Author : Laura Bonsaver

Published on May 23, 2025 Updated 0 Hours ago

চিনা সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্টের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি তাইওয়ানের ডিজিটাল পরিসরকে নতুন আকার দিচ্ছে।

বেজিং কি তাইওয়ানের কিশোর-কিশোরীদের হৃদয় জয় করতে পারবে?

সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক গণমাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের উপর চিনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে একজন তাইওয়ানি মিলেনিয়াল (অর্থাৎ জেনারেশন ওয়াই, সংক্ষেপে বললে, যাঁদের জন্ম হয়েছে গত শতকের আশির দশকের শেষের দিকে বা নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে) বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমি উদ্বিগ্ন হই এ কথা ভেবে যে, ছোট বাচ্চারা আমাদের মতো তাইওয়ানের মূল্যবোধকে ততটা দৃঢ় ভাবে রক্ষা করবে না।’

তাইওয়ানের তরুণদের বেশিরভাগই ২০১৪ সালের সানফ্লাওয়ার মুভমেন্টের সঙ্গে যুক্ত, যা কিনা বিতর্কিত চিনা বাণিজ্য চুক্তির বিরুদ্ধে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন একটি আন্দোলন। রাজনৈতিক বিষয়গুলিতে অত্যন্ত সম্পৃক্ত সেই প্রজন্ম চিন সম্পর্কে, বিশেষ করে পরবর্তী কালের রাজনৈতিক গণমাধ্যমের প্রভাব সম্পর্কে নিজেদের সন্দেহ বজায় রেখেছে এবং তাইওয়ান প্রণালী জুড়ে তাদের ধারণাকে কূটনৈতিক শক্তি কৌশল তেমন প্রভাবিত করতে পারবে না। তবে বর্তমান ডিজিটাল সাংস্কৃতিক পরিসর চিন সম্পর্কে কিশোর-কিশোরীদের দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে সহায়ক হতে পারে, যা পূর্ববর্তী প্রজন্মের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলাদা হওয়ার সম্ভাবনা রাখে।

বর্তমান ডিজিটাল সাংস্কৃতিক পরিসর চিন সম্পর্কে কিশোর-কিশোরীদের দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে সহায়ক হতে পারে, যা পূর্ববর্তী প্রজন্মের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলাদা হওয়ার সম্ভাবনা রাখে।

তাইওয়ানে চিনা অপভাষার ক্রমবর্ধমান জোয়ার

তাইওয়ানিজ ইউজারদের ফিডে চিনা সোশ্যাল মিডিয়ার বিষয়বস্তুর বাড়তে থাকা উপস্থিতি নিয়ে ক্রমশ উদ্বেগ বাড়ছে। অভিন্ন ভাষা চিনা এবং তাইওয়ানিজ অ্যাকাউন্টগুলির মধ্যে বিষয়বস্তুর পৃথগীকরণকে কঠিন করে তোলে। ছোট আকারের ভিডিয়ো এবং জীবনধারা সংক্রান্ত বিষয়বস্তুর জন্য দুটি জনপ্রিয় চিনা মঞ্চ অর্থাৎ টিকটক ও রেডনোট তাইওয়ানে বৃহত্তর ভোক্তাভিত্তি অর্জন করেছে।

তাইওয়ানিজ কিশোর-কিশোরীরা বেশি মাত্রায় চিনা শর্ট বা স্বল্পদৈর্ঘ্যের ভিডিয়ো দেখে এবং অনলাইনে চিনা নেটিজেনদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। এর ফলে তারা দৈনন্দিন কথোপকথনে চিনা অপভাষা ব্যাপক মাত্রায় ব্যবহার করছে। তাইওয়ানে লেখকের দ্বারা পরিচালিত একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুসারে, ২০-৩৫ বছর বয়সি ৭৫ শতাংশ উত্তরদাতা চিনা ভাষা গ্রহণ করার বিষয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করেছেনযেমন ছোট ভিডিয়ো’র জন্য তাইওয়ানিজ ম্যান্ডারিন 短影片 (দুয়ান ইং পিয়ান)-এর পরিবর্তে চিনা বাক্যাংশ 视频 (দুয়ান শি পিং)-এর মতো শব্দ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে। ২০-৩৫ বছর বয়সিদের মধ্যে ৭৮ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন যে, তাঁরা সচেতন ভাবে এই ধরনের ভাষা ব্যবহার এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, যেখানে সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী কিশোর-কিশোরীদের কেউই একই রকম ভাষা ব্যবহার করার ইচ্ছা প্রকাশ করেননি।

বয়স্ক তরুণরা চিনের অভিব্যক্তি ব্যবহারে বেশি প্রতিরোধী বলে মনে হলেও কিশোর-কিশোরীরা কেন তা ব্যবহার করতে এত বেশি আগ্রহী?

এই প্রবণতা কি কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে চিনের প্রতি মনোভাব নরম হওয়ার ইঙ্গিতই দেয়? এ দিকে, বয়স্ক উপ-প্রজন্ম 支語 (ঝিউ) আসলে চিনের ভাষা বর্ণনা করার জন্য অবমাননাকর ভাবে ব্যবহৃত একটি শব্দ ই শব্দের প্রয়োগ ধীরে ধীরে কমছে, যা তাইওয়ানের তরুণদের মধ্যে একটি সাংস্কৃতিক বিভাজনকে দর্শায় এবং বিষয়টি আপাতত অলক্ষ্যে থেকে যাচ্ছে। সর্বোপরি, সমাজগুলি একে অপরের সঙ্গে কীভাবে সম্পর্ক স্থাপন করে, তা প্রভাবিত করতে পারে ভাষার সূক্ষ্ম পরিবর্তন।

ভাষা বিকশিত হয়— তাই আমাদের কি উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত?

সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তরুণদের অপভাষা ব্যবহারের প্রবণতা নতুন নয়। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাজ্যে মার্কিন টেলিভিশন অনুষ্ঠানের প্রসার সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কিন সংস্কৃতির আধিপত্য বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তরুণরা ক্রমশ মার্কিন অপভাষা গ্রহণ করছে। এটি এমন একটি ঘটনা যা জেনারেশন-জেড সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের দরুন আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রবণতা আসলে ব্রিটিশ নাগরিকরা মার্কিনদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছেন… এ হেন ইঙ্গিত অথবা বিপদ সঙ্কেত কোনওটিই দর্শায় না।

সহযোগী অধ্যাপক তাই ইউ-হুই উল্লেখ করেছেন যে, তাইওয়ানিজ যুবকরা কোরিয়ান ড্রামা দেখার পরে একই ভাবে কোরিয়ান অভিব্যক্তি গ্রহণ করেছে এবং এটি তাদের পরিচয়কে প্রভাবিত করেনি। প্রকৃতপক্ষে, তাইওয়ান দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দেশ ও সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিততবুও মানুষের আত্মপরিচয় গভীর ভাবে প্রোথিত। পিউ রিসার্চ সেন্টার এবং ন্যাশনাল চেংচি ইউনিভার্সিটির সাম্প্রতিক সমীক্ষাগুলি থেকে জানা যায় যে, তরুণ তাইওয়ানিজরা নিজেদেরকে চিন থেকে আলাদা বলে মনে করে এবং ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার কোনও লক্ষণ দেখায় না।

চিনা সোশ্যাল মিডিয়ার উত্থান তাই তাইওয়ানের জন্য অনন্য নয় এবং এটি চিনের প্রতি ক্রমবর্ধমান বিশ্বব্যাপী আগ্রহকে একটি উদীয়মান শক্তি হিসেবে প্রতিফলিত করতে পারেএটি উদ্বেগের কারণ নয়, বরং চিনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব থেকেই উপজাত।

আন্তঃপ্রণালী সম্পর্কের কথা উঠলে ছোটখাটো পরিবর্তনের দিকেও নজর দেওয়া জরুরি

তবে তাইওয়ান-চিন সম্পর্ক এবং শি জিনপিংয়ের পুনর্সংযুক্তিকরণের লক্ষ্যগুলি বিবেচনা করলে, এই প্রবণতাটি আরও নিবিড় পর্যবেক্ষণের দাবি রাখে। সামরিক উত্তেজনা শিরোনামে প্রাধান্য পেলেও প্রভাবের আরও সূক্ষ্ম পদ্ধতিগুলিও বিদ্যমান। তাইওয়ানের তরুণ প্রজন্মকে আকর্ষণ করার জন্য চিকূটনৈতিক শক্তি কৌশলগুলিতেও প্রচুর বিনিয়োগ করছে।

২০২৩ সাল থেকে তাইওয়ানে আখ্যানকে রূপদানকারী চিনা সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছেএই অভিযোগ রয়েছে যে, তাইওয়ানের ইনফ্লুয়েন্সাররা প্রচারণা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য চিনা সরকারি তহবিল পাচ্ছেন এটি এমন একটি বিষয়, যা নিয়ে তাইওয়ান প্লাস সম্প্রতি আলোচনা করেছে।

প্রাথমিক উদ্বেগ এই নয় যে, তাইওয়ানের তরুণরা আত্মপরিচয় বোধ হারাবেবরং আসল উদ্বেগ হল এই যে, এ হেন ইতিবাচক অথচ কৌশলী বিষয়বস্তুর সংস্পর্শে এসে – যার লক্ষ্য হল চিনপন্থী আখ্যানগুলিকে প্রসারিত করা, দেশীয় কণ্ঠস্বরকে বিকৃত করা এবং তাইওয়ানের গণতন্ত্র মিত্রদের অসম্মান করা – তাইওয়ানিজ তরুণরা চিন সম্পর্কে ধারণাগুলিকে সূক্ষ্ম ভাবে প্রভাবিত করতে পারে।

একটি সাংস্কৃতিক বাঁকবদল: প্রভাবের মূল্যায়ন

এই প্রতিবেদন কখনওই চিনের সমস্ত বিষয়বস্তুকে অবিশ্বাস করার আহ্বান নয়, অথবা এই ধারণাকে উৎসাহিত করার আহ্বান নয় যে, সমস্ত বিষয়বস্তু দর্শকদের নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি সমন্বিত রাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন প্রচেষ্টার অংশ। মানুষ যে প্রতিটি পোস্টেসম্মুখীন য়, তার সবগুলিকেই দুরভিসন্ধিযুক্ত বলে দায়ী করা জরুরি নয়। 

তবে যে কথা অনস্বীকার্য, তা হল এই যে, আমরা একটি সাংস্কৃতিক বাঁকবদলের মোড়ে দাঁড়িয়ে। যেহেতু চিনা সোশ্যাল মিডিয়া বিষয়বস্তু তাইওয়ানিজ পর্দায় (ফোন, ট্যাব, ল্যাপটপ) বেশিরভাগ পরিসর দখল করে আছে, তাই এটি আমাদের মনোযোগ তরুণ (উপ)প্রজন্মের দিকে ফিরিয়ে আনা এবং তাদের মতামতের যে কোনও উদীয়মান বৈচিত্র্য নিরীক্ষণ করার একটি উপযুক্ত সময়। আগামী বছরগুলিতে এই ধরনের পরিবর্তন বিস্তৃত প্রভাব ফেলতে পারে।

এই অনুসন্ধানটি একটি বৃহত্তর সাংস্কৃতিক রূপান্তরের পটভূমিতে সংঘটিত হয়। এই রূপান্তরটি ঠিক কোথা থেকে শুরু হয়েছিল?

পপ সংস্কৃতিকেন্দ্রিক ভরকেন্দ্রের সূচনা: তাইওয়ান থেকে চিপর্যন্ত

কয়েক দশক ধরে তাইওয়ানের পপ সংস্কৃতি চিনা-ভাষী বিশ্ব জুড়ে প্রবণতার শীর্ষে থেকেছে। ২০০০ সাল পর্যন্ত চিন সর্বাধুনিক শৈলী ও তারকাদের জন্য তাইওয়ানের মুখাপেক্ষী ছিল। তাইওয়ান প্রভাবশালী হলেও চিনের বিনোদন শিল্পও বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিনোদনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে স্পষ্ট পরিবর্তন সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষেত্রে লক্ষ করা গিয়েছে।

২০২৫ সালের মধ্যে চিনেইনফ্লুয়েন্সার ইন্ডাস্ট্রি ৭ ট্রিলিয়ন চিনা ইয়ানে (৯৬৫.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) পৌঁছবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের উপরে নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লক্ষ লক্ষ মার্কিন টিকটক ব্যবহারকারী রেডনোটে অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছেন এটি আর কটি লক্ষণীয় বিষয় হল যে, চিনের সোশ্যাল মিডিয়া শিল্পের গতি কমে যাওয়ার কোনও প্রবণতা দেখা যাচ্ছে না।

তাইওয়ান প্রভাবশালী হলেও চিনের বিনোদন শিল্পও বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিনোদনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে স্পষ্ট পরিবর্তন সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষেত্রে লক্ষ করা গিয়েছে।

তাইওয়ানের কিশোর-কিশোরীরা বয়স্কদের তুলনায় টিকটকের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য রকমের সম্পৃক্ত। তরুণ-তরুণীদের মধ্যে টিকটক ব্যবহারকারীদের পরিমাণ ৩৮ শতাংশ, যেখানে ১৮-২৯ বছর বয়সি ব্যবহারকারীর পরিমাণ ৩৩ শতাংশ এবং ৩০ বছরের বেশি বয়সিদের মধ্যে এই ব্যবহারকারীর পরিমাণ আরও কম। প্রাথমিক ভাবে লঘু কন্টেন্টের প্রতি আকৃষ্ট হলেও, অনেক কিশোর-কিশোরী এখন টিকটকের মতো অ্যাপগুলিকে প্রাথমিক ভাবেই সংবাদ উৎস হিসেবে ব্যবহার করে।

বেজিংয়ের শক্তিশালী কূটনৈতিক শক্তি সংক্রান্ত আলোচনার ক্ষেত্রে তাই একটি প্রশ্ন থেকে যায়: তাইওয়ানের তরুণরা কি এত সহজেই প্রভাবিত হন?

বিভক্ত প্রতিক্রিয়া: মিলেনিয়ালস কিশোর-কিশোরী

২০ এবং ৩০-এর শেষের দিকে বয়স এমন অনেকেই প্রায়শই চিনা ছোট ভিডিয়ো দেখেন। এই ভিডিয়োর বেশিরভাগ রান্না, রাস্তার খাবার এবং জীবনধারা সংক্রান্ত। কিন্তু অনেকেই রাজনৈতিক ভাবে নেতিবাচক আখ্যান থেকে সরে এসে গ্রামীণ দৃশ্যপট, ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি এবং শহুরে উন্নয়ন প্রদর্শনকারী চিনা প্রচারমূলক ভিডিয়োও দেখেন।

তাইওয়ানের মিলেনিয়ালরা এখনও সন্দেহপ্রবণ। নিউ তাইপেইয়ের ৩১ বছর বয়সি জনৈক বলেছেন, ‘এই ভিডিয়োগুলিতে কেবল এটা দেখানোর চেষ্টা করা হয় যে, চিন কতটা সুন্দর।’ অনেকে অবশ্য এই ভিডিয়োগুলিকে ‘ভুয়ো ও অবাস্তব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন এবং একটি সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখতে সক্ষম হওয়ার বিষয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস প্রদর্শন করেছেনমিলেনিয়ালরা তাঁদের নিজেদের তুলনায় চিনা ভিডিয়ো দেখে কিশোর-কিশোরীদের প্রভাবিত হওয়ার বিষয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। প্রতিবেদকের দ্বারা পরিচালিত একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় ৮৬ শতাংশ উত্তরদাতা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, কিশোর-কিশোরীরা চিনা প্রভাবের সামনে আরও বেশি উন্মুক্ত এবং সাদরে তা গ্রহণ করছে। একজন উত্তরদাতার মতে, ‘যদি কিশোর-কিশোরী চিনের অভিব্যক্তি ব্যবহার করতে থাকে, তাহলে তারা ভাববে যে, সমস্যাটা কিছুই নয় এবং তারা অনুভব করতে শুরু করবে যে, প্রণালীর দুই পাশে থাকা দুই দেশ আসলে একটি পরিবার।

চিনের আকর্ষণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে মাত্র ৪ শতাংশ বয়স্ক উত্তরদাতা তাঁদের তরফে দেখা বিষয়বস্তুর উপর ভিত্তি করে বসবাসের জন্য চিনকে একটি আকর্ষণীয় জায়গা বলে মনে করেছেন। অন্য দিকে ২০ শতাংশ কিশোর-কিশোরী এমনটা মনে করেন।

নতুন তথ্য থেকে জানা যায় যে, তাঁদের উদ্বেগ ভিত্তিহীন না-ও হতে পারে। একই সমীক্ষায় ২০-৩৫ বছর বয়সি মাত্র ১৩ শতাংশ উত্তরদাতা মাঝেমধ্যে চিনের অভিব্যক্তি ব্যবহার করেছেন বলে জানিয়েছেন এবং মাত্র ৪ শতাংশ উত্তরদাতা দৈনন্দিন কথোপকথনে সেই শব্দসমূহ প্রয়োগ করেন। এর বিপরীতে, ৮০ শতাংশ কিশোর-কিশোরী উত্তরদাতা এ হেন শব্দবন্ধ মাঝেমধ্যে ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেছেন এবং ২০ শতাংশ বলেছেন যে, এই ধরনের ভাষা তাঁদের দৈনন্দিন কথোপকথনের অংশ হয়ে উঠেছে।

এই বিভাজন ভাষার ঊর্ধ্বে উঠেও বিস্তৃত। চিনের আকর্ষণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে মাত্র ৪ শতাংশ বয়স্ক উত্তরদাতা তাঁদের তরফে দেখা বিষয়বস্তুর উপর ভিত্তি করে বসবাসের জন্য চিনকে একটি আকর্ষণীয় জায়গা বলে মনে করেছেন। অন্য দিকে ২০ শতাংশ কিশোর-কিশোরী এমনটা মনে করেন। তাইঝংয়ের ১৬ বছর বয়সি একজন উত্তরদাতা উল্লেখ করেছেন যে, যে ভিডিয়োগুলিতে চিনের সুন্দর দৃশ্য দেখানো হয়েছে, তার মধ্যে দিয়ে দেশটি সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করেছে।

যুবসম্প্রদায় যখন ক্রমবর্ধমান আবাসন খরচ ও বাড়তে না থাকা মজুরির সঙ্গে যুঝছে, তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় চিনা জীবনের মসৃণ চিত্রায়ন কি তাঁদের কাছে আরও আবেদনময় হয়ে উঠতে পারে?

আন্তঃপ্রণালী বিভাজনের সেতুবন্ধন

এই প্রবণতা আন্তঃপ্রণালী মনোভাবের উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে কি না, তা এখনও দেখার বিষয়। এই পর্যায়ে মনোভাব পরিবর্তনের যে কোনও রকম ধারণা অনুমানমূলক এবং চিনা সোশ্যাল মিডিয়া বিষয়বস্তু অপভাষার ধারণার প্রভাব অজানা।

তবে, ভাষা ও সংস্কৃতির মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের চিসম্পর্কে ধারণায় সূক্ষ্ম পরিবর্তনগুলি পর্যবেক্ষণ করা উচিত এবং তা যেন জারি থাকে।

তাইওয়ানে চিনা সরকারের সমালোচনা প্রচলিত বিষয় হলেও চিনা ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা বা সাংস্কৃতিক উপাদানগুলির প্রশংসা করার বিষয়টিকে চিন-পন্থী বলে দাগিয়ে দেওয়া উচিত নয়।

চিনা সমবয়সিদেসঙ্গে ক্রমবর্ধমান আত্মীয়তার বোধকে কেবল রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা উচিত নয়। ব্যক্তিগত সংযোগ রাজনৈতিক সাযুজ্যের মধ্যে পার্থক্য করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাইওয়ানে চিনা সরকারের সমালোচনা প্রচলিত বিষয় হলেও চিনা ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা বা সাংস্কৃতিক উপাদানগুলির প্রশংসা করার বিষয়টিকে চিন-পন্থী বলে দাগিয়ে দেওয়া উচিত নয়। এই যুগ্ম মানসিকতার সেতুবন্ধন অপরিহার্য। উপরন্তু, পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধি আরও সূক্ষ্ম কথোপকথনের পথ প্রশস্ত করার জন্য আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

তাইওয়ানের তরুণরা যখন একটি ডিজিটাল বিশ্বে নিজেদের পথ খুঁজে নিচ্ছে, তখন তাঁদের বিকশিত দৃষ্টিভঙ্গি আন্তঃপ্রণালী সমীকরণকে পুনরায় সংজ্ঞায়িত করতে পারে। এটি একটি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয় না কি একটি আন্তঃসংযুক্ত বিশ্বকেই দর্শায়? এ নিয়ে একটি প্রশ্ন রয়ে যায়: এই প্রজন্মগত পরিবর্তনগুলি কি চিনের প্রতি তরুণ তাইওয়ানিদের মনোভাবকে নীরবে পুনরায়  সংজ্ঞায়িত করতে পারবে?

 


ব্রিটিশ-ইতালীয় লরা বনসেভার তাইপেইয়ের তাইওয়ান নেক্সটজেন ফাউন্ডেশনের গবেষক।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.