প্রধানমন্ত্রী নরসিমহা রাও-এর অধীনে ১৯৯০-এর দশকে অর্থনৈতিক উদারীকরণ, এবং লুক ইস্ট ও পরবর্তীতে অ্যাক্ট ইস্ট নীতি গ্রহণের ফলে ভারতের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংযোগ বর্ধিত হয়, এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্যও বৃদ্ধি পায়। অধিকন্তু, আসিয়ান-এর সঙ্গে ভারতের সম্পৃক্ততা, বিশেষ করে আসিয়ান-ইন্ডিয়া ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এআইএফটিএ) এবং আসিয়ান-ইন্ডিয়া ট্রেড ইন গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস এগ্রিমেন্টস (এআইটিআইজিএ), শুল্ক কমিয়ে এবং দুই দেশের মধ্যে বাজারে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি করে বাণিজ্যকে আরও সম্প্রসারিত করেছে।
ইন্দোনেশিয়া একটি উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য অংশীদার হিসাবে ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে, এবং ২০২২ সালের মধ্যে এটি সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে গিয়ে সামগ্রিকভাবে ভারতের ষষ্ঠ বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার হয়ে ওঠে।
যদিও ইন্দোনেশিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার ছিল, এটি ২০০০ সাল পর্যন্ত ভারতের মোট বাণিজ্যের অংশের পরিপ্রেক্ষিতে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলির থেকে পিছিয়ে ছিল৷ যাই হোক, ২০০৩ সাল নাগাদ, এটি মালয়েশিয়াকে ছাড়িয়ে গিয়ে ৩.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছিল৷ ভারত আসিয়ান-এর সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা গভীর করার পর ইন্দোনেশিয়া ২০১০ সালের মধ্যে ভারতের শীর্ষ ১০ বাণিজ্য অংশীদারের মধ্যে একটি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল৷ এআইএফটিএ বাস্তবায়িত হওয়ার পরে এই বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে প্রতিফলিত হয়েছিল, এবং মোট বাণিজ্য বেড়ে ১৫.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছিল, বিশেষত পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম, কয়লা ব্রিকেট, ও পাম তেলের মতো ক্ষেত্রগুলিতে। ইন্দোনেশিয়া একটি উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য অংশীদার হিসাবে ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে, এবং ২০২২ সালের মধ্যে এটি সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে গিয়ে সামগ্রিকভাবে ভারতের ষষ্ঠ বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার হয়ে ওঠে। তা সত্ত্বেও, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জগুলি থেকে গিয়েছে।
ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য নিদর্শন
ভারত এবং ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য গতিশীলতা বিশ্লেষণ করার জন্য, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে—বর্তমানে আসিয়ান-এ ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার— সিঙ্গাপুরের এবং বিগত পাঁচ বছরে (২০১৯-২০২৪) বাকি বিশ্বের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যের তুলনা করা সহায়ক হবে, যেমনটা চিত্র ১ এবং ২ এ দেখানো হয়েছে।
চিত্র ১: ভারতের মোট আমদানি
সূত্র: লেখকের তৈরি
চিত্র ১-এ নির্দেশিত হিসাবে, ভারত ২০১৯ থেকে ২০২১-এর মধ্যে বৈশ্বিক আমদানিতে উল্লেখযোগ্য হ্রাস দেখেছে, যা ইন্দোনেশিয়া ও সিঙ্গাপুর থেকে আমদানিকে প্রভাবিত করেছে। কোভিড-১৯ অতিমারি সরবরাহ শৃঙ্খলে উল্লেখযোগ্য ব্যাঘাত ঘটায় এবং উভয় দেশেই আমদানি ও রপ্তানি বিরাটভাবে কমে যায়। বিশ্বব্যাপী তেলের দাম ও চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে পেট্রোলিয়াম পণ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলির রপ্তানি মূল্য নাটকীয়ভাবে হ্রাস পায়।
কোভিড-১৯ অতিমারি সরবরাহ শৃঙ্খলে উল্লেখযোগ্য ব্যাঘাত ঘটায় এবং উভয় দেশেই আমদানি ও রপ্তানি বিরাটভাবে কমে যায়।
যাই হোক, ইন্দোনেশিয়া ও সিঙ্গাপুর উভয়ের থেকে আমদানিসহ ২০২০ থেকে ২০২২-এর মধ্যে ভারতের মোট আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত, ভারতের বৈশ্বিক আমদানি ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং ইন্দোনেশিয়া এই বৃদ্ধিতে ৬৩ শতাংশ ও সিঙ্গাপুর ২৪ শতাংশ অবদান রেখেছে। এই সময়ের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার হয়ে উঠেছে। ইন্দোনেশিয়া থেকে এই আমদানি বৃদ্ধি ভারতের আমদানি নীতির পরিবর্তনের কারণে ঘটেছিল, যেখানে অপরিশোধিত পাম তেল, অপরিশোধিত সয়াবিন তেল ও অপরিশোধিত সূর্যমুখী তেলের মতো অপরিশোধিত তেলের উপর মৌলিক আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণভাবে তুলে নেওয়া হয়েছিল। পরিশোধিত তেলের ক্ষেত্রে পরিশোধিত সয়াবিন ও সূর্যমুখী তেলের উপর মৌলিক কর ৩২.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৭.৫ শতাংশে এবং পরিশোধিত পাম তেলের উপর কর ১৭.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১২.৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে উত্থানের আরেকটি সম্ভাব্য কারণ ছিল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী ভোজ্য তেল সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা, যা উদ্ভিজ্জ তেলের বিকল্প উৎস হিসাবে ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশের উপর ভারতের নির্ভরতা বাড়িয়েছে। যাই হোক, ২০২২ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত, চিত্র ১-এ যেমন দেখানো হয়েছে, ভারতের বৈশ্বিক আমদানি ৫ শতাংশ কমেছে, এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি ১৯ শতাংশ কমেছে। বাণিজ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুসারে এই সময়ের মধ্যে খনিজ পণ্যের ৩২ শতাংশ হ্রাস এবং পশু ও উদ্ভিজ্জ উপজাতগুলির ২০ শতাংশ হ্রাসের ফলে এই পতন ঘটেছিল, এই সময়ের মধ্যে যে দুটি ছিল শীর্ষ আমদানিকৃত পণ্য। এই পতনের একটি কারণ ২০২২ সালে ইন্দোনেশিয়ার অস্থায়ীভাবে পাম তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা, যার লক্ষ্য ছিল অভ্যন্তরীণ সরবরাহ স্থিতিশীল করা এবং স্থানীয় দাম নিয়ন্ত্রণ করা। এই ঘটনাটি ভারতীয় আমদানিকারকদের সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত করেছে।
তৈল পাম উৎপাদন এলাকা বৃদ্ধি এবং ২০২৫-২৬ সাল নাগাদ অপরিশোধিত পাম তেলের উৎপাদন ১১ লাখ টনে উন্নীত করার লক্ষ্যে ভারত সরকার ২০২১ সালের আগস্ট মাসে ন্যাশনাল মিশন ফর এডিবল অয়েল - অয়েল পাম (এনএমইও-ওপি) চালু করেছে, যার লক্ষ্য ভোজ্যতেল উৎপাদনে স্বনির্ভরতা বৃদ্ধি করা। এটি ইন্দোনেশিয়া থেকে ভারতের আমদানির আকস্মিক হ্রাসকেও ব্যাখ্যা করে।
চিত্র ২: ভারতের মোট রপ্তানি
সূত্র: লেখকের তৈরি
বিপরীতভাবে রপ্তানির দিক থেকে, ২০১৯ থেকে ২০২১-এর মধ্যে ভারতের বৈশ্বিক রপ্তানি ৭ শতাংশ কমেছে, এবং ইন্দোনেশিয়ায় রপ্তানি একই সময়ে ২২ শতাংশ বেড়েছে, যা বিশ্বব্যাপী মন্দা সত্ত্বেও শক্তিশালী বাণিজ্য সম্পর্ক প্রতিফলিত করে। ২০২০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ভারতের বৈশ্বিক রপ্তানি উল্লেখযোগ্য ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে ইন্দোনেশিয়ায় রপ্তানি ৬৯ শতাংশ বেড়েছে, যা বৃদ্ধির হার অনুযায়ী সিঙ্গাপুরের থেকে বেশি। খনিজ জ্বালানি ও খনিজ তেল, যেমন অশোধিত ও পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম, শীর্ষস্থানীয় রপ্তানি পণ্যে পরিণত হয়েছে, যা ছিল ২০২১-২০২২ সালে মোট রপ্তানির ২৮ শতাংশ, এবং ২০২২-২০২৩ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৩৯ শতাংশে হয়েছে। ২০২২ সালে পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম ইন্দোনেশিয়াতে সবচেয়ে বেশি আমদানিকৃত পণ্য ছিল।
২০২২ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত, ইন্দোনেশিয়ায় ভারতের রপ্তানি ৪০ শতাংশ কমেছে, যা বাণিজ্য সম্পর্কের মন্দাকে প্রতিফলিত করে। এই পতন খনিজ পণ্য রপ্তানিতে ৭৩ শতাংশের তীব্র হ্রাস এবং যানবাহন (রেলওয়ে এবং ট্রামওয়ে বাদে) রপ্তানিতে ১৯ শতাংশ হ্রাসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, যা এই সময়ে ভারতের শীর্ষ দুটি রপ্তানি বিভাগ ছিল।
২০২০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ভারতের বৈশ্বিক রপ্তানি উল্লেখযোগ্য ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে ইন্দোনেশিয়ায় রপ্তানি ৬৯ শতাংশ বেড়েছে, যা বৃদ্ধির হার অনুযায়ী সিঙ্গাপুরের থেকে বেশি।
এই পতনের একটি কারণ ছিল ২০২২ সালে ভারত কর্তৃক ভাঙ্গা চালের বাণিজ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা, তারপর ২০২২ সালে গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করা, এবং ২০২৩ সালে অ-বাসমতি চাল রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা। পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্যও চালু করা হয়েছে। উপরন্তু, ২০২৪ সালে প্রধান সবজির উপর ৪০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক কার্যকর করা হয়েছিল, এবং পেঁয়াজের জাহাজে চালান ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে নিষিদ্ধ ছিল। ২০২৪ সালের জুন মাসে ইন্দোনেশিয়ায় ভারতের বছরের-তুলনায়-বছরের তুলনামূলক রপ্তানিও হ্রাস পেয়েছিল, প্রাথমিকভাবে চিনির পণ্য রপ্তানি হ্রাসের ফলে। ভারত ২০২৩-২৪ মরসুমে অভ্যন্তরীণ ব্যবহার ও ইথানল উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত চিনির সরবরাহ নিশ্চিত করতে পণ্যটি রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছিল।
এইভাবে, ২০২০-২০২৩ থেকে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে একটি স্থির ও ইতিবাচক বাণিজ্য সম্পর্ক লক্ষ্য করা যেতে পারে, যে সম্পর্ক ২০২১-২০২৩-এর মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। যাই হোক, ২০২২-২০২৪ সাল থেকে একটি নিম্নগামী প্রবণতাও অনুসরণ করেছে, যা বিশ্বের সঙ্গে ভারতের সামগ্রিক বাণিজ্যের পতনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বাণিজ্য সম্পর্কে দুটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যথা ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার অভ্যন্তরীণ নীতির হস্তক্ষেপ যা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত করে, এবং বাণিজ্য কয়েকটি ক্ষেত্রে কেন্দ্রীভূত হওয়া যা বৃহত্তর প্রভাবের দিকে চালিত করে।
চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ
সারণি ২ যেমনটি ব্যাখ্যা করে, বিশ্বের সঙ্গে ভারতের সিএজিআর আমদানি, রপ্তানি ও মোট বাণিজ্যে ৭ শতাংশের ভারসাম্যপূর্ণ এবং ধারাবাহিক বৃদ্ধি দেখায়। এদিকে, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য গড়ের চেয়ে দ্রুত বেড়েছে। সিঙ্গাপুরের বিপরীতে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি (৯ শতাংশ) কিন্তু ইন্দোনেশিয়ায় (৮ শতাংশ) রপ্তানির চেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে ৯ শতাংশ মোট বাণিজ্য সিএজিআর একটি গভীর ও শক্তিশালী বাণিজ্য সম্পর্ক প্রতিফলিত করে। যদিও উচ্চ আমদানির দিকে ঝোঁক বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার ইঙ্গিত দেয়, উভয় দিকের সামগ্রিক শক্তিশালী বৃদ্ধি দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক পারস্পরিক নির্ভরতাকে তুলে ধরে। যেহেতু ভারত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দিকে মনোযোগ দিতে চলেছে, বাণিজ্য অংশীদার হিসাবে ইন্দোনেশিয়ার গুরুত্ব সম্ভবত বাড়তে থাকবে।
সারণি ২: ২০১৯-২০২৩ সাল থেকে বিশ্বের সঙ্গে ভারতের আমদানি, রপ্তানি এবং মোট বাণিজ্যের চক্রবৃদ্ধি বার্ষিক বৃদ্ধির হার (সিএজিআর)।
দেশ
|
আমদানি
|
রপ্তানি
|
মোট
|
বিশ্ব
|
৭ %
|
৭ %
|
৭ %
|
ইন্দোনেশিয়া
|
৯%
|
৮%
|
৯%
|
সিঙ্গাপুর
|
৮%
|
১০%
|
৯%
|
সূত্র: লেখকের তৈরি
সম্ভাব্য ভূ-রাজনৈতিক বিঘ্ন, বিশ্বব্যাপী মন্দা এবং বিশ্বব্যাপী চাহিদার পরিবর্তনের মধ্যে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক দৃঢ় রয়েছে, যদিও তার মধ্যে সমস্যা নেই এমন নয়। ২০২২-২০২৪ সালে বাণিজ্যে ২৪ শতাংশের ব্যাপক পতন লক্ষ্য করা গিয়েছে। উপরন্তু, ইন্দোনেশিয়া থেকে ভারতের আমদানি ধারাবাহিকভাবে ইন্দোনেশিয়ায় রপ্তানির চেয়ে বেশি হয়েছে, যা ইন্দোনেশিয়াকে তার অনুকূলে বাণিজ্য ভারসাম্য নিয়ে গর্ব করতে দেয়। ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি ২০১৯ সাল থেকে ক্রমাগত খারাপ হয়েছে, এবং ১০,৯৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭,৪২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
কিছু বাধা, যেমন অ-শুল্ক বাধা, ইন্দোনেশিয়ার শুল্ক লাইনের ৭০ শতাংশ এবং ভারতের ৪৫ শতাংশ প্রভাবিত করে৷ এছাড়াও, এফটিএ ব্যবহার কম রয়ে গিয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বর্জনের তালিকা রয়েছে—ভারতের জন্য ১১ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ার জন্য ৪ শতাংশ৷
টাটা পাওয়ার ও রিলায়েন্সের মতো প্রধান ভারতীয় কোম্পানিগুলি পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি থেকে ম্যানুফ্যাকচারিং পর্যন্ত বিস্তৃত বিভিন্ন প্রকল্পে সক্রিয়ভাবে জড়িত।
এই চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, আশাবাদের কারণ আছে। ভারত ইন্দোনেশিয়াতে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ করেছে, যার পরিমাণ প্রায় ৫৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, প্রাথমিকভাবে পরিকাঠামো, শক্তি, বস্ত্রবয়ন, অটোমোটিভ ও আইটি ক্ষেত্রে। টাটা পাওয়ার ও রিলায়েন্সের মতো প্রধান ভারতীয় কোম্পানিগুলি পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি থেকে ম্যানুফ্যাকচারিং পর্যন্ত বিস্তৃত বিভিন্ন প্রকল্পে সক্রিয়ভাবে জড়িত। যদিও ভারতে ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগ ৬৪৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পরিমিত থেকেছে, ইন্দোনেশিয়া বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগগুলিকে বৈচিত্র্যময় করার লক্ষ্যে আরও ভারতীয় বিনিয়োগকে উৎসাহিত করছে, বিশেষ করে নতুন মূলধন এবং অটোমোবাইল ও ফার্মাসিউটিক্যালসের মতো গুরুত্বপূর্ণ শিল্পে। ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। উভয় দেশই ডিজিটাল রূপান্তরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে—ভারত ডিজিটাল রাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো নির্মাণ, পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি উন্নত করা, এবং উদ্ভাবনে বিশাল সাফল্য অর্জন করেছে। একই সময়ে, ইন্দোনেশিয়া এমএসএমই-র ডিজিটালাইজেশন এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে।
প্রযুক্তি, ফার্মাসিউটিক্যালস ও ম্যানুফ্যাকচারিং-এর মতো ক্ষেত্র ব্যবহার করে ইন্দোনেশিয়া ঐতিহ্যবাহী পণ্যের বাইরে তার রপ্তানি পোর্টফোলিওকে বৈচিত্র্যময় করার বিষয়ে সিঙ্গাপুর থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারে। এই পরিবর্তন পাম তেল ও কয়লার মতো পণ্যের উপর নির্ভরতা কমিয়ে দেবে। লজিস্টিক উন্নত করার জন্য পরিকাঠামোতে বিনিয়োগ করে, ডিজিটাল বাণিজ্য প্রক্রিয়াগুলিকে জটিলতাহীন করে, এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তিগুলিকে আনুষ্ঠানিক করে ইন্দোনেশিয়া মসৃণ বাণিজ্য প্রবাহ সহজতর করতে পারে এবং মূল অংশীদারদের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে পারে। এই কৌশলগুলি গ্রহণ করলে ইন্দোনেশিয়া আসিয়ান-এর মধ্যে আরও প্রতিযোগিতামূলক খেলোয়াড় হতে পারে এবং ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যকে শক্তিশালী করতে পারে। যেহেতু উভয় দেশই উচ্চাভিলাষী অর্থনৈতিক লক্ষ্যগুলি অনুসরণ করছে—ভারতের ২০২৭ সালের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্য এবং ইন্দোনেশিয়ার ২০৪৫ সালের মধ্যে পঞ্চম স্থানে পৌঁছনোর লক্ষ্য—তাদের বাণিজ্য সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে, এবং সম্ভাব্যভাবে অদূর ভবিষ্যতে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছতে পারে৷
ঈশান্যা শর্মা একজন রিসার্চ ইন্টার্ন এবং অভিষেক শর্মা অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একজন গবেষণা সহকারী
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.