-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
শহর-স্তরের জলবায়ু কর্মকাণ্ডের মূল চাবিকাঠি হল তাপ স্থিতিস্থাপকতা, যার জন্য টেকসই পরিকল্পনা, সবুজ পরিকাঠামো ও নীতি সমন্বয় প্রয়োজন।
মানবিক কার্যকলাপের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে শহরগুলি জলবায়ু পরিবর্তনে অবদান রাখার পাশাপাশি এর ভয়াবহ পরিণতিও ভোগ করছে। বর্তমান অনুমান অনুসারে, বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের ৭৫ শতাংশ ঘটে শহরগুলির জন্য, যার একটি বড় অংশ পরিবহণ ও নির্মাণ ক্ষেত্র থেকে আসে। অতএব, একটি অপরিহার্য বিষয় হল জলবায়ু কর্মকাণ্ডে শহরগুলিকে অবিচ্ছেদ্য উপাদান হিসাবে স্থান দেওয়া।
নিশ্চিতভাবেই, বিশ্বজুড়ে শহরগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হ্রাস করার জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ করছে, যার মধ্যে রয়েছে পরিবহণ পরিকল্পনার মতো একাধিক কৌশল অন্তর্ভুক্ত করে বিস্তৃত জলবায়ু কর্ম পরিকল্পনা (সিএপি) প্রণয়ন। মূল উপাদানগুলির মধ্যে রয়েছে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ও বৈদ্যুতিক যানবাহনের মতো কম-কার্বন পদ্ধতি, গণপরিবহণের সম্প্রসারণ, জল ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উদ্যোগ বাস্তবায়ন এবং জলবায়ু-স্থিতিশীল কৌশল প্রণয়ন। এই ধরনের ব্যাপক পদক্ষেপের মাধ্যমে শহরগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদানকারী হিসাবে নিজেদের জায়গা তৈরি করছে।
মূল উপাদানগুলির মধ্যে রয়েছে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ও বৈদ্যুতিক যানবাহনের মতো কম-কার্বন পদ্ধতি, গণপরিবহণের সম্প্রসারণ, জল ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উদ্যোগ বাস্তবায়ন এবং জলবায়ু-স্থিতিশীল কৌশল প্রণয়ন।
এই চ্যালেঞ্জ ভারতের জন্যও সত্য — বন্যা ও তাপপ্রবাহের মতো চরম জলবায়ু ঘটনাগুলির জন্য দেশটি ঝুঁকিপূর্ণ। ২০২১ সালের বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচকে এটি দশম স্থানে রয়েছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঘটনাগুলির দ্বারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলিকে মানবিক, পরিকাঠামোগত ও আর্থিক ক্ষতির দিক থেকে অধ্যয়ন করে। দ্রুত নগরায়ণ, অপ্রতুল পরিকল্পনা এবং অনুপযুক্ত নগর ব্যবস্থাপনা অনুশীলনের সংমিশ্রণ ভারতীয় শহরগুলিকে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শহরগুলির মধ্যে শ্রেণিবদ্ধ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। অপরিকল্পিত নগর বৃদ্ধি এবং সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনের অভাব দেশের নগর জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেককে (প্রায় ২ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ) অনানুষ্ঠানিক বসতিতে বসবাস করতে বাধ্য করেছে, যেখানে রাস্তা, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, নিষ্কাশন এবং বায়ুচলাচলের মতো প্রয়োজনীয় বিষয়ের অভাব রয়েছে। এটি ভারতীয় শহরগুলির চরম জলবায়ু ঘটনাগুলির ঝুঁকির তীব্রতাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
ভারতে জলবায়ু পরিবর্তনের একটি স্পষ্ট এবং গুরুতর পরিণতি, বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার পাশাপাশি, চরম তাপ ঘটনার ক্রমবর্ধমান প্রত্যাবর্তন। গ্রীষ্মকালে অসহনীয় তপ্ত দিনের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা ভারতীয় শহরগুলিতে বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে আরও বেড়ে যাচ্ছে, যেমন খোলা জায়গা কমে যাওয়া, সবুজ এলাকা কমে যাওয়া, বর্জ্যের অব্যবস্থাপনা এবং যানজট। ক্রমবর্ধমান তাপ নগর তাপ দ্বীপ (ইউএইচআই) তৈরি করে, যেখানে ক্ষুদ্র জলবায়ু আশেপাশের অঞ্চলের তুলনায় উষ্ণ। ইউএইচআই প্রভাব শুধু বৃহত্তর শহরগুলিতেই সীমাবদ্ধ নয়, ছোট শহরগুলিতেও লক্ষণীয়। অনুমানগুলি ইঙ্গিত দেয় যে ভারতীয় শহরাঞ্চলে ইউএইচআই প্রভাব ১০° সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।
ইউএইচআই প্রভাব আরও জটিল হয় নগর নকশা ও পরিকল্পনার কারণে, যার মধ্যে আছে ভবনের আকারবিদ্যা (স্থানিক বিন্যাস, নকশা ও কাঠামো, ব্যবহৃত উপকরণ সহ), পৃষ্ঠ ও ফুটপাথের বৈশিষ্ট্য এবং ছাদের বৈশিষ্ট্যগুলি।
জলবায়ু-সম্পর্কিত উষ্ণায়নের বাইরে, শহরগুলি মানবসৃষ্ট তাপ উৎপন্ন করার কেন্দ্র হিসাবেও কাজ করে। এই মানবসৃষ্ট তাপ মূলত যানবাহন চলাচল এবং রেফ্রিজারেটর ও এয়ার কন্ডিশনারের মতো শীতলীকরণ যন্ত্রের বর্ধিত ব্যবহার থেকে উদ্ভূত হয়, যা ইউএইচআই প্রভাবকে আরও তীব্র করে তোলে। ইউএইচআই প্রভাব আরও জটিল হয় নগর নকশা ও পরিকল্পনার কারণে, যার মধ্যে আছে ভবনের আকারবিদ্যা (স্থানিক বিন্যাস, নকশা ও কাঠামো, ব্যবহৃত উপকরণ সহ), পৃষ্ঠ ও ফুটপাথের বৈশিষ্ট্য এবং ছাদের বৈশিষ্ট্যগুলি। ভারতীয় শহরগুলিতে ইউএইচআই প্রভাব তাপ প্রতিরোধের দৃষ্টিকোণ থেকে একটি ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। যদিও ইউএইচআই প্রভাবের কিছু অংশ বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে দেখা দেয়, আরেকটি অংশ শহরগুলির পরিকল্পনা ও উন্নয়নের দিকগুলির কারণে ঘটে, যা সমানভাবে সতর্ক মনোযোগ দাবি করে।
শহরাঞ্চলে তাপ-প্রতিরোধী হস্তক্ষেপ বাস্তবায়নের জন্য বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ জড়িত, যার মধ্যে রয়েছে সবুজ ও উন্মুক্ত স্থান সম্প্রসারণ, বৈদ্যুতিক যানবাহন ও গণপরিবহণের ব্যবহারের প্রসার, তাপ-প্রতিরোধী নকশা ও উপকরণ দিয়ে ভবনগুলি সংস্কার করা, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য আবাসন ব্যবস্থা উন্নত করা, এবং ফুটপাথ ও পৃষ্ঠতলের জন্য তাপ-প্রতিরোধী উপকরণ অন্তর্ভুক্ত করা। এই হস্তক্ষেপগুলি শুধু শহরের তাপ স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করে না, বরং শক্তি সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনা, দূষণের মাত্রা হ্রাস, স্বাস্থ্যসেবার বোঝা হ্রাস এবং উন্নত সুযোগ-সুবিধার মতো সুবিধাও প্রদান করে। এগুলি নগর পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষকে কম-কার্বন নির্গমনের পথের দিকে চালিত করে। বহুমুখী সুবিধার কারণে, ভারতীয় শহরগুলির সিএপি-গুলিকে তাদের সামগ্রিক পরিকল্পনার অবিচ্ছেদ্য উপাদান হিসাবে তাপ কর্ম-পরিকল্পনাগুলিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দুর্ভাগ্যবশত, ভারতের নগর পরিকল্পনাবিদ এবং প্রশাসকেরা এখনও তাপ কর্ম-পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জরুরি প্রয়োজনকে পর্যাপ্তভাবে স্বীকৃতি দিতে পারেননি। এই প্রবণতার একটি ব্যতিক্রম হল গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদ পৌরসভা, যা ২০১৩ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে তার তাপ কর্ম-পরিকল্পনা জারি ও আপডেট করার জন্য উল্লেখযোগ্য।
বহুমুখী সুবিধার কারণে, ভারতীয় শহরগুলির সিএপি-গুলিকে তাদের সামগ্রিক পরিকল্পনার অবিচ্ছেদ্য উপাদান হিসাবে তাপ কর্ম-পরিকল্পনাগুলিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
ভারতীয় নগর কেন্দ্রগুলিতে তাপ-কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের জন্য এমন নীতিগত ব্যবস্থা ও হস্তক্ষেপ প্রয়োজন যা দেশের বিদ্যমান নগর শাসন কাঠামোর সঙ্গে নির্বিঘ্নে একীভূত হয়। এই উদ্যোগগুলিকে রাজ্যগুলির এবং জাতীয় নীতির সঙ্গে সমন্বয় করে শহর পর্যায়ে বাস্তবায়িত করা উচিত। ভারতীয় প্রেক্ষাপটে, বিভিন্ন নীতিগত ব্যবস্থা এবং সরকারি পরিকল্পনা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তাপ প্রশমনের কৌশলগুলিকে সম্বোধন করে। এর মধ্যে রয়েছে জাতীয় স্থিতিশীল বাসস্থান মিশন, স্মার্ট সিটিজ মিশন, শহর উন্নয়ন পরিকল্পনা, মডেল বিল্ডিং উপ-আইন এবং রাস্তার নকশা নির্দেশিকা। অতিরিক্তভাবে, গৃহ ও লিড-এর মতো বেসরকারি রেটিং সংস্থাগুলি তাদের শক্তি খরচের উপর ভিত্তি করে ভবনগুলিকে প্রাসঙ্গিক রেটিং প্রদান করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তদুপরি, ভারতীয় শহরগুলিকে উদীয়মান সবুজ ও টেকসই আর্থিক উপকরণগুলির দ্বারা প্রদত্ত সম্ভাব্য সুবিধাগুলি কাজে লাগানোর উপায়গুলি অন্বেষণ করতে হবে। এটি বাজার থেকে তহবিল সংগ্রহের জন্য শহরগুলির গৃহায়ণ ও নগর বিষয়ক মন্ত্রকের নির্দেশাবলির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই ক্ষেত্রে, ভারতীয় শহরগুলি সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের জন্য তাদের যোগ্যতা বৃদ্ধি করতে ইএসজি (পরিবেশ, সামাজিক ও শাসন) কাঠামো দ্বারা উপস্থাপিত সুযোগগুলি কাজে লাগানোর কথা বিবেচনা করতে পারে। ভারতীয় শহরগুলি ইতিমধ্যেই অংশগ্রহণ করছে এমন পরিষেবা-স্তরের বেঞ্চমার্কিং কাঠামো — যেমন জীবনযাত্রার স্বাচ্ছন্দ সূচক, স্বচ্ছ সর্বেক্ষণ, সুশাসন সূচক এবং পৌর ঋণ রেটিং — ইএসজি কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য প্রয়াসী হওয়া উচিত। এই সমন্বয় বেসরকারি বিনিয়োগকারী, জনহিতকর সংস্থা এবং উন্নয়ন সংস্থাগুলির কাছ থেকে তহবিল আকর্ষণ করতে পারে। তাপ স্থিতিস্থাপকতা সম্পর্কিত ব্যবস্থাগুলিকে একীভূত করা ইএসজি মানগুলির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য একটি কার্যকর পদ্ধতি হতে পারে।
তাপ-স্থিতিস্থাপক ব্যবস্থা এবং সিএপি-তে তাদের সংযুক্তির উপর সংলাপ শুরু করা একটি জরুরি প্রয়োজন।
তাপ-স্থিতিস্থাপক ব্যবস্থা একটি অপরিহার্য উদ্বেগ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে, বিশেষ করে চরম তাপমাত্রার ক্রমবর্ধমান সম্ভাবনার কারণে। বর্তমানে, ভারতের শুধুমাত্র একটি শহরের একটি তাপ কর্ম-পরিকল্পনা রয়েছে; আরও শহরগুলিকে একই ধরনের কৌশল তৈরি করতে হবে। তাপ-স্থিতিস্থাপক ব্যবস্থা এবং সিএপি-তে তাদের সংযুক্তির উপর সংলাপ শুরু করা একটি জরুরি প্রয়োজন। এই পদক্ষেপগুলিতে ভূমি-ব্যবহার পরিকল্পনা, ভবনের রূপবিদ্যা, পৃষ্ঠের বৈশিষ্ট্য এবং নগর জীবনধারার মতো গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
তাপ কর্ম-পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন বিভাগের নীতিগুলির দক্ষ সমন্বয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু তাপ-স্থিতিস্থাপক নগর ব্যবস্থা বিকাশে সহায়তা করে না, বরং ভারতীয় শহরগুলির জলবায়ু প্রশমন লক্ষ্য অর্জনে অবদান রাখে। টেকসই ও জলবায়ু-স্থিতিস্থাপক নগর পরিবেশ তৈরির জন্য তাপ-স্থিতিস্থাপক ব্যবস্থাগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই প্রবন্ধটি "কনফ্রন্টিং দ্য ক্লাইমেট ক্রাইসিস: পাথওয়েজ টু আরবান রেজিলিয়েন্স" শীর্ষক একটি বৃহত্তর সংকলনের অংশ।
কমল কুমার মুরারি টাটা ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সেসের জলবায়ু পরিবর্তন ও স্থায়িত্ব অধ্যয়ন কেন্দ্রের সহকারী অধ্যাপক।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.