Author : Kabir Taneja

Published on Jun 27, 2025 Updated 0 Hours ago

মধ্যপ্রাচ্যের জটিল রাজনৈতিক, ধর্মীয় কৌশলগত বাস্তবতা উপেক্ষা করে ইরানে শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের আহ্বান পশ্চিমীদের ব্যয়বহুল দুঃসাহসিক কাজের পুনরাবৃত্তির ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে

ইরানে শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের বিপজ্জনক রোম্যান্টিকতা

ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক কেন্দ্র অর্থাৎ ফোরদো, নাতানজ ইসফাহানের উপর কৌশলগত হামলা চালানোর বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত ওয়াশিংটনকে মূলত  রায়েল ও ইরানের মধ্যে বিদ্যমান যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে। তেহরান যে পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণের দিকে এগিয়ে চলেছে এমন কোনও প্রমাণ নেই। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলি এই কথা জানালেও রায়েল বারংবার ট্রাম্পকে এই কুমন্ত্রণাই দিয়ে এসেছে যে, ইরান আক্ষরিক অর্থেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে।

ইরান মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম মার্কিন সামরিক কেন্দ্র কাতারের আল উদেইদ ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, যা সংঘাতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করে। কাতারের ইতিহাসে এটিই প্রথম বারের মতো ঘটনা, যেখানে দেশটিকে তার বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশীর তরফে হওয়া সামরিক আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়া জানাতে হয়েছে। দোহা এর আগে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেছে এবং হামাস, রায়েল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাঝে মধ্যস্থতা করেছে।

প্রবাদপ্রতিম কৌশলগত বলটি এ বার ইরানের কোর্টে এবং সম্ভবত আরও স্পষ্ট ভাবে বলতে গেলে, দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেইয়ের নেওয়া সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে। ইরান যখন আরও প্রতিশোধ নেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে, তখন অন্য দিকে রায়েল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের পক্ষ থেকেই শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের ধারণাটিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। ট্রাম্পের নিজস্ব দল অবশ্য বলেছে যে, মার্কিন হামলা কেবল ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলিকে লক্ষ্য করেই করা হয়েছিল এবং এর নেপথ্যে রাজনৈতিক পরিবর্তন আনার কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। কিন্তু ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রথমে ইরানের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ দাবি করেন এবং সম্প্রতি প্রশ্ন তুলেছেন যে, যদি দেশটির নেতারা ইরানকে আবার মহান করে তুলতে না পারেন, তা হলে কেন দেশে শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন করা উচিত নয়?

শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের আখ্যান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নতুন নয়। আফগানিস্তান ইরাকের মতো সমসাময়িক উদাহরণগুলি বেশিরভাগ ব্যর্থ প্রচেষ্টা হয়েই থেকেছে এবং এই দুই দেশের জন্য মার্কিন কোষাগারের ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে।

শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের রোম্যান্টিকতার ভূ-রাজনীতি

শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের আখ্যান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নতুন নয়। আফগানিস্তান ইরাকের মতো সমসাময়িক উদাহরণগুলি বেশিরভাগ ব্যর্থ প্রচেষ্টা হয়েই থেকেছে এবং এই দুই দেশের জন্য মার্কিন কোষাগারের ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে। ১৯৫৩ সালে সংযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলির সমর্থিত একটি অভ্যুত্থান মোহাম্মদ মোসাদ্দেগের নির্বাচিত ইরানি সরকারকে উৎখাত করে এবং তাঁপদে আসীন হন পশ্চিমাপন্থী ইরানের শাহ মোহাম্মদ রেজা পহলভি। এ ক্ষেত্রে পশ্চিমি হস্তক্ষেপের মূল কারণ ছিল আবাদান সঙ্কট, যেখানে মোসাদ্দেগ অ্যাংলো-ইরানীয় তেল সংস্থার (যা আজ বিপি নামে পরিচিত তার পূর্বসূরী) নিয়ন্ত্রণ থেকে সরিয়ে এনে দেশের তেল সম্পদ জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং আবাদান থেকে পশ্চিমী পরিশোধকদের বহিষ্কার করেছিলেন।

মোসাদ্দেগের ক্ষমতাচ্যুতির ফলে ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের সূত্রপাত শুরু হয়, যেখানে শাহকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় এবং ফ্রান্সে নির্বাসিত আয়াতুল্লাহ খামেনেই দায়িত্ব গ্রহণের জন্য তেহরানে ফিরে আসেন এবং আধ্যাত্মিক ও রাজনৈতিক সর্বোচ্চ নেতা হয়ে ওঠেন। তখন থেকে ইরানের ক্ষমতাধর অভিজাতদের ভিত্তি আদর্শ, ধর্মতত্ত্ব ভূ-রাজনীতির মধ্যেই নিহিত, যেখানে ইরায়েল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অস্তিত্বের জন্য হুমকি প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

তবে, ২০২৫ সালে ইরানে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন হয়তো স্বপ্নের মতোই বলে মনে হতে পারে। তা কেবল এই অঞ্চলে তার বাইরে ইরানের অবস্থানের কারণেই নয়, বরং এই প্রচেষ্টা মার্কিন নিরাপত্তা স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। তা ২০০৩ সালে ইরাক থেকে শুরু করে ২০১১ সালে লিবিয়ার পরিস্থিতির দিকে নজর রাখলেই স্পষ্ট।

তবে, ২০২৫ সালে ইরানে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন হয়তো স্বপ্নের মতোই বলে মনে হতে পারে। তা কেবল এই অঞ্চলে তার বাইরে ইরানের অবস্থানের কারণেই নয়, বরং এই প্রচেষ্টা মার্কিন নিরাপত্তা স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। তা ২০০৩ সালে ইরাক থেকে শুরু করে ২০১১ সালে লিবিয়ার পরিস্থিতির দিকে নজর রাখলেই স্পষ্ট বোঝা যায়। সাদ্দাম হোসেন মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে বাগদাদ ত্রিপোলি উভয়ই তাদের রাজনৈতিক অক্ষমতার কারণে টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। ইরানকে ইরায়েলের তীব্র  আঘাতের সম্মুখীন হতে হয়েছেরায়েল তেহরানের আকাশসীমার প্রায় সম্পূর্ণ আধিপত্য দখল করেছে।

অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক জটিলতা

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা কেবল দেশের একজন রাজনৈতিক প্রধান নন, বরং একজন আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় নেতাও। আয়াতুল্লাহ খামেনেই – যিনি এখন আশি-ঊর্ধ্ব এক ব্যক্তিত্ব এবং ১৯৮৯ সাল থেকে দায়িত্বে আছেন – গত কয়েক দশক ধরে ইরানে বিপ্লবী আন্দোলনকে গভীর ভাবে প্রোথিত করেছেন। তাৎক্ষণিক রাজনৈতিক বিকল্পের অনুপস্থিতির অর্থ হল, শীর্ষ নেতৃত্বকে লক্ষ্যবস্তু করার ফলে কেবল আয়াতুল্লাহর নিজস্ব উত্তরাধিকার পরিকল্পনার সূচনা ঘটতে পারে, ঠিক যেমনটা নির্দিষ্ট রায়েলি হামলায় নিহত হওয়ার পর ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কোর-সহ (আইআরজিসি) শীর্ষ সামরিক নেতৃত্বকে প্রতিস্থাপনের পদ্ধতিতে দেখা গিয়েছে

যাই হোক, ইরানি বিপ্লবের ধর্মীয় অবস্থান এবং এর প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জের সম্ভাব্য প্রভাব আরও বিবেচনার দাবি রাখে। ইহুদি পরিচয় নিরাপত্তার পরিচিতি হিসেবে ইরায়েলের অবস্থানের মতোবিশ্ব জুড়ে বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ শিয়া মুসলমান ইরানকে একই নজরে দেখে। আয়াতুল্লাহকে প্রকাশ্যে লক্ষ্যবস্তু করে তোলার বিষয়টি বিভিন্ন দেশ এবং অঞ্চলে অনুরণন তুলতে পারে (ভারতের মুসলিম জনসংখ্যার ১৫-১৭ শতাংশ শিয়া)। বিষয়টিকে মধ্যপ্রাচ্যে বর্তমানে দমন করা হলেও এখনও পর্যন্ত টিকে থাকা সাম্প্রদায়িক বিভাজনের সূক্ষ্ম ভারসাম্য এ বার নষ্ট করতে পারে। ফলে ভারসাম্যের বিচ্যুতি প্রকাশ্যে এসে দ্বন্দ্ব ও অস্থিতিশীলতা প্রতিবেশী আরব রাষ্ট্রগুলিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

তাৎক্ষণিক রাজনৈতিক বিকল্পের অনুপস্থিতির অর্থ হল, শীর্ষ নেতৃত্বকে লক্ষ্যবস্তু করার ফলে কেবল আয়াতুল্লাহর নিজস্ব উত্তরাধিকার পরিকল্পনার সূচনা ঘটতে পারে, ঠিক যেমনটা নির্দিষ্ট রায়েলি হামলায় নিহত হওয়ার পর ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কোর-সহ (আইআরজিসি) শীর্ষ সামরিক নেতৃত্বকে প্রতিস্থাপনের পদ্ধতিতে দেখা গিয়েছে

সাম্প্রদায়িক বিভেদের বাইরেইরানি সমাজের মধ্যপন্থীরা – যাঁরা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ২০২৪ সালের নির্বাচনে একমাত্র মধ্যপন্থী প্রার্থী মাসুদ পেজেশকিয়ানকে ক্ষমতায় এনেছিলেন মূলত ইরানি জাতীয়তাবাদী উচ্ছ্বাসের উপর নির্ভর করে শাসনব্যবস্থার বিরোধিতা করার পরিবর্তে সমাবেশ করতে পারেন। গাজায় ইরায়েলের সামরিক অভিযান এবং তাসঙ্গে সম্পর্কিত বেসামরিক হতাহতের ঘটনা রাজনৈতিক বিভাজনের চাইতেও রাষ্ট্রটির বিরুদ্ধে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করেছে। ইরানের বিরুদ্ধে দীর্ঘস্থায়ী সামরিক অভিযান ফের এমন একটি জনমত তৈরি করতে পারেযদিও এ কথাও মনে রাখা জরুরি যে, পশ্চিমে বসবাসকারী ইরানি প্রবাসীরা বর্তমান ক্ষমতা কাঠামোকে উৎখাত করার ধারণাকে সমর্থন করবে।

এই সব কিছুর মাঝেই আইআরজিসির কেন্দ্রীয় ভূমিকাই হবে গুরুত্বপূর্ণ। ইরানের সমাজ, অর্থনীতি রাজনীতিতে আইআরজিসির বিস্তৃত প্রভাবের মূল নীতি হল আয়াতুল্লাহর পৃষ্ঠপোষকতা। বলা বাহুল্য, আইআরজিসি সরাসরি সর্বোচ্চ নেতার তত্ত্বাবধানে কাজ করে এবং একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে টিকে থাকার জন্য এই কাঠামোর মধ্যেই আইআরজিসি-র জন্য শক্তিশালী সমতার ভারসাম্য তৈরি করা হয়েছে। তাই ২০২২ সাল থেকে শীর্ষস্থানে থাকা আয়াতুল্লাহর উত্তরাধিকার পরিকল্পনাগুলিতেও আইআরজিসির শক্তিশালী বক্তব্য থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইরানের এই উভয় শক্তিশালী চক্র এখন একটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে এবং তা হল ইরানের আকাশে ইরায়েলের আধিপত্য। আইআরজিসির তালিকা কর্মীদের ধারাবাহিক অবনতি ইরানকে পাল্টা পদক্ষেপ নিতে ও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য করবে। ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কোনও কিছুই আর অবশিষ্ট না থাকায় পরিস্থিতিটি ইয়েমেনের হুতি এবং লেবাননের হিজবুল্লাহর মতো গোষ্ঠীগুলির অবশিষ্ট সক্ষমতাকে দীর্ঘমেয়াদি কাঠামোর মধ্যে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। কোনও কিছুর ক্ষমতার হ্রাস হলে বা অবনমন ঘটলে, তার অর্থ এই নয় যে, ক্ষমতা একেবারেই দুরমুশ হয়ে গিয়েছে। আপাতত, ইরানের প্রতিনিধিদের প্রভাব সীমিত বলেই মনে করা হচ্ছেহিজবুল্লাহ সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছে যে, ইরানের প্রতি সমর্থন আনুগত্য প্রদর্শনের জন্য রায়েলের উপর আক্রমণ করার কোনও  পরিকল্পনা আপাতত তাদের নেই।

গাজায় ইরায়েলের সামরিক অভিযান এবং তাসঙ্গে সম্পর্কিত বেসামরিক হতাহতের ঘটনা রাজনৈতিক বিভাজনের চাইতেও রাষ্ট্রটির বিরুদ্ধে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করেছে। ইরানের বিরুদ্ধে দীর্ঘস্থায়ী সামরিক অভিযান ফের এমন একটি জনমত তৈরি করতে পারে

রায়েল এগিয়ে অনেকটাই

রাজনৈতিক পরিবর্তনকে কৌশল হিসেবে সহায়তা করা বা সরাসরি সংগঠিত করার প্রশ্নটি আমেরিকার নয়, আসলে আসবে রায়েলের কাছ থেকেই। ওয়াশিংটন ডিসি হয়তো এ বিষয়ে রায়েলকে পরামর্শ না-ও দিতে পারেতবে এই অঞ্চলে মার্কিন সামরিক সম্পদকে লক্ষ্য করে যদি হামলা চালানো না হয় এবং হতাহতের ঘটনা না ঘটে, তা হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও এই ধারণার পৃষ্ঠপোষক হবে না। ইরানে আঘাত হানার মাধ্যমে ট্রাম্প ইতিমধ্যেই তার প্রধান প্রচারণামূলক লক্ষ্যগুলির একটিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন এবং তা হল আর কটি বিদেশি যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জড়িয়ে না পড়া। ইরানি শাসকগোষ্ঠীর সামনে যদি টিকে থাকার সম্ভাবনাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া হয়, তা হলে ইরান হোয়াইট হাউসের জন্য অচলাবস্থা তৈরির একটি পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারে।

উপরের ঘটনাপ্রবাহ খুব স্বাভাবিক ভাবেই এই অঞ্চলের বেশির ভাগ অংশের উপর বিশ্ব-মনোযোগকে সংহত করেছে। সংঘাত ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ার দরুন সাম্প্রতিক অতীতের বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনৈতিক সাফল্যের আখ্যানের কেন্দ্র অর্থাৎ প্রতিবেশী গালফ রাষ্ট্রগুলিঅচেনা পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। এ দিকে, ইরানের বিরুদ্ধে ইরায়েলের ক্রমাগত কৌশলগত সাফল্য দেশটির সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের আন্তর্জাতিক চাপ এড়িয়ে যতটা সম্ভব ক্ষতি করতে অনুপ্রাণিত করছে বলে মনে করা হচ্ছে। তা শুধু মাত্র ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক কেন্দ্রগুলির বিরুদ্ধেই নয়, বরং শাসনব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ দুর্বল করার জন্য আইআরজিসি-র ক্ষমতার বিরুদ্ধেও এমনটা করছে। ইরানের ক্ষমতার উপর হামলা চালানোর বিষয়টি রায়েলি কৌশলবিদদের জন্য একটি প্রলোভনমূলক কৌশল হিসাবে থাকবে। আইআরজিসি-র বাসিজ এবং আলবোর্জ বাহিনীর উপর, বিশেষ করে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং শাসনব্যবস্থার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য নিযুক্ত কেন্দ্রগুলির উপর চালানো হামলা থেকেই ইজরায়েলি কৌশলটি স্পষ্ট বলে মনে হয়। বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের বন্দি হিসেবে রাখার জন্য পরিচিত এভিন কারাগারটির উপরেও হামলা চালানো হয়েছিল, যাতে বন্দিদের মুক্তি দেওয়া যায়।

পরিশেষে বলা যায়, ট্রাম্পের অনিয়মিত হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও – যেমনটা তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয়েছে ইরান রায়েলকে সংঘাতে জর্জরিত করে রাখার মতো মৌলিক চ্যালেঞ্জগুলি টিকে থাকবে। ইরানের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে দুরমুশ করার জন্য ইরায়েল সুযোগ নিয়েছে এবং তেহরানও প্রাণপণে টিকে থাকার লড়াই চালাচ্ছে। এ বার ইরান এই পর্যায়টিকে কী ভাবে পরিচালনা করবে, তা দেশটির রাজনৈতিক কাঠামোর স্থিতিশীলতার উপর প্রত্যক্ষ দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে। কারণ তেহরানের প্রধান লক্ষ্যই হল রাজনৈতিক কাঠামোটির সুরক্ষা বজায় রাখা 

 


কবীর তানেজা অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ডেপুটি ডিরেক্টর।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.