Published on Oct 18, 2025 Updated 0 Hours ago

এই বছরের কোয়াড শীর্ষ সম্মেলন ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, যাতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে একটি কেন্দ্রীভূত, ফলাফল-চালিত শক্তি হিসেবে এই গোষ্ঠীটিকে পুনর্নির্ধারণ করতে সহায়তা করা যায়

কোয়াড ২০২৫: ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের মাঝে নিরাপত্তার উপর জোর

এই বছরের শেষের দিকে ভারত কোয়াড নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করতে চলেছে, যখন এই গোষ্ঠীর বিবর্তনের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে এটি অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচনের ফলে লেনদেনমূলক কূটনীতির এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছে, যেখানে জাতীয় স্বার্থ, অভিন্ন সাধারণ বোঝা ভাগ করে নেওয়া এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতার উপর তীব্র জোর দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। তাইওয়ান প্রণালী এবং দক্ষিণ চিন সাগরে চিন তার দৃঢ় পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে; লোহিত সাগরে সামুদ্রিক বিঘ্ন অব্যাহত রয়েছে; এবং বিশ্ব জুড়ে একাধিক দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব শাসনব্যবস্থা খণ্ডিত থেকেছে। এই বাধ্যবাধকতাগুলি কোয়াডকে কী ভাবে প্রভাবিত করে, তা এখনও দেখার বিষয়।

মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সামরিক সম্পৃক্ততা - যা এই বছরের শুরুতে দূরবর্তী বলে মনে হয়েছিল - এখন অব্যাহতই রয়েছে।

এই বছরের চ্যালেঞ্জগুলি মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা, বিশেষ করে ইরায়েল ও ইরানের মধ্যে অভূতপূর্ব উত্তেজনা এবং এই অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার ক্রমহ্রাসমান সম্ভাবনার কারণে আরও জটিল হয়ে উঠেছে। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সামরিক সম্পৃক্ততা - যা এই বছরের শুরুতে দূরবর্তী বলে মনে হয়েছিল - এখন অব্যাহতই রয়েছে। মার্কিন সেন্ট্রাল ম্যান্ডের কম্যান্ডার জেনারেল মাইকেল কুরিলা সম্প্রতি ওয়াশিংটনকে যা ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখে ফেলেছে অর্থাৎ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সম্পূর্ণ রূপে সম্পদ উৎসর্গ করতে বাধা দিচ্ছে - তা তুলে ধরেছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য ও শুল্ক চাপের প্রত্যাশার পাশাপাশি কোয়াড সদস্য সংক্রান্ত নানা চ্যালেঞ্জ অগ্রগতি ব্যাহত করতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনটি আগের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং সম্ভবত কোয়াডের বিশ্বাসযোগ্যতা কৌশলগত সমন্বয়ের জন্য একটি লিটমাস পরীক্ষাও বটে

ট্রাম্পের ছায়া

ভারত ট্রাম্পের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতিত্বের অধীনে কোয়াডের প্রতি মার্কিন সমর্থনের ধারাবাহিকতার উপর জোর দিলেও বিশ্লেষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, পূর্ববর্তী প্রশাসনের উপর আস্থা তৈরি করলে তা ভবিষ্যতের সংহতি নিশ্চিত করবে না। ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন বহুপাক্ষিক প্রকল্পে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার আগে বাস্তব লাভ’-এর দাবি করে। সেক্রেটারি অফ স্টেট মার্কো রুবিও বলেছেন, জোটগুলিকে আমেরিকাকে নিরাপদ, শক্তিশালী আরও সমৃদ্ধ করতে হবে, যা ব্যয়-লাভ  বিশ্লেষণের একটি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করে এটি এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি যা কোয়াড-সহ বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্বের প্রতি ওয়াশিংটনের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করতে পারে।

এই প্রত্যাশা সত্ত্বেও, ট্রাম্প প্রশাসন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রতি দৃঢ় অবস্থানের ইঙ্গিত দিয়েছে। সেক্রেটারি অফ ডিফেন্স পিট হেগসেথের হনলুলু সফরে ইন্দোপাকম-এর প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করার পাশাপাশি পেন্টাগনের বাজেট উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি করার মাধ্যমে এটি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ২০২৫ সালের মার্চ মাসে এশিয়ায় তাঁর প্রথম সরকারি সফরের সময় হেগসেথ চিনের বিরুদ্ধে সম্মিলিত অবস্থান জোরদার করার বিষয়ে এশিয়ান মিত্রদের আশ্বস্ত করেছিলেন। সর্বোপরি শাংগ্রি-লা সংলাপে তিনি ইন্দো-প্যাসিফিককে আমেরিকার অগ্রাধিকারের মঞ্চএবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই অঞ্চলে স্পষ্ট ভাবে অবস্থান থাকার বিষয়ের উপর পুনরায় জোর দিয়েছিলেন। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষার প্রতি আমেরিকার প্রতিশ্রুতির সুর আরও দৃঢ় ভাবে অনুরণিত হয়েছিল, যখন তিনি জোর দিয়েছিলেন যে, তাইওয়ানের বিরুদ্ধে সামরিক সংঘাতের ক্ষেত্রে আমেরিকা লড়াই করতে এবং চূড়ান্ত ভাবে জয়লাভ করতে প্রস্তুত। কিন্তু হেগসেথের সংঘাতপূর্ণ সুর, ঠান্ডা লড়াইয়ের সময়কার বক্তব্যের আহ্বান এবং সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির দাবি আঞ্চলিক অংশীদারদের কাছে একটি সুপ্ত উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে এবং এশীয় মিত্রদের আশ্বস্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে, যা আঞ্চলিকভাবে পরিত্যক্ত হওয়ার উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে এই পরিস্থিতি  আসলে এই আশঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে যে, আদর্শগত বিভাজন এবং কৌশলগত বিভ্রান্তির পরিবেশে ওয়াশিংটনের প্রতিশ্রুতিগুলি কাজ করছে না

জম্মু ও কাশ্মীরে পহেলগাম হামলার পর ভারতের দৃঢ় সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অবস্থানের কারণে কোয়াড সম্ভবত সন্ত্রাসবাদের তীব্র নিন্দা করবে এবং আগের চেয়ে আরও কার্যকর ভাবে এই বিষয়ে সমন্বয় করবে।

এই বছরের কোয়াড পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের যৌথ বিবৃতি আসন্ন নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের জন্য সুর তৈরি করতে পারে এবং কঠোর নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য কোয়াডের অগ্রাধিকারের উপর জোর দিয়েছে। এটি ইন্দো-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ ফর মেরিটাইম ডোমেন অ্যাওয়ারনেস-এর (আইপিএমডিএ) প্রতি সমর্থন, সামুদ্রিক প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি অর্ধপরিবাহী এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) উপর সহযোগিতার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত স্থিতিস্থাপকতার উপর জোর দিয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরে পহেলগাম হামলার পর ভারতের দৃঢ় সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অবস্থানের কারণে কোয়াড সম্ভবত সন্ত্রাসবাদের তীব্র নিন্দা করবে এবং আগের চেয়ে আরও কার্যকর ভাবে এই বিষয়ে সমন্বয় করবে। কোয়াড ক্রিটিক্যাল মিনারেলস ইনিশিয়েটিভ, মুম্বইতে পোর্টস অফ দ্য ফিউচার পার্টনারশিপ এবং একটি সহযোগী লজিস্টিক অনুশীলনের মতো নতুন উদ্যোগগুলি ফোকাসের মূল ক্ষেত্র হতে পারে এবং আন্তর্দেশীয় নিরাপত্তা আঞ্চলিক দুর্যোগ প্রতিক্রিয়ায় ব্লকের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে জোরদার করবে। আমেরিকান পররাষ্ট্র নীতির মনোযোগে উদীয়মান প্রবণতার পরিপ্রেক্ষিতে, কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনের উপর একটি বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে: জলবায়ু, স্বাস্থ্য এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মতো অন্য কূটনৈতিক অগ্রাধিকারগুলি কি পর্যাপ্ত মনোযোগ পাবে?

নিরাপত্তা ভরকেন্দ্র বনাম কূটনৈতিক শক্তি

কোয়াডের জন্য ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন সুযোগ এবং ঝুঁকি উভয়েরই ইঙ্গিত দেয়। এক দিকে নিরাপত্তা সহযোগিতা তীব্র হতে পারে; অন্য দিকে, জোটের বৃহত্তর কূটনৈতিক শক্তির কর্মসূচি, জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং ডিজিটাল অবকাঠামো সম্ভাব্য প্রান্তিকীকরণের সম্মুখীনসুতরাং ২০২৫ সালের শীর্ষ সম্মেলন দ্বৈত চাপের মধ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে: বহিরাগত ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা মার্কিন কৌশলগত অগ্রাধিকারের অভ্যন্তরীণ পুনর্নির্মাণ। এই উদ্বেগগুলি ভিত্তিহীন নয়। নিজের প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প ইউএসএআইডি-এর জন্য তহবিল হ্রাস করেছেন, প্যারিস চুক্তি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে এসেছেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বহুপাক্ষিক কাঠামো থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছেন। তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি এই পদক্ষেপগুলি কেবল দ্বিগুণ করেছেন, যা উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে যে কোয়াডের উন্নয়নমূলক কর্মসূচি, বিশেষ করে জলবায়ু অর্থায়ন এবং অতিমারি প্রস্তুতি সম্পর্কিত কঠোর নিরাপত্তা উদ্বেগের ছায়ায় আড়াল হয়ে যেতে পারে। এটি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের অধীনে প্রচারিত দৃষ্টিভঙ্গি থেকে উল্লেখযোগ্য প্রস্থানকে চিহ্নিত করতে পারে, যাঁ ২০২৪ উইলমিংটন ঘোষণায় জনস্বাস্থ্য, জলবায়ু উদ্ভাবন আঞ্চলিক অবকাঠামোর উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে সমান অংশীদারিত্ব হিসাবে কোয়াডকে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর বিপরীতে, ট্রাম্পের আমেরিকা ফার্স্টমতবাদ সংকীর্ণ ভাবে সংজ্ঞায়িত জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয় এবং বহুপাক্ষিকতাকে একটি লেনদেনমূলক প্রচেষ্টা হিসাবে দেখে, যা একসময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে কাঠামো প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছিল তা ক্ষুণ্ণ করে এবং কোয়াডের কূটনৈতিক উদ্দেশ্যগুলির প্রতি তাঁ মনোযোগ সম্পর্কে সন্দেহ তৈরি করে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোয়াডের কাঠামোকে সুবিন্যস্ত করার লক্ষ্যে কাজ করছে, তার অসংখ্য কর্মী গোষ্ঠীকে কঠোর নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে কয়েকটি মূল অগ্রাধিকারে সমন্বিত করছে।

ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই কোয়াডের দিকনির্দেশনাকে প্রভাবিত করছে। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে যেমনটা উল্লেখ করা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোয়াডের কাঠামোকে সুবিন্যস্ত করার লক্ষ্যে কাজ করছে, তার অসংখ্য কর্মী গোষ্ঠীকে কঠোর নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে কয়েকটি মূল অগ্রাধিকারে সমন্বিত করছে। এই পরিবর্তনের ফলে জলবায়ু স্বাস্থ্যের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বিদ্যমান গোষ্ঠীগুলিকে পর্যায়ক্রমে বাদ দেওয়া বা সমন্বিত করা হতে পারে এবং একই সঙ্গে স্থিতিশীলতার পরিবর্তে সুরক্ষার উপর জোর দেওয়ার জন্য জ্বালানি আলোচনা পুনর্নির্মাণ করা হতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, সমুদ্রের নিচের অবকাঠামো এবং সামুদ্রিক সহযোগিতার মতো ক্ষেত্রগুলিতে এখনও সুযোগ থাকলেও স্পষ্ট ঝুঁকিও রয়েছে: একটি অতিরিক্ত সুরক্ষিত কোয়াড আঞ্চলিক অংশীদারদের দূরে সরিয়ে দিতে পারে, যারা এর বৃহত্তর সহযোগিতামূলক কর্মসূচিকে প্রশংসা করে।

অস্পষ্টতা এবং চাপ

কোয়াডের বৃহত্তর কর্মসূচিকে অন্যান্য ক্ষুদ্রপাক্ষিক জোট যেমন অউকাস, ব্লু ডট নেটওয়ার্ক, দ্য পার্টনারশিপ ফর গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট (পিজিআইআই), আইএমইইইসি এবং অন্যান্য উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে মনে করা হয়। বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন অগ্রাধিকারের মিশ্রণ নতুন সুযোগ এবং জোটের মৌলিক উদ্দেশ্য সম্পর্কে কৌশলগত অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। আইপিএমডিএ-র মতো উদ্যোগগুলি কোয়াড সদস্যদের মধ্যে সামুদ্রিক নজরদারি তথ্য ভাগাভাগি বৃদ্ধি করলেও, তারা কোয়াডের বাইরে থাকা মার্কিন নেতৃত্বাধীন উদ্যোগগুলিকেও সমর্থন করে। ভারত মহাসাগর অঞ্চল প্যাসিফিক মঞ্চের মধ্যে এই সমন্বয়গুলি প্রতিরোধ স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করলেও তারা কোয়াডের রূপকে জটিল করে তোলে, যা বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ পরিচয় বাহ্যিক ধারণার কারণে জটিল।

২০২৫ সালের নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে কোয়াডের সামনে প্রাথমিক কাজগুলির মধ্যে একটি হবে তার অসংখ্য ওভারল্যাপিং ওয়ার্কিং গ্রুপের কারণে তার উদ্যোগমূলক ক্লান্তিকাটিয়ে ওঠা, যার বাস্তব ফলাফল নিতান্তই সীমিতদ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের অফশোর ভারসাম্য রক্ষার কৌশল একটি মোড় নিয়েছে, মার্কিন অতিরিক্ত সম্প্রসারণ কমিয়ে এবং আরও বোঝা ভাগাভাগির দাবি করেছে। এই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশ্রুতি এবং কোয়াড সদস্য জাপানের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা শুল্ক আরোপ নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ আরও হেজিংয়ের দিকে পরিচালিত করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আমেরিকান পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন দ্রুত পরিবর্তনশীল ভিত্তি থাকা সত্ত্বেও ট্রাম্প প্রশাসন নীতিগত ভাবে কোয়াডকে শক্তিশালী করার ধারণার সঙ্গে আবদ্ধ বলে মনে হচ্ছে। মূল বিষয় হল, কোয়াডের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের দাবিগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ভাবে কম প্রতিশ্রুতি, সদস্য দেশগুলির মধ্যে আরও স্বনির্ভরতা এবং শক্তিশালী উপায়ে চিনকে মোকাবিলা করার দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে বৃহত্তর সারিবদ্ধতার উপর নির্ভরশীল হতে পারে।

এই লক্ষ্যগুলি অর্জনের একটি উপায় হিসেবে কোয়াড জলবায়ু, শক্তি অবকাঠামো কেন্দ্রিক অনুরূপ কর্মী গোষ্ঠীগুলিকে আরও সুসংহত বিভাগে সমন্বিত করতে চাইতে পারে, যার সংজ্ঞায়িত, লক্ষ্য-ভিত্তিক ফলাফল রয়েছে।

আসন্ন ২০২৫ সালের দিল্লি শীর্ষ সম্মেলন একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এই শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক হিসেবে ভারতের অবস্থান ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা পরিবর্তনশীল জোটের সময়ে কোয়াডকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য দৃশ্যমানতা বৃদ্ধি একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব উভয়েরই সুযোগ করে দিয়েছে। দিল্লি  ঘোষণাপত্রটি অর্জনযোগ্য লক্ষ্যগুলির সঙ্গে কৌশলগত লক্ষ্যগুলিকে একত্রিত করে জোটের ভবিষ্যৎ গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ প্রদান করে। তিনটি প্রধান অগ্রাধিকারের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এই উদ্যোগের নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ ভারতের রয়েছে: সামুদ্রিক সমন্বয় বৃদ্ধি, এআই এবং অর্ধপরিবাহীর মতো উদীয়মান প্রযুক্তিতে সহযোগিতা প্রচার জলবায়ু অভিযোজন, জনস্বাস্থ্য ডিজিটাল অবকাঠামোর মতো ক্ষেত্রে উন্নয়ন অংশীদারিত্ব জোরদার করা। এই লক্ষ্যগুলি অর্জনের একটি উপায় হিসেবে কোয়াড জলবায়ু, শক্তি অবকাঠামো কেন্দ্রিক অনুরূপ কর্মী গোষ্ঠীগুলিকে আরও সুসংহত বিভাগে সমন্বিত করতে চাইতে পারে, যার সংজ্ঞায়িত, লক্ষ্য-ভিত্তিক ফলাফল রয়েছে।

এই বছরের কোয়াড নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন নিছক প্রতীকীকরণের বাইরেও তাৎপর্যপূর্ণ এবং সদস্য দেশগুলিকে, বিশেষ করে ভারতকে, কোয়াডকে একটি সুসংহত, ফলাফল-ভিত্তিক জোট হিসাবে পুনর্সংজ্ঞায়িত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ প্রদান করে এই সব কিছুই মহান শক্তি প্রতিযোগিতা থেকে উদ্ভূত ভূ-রাজনৈতিক উদ্বেগ এবং ইন্দো-প্যাসিফিকের মধ্যে উন্নয়নমূলক উচ্চাকাঙ্ক্ষা উভয়েরই মোকাবিলা করতে পারে।

 


বিবেক মিশ্র অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ডেপুটি ডিরেক্টর।

সান্দ্রা থাচিরিকাল প্রতাপ অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের রিসার্চ ইন্টার্ন।


 

নিবন্ধে প্রকাশিত মতামত লেখক(দের) ব্যক্তিগত।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Vivek Mishra

Vivek Mishra

Vivek Mishra is Deputy Director – Strategic Studies Programme at the Observer Research Foundation. His work focuses on US foreign policy, domestic politics in the US, ...

Read More +
Sandra Thachirickal Prathap

Sandra Thachirickal Prathap

Sandra Thachirickal Prathap is a Research Intern with the Observer Research Foundation ...

Read More +