিমী অর্থনৈতিক ঐকমত্যের সীমা পরীক্ষা করতে পারে। ট্রাম্পের সংরক্ষণবাদী নীতি, বিশেষ করে তাঁর আক্রমণাত্মক শুল্ক ব্যবস্থা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার অর্থনৈতিক অংশীদারদের মধ্যে যথেষ্ট দ্বন্দ্ব তৈরি করেছে — বিশেষ করে এই বছরের আয়োজক কানাডার সঙ্গে। এটি একটি উদ্বেগজনক বাস্তবতা প্রতিফলিত করে যে জি৭-এর অর্থনৈতিক ওজন এবং বিশ্বব্যাপী প্রভাব ক্রমবর্ধমানভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হচ্ছে, কারণ এটি নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছে। জি-৭ তিনটি মূল সমস্যার মুখোমুখি: মূলত ক্রমবর্ধমান অন্তর্মুখী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষিতে কীভাবে তারা তাদের মূল অর্থনৈতিক অ্যাজেন্ডা ধরে রাখবে; দ্বিতীয়ত, ট্রাম্পের অধীনে গড়ে ওঠা এমন একটি আমেরিকা যা দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক অংশীদারদের থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছে; এবং তৃতীয়ত, উদীয়মান শক্তিগুলির দ্বারা পরিচালিত দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্ব ব্যবস্থার সঙ্গে সুসঙ্গতভাবে সাড়া দিতে গোষ্ঠীটির অক্ষমতা।
উভয় দেশের তরফে তাদের বৈদেশিক নীতির সারিবদ্ধতা পুনর্মূল্যায়নের সঙ্গে সঙ্গে কানাডার ভারতের সাথে যোগাযোগ আরও গভীর তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে।
অনিশ্চয়তা এবং অনৈক্যের এই পটভূমিতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কানাডা সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি আশ্চর্যজনক কিন্তু স্বাগত মোড় হিসাবে চিহ্নিত হবে। কানাডার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর আমলে দীর্ঘ সময় ধরে কূটনৈতিক টানাপড়েনের পর এখন বরফ গলছে। সম্পর্ক পুনর্নবীকরণ কেবল পুনর্নির্মাণের ইঙ্গিত দেয় না; এটি পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দৃশ্যপট, বিশেষ করে গ্লোবাল সাউথের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের প্রতিক্রিয়ায় জি৭-এর কৌশলগত পুনর্নির্ধারণের ইঙ্গিত দেয়। উভয় দেশের তরফে তাদের বৈদেশিক নীতির সারিবদ্ধতা পুনর্মূল্যায়নের সঙ্গে সঙ্গে কানাডার ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ আরও গভীর তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। এক অপ্রত্যাশিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ক্রমবর্ধমানভাবে অবিশ্বাস্য চিনের মধ্যে আটকে থাকা কানাডার জন্য, ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ একটি স্থিতিশীল বিকল্প প্রদান করে। এই প্রসঙ্গে, ভারত-কানাডা যৌথ বিবৃতিতে "ভাগ করা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার নীতির প্রতি অঙ্গীকার"-এর উপর জোর দেওয়া হয়েছে, যা পারস্পরিক সংবেদনশীলতার সঙ্গে সাম্প্রতিক বছরগুলির উত্তেজনা থেকে একটি উল্লেখযোগ্য ও স্বাগত প্রস্থান চিহ্নিত করে।
নিজ নিজ হাইকমিশনারদের পুনর্বহাল, ঊর্ধ্বতন মন্ত্রী-পর্যায়ের ও কর্ম-স্তরের কর্মকাণ্ড পুনরায় শুরু করা, এবং সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করার সিদ্ধান্ত অবশেষে একটি বিস্তৃত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সিইপিএ) তৈরি করতে পারে। এটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য শুভ লক্ষণ এবং কানাডার কৌশলগত পরিপক্বতা এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে সম্পর্ককে দূরে রাখার অভিপ্রায় প্রদর্শন করে।
এই কূটনৈতিক পুনর্নির্মাণ প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির ভারত-কানাডা সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার প্রচারণার প্রতিশ্রুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুসরণ, যা কানাডার কিছু মহল থেকে বিরোধিতা সত্ত্বেও ভারতের প্রতি সম্ভাব্য বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গির ইঙ্গিত দেয়। কানাডার দীর্ঘমেয়াদি ভূ-অর্থনৈতিক কৌশল বিকশিত হচ্ছে, এবং ভারতের সঙ্গে সম্পৃক্ততা দ্বিপাক্ষিক ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের খেলোয়াড় হিসাবে এর একটি মূল উপাদান হয়ে উঠতে পারে।
জি৭-এর পরিবর্তনশীল চরিত্র সম্ভবত এই বছরের শীর্ষ সম্মেলনে সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান ছিল। ইউক্রেনের উপর ঐক্যবদ্ধ অবস্থান বজায় রাখতে তাদের অক্ষমতা, যা পূর্বে সম্মত একটি বিবৃতি প্রত্যাহারের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছিল, তা শুধু কূটনীতিতে নয়, আর্থিক এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত দায়বদ্ধতাতেও মার্কিন সমর্থনের অব্যাহত কেন্দ্রিকতা প্রকাশ করেছে। তবুও ভারত, ব্রাজিল, মেক্সিকো এবং দক্ষিণ আফ্রিকার উপস্থিতি একটি সূক্ষ্ম কিন্তু শক্তিশালী সংকেত হিসাবে কাজ করেছে যে, জি৭ নতুন এবং অর্থপূর্ণ উপায়ে গ্লোবাল সাউথের সঙ্গে জড়িত হতে বাধ্য হচ্ছে।
কানাডার দীর্ঘমেয়াদি ভূ-অর্থনৈতিক কৌশল বিকশিত হচ্ছে, এবং ভারতের সঙ্গে সম্পৃক্ততা দ্বিপাক্ষিক ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের খেলোয়াড় হিসাবে এর একটি মূল উপাদান হয়ে উঠতে পারে।
এক সময় সমমনস্ক ধনী গণতন্ত্রের একটি ক্লাব, জি৭, এখন এক ক্রান্তিলগ্নে দাঁড়িয়ে আছে। পশ্চিমের পুনর্গঠন এবং দক্ষিণের দাবির দ্বৈত গতিশীলতা এর বর্তমান বিবর্তনকে সংজ্ঞায়িত করছে। যেহেতু পশ্চিমী দেশগুলির মধ্যে অভ্যন্তরীণ সংহতি চাপের মধ্যে রয়েছে, উদীয়মান শক্তিগুলির একযোগে আলিঙ্গন প্রয়োজনীয় হয়ে উঠছে। সামনের পথে সম্ভবত কম অনুমানযোগ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অব্যাহত সম্পৃক্ততার ভারসাম্য বজায় রাখা, এবং বিশ্ব রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ে ক্রমবর্ধমান ভূমিকা গ্রহণকারী অর্থনীতির সঙ্গে গভীর একীকরণ অপরিহার্য হবে।
এই গোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ প্রাসঙ্গিকতা শুধু অভ্যন্তরীণ ঐক্য বজায় রাখার ক্ষমতার উপরই নয়, বরং ভারতের মতো উদীয়মান শক্তিগুলির সঙ্গে পরিসর ভাগাভাগি করা এবং অ্যাজেন্ডা গঠনের ইচ্ছার উপরও নির্ভর করবে। এই প্রেক্ষাপটে ভারত-কানাডা সম্পর্কের বরফের গলন নেহাত দ্বিপাক্ষিক সংশোধনের চেয়েও বেশি কিছু, কারণ এটি ইঙ্গিত দেয় যে পশ্চিমী বিশ্ব অর্থনীতির পুনঃভারসাম্য কেবল একটি পছন্দ নয় বরং একটি প্রয়োজনীয়তা হতে পারে।
এই ভাষ্যটি প্রথম হিন্দুস্তান টাইমস -এ প্রকাশিত হয়েছিল।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Professor Harsh V. Pant is Vice President – Studies and Foreign Policy at Observer Research Foundation, New Delhi. He is a Professor of International Relations ...
Read More +