Author : Prithvi Gupta

Published on Oct 16, 2024 Updated 0 Hours ago

লোহিত সাগরে ক্রমবর্ধমান সরবরাহ শৃঙ্খল সংকটের মধ্যে ভারতকে অবশ্যই বৈচিত্র্য আনার উপায় খুঁজে বার করতে হবে। ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডোর (আইএমইসি) এক্ষেত্রে একটি কৌশলগত বিকল্প প্রস্তাব করে৷

আইএমইসি বরাবর অর্থনৈতিক সংযোগ জোরদার করা

লোহিত সাগরে সরবরাহ শৃঙ্খল সংকট, যা এই বছরের গোড়ায় শুরু হয়েছিল এবং বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত অব্যাহত ছিল, তা ইজরায়েল-হামাস সংঘর্ষের কারণে দীর্ঘমেয়াদি সংকটে পরিণত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইরান-সমর্থিত হুথিরা  লোহিত সাগরে সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে মিশর সরকার সুয়েজ খাল দিয়ে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এটি ছিল সমুদ্রপথে যোগাযোগের বৈশ্বিক জালিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থি, যার মাধ্যমে বছরে বিশ্ব-‌বাণিজ্যের ১২ শতাংশ সংঘটিত হত এবং বিশ্বব্যাপী কনটেনার ট্রাফিক–এর ৩০ শতাংশ চলাচল করত। তার উপর এটি ছিল ১২-১৫ দিনের ভ্রমণ-‌সময়ে এশিয়া থেকে ইউরোপে যাওয়ার সবচেয়ে ছোট রুট, যেখানে দ্বিতীয় সেরা বিকল্প কেপ অফ গুড হোপ রুটে ৩৫ দিন সময় লাগে।

লোহিত সাগরে সরবরাহ শৃঙ্খল সংকট অব্যাহত থাকায় বৈশ্বিক শিপিং শিল্প বিকল্প রুটের অপ্রস্তুত বন্দরগুলিতে যানজটপূর্ণ বন্দর ট্র্যাফিক, জাহাজ বিমার বিশাল প্রিমিয়াম, চালান বিলম্ব, সমুদ্রের ফ্রেট রেটে নাটকীয় বৃদ্ধি, ব্যবসার জন্য লাভের মার্জিন কমে যাওয়া এবং আন্তর্জাতিক চালানের উপর নির্ভরশীল বিভিন্ন শিল্পে একটি ক্রমসঞ্চালিত (‌ডমিনো)‌ প্রভাবের সম্মুখীন হচ্ছে। ভারতের জন্য এই সরবরাহ শৃঙ্খল সংকটের প্রভাব বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় স্বল্পমেয়াদে ন্যূনতম হয়েছে। তবুও, ভারতের জন্য এই রুটটির
গুরুত্ব বোঝানো ‌প্রয়োজন। ভারতের মোট জাতীয় রপ্তানির ৫০ শতাংশ এবং ভারতের ইউরোপে রপ্তানির প্রায় ৮০ শতাংশ বার্ষিক লোহিত সাগরের পথ অতিক্রম করে। কেপ অফ গুড হোপ রুট ব্যবহার করার ফলে ব্যাপক বিলম্ব হয় এবং উচ্চতর বিমা ও মালবহন খরচ হয়। যেমন, কলকাতা-রটারডাম রুটের মাধ্যমে শিপিং করতে এখন খরচ ৪,০০০ মার্কিন ডলার, যেখানে প্রাক-সংকটের সময় ফ্রেট রেট ছিল ৫০০ মার্কিন ডলার।


ভারতের জন্য এই সরবরাহ শৃঙ্খল সংকটের প্রভাব বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় স্বল্পমেয়াদে ন্যূনতম হয়েছে।



এই ভূ-রাজনৈতিকভাবে অস্থির সময়ে ভারতের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য একটি প্রতিক্রিয়াসম্পন্ন, স্থিতিস্থাপক ও নির্ভরযোগ্য নেটওয়ার্ক তৈরি করতে সরবরাহ শৃঙ্খলে বৈচিত্র্য আনা অপরিহার্য। এশিয়া-ইউরোপ রুটের জন্য ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডোর (
আইএমইসি) হল এসএলওসি-গুলির বৈশ্বিক জালিকায় ভারতকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিন্দু হিসাবে তুলে ধরার জন্য, এবং একটি প্রতিক্রিয়াসম্পন্ন, স্থিতিস্থাপক ও নির্ভরযোগ্য সরবরাহ শৃঙ্খল তৈরি করার জন্য, ভারতের বিভিন্ন প্রয়াসের অন্যতম। এই নিবন্ধটি মধ্যম এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিস্থিতিতে সুয়েজ রুটের বিকল্প হিসাবে আইএমইসি-র কার্যকারিতা পরীক্ষা করে, এবং এর দক্ষ ব্যবহারের জন্য রুটটিকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক সংযোগ বাড়ানোর  বিভিন্ন সুপারিশ করে।

আইএমইসি-‌র উদ্ভব ও সমস্যা
 
আইএমইসি মূলত ভূ-রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা-‌সহ একটি প্রকল্প, যার নোঙর হল
আব্রাহাম চুক্তি, সেইসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি (ইউএই) ও ইজরায়েলকে নিয়ে আই২ইউ২ গ্রুপিং-এ ভারতের সংযোজন, এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ ও ব্লকের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ  — যেমন ইরান-সৌদি আরব, তুর্কিয়ে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ও সৌদি আরব। এই আন্তঃসংযুক্ত স্থিতিশীলতার অনুসারী ঘটনাগুলি ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে নতুন দিল্লিতে জি২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, সৌদি আরব ও ভারতের নেতাদের আইএমইসি-‌র‌ কথা  ঘোষণার দিকে চালিত করেছিল। করিডোরটি পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি গ্রিড, মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল, হাইড্রোজেন পাইপলাইন, আন্তঃসংযুক্ত সমুদ্রের কেবল, সমন্বিত ডিজিটাল ফিনান্স পরিকাঠামো, এবং মাল্টিমোডাল পরিকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে সংযোগ ও সহযোগিতার কল্পনা করে।


করিডোরটি পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি গ্রিড, মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল, হাইড্রোজেন পাইপলাইন, আন্তঃসংযুক্ত সমুদ্রের কেবল, সমন্বিত ডিজিটাল ফিনান্স পরিকাঠামো, এবং মাল্টিমোডাল পরিকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে সংযোগ ও সহযোগিতার কল্পনা করে।



যাই হোক, আইএমইসি-‌র বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সমস্যা রয়ে গিয়েছে। গাজা ও ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক ইস্যুর কোনও সমাধান না-‌হওয়া পর্যন্ত রিয়াধ আইএমইসি সহযোগিতাকে আর এগিয়ে নিয়ে যাবে না। সৌদি আরব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রেললাইনের জন্য, কারণ তার ভূখণ্ডের মধ্য দিয়ে আসা লাইন একদিকে আরব আমিরশাহির রেলের সঙ্গে সৌদি আরবের রেলকে
সংযুক্ত করবে , এবং তারপর সৌদি আরবের আল-হামিন্দা স্থলবন্দরকে ইজরায়েলের হাইফা বন্দরের সঙ্গে যুক্ত করবে। যাই হোক, এমনকি যদি যুদ্ধের পরে এই সংযোগ স্থাপিত হয়, হাইফা বন্দরটির ক্ষমতা কম, এবং এটি গুজরাটের (ভারত) মুন্দ্রা ও জওহরলাল নেহরু বন্দর যা করতে পারে তার মাত্র এক-পঞ্চমাংশ চালনা করতে সক্ষম। আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হল ইরানিরা বারবার হরমুজ প্রণালী ও পারস্য উপসাগর বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে। আইএমইসি-র আরব বন্দরগুলি গোটা হরমুজ প্রণালী বরাবর রয়েছে, যা "বন্ধুত্বপূর্ণ তীরবর্তী" সরবরাহ শৃঙ্খলগুলির ভূ-অর্থনৈতিক চালচলনকে অকেজো করে তোলে, কারণ এই বন্দরগুলি সর্বদা হরমুজ প্রণালী ও পারস্য উপসাগরে যে কোনও সংঘাতের কারণে হুমকির সম্মুখীন হবে৷

করিডোর অংশীদারদের মধ্যে আর্থিক একীকরণ এবং মুক্ত বাণিজ্যের সমস্যাও রয়েছে। যদিও ভারতের ইন্ডিয়া স্ট্যাক ডিজিটাল রাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর মার্কিন, ফ্রেঞ্চ ও আমিরশাহির ফিনটেক বাস্তুতন্ত্রের সঙ্গে যোগ রয়েছে, এবং ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমী অর্থনীতিগুলির সহজ আন্তঃসীমান্ত লেনদেন ও আর্থিক প্রবাহের ব্যবস্থা আছে, তা হলেও করিডোর-বিস্তৃত আন্তঃআঞ্চলিক আর্থিক সংযোগ ও শুল্ক সমমান-‌নির্ধারণের ব্যবস্থা নেই। বর্তমানে করিডোর অংশীদারদের মধ্যে আর্থিক একীকরণ ও মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিগুলি আঞ্চলিকভাবে কাজ করছে, যেগুলিকে পুরো করিডোর-ব্যাপী কার্যকর করার জন্য আন্তঃসরকারি পরামর্শ এবং পরবর্তী বাস্তবায়ন সমন্বয় প্রয়োজন।

অর্থনৈতিক সংযোগ জোরদার করা

সমালোচকেরা যুক্তি দেন যে ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ এই প্রকল্পের উন্নয়নকে লাইনচ্যুত করেছে। যাই হোক, লোহিত সাগরের সংকট ভারত সরকারের উপর চাপ বাড়িয়েছে আইএমইসি উন্নয়নের জন্য করিডোরের অংশীদারদের সঙ্গে সহযোগিতা শুরু করার। ভারত ইতিমধ্যেই কাজ
এগিয়ে নিয়ে গিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বন্দর উন্নয়নের জন্য আবু ধাবির সঙ্গে কাজ করছে, এবং আপুলিয়া জি৭ শীর্ষ সম্মেলনের সময় জি৭ নেতারা আইএমইসি-র পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য পিজিআইআই ও গ্লোবাল গেটওয়ের অর্থসংস্থান করা হবে বলে পুনরায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যাই হোক, এটি আইএমইসি এর মতো উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের জন্য যথেষ্ট নয়। আর্থিক ও বাণিজ্যিক একীকরণের পরিপ্রেক্ষিতে আরও সংহতি থাকা প্রয়োজন। ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং মধ্যপ্রাচ্যের ভঙ্গুর আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রেক্ষিতে ঝুঁকি কমানোর জন্য আইএমইসি-র মধ্যে রুটগুলিকে আরও বৈচিত্র্যময় করতে হবে।

মানচিত্র: আইএমইসি
Map
সূত্র: দ্য হিন্দু

 

আইএমইসি ফ্রি ট্রেড এরিয়া ও ফিনটেক সহযোগিতা: সমষ্টিগতভাবে ৪৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের আইএমইসি-‌র অংশীদারদের একটি শক্তি হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে। তবুও, করিডোর বরাবর একটি সমমান শুল্ক ব্যবস্থা এবং বৈচিত্র্যময় ও স্বল্পব্যয়ের পরিবহণ ব্যবস্থা না থাকলে অর্থনৈতিক সংহতি অর্জন করা যাবে না। মূল্যশৃঙ্খল সমন্বয় ছাড়া অর্থনৈতিক সংযোগ অসম্পূর্ণ। যদি আইএমইসি অংশীদারেরা সত্যিকার অর্থে করিডোরটিকে সর্বোত্তমভাবে চালু করতে চায়, তাহলে তাদের আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য শুল্ক এবং পণ্যের জন্য পরিবহণ ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে, এবং প্রয়োজনে তাদের নিজ নিজ সীমান্ত পরিকাঠামো সংযুক্ত করতে হবে। অর্থনৈতিক সংযোগের আরেকটি মূল স্তম্ভ হল ডিজিটাল ও আর্থিক সংযোগ। সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাঙ্ক ফিনান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন (সুইফ্ট) যদিও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত, রেমিট্যান্স পাঠানো ও কম খরচে খুচরা অর্থপ্রদানের জন্য ভারতীয় ইউনাইটেড পেমেন্টস ইন্টারফেস (ইউপিআই) ব্যবহার করা যেতে পারে, কারণ সুইফট সিস্টেমে উচ্চ লেনদেনের খরচ রয়েছে। যাই হোক, বর্তমানে, ইউপিআই আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে। আরও ডিজিটাল ও ফিনটেক সমন্বয় ভবিষ্যতে একীকরণের সুযোগ-‌সহ অংশীদার দেশগুলিতে এগ্রিটেক, হেলথ টেক, এডু টেক এবং নতুন ও উদীয়মান প্রযুক্তি বাস্তুতন্ত্রগুলি কাজে লাগানোর জন্য সুবিধার দিকে নিয়ে যেতে পারে। 



সমষ্টিগতভাবে ৪৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের আইএমইসি-‌র অংশীদারদের একটি শক্তি হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে। তবুও, করিডোর বরাবর একটি সমমান শুল্ক ব্যবস্থা এবং বৈচিত্র্যময় ও স্বল্পব্যয়ের পরিবহণ ব্যবস্থা না থাকলে অর্থনৈতিক সংহতি অর্জন করা যাবে না।

 

বাণিজ্যের জন্য করিডোর-বিস্তৃত ভূ-রাজনৈতিক বিমা: আঞ্চলিক সংঘাতগুলি — যেমন ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ
সামরিক অভিযান, ইজরায়েল-গাজা যুদ্ধ বা পশ্চিম আফ্রিকার সংঘাত — আন্তর্জাতিক ব্যবসার জন্য ঝুঁকির বিরুদ্ধে সুরক্ষা কঠিন করে তুলেছে। উদাহরণস্বরূপ, রাশিয়া থেকে ৯৫০+ এর বেশি কোম্পানির অভূতপূর্ব প্রস্থান অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক ঢেউ তৈরি করেছে, এবং তা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খল স্থিতিস্থাপকতাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। অর্থবর্ষ ২২-এ এই ব্যবসাগুলির ১০৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের লোকসান হয়েছে। ব্যবসাগুলির সাধারণত তাদের বিমা প্যাকেজের আওতায় ঝুঁকির একটি পরিসীমা থাকে, যেগুলি প্রায়শই এমন অস্পষ্টভাবে বিবৃত যে তা সম্ভাব্য বিপর্যয়কর পরিস্থিতি অন্তর্ভুক্ত করে না। ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং তাদের বিস্ফোরণের সময়রেখার মানচিত্রায়ণ করা বিমাকারীদের জন্যও অত্যন্ত কঠিন, যা পরবর্তীকালে বিমার মূল্য মডেলিংকে আরও কঠিন করে তোলে। মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার মতো আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি ও হুমকি আর কোথাও নেই। আইএমইসি সরকারগুলি চূড়ান্ত গ্যারান্টর হিসাবে পদক্ষেপ না করলে, ব্যবসার জন্য ভূ-রাজনৈতিকভাবে উদ্ভূত ক্ষতি আইএমইসি-র উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে লাইনচ্যুত করতে পারে।

 

আরও করিডোর অংশীদার যোগ করা: করিডোর বরাবর ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি কমানোর একটি উপায় হল করিডোরের মধ্যে আন্তঃপরিচালনযোগ্য রুটগুলিকে বৈচিত্র্যময় করা। ভারত থেকে ইউএই পর্যন্ত আইএমইসি-‌র পূর্ব করিডোরে  ইউএই-‌এর বন্দরগুলিতে অফলোড হয়। যাই হোক, এই বন্দরগুলি পারস্য উপসাগর ও হরমুজ প্রণালীতে অবস্থিত, যা বারবার অবরোধ করার হুমকি দিয়েছে ইরান। একইভাবে, লোহিত সাগরের সরবরাহ শৃঙ্খল সংকটের সময় দেখা গেল ইরান সহজেই তার ইয়েমেনের প্রক্সিদের মাধ্যমে লোহিত সাগরের রুটও আটকাতে পারে। করিডোরে ওমান ও মিশরকে যুক্ত করা রুটকে বৈচিত্র্যময় করতে পারে এবং সরবরাহ শৃঙ্খল স্থিতিস্থাপকতাকে শক্তিশালী করতে পারে। ওমানের বন্দরগুলি আরব সাগরের তীরে অবস্থিত;‌ মাস্কাটের সমস্ত করিডোর অংশীদারদের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রয়েছে;‌ এবং এটি ভারতের নিকটতম আরব লিঙ্ক। একইভাবে, আইএমইসি-র উত্তর অংশে ইজরায়েলের বন্দরের বিকল্প হতে পারে মিশর। ভূমধ্যসাগরের পাশে মিশরীয় বন্দরগুলি আইএমইসি-র জন্য সহায়ক হতে পারে এবং সৌদি আরব থেকেও সেখানে পৌঁছে যাওয়া যায়। ইউরোপীয় প্রান্তে, আইএমইসি-র বন্দরে ইতালির ট্রিয়েস্টে যোগ করা হলে তা ইউরোপে একটি গেটওয়ে তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে। ইন্দো-প্যাসিফিকের সঙ্গে ইউরোপের বাণিজ্যের জন্য ট্রিয়েস্টের সঙ্গে সংযোগ অপরিহার্য। ইউরোপের ম্যানুফ্যাকচারিং হাব, অর্থাৎ উত্তর ইতালি, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম এবং পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলির সঙ্গে ট্রিয়েস্টের সংযোগ এটিকে এশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য ইউরোপের উদ্যোগ-‌কেন্দ্রে পরিণত করেছে।


উপসংহার

যদিও সমস্যাগুলি থেকে গিয়েছে, আইএমইসি একটি পথ-নির্মাণ উদ্যোগ। করিডোর অংশীদারদের লোহিত সাগরের সঙ্কট ও ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের সমাধানের পাশাপাশি করিডোর বরাবর মানসম্মত নীতি ও করিডোর উন্নয়নকে আরও গভীর করার জন্য একটি সমাধান খুঁজে বার করতে হবে। করিডোর সহযোগিতা জোরদার করতে ভারত ইতিমধ্যেই পশ্চিম এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সঙ্গে উন্নয়ন সহযোগিতার নেতৃত্ব দিচ্ছে। সরবরাহ শৃঙ্খলে বৈচিত্র্য আনা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা বাড়ানোর জন্য আইএমইসি ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত উদ্যোগ। চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা করার সময় এর সম্ভাব্য সুবিধাগুলি যথেষ্ট। আইএমইসি-র পূর্ণ সম্ভাবনা উপলব্ধ করার জন্য গভীর অর্থনৈতিক একীকরণ, শক্তিশালী আর্থিক ও ডিজিটাল সংযোগ, ঝুঁকি কমানোর কৌশল এবং করিডোরের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ সহ একটি ব্যাপক পদ্ধতি গ্রহণের প্রয়োজন। আইএমইসি-‌র সাফল্য সব অংশগ্রহণকারী দেশের প্রতিশ্রুতি ও সহযোগিতার উপর নির্ভর করে।



পৃথ্বী গুপ্ত অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের জুনিয়র ফেলো

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.