-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
কোয়াড-অ্যাট-সি মিশন একটি কৌশলগত পরিবর্তনের চিহ্ন — সামরিকীকরণ নয়, অপারেশনাল কোস্টগার্ড সহযোগিতার মাধ্যমে ইন্দো-প্যাসিফিক সামুদ্রিক শাসনকে এগিয়ে নেওয়া।
সদস্য দেশগুলির মধ্যে আন্তঃকার্যক্ষমতা জোরদার করা এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সামুদ্রিক নিরাপত্তা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনা করে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে কোয়াড লিডার্স শীর্ষ সম্মেলনে প্রথমবারের মতো উপকূলরক্ষী সহযোগিতা উদ্যোগের ঘোষণা করা হয়। ২০২৫ সালের ৩০ জুন কোয়াড দেশগুলি প্রথম 'কোয়াড-অ্যাট-সি শিপ অবজারভার মিশন' চালু করে। এটি সামুদ্রিক সহযোগিতা কার্যকর করার দিকে একটি পরিমিত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের উপকূলরক্ষী পরিষেবা থেকে দুজন করে অফিসারকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড কাটার (ইউএসসিজিসি) মোতায়েন করে স্ট্র্যাটনে, যা বর্তমানে গুয়ামের পথে। যদিও উপকূলরক্ষী পরিষেবাগুলির মধ্যে সহযোগিতা প্রায়শই সামুদ্রিক সহযোগিতার বিস্তৃত আলোচনায় সীমানাবিহীন থাকে, তবুও এই পরিষেবাগুলি অপারেশনাল সিনার্জি বৃদ্ধি এবং সামুদ্রিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কোয়াড-অ্যাট-সি শিপ অবজারভার মিশন চালু হওয়ার সাথে সাথে উইলমিংটন ঘোষণা — ২০২৪ সালে কোয়াড লিডার্স শীর্ষ সম্মেলনের একটি ফলাফল বিবৃতি — এই উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। কোস্ট গার্ডের সহযোগিতা মিশন ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত কোয়াড লিডার্স শীর্ষ সম্মেলনের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে আন্তঃকার্যক্ষমতা এবং ভবিষ্যতের মিশনের আকার বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কোয়াড ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে চলতি আলোচনার আলোকে এই উদ্যোগের প্রকৃতি তুলে ধরা গুরুত্বপূর্ণ: কোয়াড-অ্যাট-সি শিপ অবজারভার মিশনটি একটি সম্পূর্ণ সামরিক নৌবহর তৈরি ও মোতায়েন করার পরিবর্তে উপকূলরক্ষীদের সাধারণ পুলিশিং কার্যাবলির উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। মিশনটি এই অঞ্চলে নিরাপত্তা হুমকির বিরুদ্ধে ভাগাভাগি করা নিরাপত্তা, আঞ্চলিক স্থিতিস্থাপকতা এবং সম্মিলিত প্রস্তুতির জন্য প্রয়াসী হয়। এই উদ্যোগটি সামরিক বা যুদ্ধ মিশন হয়ে ওঠার পরিবর্তে আঞ্চলিক জলসীমায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও কার্যজনিত সংহতিকে শক্তিশালী করে।
এই উদ্যোগটি সামরিক বা যুদ্ধ মিশন হয়ে ওঠার পরিবর্তে আঞ্চলিক জলসীমায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও কার্যজনিত সংহতিকে শক্তিশালী করে।
এই পদ্ধতিটি সাগর (অঞ্চলে সকলের জন্য নিরাপত্তা এবং বৃদ্ধি) এবং ইন্দো-প্যাসিফিক মহাসাগর উদ্যোগ (আইপিওআই)-এর মতো বৃহত্তর আঞ্চলিক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গেও অনুরণিত হয়, কারণ উভয়ই সম্মিলিত পদক্ষেপ, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের উপর জোর দেয়। এই উদ্যোগটি কোয়াডের মধ্যে উপকূলরক্ষীদের কৌশলগত মূল্যকে তুলে ধরে, এবং বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক সামুদ্রিক মঞ্চে নিয়ম-ভিত্তিক শৃঙ্খলা পুলিশিং এবং সুরক্ষায় তাদের ভূমিকার উপর জোর দেয়।
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সমুদ্র শাসনের কেন্দ্রবিন্দুতে কোস্টগার্ড পরিষেবাগুলি দীর্ঘকাল ধরে রয়েছে, এবং দক্ষিণ চিন সাগরের (এসসিএস) মতো জায়গায় দেখা গিয়েছে যে তা ইন্দো-প্যাসিফিক মহাসাগরীয় নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এসসিএস চিনা যুদ্ধবাজদের একটি কৌশলগত পরীক্ষাগার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, যা উপকূলরক্ষীকে ক্ষমতা ধরে রাখা এবং উত্তেজনা এড়াতে কৌশলগত অগ্রগতি অর্জনের জন্য একটি অবিচ্ছেদ্য হাতিয়ার করে তুলেছে। চিনের সাম্প্রতিক উপকূলরক্ষী বিধিমালা এবং চায়না কোস্টগার্ড অর্ডার #৩ (২০২৪) জারি হওয়ার ফলে, দক্ষিণ চিন সাগরে ফিলিপিন্সের মতো রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে সশস্ত্র সংঘর্ষের বিপদ বেড়েছে। এর সাম্প্রতিক উদাহরণ হল একটি চিনা উপকূলরক্ষী জাহাজ এবং ফিলিপিন্সের নৌবাহিনীর জাহাজের মধ্যে সংঘর্ষ, যেখানে চিনা কর্মীরা ম্যাশেটি, কুড়াল ও হাতুড়ি ব্যবহার করেছে বলে জানা গিয়েছে।
ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রতিক্রিয়ায়, কোয়াড স্পষ্টভাবে উপকূলরক্ষী এবং সামুদ্রিক মিলিশিয়া জাহাজের আক্রমণাত্মক ব্যবহারের নিন্দা করেছে। সামরিকীকরণের অভাবের কারণে, উপকূলরক্ষীর কার্যভার ইন্দো-প্যাসিফিক আইন প্রয়োগের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তবে, মৎস্যক্ষেত্রের উপর চিনের ক্রমবর্ধমান নিয়ন্ত্রণ, এবং অবৈধ, অপ্রকাশিত ও অনিয়ন্ত্রিত (আইইউইউ) মাছ ধরায় চিনা উপকূলরক্ষীদের সম্পৃক্ততা, উপকূলরক্ষীর দৃষ্টিকোণ থেকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে কোয়াড সদস্যদের মনোযোগ বৃদ্ধি করেছে। তাদের অনন্য ভূমিকা হল উপকূলরক্ষীরা যুদ্ধক্ষেত্রে নৌবহর নয়, বরং অনুসন্ধান ও উদ্ধার (এসএআর), এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন (ইইজেড) পুলিশিং, মানবিক সহায়তা ও দুর্যোগ ত্রাণ (এইচএডিআর) উদ্যোগ এবং আইন প্রয়োগের সঙ্গে জড়িত। ইন্দো-প্যাসিফিক প্রেক্ষাপটে, ধূসর অঞ্চলে বলপ্রয়োগ এবং সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি ছাড়াই নৌ-চলাচলের স্বাধীনতার প্রশ্নটি বিবেচনা করা অপরিহার্য হয়ে ওঠে।
নয়াদিল্লি ও টোকিও দীর্ঘদিন ধরে সমঝোতাপত্র (এমওইউ) ও যৌথ মহড়ার মাধ্যমে আইইউইউ মাছ ধরার মতো সমস্যা মোকাবিলায় উপকূলরক্ষীদের মধ্যে সহযোগিতার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। একইভাবে, মার্কিন উপকূলরক্ষী বাহিনী তাদের ইন্দো-প্যাসিফিক মিশনের অংশ হিসেবে ২০২২ সালে ভারত সফরে এসে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণ করেছে। ক্যানবেরা ও নয়াদিল্লি ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং রয়েল অস্ট্রেলিয়ান নৌবাহিনীর মেরিটাইম বর্ডার কমান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য আলোচনায় অংশ নিয়েছে। যদিও কোয়াডকে প্রায়শই প্রাথমিকভাবে একটি কূটনৈতিক ফোরাম হিসেবে দেখা হয়, কোয়াড-অ্যাট-সি মিশন বাস্তব অপারেশনাল সহযোগিতার একটি উপাদান প্রবর্তন করে, এবং এমন একটি বাস্তব মাত্রা প্রদান করে যা প্রকাশ্য সামরিকীকরণ বা নিরাপত্তাকরণ এড়ায়।
পর্যবেক্ষক মিশনের পাশাপাশি, উইলমিংটন ঘোষণায় ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিয়ম-ভিত্তিক সামুদ্রিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য একটি কোয়াড মেরিটাইম আইনি সংলাপ শুরু করার ঘোষণাও করা হয়েছে। চারটি উপকূলরক্ষী বাহিনীর সম্মিলিত বাহিনী রাষ্ট্রপুঞ্জের সমুদ্র আইন সংক্রান্ত কনভেনশন (ইউএনক্লস)-এর নিয়মাবলি বাস্তবায়ন, অবৈধ মাছ ধরা প্রতিরোধ, এবং সামুদ্রিক সাধারণ অধিকার রক্ষায় সহযোগিতা করবে — এই লক্ষ্যগুলির উপর কোয়াডের যৌথ বিবৃতিতে ধারাবাহিকভাবে জোর দেওয়া হয়েছে, এবং এখন তা বাস্তবায়িত হচ্ছে। ইউএনক্লস এবং সহায়ক নথিসহ বিদ্যমান সামুদ্রিক আইন সামুদ্রিক ক্ষেত্রকে নিয়ন্ত্রণ করে; তবে, দুটি ত্রুটি রয়েছে। প্রথমত, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে কোনও আঞ্চলিক আইনি কাঠামো নেই এবং প্রয়োগকারী ব্যবস্থার অভাব রয়েছে, যা এই অঞ্চলে ঐতিহ্যবাহী এবং অ-প্রথাগত সামুদ্রিক নিরাপত্তা বিপদকে চালিত করে। যেহেতু সামরিকীকরণ এবং সশস্ত্র বাহিনীর ব্যবহার প্রায়শই শান্তি বজায় রাখার লক্ষ্যের বিপরীতমুখী, তাই এগুলি ধারাবাহিকভাবে প্রয়োগের কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে কাজ করতে পারে না। এই সীমাবদ্ধতার ফলে উপকূলরক্ষী এবং তাদের পুলিশিং কার্যাবলি দ্বারা ক্রমবর্ধমানভাবে একটি কৌশলগত শূন্যতা পূরিত হয়েছে। যৌথ উপকূলরক্ষী অভিযান আঞ্চলিক সামুদ্রিক শাসনে কোয়াড সদস্যদের বিনিয়োগের ইঙ্গিত দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দীর্ঘমেয়াদে, এই পর্যবেক্ষক মিশনের নিরাপত্তা লঙ্ঘন এবং হুমকির বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিক্রিয়া প্রদানের সম্ভাবনা রয়েছে। অতএব, এই উদ্যোগটি জোর দিয়ে বলে যে সমুদ্রের পুলিশিং কখনও কখনও নিছক ভান করা বা অভিপ্রায় প্রদর্শনের চেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক।
সমুদ্রের পুলিশিং কখনও কখনও নিছক ভান করা বা অভিপ্রায় প্রদর্শনের চেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক।
কোয়াড-অ্যাট-সি শিপ অবজারভার মিশন ২০২৫ সালের শেষের দিকে ভারতে আয়োজিত আসন্ন কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনের জন্য মঞ্চ তৈরি করে, যা এই উদ্যোগকে একটি প্রস্তুতিমূলক এবং আত্মবিশ্বাস তৈরির ব্যবস্থা হিসেবে উপস্থাপন করে। জুলাই মাসের শুরুতে ওয়াশিংটনে কোয়াডের বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকের পর জারি করা একটি যৌথ বিবৃতিতে সামুদ্রিক আইনি সংলাপ এবং উপকূলরক্ষী সহযোগিতার ক্ষেত্রে সদস্যদের গভীর প্রতিশ্রুতি ও সহযোগিতার কথা পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে, যৌথ উপকূলরক্ষী মিশন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিয়ম-ভিত্তিক শৃঙ্খলা ও সামুদ্রিক নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য একটি সহযোগিতামূলক পদ্ধতির ব্যবস্থা করতে পারে। সহযোগিতার আহ্বানের ইতিহাসের সঙ্গে এই উদ্যোগটি কূটনৈতিক অভিপ্রায়কে কার্যকরী বাস্তবতায় রূপান্তরিত করে কোয়াডকে ব্যবহারিকতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা প্রদান করে।
সায়ন্তন হালদার অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের গবেষণা সহকারী।
শ্লোক গুপ্ত অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের রিসার্চ ইন্টার্ন।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Sayantan Haldar is an Associate Fellow with ORF’s Strategic Studies Programme. At ORF, Sayantan’s work is focused on Maritime Studies. He is interested in questions of ...
Read More +
Shloak Gupta is a Research Intern with the Strategic Studies Programme at the Observer Research Foundation. ...
Read More +