Published on Oct 24, 2024 Updated 0 Hours ago

হুন্তার ক্ষমতা হ্রাস, বহির্জগৎ থেকে বিচ্ছিন্নতা ও ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ বিভাজন দর্শায় যে, দলটির হাত থেকে ক্ষমতার রাশ বেরিয়ে যাচ্ছে।

অভ্যুত্থান-পরবর্তী মায়ানমারে ক্ষমতার ভারসাম্যে পরিবর্তন

মায়ানমার রাজনৈতিক পটভূমি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে চলেছে এবং দেশটিতে হুন্তার দীর্ঘস্থায়ী ক্ষমতার দখল চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। ১৯৬২ সাল থেকে সামরিক বাহিনী অপ্রতিদ্বন্দ্বী থেকেছে – প্রাথমিক ভাবে সরাসরি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে, পরে ২০১২ সালের পর আধা-গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় স্থানান্তরিত হয়েছে ২০১৫ থেকে ২০২১ সালের অভ্যুত্থান পর্যন্ত একটি ভঙ্গুর গণতান্ত্রিক সময়কাল। হুন্তা সম্ভবত বিশ্বাস করেছিল যে, তারা ১৯৮৮ সালের অভ্যুত্থান এবং ২০০৭ সালের স্যাফ্রন রেভোলিউশনের (গেরুয়া বিপ্লব) সময় দ্রুত ক্ষমতাকে সশক্ত করতে এবং প্রতিরোধকে দমন করতে পারবে। যাই হোক, বর্তমানে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল বা রাজ্য প্রশাসন কাউন্সিল (এসএসি) বা হুন্তার গভর্নিং বডি একটি অপ্রত্যাশিত এবং শক্তিশালী বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছে - জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী বেসামরিক বাহিনীগুলির একটি ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট সামরিক শাসন ভেঙে দেওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে উঠেছে।

গণ-আইন অমান্য আন্দোলন হিসাবে প্রাথমিক ভাবে যা শুরু হয়েছিল, তা একটি বৃহত্তর সংঘাতে বিকশিত হয়েছে, যা ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট বা জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) একটি সশস্ত্র বাহিনী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস-এর (পিডিএফ) স্থিতিস্থাপকতা প্রদর্শন করে। এবং এর সঙ্গে কয়েকটি পর্যায়ে এথনিক আর্মড অর্গানাইজেশনস বা জাতিগত সশস্ত্র সংস্থাগুলি (ইএও) যোগ দেয়, যা সীমান্ত অঞ্চলে আক্রমণ পরিচালনা সামরিক শাসন উৎখাত করার জন্য একটি সঙ্ঘবদ্ধ ফ্রন্টকেই দর্শায়।

হুন্তা সম্ভবত বিশ্বাস করেছিল যে, তারা ১৯৮৮ সালের অভ্যুত্থান এবং ২০০৭ সালের স্যাফ্রন রেভোলিউশনের (গেরুয়া বিপ্লব) সময় দ্রুত ক্ষমতাকে সশক্ত করতে এবং প্রতিরোধকে দমন করতে পারবে।

২০২১ থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যে এসএসি-এম রিপোর্টে অনুমান করা পরিসংখ্যান অনুসারে, মায়ানমারের ৫৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার ৬৭ শতাংশ-সহ দেশের ভূখণ্ডের ৮৬ শতাংশ হুন্তার স্থিতিশীল নিয়ন্ত্রণে নেই। আনুমানিক তিরিশটি টাউনশিপ কমপক্ষে ৯০ শতাংশ প্রতিরোধ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, যার মধ্যে ১৪টিতে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এই অনুমান অনুযায়ী, পরিবর্তনের গতিপথ দৃঢ় ভাবে প্রতিরোধের শক্তিকেই দর্শায়।

সীমান্ত এলাকার আশপাশের শহরগুলিও দখল করা হয়েছে

অপারেশন ১০২৭-এর পর সংঘাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ইএও এবং প্রতিরোধ বাহিনী মায়ানমার জুড়ে ৫৩টিরও বেশি শহর দখল করেছে। আনুমানিক ২৩ শতাংশ বা ১২টি শহর ভারতের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে অবস্থিত, যেখানে নাগা স্ব-শাসিত জেলাগুলি বাদে সামরিক বাহিনী সমস্ত শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। চিন স্টেটের মাতুপি জেলায় শাসকবাহিনী তিনটি শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে।

প্রায় ১৫ শতাংশ বা আটটি শহর মায়ানমার-তাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী জেলায় অবস্থিত। হুন্তারা বাওলাকে জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষমতা হারিয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট তিনটি শহরের নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে এবং বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মংডু জেলার একটি শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে।

সূত্র: এসএসি-এম

মায়ানমার-চিন সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে ৩২ শতাংশ অর্থাৎ ১৭টি শহর প্রতিরোধ বাহিনী দখল করে নিয়েছে। সামরিক বাহিনী চিন সীমান্তের নটি জেলার মধ্যে ছটি শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেসবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে শান স্টেটের মিউজ জেলায়, যেখানে চারটি শহরের ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে হুন্তা।

সামরিক বাহিনীর পাল্টা আক্রমণ

বিগত তিন বছরে পরিত্যাগ, যুদ্ধক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতি ক্ষয়িষ্ণু মনোবলের কারণে মায়ানমারের সামরিক বাহিনীর উল্লেখযোগ্য রকম, প্রায় ১,৩০,০০০ কর্মী সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে এবং পুলিশ ও সামরিক ভূমিকায় অতিরিক্ত ৭০,০০০ কর্মীও কমেছে। সেনাসম্পদও ক্ষয়িষ্ণু হয়ে পড়েছে। অনেক সৈন্য নেপিডাও এবং ইয়াঙ্গনের মতো উল্লেখযোগ্য শহরগুলির কাছাকাছি অবস্থান করছে, যাতে সামরিক কেন্দ্রভূমিকে আরও আক্রমণ থেকে রক্ষা করা যায়। আহত সৈন্যদের প্রতি দুর্বল সমর্থন নেতৃত্বের প্রতি অবিশ্বাস ইউনিটের সংহতিকে আরও দুর্বল করেছে। হুন্তা গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস এবং পুরনো প্রযুক্তির সাথে লড়াই করে, যেমনটা অপারেশন ১০২৭’-এর সময়েও দেখা গিয়েছিল, যখন প্রতিরোধ বাহিনী ড্রোন আক্রমণকে ধ্বংসাত্মক প্রভাবে সঙ্গে ব্যবহার করেছিল। এপ্রিল আনুমানিক ৩০টি ড্রোন সামরিক সদর দফতর মায়ানমারের ক্ষমতাসীন জেনারেল মিন অং লাইং-এর বাসভবন এবং নেপিডাওয়ে বিমানবন্দর লক্ষ্য করে হামলা চালায়কোনও হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও আক্রমণের উদ্দেশ্য ছিল আধিকারিকদের বিচলিত করা এবং সামরিক ক্ষমতার কেন্দ্রে আঘাত হানার ক্ষমতা ও প্রতিরোধ বাহিনীর ক্রমবর্ধমান প্রসারকে দর্শানো।

অনেক সৈন্য নেপিডাও এবং ইয়াঙ্গনের মতো উল্লেখযোগ্য শহরগুলির কাছাকাছি অবস্থান করছে, যাতে সামরিক কেন্দ্রভূমিকে আরও আক্রমণ থেকে রক্ষা করা যায়।

এই ধরনের পরিস্থিতিতে হৃত অঞ্চল পুনরুদ্ধার করতে হুন্তা বিভিন্ন পর্যায়ে তিনটি পাল্টা আক্রমণ চালায়কিন্তু এখন পর্যন্ত সব জায়গাতেই হুন্তাকে ধাক্কা খেতে হয়েছে। অপারেশন অং জেয়া ছিল এপ্রিল মাসে করা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে প্রথম সরকারি আক্রমণ, যার তত্ত্বাবধানে ছিলেন ডেপুটি চিফ সো উইন। জাতীয় এবং স্থানীয় গণমাধ্যমে এটির প্রচার করা হয়েছিল এবং আক্রমণটির লক্ষ্য ছিল তাইল্যান্ডের সীমান্তের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য শহর মায়াওয়াদ্দিকে জাতিগত কারেন সশস্ত্র বাহিনীর হাতে দখল হওয়া থেকে প্রতিরোধ করা

কারেন বাহিনী ২৭৫ পদাতিক ব্যাটালিয়ন দখল করার পর মায়াওয়াদ্দিতে ছেড়ে যাওয়া বাহিনীকে টিকিয়ে রাখার জন্য সাঁজোয়া যান, বিমানশক্তি এবং অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত প্রায় ,০০০ সৈন্যকে এই অভিযানে কাজে লাগানো হয়। প্রাথমিক লাভের সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও এই সমর্থন বাহিনী কয়েক মাসের জন্য দাউনা মাউন্টেন রেঞ্জের মতো প্রতিবন্ধকতাময় ভূখণ্ডে স্থবির হয়ে পড়ে, যখন তারা জাতিগত কারেন এবং অন্যান্য প্রতিরোধ গোষ্ঠীর তরফে ক্রমাগত আক্রমণের সম্মুখীন হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সামরিক বাহিনীকে পিছু হঠতে হয় এবং মন স্টেট ও তানিনথারি অঞ্চলে এই বাহিনী ছড়িয়ে পড়ে।

দ্বিতীয় অভিযান সিন ফিউ শিন - যা অপারেশন লর্ড অফ দ্য হোয়াইট এলিফ্যান্ট নামেও পরিচিত - উত্তর শান স্টেট পুনরুদ্ধার করার জন্য আগস্ট মাসে কোনও প্রচার ছাড়াই চালু করা হয়েছিল। জুন মাস থেকে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স (থ্রি বিএইচএ) উত্তরাঞ্চলীয় শান-এর নংখিয়ো, কাউকমে এবং লাশিও শহরগুলি দখল করে নিয়েছে। উপরন্তু, খন জানুয়ারি মাসে চিনের মধ্যস্থতায় সামরিক বাহিনী ও থ্রি বিএইচএ-র মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি হুন্তার বিমান হামলার সঙ্গে সঙ্গে বিনষ্ট হয়ে যায়, তখন উত্তর-পূর্ব সামরিক কম্যান্ড এবং মান্দালয় অঞ্চলের মাদায়া মোগোকে শহরগুলিও দখল করা হয়েছিলযাই হোক, সামরিক বাহিনীর দ্বারা পরিচালিত অভিযানগুলি সীমিত শক্তি এবং আকারের কারণে খুব বেশি সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। টিএনএলএ এবং এর মিত্ররা সিপাউ ও নংখিয়ো শহরতলির অবশিষ্ট হুন্তা দুর্গগুলি দখল করার জন্য নিজেদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং হুন্তারা প্রতিদিন উভয় এলাকায় বসতি স্থাপনের উপর বিমান হামলার মাধ্যমে প্রতিশোধ নেয়।

খন জানুয়ারি মাসে চিনের মধ্যস্থতায় সামরিক বাহিনী ও থ্রি বিএইচএ-র মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি হুন্তার বিমান হামলার সঙ্গে সঙ্গে বিনষ্ট হয়ে যায়, তখন উত্তর-পূর্ব সামরিক কম্যান্ড এবং মান্দালয় অঞ্চলের মাদায়া মোগোকে শহরগুলিও দখল করা হয়েছিল

সেপ্টেম্বর মাসে শুরু করা সর্বশেষ পাল্টা আক্রমণ অপারেশন ইয়ান নাইং মিন আসলে কারেননি সীমান্তের কাছে দক্ষিণ শান স্টেটের পিনলাং এবং নাউংতায়ার শহরগুলিতে প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান শক্তিশালী করার পাশাপাশি কারেনি স্টেটে হৃত অঞ্চলগুলি পুনরুদ্ধার করার জন্য হুন্তার আর কটি প্রয়াসএখন পর্যন্ত এটি তেমন সাফল্যের মুখ না দেখলেও হুন্তা প্রাথমিক ভাবে বিমান হামলার উপর নির্ভর করে এবং লোইকাউ-এর চারপাশে শুধুমাত্র কয়েকটি শক্তিশালী ঘাঁটি ধরে রাখতে পেরেছে। সেনাবাহিনীর হ্রাসকৃত শক্তি এবং মনোবলের পরিপ্রেক্ষিতে কারেনি স্টেটের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করা যথেষ্ট কঠিন কাজ।

সম্ভাব্য ফলাফল

বর্তমান প্রেক্ষাপটে হুন্তা আরও কিছু অংশের উপর নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারে। এমনকি যদি হুন্তা কৌশলে বিচ্ছিন্ন কেন্দ্রগুলি থেকে সরে আসে এবং পাল্টা আক্রমণ চালায়, তা হলেও ব্যাপক ভাবে সাধারণ সমর্থন ফিরে পাওয়া অসম্ভব বলে মনে হয়। সর্বোপরি অর্থনৈতিক সঙ্কট ব্যাপক ঘাটতিকে আড়াল করে রাখা কঠিন হয়ে উঠছে এবং বিশেষ করে অপারেশন ১০২৭-এর পরে মানবিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছেঅভ্যুত্থানের পর থেকে চার মিলিয়নেরও বেশি অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি (আইডিপি) তৈরি হয়েছে এবং ১২.৯ মিলিয়ন মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন।

মায়ানমারের হুন্তার সাম্প্রতিক ২৬ সেপ্টেম্বরে বিভিন্ন প্রতিরোধ গোষ্ঠীর সঙ্গে শান্তি আলোচনার আহ্বান একটি বহু পুরনো কৌশল। ঐতিহাসিক ভাবে, ১৯৮৮ সালের গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং ২০০৭ সালের গেরুয়া বিপ্লবের পর দেখা যায়, বিরোধী দলকে ভেঙে দেওয়ার জন্য হিংসাত্মক দমন সীমিত রাজনৈতিক ছাড়ের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সামরিক বাহিনী একটি দ্বৈত-ট্র্যাক কৌশল ব্যবহার করেছে। এর বিপরীতে, স্প্রিং রেভোলিউশন বা বসন্ত বিপ্লব এবং অপারেশন ১০২৭’-এর সময় শক্তির উপর বর্তমান হুন্তার অনমনীয় নির্ভরতা দলটির বিচ্ছিন্নতাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে এবং এখন পর্যন্ত হুন্তার কোন রাজনৈতিক প্রচার বা সম্পৃক্ততার খবর নেই।

ঐতিহাসিক ভাবে, ১৯৮৮ সালের গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং ২০০৭ সালের গেরুয়া বিপ্লবের পর দেখা যায়, বিরোধী দলকে ভেঙে দেওয়ার জন্য হিংসাত্মক দমন সীমিত রাজনৈতিক ছাড়ের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সামরিক বাহিনী একটি দ্বৈত-ট্র্যাক কৌশল ব্যবহার করেছে।

আলোচনার জন্য এই সাম্প্রতিক পদক্ষেপ রাজনৈতিক প্রচারে হুন্তার প্রথম উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টাকে চিহ্নিত করে বলে মনে করা হচ্ছে। আকর্ষণীয় ভাবে শান্তির সম্ভাব্য পথ হিসেবে নির্বাচনের পর জোর দিয়ে হুন্তা অভ্যন্তরীণ শক্তির পরিবর্তে আন্তর্জাতিক ভাবে এই কথাই বোঝানোর আশা করছে যে, নির্বাচনে অনিবার্য ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও তা হিংসার পরিমাণ হ্রাস করতে পারে। এর ফলে অভ্যন্তরীণ বিরোধীদের জন্য অর্থপূর্ণ ছাড় দেওয়ার প্রয়োজন ছাড়াই সামরিক বাহিনীর উপর আন্তর্জাতিক চাপ কমাতে পারে, যেখানে বেশিরভাগ প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

যাই হোক, প্রতিরোধ বাহিনী হুন্তার শান্তি প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং রাজনীতি থেকে সামরিক বাহিনীকে নির্মূল করা, একটি ফেডারেল সংবিধান গ্রহণ অন্যায়ের জন্য সামরিক বাহিনীকে দায়বদ্ধ করার মতো গুরুত্বপূর্ণ দাবিগুলির উপর জোর দিয়েছে। হুন্তা গণতান্ত্রিক দাবি মেনে নেবে এমন কোনও লক্ষণ না থাকলেও কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ নেতৃত্বে অভ্যন্তরীণ পতনের সম্ভাবনাকেই দর্শায়২০০৪ সালে যেমনটা ঘটেছিল, অর্থাৎ একটি অভ্যুত্থানের মধ্যে অভ্যুত্থানআবার ঘটতে পারে।

সংঘাতের ফলাফল অনিশ্চিত হলেও তার সামগ্রিক গতিপথ হুন্তার ক্ষয়ক্ষতির বিপরীতে প্রতিরোধ বাহিনীর লাভের দিকেই পাল্লা ভারী করেছে। রাজধানীর অভ্যন্তরে হুন্তার আধিপত্যের পরিপ্রেক্ষিতে, হুন্তার সম্পূর্ণ পরাজয় আসন্ন বা সুনিশ্চিত না হলেও অসম্ভব নয়অন্য দিকে, হুন্তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্রমশ বেড়ে চলেছে ও তা হ্রাসের কোনও লক্ষণ নেই। ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ বিভাজন বাহ্যিক বিচ্ছিন্নতার পাশাপাশি হুন্তার ক্ষমতা দুর্বল হওয়া দর্শায় যে, দলটি এ বার জমি হারাচ্ছে। প্রতিরোধ বাহিনী তাদের গতি বজায় রাখতে পারবে কি না এবং সামরিক জমানার অভ্যন্তরে ফাটল ধরে রাখতে পারবে কি না, তা গণতন্ত্রের জন্য মায়ানমারের সংগ্রামের ভবিষ্য গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হবে। 

 


শ্রীপর্ণা ব্যানার্জি অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অ্যাসোসিয়েট ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.