Published on Oct 04, 2025 Updated 0 Hours ago

ট্রাম্পের শুল্ক চাপ ভারত-মার্কিন সম্পর্কে টানাপড়েন এনেছে, ব্রিকস, কোয়াড এবং ভাড়া-প্রত্যাশী আমেরিকার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার সময় নয়াদিল্লির কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনকে পরীক্ষা মুখে ফেলেছে।

আমেরিকার মুনাফা লুঠের মনোভাবের সময়ে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক

ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন বিশ্ব ব্যবস্থায় নতুন অস্থিরতা সঞ্চার করেছে এবং ভারত কী ভাবে বিভিন্ন প্রকারে সংযুক্ত দেশ এবং গোষ্ঠীর ক্রমবর্ধমান জটিল ঘূর্ণির মধ্যে নিজের কৌশলগত সারিবদ্ধতা পুনর্বিন্যস্ত করে, তা পুনর্নির্মাণ করেছে। অংশীদারিত্বেরকূটনৈতিক আশ্বা অন্তর্হিত এবং তা এখন অর্থনৈতিক বলপূর্বকতা শূন্য-সমষ্টি সমীকরণের শক্তিশালী পুনরুজ্জীবন দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে। সর্বাগ্রে রয়েছে মার্কিন অর্থনৈতিক আধিপত্য, যারা কেবলমাত্র একটি বিবেচনার ভিত্তিতে অন্যান্য দেশের উপর নীতি আরোপকে হ্রাস করছে: এ ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কী হবে? তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বোধহয় কথা বুঝতে পারেনি যে, সমস্ত গ্রহীতা দেশ নিজেদের জন্য একই প্রশ্ন রাখবেট্রাম্প হয়তো সঠিক ভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, আমেরিকান শুল্ক, অর্থনৈতিক ব্যয় এবং এর রাজনৈতিক বোঝার তীব্র চাপের কারণে বেশিরভাগ দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথাই মেনে চলবে। মিত্রদের ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্মুখীন হওয়ার জন্য অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হবে; বস্তুগত প্রতিরোধমূলক উভয় দিক থেকেই মিত্রদেশের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা হ্রাস পাবে বা অদৃশ্য হয়ে যাবে। তবে এ সব কিছুর মাঝেই যে কথাটা আমেরিকা স্বীকার করতে ব্যর্থ হয়েছে যে, আমেরিকার অভিমুখে অর্থনৈতিক নির্ভরতা স্থানান্তর করতে বাধ্য করার জন্য প্রয়োগ করা কঠোর স্করচড-আর্থঅর্থনৈতিক নীতি এমন কিছু অর্থনীতির মধ্যে বিপরীত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, যারা রেন্ট-সিকিং মার্কিন অর্থনীতি (অর্থাৎ যে দেশের অর্থনীতির অন্তর্গত প্রত্যেক ব্যক্তি, প্রত্যেক সংস্থা এবং প্রত্যেক রাজনৈতিক নেতাই আসলে সমাজের জন্য নতুন কল্যাণমূলক কিছু না করেই বিদ্যমান ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে শুধুমাত্রা মুনাফা লুঠতে চায় এবং ক্ষমতাধর হয়ে উঠতে চায়) থেকে নিজেরা দূরে সরে যেতে চায়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সূচনা থেকে শুরু করে, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে আরও তীব্র হওয়া এই সময়কালটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এমন পথে চালিত করেছে, যেখানে সে কেবল নিজের স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এই জটিল পরিস্থিতি বিশ্বের সর্বত্র একটি নতুন ভারসাম্য আনতে বাধ্য করবে — এমন একটি প্রবণতা যা ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। নয়াদিল্লির জন্য, ট্রাম্পের শাস্তিমূলক শুল্ক, আক্রমণাত্মক বাগাড়ম্বর এবং লেনদেনমূলক কূটনীতি নতুন চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ দুই-ই উপস্থাপন করছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন বিশ্ব ব্যবস্থায় নতুন অস্থিরতা সঞ্চার করেছে এবং ভারত কী ভাবে বিভিন্ন প্রকারে সংযুক্ত দেশ এবং গোষ্ঠীর ক্রমবর্ধমান জটিল ঘূর্ণির মধ্যে নিজের কৌশলগত সারিবদ্ধতা পুনর্বিন্যস্ত করে, তা পুনর্নির্মাণ করেছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০২৫ সালের গস্ট থেকে ভারতীয় রফতানির উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন রাশিয়া সম্পর্কিত বাণিজ্যের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে বিশেষ শাস্তি’-র আওতায় সমস্ত ব্রিকস (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা) অর্থনীতির সঙ্গে ভারতকেও তালিকাভুক্ত করা হয়েছিলমার্কিন-ভারত বাণিজ্য আলোচনায় বিরতির পর দ্রুত গতিতে ৬ গস্ট একটি ঘোষণার মাধ্যমে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা করা হয়, যা ২০২৫ সালের ২৭ গস্ট ২০২৫ থেকে কার্যকর হয় র ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করা বেশির ভাগ ভারতীয় পণ্যের উপর মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫০ শতাংশে এটিকে মোটেই ট্রাম্পের তরফে বিচ্ছিন্ন পদক্ষেপ বলা চলে না এবং এটি ছিল বিশ্বব্যাপী ফ্রিলোডিং বন্ধ করার বৃহত্তর ট্রাম্প প্রচারণার অংশ, যা বন্ধু শত্রু উভয়কেই লক্ষ্য করে গৃহীত হয়েছেএকই সঙ্গে ওয়াশিংটন মিত্র প্রতিপক্ষ উভয়কেই বিশেষ অস্ত্র চুক্তি এবং প্রযুক্তি লব্ধতার প্রস্তাব দিয়েছে, যা চিনের সঙ্গে তার প্রযুক্তি প্রতিযোগিতাকে জটিলতর করে তুলেছে। এখন দেখার বিষয় হল, যদি অর্থনৈতিক ভাবে বেশ অনেকটাই সুবিধা পাওয়া যায়, তা হলে রাজনৈতিক ভাবে ওয়াশিংটনের সঙ্গে জোটবদ্ধ না হলেও কোনও দেশকে ট্রাম্প প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তির সুযোগ করে দেবে কি না। ভারত একটি মৃত অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছেঅন্যায্য বাণিজ্য প্রসঙ্গে ট্রাম্পের হেন তীক্ষ্ণ মন্তব্য আসলে এমন ভাবে সাজানো হয়েছিল যে, তা যেন ঘাত হানে এবং সম্ভবত নয়াদিল্লিকে রাশিয়ার সঙ্গে তার ক্রমবর্ধমান সম্পৃক্ততা কমাতে চাপ দেয়। এই পদক্ষেপগুলি গতি প্রসার ভারতীয় সাধারণ মানুষের মনে গভীর ভাবে প্রতিধ্বনিত হয়েছে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরযোগ্যতা সম্পর্কে সন্দেহ এখন দ্রুত বাস্তব বিশ্বাসে পরিণত হচ্ছে।

ভারতের তরফে রাশিয়ার তেল কেনা এবং ইউক্রেন সংঘাত থামাতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অক্ষমতার মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক একটি দ্বিমুখী মিথ্যা। ওয়াশিংটনও স্পষ্টতই একটি বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক কৌশল অনুসরণ করছে। ট্রাম্পের ক্রমাগত ব্রিকসকে একটি গোষ্ঠী হিসেবে উল্লেখ করা এবং তাদের লক্ষ্যবস্তু করা বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছেট্রাম্প ব্রিকসকে খুব, খুব কঠোর আঘাত করার হুমকি দিয়েছেন এবং পাশাপাশি এই গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত থাকা দেশগুলির উপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। ব্রিকস দেশগুলি একযোগে বিশ্ব অর্থনীতির ৪০ শতাংশেরও বেশি অবদান রাখে এই বিষয়টি অবশ্যই ওয়াশিংটনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। এর পাশাপাশি, ডলারের বিনিময় হ্রাসের বিতর্কিত প্রশ্নটিও রয়েছে, যা ট্রাম্প ডলারের উপর সরাসরি আক্রমণ হিসেবে দেখেছেন এবং ট্রাম্প বিশ্বাস করেন যে, এটি মোকাবিলা করা উচিত। তবুও বাস্তবে যা ঘটেছে তা ওয়াশিংটনের প্রত্যাশার সম্পূর্ণ বিপরীত। ওয়াশিংটনের চাপ আসলে ভেঙে দেওয়ার পরিবর্তে গ্লোবাল সাউথকে তার উপস্থিতি আরও দৃঢ়ভাবে সংহত করতে বাধ্য করেছে যদিও গ্লোবাল  সাউথ এখনও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা বজায় রেখেছে। ভারতের মতো দেশের জন্য, ব্রিকস-এর সদস্যপদ বা গ্লোবাল সাউথের সঙ্গে গভীর সম্পৃক্ততা কোনও দ্ব্যর্থহীন পছন্দের বিষয় নয়— অর্থাৎ ব্রিকস থেকে বেরিয়ে আসা বা শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নীতিগত ভাবে সমন্বিত হওয়া নয়। ওয়াশিংটন প্রায়ই যে প্রেক্ষিতটি স্বীকার করতে ব্যর্থ হয়, তা হল ভারতের অবস্থান — যদিও তা প্রায়শই অস্পষ্ট মনে হয় — আসলে খুবই স্পষ্ট। ভারত তার ব্রিকস-এর ভূমিকা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক — এই দুই পথকে স্বাধীন সহাবস্থানযোগ্য বলে মনে করে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সূচনা থেকে শুরু করে, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে আরও তীব্র হওয়া এই সময়কালটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এমন পথে চালিত করেছে, যেখানে সে কেবল নিজের স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

অন্য অনেক দেশের মতো ভারতও একটি হেজিং কৌশল অনুসরণ করেছে, পশ্চিমী এবং অ-পশ্চিমী উভয় শক্তি ব্লকের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন রক্ষা করেছে। ব্রিকস-এ ভারত নিজেকে গ্লোবাল সাউথের জন্য একটি কণ্ঠস্বর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং মুদ্রা সংস্কার, উন্নয়ন অর্থায়ন সমস্ত অসামঞ্জস্যপূর্ণ উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে নিয়ন্ত্রণকারী বিশ্বব্যাপী শাসনব্যবস্থা সমর্থন করেছে। কোয়াড-এ ভারত একটি আনুষ্ঠানিক জোটের অভিমুখে আসা যে কোন ধাক্কা প্রতিরোধ করার সময় সামুদ্রিক ক্ষেত্র সচেতনতা গোয়েন্দা সহযোগিতাকে কাজে লাগিয়েছে। এই ভারসাম্যমূলক কাজটি তুলনামূলক ভাবে স্থিতিশীল বৈশ্বিক পরিবেশে সমৃদ্ধ হয়েছে। এটি ভারতকে বেজিংয়ের কৌশলগত নকশাগুলিকে সমর্থন না করেই চিনের মদতপুষ্ট আধিপত্যশীল অর্থনৈতিক মঞ্চে অংশগ্রহণ করতে এবং বাধ্যতামূলক চুক্তির প্রতিশ্রুতিতে প্রবেশ না করেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও গভীর করতে সক্ষম করেছে। এই প্রসঙ্গভিত্তিক সারিবদ্ধকরণের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল কোনও পক্ষের কাছে তার স্বায়ত্তশাসনকে বন্ধক রাখা বিষয়টি ড়িয়ে যাওয়া।

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ভারতের অবস্থানের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষমতাকে পরীক্ষা মুখে ফেলেছে, যদিও ব্যাপক ভাবে ভারতের কমফোর্ট জোন নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। ভারতের পুনঃস্থাপনের ফলে এক শিবিরের পক্ষে যাওয়ার তীব্র দ্বিমুখী পছন্দ বাধাগ্রস্ত হয়েছিল, যা পুরো সংঘাত জুড়ে ভারতকে সহ্য করতে হয়েছেযাই হোক, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে ভারতের অসুবিধাগুলি মোকাবিলা করার ক্ষমতা আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে, যদিও কৌশলগত দক্ষতা সঙ্কুচিত হয়ে গিয়েছেতবুও ওয়াশিংটনের শুল্ক চাপের কাছে নতি স্বীকার করে ভারত বাণিজ্য আলোচনায় তার মৌলিক অর্থনৈতিক উদ্বেগগুলি পরিবর্তন করবে বলে আশা করা আসলে একটি বিশাল দাবি হতে পারে। এ ভাবে কৃষি এবং ওষুধ শিল্প ভারতের জন্য বিপদ রেখা হিসাবে রয়ে গেছে, যখন ওয়াশিংটনের দাবিগুলি অনমনীয় রয়ে গেছে। এখন উদ্বেগের বিষয় হল যে, ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক দ্বন্দ্ব প্রতিরক্ষা, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক-সহ ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মূল প্রেক্ষিতগুলিতে তার ছায়া ফেলতে পারে।

আমেরিকার সঙ্গে এই সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারত এখনও নিষ্ক্রিয় শক্তি নয়। আমেরিকান এবং ইউরোপীয় সংস্থাগুলি ভারতের বিশাল বাজার বিনিয়োগের সম্ভাবনাকে এখনও মূল্যবান মনে করে; শুল্ক বৃদ্ধির আগের পাঁচ মাসে ভারত থেকে মার্কিন আমদানি ২৭ শতাংশ বেড়েছে। পরবর্তী কালে অর্থাৎ সাম্প্রতিক মাসগুলিতে ভারতের জ্বালানি আমদানিও বেড়েছে। গত দুই দশকের একটি প্রবণতার মধ্যে - যেখানে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক কেবল আস্থা মূল্য অর্জন করেছে - ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক একগুঁয়েমি ইতিবাচক ইঙ্গিত প্রদর্শন করে না। এটি দ্রুত একটি শুল্ক কৌশলের আভাস হয়ে উঠছে, যা ব্যাপক আকার ধারণ করছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তিমূলক নীতির বিরুদ্ধে অনেক দেশই বৈচিত্র্যকরণ কৌশলে পথে হাঁটছে এবং ভারতই একমাত্র দেশ নয়। ফলে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও), ব্রিকস, অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথ-ইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান), আইবিএসএ (ইন্ডিয়া, ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকা) এবং লাতিন আমেরিকান দেশগুলির মতো প্রসঙ্গভিত্তিকক্ষুদ্র পার্শ্বীয় এবং অঞ্চলগুলির সঙ্গে সম্পর্ক বৈচিত্র্যময় এবং গভীর করে তোলা আসলে সময়ের দাবি পূরণ করতে প্রতিক্রিয়ামূলক নীতিকেই দর্শায়ক্রমবর্ধমান মার্কিন শুল্কের প্রতি সাড়া দিয়ে ভারত ব্রাজিল, চিন এবং রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধি করছে, যাতে ব্রিকস এবং জি২০-এর মাধ্যমে গ্লোবাল সাউথের সুসংহত অবস্থান প্রতিষ্ঠা করা যায় এবং এই জোট-নির্মাণকে কাজে লাগিয়ে বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান নেতৃস্থানীয় দেশগুলি ক্রম অপ্রত্যাশিত হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে অভিযোজনযোগ্যতাকে বজায়  রাখা যায়। এটি কেবল ঘাটতি নয়: ব্যাপক অনুমোদন বা ব্যাপক দর কষাকষি এড়িয়ে ভারত এমন এক মুহূর্তে নমনীয়তাকে রক্ষা করার চেষ্টা করছে, যখন বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলির বিশ্বাসযোগ্যতা প্রধান শক্তিগুলির নির্ভরযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। বর্ধিত মার্কিন শুল্ক শ্রম-নিবিড় রফতানি খাতগুলি উপর আঘাত হানবে; সম্ভাব্য প্রযুক্তি আর্থিক নিষেধাজ্ঞা বিনিয়োগ খরচ বাড়িয়ে দিতে পারে। ছাড়া অন্যান্য বাহ্যিক কারণও রয়েছে যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-চিন বাণিজ্য আলোচনার ভাগ্য এখনও অজানা এবং বৈশ্বিক সরবরাহ ও মূল্য শৃঙ্খলে চিনের অবস্থান কী ভাবে তা নির্ধারণ করে, সে কথাও অস্পষ্ট চিন যদি তার বাণিজ্য সম্পর্ককে সাধনী হিসেবে ব্যবহার করে, তা হলে বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধি যেমন থমকে যাবে, তেমন ভারতও দ্বৈত অর্থনৈতিক ধাক্কার ঝুঁকি মুখে পড়বে।

দ্বিমুখী পছন্দ জোরদার করা তো দূরের কথা, এই প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানগুলি নয়াদিল্লিকে নমনীয়তা, প্রসঙ্গভিত্তিক জোট, জাতীয় স্বার্থকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং বিশ্ব ব্যবস্থার প্রতিযোগিতামূলক দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করতে সক্ষম করবে

ভারত ও আমেরিকা উভয়ের জন্যই নিজেদের মতপার্থক্য দূর করার উদ্দেশ্যে এই বছরের শেষের দিকে পরবর্তী কোয়াড লিডার্স শীর্ষ সম্মেলন কাজ করার জন্য একটি ভাল সময়সীমা হতে পারে। ভারত যে কোয়াড লিডার্স শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫ এবং ২০২৬ সালে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করবে, তা ভারতের বৈশ্বিক সম্পৃক্ততার বিপরীত বাস্তবতা, যা কয়েক বিলিয়ন ডলারের প্রত্যাশিত ক্ষতির ভিত্তিতে এড়িয়ে যাওয়া যায় না। কোয়াড ব্রিকস-এর ভূমিকা নেতৃত্বের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ভারতের প্রয়োজনীয়তাকে একত্রিত করে। কোয়াড ভারতকে ইন্দো-প্যাসিফিক সহযোগিতা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এবং এই অঞ্চলে বিশ্বস্ত নিরাপত্তা ও প্রযুক্তি অংশীদার হিসেবে উপস্থাপনের জন্য একটি মঞ্চ প্রদান করে তবে ব্রিকসে অংশগ্রহণ চিনের সঙ্গে সম্পর্কিত সংস্থার সঙ্গে কিছু দ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও ব্লকের গতিপথ গঠন, উন্নয়ন অর্থায়ন ডিজিটাল শাসনব্যবস্থায় সংস্কার আনা এবং গ্লোবাল সাউথের জন্য ভারতের কণ্ঠস্বরকে আরও জোরদার করার সুযোগ করে দেয়। দ্বিমুখী পছন্দ জোরদার করা তো দূরের কথা, এই প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানগুলি নয়াদিল্লিকে নমনীয়তা, প্রসঙ্গভিত্তিক জোট, জাতীয় স্বার্থকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং বিশ্ব ব্যবস্থার প্রতিযোগিতামূলক দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করতে  সক্ষম করবে

ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ ভারতের বহুমুখী দৃষ্টিভঙ্গিকে চাপে ফেলতে পারে তবে এটি একটি স্পষ্ট বাস্তবতাকেও তুলে ধরেছে: কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন ভারতের নিজস্ব পছন্দের মতো অংশীদারদের স্বার্থের পরিবর্তনের উপরও নির্ভর করে।

 


বিবেক মিশ্র অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ডেপুটি ডিরেক্টর।

সান্দ্রা থাচিরিকাল প্রতাপ অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের রিসার্চ ইন্টার্ন।


নিবন্ধে প্রকাশিত মতামত লেখক(দের) ব্যক্তিগত।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Vivek Mishra

Vivek Mishra

Vivek Mishra is Deputy Director – Strategic Studies Programme at the Observer Research Foundation. His work focuses on US foreign policy, domestic politics in the US, ...

Read More +
Sandra Thachirickal Prathap

Sandra Thachirickal Prathap

Sandra Thachirickal Prathap is a Research Intern with the Observer Research Foundation ...

Read More +