-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
পাকিস্তানের সামরিক অভিযান ক্রমশ কঠোর হয়ে উঠছে, কর্মীদের দমন করা হচ্ছে এবং রাজনৈতিক সমাধান উপেক্ষা করে বর্বর শক্তি প্রয়োগ করা হচ্ছে।
পাকিস্তানি মানবাধিকার কর্মী আই.এ. রেহমান এক বার প্রতিবেদককে বলেছিলেন: ভারত তার জঙ্গি সমস্যা সমাধানের জন্য রাজনীতি ব্যবহার করে; আর পাকিস্তান তার রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সামরিক প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে নিশ্চিত ছিল যে, রাজনৈতিক সহনশীলতার বদলে পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমানে বাংলাদেশ) রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানের একমাত্র উপায় হল বাঙালিদের আকাঙ্ক্ষাকে চূর্ণ করার জন্য গণহত্যার কৌশল ব্যবহার করা। অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় পরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কৌশলে খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। তখনকার মনোভাব ছিল এই যে, ‘২০,০০০ বাঙালিকে হত্যা করো এবং তা হলেই সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।’ আজ বেলুচ প্রতিরোধকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগের উপর মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী-সমর্থিত মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতির ভাষায়, ‘যে কোনও বিভ্রান্তিকে পিছনে ফেলে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ অভিযান শুরু করার সময় এসেছে।’ তিনি এমন আদেশ জারি করেছেন, যা বাস্তবায়িত হলে বেলুচিস্তানকে একটি পূর্ণাঙ্গ পুলিশ রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করবে।
বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি-র (বিএলএ) গেরিলাদের দ্বারা জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন অপহরণের পর বেলুচিস্তানে রাজনৈতিক কর্মীদের উপর নৃশংস দমন-পীড়ন প্রত্যাশিত ছিল। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ঘোষণা করেছেন যে, ট্রেন অপহরণের পর ‘রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে গিয়েছে।’ পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী কখনই বেলুচিস্তানের কোনও শাসনের সঙ্গেই খাপ খায়নি এবং নির্বিচারে ও সম্পূর্ণ দায়মুক্তির সঙ্গে নাগরিকদের উপর প্রযোজ্য সমস্ত আইন, বিধি ও সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করেছে এবং পাকিস্তানি গণমাধ্যম এই বিষয়টিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেছে। পাঞ্জাবি-অধ্যুষিত সামরিক বাহিনী মনে করে অস্থির প্রদেশে অস্থিতিশীলতার সমাধানের একমাত্র উপায় হল অবাধ দমন। জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক সংসদীয় কমিটির বৈঠকের পর এ কথা স্পষ্ট হয়ে ওঠে, যেটির কথা সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা ‘উল্লেখ’ করেছিলেন।
যখন সেনা জেনারেলদের মর্জিমাফিকই বেসামরিক রাজনীতিবিদরা সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিতে আগ্রহী, তখন নতুন চিন্তাভাবনার সত্যিই কোনও অবকাশ থাকে না। তাই স্বাভাবিক বিকল্প সর্বদাই হয়ে দাঁড়ায় বল প্রয়োগ করা এবং দমনমূলক কৌশলগুলিকে দ্বিগুণ করে অবাধ্য বেলুচদের পথে আনা।
প্রতিবেদন অনুসারে, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির সন্দেহভাজনদের অপহরণ/গ্রেফতারকারী গোয়েন্দা সংস্থাগুলির জন্য আইনি সুরক্ষার দাবি করেছিলেন – অ্যাকশন ইন এইড অফ সিভিল পাওয়ার-এর অধীনে নিরাপত্তা বাহিনীকে দেওয়া ক্ষমতা (সম্ভবত অভিযোগ ও আইনি আশ্রয় ছাড়াই সন্দেহভাজনকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ‘বন্দি’ করার ক্ষমতা-সহ) - এবং সামরিক আদালতগুলিকে সমস্ত সন্ত্রাসবাদী মামলায় স্বাধীনতা দেওয়ার দাবি করেছিলেন। অন্য কথায় বলতে গেলে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ইতিমধ্যেই যে অতিরিক্ত আইনি দায়মুক্তি উপভোগ করেছিল, তার জন্যই তারা আইনি সুরক্ষার দাবি করছিল। জেনারেল মুনির বিশ্বাস করেছিলেন যে, পাকিস্তানের সমস্যার সমাধান একটি ‘হার্ড স্টেট’ বা ‘সামরিক রাষ্ট্র’ হয়ে ওঠার ক্ষমতার মধ্যেই নিহিত, যাতে প্রশাসনিক শূন্যস্থানগুলিকে সেনার জীবনের বিনিময়ে পূরণ করে সমস্যাটির সমাধান সম্ভব। বাস্তব হল এই যে, বেলুচিস্তানে প্রদেশের অপশাসনের জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীই দায়ী এবং এই বিষয়টি সামরিক কর্তাদের নজর এড়িয়ে গিয়েছে। বেসামরিক নাগরিকরা মুনির ও তাঁর দলের সদস্যদের সন্তুষ্ট করার জন্য পাকিস্তানকে ‘সামরিক রাষ্ট্র’তে রূপান্তর করার উদ্দেশ্যে ‘হার্ডেন দ্য স্টেট’ কমিটি গঠন করে।
এ কথা স্পষ্ট ছিল যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী – কোনও সন্দেহ ছাড়াই যা পাকিস্তানি রাষ্ট্র নয় - তাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা, এমনকি বিচ্ছিন্ন ও অসন্তুষ্ট বেলুচদের প্রকৃত প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার নিরিখে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে গতিশীল পদক্ষেপের সমন্বয় করার কোনও প্রয়োজনীয়তাই দর্শায়নি। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জন্য প্রতিটি সমস্যাই যেন একটি পেরেক-সম এবং হাতুড়িই এর একমাত্র সমাধান। যখন সেনা জেনারেলদের মর্জিমাফিকই বেসামরিক রাজনীতিবিদরা সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিতে আগ্রহী, তখন নতুন চিন্তাভাবনার সত্যিই কোনও অবকাশ থাকে না। তাই স্বাভাবিক বিকল্প সর্বদাই হয়ে দাঁড়ায় বল প্রয়োগ করা এবং দমনমূলক কৌশলগুলিকে দ্বিগুণ করে অবাধ্য বেলুচদের পথে আনা।
তাই এ বিষয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী প্রথম যে কাজটি করেছিল তা এই বিষয়টিকে স্পষ্ট করে দেখানোর জন্য যে, পাকিস্তান এখন একটি ‘সামরিক রাষ্ট্র’ হয়ে উঠেছে। তাই প্রখ্যাত বেলুচ নাগরিক অধিকার কর্মী ডঃ মাহরাং বালুচ ও তাঁর সহযোগী বেলুচ ইয়াকজেটি কমিটির (বিওয়াইসি) সহযোগীদের গ্রেফতার করা এবং তাঁদের বিরুদ্ধে হত্যা, সন্ত্রাসবাদ ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলার বিষয়টিতে সত্যিই অবাক হওয়ার কিছু নেই। বিওয়াইসি কর্মীরা শনাক্তহীন কবরে গণ-কবর দেওয়ার প্রতিবাদ করছিলেন। এর পাশাপাশি ট্রেন অপহরণের মোকাবিলার সময়ে চালানো অভিযানে পাকিস্তান সেনাবাহিনী যে সব সন্ত্রাসবাদীদের নিহত হওয়ার দাবি করেছিল, বিওয়াইসি কর্মীরা তাঁদের মৃতদেহ হস্তান্তরের দাবি করছিলেন। বিওয়াইসি-র মতে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের অবৈধ হেফাজতে থাকা কিছু ‘নিখোঁজ মানুষ’কে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করেছে এবং ট্রেন অপহরণের জায়গা থেকে সেই মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে।
বেলুচ জনগোষ্ঠীকে ভীত করা তো দূরের কথা, মাহরাং বেলুচদের বিরুদ্ধে প্রদেশ সরকারের একটি নিষ্ঠুর কৌশল প্রদেশের সমগ্র বেলুচ অঞ্চলে ব্যাপক বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। করাচিতে বিওয়াইসি কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশি কঠোর ব্যবস্থার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর বেলুচ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আখতার মেঙ্গালের মতো সম্মানীয় বেলুচ নেতারা নারী কর্মীদের প্রতি দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে দীর্ঘ পদযাত্রার কথা ঘোষণা করেন। এমনকি তিনি পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারি এবং তাঁর ছেলে বিলাওয়াল জারদারিকে এ বলেও সতর্ক করে দেন যে, বেলুচ নারীদের প্রতি এই অপমান কখনও ভুলে যাবেন না।
ইতিমধ্যে, লাহোর ও ইসলামাবাদ-ভিত্তিক প্রভাবশালী পাঞ্জাবি গণমাধ্যম বিক্ষোভ ও দমন-পীড়নের ঘটনা সম্পূর্ণ রূপে হয় ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে অথবা এই বিক্ষোভের মাত্রা সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। বেলুচ কর্মীদের বিরুদ্ধে শত্রুতা ও ভিত্তিহীন ইঙ্গিতও প্রদর্শন করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন পত্রিকায় একটি বিভ্রান্তিকর শিরোনাম ছিল এই যে ‘বিএলএ-র প্রক্সিরা ট্রেন আক্রমণের ঘটনাকে কাজে লাগাচ্ছে’। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রক্সি বা ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসাবে পরিচিত অন্য সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলগুলি বিওয়াইসি নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে, তাঁদের আসলে বিএলএ-র রাজনৈতিক মুখ হিসাবে চিত্রিত করেছে এবং এমনকি এই কথাও প্রচার করেছে যে, এই নেতারা আখেরে ভারতীয় বেতনভুক্ত ছিল বা অন্যান্য বিদেশি শক্তির কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করেছিল। ‘ফ্রন্টিয়ার গান্ধী’ নামে পরিচিত খান আব্দুল গফফর খানের প্রপৌত্র আইমাল ওয়ালির মতো ক্রমবর্ধমান অপ্রাসঙ্গিক মূলধারার রাজনীতিবিদদের বিওয়াইসি ও পশতুন তাহাফুজ আন্দোলন-এর (পিটিএম) মতো জনগণের আন্দোলনকে অসম্মান করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে এর তেমন কোনও প্রভাব নেই। এই কৌশলগুলির কোনওটিই নতুন নয়; তবে নতুন বিষয় হল এই যে, অপবাদের প্রচারণা বেলুচিস্তানে কোনও অনুরণিত হয়নি। বরং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হয়ে সমালোচনাকারীদের অশ্লীলতা বেলুচদের আরও বিচ্ছিন্ন করে তুলেছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পরিকল্পনা হল কেবল বেলুচ বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধেই নয়, ডঃ মাহরাং বেলুচ ও বিওয়াইসির মতো রাজনৈতিক কর্মীদের বিরুদ্ধেও দমন-পীড়ন চালিয়ে আক্রমণের কৌশল ব্যবহার করা। বিওয়াইসি সর্বদা শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ করেছে, কখনও সহিংসতা প্রচার করেনি, কখনও প্রকাশ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদকে সমর্থন করেনি। পাকিস্তান যে সংবিধানের প্রায়শই অপব্যবহার করেছে ও ক্ষতি সাধন করেছেন, সেই সংবিধানের নির্ধারিত সীমার আওতায় থেকে কেবল তাদের আইনি, সাংবিধানিক এবং মানবাধিকারের দাবি জানিয়েছে। কিন্তু পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মতে, এটি একটি গর্হিত অপরাধ। স্বল্পশিক্ষিত বা উচ্চ বিদ্যালয় পাস করা জেনারেলরা পাকিস্তানের সর্বোত্তম স্বার্থের অনুকূল বলে যা মনে করেন, তা হল প্রত্যেক বেসামরিক নাগরিকের সম্পূর্ণ ও প্রশ্নাতীত আনুগত্য। সেই প্যারেড গ্রাউন্ড বা ডাইরেক্টিং স্টাফ (ডিএস) সমাধানগুলি জটিল ও বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক বিশ্বে প্রযোজ্য নয়, যেখানে প্রতিযোগিতামূলক চাহিদা নিয়েই লক্ষ লক্ষ মানুষ বসবাস করেন। এই বিষয়টি সামরিক প্রশাসনের মাথায় ঢুকছে না।
ওয়াশিংটনের নতুন সরকার এতটাই আত্মকেন্দ্রিক, লেনদেনমূলক ও মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘনের প্রতি অনাগ্রহী যে, পাকিস্তানে বেলুচ বা অন্য জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর কী ঘটছে, তা নিয়ে মাথা ঘামায় না।
আপাতত, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ডঃ মাহরাং বেলুচের মতো কর্মীদের উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০০৯ সালে তিনজন শীর্ষ বেলুচ ন্যাশনাল মুভমেন্ট (বিএনএম) নেতাকে প্রকাশ্য দিবালোকে অপহরণ করে, তাঁদের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ জঙ্গলে ফেলে দেওয়ার পর তাদের পক্ষে আর একই কাজ করা সম্ভব নয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ক্রমশ প্রকাশ্যে আসতে থাকা খবরের কারণে মাহরাং এবং আরও কয়েকজন ব্যক্তিত্ব আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন। মাহরাংয়ের গ্রেফতারের খবর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে এবং অন্যান্য অধিকারের জন্য লড়তে থাকা কর্মীরা তাঁর মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জেনারেল ও রাজনীতিবিদরা মনে করেন, এই বেলুচ কর্মীদের শায়েস্তা করা উচিত। যেহেতু তাঁদের অপহরণ বা হত্যা করা সম্ভব নয়, তাই তাদের বিরুদ্ধে সাংসদদের দ্বারা পাস করা কঠোর আইনের অধীনে মামলা করা হচ্ছে। এই সাংসদদের বেশির ভাগই সম্পূর্ণ জালিয়াতিপূর্ণ না হলেও অত্যন্ত সন্দেহজনক ও নির্বাচনী মতাদেশের ভিত্তিতে সংসদে এসেছেন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দৃষ্টিভঙ্গিতে, পাকিস্তানের অভ্যন্তরে তাদের অবাধ স্বাধীনতা রয়েছে। তাদের বিরোধিতা করার মতো কোনও আইনি সুরক্ষা নেই, কোনও কার্যকর বিচার ব্যবস্থা নেই, কোনও সাংবিধানিক বাধা নেই এবং গণমাধ্যম বা রাজনৈতিক দলগুলির তরফে কোনও প্রতিরোধ নেই। সোশ্যাল মিডিয়াতেও বিরোধী কণ্ঠস্বরকে রুদ্ধ করা হচ্ছে। হয় এক্স-এর (পূর্বে টুইটার নামে পরিচিত) মতো মঞ্চগুলিকে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে অথবা রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে সাংবাদিকদের আটক করা হচ্ছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এই যথেচ্ছ স্বাধীনতা ভোগ করে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) তার নিজস্ব সমস্যা নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু তা না হলেও ইইউ জনগণের নাগরিক অধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করার জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে চাপ দেওয়ার জন্য তেমন কিছুই করেনি। ইউরোপীয়দের কাছ থেকে কিছু সদিচ্ছার ইঙ্গিত পাওয়া গেলেও তার বেশি কিছু মেলেনি। পাকিস্তানিরা জানে যে, ইইউকে উপেক্ষা করলেও তাদের কোনও মূল্য চোকাতে হবে না।
ওয়াশিংটনের নতুন সরকার এতটাই আত্মকেন্দ্রিক, লেনদেনমূলক ও মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘনের প্রতি অনাগ্রহী যে, পাকিস্তানে বেলুচ বা অন্য জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর কী ঘটছে, তা নিয়ে মাথা ঘামায় না। রুশ, চিনা এবং আরবদের এই বিষয়ে মন্তব্য করার সম্ভাবনা কম। তবে চিনারা এমনকি পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে বেলুচদের উপর প্রচণ্ড সহিংসতা চালিয়ে যাওয়া এবং তাদের উপর দমন-পীড়ন অব্যাহত রাখার জন্য ইন্ধন জোগাতে পারে। সুতরাং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর খামখেয়ালিপনা আটকানোর উপায় এই মুহূর্তে প্রায় নেই।
একমাত্র সমস্যা হল এই যে, পাকিস্তান গত ৮০ বছর ধরে এমনটা করার চেষ্টা করে আসছে এবং এই পন্থা সফল হয়নি। সময় এসেছে, মানবাধিকার সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়া সংস্থাগুলিকে বেলুচদের সঙ্গে ঘটা অত্যাচারকে এ বার নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তারা হয়তো আবিষ্কার করতে পারে যে, বেলুচিস্তান বিশ্বের সবচেয়ে কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলির মধ্যে অন্যতম এবং কেবল তার অবস্থানের দিক থেকে নয়, বরং তার বিশাল খনিজ সম্পদের দিক থেকেও বটে, যা অবশ্যই মার্কিন প্রেসিডেন্টের আগ্রহের বিষয় হবে। বেলুচরা ধর্মীয় গোঁড়া নয়, বরং প্রগতিশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ মুসলিম। তাই এই বিষয়টি তাঁদের লড়াইকে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।
সুশান্ত সারিন অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Sushant Sareen is Senior Fellow at Observer Research Foundation. His published works include: Balochistan: Forgotten War, Forsaken People (Monograph, 2017) Corridor Calculus: China-Pakistan Economic Corridor & China’s comprador ...
Read More +