-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
কোয়াড দেশগুলি একটি শীর্ষ সম্মেলন আহ্বান করে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিয়ম-ভিত্তিক শৃঙ্খলার প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে। আলোচনায় সামুদ্রিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং উদীয়মান প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত ছিল। গোষ্ঠীটি পূর্ব এবং দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ও মায়ানমার সঙ্কটের বিষয়েও আলোচনা করেছে। কোয়াড পহেলগাম আক্রমণের কথা তুলে ধরে সহিংস চরমপন্থারও নিন্দা করেছে।
১ জুলাই ওয়াশিংটনে কোয়াডের বিদেশমন্ত্রীদের শীর্ষ সম্মেলনে মার্কো রুবিও ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানের বিদেশমন্ত্রীদের আতিথেয়তা করেছিলেন। জানুয়ারি মাসে ট্রাম্প সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ওয়াশিংটনে তাঁদের পূর্ববর্তী বৈঠকের পর এই বছর কোয়াডের বিদেশমন্ত্রীদের মধ্যে এটি দ্বিতীয় বৈঠক ছিল। ভারতের জন্য উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল পহেলগাম সন্ত্রাসবাদীদের হামলার সঙ্গে ‘যোগাযোগ’ হিসেবে পাকিস্তানের কোনও উল্লেখ না থাকা, যা যৌথ বিবৃতিতে নিন্দা করা হয়েছিল।
এটি সম্ভবত কোয়াডের সহযোগী সদস্যদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের যে অস্থিরতা অব্যাহত রয়েছে, সেটিই তুলে ধরে। এই শীর্ষ সম্মেলনটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যখন ২০১৭ সালে গোষ্ঠীটি পুনরায় চালু হওয়ার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তার মিত্র অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং তার কৌশলগত অংশীদার ভারতের মধ্যে ফাটল শীর্ষে রয়েছে।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের পর থেকে, মার্কিন বিদেশনীতি - অর্থনৈতিক এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত অগ্রাধিকার পরিবর্তন - একটি নির্দিষ্ট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে কোয়াড অংশীদারদের সাথে আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পুনর্নির্মাণ ঘটেছে। এই বছরের শুরুতে জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি আশাব্যঞ্জক আলোচনা শুরু করে, যার মধ্যে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও জাপানের প্রাইম মিনিস্টার শিগেরু ইশিবার মধ্যে একটি পুনঃনিশ্চিত নেতা-স্তরের শীর্ষ সম্মেলনও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে সাম্প্রতিক মার্কিন-জাপান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের লক্ষণগুলি একটি ব্যবধানকেই দর্শায়, যার ফলে দুই দেশের মধ্যে ‘২+২ ডায়লগ’ বাতিল করা হয়েছে।
এই বছরের শুরুতে জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি আশাব্যঞ্জক আলোচনা শুরু করে, যার মধ্যে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও জাপানের প্রাইম মিনিস্টার শিগেরু ইশিবার মধ্যে একটি পুনঃনিশ্চিত নেতা-স্তরের শীর্ষ সম্মেলনও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
নেদারল্যান্ডসের হেগে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে ইশিবার অনুপস্থিতি ওয়াশিংটনের সঙ্গে টোকিওর ক্রমবর্ধমান মতবিরোধকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে, যেখানে মিত্রদের প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধির জন্য ওয়াশিংটনের অব্যাহত চাপের বিষয়টি উঠে এসেছে। একই ভাবে অস্ট্রেলিয়ান নৌবাহিনীর জন্য প্রচলিত সশস্ত্র পারমাণবিক ডুবোজাহাজ অর্জন এবং উন্নয়নের লক্ষ্যে তৈরি একটি ক্ষুদ্রপাক্ষিক গোষ্ঠী অউকাস-কে পর্যালোচনার জন্য ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের পর অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্কেও ফাটল দেখা গিয়েছে।
পর্যালোচনায় ট্রাম্পের ‘আমেরিকা প্রথম’ বৈদেশিক নীতির অ্যাজেন্ডার সঙ্গে এই গোষ্ঠীটি এখনও সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না তা মূল্যায়ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। এই মূল্যায়ন থেকে অস্ট্রেলিয়ার জন্য একটি নেতিবাচক ফলাফল ক্যানবেরা-ওয়াশিংটন সম্পর্ককে গুরুতর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এর পাশাপাশি এটি ইন্দো-প্যাসিফিক সামুদ্রিক নিরাপত্তা কাঠামোকে অস্থিতিশীল করার ঝুঁকি তৈরি করে।
অপারেশন সিঁদুরের পরবর্তী সময়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করার ট্রাম্পের দাবির পর ভারত-মার্কিন সম্পর্কও দুর্বল বলে মনে হচ্ছে। ভারতের বাণিজ্য নীতিতে বিদ্যমান ভারসাম্যহীনতা সম্পর্কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর্যায়ক্রমিক ইঙ্গিতও দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতির দ্রুত গতির উপর অনিশ্চয়তার ছায়া ফেলেছে।
এই ধরনের অনিশ্চয়তার পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াশিংটন ও বেজিংয়ের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার ফলে আগেকার অগ্রাধিকারগুলি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই পটভূমিতে কোয়াডের যৌথ বিবৃতিতে চারটি মূল ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে যা গোষ্ঠীটির কর্মসূচিকে পরিচালিত করবে। এর মধ্যে রয়েছে সামুদ্রিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা, গুরুত্বপূর্ণ ও উদীয়মান প্রযুক্তি এবং মানবিক সহায়তা ও জরুরি প্রতিক্রিয়া।
আসিয়ান, আইওআরএ (ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন), প্যাসিফিক আইল্যান্ডস ফোরাম এবং অন্য প্রশান্ত মহাসাগরীয় নেতৃত্বাধীন আঞ্চলিক গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার জন্য কোয়াডের ঘোষিত লক্ষ্য এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে যত দূর সম্ভব এগোনোর জন্য গোষ্ঠীটির ইচ্ছা কিছুটা ধারাবাহিকতা প্রদর্শন করে। নতুন ঘোষণার মধ্যে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ শৃঙ্খলগুলিকে সুরক্ষিত ও বৈচিত্র্যময় করার জন্য নতুন ক্রিটিক্যাল মিনারেলস ইনিশিয়েটিভ এবং গত বছরের উইলমিংটন শীর্ষ সম্মেলনে ঘোষিত ইন্দো-প্যাসিফিক লজিস্টিকস নেটওয়ার্ক, যা এখন গোষ্ঠীটির এইচএডিআর (মানবিক সহায়তা এবং দুর্যোগ ত্রাণ) প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ শুরু করার জন্য প্রস্তুত। এই বছরের শেষের দিকে কোয়াড মুম্বইতে ‘ভবিষ্যতের অংশীদারিত্বের বন্দর’ চালু করারও চেষ্টা করছে।
সাম্প্রতিক এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে - যেখানে যৌথ বিবৃতিতে পহেলগামের উল্লেখ না থাকার ফলে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য এই গোষ্ঠীর প্রতিশ্রুতি গুরুতর ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে – কোয়াডের বিবৃতি কিছুটা হলেও আশ্বস্ত করেছে। যদিও এ ক্ষেত্রেও পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
পূর্ব ও দক্ষিণ চিন সাগর অঞ্চলে চিনের ক্রমবর্ধমান যুদ্ধবাজ মনোভাব নিয়ে এই গোষ্ঠীটি তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, তবে এ ক্ষেত্রে চিনের নাম প্রকাশ করেনি। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের বেশ কয়েকটি প্রস্তাব লঙ্ঘন করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি ব্যবহার করে উত্তর কোরিয়ার অস্থিতিশীল উৎক্ষেপণের বিষয়েও তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই গোষ্ঠীটি মায়ানমারের চলমান সঙ্কট ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার উপর এর প্রতিকূল প্রভাবের কথাও তুলে ধরেছে এবং দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।
কোয়াড সহিংস চরমপন্থার নিন্দা জানিয়েছে, বিশেষ করে পহেলগামের কথা উল্লেখ করেছে। সাম্প্রতিক এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে - যেখানে যৌথ বিবৃতিতে পহেলগামের উল্লেখ না থাকার ফলে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য এই গোষ্ঠীর প্রতিশ্রুতি গুরুতর ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে – কোয়াডের বিবৃতি কিছুটা হলেও আশ্বস্ত করেছে। যদিও এ ক্ষেত্রেও পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
সব মিলিয়ে কোয়াডের বিদেশমন্ত্রীদের শীর্ষ সম্মেলন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে একটি নিয়মভিত্তিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য গোষ্ঠীটির প্রতিশ্রুতি প্রদর্শনের চেষ্টা করেছে। বিভিন্ন বৈশ্বিক সীমান্তে সংঘাত ও অস্থিরতা দেখা দিলেও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নানাবিধ চ্যালেঞ্জের কারণে অস্থিতিশীলতার ঝুঁকিতে রয়েছে। আঞ্চলিক শৃঙ্খলা রক্ষায় কোয়াড দেশগুলির মধ্যে অবিচল সহযোগিতা অপরিহার্য থাকবে। কোয়াডের ‘প্রদর্শন করা ও বাস্তবায়ন করা’র মধ্যে পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও চতুর্পাক্ষিক গোষ্ঠীটি ‘বিশ্ব কল্যাণের’ জন্য একটি শক্তি হিসেবেই রয়েছে।
এই প্রতিবেদনটি সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয় দ্য ইকোনমিক টাইমস-এ।
নিবন্ধে প্রকাশিত মতামত লেখক(দের) ব্যক্তিগত।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Professor Harsh V. Pant is Vice President – Studies and Foreign Policy at Observer Research Foundation, New Delhi. He is a Professor of International Relations ...
Read More +
Sayantan Haldar is an Associate Fellow with ORF’s Strategic Studies Programme. At ORF, Sayantan’s work is focused on Maritime Studies. He is interested in questions of ...
Read More +