Author : Abhishek Sharma

Published on Feb 26, 2025 Updated 0 Hours ago

এই পদক্ষেপগুলির নেপথ্যে ভারতের কৌশলগত দুর্বলতা হ্রাস করার প্রচেষ্টা থাকলেও বেশ কিছু সমস্যা সমাধান করা প্রয়োজন।

খনিজ কূটনীতিতে ভারতের দৃঢ় প্রচেষ্টা

যেহেতু ভারত তার উৎপাদন প্রযুক্তিগত ক্ষমতার প্রসা ঘটাতে চায়, এই উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য ক্রিটিক্যাল বা গুরুত্বপূর্ণ খনিজগুলি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে। ভারত প্রধান গুরুত্বপূর্ণ খনিজ আমদানিকারক হওয়ার দরুন এখনও তার খনিজ সুরক্ষার জন্য বিশেষ করে চিনের মতো অন্যান্য দেশের উপর নির্ভর করে এবং এটি কৌশলগত উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং একটি প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সমাবেশে ভারতের উদ্বেগের কথা প্রকাশ করে চিনা প্রচেষ্টার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যে খনিজ পদার্থ সংগ্রহের দীর্ঘ ইতিহাস থাকলেও কৌশলগত কারণে বেশ কিছু দেশ দ্বারা সেই প্রক্রিয়ার অস্ত্রায়ণ একটি অপেক্ষাকৃত নতুন ঘটনা।’ ভারতের খনিজ নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য – যার লক্ষ্য হল তার কৌশলগত দুর্বলতা হ্রাস করা - নয়াদিল্লি খনিজ কূটনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার প্রচেষ্টা শুরু করেছে।

যৌথ উদ্যোগের সূচনা

এই প্রচেষ্টা দুই ভিত্তিস্তম্ভ হল খনিজ উৎপাদনকারী দেশগুলির সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততার বিকাশ এবং আন্তঃসরকারি সংস্থাগুলির সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা। প্রথম স্তম্ভ অনুযায়ী লিথিয়াম কোবাল্ট সরবরাহ সুরক্ষিত করতে অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং কাজাখস্তানের মতো সম্পদ সমৃদ্ধ দেশগুলির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তোলার উপর মনোযোগ দেওয়া জরুরি। এই দৃষ্টিভঙ্গি সফল করে তোলার জন্য ২০১৯-এর পরে ভারত খনিজ বিদেশ ইন্ডিয়া লিমিটেড (কাবিল) প্রতিষ্ঠা করেছে। এটি এমন একটি যৌথ উদ্যোগমূলক সংস্থা যার উদ্দেশ্য হল ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত খনিজগুলির ধারাবাহিক সরবরাহ সুনিশ্চিত করা।’ এর নেপথ্যে প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সরকার সরকার, সরকার ব্যবসা এবং ব্যবসা ব্যবসা শৃঙ্খলের মাধ্যমে চুক্তি অধিগ্রহণের সাহায্যে খনিজ সুরক্ষা অর্জন করা।

প্রথম স্তম্ভ অনুযায়ী লিথিয়াম কোবাল্টের সরবরাহ সুরক্ষিত করতে অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং কাজাখস্তানের মতো সম্পদ সমৃদ্ধ দেশগুলির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তোলার উপর মনোযোগ দেওয়া জরুরি।

২০২২ সালের মার্চ মাসে কাবিল অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ বিনিয়োগ অংশীদারিত্বের জন্য একটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর করেছে, যেখানে দুটি লিথিয়াম এবং তিনটি কোবাল্ট প্রকল্পকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আর্জেন্টিনা, চিলি ও  বলিভিয়া দ্বারা গঠিত লাতিন আমেরিকার লিথিয়াম ট্রায়াঙ্গেলভারতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে ভারত আর্জেন্টিনার একটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থার সঙ্গে পাঁচটি লিথিয়াম ব্রাইন ব্লকের জন্য ২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের লিথিয়াম অনুসন্ধান চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। কাবিল বলিভিয়া চিলি থেকে সম্পদ কেনার সুবিধার মাধ্যমে খনিজ সরবরাহ সুরক্ষিত করতে সক্রিয় ভাবে কাজ করছে। সরকারের পাশাপাশি ভারতের বেসরকারি খাতও লাভবান হয়েছে। অল্টমিন প্রাইভেট লিমিটেড লিথিয়াম ব্যাটারির কাঁচামাল সরবরাহের শৃঙ্খল সুরক্ষিত করতে বলিভিয়ার জাতীয় সংস্থা ওয়াইএলবি-সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

মধ্য এশিয়াও ভারতের নজর কেড়েছে। সম্প্রতি ভারত কাজাখস্তান ভারতে টাইটানিয়াম স্ল্যাগ উৎপাদনের জন্য একটি যৌথ উদ্যোগ আইআরইইউকে টাইটানিয়াম লিমিটেড গঠন করেছে। এটি মধ্য এশীয় প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে ভারতের প্রথম যৌথ উদ্যোগগুলির অন্যতম। এই প্রয়াসটি এই অঞ্চলের সমৃদ্ধ সম্পদের সুবিধার জন্য ভারত-মধ্য এশিয়া রেয়ার আর্থ ফোরাম প্রতিষ্ঠার জন্য নয়াদিল্লির প্রস্তাবের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

সমবায় নিযুক্তি

খনিজ কূটনীতির দ্বিতীয় স্তম্ভ হল খনিজ সরবরাহ শৃঙ্খলের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততা, যা কোয়াড (অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র), ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক ফর প্রসপারিটি (আইপিএফ), মিনারেল সিকিউরিটি পার্টনারশিপ (এমএসপি) এবং জি৭-এর মতো খনিজ পদার্থের নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত ক্ষুদ্র ও বহুপাক্ষিক উদ্যোগের সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলছে সশক্ত করেছে। এই সমবায়মূলক সম্পৃক্ততার লক্ষ্য হল ভারতকে তার তিনটি বিভাগে অর্থাৎ আপস্ট্রিম, মিডস্ট্রিম এবং ডাউনস্ট্রিম জুড়ে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী সর্বোত্তম অনুশীলনের সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ করে তোলা।

সর্বোপরি, এই সব কিছুই জ্ঞান ভাগ করে নেওয়া ও দক্ষতা বৃদ্ধির সুবিধা দেয়, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), দক্ষিণ কোরিয়া অস্ট্রেলিয়ার মতো আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

পশ্চিমী অংশীদারদের সঙ্গে মিলে এই সহযোগিতাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে ভারতের খনন মন্ত্রক আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থার সঙ্গে একটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর করেছে, যাতে গুরুত্বপূর্ণ খনিজগুলির বিষয়ে সহযোগিতা জোরদার করা যায়, যা ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী গুণমান ও সর্বোত্তম অনুশীলনের সঙ্গে সাযুজ্য বজায় রেখে তার নীতি, প্রবিধান বিনিয়োগ কৌশলগুলিকে অভিমুখ দিতে সাহায্য করে।

ব্যবধানের ফাঁক পূরণ করতে

খনিজ কূটনীতিতে ভারতের প্রচেষ্টা অনেক ইতিবাচক ফলাফলের দিকে চালিত করলেও এখনও তার আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পৃক্ততার জন্য তিনটি প্রয়োজনীয় উপাদানের অভাব রয়েছে। সেগুলি হল: বেসরকারি ক্ষেত্রের অংশগ্রহণের অভাব; দুর্বল কূটনৈতিক ক্ষমতা, এবং অপ্রতুল স্থিতিশীল অংশীদারিত্ব। এ ছাড়াও ভারতের বেসরকারি খাত মূলত এই গোটা সমীকরণেই অনুপস্থিত থেকেছে

একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ শৃঙ্খল কৌশলের অনুপস্থিতি বেসরকারি খাতের জন্য একটি পথনির্দেশিকা নীতিগত স্পষ্টতার অভাবের নেপথ্যে থাকা দুটি প্রাথমিক পরিবর্তনশীল, যা তাদের অনুপস্থিতির দিকে চালিত করে।

একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ শৃঙ্খল কৌশলের অনুপস্থিতি বেসরকারি খাতের জন্য একটি পথনির্দেশিকা নীতিগত স্পষ্টতার অভাবের নেপথ্যে থাকা দুটি প্রাথমিক পরিবর্তনশীল, যা তাদের অনুপস্থিতির দিকে চালিত করে। এগুলি মোকাবিলা করার জন্য সরবরাহ শৃঙ্খল জুড়ে বেসরকারি খাতের ভূমিকা বিবেচনা করে ভারতকে ঝুঁকিমুক্ত করার জন্য একটি সর্বাত্মক পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। এ হেন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে ভারতের বৃদ্ধির সম্ভাবনা জাতীয় নিরাপত্তা অগ্রাধিকারের উপর ভিত্তি করে একটি সরবরাহ শৃঙ্খলমূলক কৌশলের নির্মাণ

দ্বিতীয়ত, ভারতকে অবশ্যই তার খনিজ কূটনীতির সম্পৃক্ততা জোরদার করতে হবে। বিদেশ মন্ত্রকের মধ্যে নতুন উদীয়মান কৌশলগত প্রযুক্তি (এনইএসটি) বিভাগের অনুরূপ একটি নিবেদিত খনিজ কূটনীতি বিভাগ থাকা এবং নির্বাচিত কূটনৈতিক মিশনে খনিজ কূটনীতির জন্য একটি বিশেষ স্থান বজায় রাখা এ ক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে।

তৃতীয়ত, খনিজ নিরাপত্তার প্রতি ভারতের লক্ষ্যের জন্য প্রয়োজন দ্বিপাক্ষিক অংশীদার বহুপাক্ষিক মঞ্চের সঙ্গে নয়াদিল্লির তরফে কৌশলগত, স্থিতিশীল বিশ্বস্ত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা। ইইউ, দক্ষিণ কোরিয়া অন্য কোয়াড সদস্যদের সঙ্গে কর্মরত ভারতের সকল অংশীদারই তাদের অভ্যন্তরীণ দক্ষতা, কূটনৈতিক শৃঙ্খল প্রযুক্তিগত জ্ঞানের কারণে ভারতের খনিজ সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যদি এই সমস্যাগুলি সমাধান করা যায় তা হলে খনিজ কূটনীতিতে ভারতের প্রচেষ্টা শক্তিশালী হবে এবং নয়াদিল্লির অভ্যন্তরীণ গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উদ্যোগগুলির জন্য আরও ভাল পরিপূরক হয়ে উঠবে, যেগুলির গতি বর্তমানে অত্যন্ত ধীর

 


এই প্রতিবেদনটি সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয় দ্য হিন্দু-তে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Author

Abhishek Sharma

Abhishek Sharma

Abhishek Sharma is a Research Assistant with ORF’s Strategic Studies Programme. His research focuses on the Indo-Pacific regional security and geopolitical developments with a special ...

Read More +