-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
তরুণ ভারতীয়রা এখন জাতীয় নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেয়, চিনকে সামরিক হুমকি হিসেবে দেখে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ককে সমর্থন করে।
এই বছরের শুরুতে হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের প্রত্যাবর্তন আরও অনিশ্চিত ও অস্থিতিশীল বিশ্বব্যবস্থার সূচনা করে। এর পাশাপাশি ইউরোপে যুদ্ধ, পশ্চিম এশিয়ার সঙ্কট, দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসবাদের ক্রমবর্ধমান দাপট এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাবে চিনের ক্রমবর্ধমান দৃঢ়তার মতো কিছু অবিরাম চ্যালেঞ্জ আন্তর্জাতিক বিষয়ের অবস্থা সম্পর্কে আরও উদ্বেগ জাগিয়ে তোলে। বিশ্বে ভারতের ভূমিকা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ব ব্যবস্থা গঠনের জন্য ভারতীয়দের আকাঙ্ক্ষাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চতুর্থতম বর্ষে অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ‘ফরেন পলিসি সার্ভে ২০২৪: ইয়ং ইন্ডিয়া অ্যান্ড দ্য চায়না চ্যালেঞ্জ’ বিদেশনীতি ও দেশের তরুণদের দ্বারা নীতিগত সিদ্ধান্ত ও চ্যালেঞ্জগুলি কী ভাবে দেখা হয়, তার মধ্যে ব্যবধান পূরণ করার চেষ্টা করে। এই বার্ষিক উদ্যোগটিতে তরুণ ভারতীয়দের (১৮-৩৫ বছর বয়সি) উপর পরিচালিত সমীক্ষায় ২০২৪ সালের ২২ জুলাই থেকে ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভারতের ১৯টি শহরের ১১টি ভাষায় ৫,০৫০ জন উত্তরদাতার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। সমীক্ষার ফলাফলগুলি এই সময়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ এবং এর পরে বড় ধরনের ঘটনা, বিশেষ করে বিশ্ব ব্যবস্থার উপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রভাব, এপ্রিল মাসে পহেলগাম সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের অবনতি এবং পরবর্তী অপারেশন সিঁদুরের কথা তুলে ধরেনি। তবে সমীক্ষাটি প্রধান বৈদেশিক নীতিগত উদ্বেগগুলির প্রতি ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে জনমতের উপর আলোকপাত করে।
সমীক্ষার ফলাফলগুলি এই সময়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ এবং এর পরে বড় ধরনের ঘটনা, বিশেষ করে বিশ্ব ব্যবস্থার উপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রভাব, এপ্রিল মাসে পহেলগাম সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের অবনতি এবং পরবর্তী অপারেশন সিঁদুরের কথা তুলে ধরেনি।
গত চার বছরে ভারতের বিদেশনীতির প্রতি সামগ্রিক সমর্থন ধারাবাহিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, ৮৮% উত্তরদাতা এই বছর ইতিবাচক ধারণা দেখিয়েছেন। এই বছরের সমীক্ষার মূল বিষয় ছিল ভারতের তরুণদের মধ্যে চিন সম্পর্কে ধারণা পরিমাপ করা। ৮৯% শতাংশের বেশি চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতকে ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন, তার পরেই রয়েছে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ (৮৬%) এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাত (৮৫%)। চিন ও ভারত সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করলেও আস্থার ঘাটতি বড় অগ্রগতির সম্ভাবনাকে বাধাগ্রস্ত করে। গত বছরের সমীক্ষার পর থেকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশকারী উত্তরদাতার সংখ্যাও বেড়েছে। গলওয়ান সংঘর্ষের পাঁচ বছর পরও চিনের উত্থান নিয়ে এখনও উদ্বেগ রয়েছে, অনেক তরুণ এটিকে সামরিক হুমকি হিসেবে দেখছেন এবং তিব্বতের দখলকে সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হিসেবে দেখছেন (৮১%)। আশপাশের অঞ্চলে চিনের উপস্থিতি উদ্বেগের সঙ্গে দেখা হচ্ছে (৭৩%) এবং চিনের উপস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য ক্রমবর্ধমান সমর্থন রয়েছে। তরুণরা অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের চেয়ে জাতীয় নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেন (৮৪%) এবং চিনের উপর অ-শুল্ক বাধা আরোপ এবং দেশ থেকে আমদানি কমানোর পক্ষে সমর্থন দেখিয়েছেন। তাঁরা বেজিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ থেকে ভারতের দূরে থাকার সিদ্ধান্তকে দেশের জন্য উপকারী বলেও মনে করেন (৭৯%)।
কৌশলগত প্রাণশক্তির দিক থেকে ভারত মহাসাগর অঞ্চলের গুরুত্বও বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ৩৩% সমর্থন পেয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া এবং ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরেই ভারত মহাসাগর অঞ্চলের গুরুত্ব বেড়েছে। এটি সামুদ্রিক ক্ষেত্রে চিনের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি সম্পর্কে উদ্বেগকেও ব্যাখ্যা করে। ভারতের ‘প্রতিবেশ প্রথম’ নীতিকে ইতিবাচক ভাবে দেখা হচ্ছে, বিশেষ করে এর উন্নয়ন ও সংযোগ উদ্যোগগুলিকে। নেপাল (৭২%) সবচেয়ে বিশ্বস্ত প্রতিবেশী হিসেবে বিবেচিত হলেও বাংলাদেশ এসেছে ভুটান এবং শ্রীলঙ্কার পর। ২০২২ সাল থেকে বাংলাদেশের প্রতি আস্থার মাত্রা হ্রাস পেয়েছে। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের প্রতি অবিশ্বাসও এই দেশগুলিতে (যথাক্রমে ৮১% ও ৪৬%) আস্থার চেয়ে বেশি। গত বছর থেকে আফগানিস্তানের প্রতি অবিশ্বাসের মাত্রা হ্রাস পেয়েছে। তবে পাকিস্তানের জন্য অপারেশন সিঁদুরের পরে সম্পৃক্ততার পরিবর্তিত নিয়ম এবং সম্পর্কের নতুন নিম্নগতি আরও সতর্কতার দিকে চালিত করতে পারে।
তরুণরা রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী মর্যাদাকে ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হিসেবে দেখছেন এবং সদস্য দেশগুলির সঙ্গে নয়াদিল্লির দৃঢ় সম্পর্ককে কাজে লাগাতে জি৭-এ দেশের জন্য স্থায়ী আমন্ত্রিত মর্যাদাকে সমর্থন করছেন।
কোয়াড দেশগুলি - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান এবং তার ঐতিহাসিক অংশীদার রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও ভারতের কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের প্রশংসা ক্রমবর্ধমান। উত্তরদাতারা (৮৬%) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এবং আগামী ১০ বছরে এটিকে ভারতের শীর্ষস্থানীয় অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হতে দেখেছেন। এটি গত কয়েক বছরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্রমবর্ধমান সমন্বয়ের একটি উপসংহার হলেও ট্রাম্প ২.০-এর প্রভাব এই বার্ষিক সমীক্ষার আসন্ন পুনরাবৃত্তিগুলিতে প্রতিফলিত হবে। উত্তরদাতারা চিনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভারতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন (৫৪%)। তরুণরা রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী মর্যাদাকে ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হিসেবে দেখছেন এবং সদস্য দেশগুলির সঙ্গে নয়াদিল্লির দৃঢ় সম্পর্ককে কাজে লাগাতে জি৭-এ দেশের জন্য স্থায়ী আমন্ত্রিত মর্যাদাকে সমর্থন করছেন।
পরবর্তী সমীক্ষাগুলি দেখাবে যে, গত কয়েক মাসের ঘটনাপ্রবাহ জনগণের ধারণাকে কতটা প্রভাবিত করেছে। চিন-পাকিস্তান সম্পর্ক এবং ভারতের স্বার্থের উপর এর প্রভাব ও ভবিষ্যতে মার্কিন-চিন সম্পর্ক যে গতিপথ গ্রহণ করবে, তা ইতিমধ্যেই ভারতের ভবিষ্যৎ বিদেশনীতির গতিপথের গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারক হবে।
এই প্রতিবেদনটি সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয় হিন্দুস্থান টাইমস-এ।
নিবন্ধে প্রকাশিত মতামত লেখক(দের) ব্যক্তিগত।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Professor Harsh V. Pant is Vice President – Studies and Foreign Policy at Observer Research Foundation, New Delhi. He is a Professor of International Relations ...
Read More +
Shivam Shekhawat is a Junior Fellow with ORF’s Strategic Studies Programme. Her research focuses primarily on India’s neighbourhood- particularly tracking the security, political and economic ...
Read More +